#অদ্ভুদ_বর
#দিয়া_মনি [ DîYã MôÑî ]
#পর্ব_০৫
আজ দেরিতে ঘুম ভাঙে দিয়ার,, সকাল ৮টা,,, কলেজ ৯টায় সেজন্য দিয়া প্রথমেই ফ্রেস হয়ে নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নেয়। তারপর নিচে নামে। নিচে রওশন, রশনি রেডি হয়ে বসে আছে। রওশন একবার দিয়ার দিকে তাকালো,,, সাথে সাথে ওর বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো,,, দিয়ার চোখমুখ ফুলে গেছে কান্নার জন্য,,, চোখের নিচটা কালো হয়ে গেছে,,, হয়তো রাতে ঠিক ঠাক ঘুম হয়নি। তবুও নিজেকে সংযত করে উঠে গেলো রওশন। রশনি বলে উঠলো,,
—- কোথায় যাচ্ছো ভাইয়া..?? আমাদের নিয়ে যাবে না..?
—- তোরা বড় হয়েছিস রশনি। একা একা পথ চলতে শেখ। কলেজে কাজ আছে তাই আমি আগেই চলে যাচ্ছি তোরা তোদের মতো আয়।
চলে গেলো রওশন। দিয়া বুঝতে পারলো যে তার জন্যই রওশন এমন করেছে,,, তাই ও রশনিকে বললো,,,
—- আপু সাড়ে ৮টা বাজে। চলো কলেজে চলে যাই। নাহলে দেরি হয়ে যাবে।
—- কোনো দেরি হবে না তুমি বসে খেয়ে নাও। না খেয়ে যাওয়া যাবে না।
—- এখন খেতে ইচ্ছে করছে না। প্লিজ জোর করো না। পরে নাহয় খেয়ে নিবো। তোমাদের কলেজে তো ক্যান্টিন আছেই,, চিন্তা করো না।
দিয়ার কথা শুনে রশনির মনও শান্ত হয়। তাই ওরা ডিরেক্ট কলেজে চলে আসে। দিয়াকে নামিয়ে দিয়ে রশনি গাড়ি পার্ক করতে যায়।
—- পিচ্চি ভাবি তুমি দাড়াও আমি গাড়ি রেখে আসি। কোথাও যেও না ঠিক আছে..?
—- ঠিক আছে আপু।
রোদ থেকে সরে দিয়া একটা গাছের ছাঁয়ার নিচে দাড়ায়। আপাতত এখানে কেউ নেই। কিন্তু মিনিট পাঁচেকের মধ্যে প্রায় ১০জন এসে হাজির ৪টা মেয়ে ৬টা ছেলে,, ওদের দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে ওরা বড়লোকের বখে যাওয়া ছেলে মেয়ে,, পরনে জিন্স + গেঞ্জি,, ছেলে মেয়ে উভয়ের ভ্রু কাটা আর ভ্রুর ওপর ছোট্ট রিং জাতীয় কিছু ঝুলছে,,ছেলেগুলোর গালে সিগারেট আর মেয়েগুলোর হাতে দেশলাই। একটা ছেলে বলে উঠলো,,
—- কি নতুন নাকি..??
—- জ্বী ভাইয়া..??
—- নাম কি..??
—- দিয়ামনি। ( উনার নাম বলতে মানা করেছিলেন উনি ( রওশন ) )
—- তোমার ওরনা টা দাও।
—- কি..?? ( অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো )
—- বলেছি তোমার ওরনা দাও। আজ ওরনা ছাড়াই কলেজে ঘুরবে এটা র্যাগিং ।
—- না।
—- তোর এতো বড় সাহস সিনিওরদের মুখের ওপর না বলিস..?? শিমলা ওর ওরনাটা কেড়ে নে তো।
একটা মেয়ে এসে ওরনাটা টান দিয়ে কেড়ে নিলো। দিয়া ঝট করে দুহাত দিয়ে বুক ঢেকে ফেললো,,, তারপর কেঁদে কেঁদে অনুনয় করতে লাগলো,,
—- প্লিজজ আপু ওরনাটা দিয়ে দিন। আমি তো আপনাদের সাথে কিছু করিনি,,, তাহলে আমার সাথে এমন করছেন কেন..??
