অবুঝ প্রেম-পর্ব ২৯

0
511

#অবুঝ_প্রেম
পর্ব ২৯
লেখিকা #Fabiha_Busra_Borno
আর তনিমাকে হ্যাল্প করা সবার নামের লিষ্ট বের করে তাদের স্ব-শরীরে দেখতে চাই। আমি নিজ হাতে বেঈমানীর শাস্তি দিতে চাই। কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তি। এই শাস্তির প্রকোপ এতো ভয়ানক হবে যে, ভবিষ্যতে কেউ বেঈমানী করার আগে ১০ বার ভাব্বে।
তুর্জ ফোন রেখে সামনে তাকিয়ে দেখে সারা খুব সুন্দর করে হিজাব বেধেছে আর ডান কাঁধে লম্বা করে ওড়না ঝুলিয়ে দিয়েছে। একদম অপরুপা লাগছে সারাকে। তুর্জ বলে,,
তুমি একটু ওয়েট করো আমি ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিই। তোমার এমন পেন্তীর মতো সাজসজ্জা দেখে আবার শতশত মানুষ জ্ঞান হারিয়ে মারা যাবে তা তো হতে দিতে পারিনা। যদি কেউ পেত্নী ভাবে তখন তাকে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য আমি থাকবো। নয়তো দেখা যাবে এই শতশত খুনের দায় মাথায় নিয়ে আমাকে ও উপরে যেতে হবে।
তুর্জ চলে যাওয়ার পরে আয়নায় নিজেকে বারবার দেখে সত্যিই তাকে পেত্নীর মতো লাগছে কি না। কিন্তু সে কোন ভাবেই বুঝতে পারছে না তাকে পেত্নীর মতো লাগছে । তাই নিজের কয়েকটা ছবি তুলে তাদের ফ্রেন্ডদের মেসেঞ্জার গ্রুপে দিয়ে বলে,,
hi everyone, amake ay dress a kmn lagche??
তোকে দাঁতওয়ালা রাক্ষসীর👹 মতো লাগছে (শিমুল)
yyaa dost toke just awesome lagche..(রাহুল)
kire tuy ki biyer pore o chele potanor cesta korchis nki? (তুতুল)
Ay keu amk said de ami akta🏃‍♀️ dor dibo,, amn jolojanto petni kmne ashlo akne? (মিঠি)
tora ki amn krbi nki keu amr prblm slv kore dbi?
তোর আবারও নতুন করে কি প্রব্লেম হলো রে?( শিমুল)
Amr dvl husband ar choke nki ami petnir moto, ty tdr asked korlam…
Dost tuy oi beta lucchar kotha blv krchis…nischoy onno karo upor crash kheye toke petni bolche,, (মিঠি)
Plz maf kor bap,, r keu kichu blis na,, amr bujha sesh,,,, sby College a ay,, aj jomiye adda dbo.
তুর্জ রেডি হয়ে এসে সারাকে নিয়ে কলেজে চলে যায়। কিন্তু কলেজের গেটের সামনে আসতেই হঠাৎ করে গাড়িটা নষ্ট হয়ে যায়। আর সে জন্য সারা গাড়ি থেকে নেমে সামনে তাকাতেই দেখে রাহুল একটা ফুচকার দোকানের পাশ দিয়ে গেটের দিকে যাচ্ছে। রাহুল কে দেখেই সারা,, রাহুউউল বলে ডাক দেয়। রাহুল সারার ডাক শুনে তার দিকে আসতে থাকে। সারা তুর্জকে বলে,,
আমি রুহুলের সাথে ভিতরে চলে যায় আর আপনি আপনার এই হান্টাকে ডক্টর এর কাছে নিয়ে যান হিহিহিহি!
তুর্জ রেগে তাকানোর আগেই সারা ওখান থেকে চম্পট! কারণ সে জানে ওখানে আর একটু থাকলেই তুর্জের বকুনি খেতে হবে।
সারা আর রাহুল কলেজের ভিতর গিয়ে দেখে অনেক সুন্দর করে পুরো কলেজ সাজানো হয়েছে। যেদিকে চোখ যাচ্ছে সেদিকেই বিভিন্ন আলপনা আর নানান রকম ফুলের সমারোহ।
সারা ডানে বামে না তাকিয়ে হাবলার মতো উপর দিকে তাকিয়ে সামনে এগুচ্ছে আর তার বিশ্ববিখ্যাত প্রসঙ্গ বিহীন বকবকানি বকে যাচ্ছে। রাহুলের ফ্রেন্ড লিষ্টে কয়দিন আগে,#উড়ন্ত_প্রজাপতি নামের একটা আইডি থেকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট আসে। প্রোফাইল পিকচার দেখে রাহুল পুরো ক্র‍্যাশ খেয়ে গেছে। তাই সাথে সাথে রিকুয়েষ্ট এক্সসেপ্ট করে চ্যাটিং শুরু করে দেয়। মেয়েটা ভিষণ মিশুকে,, এই ক’দিনে প্রায় সব সময় রাহুলের সাথে বলে আর বেশ ভালো সম্পর্ক করে ফেলেছে। বর্তমানে রাহুল সেই উড়ন্ত প্রজাপতির সাথে মশগুল আছে তাই সারার আজাইরা প্যাঁচাল তার কান পর্যন্ত পৌছাচ্ছে না।
সারা সেই থেকে একই ভঙ্গিতে হেটে চলেছে,, হঠাৎ করে সেই নব্বই দশকের সিনেমার মতো কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে হাতের ফোন নিচে পরে যায়। সারা ধাক্কার তাল সামলাতে না পেড়ে পাশের ফুলের গাছের উপর পড়ে যায়। চোখের সামনে এতো বড় এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে অথচ রাহুল এখনো কিছু দেখতেও পায় নি। সে এখন ফোন নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।
পিংক কালার শার্টের সাথে হাটু ছ্যাড়া প্যান্ট পড়া ব্রাউন কালার চুলের একটা ছেলে সারার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে চলে,,
হেই বিউটি,,,,,,, (ছেলেটার মুখ থেকে আর কিছু বলতে না দিয়ে বলে)
হেই ছাগল, চোখে কি কম দেখেন? রেগুলার ঘাস খাবেন তাহলে চোখের জ্যোতি বাড়বে।
হেই ইউ!! ইউ আর ম্যাড?,,,,
আল্লাহর ওয়াস্তে কোরিয়ান ইংরেজি বন্ধ করে বলেন, আমার নাম বিউটি তা কে বলেছে আপনাকে?আর এই ফাঁকা ময়দানে ধাক্কা মেরে আমার সাধের ড্রেসের ১১ টা বাজালেন কেন??
