পুতুল খেলা – পর্বঃ13 & End

0
365

#পুতুল_খেলা
#পর্বঃ১২ ও শেষ।
#লেখিকাঃদিশা মনি
‘পুতুল কি বেচে আছে নাকি মারা গেছে?’
মোর্শেদের প্রশ্নটা শুনে রিপ্তি কি বলবে ভেবে পাচ্ছিল না। মোর্শেদ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল রিপ্তির উত্তরের আশায়।
‘তোমার বাবা গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তাকে অনেকবার জিজ্ঞেস করা হইছে পুতুল ব্যাপারে। তোমার বাবা কিছু বলেনি। আমি তোমার আমান ভাইয়া আমরা অনেক খুজেছি বাট,,,,কোন লাভ হয়নি।’
মোর্শেদ বুঝতে পারে পুতুলকে ফিরে পাওয়ার আশা আপাতত নেই৷ তাই মোর্শেদ আর কিছু জিজ্ঞেস করে না। শুধু আল্লাহর কাছে সে তার বোনকে ফেরত পেতে চায়।

৫ মাস পর,
রিপ্তি ও আমানের সম্পর্ক এখন অনেক স্বাভাবিক। রিপ্তি সবকিছু ভুলে আমানকে নিয়ে সুখে আছে। আমানও রিপ্তির সাথে বেশ ভালোই আছে। দুদিন আগেই রিপ্তি জানতে পেরেছে সে মা হতে চলেছে। সব মিলিয়ে রিপ্তি এখন অনেক খুশি।
মোর্শেদ এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরার ট্রাই করছে। প্রেমা এখনো আগের মতোই মোর্শেদকে বিরক্ত করে। তার মন পাওয়ার চেষ্টা করে। মোর্শেদের এখন আর এসব খারাপ লাগে না। মনে মনে এখন প্রেমাকে পছন্দ করতে শুরু করেছে মোর্শেদ।
মোর্শেদ আজ ঠিক করেছে প্রেমাকে নিজের মনের কথা বলবে। On the other hand, প্রেমা হাজার চেষ্টা করেও মোর্শেদের মন পেতে ব্যর্থ হওয়ায় হাল ছেড়ে দিয়েছে। কোকা কোলা খেতে খেতে নিজের বান্ধবীদের উদ্দ্যেশ্যে বলছিল,
‘আমি মোর্শেদকে পাবো না। ও আমায় ভালো বাসে না। আমি এই city থেকে চলে যাবো।’
প্রেমার কথা শুনে তার বান্ধবীরা বলে,
‘তুই এখন মাতাল হয়ে গেছিস কোকা কোলা খেয়ে। তাই এসব বলছিস। কত করে বললাম এত কোকা কোলা খাস না।’
‘আমি আরো অনেক কোকা কোলা খাবো। আমি আরো মাতাল হতে চাই। মাতাল হবো প্রেমের মাতাল।’
মোর্শেদ দূরে দাড়িয়ে সব দেখছিল। প্রেমাকে এভাবে কোকা কোলা খেতে দেখে মোর্শেদ ছুটে আসে। কোকা কোলার বোতল কেড়ে নিয়ে বলে,
‘এত কোকা কোলা খাচ্ছ কেন? You are drunk.’
প্রেমা বাকা হাসে।
‘আমি আরো কোকা কোলা খাবো। আরো নেশা করব।’
মোর্শেদ এবার নিজেও এক বোতল কোকা কোলা খেয়ে নেয়। আগে কখনো মোর্শেদ কোকা কোলা খায়নি। তাই একটু খেয়েই তার নেশা হয়ে যায়।
নেশায় ঢলতে থাকে মোর্শেদ। নেশার ঘোরে প্রেমাকে বলে দেয়,
‘I Love You Prema.’
প্রেমা হতবাক হয়ে মোর্শেদের দিকে তাকায়।
‘আমি কি ঠিক শুনলাম? তুমি এইমাত্র আমায় প্রপোজ করলে? নাকি নেশার ঘোরে…’
প্রেমার কথা শেষ হওয়ার আগে মোর্শেদ তাকে জড়িয়ে ধরে বলে,
‘I hug you. I Love you.’
প্রেমা এবার অবাকের চরম শিখরে পৌছে যায়। মোর্শেদকে কিস করে বলে,
‘I kiss you. I Love you.’
দুজনের ভালোবাসার সাক্ষী হয় ভার্সিটির ছাত্র থেকে স্টুডেন্ট সবাই।
২৩.
আমানের সাথে ছাদে বসে ছিল রিপ্তি। তাদের সম্পর্ক এখন আগের থেকে অনেক ভালো। আমান রিপ্তিকে প্রশ্ন করে,
‘তুমি মন থেকে আমায় ক্ষমা করে দিতে পেরেছ তো?’
‘অবশ্যই। নাহলে কি আজ আমি এভাবে আপনার বুকে থাকতাম? আমাদের নতুন অতিথি পৃথিবীতে আসতে চলেছে। আমাদের এখন তাকে নিয়ে ভালো থাকতে হবে। অতীতের কথা ভেবে লাভ নেই।’

সিরাজ ও মুনিয়া এখন অনেক ভালো আছে। মাঝখানে মুনিয়ার প্রাক্তন স্বামী ঝামেলা করতে চেয়েছিল বাট এখন তারা সব ঝামেলা থেকে মুক্ত। সিরাজেও আজও অনুশোচনা হয় তার বাবার কথা শুনে রিপ্তির সাথে মিথ্যা নাটক করার জন্য।
মুনিয়া সিরাজের মন খারাপ দেখে প্রশ্ন করে,
‘এভাবে মন খারাপ করে বসে আছো কেন?’
‘আমার খুব খারাপ লাগে। আমি রিপ্তি, মোর্শেদ ওদের সাথে কত অন্যায় করছি। এখন যদি প্রায়শ্চিত্ত না করি তাইলে কোনদিনও শান্তি পাবো না।’
‘কি ভাবে তুমি নিজের প্রায়শ্চিত্ত করবা?’
‘আমি ভাবছি আমি এবার এমন কিছু করব যাতে সবাই খুব খুশি হয়। তাহলেই আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত হবে। আমি আজ একবার জেলে যাবো। বাবার সাথে দেখা করব। তার সাথে কিছু জরুরি কথা বলতে হবে।’