—- এই দেখ তোরা বাচ্চা মেয়েটা কাঁদছে।
দিয়া নিজের চোখের পানি মুছে সোজা হয়ে দাড়ালো,, কাধ থেকে ব্যাগটা নিচে নামিয়ে শক্ত গলায় বললো,,
—- লাস্ট বারের মতো বলছি ওরনা টা দিন। নাহলে যা হবে তার জন্য আপনারা দায়ী থাকবেন। আমি না।
আরেকটা ছেলে বলে উঠলো,,,
—- খুকুমনি দেখি হুমকি দিতেও জানে তো কি করবে মামনি..?? যা খুশি করতে পারো,,তবুও ওরনাটা আমি দিবো না।
—- তোর ওরনা তুই রাখ। ওই দেখ সিসি ক্যামেরা আমি এখন প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে গিয়ে সব বলছি,,
—- প্রিন্সিপাল আমার মামা।
—- ওহ তাহলে আমি তোর আম্মা।
বলেই এলোপাথারি চর দিতে লাগলো ছেলেটাকে। বাকি পাঁচজন কাছে আসতেই পা ছুড়ে লাথি দিতে লাগলো,,, আচমকা আক্রমণে ছেলেগুলো কিছু বুঝে উঠতে পারলো না।নিজেদের রক্ষা করতেই ব্যস্ত হয়ে গেলো। দিয়া এবার নিজের ব্যাগ থেকে গুড়ো হজমি বের করলো। তারপর মেয়েগুলোর মুখের দিকে ছুড়ে দিলো। মেয়েগুলোর চোখে হজমির গুড়া যেতেই ওরা চিল্লিয়ে উঠলো। দুইটা ছেলে দিয়ার হাত ধরে ওকে টাইট করে ধরে ফেললো। তারপর বললো,,
—- এবার কোথায় যাবি..??
—- কোথাও না। বিকজ আমি ক্যারাটে জানি।
বলেই হাত প্যাচ দিয়ে ঘুরে ছেলেগুলোর সামনে দাড়িয়ে পরলো,,, তারপর ওরনা কেড়ে নিয়ে গলায় ঝুলিয়ে হাতের চুরি ঠিক করে নিলো।
—- তোরা গুন্ডামি করার যোগ্যতা রাখলে, আমি তোদের মতো গুন্ডা জন্ম দেওয়ার যোগ্যতা রাখি। নেক্সট টাইম আমাকে দূর্বল ভেবে ভুল করবি না। মনে রাখিস দিয়া এসে গেছে কলেজে,,, যদি দেখেছি না কোনো মেয়ের পেছনে লেগেছিস,, হাত পা ভেঙ্গে রেখে দিবো। আজ ট্রেইলারটা দেখিয়ে গেলাম। শো আভি বাকি হ্যা মেরি দোস্ত।
দিয়া নিজের ব্যাগ নিয়ে রশনির দিকে এগিয়ে গেলো। টিসু দিয়ে মুখ মুছে নিলো কিন্তু ছেলেগুলোর সাথে হাতাহাতিতে, ইটের সাথে পা লেগে পা অনেকটা কেটে গেছে। রক্ত বের হচ্ছে,,, রশনি দিয়াকে এভাবে দেখে দৌড়ে ওর কাছে আসলো,,
—- পিচ্চি ভাবি কি হয়েছে তোমার..??
