প্রনয়-পর্ব 27

0
812

#প্রনয়
#নুসরাত সুলতানা সেজুথি
পর্ব–২৭
সেঁজুতি রেগেমেগে আগুন।বিরক্তিতে তেঁতো, মুখ থেকে গলবিল সব।কটমটে দৃষ্টিতে চেয়ে চেয়ে দেখছে রুদ্রকে।রুদ্রর সে খবর নেই।সে ব্যাস্ত।অনেক ব্যাস্ত।এতই ব্যাস্ত যে দুনিয়ার ব্যাস্ততম পুরুষ হিসেবে এই মুহুর্তে নিঃসন্দেহে তাকে আখ্যা দেয়া যাবে।সেঁজুতি এখন রুদ্রর কেবিনে।রুদ্রর মুখোমুখি রাখা উল্টো দিকের চেয়ারটায় বসিয়ে রাখা হয়েছে তাকে।আজ অফিস আসার পরপরই তার ডাক পরলো।আর সেই যে ঢুকলো,বের হওয়ার নাম নেই।রুদ্র এক সেকেন্ডের জন্যেও ছাড়লোনা।সেঁজুতির সামনে মেলে রাখা একটি হলুদ ফাইল।হাতে পেন্সিল।গত এক ঘন্টা যাবত এটাকে দেখে টেখে ফুলস্টপ গুলোও মুখস্থ হয়ে গেছে।সেঁজুতি আগের কয়েকবারের মতো এবারেও রুদ্রর দিকে ফাইলটা ঠেলে দিলো,
‘ চেকিং শেষ স্যার!
রুদ্র ফোন ঘাটছে।রীতিমতো আয়েশ করে হেলান দিয়ে চেয়ারে।স্ক্রিনে চোখ রেখেই বলল,
‘আবার চেক করুন।
সেঁজুতি উদ্বেগ নিয়ে বলল ,
‘স্যার এই নিয়ে সাত বার চেক করেছি।
সেঁজুতি যতটা উদগ্রীব,রুদ্র ঠিক ততটাই শান্ত,
‘প্রয়োজনে আট বার করলেন।এনি প্রব্লেম?
“না।
দাঁতে দাঁত চেপে আবারও ফাইলের দিক চোখ রাখলো সেঁজুতি। ঠিক জানে এসব রুদ্রর শয়তানি।এক ঢিলে দুই পাখি মারার ধান্দা।তাকে চোখের সামনে বসিয়ে রাখাও হলো,আবার কাজের ছুঁতোয় বিরক্তও করা যাবে।
রুদ্রর সামনে এভাবে বসে থাকায় যতোটা অস্বস্তি হচ্ছে, এই নিয়ে রুদ্র ঠিক ততটাই মজা পাচ্ছে।
তাও কিচ্ছু করার নেই। বসের অর্ডার। মানতে হবেই।
হঠাৎ মুঠোফোন বাজলো সেঁজুতির।টেবিলের ওপর রাখা ছিলো ফোন।সেঁজুতি গলা উঁচিয়ে দেখলো
আবিরের নাম স্ক্রিনে ভাসছে।
রিসিভ করতে ধরবে রুদ্র খপ করে হাত চেপে ধরলো।কঠিন কন্ঠে বলল,
” কাজের সময় ফোনে কথা বলা এলাউড না। জানেন না?
রুদ্র হাত সরিয়ে নিলো।সেঁজুতি আর রিসিভ করলোনা।ফাইলে চোখ রেখেই বিড়বিড় করলো,
” কাজ না ছাই।আবিরের নাম দেখেই এরকম ব্যাবহার করলেন।সেটা আমি ভালোই জানি।
রুদ্র সেসব শোনেনি।সে ব্যাস্ত চোরা পথে সেঁজুতির ছবি তুলতে।এই যে সেঁজুতি কেমন মুখ বেঁকাচ্ছে,বিড়বিড় করছে,গালিও দিচ্ছে হয়তো! কখনও আড়চোখে তাকাচ্ছে, সব রুদ্র ক্যামেরাবন্দী করেছে।মেয়েটার এরকম অনেক ছবি আছে তার ফোনে। সিলেটে যেদিন সেঁজুতি মন দিয়ে ঝর্না দেখছিলো?সেদিনও লুকিয়ে ছবি তুলেছে ওর।বোঁকা মেয়েটি টেরই পায়নি।হা হা। রুদ্র মনে মনে হাসলো।আবার মুঠোফোন বাজলো।সেঁজুতি এবার বিরক্ত হলো আবিরের ওপর। ধরছেনা যখন, সে নিশ্চয়ই ব্যাস্ত।আবির এটা বুঝে নিতে পারেনা?ফোনের দিক চাইতেই দেখলো তার নয়,রুদ্রর ফোন বাজছে।সেঁজুতি ছোট্ট শ্বাস ফেলে চোখ নামিয়ে নেয়।রুদ্র ফোন রিসিভ করলো।
“ইয়েস মিস ওয়ালিহা…হোয়্যাট এবাউট ইউ?
