রাগী টিচার যখন রোমান্টিক হাসবেন্ড – পর্ব 04

0
1985

#রাগী_টিচার_যখন_রোমান্টিক_হাসবেন্ড
#পর্ব_০৪
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
পরের দিন সকাল বেলা শখ আগে ভাগে রেডি হয়ে নিলো।যাতে কলেজে পৌঁছাতে দেরি না হয়।শখকে এত সকাল সকাল নিচে নামতে দেখে শখের আম্মু বলে উঠলো।
–আচ্ছা আমি কি ভুল দেখছি নাকি।সূর্য আজ কোন দিকে উঠছে।আমার ঘুম পাগলি মেয়েটা আজ এত সকাল সকাল উঠে পড়লো।
–দেখো তোমার মেয়ে কোথাও কিছু করছে নাকি।আজ কাল তো দেখি সকাল উঠে কলেজে যায়।যে মেয়ে এত ঘুমায় ডেকে’ও ঘুম থেকে তোলা যায় না সে মেয়ে নিজে থেকে ঘুম থেকে উঠে।আমার মনে হয় ও নিশ্চিয় প্রেম করছে।বলল মুনতাহা।
–আব্বু তুমি কিযে বলো না।আমি তোমাকে আগেই বলছিলাম আমাদের কলেজে নতুন টিচার আসছে খুব রাগি দেরি হলে ক্লাস রুমে প্রবেশ করতে দেয় না।তাই জন্য আগে যায় আর কিছু না।বলল শখ।
–দেখলি তো তুই শুধু শুধু আমার মেয়েটাকে ভুল বুজিস।আমার মেয়ে প্রেম করার মতো মেয়েই না।যদি-ও বা করতো তোকে না বললে আমাকে নিশ্চয় বলতো।তাই না জেনে শুনে আমার মেয়ে নামে বাজে কথা বলবি না।
–সারাদিন খালি আমার মেয়ে আমার মেয়ে।বলি কি ও একটাই মেয়ে তোমার আমরা কেউ না।তুমি এমন ভাব করো যেনো তুমি আমাদের সৎ মা।
–মুনতাহা এসব কি বলছিস তুই।
–ঠিকি বলছি।আমার তো মনে হয় আদোও তুৃমি আমার নিজের মা তো।আমার সন্দেহ হয়।
–আপু তুমি আম্মুর সাথে এমন ব্যবহার করছো কেনো।ভালো কথা বললেও তুমি সেটা খারাপ ভাবে নাও।একটু ভালো ভাবে নিলেই তো আর সমস্যা হয় না।
–এই মেয়ে তুই চুপ থাক এখন আমি কি করবো না করবো তোকে বলে তোর থেকে অনুমতি নিয়ে করতে হবে নাকি।যতো সব।
–আম্মু আমি আসছি।বলেই মুনতাহার কথার কোনো উওর না দিয়ে না খেয়ে চলে গেলো শখ।সে জানে এখানে কথা বললে কথা বাড়বে বয় কমবে না।
শখ কলেজে পৌঁছে ক্লাস রুমে আসতেই দেখলো সবাই ওর দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে।
শখ:কিরে কি হয়েছে সবাই আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে কেনো রে।
আয়েশা:আর বলিস না সোনা কি হয়ছে জানিস।
শখ:কি হয়েছে।
মেধা:তুই কাল কলেজে আসিস নাই তাই স্যার তোর কথা জানতে চেয়েছিলেন।
স্নেহা:তারপরে থেকে সবাই খুব করে হিংসা করছে দেখতে পারছে না।
শখ:আচ্ছা এখন বুজলাম সবাই কেনো আমার দিকে ওমন করে তাকিয়ে ছিলো আরে ভাই আমি অসুস্থ ছিলাম তাই আসি নাই। আর স্যার স্টুডেন্টর কথা জানতে চাইতেই পারে তাই বলে এমন করা লাগবে।
আয়েশা:আমি’ও ঐডাই কই।
আয়ান:এটা ক্লাস রুম গল্প করার জায়গা না।গল্প করার জন্য বাহিরে মাঠ আছে।যাও গিয়ে বসে গল্প করো।
ওরা গল্প করছিলো আয়ান যে কখন এসে ওদের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে সেদিকে খেয়ালই ছিলো না।
শখ:সরি স্যার আর হবে না।আসলে আমরা বুঝতে পারি নাই। আপনি কখন আসলেন।
আয়ান:সেই কৈফিয়ত তোমাকে দিতে হবে নাকি।আমার ক্লাসে সময় যখন থেকে শুরু আমি নিশ্চিয় তার আগে বা পরে আসবো না।
শখ:সরি স্যার আর হবে না আমাদের সময়ের দিকে খেয়াল রাখা উচিত ছিলো।
