#দ্বিতীয়_পুরুষ
পর্ব ১২
_নীলাভ্র জহির
নবযৌবনা চিত্রা স্বামীর স্পর্শে যেন পূর্ণযৌবনা হয়ে উঠেছে। তার দিকে তাকালেই রূপকের হৃদয়ে দোলা দিতে শুরু করে। এমন একজন নারীকে স্ত্রী হিসেবে পেয়ে সে নিজেকে ধন্য মনে করছে। তাইতো সকালবেলা স্ত্রীকে নাইওরে রেখে চলে যেতে মন চাইছিলো না তার। খুব ভোরে উঠে খালা তার জন্য হাঁসের মাংস রান্না করেছে। গরম ভাত দিয়ে হাঁসের গোশত দিয়ে ভাত খেয়ে রূপক কুন্দনপুর এর উদ্দেশ্যে রওনা দিল। রূপক চলে যাওয়ার পর বিষাদ নেমে এলো চিত্রার মনে ও দেহে। কোথাও যেন এতটুকুও শান্তি নেই। কোন কাজই করতে ভালো লাগছিল না। খালাতো ভাইয়ের বউয়েরা এসে তাকে সঙ্গ দিতে চেষ্টা করছিল। কিন্তু আজকে যেন গল্প করতেও চিত্রার মন বসলো না। নারী মনের অদ্ভুত রহস্য বুঝতে পারল না চিত্রা।
খালা বাড়িতে এক রাত থেকে পরদিন মেজ ভাবী বাপের বাড়িতে চিত্রাকে নিয়ে বেড়াতে গেলেন। নতুন বউ বলে সবাই বেশ খাতির যত্ন করলো তাকে। ভালো ভালো খাবারের আয়োজন করা হয়েছে, আশেপাশের প্রতিবেশীরা তাকে দেখতে আসছিলো। সব মিলিয়ে ভালো সময় কাটলো সেদিন। খালাবাড়িতে আসার একদিন পর জোসনা এলেন চিত্রাকে নিতে। সারা রাত চিত্রার ঘুম হয়নি। শশুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য সে শুধু ছটফট করেছে। বার বার বার মনে হচ্ছিল তার আত্মা বোধহয় ফেটে যাচ্ছে রূপককে কাছে পাওয়ার জন্য, রূপককে একটু দেখার জন্য। সকাল হতেই নিজের ব্যাগটা গুছিয়ে চিত্রা অপেক্ষা করছিল কখন জোসনা আসবেন।
জ্যোৎস্না এসে খাওয়া-দাওয়া ও গল্পগুজব করলেন তার বোনের সঙ্গে। এক ফাঁকে উঠল যৌতুকের কথা। চিত্রাকে শুনিয়ে শুনিয়ে জ্যোৎস্না তার বোনের পুত্রবধূদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসা যৌতুকের কথা বলছিলেন, তোর ছেলের বউয়েরা বাড়ি থেকে সব আনছে। ঘরের আসবাবপত্র , খাট শোকেস ,থালা-বাসন হাড়ি পাতিল, সংসারের যাবতীয় জিনিসপত্র তারা বাপের বাড়ি থাইকা নিয়া আইছে। মেজ বউয়ের বাপেরা তো ঘর ভর্তি কইরা জিনিস দিছে। অথচ আমার পোলার কপালটা এত খারাপ। এতো ভালো পোলা আমার, রাজপুত্তুর। অথচ ঘোড়ার আণ্ডা পাইছে। এমন ঘরের মাইয়া আনছি যেইখানে পোলা শ্বশুরবাড়িতে গিয়া একবেলা ভাত খাওয়ার সৌভাগ্য হইব না।