মেয়ের নাম শুনে সেঁজুতি চোরা চোখে চাইলো।রুদ্র হেসে হেসে বলছে,
” শিওর।আ’ম কামিং। যাস্ট গিভ মি ফিফটিন মিনিটস।
লাইন কেটে সেঁজুতির দিক তাকাতেই সেঁজুতি তৎপর চোখ সরায়।রুদ্র বুঝতে পেরে ক্ষীন হাসলো।বলল,
” মিস সেঁজুতি।আপনি আপনার ডেস্কে যান।
আমাকে বেরোতে হবে।আর আজকে হাফ টাইম সো নিউ প্রজেক্টের ফাইল টা চেক করে রেখে তারপর যাবেন। ক্লিয়ার?
সেঁজুতি এক পাশে ঘাঁড় নাঁড়লো।
রুদ্র কেবিনের দরজা অব্ধি গিয়ে আবারো ফিরে তাকায়। সেঁজুতি ফাইলের পৃষ্ঠা গোছাচ্ছে।রুদ্র বরফ কন্ঠে ডাকলো
“সেঁজুতি?
সেঁজুতি ভেবেছিলো রুদ্র বেরিয়ে গেছে।ডাক শুনে চমকে তাকালো ‘ হ্যা স্যার?
রুদ্র কিয়ৎক্ষন চেয়ে থেকে বলল,
” ভালোবাসি।
সেঁজুতির মুখ হা হয়ে এলো।রুদ্র অপেক্ষা করলোনা উত্তরের।গোটা গোটা পা ফেলে বের হলো।সেদিকে হাবলার মতো চেয়ে থাকলো সেঁজুতি।
_____
রিক্সার সাথে রোমাঞ্চকর একটা ব্যাপার আছে।সেঁজুতির সব থেকে পছন্দ রিক্সাচড়া। কেমন চারপাশের ঠান্ডা বাতাস চোখ মুখে ছঁুয়ে যায়।চুল ওড়ে।মুক্ত শ্বাস নেয়া যায়।প্রত্যেকদিনের মতো আজও অফিস শেষে রিক্সা করে বাসায় ফিরছে সেঁজুতি। ধানমন্ডি ০৮ এর কাছাকাছি আসতেই চোখ পরলো রাস্তার পারে।রুদ্রর আভিজাত্যপূর্ণ সেই কালো গাড়িটি। মাত্রই এসে থেমেছে একটা রেস্টুরেন্টের গেটের কাছে। গাড়িটি দেখে একটুও চিনতে অসুবিধা হলোনা সেঁঁজুতির।আগ্রহ নিয়ে চেয়ে থাকলো সেদিকে। গাড়ির দরজা খুলে রুদ্র আগে নামলো। অপর পাশ থেকে নামলো ধবধবে সাদা একটি মেয়ে।মাথা ভর্তি সোনালী চুল।হাটু পর্যন্ত টপ্স পড়নে।সেঁজুতির চোখ কপাল ছুঁলো।
” সেই দুপুরে এসেছে আর এখন রেস্টুরেন্টে? মানে এতোক্ষন মেয়ে নিয়ে ঘুরে ফিরে তারপর গিলতে এসছে?এই মামা দাঁড়ান তো…
রিক্সা থামাতেই সেঁজুতি নেমে গেলো।রুদ্রর পিছু পিছু হাটা ধরলো রেস্টুরেন্টের দিকে।
রেস্টুরেন্টের ভেতরে রুদ্ররা ঢুকেছে ততক্ষনে।বাইরে টা দেখা যায় এরকম এক জায়গার দুটো চেয়ার টেনে বসেছে দুজন।ওয়েটারকে ডেকে রুদ্র খাবার অর্ডার করলো।হেসে মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলো সে কী খাবে?সেঁজুতি নিজেকে আর দমাতে পারলোনা।গটগট করে গিয়ে ঠিক ওদের মাঝখানে দাঁড়ালো।সেঁজুতি কে দেখতেই রুদ্র ভঁড়কালো।
” আপনি এখানে??
সেঁজুতি স্পষ্ট বলল,
“দেখতে এলাম আপনার কীর্তিকলাপ।
রুদ্র বুঝলোনা,
” মানে?
সেঁজুতি দাঁত পিষে বলল,
“মানে সারাক্ষন ভালোবাসি ভালোবাসি বলেন না? এটাই তার নমুনা? যেই আমাকে পেলেন না ওমনি বিদেশীনি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন?অবশ্য এটাই আশা করা যায় আপনার থেকে। আর এই জন্যেই আপনাকে আমার সহ্য হয়না।
রুদ্র হেসে ফেলল।ঝকঝকে দাঁত গুলো উন্মুক্ত হলো। সেঁজুতি খেই হারালো। লোকটা এত সুন্দর করে হাসে কেন?রুদ্র টেনে টেনে বলল,
” ঠিক বলেছেন,মেয়ে নিয়ে ঘুরছি। অভ্যেস কি আর এতো রাতারাতি চেঞ্জ হয় বলুন?