মাতাল হয়ে টলতে টলতে বাড়িতে ফেরে মোর্শেদ। মোর্শেদের এই অবস্থা দেখে বাড়ির সবাই খুব অবাক হয়। আমান প্রশ্ন করে,
‘তোর এই কন্ডিশন কিভাবে হলো? তুই তো ড্রিংক করিস না। তোর বডি থেকে তো কোকা কোলার গন্ধ আসছে। তুই কোকা কোলা খেয়েছিস কেন?’
মোর্শেদ আর কিছু না বলে অজ্ঞান হয়ে যায়। সবাই গিয়ে তাকে টেনে তোলে then রুমে নিয়ে যায়।
কয়েক ঘন্টা পর,,,
মোর্শেদের জ্ঞান ফেরত আসে। সে নিজের রুমে সবাইকে এভাবে দেখে বলে,
‘তোমরা সবাই এখানে কি করছ? আমি তো ভার্সিটিতে ছিলাম এখানে কিভাবে এলাম?’
সিতারা বেগম রেগে গিয়ে বলেন,
‘এটা কি করলি তুই? কোকা কোলা খেয়ে সবার সামনে মাতাল,,,,’
‘আমার কিছু মনে নেই কি হয়েছিল।’
At that time, প্রেমার বান্ধবীরা সবাই তাকে ধরে নিয়ে রুমে প্রবেশ করে। বলে,
‘মোর্শেদ আর প্রেমা একে অপরকে ভালোবাসে। আজ সবার সামনে কোকা কোলা খেয়ে মাতাল হয়ে প্রেমের কথা স্বীকার করছে। আপনারা ওদের বিয়ের ব্যবস্থা করুন।’
সিতারা বেগম মেয়েগুলোর কথা শুনে অবাক হয়৷ মোর্শেদকে প্রশ্ন করে,
‘ওরা যা বলছে তা কি সত্য?’
মোর্শেদ চুপ থাকে। প্রেমা বলে,
‘মৌনতাই সম্মতির লকখন।’
মোর্শেদ বলে ওঠে,
‘হ্যা আমি ওকে ভালোবাসি।’
সিতারা বেগম প্রথমে গম্ভীর রূপ করে থাকলেও পরক্ষণেই smile করে বলেন,
‘আমান তোমার ভাইয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করো। আমি চাইনা ওরা কোন হারাম রিলেশনে থাকি। আর তোমাদের বলছি আর কখনো কোকা কোলা খেয়ে নেশা করোনা।’
২৪.
At last, সেই শুভদিন চলে আসে। মোর্শেদ ও প্রেমার বিয়ে হয়ে যায়। পরিবারে বইছে খুশির আমেজ। At the same time, সিরাজ এসে বলে,
‘মোর্শেদের জন্য অনেক ভালো একটা গিফট এনেছি। জানি আমি অন্যায় করছি তোমাদের সাথে। আজ মন থেকে ক্ষমা চাইছি। তুমি ভেতরে এসো।’
সিরাজের কথা শুনে বাইরে থেকে একটি কিশোরী মেয়ে ভিতরে আসে। বয়স ১৬-১৭ হবে। মেয়েটা এসেই ভাইয়া ভাইয়া বলে মোর্শেদের কাছে ছুটে যায়। মোর্শেদ কিছু বুঝতে পারে না।
সিরাজ বলে,
‘এটাই তোমার বোন পুতুল। আমি বাবাকে অনেক বোঝানোর পর বাবা বলেছিল ওকে কই বিক্রি করছে। Then আমি গিয়ে ওকে নিয়ে আসি। আমার উপর তোমাদের আর কোন রাগ নেইতো?’
মোর্শেদ তার বোন পুতুলকে জড়িয়ে ধরে। বলে,
‘আমার আর কারো প্রতি কোন অভিযোগ নেই। নিজের বোনকে ফেরত পাইছি এটাই অনেক।’
মোর্শেদ তার স্ত্রী প্রেমা ও বোন পুতুলকে নিয়ে একটি সুখী জীবনের স্বপ্ন দেখে।
২৫.
রিপ্তি ও আমানের কোল আলো করে একটি মেয়ের জন্ম হয়। তারা তাদের সদ্যজাত মেয়েকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখে।
হঠাৎ করে রিপ্তি আমানকে এমন একটি কথা বলে যা শোনার জন্য আমান প্রস্তুত ছিল না। রিপ্তি বলে,
‘আমার মনে হয় এই খেলা এখনো শেষ হয়নি। হয়তো এখান থেকে খেলাটা নতুনভাবে শুরু হবে। আমাদের উচিৎ নিজেদের মেয়েকে নিয়ে অনেক দূরে কোথাও চলে যাওয়া।’
আমান প্রশ্ন করে,
‘এসব কি বলছ তুমি? কি খেলা হবে?’
রিপ্তি খুব ভীত ছিল। কাপা কাপা গলায় বলে,
‘পুতুল খেলা আবার নতুনভাবে শুরু হবে। আরো ভয়ানক খেলা এই শেষ থেকে আবার শুরু হবে।’
✨✨✨✨সমাপ্ত✨✨✨✨✨

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here