কথাগুলো শুনে চিত্রার কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছিল। তার স্বামী রূপকের এসব জিনিসপত্রের প্রতি কোন আগ্রহ নেই। রুপক কখনো তাকে যৌতুকের ব্যাপারে কোন কথা শোনায় না। অথচ সুযোগ পেলেই জোসনা তাকে ইনিয়ে বিনিয়ে বিভিন্ন জিনিস নিয়ে খোটা দিতে থাকেন। এসব কখনো শেষ হবে না হয়তো। চিত্রা মনে-মনে আক্ষেপ করতে থাকে। কেন তার সোহরাব উদ্দিনের ঘরে জন্ম হলো? সেও তো কোনো বড়লোকের আদরের দুলালী হতে পারত।
জ্যোৎস্নার সঙ্গে বাড়ি ফিরে এলো চিত্রা। বড় খালা সঙ্গে করে পিঠাপুলি বানিয়ে দিয়েছেন। বাড়ি ফিরতেই জোসনার ননদ ও প্রতিবেশীরা পিঠা খেতে ভীড় করলো। রূপকের জন্য সে আলাদা করে কিছু পিঠা রেখে দিল ঘরে। রূপক কখন ফিরবে সেই অপেক্ষায় তার যেন গলা শুকিয়ে আসছিল বারবার।
রাত নামলেই চিত্রা হাতমুখ ধুয়ে মাথায় সুগন্ধি তেল মাখলে। চুল আঁচড়ে খোঁপা করে একটা নরম সুতির শাড়ী পরল। মাথা ঢেকে ফেলল শাড়ির ঘোমটা দিয়ে। গালে হালকা করে ফেস পাউডার ও ঠোঁটে একটু লিপস্টিকও দিল। কুপির আলোয় বসে বসে হাতে লাগালো আলতা। রূপক কখন ফিরবে? তার খুব জোরে জোরে হৃদস্পন্দন হচ্ছে। তার অপেক্ষায় এমন তো হয়নি আগে। তিন দিন তাদের দেখা হয়নি বলেই কি এত প্রতীক্ষা?
অবশেষে ফিরলো রূপক। তার হাতে একটা ব্যাগ। ব্যাগটা জোসনার হাতে তুলে দিল রূপক। বলল, মা এইখানে জিলাপি আছে। আমার ঘরে থালে কইরা একটু পাঠাইয়া দিও।
তারপর সোজা এসে ঘরে ঢুকলো রূপক। মিষ্টি মধুর সুরে ডাকলো, বউ ও বউ। ঘরে আছো?
চিত্রার কলিজায় যেন পানি ফিরে এলো। সে জবাবে কোন উত্তর দিতে পারল না। কেবল নিঃশব্দে গুটি গুটি পায়ে রূপকের সামনে এসে দাড়ালো। হারিকেনের মৃদু আলোয় রূপক দেখলো তার মিষ্টি বউটাকে। মনে হল যুগযুগান্তর ধরে সে তার বউকে দেখেনি। যেন দুজনের দুটি মন বহু দূরে সরে গিয়েছিল। রূপককে দেখে একই অবস্থা হল চিত্রারও। নিজেকে সংযত করে রাখা বড় দায়। চিত্রা থরথর করে কাঁপছিল। রূপক দুই হাত দিয়ে চিত্রাকে জাপ্টে ধরলো। মাথা থেকে ঘোমটা সরিয়ে চিত্রার গলায় সে মুখ ডুবিয়ে দিলো। চিত্রার প্রতীক্ষিত দেহ-মন রূপককে পেয়ে যেন পাগলপারা হয়ে গেল। রূপকের চুল খামচে ধরল সে। দুজন মিলে বেশ কিছুক্ষন ধস্তা-ধস্তি চলতে লাগলো। এমন সময় শোনা গেল জোসনার গলা। হঠাৎ ঘরের দরজায় এসে দাঁড়িয়েছেন জোসনা। ভেজানো দরজা ঠেলে ঘরে প্রবেশ করলেন। চিত্রা অপ্রস্তুত অবস্থায় একে অপরকে ছেড়ে দিয়ে দূরে সরে দাঁড়ালো।