সেঁজুতির ক্ষনিকের মুগ্ধতা লেজ তুলে পালালো এই কথায়।অবাক কন্ঠে বলল,
-্আপনার লজ্জ্বা লাগছেনা?
-রুদ্র ভ্রু বাঁকালো,
“আমার তো লাগছেনা।কেনো? আপনার লাগছে বুঝি?
‘আপনাকে কিছু বলা মানেও অনেক কম হয়ে যাবে।
“তাহলে বরং চুপ থাকুন।
দুজনের কথার মাঝে ভ্যাবলার মতো চেয়ে থাকলো মেয়েটি।বাংলা ভাষা বোধগম্য হচ্ছেনা।কৌতুহলী কন্ঠে রুদ্রকে শুধালো,
“হোয়াট হ্যাপেন্ড?? হোয়াট ডিড সি সে??
রুদ্র কিছু বলার আগেই মুখ খুলল সেজুতি।মুখ ঝামটা মেরে বলল,
“কোন চুলো থেকে এসেছেন?বাংলা বোঝেন না?
মেয়েটি বুঝলোনা।কপালে ভাঁজ নিয়ে চেয়ে থাকলো,
সেঁজুতি কটমট করে বলল,
“আবার তাকিয়ে আছে?তাকিয়ে আছেন কেনো হ্যা? কি দেখছেন? ইসশ কি জামা কাপড়ের ছিড়ি! বাড়ি থেকে কি টাকা পয়সা কম দেয়…? কাপড় একটু বাড়িয়ে কিনতে পারেন না?
রুদ্র চোখ সরু করে সেঁজুতির কথা শুনছে।হাসিও পাচ্ছে।মেয়েটা কী আসলে বোঁকা?না।বোঁকাদের ও বোঁকামির লিমিট আছে।মেয়েটি নির্বোধ!
‘সেজুতি!উনি আমেরিকান।সো বাংলা বুঝবেন না,আপনি ইংলিশে বলুন।
সেঁজুতি মনে মনে আওড়ালো,
” ইংলিশে বললে বুঝে যাবে আমি ঝগড়ুটে,আর তাই বাংলা তেই সুযোগ টা কাজে লাগাচ্ছি।
এটার মজা আপনি কি বুঝবেন?
সেঁজুতিকে চুপ দেখে রুদ্র শান্তি পেলো বোধ হয়।দুদিকে মাথা নেড়ে নিঃশ্বাস ফেলল।ওয়ালিহাকে কাটাকাটা ইংলিশে বলল,
“ওয়ালিহা! ও আমার হবু বউ।সেঁজুতি।
ওয়ালিহা হেসে তার ফর্সা হাত বাড়ায়,
“ও হাই! নাইস টু মিট ইউ।
সেঁজুতিও হেসে হাত মেলায়।পরক্ষনে রুদ্রর দিকে চোখ পাঁকিয়ে তাকায়।
” সেই আবার আমাকে ফিয়ন্সি বলে পরিচয় করালেন?আমিতো বারন করেছিলাম।
রুদ্র মুখের ওপর বলল ‘ আমি আপনার বাধ্য নই।
সেঁজুতি অন্যদিক ফিরে মুখ বাঁকালো।রুদ্র বলল,
” সেজুতি উনি হলেন ওয়ালিহা গোমস।আমাদের নিউ প্রজেক্ট এ আমার পার্টনার।এতোক্ষন প্রজেক্ট দেখিয়ে এনেছি ওনাকে,ঘুরে বেড়াইনি।আশা করি বুঝেছেন?
সেঁজুতি নিচের দিক চেয়ে জ্বিভ কাটলো।বিজনেস পার্টনার?আর সে কিনা না জেনেই এতো গুলো কথা শুনিয়ে দিলো?ছি!
সেঁজুতির কাঁচুমাচু চেহারা দেখে রুদ্র হাসলো,সেঁজুতি চোখ ছোট করে বলল, ,
” হাসছেন কেনো?
” অনেস্টলি একটা কথা বলবেন?
“কি কথা?
রুদ্র এতক্ষনে উঠে দাঁড়ায়।সেঁজুতির কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে,
” আর ইউ জেলাস??
রুদ্রর গরম নিঃশ্বাসে সেঁজুতির কাঁপা-কাঁপি শুরু হয়।তুঁতলে বলে,
“মমা..ননে??
রুদ্র সোজা হলো,
‘মিস ওয়ালিহা কে দেখে রিক্সা থেকে নেমে এলেন।এতোগুলো কথা শোনালেন।এমনি এমনি?