—- ইয়ে মানে রাস্তায় স্লিপ খেয়ে পড়ে গেছি। এক্টু কেটে গেছে,, চিন্তা করো না আপু ঠিক হয়ে যাবে।
—- ভাইয়ার কেবিনে চলো,, ওখানে ফার্স্টএইড বক্স আছে। তোমার তো রক্ত সহ্য হয়না তুমি চলো
—- ( এখন ওনার রুমে গেলে উনি বিরক্ত হবেন। আর এখন থেকে তো নিজেকে শক্ত করতে হবে। কেন যে হিউম্যানিটিস নিলাম। মেডিকেল এডমিশন কালই অফ হয়ে গেলো। ধুররর।) না আমি যাবো না। আমি রুমাল পেচিয়ে রাখছি।
—- কোনো কথা শোনো না তুমি। তোমাকে নিয়ে আর আসবো না,, এরপর থেকে ভাইয়ার সাথে আসবা।
রশনি রেগে চলে গেলো। দিয়াও খোড়াতে খোড়াতে ক্লাস খুজে ক্লাস রুমে গিয়ে বসলো। প্রথম পিরিওড শুরু হয়ে গেছে,, দিয়া খুব সুন্দর ভাবেই ক্লাস এটেন্ড করছে। বেশ কিছু বন্ধুও বানিয়ে ফেলেছে এই আধা ঘন্টায়। হঠাৎ রওশন রুমের বাইরে এসে থেমে গেলো। নিয়ন স্যার বলে উঠলো,,
—- আরে রওশন তুমি..?? তোমার ক্লাস শুরু হতে তো আরো দেড় ঘন্টা বাকি।
—- স্যার দিয়াকে একটু আমার কেবিনে পাঠিয়ে দিবেন। ইট্স আর্জেন্ট।
—- অকে রওশন তুমি যাও আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি ওকে।
রওশন আর এক মুহূর্তও দাড়ালো না। নিয়ন স্যার দিয়াকে রওশনের কেবিনে যেতে বললো,,, দিয়া উঠে আল্লাহর নাম নিতে নিতে এগোচ্ছে কারন রওশনকে দেখে এইটুকু তো বুঝে গেছে যে ও ভীষন আকারে ক্ষেপে আছে,,
—- আল্লাহই জানে সাদা যমরাজটা কেন ডাকছে,,, রাগ দেখে মনে হলো আমি ওনার খাদ্য, আর উনি হিংস্র শিকারি,, আমাকে শিকার করতে এসেছেন। আমি ওনার কোন বাড়া ভাতে ছাই ঢেলেছি একমাত্র উনিই জানেন। আল্লাহ এবারের মতো বাঁচিয়ে দাও আমাকে।
দিয়া কেবিনের দরজা খুলে ঢুকতেই রওশন বলে উঠলো,,
—- স্যারদের কেবিনে নক করে ঢুকতে হয়,,, এই মিনিমাম সেন্সটুকুও তোমার জানা নেই দেখছি।
—- সরি স্যার
—- সরি বলে কি লাভ..?? বের হয়ে যাও।
—- আপনিই তো বললেন আসতে,, আবার চলে যেতে বলছেন কেন..??( অনেকটা রেগে বললো,, কারন পায়ে ব্যাথায় পা নাড়াতেই পারছে না আর ইনি ১৪বার হাটাচ্ছেন। )
—- বাইরে গিয়ে আবার নক করে ভেতরে আসো।
—- আজব তো..?? একবার এসেছি তো। আর রিপিট করতে পারবো না।
—- না পারলে বেত দিয়ে পিটিয়ে সোজা করে দিবো তোমাকে। যাওওও
চারপাশে বেতের সমাহার,,, এতো বেত দেখে দিয়ার মুখ ভয়ে চুপসে গেলো। তাই আমতা আমতা করে বললো,,
—- যাচ্ছি,,
দিয়া বাইরে এসে দরজায় দুই তিন বার টোকা দিলো,,,
—- মে আই কাম ইন স্যার..??