ঘোমটা টা বড় করে টেনে দিল চিত্রা।
জোসনা কিছু না বলে জিলাপির প্লেট টেবিলের উপর রেখে বেরিয়ে গেলেন।
রূপক বলল, আস বউ জিলাপি খাই।
লজ্জায় চিত্রার মুখটা লাল টকটকে হয়ে গেছে।
রুপক কাছে এসে পেছন দিক থেকে তার পেটে হাত বুলাতেই খিল খিল করে হেসে উঠল চিত্রা। সে গায়ের জোরের ওকে ঠেলে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করলো কিন্তু তবুও রূপক এমনভাবে তাকে ধরছিল যে বারবার তার হাসি চলে আসছিল। অনেক কষ্টে চিত্রা হাসি সংবরণ করে জিলাপি খেতে বসলো। জিলাপি খাওয়া প্রায় শেষ হয়েছে এমন সময় রুবিনা এসে বলল মা আপনারে ডাকতাছে।
চিত্রা মাথায় ঘোমটা টেনে দিল। হাতে এখনো অর্ধেক জিলাপি রয়ে গেছে তার। জিলাপি ফেলে রেখে সে শাশুড়ির ঘরে এলো।
বিছানার উপর মুখ গোমড়া করে বসে আছেন জোসনা। তার চোখে-মুখে রাজ্যের বিরক্তি। রাগে গমগম করছেন। চিত্রার ভীষণ ভয় হতে লাগলো।
জোসনা বললেন, তোমার কি লাজ শরম কিছু নাই? কিছু শিইখা আসো নাই? অবশ্য কেমনে শিখবা? মা নাই। বাপ একটা পাগলা। কে শিখাইবো তোমারে এসব নিয়ম কানুন? এত রাইতে যে তোমরা এমন বেসরমের মত হাসতাছো পাড়ার লোকে কি কইবো? মানসের কাছে শরমে মুখ দেখতে পারুম না। এত কিসের হাসি। রঙ্গ-তামাশা করবা ভালা কতা। পাড়ার লোকরে জানাইয়া করতে হইবো নাকি। আমাদের কি বিয়ে হয় নাই? আমরাও তোমাদের মত সময় পার কইরা আইছি। এত বেশরম আছিলাম না।
চিত্রা মাথা নিচু করে রইল। মনটা খুব খারাপ হয়ে গেছে। বিষন্নতার ভাড় এ শাড়ির আঁচল আলগা হয়ে যাচ্ছিল মাথা থেকে। আঁচল ধরে রাখার মতো শক্তিটুকুও তার নেই। জোসনার কথাগুলো তার গায়ে কাঁটার মতো বিঁধ ছিল।
জোসনা বললেন, তোমার বাপের বাড়িত খবর পাঠাও। তিন-চার দিনের মধ্যে সাইকেলটা দিতে কও। এক মাস তো হইয়াই গেল। আমার পোলায় আর কত কষ্ট করবো। খালার বাড়িতে তো গেছ। দেখছো ঘরভর্তি কত জিনিসপত্র। এইগুলা সব মেয়েরা বাপের বাড়ি থাইকা আনছে। তোমার কাছে তো এত জিনিস চাই নাই বাপু। এত জিনিস চাইলেও তো পাইতাম না। আমরা তো জাইনা শুইনাই বিয়া দিছি। পোলার কপাল খারাপ। আমি আর কি কমু? পোলায় কয় আমি এই মাইয়ারে বিয়া করমু। এখন তোমার বাপেরে তাড়াতাড়ি সাইকেলটা দিতে কও। আইজ হইল সোমবার। শুক্কুরবার এর মধ্যে দিতে কইবা। কথাটা কানে ঢুকছে। নাকি আবার কমু?