সেঁজুতি মেকি ভাব নিয়ে বলল,
” তো আর কি কারণ থাকবে?
“কি জানি!
“আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে আমি এখন আসি।
রুদ্র থামিয়ে দিলো ‘ না থাক।কষ্ট করে যখন এসেইছেন, তখন থেকে যান।
আমার ফিয়ন্সি হিসেবে না হলেও পি -এ হিসেবে আপনাকে কাজে লাগতে পারে।
না বলতে ইচ্ছে হয়নি সেঁজুতির।এক কথাতেই স্বায় দিলো।একটা চেয়ার টেনে বসলো।রুদ্রর মিটিমিটি হাসি এবার যেন গাঢ় হয়।মনে মনে বলে,
‘আমি খুব ভালো করেই বুঝেছি’ এই ব্যাপারে আপনি না বলবেন না।ওয়ালিহার পরিচয় সত্যি না মিথ্যে সেটা যাচাই করতেই থেকে গেলেন তাইতো?
কোনও ব্যাপার নয়। এতে তো আমারই ভালো
।,আবিরের প্রতি নিজের জেলাসনেস থেকে যদি আমি মনের কথা জানাতে পারি তবে এই বিদেশীনির প্রতি আপনিও একটু আকটু জেলাস হলেন না হয়।ক্ষতির তো কিছু নেই।
____
বাসার নিচে গাড়ি ব্রেক করার শব্দ।দোতলার জানলা দিয়ে উঁকি দিলো আবির।সেঁজুতির জন্যেই অপেক্ষা করছিলো সে।দেখলো সেঁজুতি গাড়ি থেকে নেমেছে।গাড়িটা রুদ্রর।ওইতো ড্রাইভিং সিটেই বসে আছে সে।আবির সরে এলো সেখান থেকে।সেঁজুতি ঘরের ভেতর ঢুকতেই দেখলো আবির সোফায় বসে টেলিভিশন দেখছে।রান্নাঘর থেকে শব্দ আসছে।নিশ্চয়ই আমির সেখানে।এখন বাজে সাতটা।শেফালী আসবে নটার দিকে।সেঁজুতি আবিরকে দেখে হেসে বলল,
‘আরে,তুমি কখন এলে?
“এইতো কিছুক্ষন। অফিস কেমন কাটলো আজ?
সেঁজুতি পাশে বসতে বসতে বলল’রোজ যেমন কাটে আর কি।
আবির টেলিভিশন বন্ধ করে দিলো,
-“তোমার বস তোমাকে বাড়িতে ড্রপ করে দিয়ে গেলো দেখলাম।
” হ্যা।
“রিজাইন দাওনি?তুমি না বলেছিলে আজ রিজাইন দেবে?
সেঁজুতি জ্বিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলল,
‘ দেইনি।আসলে আমি চাকরিটা ছাড়তে চাইছিনা।
আবির নড়েচড়ে বসলো,
“ছাড়তে চাইছো না?কেন?
সেঁজুতি ছোট করে বলল
“এমনি।
আবির রেগে গেল,
” মিথ্যে বললে। চাকরী টা নিয়ে তোমার মধ্যে ইন্টারেস্ট থাকলে শুরুতেই তুমি আমাকে নিষেধ করে দিতে। রিজাইন দেয়ার কথা ভাবতে না।
এর মধ্যে নিশ্চয়ই অন্য কোনও গল্প আছে।
সেজুতিকে নিরুত্ত্যর দেখে সন্দেহ আরো বাড়লো। ঝুঁকে এসে সেজুতির দুহাত নিজের দুহাতে নিয়ে বলল,
“ছোট বেলা থেকে আমরা দুজন দুজনের খুব ভালো বন্ধু সেঁজুতি। আমার সব সমস্যা যেমন আমি তোমায় জানাতাম তেমনি তুমিও জানাতে আমায়।তাহলে আজ কি হলো? আজ এতো সঙ্কোচ কেনো করছো? প্লিজ সব সত্যিটা বলো আমায়??
সেঁজুতির মুখ কালো হয়ে এলো।সময় নিয়ে বলল,
” বেশ! বলছি
সেঁজুতি আরেকটু সময় নিলো বলতে ‘আবির!আসলে আমি চাইলেও চাকরী টা ছাড়তে পারবোনা।
আবির ভ্রু কুঁচকে বলল,
“কেনো??
“আমার ওখানে একটা এগ্রিমেন্ট করা আছে।
” কিসের এগ্রিমেন্ট??
সেঁজুতি একবার রান্নাঘরের দিকে তাকালো।আমির আসছেন কীনা!পরমুহূর্তে আবিরের দিকে চেয়ে রুদ্রর সাথে রাত কাটানো,পার্টিতে রুদ্রর ভালোবাসি বলা এই দুটো কথা লুকিয়ে বাকী সবটা বুঝিয়ে বলল। আবিরের ফর্সা মুখ তখন টকটকে লাল রাগে।
‘ উনি এভাবে ফাঁসিয়েছেন তোমাকে??
