ভালোবাসি হয়নি বলা-Part 16

0
251

#ভালোবাসি_হয়নি_বলা
#লেখকঃmahin_al_islam
#পর্বঃ১৬
আমি জানিনা আমার এই বাসায় থাকা হবে কিনা হয়তো আমি গরিব মানুষ আমাকে মেনে নেবে না, এখন দেখা যাক আমাকে আর কত কষ্ট সহ্য করতে হয়
মাহিনঃ এখানে এইভাবে চুপচাপ দাঁড়িয়ে না থেকে সুপায় গিয়ে বসলেই তো হয়
আমিঃ আপনারা এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবেন আর আমি একাই গিয়ে বসে কি করব
ছুটকিঃ আরে ভাবি ওই বাটপারের কথা বাদ দাও তুমি আমার সাথে আসো আমরা দুজনে গল্প করব
মাহিনঃ দেখ এই ভাবী টা তুই কিন্তু এমনিতেই পাসনি আমার জন্য পাইছিস তাই আমাকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত তা না করে তুই উল্টা আমাকে পচাছিস
ছুটকিঃভাবি তুমি আসো তো আমি তোমাকে বাড়িটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাই তুমি অতিথি এখন আমার বাসার তাই যতক্ষন থাকবে তুমি আমার সাথে থাকবে ওই বাটপারের সাথে কোন প্রকার কথা বলবে না যদি কথা বলো তাহলে তুমি আমার সাথে কথা বলতে পারবোনা
আমিঃ এটা আবার কেমন শর্ত
ছুটকিঃ ও বুঝতে পেরেছি স্বামীর জন্য দরদ উতলে উতলে পড়তেছে তাই না
আমিঃ আরে সেরকম কিছু না আমি তো শুধু বললাম যে এটা আবার কেমন শর্ত একজনকে সাথে কথা বললে অন্য জনের সাথে কথা বলতে পারবোনা আমি দুজনের সাথে কথা বলতে চাই
ছুটকিঃ দেখো ভাবি আগলা পিরিত বাদ দাও কারণ আমি ওই বাটপার এর কাছে আমি টাকা না নেওয়া পর্যন্ত ওর সাথে কথা বলবা না। যদি তুমি কথা বলতে চাও তো আমি তোমার মুখের টেপ মেরে দেবো কথা বলতে দেবো না।
মাহিনঃ তোর মতো একটা বোন থাকলে আর শত্রুর দরকার হয় না বুঝছিস।
ছুটকিঃ তুই চুপ থাক তুই আমার সাথে কথা বলবি না ভাবি তুমি আমার সাথে আসো তো।
মাহিনঃ তোর ভাবি এইখান থেকে এক পা নড়বে না।
উফফফ কি ঝামেলায় পড়লাম এখন কোথাও যাইতে পারবোনা।
আমিঃ আচ্ছা তোমরা ঝগড়া করো আমি একটু বাসা থেকে ঘুরে আসি এসে তোমাদের সমাধান করে দেব
মাহিনঃ বলছি না এখান থেকে এক পা নরলে খবর খারাপ আছে।
আমিঃ আচ্ছা আপনি বলুন এখন আমি কি করবো যেহেতু আপনার সাথে আমি সারা জীবন থাকবো তাই আপনার কথাটাই আমাকে মানতে হবে ছুটকি সরি বোন আমি তোমার সাথে যাইতে পারবোনা
হঠাৎ করে চোখ আটকে গেল সিঁড়ির উপরে একটা ভদ্রমহিলা সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আস্তাছে
উনাকে দেখে দুজনেই চুপ হয়ে গেল তার মানে ইনি হলেন আমার শাশুড়ি মা
শাশুড়ি মা ঃ সকাল সকাল তোরা ২ জন কি শুরু করছিস কালকে রাতের কথা কি সব ভুলে গেছিস আবার সকালে শুরু করে দিয়েছিস আর এই মেয়েটাকে এখানে কেন
মাহিনঃ মা আসলে ও হলো
শাশুড়ি মা ঃ বেশি রকম ন্যাকামি করবি না যা বলবি সরাসরি বলবি
ছুটকিঃ মা মেয়েটা হল ভাইয়ার বউ
শাশুড়ি মা : মাহিন ও যা বলছে সেটা কি সত্যি নাকি মিথ্যা?