—- ইয়েস কাম ইন।
দিয়া ঢুকছে আর বিরবির করছে,,,,
—- [ সারাজীবন খালি ভয় দেখায় গেলো,,, ব্যাটা বদ। আব্বুর কথা রাখতে গিয়ে নম্র ভদ্র মিষ্টি মেয়ে সাজতে হচ্ছে নাহলে তোর ব্যান্ড বাজায় ছাড়তো এই দিয়া। ] কেন ডেকেছেন স্যার..??
—- চেয়ারে বসো,,,আর পা থেকে রুমাল খোলো,,,
ভয়ে দিয়ার হাত শীতল হয়ে গেলো কারন এতোক্ষন মাথা ঘুরেছে এবার রক্ত দেখলে নিশ্চিত জ্ঞান হারাবে। আমতা আমতা করে বললো,,
—- কি দরকার স্যার..?? কোনো কাজ থাকলে বলেন করে দিচ্ছি তবে এটা করতে পারবো না।
—- ঠিক আছে আমার ঘাড়ে ব্যাথা করছে টিপে দাও।
—- এটা কলেজ স্যার আপনার বাড়ি না। আর আমি এখন আপনার স্টুডেন্ট আপনার বউ না। তাই পড়া বিষয়ক কোনো কথা থাকলে বলুন নাহলে টাটা।
—- [ এই তো আগের মতো হচ্ছো,,, এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা তারপর তুমি ঠিক হয়ে যাবে দিয়াপাখি। আর আমাকেও চিনতে পারবে,,, ] আচ্ছা যাও,,, তবে বাড়ি পৌছে নিজের বরকে সামলাতে পারবে তো…??? একবার ভেবে দেখো।
দিয়া ভয়ে ভয়ে উত্তর দিলো,,,
—- আমি খুলতে পারবো না আপনি খুলে দিন।
—- সেরিয়াসলি!! আমি খুললে কিন্তু লজ্জা পাবে।
—- স্যার আমি রুমালের কথা বলছি,,, ( দাঁতে দাঁতত চেপে উত্তর দিলো )
—- ওহ,,, তো আমি খুলবো কেন..?? আমি কি তোমার বর নাকি..??স্যারকে পায়ে হাত দিতে বলছো,, সাহস তো কম না।
—- মাফ করুন স্যার। আমি নিজেই খুলছি,,,
পায়ের দিকে তাকাতেই দিয়ার মাথায় চক্কর দেয়। তবুও হাত দিয়ে রুমাল খুলতে যায়,,, ওমনি রওশন এসে দিয়ার হাত ধরে ফেলে,,,
—- স্টুডেন্ট যখন বিপদে পড়ে তখন তাকে সাহায্য করা স্যারদের কর্তব্য। দাও আমিই করে দিচ্ছি,,,
দিয়ার পা আরেকটা চেয়ারের ওপর উঠিয়ে আলতো করেরে রুমাল খুলতে লাগলো। দিয়া চোখ বুজে আছে। রওশন দেখলো আঘাতের জায়গায় একটা কাঁটা ফুটে আছে,,, আর কেয়ারলেস মেয়েটা কাঁটাসহ পেচিয়ে রেখেছিলো রুমালটা। হাত দিয়ে কাঁটা বের করা সম্ভব না,,, আর ওর ধারে কাছে চিমটাও নেই যে চিমটা দিয়ে কাঁটা বের করবে,,, তাই রওশন দিয়ার পায়ে নিজের মুখ মিশিয়ে দিয়ে দাঁত দিয়ে টেনে কাঁটাটা বের করে দিলো,,, দিয়া নিজের পায়ে রওশনের দাড়ির খোচা অনুভব করে তাড়াতাড়ি চোখ খুলে ফেললো,, আর এক ঝটকায় পা নামিয়ে ফেললো,,