সেঁজুতি নিশ্চুপ।এই বিষয়ে উত্তর দিতে কেনো জানিনা ইচ্ছে করছেনা এখন।
“এর উত্তর আমি নিজেই নিয়ে নেবো ওনার থেকে।
নিজে নিজে ভেবে নিলো আবির।
কাল তাকে রুদ্রর অফিসে যেতে হবে।এই ব্যাপারে বোঝাপড়া করা দরকার।
_____
রুদ্র বাড়ি ফিরলো খুশিমনে।ওয়ালিহার প্রতি সেঁজুতির জেলাস মুখটা যতবার মনে পড়ছে ততবারই পেট ফেঁটে হাসি আসছে।গম্ভীর থাকার চেষ্টা করেও পারছেনা।রুদ্রর মন বলছে,এ জনমে তার গম্ভীরতা অার ফিরবেনা হয়ত।রাগী রুদ্র ডায়নোসরের মত পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হচ্ছেনাতো?রুদ্রর রুমে যাওয়ার আগে অভ্রর রুম পরে।দরজা খোলা।দেখলো অভ্র দুগালে হাত দিয়ে বাবু হয়ে বসে আছে বিছানায়।কোলের মধ্যে একটা বালিশ ও আছে।রুদ্র আর নিজের রুমে যায়না।অভ্রর রুমে ঢুকে খুকখুক করে কাশলো ওর মনোযোগ পেতে।হঠাৎ শব্দে চমকে ওঠে অভ্র।রুদ্রকে দেখে কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায়।রুদ্র ভ্রু কোঁচকায়,
‘কি হয়েছে? মুড অফ??
অভ্র তাকালোনা।তবে জোরে জোরে মাথা দোলালো।হ্যা মুড অফ।রুদ্র আর্তনাদের ভান করে বলল,
‘আরে আস্তে আস্তে। এতো জোরে মাথা ঝাক্কাচ্ছিস! যেকোন মুহূর্তে খুলে পরে গেলে?
অভ্র অবাক চোখে তাকালো।ভাই মজা করছে?এতো বিরল ঘটনা।পরক্ষনে কিছু একটা ভেবে আবার মুখ কালো করে বলল,
‘পরে যাক! আমার আর বাচার ইচ্ছে নেই।
“ছ্যাকা ট্যাকা খেয়েছিস নাকি?
অভ্র কাঁদোকাঁদো কন্ঠে বলল,
” ধুর ভাই!কি যা তা বলছো?আমিতো তোমার কথা বলছি,অবশ্য এটা তো এক ধরনের ছ্যাকাই।
রুদ্র এসে অভ্রর পাশে বসলো,
“আমি আবার কি করলাম??
অভ্র ঘুরে বসলো রুদ্রর দিকে,অভিমানি কন্ঠে বলল,
“কি করোনি তাই বলো?ভাই , তুমি একটা মেয়েকে ভালোবাসো,,প্রোপোজ পর্যন্ত করলে অথচ তুমি নিজে থেকে কিচ্ছুটি জানালে না আমাকে?,এটা কি ঠিক করেছো?
রুদ্র ঘাঁড় চুলকে বলল,
” ইয়ে..তোকে জানাতাম আমি।কিন্তু তুই জানলি কোত্থ থেকে?
অভ্র ঠোঁট উলটে বলল,
“পার্টি হাউসের একজন স্টাফ বলেছে।
আর আমি নিজেও সিসি টিভি ফুটেজ চেক করেছি।
রুদ্র ভ্রু উঁচালো,
‘ হঠাৎ গোয়েন্দা গিরি করলি?
‘তো করবোনা?? সেদিন পার্টিতে যা পাগলামো করছিলে হুশে থাকলে বুঝতে।সবাই তো ভয় পেয়ে শেষ। আচ্ছা ছাড়ো,তা ভাই বলোনা,প্রেম কদ্দুর এগোলো?রাজী হলো??
রুদ্র ছোট করে বলল ‘না।
অভ্র ড্যাবড্যাব করে চেয়ে বলল
‘কি বলছো ভাই?তোমাকে রিজেক্ট করেছে??
” বারবার।
অভ্র ক্ষেপে গেলো,
‘কি?মেয়েটার এত সাহস আমার ভাইকে রিজেক্ট করছে? নাহ এটা অামি মেনে নেবনা। এই মেয়েটা যে কি ভাবে নিজেকে?
রুদ্র হাসলো।টেবিলের ওপর থেকে গ্লাস নিয়ে পানি খেলো।টিস্যু দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বলল,
“ওর এসব ভাবনার জন্যেই ও আলাদা।আর এই জন্যেই আমি ওকে ভালোবাসি।নাহলে জীবনে সুন্দর মেয়েতো কম দেখিনি।ওর পেছনেই কেন পরলাম জানিস?