আমি খেয়াল করে দেখলাম উনি মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে/
আমি বুঝতে পারলাম না যে মানুষটা এত রাগী সেই মানুষটা তার মায়ের সামনে এসে ভিজাবিরাল হয়ে গেল?
শাশুড়ি মা ধমক দিয়ে বললেন
শাশুড়ি মা : কিরে এরকম মাথা নিচু করে আছিস কেন আমি কি তোরে মাথা নিচু করে থাকতে শিখাইছি সবসময় মাথা উঁচু করে থাকবি তুই আর কি ঘটনা ঘটেছে যার ফলে আমাদের না জানিয়ে বিয়ে করে সোজা বউ বাড়ি নিয়ে এসেছিস
মাহিনঃ আসলে আম্মু
শাশুড়ি মা : দেখ এরকম তোতলামি করবি না আমার সামনে বুঝছিস,,, তোরা দুইজন এখন আমার চোখের সামনে থেকে চলে যা আমি যতক্ষণ না তোদের ডাকবো ততক্ষণ তোরা আমার চোখের সামনে আসবি না আমি মেয়েটার সাথে কথা বলব।
ওনার কথা শুনে আমার সারা শরীর কাঁপতে লাগল বুঝতেছিনা কি কি প্রশ্ন করবে আর আমি কি ওনার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব।!!
তারপর ওরা দুজন অই খান থেকে চলে গেল
মা: দেখো মা আমার ছেলে তোমার সাথে কি করেছে কি না করেছে আমি সেসব কিছুই জানিনা আর তোমাদের মাঝে কি সম্পর্ক ছিল না ছিল সেটা আমি জানি না তুমি আমাকে নির্ভয় সব কিছু বলতে পারো দেখো আমি ওদের সাথে যেরকম খারাপ আচরণ করলাম বা রাগ এইভাবে কথা বললাম আমি কিন্তু মোটেও সেরকম না আমি একজন মা তাই ছেলেটাকে একটু শাসন করতেই হয়
আসলে কি হয়েছিল তোমাদের মাঝে কী কারণে তোমাদের বিয়ে পর্যন্ত আসলো সম্পর্কটা আমি কিছুই জানি না তুমি যদি আমাকে সব কিছু খুলে বলতে তোমার নিজের মা হিসেবে আমি খুশি হইতাম।।।
আমি উনার এই রকম উদারতা মন দেখে অবাক হয়ে গেলাম যে মানুষটাকে একটু আগে ভেবেছিলাম অনেক রাগী হবে কিন্তু এখন দেখতেছি সেই মানুষটা অনেক ভালো।।
আমি চুপ থাকতে পারলাম না আস্তে আস্তে সবকিছু উনার সাথে শেয়ার করলাম উনাকে সব কিছু বলার পর আমি খেয়াল করে দেখলাম আমার চোখ থেকে নোনাজল টপটপ করে পরতেছে কিন্তু তার থেকে অবাক করা বিষয় হলো আমি যেই উনার মুখের দিকে তাকালাম দেখতেছি ওনার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল
আমিঃ আন্টি আপনার চোখে পানি কেন
মা: তুমি এত ছোট একটা মেয়ে তোমার উপর দিয়ে এত চাপ চলে গেছে তারপর তুমি হাসিমুখে সবার সাথে কথা বল এত অল্প বয়সে এটা কিভাবে তুমি সহ্য করো মা???