খুব কঠোর গলায় জোসনা কথাটা বলে গেলেন। চিত্রার বুকে হাতুড়ি পেটার মতো শব্দ হচ্ছে। মনে হচ্ছে তার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। জোৎস্না যখন তাদের ঘরে গিয়ে তাদেরকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলেছেন তাই হয়তো তার মনে আগুন জ্বলছে। হোক সে মা কিংবা অন্য কেউ। কাউকে কাছাকাছি দেখলে হিংসা জেগে ওঠে। অন্যের প্রেম কেউ সহ্য করতে পারেনা। এখন জ্যোৎস্না খুব কঠোর গলায় চিত্রাকে যৌতুকের ব্যাপারে চাপ দিতে লাগলেন। চিত্রা মাথা নিচু করে ঘর থেকে বের হয়ে এলো। জিলিপি খাওয়ার পর হাত ধোয়া হয়নি। হাতে লেগে রয়েছে জিলাপির রস। কিন্তু এই মুহূর্তে হাত ধুতে ইচ্ছে করছে না। রান্নাঘরের পাশে একটা মোড়ার উপর ধপ করে বসে রইল চিত্রা। সে এখন কি করবে? সেদিন তার ভাই অনেক সুন্দর করে অনুরোধ করার পরও এখন ভাইয়ের কাছে কিছু চাইলে তার লজ্জা করবে। তারপরও অনেক চিন্তাভাবনা করে চিত্রা মনস্থির করল আগামীকাল সকালে একবার ওই বাড়ি থেকে ঘুরে আসবে।
অনেকক্ষণ স্তব্ধ হয়ে চিত্রা রান্না ঘরের দাওয়ায় বসে রইল। কিছুক্ষণ পর এসে দাঁড়ালো রূপক।
কিগো বউ তোমারে কখন থাইকা ডাকতাছি।
চিত্রা কোন উত্তর দিল না।
রূপক বলল, কথা কইতাছো না কেন?
চিত্রা তবুও নিশ্চুপ হয়ে রইল।
রুপক বলল, মেজাজটা খারাপ করতেছ কিন্তু। কি হইছে কইবা তো? মায় কিছু কইছে তোমারে?
চিত্রা নিরুত্তর। রূপক বসল তার সামনে। বেশ রাগী গলায় বলল, মন চাইতেছে একটা থাপ্পড় বসাইয়া দেই।
সঙ্গে সঙ্গে চিত্রা কান্না ভেজা গলায় বলল, দেন। কে নিষেধ করছে আপ্নারে?
রাগ সংবরণ করে নিল রূপক। মেজাজ ঠান্ডা করার চেষ্টা করে বলল, কি হইছে? কান্দো কেন?
চিত্রা কান্না ভেজা গলায় বলল, খুব কপাল কইরা জন্মাইছি তো তাই কানতেছি। আপনার সেইগুলা শোনা লাগবোনা। মেজাজ খারাপ হইয়া গেছে তাইনা। পিটাইতে মন চাইতাছে। পিডান আমারে।
চুপ করো বউ। মেজাজটা একটু খারাপ হইয়া গেছিল। তোমারে কখন থাইকা ডাকছি তুমি কোন উত্তর দিতেছ না। কতকিছু জিগাইতাছি তাও কিছু কইতাছো না। তাই মাথাটা গরম হইয়া গেছিলো। মায় কিছু কইছে তোমারে।
খুব তো হাসাহাসি করতে ছিলেন। এত কইরা মানা করলাম তাও শুনতে ছিলেন না। আপনার মায় খেইপা গেছে। আমাগো সুখ কারো সইতেছে না।
রূপক বলল, আস্তে কথা কও। এত জোরে কইও না।
কিছুই কমু না। কওনের দরকার নাই। সব মুখ বুইজা সইহ্য কইরা যামু।
রূপক কিছুক্ষন চুপ করে রইলো। সে খুব ভাল করেই জোসনার স্বভাব জানে। জ্যোৎস্না ভয়ঙ্কর রাগী মহিলা। ছোট ছোট ব্যাপারে তিনি অনেক রেগে যান। রেগে গেলে কাকে কি বলছেন মাথা ঠিক থাকেনা। নিশ্চয়ই চিত্রাকে খারাপ কিছু বলেছেন তিনি। রূপক চিত্রার হাতটা ধরে বলল রাগ কইরোনা বউ। আসো ঘরে আসো। কতদিন পর মনে হইতাছে তোমারে দেখতাছি। তোমারে একটু ভালো কইরা দেখমু। তোমার লগে একটু সুখ দুঃখের কথা কমু। এর মধ্যে তুমি মন খারাপ কইরা থাইকো না। তোমার মুখ আন্ধার দেখলে আমার কষ্ট হয়।