অভ্র দুদিকে মাথা নাঁড়ে।সে জানেনা।
রুদ্র টিস্যুটা দুমড়ে মুচড়ে রুমের কোনায় রাখা ময়লার ঝুড়িতে ফেলল।গলার টাই ঢিলে করতে করতে এগিয়ে এলো জানলার কাছে।থাই গ্লাস টা সরিয়ে দিতেই হুহু করে ভেতরে ঢুকলো ঠান্ডা বাতাস।রুদ্র চোখ বুজে নেয়।ভেসে ওঠে সেঁজুতিকে ভালো লাগার প্রথম দিনটা।সেই যে বাচ্চা মেয়েটিকে পরম আদরে খাইয়ে দিচ্ছিলো?সেই মুহুর্তটি মনে করে হাসলো রুদ্র।
” সেঁজুতিকে প্রথম দেখে আমি প্রেমে পড়িনি।এমন কি ভালো করে ওর মুখটাও দেখিনি।আবার দেখেওছি বলা যায়।জলে টইটম্বুর দুটো ডাগর ডাগর চোখ।তাতেই ভালো লেগেছিলো তাও ক্ষনিকের ওই রাতের জন্যে।প্রশ্ন করিস না কোন রাতের?উত্তর দিতে পারবনা আমি।পরেরবার সেঁজুতি কে দেখি হাসপাতালে। দেখেই চিনেছি।কিন্তু ফিরে তাকাইনি দ্বিতীয়বার।আমার কাছে উনি তখন নিম্নমানের।নোংরা।কিন্তু এরপরের দেখায় উনি বিনা অনুমতিতে ঢুকে পরলেন আমার চিন্তায়।আমার ভাবনায়।বারবার ভাবছিলাম ওনাকে।বারবার।কিছুতেই মিলছেনা হিসেব।যেমন ভেবেছি আদৌ উনি সেরকম কীনা সেই প্রশ্নে ছটফটাচ্ছিলাম।কেন?তা আমি জানিনা।কীসের এত আকর্ষন অনুভব করেছি তাও জানিনা।বিরক্ত হচ্ছিলাম নিজের ওপর। প্রচন্ড বিরক্ত।রুদ্র কীনা এক মেয়েকে নিয়ে চিন্তায় মশগুল?এও সম্ভব?এরপর ওনাকে দেখলাম রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায়।আমাকে বাঁচাতে গিয়ে নিজে আহত হন যেদিন।সেদিন ওনার জন্যে প্রথম আমার হার্ট বিট করলো,অন্যভাবে।ওনার মাথাটা যখন আমার কোলে রাখলাম আমার পা দুটো অজান্তেই কেঁপে ওঠে।নির্নিমেষ ওনার অচেতন মুখের ওপর চেয়ে থাকতে ভালো লাগে।হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি এর আগেও আমাকে রক্ত দিয়েছে এই মেয়ে।বুঝলাম,আমরা বারবার যে মেয়েটিকে টাকা দিচ্ছিলাম,আর মেয়েটিও ফেরত দিচ্ছে,রীতিমতো শাসাচ্ছে সে এই মেয়ে।অামার হিসেব তখন আরো গোলমেলে। সেঁজুতির সাথে প্রথম সাক্ষাৎ এর বিষয় টা আর এই বিষয়টা আকাশ পাতাল তফাত।
অথচ তখন তার টাকার খুব দরকার ছিলো কিন্তু।তাও উনি ফেরত দিয়েছেন কারো দান উনি হাত পেতে নেবেন না বলে।ওনার এই আত্মসন্মানবোধই ছিলো ওনার প্রতি আমার দূর্বল হওয়ার প্রথম কারন।দ্বিতীয় টা হলো কারো জন্যে ওনার প্রবল মায়া।যেদিন ওনাকে বাড়িতে ছাড়তে গিয়েছিলাম, রাস্তায় একটা কুকুর ছানা গাড়ির নিচে পরতে যাচ্ছিলো। সেটা নিয়ে মেয়ের কি ভয়?? তারপরে বাবার প্রতি ওনার অগাধ ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে।আর যাই হোক, আমিও যে আমার বাবাকে ভীষণ ভালোবাসতাম।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল রুদ্র।
“ওনার বাবা যেদিন অসুস্থ হন সেদিন ওনার চোখে পানি দেখে আমার হৃদয় কেঁপেছিলো জানিস?
তারওপরে কোনও মেয়েকে আশেপাশে দেখলেই মনে হতো এটা সেঁজুতি, পাগল পাগল লাগতো তখন,হোটেলে মেয়ে আসা নিষিদ্ধ করে দিয়েছি অনেক আগে থেকে অথচ আমার মনে ওনার বিচরন বন্ধ করতে পারিনি।তবে বুঝে উঠিনি এটা কী আকর্ষন?নাকী ভালোবাসা?