—- পাগল হয়ে গেছেন..?? মাথার সব তার লুজ নাকি..?? পায়ে কেউ মুখ দেয়,,, মনে চাচ্ছে এক ঘুসিতে মুখ ফাটিয়ে দেই,,, বেয়াদব ছেলে
রওশন দিয়ার মুখে এসব শুনি বেশ খুশি হয় কারন দিয়া ঠিক আগের মতো করে কথা বলছে,, ঠিক রওশনের দিয়াপাখির মতো কথা বলছে। তবুও গম্ভির স্বরে বললো,,
—- স্যারকে এসব বলার শাস্তি কি জানো..?? দাও পা দাও।
একটানে দিয়ার পা আবার চেয়ারে উঠিয়ে নিলো তারপর স্যাভলন দিয়ে পা ড্রেসিং করিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিলো।
—- বসো আমি খাবার আনছি।
—- আমি খাবো না।
—- তুমি খাবে, তোমার ঘাড় খাবে। চুপচাপ বসো নাহলে আমার বেতের থেরাপি প্রয়োগ করবো। স্টুডেন্ট পিটানোয় এই কলেজে এমনিই আমি ফেমাস হয়ে আছি ।
—-আনুন আনুন। গিলে নিবো সব। পারলে আপনাকেও পানি ছাড়া গিলে ফেলবো নো প্রবলেম।
—- হুয়াটটটট। হুয়াট ডিড ইউ সে,, রিপিট দ্যাট।
—- নাথিং স্যার, আই ওয়ান্ট টু টেল দ্যাট আই এম হাংরি। সো প্লিজ ব্রাইং সাম ফুডস।
রওশন কেবিন থেকে বেরিয়ে হাসতে লাগলো। রশনি তখন নিঝুমের সাথে রওশনের কাছেই আসছিলো,,, রওশনকে এভাবে মুচকি মুচকি হাসতে দেখে দুজনেই ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়। রশনি মনে সাহস জুগিয়ে বললো,,,
—- স্যার আপনাকে কি ভুতে ধরেছে..?? এভাবে হাসছেন কেন..??
—- তোর পিচ্চি ভাবি ফর্মে আসছে,,,, আবার সেই গুন্ডি গুন্ডি ভাবটা ফিরে এসেছে।
—- মানে পিচ্চি ভাবি আবার আগের মতো হয়ে যাবে..??
—- মনে তো হয়। তো নিঝুম তুমি রশনির সাথে..???
নিঝুম মাথা চুলকে বললো
—- না মানে স্যার,,,,
—- দুইদিন পর আমি তোমার বউ এর বড় ভাই হবো। স্যার বলার দরকার নেই ভাইয়া বলেই ডাকো।
—- আসলে ভাইয়া আমার তো পড়া শেষের পথে। এক বছর পর আব্বুর ব্যবসার দেখাশোনাই করবো। রশনির কথা বাড়িতে বলেছি। আব্বু আম্মু রাজি।
—- তোমার আব্বু আম্মুকে আমাদের বাড়ি আসতে বলো,,, এই বিয়েতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে এই ডাইনিটাকেই তোমার পছন্দ হলো। এ তো তোমার লাইফ শেষ করে দিবে।
রশনি রেগে একাকার,,,
—- এটা কিন্তু ঠিক না ভাইয়া। আমি ডাইনি হলে তুমি জল্লাদ। পিচ্চি ভাবির যমরাজ।
—- হুম। আফসোস তোর পিচ্চির ভাবির কিছু মনে নেই। আচ্ছা তোরা ঘুরতে যা। এই নে ৩হাজার টাকা। আমি দিয়ার জন্য খাবার নিয়ে আসি।
—-পিচ্চি ভাবির পা..??