ছেলে টা আর কোন কথা না বলে, সারার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে। সারা চোখের সামনে কয়েকটা তুড়ি বাজিয়েও ছেলেটার দৃষ্টি নামাতে না দেখে সে জামাকাপড় ঝাড়তে ঝাড়তে সামনে এগুলোতে থাকে।
বিশাল হল রুমের বাইরে রাহুল সারার জন্য অপেক্ষা করছে। সারা রাহুলের সামনে গিয়ে, ওর চুল গুলো খামছি দিয়ে ধরে ইচ্ছে মতো টেনে দেয়। তখনই মিঠি এসে সারাকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে বলে,,
তোর লুচ্চা বর কে তো কিছুই করতে পারিস না,, শুধু পারিস আমার এই ভুলাভালা বন্ধুর সুন্দর চুলকে নষ্ট করে দিতে।
শিমুল এসে বলে,, তোরা কি এখানে ঝগড়া করবি নাকি ভিতরে যাবি,, এমনই আমরা সবার লেদু, সামনে কোন সিট নেই, চল তারাতাড়ি!!
সবাই হুড়োহুড়ি করে ভিতরে চলে আসে। তারপর এক সাথে কোন সিট না পেয়ে যে যার মতো ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বসে পরে। বিভিন্ন রকম নাচ গান বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আসে। একে একে নবীনদের নাম ডাকা হচ্ছে আর প্রবীণ রা রজনীগন্ধা ফুলের সাথে একটা গিফট বক্স দিয়ে বরণ করে নিচ্ছেন। সারার নাম ডাকতেই সারা লাফাতে লাফাতে উঠে যায়। রজনীগন্ধার সাথে গিফট বক্স হাতে যে ছেলে সারাকে বরণ করতে এসেছে সে আর কেউ না, সেই ঘাস খাওয়া ছাগল। সারা অবাক হয়ে বিরবির করে বলে,,,,,
আমার ভাগ্যে এইসব ছাগল ভেড়া মহিষ দুম্বা গরিলা হাঙর হাতি,,,,,,,
এইযে!! এইসব প্রাণী জগৎ থেকে বের হয়ে এবার ফুল আর বক্স নিয়ে আমাকে উদ্ধার করুন(বিরবির করে বলে)
উহুক উহুক,, থ্যাংকস, থ্যাংকস এভরিবডি।
সারা আর কিছু বলার মতো কথা খুঁজে না পেয়ে নিচে নেমে চলে আসে। নিজের যায়গা তে বসতেই একটা লোক এসে বলে,,
ম্যাম প্লিজ আপনি সামনে আসুন,, আপনার জন্য স্পেশাল সিট রাখা হয়েছে। মিস্টার তুর্জের স্পেশাল গেস্ট আপনি, আর আপনাকে কিভাবে এই পাব্লিক সিটে বসতে দিই বলুন। প্লিজ আসুন আমার সাথে।
সারা উনার পিছনে পিছনে গিয়ে দেখে তুর্জ আগে থেকেই সেখানে বসে ছিলো। আর তার পাশের সিটে সারা বসে পড়ে।
তুর্জ সারাকে বলে, এভাবে আর কখনো কলেজে আসবে না। মনে রেখো যে তোমার দিকে তাকাবে তার চোখ দুটো অন্ধ হয়ে যাবে। প্রয়োজনে পুরো পৃথিবীর ধ্বংস করে দিবো!! বুঝতে পারছো তুমি??
সারা কিছুতেই বুঝতে পারছে না হঠাৎ করে এইসব কথা বলার কারণ কি।
(আসুন জেনে নিই কেন তুর্জ রেগে গেছে)
তুর্জ গাড়ি টা রেখে কলেজের হল রুমের সামনে আসতেই কয়েকজন ছেলে সারাকে দেখে দেখে বেশ কিছু বাজে কথা বলতে থাকে। যেহেতু আজ কলেজের অনুষ্ঠান তাই কোন রকম বিষয় টা হজম করে গেছে। কিন্তু কিছুতেই ভুলতে পারছে না। তা-ই তো রাগ ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছে এভাবে।
পুরো অনুষ্ঠান শেষে সারাকে বাসায় রেখে তুর্জ তার সাথে বেঈমানী করার শাস্তি দিতে সিক্রেট হাউজে যায়। আগে থেকেই তনিমা আর রীতি কে মুখোমুখি দুটো উত্তপ্ত ইস্পাতের ওয়ালের সামনে বেঁধে রাখা হয়েছে। ওয়ালটা এতোটাই উত্তপ্ত যে দুজনের পুরো শরীরের পোশাক ঘামে ভিজে গেছে। দুজনেই পানি পানি বলে চিৎকার করছে,,
চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here