আয়ান:চুপচাপ গিয়ে বসো আমার ক্লাসের সময় নষ্ট হচ্ছে।আর যদি গল্প করতে চাও তাহলে বেড়িয়ে যেতে পারো।বলেই আয়ান ক্লাস শুরু করলো।
চার বান্ধবী মিলে চুপ চাপ বসে ক্লাস করলো।
মাঠে গোল হয়ে বসে আছে শখ ও তার দল।
–শালা বজ্জাত ব্যাডা আমারে পাইছে কি হুম।এমন কোনোদিন নেই যে আমাকে অপমান করতে ছাড়ে না।আজ মজা দেখামু।সবকিছু রেডি তো।
সিয়াম:সবকিছু রেডি।এবার তুই রেডি হ।
আয়েশা:বইন আরেক বার ভেবে দেখ,আমার সেই ভয় লাগছে।যদি ধরা পড়ে যাই।তাহলে আমরা সবাই শেষ।
স্নেহা:তোর কথা শুনে আমারও’ ভয় লাগছে বইন।
শখ:দেখ বইন শেষে এসে সবকিছু এলোমেলো করে দিস না।
তোরা থাম আমি কাজটা করে আসি।
শখ চুপিচুপি আয়ানের রুমে গিয়ে কিছু একটা করে চলে আসলো।
আমান:তোর সাহস আছে বলতে হবে।বাকি কাজটা কখন করবি।
–শালা বজ্জাত ব্যাডার ক্লাস শেষ।এখনি বেরোবে।দেখি সর আমাকে গাছের সাথে দরি বাঁধতে দে।
তারপরে শখ গাছের সাথে দড়ি বেঁধে নিলো।
আয়ান যাচ্ছে সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছে কেউ কেউ মুখ টিপে হাসছে।আয়ান ভ্রু কুঁচকে আঁড়চোখে সবার দিকে তাকাচ্ছে। হলোটা কি সবাই ওর দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে কেনো।
আয়ান দাঁড়িয়ে একটা ছেলেকে কিছু বলতে যাবে।ছেলেটা আয়ানের হাতে একশ টাকার একটা নোট ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলো।আজব ব্যাপার আমাকে টাকা দিলো কেনো।প্রচন্ড রাগ লাগছে আয়ানের।আমি জোকার নাকি সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আবার টাকা দিচ্ছে।
এই শুনো।
–জ্বী,স্যার বলুন।
–আচ্ছা আমাকে দেখে কি জোকার মনে হচ্ছে।
–না,স্যার।এমন কথা বলছেন কেনো।
–তাহলে সবাই আমাকে দেখে হাসছে কেনো।একটা ছেলে আমাকে টাকা দিয়ে গেলো।মনে হয় আমি ফকির ওর থেকে ভিক্ষা চেয়েছি তাই আমাকে দান করে গেলো।অনেকটা রেগেই বললো আয়ান।
এবার ছেলেটা আয়ানকে বেশ ভালোভাবে দেখে ছেলেটা’ও হাসা শুরু করলো।
–কি হলো তুমি হাসছো কেনো।রেগে বললো।
–স্যার হাসবো না আপনি যদি এভাবে পিঠে এসব লিখে ঘুরে বেড়ান তাহলে শুধু আমি না সবাই হাসবে।
–মানে তুমি কি বলতে চাইছো।
–ওয়েট স্যার আমি আপনাকে দেখায়।
বলেই ছেলেটি আয়ানের পিঠে থেকে একটি কাগজ এনে দিলো।কাগজ টি দেখে আয়ানের মাথায় আগুন ধরে গেলো কে করেছে এই কাজ।
–স্যার আমি জানি না।আপনার পিঠে থাকা কাগজের লিখা দেখে সবাই হাসছে কি লেখা।মাইরি।রাম গরুরের ছানা।হাসতে তাদের মানা।তারা মাঠে পারে ডিম তাদের খারা দুটো শিং।যে যা পারেন দয়া করে সাহায্য করে যান কিছু। বলেই ছেলেটি হাসা শুরু করলো।
–shut up.আমাকে দেখে খুব হাসি পাচ্ছে তাই না।আমি যদি যানতে পারি কে এই কাজ করছে।তার কি পরিমান শাস্তি অপেক্ষা করছে সে নিজেও জানে না।স্যারদের সাথে বেয়াদবি কররা সাধ মিটিয়ে দিতাম।আমি তো খুঁজে বের করবোই কে এই কাজ করেছে।
বলেই আয়ান রাগে গজগজ করতে করতে চলে যেতে লাগলো।একটু দূরে আসতেই ওপরে থেকে আয়ানের মাথায় কিছু একটা পড়লো আয়ান চোখ মেলে তাকাইতে পারছে না।কি বাজে গন্ধ।
এবার আয়ানের রাগ চরম পযার্য়ের উঠে গেলো।
আয়ান:আমার মাথায় গোবর পানি কে ফেললো।আমি জানতে চাইছি কে ফেললো।প্রচুর রেগে বললো।