—- ব্যান্ডেজ করে দিসি টেনশন করিস না। এখন খাওয়াতে হবে। আর থ্যাংকস তখন ওর খবরটা দেওয়ার জন্য।
—- মাই প্লেজার ভাইয়া।
রওশন খাবার এনে দেখে দিয়া টেবিলের ওপর মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে গেছে। রওশন আস্তে আস্তে দিয়াকে উঠিয়ে টেবিলের ওপর বসিয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে ডাকতে থাকে।
—- দিয়া উঠে খেয়ে নাও। তোমার পছন্দের চিলি চিকেন।। দিয়া।
দিয়া চোখ ডলতে ডলতে ওঠে,,,
—- ষাড়ের মতো ডাকেন কেন। সারাদিন দিয়া দিয়া। নিন তাড়াতাড়ি খাইয়ে দিন।ঘুমাবো আমি। প্যা প্যা করে মাথা খেয়ে ফেললো,,, শান্তিতে ঘুমাতেও দেয় না।
রওশন ঠোট চেপে হাসছে দিয়ার রাগ দেখে। তারপর দিয়াকে খাইয়ে দিতে লাগলো। হঠাৎ দিয়ার মাথাটা ব্যাথা করতে শুরু করে,,,
—- মাথা ব্যাথা করছে। উফ সহ্য করতে পারছি না। তলিয়ে যাচ্ছি আমি। বাঁচান আমাকে। বাঁচান।।।
সেন্সলেস হয়ে গেলো দিয়া। রওশন দিয়াকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে কেঁদে দিলো।
—- তোমার কিচ্ছু হবে না দিয়াপাখি। খুব শ্রীগহই তোমার অপারেশন করাবো আমি। তোমাকে ঠিক করে তুলবো আমি।
রওশন দিয়ার চোখে মুখে পানির ছিটা দিতে লাগলো।না খাওয়া আর ব্যাথার কারনে শরীর দূর্বল হয়ে গেছে। তার ওপর রক্তের ভয়। দিয়া চোখ পিটপিট করে খোলে,,,
—- আপনি এখানে..?? আমার কি হয়েছে..??
—- কিছু না। ঘুমিয়ে গেছিলে ক্লাসে। তাই তুলে আনলাম। এখন খেয়ে নাও।
রওশন দিয়ার মুখে বিরিয়ানি আর লেগপিস তুলে দিচ্ছে আর দিয়া টুপটুপ করে গিলছে। প্লেটের অর্ধেক শেষ।
—- আর খাবো না। প্লিজ জোর করবেন না।আর খেতে পারবো না আমি।
—- ঠিক আছে।
রওশন দিয়ার প্লেট থেকে খেতে শুরু করলো,,,
—- আরে কি করছেন,,, ওটা আমার এঁটো খাবার।ইশ আপনি খাচ্ছেন কেন। রেখে দিন আমি পরে খেয়ে নিবো।
রওশন দিয়ার উদ্ভট কথা শুনে ওর ঠোটে আলতো করে চুমু খেলো।
—- এখন এটা আমার এঁটো ঠোট। তুমি এ ঠোট দিয়ে কিছু খাবে না।
—- খাবো। বরের এঁটো খেলে ভালোবাসা বাড়ে। ( বলেই জিব্হায় কামড় দিলো দিয়া। )
রওশন হেসে বললো।।
—- তোমার জন্য এই নিয়ম হলে আমার জন্য নিয়ম আলাদা হবে কেন..?? রাতের জন্য সরি। ( তুমি ঠিক হয়ে যাচ্ছো দিয়াপাখি। আর কোনো কিছু আমাদের আলাদা করতে পারবে না। তুমি আবার আগের মতো আমাকে বুঝতে পারবে। চিনতে পারবে তোমার রওশনকে। )
চলবে,,,,
[ আজকের পার্টের অনেক জায়গায় এমন কিছু শব্দ ব্যাবহার করেছি যাতে একটা রহস্য কাজ করছে,,, তাই আপনাদের বলে রাখি যে দিয়ার একটা অতিত আছে।খুব শ্রীগহই সেটা সামনে আসবে।