ঠিক করে নিলাম, ওনাকে নিজের আশেপাশেই রাখব।যদি আমার মনে হয় ওনাকে আমার প্রয়োজন,ভালোবাসি ওনাকে তবেই উনি আমার।ওনাকে মিথ্যে বলে চাকরি দিয়েছি।শুধু এই কারনে নয়,জানতাম উনি এমনি দিলে নেবেন না।তখন ওনাদের অর্থ প্রয়োজন, তাও মেয়েটা আত্মসন্মান দেখাবে।তাই অত বানিয়ে বলা।কন্ট্রাকে সাইন করানো।জানতাম আমাকে দেখলে উনি কিছুতেই চাকরী করতে চাইবেন না।চাকরি কেন?কোনো প্রকার সাহায্যই নেবেন না।তাই এর আগেও ওরকম উদ্ভট সেজে তোদের সামনে যাই।উনি চিনতেই পারেন নি আমাকে।
রুদ্র হাসলো
“প্রথম দিন আমাকে অফিসে দেখে কী তেঁজ টাই না দেখালেন।ভাগ্যিশ বুদ্ধি করে এগ্রিমেন্ট পেপারে সাইন করিয়েছিলাম।পাখি আর পালাতে পারেনি।তারপর শুরু করি ওনাকে বিরক্ত করা।গাদা গাদা কাজ দিয়ে ওনার ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়েছি।এই বদমেজাজী রুদ্র কে কতোটা সহ্য করতে পারবে সেটা দেখার আশায়।কিন্তু যত কাজ ই দিতাম বিরক্ত হতোনা জানিস।হ্যা অসহায় চোখে তাকাতো।তবে সেসব দায়িত্ব নিয়ে শেষও করতো।
দিনের পর দিন ওনাকে চোখের সামনে দেখা,ওনার হাসি,কান্না,জেদ,রাগ ভ্রু কোঁচকানো সবেতে আমার হৃদয় ধুকপুক করতো।ঘুমোতে গেলে স্বচ্ছ হয়ে চোখে ভাসতো।এরকম করতে করতে কখন যে আমার প্রয়োজন টা ভালোবাসায় পরিনত হলো। বুঝতেই পারিনি।আস্তে আস্তে ওনার মাঝেই মিশিয়ে ফেললাম নিজেকে।ওনার প্রত্যেক টা কাজ প্রত্যেকটা কথা আমার ভালোবাসা বাড়িয়ে দিচ্ছে আরো।অথচ দ্যাখ,আমি যে ভুল কাউকে বেছে নেইনি তার প্রমান উনি আরো একবার দিলেন আমায়।আমাকে প্রত্যাখান করে।রুদ্র রওওশনের লুক,টাকা এসবে কত মেয়ে পাগল।অথচ আমি যার জন্যে পাগল সে ফিরেও দেখছেনা আমায়।কতটা নির্লোভ আমার সেঁজুতি। রুদ্র আবার বিড়বিড় করলো ‘ আমার সেঁজুতি। অভ্র!ওনাকে ছাড়া চলবেনারে আমার। কিছুতেই না।
কথা শেষ করে রুদ্র নিঃশ্বাস ফেলল।পেছন ফিরে অভ্রর দিকে তাকালো।অভ্র ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছে।হা হয়ে আছে মুখ।বিস্ময়ের শেষ প্রান্তে তার অবস্থান।
‘মুখটা বন্ধ কর।মশা ঢুকবে।
অভ্র নড়ে উঠলো।পরমুহূর্তে উত্তেজিত হয়ে এক লাফ দিয়ে নামলো বিছানা থেকে।মাথায় হাত দিয়ে বলল,
‘আই কান্ট বিলিভ ভাই।আই যাস্ট কান্ট বিলিভ।তুমি কিনা অবশেষে ভালোবাসলে? এবার আমার সব প্রশ্নের উত্তর মিললো।হোটেলে মেয়ে আসা কেনো বন্ধ করেছো,এই বার বুঝলাম।তবে এই ব্যাপারে আমি অন্তত খুশি।মেয়েটা তোমার লাইফে এসে ভালো কিছু করেছে।
রুদ্র অভ্রর চুল গুলো এলোমেলো করে দিলো হাত দিয়ে।বলল ‘ বলেছিলাম না? আমার রহস্যের সমাধান হলে তোর টাও হবে? আমার রহস্যটাই ছিলো আমি সেঁজুতি কে ভালোবাসি কীনা! আর তার জবাব তো আমি পেয়েছি।
অভ্র চোখ পিটপিট করে বলল ‘ কিন্তু আমি একটা প্রশ্নের উত্তর পাইনি ভাই।
‘ আবার কী?
