#রাগী_টিচার_যখন_রোমান্টিক_হাসবেন্ড
#পর্ব_১৭
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
–আচ্ছা মেয়ে’টা বাসায় আসতে-ই পারলো না।তোর শুরু হয়ে গেলো।
–ওমনি তোমার গায়ে ফোসকা পরে,গেলো মা।ওকে তো একটা কিছু বলতেই দাও না।যতো সব।
বলেই রেগে মুনতাহা বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলো।
–কি হয়েছে আম্মু আপু রেগে আছে কেনো।
–আরে আর বলিস না।তোর বাবা তোর জন্য চকলেট নিয়ে আসছে।আর মুনতাহার জন্য আইসক্রিম। সেটা নাকি ওর পছন্দ না।উনি নিবেন না।চকলেট নিবে।তোর বাবা দেয় নাই। তাই রেগে আছেন। মহারানী।
–আচ্ছা দিয়ে দিলে কি হতো।শুধু শুধু আপুকে রাগিয়ে দিলে তোমরা।বলে-ই চলে গেলো শখ।
–কি হয়েছে মেয়েটার আমার মনে হলো মন খারাপ।বলেই তিনি নাস্তা তৈরি করতে চলে গেলেন।
এদিকে মুনতাহা রাগে গজগজ করতে করতে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।কোথায় যাচ্ছে,সে নিজে’ও জানে না।তাই ভাবলো একটু ফুচকা খেলে মন্দ হয় না।ফুচকা আমার খুব ফেভারিট।খেলে মন টা ভালো হয়ে যাবে।যেই ভাবা সেই কাজ।মুনতাহা ফুচকার দোকানের দিকে দৌড় দিলো।হঠাৎ করে ঝড়ের গতিতে একটি গাড়ি এসে মুনতাহাকে ফেলে দিলো।
–এই ছাগলের বাচ্চা। চোখ কি হাতে নিয়ে গাড়ি চালাস।নাকি গাড়ি সহ পুরো রাস্তা তোর বাপের।বলল মুনতাহা।
মুনতাহার বকবকানি শুনে গাড়ি থেকে বেড়িয়ে এলো একজন সুদর্শন যুবক। দেখতে বেশ লম্বা। ফর্সা শরীলে কালো রং এর শার্ট-টি বেশ মানিয়েছে।যে কেউ প্রেমে পড়তে বাধ্য এই লুক দেখলে।এক কথায় দেখতে মাশাল্লাহ।
–হাউ ডিয়ার ইউ।তোমার সাহস হয় কি করে।আমাকে এসব বলার,তুমি জানো আমি কে।চাইলে তোমার কি করতে পারি।
–তুই আবার কে তুই হলি চমলক্ক মাল।একে তো অন্যায় করছিস।আবার বড় বড় কথা বলছিস।রাস্তা সরকারের তোর বাপের না। এখন থেকে চোখ কপালে তুলে না রেখে গাড়ি চালাবি ওকে।বলেই মুনতাহা চলে যেতে লাগলো।
সাথে সাথে যুবকটি মুনতাহার হাত খপ করে ধরে ফেললো।টেনে মুনতাহাকে তার সামনে দাঁড় করিয়ে দিলো।
–হেই তুমি জানো আমি কে।
–তুই কচু।তুই ঘোড়ার ডিম।ছাড় আমাকে তোর সাহস হয় কি করে আমাকে ছোঁয়ার।
–আজ পর্যন্ত তৌসিফ আহমেদ শুভোর সাথে,কেউ গলা তুলে তো দুর জোরে কথা বলে নাই আর তুমি কি না বাচ্চা মেয়ে হয়ে,আমি সমানে তুই তুগারি করে যাচ্ছো।যা ইচ্ছে তাই বলছো।এবার দেখো আমি তোমার কি হাল করি।শুভ এবার মুনতাহার দিকে এগোতে যাবে তার আগেই মুনতাহা শুভোর গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।
–বেয়াদব লোক।একে তো অন্যায় করছেন।তারপরে আমাকে না বলে আমার অনুমতি ছাড়াই আমাকে ধরে আছেন।আবার উলটা পালটা কথা বলছেন।শালা তোকে আজ তাজাই চিবিয়ে খেয়ে ফেলবো।
শুভ গালে হাত দিয়ে বললো।
–হায় কি তেজ তোমার। তুমি যদি যানতে আমি কে এমন দুঃসাহস কখনো দেখাতে না।যাই হোক তোমার সাহস আছে,বলতে হবে।বেশ ভালো লাগছে।চাইলে তুমি আমার এক রাতের সঙ্গী হতে পারো।
–কুত্তার….