চিত্রা চুপ করে রইলো। তাকে হাত ধরে টেনে দাঁড় করালো রূপক। বলল, ঘরে চলো বৌ।
রূপকের পিছুপিছু চিত্রা ঘরে চলে এলো। এবার সে ঘরের দরজা বন্ধ করতে ভুল করল না। বিছানার ওপর পড়ে রয়েছে আধ খাওয়া জিলাপি। নিশ্চয়ই তার জন্য রেখে দিয়েছে রূপক। স্বামী তাকে অনেক ভালোবাসে। শত কষ্টের মধ্যে এটাই তার সৌভাগ্যের জায়গা।
রূপকের ফোন থেকে ফুফুর বাড়িতে একটা কল দিলো চিত্রা। তার ফুফুর সঙ্গে কথা বলে জানাল সাইকেল এর ব্যাপারে। সোহরাব উদ্দিনের সঙ্গে ফুপু যেন জরুরী কথা বলে। দু চার পয়সা যা পারে তাই দিয়েই সে যেন মেয়েকে সাইকেল কিনে দেয়ার ব্যাপারে তার ফুফাতো ভাইদেরকে সহায়তা করে। কথাগুলো বলে ফোন কেটে দিয়ে চিত্রা হাউমাউ করে কান্না চলে এলো। বালিশে মুখ গুঁজে কান্না চেপে রাখল সে।
রুপক বললো, এখনো তুমি কানতাছ। মায় কি তোমারে সাইকেল এর ব্যাপারে কিছু কইছে?
না,
তাইলে তুমি ফুফু আম্মারে কইলা?
কইলাম জানি আমার অশান্তি না হয়।
তোমারে কেউ অশান্তি দিব না। আমি কি তোমারে সাইকেলের কথা কিছু কইছি?
চিত্রা চুপ করে রইলো। স্বামীর কাছে শাশুড়ির দুর্নাম করতে চাইল না। তাই কথাটা হজম করে গেল সে।
এমন সময় রবিনা এসে দরজা ধাক্কা দিয়ে ডাকতে লাগলো, ভাইজান মা ভাত খাইতে ডাকতাছে।
চিত্রা বলল,আপনে যান। আমার আইজ খিদা নাই। আপনে খাইয়া লন।
রূপক হাত ধরে টানতে টানতে বলল, এত রাগ কইরা থাইকা লাভ নাই। উঠো আমার লগে ভাত খাইবা।
রূপকের টানাহেচড়ায় বাধ্য হয়ে উঠতে হলো চিত্রাকে। কিন্তু গলা দিয়ে ভাত নামল না। তিন চার দিনের ভিতরে কিভাবে সে সাইকেল জোগাড় করবে। তার বাপ-ভাই কেউই সেটা পারবে না। না পারলে নিশ্চয়ই সংসারে অনেক অশান্তি হবে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে চিত্রা ভাত খেতে পারছিল না। অল্প একটু ভাত নিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করছিল সে।
জোসনা বললেন, কিসের ঢং শুরু করছো। খাইতাছো না কেন?
মাথা নিচু করে রইল চিত্রা।
জোসনা বললেন, কাউরে দেখি কিছু কওন যায়না। ভালো কথা কইলেও দোষ। আমি তোর বউরে খালি কইছি এত জোরে হাইসোনা। পাড়ার লোকে খারাপ কয়। তাতেই সে খাওন বন্ধ কইরা দিছে। জমিদারের বেটি হইছে। কিছু কওন যাইবো না।
চিত্রার গাল বেয়ে টপটপ করে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। সেই অশ্রু চোখের আড়াল হলোনা রূপকের। নিশ্চুপ হয়ে রইল রূপক। চিত্রার চোখের জল ভাতে মিশে যাচ্ছে।
চলবে..