‘ সেঁজুতি তোমাকে দেখলে চাকরি করতেন না বললে,আবার হাসপাতালে তার আগে তুমি মুখ ঢেকে গেলে? তার মানে উনি তোমাকে আগে থেকে চিনতেন? কিন্তু কীভাবে?
রুদ্র বাম চোখ টিপে বলল
“এটা টপ সিক্রেট।
অভ্র ঠোঁট ওল্টালো,
— দিস ইজ নট ফেয়ার ভাই। বলোনা,,
অভ্রর কথায় কান দিলোনা রুদ্র।কাবার্ডের ওপর থেকে গিটার নামালো।অভ্রর চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম।ভাই কী গান গাইবে?এই গিটার কবে কিনলো ভাই? এখানে কী করে এলো?
অভ্রর সব উত্তর মিলল,যখন রুদ্র কাউচের ওপর বসে গান ধরলো
‘ আমি ভাবি,যদি আবার, ছুঁতে পারতাম তোমাকে।
সত্যি বা স্বপ্নই হোক,এ দুরুত্ব শেষ হয়ে যেত যে…
‘ভালো লাগা,ভালোবাসার তফাত কী যে হয় জানতাম না।
তবে কী হায়,সব দোষ টা আমার।দেরী করেছি, বুঝতে তবু ভয়, ভয় পেওনা আমি আছি, তোমারই কাছে।রাখব যে জড়িয়ে, তো..মা..কে!
_____
রুদ্রর কেবিনে বসে আছে আবির। এসেছে প্রায় দুই ঘন্টা।অথচ মাত্রই ঢুকলো এখানে।রুদ্র ব্যাস্ততার অজুহাত দিয়ে বসিয়ে রেখেছিল ওকে।আবিরের সামনেই রুদ্র স্থির দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে।এই ছেলেটাকে দেখলেই তার রাগ ওঠে।এত রাগ যা দিয়ে দুনিয়া উলটে দেয়া যাবে।আজ একেবারে অফিসে এসে হানা দেয়ার কারন রুদ্রর অজানা।অফিস বলে কিছু বলতেও পারছেনা।নাহলে ওইদিন সেঁজুতির কোমড় ধরে নাঁচার মজা সুদে আসলে মেটাত।রুদ্র অনিহা নিয়ে বলল,
“তো বলুন কি আপনার জরুরি কথা?
আবির গলা ঝেড়ে বলল,
‘বলবো,বলতেই তো এসেছি।
“একটু তাড়াতাড়ি। আমার সময় এর দাম আছে নিশ্চয়ই?
আবির মৃদূ তেঁজ নিয়ে বলল,
“আপনার সময় নষ্ট করতে আমি আসিওনি।
আচ্ছা আমাকে একটা কথার উত্তর দিন তো,,এসবের মানে কি?
আবিরের কন্ঠস্বর সিরিয়াস।রুদ্রর মেজাজ বিগড়েছে।ছেলেটা তার চার বছরের ছোট হবে। অথচ কী অবলিলায় কৈফিয়ত চাইছে।রুদ্র চিরচেনা গম্ভীরতায় ফিরে এলো যেন।বলল
-প্রথমেই বলে রাখি রুদ্র রওশন কে জবাব দিহি করতে আসবেন না।কারো কাছে কৈফিয়ত দিতে আমি পছন্দ করিনা।
” কৈফিয়ত চাইছিনা,জানতে চাইছি। আপনি এভাবে সেঁজুতিকে এখানে আটকে রেখেছেন কেনো?
রুদ্র ভ্রু নাঁচালো,
” আটকে রেখেছি? লাইক সিরিয়াসলি? তা ঠিক কিভাবে আটকে রেখেছি আমি?
আবিরও একি ভাবে ভ্রু নাঁচায়,
” ভনীতা করছেন?? এমন ভাব করছেন যেনো কিছুই বুঝতে পারছেন না।না জানিয়ে ভুল বুঝিয়ে আপনি কৌশলে সেজুথিকে দিয়ে কন্ট্রাকে সাইন করিয়ে নিয়েছেন।চাইলেও এখন তিন বছরের আগে ও চাকরী ছাড়তে পারবেনা। অসহায়ত্বের সুযোগ নিলেন তাইনা??আপনি ভালো করেই জানেন যে পাঁচ কোটি কেনো পঞ্চাশ লাখ দেয়ার মত ক্ষমতাও সেজুতির নেই।আর তাই এভাবে ফাসালেন ওকে।,এটাকে আটকে রাখা নয় তো আর কি?
রুদ্র প্রসস্থ হাসলো,বলল,
” না এটা কে আটকে রাখা বলেনা।এটাকে বলা হয় ভালোবাসার বন্ধনে নিজের প্রেয়সী
কে বেঁধে রাখার প্রয়াস।
আবির বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন ছোড়ে,
— ভালোবাসা??
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here