–চুপ একদম চুপ আমাকে যা বলার বলবে।বাবা মা একদম টানবে না।তুমি জানো আমার এক রাতের সঙ্গী হবার জন্য কতো মেয়ে পাগল। আর সেখানে আমি তোমাকে নিজে অফার করছি।
–তোর বাপের মেলা টাকা থাকতে পারে।বাপ যেমন ছেলে’ও তেমন বাপ মায়ের শিক্ষা ছাড়া কোনো সন্তান এমন হতে পারে না।তুই টাকা দিয়ে সবকিছু কিনতে পারবি কিন্তু,আমি মুনতাহাকে না ওকে।
–ওহ,মুনতাহা নাইস নেম।প্রচুর ভাল্লাগছে।আই লাভ ইউ মুনতাহা। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। একদিনের জন্য না সারাজীবন এর জন্য চাই তুমি কি আমার বউ হবে।
–হাহাহা।গরু চোরের শখ কতো রে।বামন হয়ে চাঁদে হাত বাড়াতে চাস।শালা লুচ্চা বেডা মেরে দাঁত ভেঙে ফেলবো। যা মুখের সামনে থেকে সর।
–ইস এভাবে বলো না।এই খানে লাগে।(বুকে হাত দিয়ে দেখিয়ে)
–দুর বলেই মুনতাহা চলে গেলো।মুনতাহার পেছনে পেছনে শুভ’ও চলে গেলো।
–মামা সুন্দর করে দুই প্লেট ফুসকা বানিয়ে দেন।
–আরে মুনতাহা,মামনি যে কতোদিন পরে তোমাকে দেখলাম।আগে কতো আসতে এখন আসো না।আগে থেকে তুমি অনেক বদলে গেছো মামনি।আগে কতো ভালো ছিলে।এখন কেমন জানি খুব রাগি হয়ে গেছো।
লোকটির কথা মুনতাহা কিছু বললো না শুধু হাসলো।
–কি রাক্ষসি মেয়ে রে বাবা।একসাথে দুই প্লেট,ফুচকা খাবে।এই মেয়ে যার কপালে আছে তার কপাল পুড়ছে। মনে হচ্ছে সেই হতো ভাগা টা আমি।পেছনে থেকে বলে উঠলো শুভ।
মুনতাহা পেছনে ঘুরে শুভকে দেখে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।
–বেয়াদব ছেলে আপনি এখনো যান নাই। আবার আমাকে ফলো করে চলে আসছেন।
–মটে’ও না।তুমি কি এসে গেছো যে আমি তোমাকে ফলো করবো,আমি ফুচকা খেতে আসছি।এই মামা আমাকে দশ প্লেট ফুচকা বানিয়ে দিন তো।
–দশ প্লেট মানুষ নাকি দানব। (অবাক হয়ে)আর কোনো কথা বললো না মুনতাহা।
চুপচাপ দুজন মিলে ফুচকা খেলো কেউ কারো সাথে কথা বললো না।টাকা দেওয়ার সময় বাধলো ঝামেলা।
–এই রে আমি তো বাসা থেকে রাগ করে বেড়িয়েছি।টাকা নিয়ে আসি নাই তো।এখন কি হবে।
–সমস্যা নাই মামনি।আমাগো বাসা তো দূরে না।তুমি পরে এক সময় এসে দিয়ে যাইয়ো কেমন।
–খবরদার মামা ফুচকা বাকি দিবেন না।সব এই মেয়ের ধান্দা ফ্রিতে ফুচকা খাওয়ার জন্য।
–তুই খাচ্ছিস খা না ভাই।তুই কেনো আমাদের কথার মাঝে বা পা চালাচ্ছিস।
–আমি কোথায় বা পা চালাইলাম। আমি তো এই গাড়ি চালিয়ে এসেছি।(গাড়ি দেখিয়ে বললো)
–আপনি জাস্ট অসয্য।বলেই মুনতাহা বাসার দিকে চলে গেলো।
–আমি জানি তুমি আসবে না।তাই তোমার হয়ে বিল’টা আমি দিয়ে দিলাম। বলেই, শুভ বিল মিটিয়ে দিয়ে চলে গেলো।
পরের দিন সকাল শখ একটা সুন্দর লাল টকটকে রং এর শাড়ি পড়েছে। সাথে ম্যাচিং,চুরি,গহনা,মাথায় বেলি ফুলের মালা।ঠোঁটে লাল টকটকে লিপস্টিপ,পায়ে আলতা,হালকা মেকাপে শখকে অসাধারণ লাগছে।
–মাশাল্লাহ।আমার মেয়েকে পরীর মতো লাগছে।কারো যেনো নজর না লাগে।(বলেই মিসেস রাহেলা বেগম শখের হাতে কামড় বসিয়ে দিলো)
–আম্মু কি যে বলো না।আজ আমাদের কলেজে অনুষ্ঠান আছে।আমি নৃত্য দিব সেজন্য এই সাজ,নাহলে এই সব ঝামেলা করতাম নাকি।
–তোকে বেশ সুন্দর লাগছে।আল্লাহ আমার সেই ছোট্ট মেয়েটি আজ কতো বড় হয়ে গেছে।
–হয় আপনাদের একটাই মেয়ে আর বাকি টা মারা গেছে।
–ছি,মুনতাহা বাজে কথা বলবি না।তোকে’ও মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে। তুই আমার বড় পরী। আর শখ আমার ছোট পরী।
–হয়েছে শখ চল আমি’ও যাব তোর সাথে বাসায় একা একা থাকতে আর ভালো লাগছে না।
তারপরে দুজন মিলে বেড়িয়ে পড়লো।
–শুন তুই কলেজে গিয়ে একদম আমাকে একা রেখে কোথাও যাবি না।আমার ফ্রেন্ডরা আসবে,তারপরে তুই যাবি কেমন।
–আচ্ছা আপু।
চলবে……