–স্যার আমরা কেউ করিনি।কে করেছে আমরা জানি না।দেখিও নাই।
–আমি তো খু্ঁজে বের করবোই।কাল এর শাস্তি ওরা পাবেই।আমি যে কতোটা খারাপ হতে পারি ওরা নিজেও জানে না।নিজেদের খুব চালাক মনে করে তাই না।বলেই আয়ান চলে গেলো।
শখ:শালা বজ্জাত ব্যাডা।ঠিকহয়েছে বেশ হয়েছে।এখন কেমন লাগে।আমাকে সারাদিন বকাঝকা করে আমাকে। এবার বুঝুক শখ কি জিনিস আর কোনোদিন শখের সাথে লাগতে আসবে।
আয়েশা:শখ মনে হয় আমরা শেষ স্যার আমাদের ধরে ফেলছে মনে হয় র।দেখলি না।স্যার শেষে কি বলে গেলো।আমার মনে হয় আর পড়াশোনা করা হবে না আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিবে রে।
কাব্য:তাড়াতে মর তাহলে চল্লিষা খেতে পারবো রে।এমনি তে অনেক ক্ষুদা লাগছে আমার চল কিছু খাওয়াবি।
আয়েশা:চল তোকে বিষ কিনে দেই।তুই বিষ খা তাও চুপ করে থাক।আশা করি বিষ খেলে তোর আর কিছু খেতে ইচ্ছে করবে না।
কাব্য:দেখলি তো সিয়াম কি বললো।
সিয়াম:ঠিকি বলছে বিষ খেলে আর তোর ক্ষুদা লাগবে না।তোর বাবা মায়ের ভাত বেঁচে যাবে।
বলেই সবাই হেসে উঠলো।
কাব্য:আমি যদি মরে যাই তাহলে তোদের ঠিক মনে পড়বে ছেলেটা খেতে চেয়েছিলো খাওয়ায়লাম না।তই বলছি আফসোস করার থেকে বেঁচে আছি আমাকে খাইয়ে দে।
শখ:তুই মরে গেলে যে আমরা সবাই খেতে পারবো।তুই তো একা খাবি আর তুই মরে গেলে আমরা সবাই খাতে পারবো।এখন বল তুই তোর একার কথা ভাববি নাকি আমাদের সবার কথা ভাববি।
কাব্য:তোরা এত খারাপ আমি মরে গেলে আব্বু আম্মুরে কমু তোদের যেনো দাওয়াত না দেয়।
মেধা:দাওয়াতের দরকার নেই ভাই তুই শুধু মর বাকিটা আমরা বুঝে নিব।
কাব্য:আমি মরলে তোদেরকে মেরে৷মরবো।
আয়েশা:কচু কি শুরু করলি চল বাসায় যায়।দেরি হয়ে যাচ্ছে।দেরি হলে বাসায় বকা খেতে হবে আবার।
সবাই মিলে বাসায় চলে গেলো পরের দিন সকাল বেলা সবাই কলেজে ক্লাস রুমে বসে।আয়ান ক্লাসে প্রবশে করতেই। সবাই উঠে দাঁড়িয়ে সালাম দিলো।আয়ান এবার সবাইকে বসতে বললে সবাই বসে পড়লো।
আয়ান আজ প্রচন্ড রেগে আছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ক্লাস শেষ করেই।
এক এক করে নাম বলতে শুরু করলো।
আয়ান:কাব্য,সিয়াম,আমান,মেধা,আয়েশা,স্নেহা,শখ।সবাই আমার কেবিনে চলে আসো।চোখ গরম করে বলেই চলো গেলো।
আয়ানের কথায় সবাই উঠে দাড়ালো তারপরে সবাই একজন আরেকজনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছিলো।
আয়েশা:আমি তোকে বলছিলাম শখ স্যার সবকিছু ধরে ফেলছে।আজ আমরা শেষ। আমাদেরকে কলেজ থেকে বের করে দিবে।আমাকে বাসা থেকেও বেড় করে দিবে। এখন আমার কি হবে।
শখ:শুরু হয়ে গেলো তোর নাটক কিছু হবে না।চল তো।স্যার মনে হয় কোনো কারনে ডাকছে।তুই শুধু শুধু ভয় পাচ্ছিস।
মেধা:আমি কিছু জানি না আমাদের কি বললে আমরা বলে দিব তুই সবকিছু করেছিস।
শখ:আচ্ছা বাবা তোরা তাই বলিস আমি চাই না আমার জন্য তোদের কোনো সমস্যা হোক চল এবার সবাই যাই।
স্নেহা:সবাই আমাদের দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে দেখ।
শখ:ঐ সব দেখে আমাদের কোনো কাজ নেই চল।বলেই সবাই চলে গেলো।
চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here