কথাগুলো বলতে বলতে উনি আরো কান্না করে দিলেন যেটা আমি কখনোই আশা করিনি ””’
মা: আচ্ছা যে করেই হোক তোমাদের তো বিয়েটা হয়ে গেছে আর আমার ছেলের বিয়ের উপযুক্ত সময় হয়ে গেছে বিয়েটা করেছে আমি অনেক খুশি হয়েছি কিন্তু ও তোমার সাথে প্রথমে যেটা করেছে তার জন্য ওকে শাস্তি পেতেই হবে
আমিঃ আসলে আনটি উনার কোন দোষ নেই আমি যদি ওনাকে অফার না করতাম তাহলে উনি কখনোই আমাকে ওইভাবে চেয়ে দেখতেন না কারণ আমার সেদিন টাকার প্রয়োজন ছিল না হলে আমি আমার ভাইকে বাঁচাতে পারতাম না কিন্তু অবাক করা বিষয় আমার টাকায় ভাইকে বাঁচাতে পারিনি কে জানি আমাকে সাহায্য করেছিল আমি সেটা আজ পর্যন্ত জানিনা,, কথা বলতেছি চোখ দিয়ে পানি আপনাআপনি গড়িয়ে পড়তেছে জানিনা এটা সুখের কান্না নাকি দুঃখের
মাঃ তুমি আজ থেকে এইবারের বৌমা তাই তোমার এইসব আচরণ পাল্টাতে হবে এবং মনোবল শক্ত করতে হবে আর আমার ছেলেটা অনেক বদমেজাজী তার সাথে তোমাকে মানিয়ে চলতে হবে ও যদি তোমাকে কিছু বলে সরাসরি আমাকে এসে বিচার দিবা তারপর দেখবা আমি ওর কি করি
এখন ছুটকির সাথে পুরো বাড়িটা ঘুরে ঘুরে দেখো আর যাওয়ার আগে কিছু খেয়ে যাবা নয়তো তোমার কপালে দুঃখ আছে,,,,
আর তোমাকে যাওয়ার কথা বলছি এই কারণে কারন আমি তোমাকে তোমার পুরো সম্মান দিয়ে আমার বাসায় তুলবো তাই,, আমাদের সোসাইটির লোক জানতে পারলে আমাদের অনেক সি সা দিবে তাই আমি দেখিয়ে দিতে চাই আমার ছেলের বউকে আমি কিভাবে বরণ করে নেই
আমি এখন আর এরকম উদাহরণ দেখে ওনাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম
আমি কখনও কল্পনাও করতে পারিনাই যে আমি সত্যিই রকম সম্মান ভাবো কোনদিন
আমি তো ভেবেছিলাম আমার হয়তো এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে কিন্তু আজকে মনে হচ্ছে আমি এই পৃথিবীতে আরো যুগ যুগ বেঁচে থাকব আর বেঁচে থাকতে চাই
সবার ভালোবাসার মাঝে,,,
মাঃ এই পাগলি মেয়ে কান্না করতে হবে না এখন যাও তোমার ইচ্ছামত ঘুরে ঘুরে দেখো বাড়িটা কারণ বাড়িটা টা তোমার,,,,
এইদিকে,,
মাহিনঃ তোর জন্য ভালো করে শুনতে পেলাম না মা ওকে কি বলল তুই এতো আমাকে জ্বালাস কি জন্য বলতো
ছুটকিঃ তুই এভাবে বেহায়ার মত লুকিয়ে লুকিয়ে কি শুনিস ওদের,,,আমি মাকে গিয়ে এক্ষণি বলে দিচ্ছি দাঁড়া
মাহিনঃ বইন বইন এটা কখনো করিস না তুই আমাকে কি বইন তুই এটা যদি করিস তাহলে আমার সব শেষ হয়ে যাবে
ছুটকিঃ তাহলে আমার টাকাটা দিয়ে দে তোর পকেট এ দেখছি অনেকগুলো টাকা আছে ওখান থেকে একটা টাকা নিতে পারবি না সব টাকা আমার সেগুলো আমাকে দিয়ে দে
মাহিনঃ আমি বুঝিনা তুই এত টাকা টাকা করিস কেন নে ভাগ এখান থেকে
আমি মায়ের ওখান থেকে উঠে এসে ওনাদের কথাবাত্রা শুনে তো মুচকি মুচকি হাসতেছে ব্যাপার কি তার মানে উনারা দুজনেই আমাদের কথা শোনার জন্য এখানে লুকিয়ে ছিলেন
আমি ওনাদের ওখানে গিয়ে একটু গলার আওয়াজ করলাম
আমাকে এইভাবে এখানে দেখে দুজনে চমকে উঠলেন
ছুটকিঃ আরে ভাবি তুমি এখানে কখন এলে
আমিঃ আমি কখন আসলাম সেটা বড় কথা নয় তোমাদের এখানে কি হচ্ছে সেটা বল নয়তো আমি মাকে এখনই সব বলে দিবো তোমরা আমাদের কথা শোনার জন্য এখানে লুকিয়ে ছিলে
তারপর মাহীন বাবু যেটা করলো আমি তো হাসতে হাসতে শেষ
এরকম কেউ বউয়ের সাথে করে আমি তো জানতাম না এটা না দেখলে,,,
চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here