#প্রহর_শেষে
#শেষ_পর্ব
রাকার এসাইনমেন্ট ভালভাবে শেষ হল। স্যারের অনেক ভাল লেগেছে ।যদি ও সে এসাইনমেন্টের উপরে স্যারের নাম ভুল লিখেছে। তবু ও স্যার কিছু মনে করে নি। এর ভিতর রায়হানের সাথে ওর কোন যোগাযোগ হয়নি। ছেলেটা কেমন যেন। ওইদিন কেমন ভালবাসা দেখাচ্ছিল। এরপর আর কোন খবর নাই।
রায়হানের ফাইনাল ইয়ার শেষ। রাকার সাথে কোন কন্টাক্ট করেনি। রাকা ট্রাই করবছিল। কিন্তু কেউ নাকি রায়হানের খবর জানেনা। রাকা ভেবেছিল রাঙ্গামাটি গিয়ে খবর নিবে। আবার সে ভাবল, যে নিজ থেকে হারিয়ে যেতে চায় তাকে কখনো খুঁজে পাওয়া যায় না।
এইভাবে ২টা বছর কেটে গেল। রাকা অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী। ওর মনে এখনো রায়হান ছাড়া কেউ নেই। এই দুই বছরে অনেকে ওর জীবনে আসতে চেয়েছে। কিন্তু রাকার মনে কেউ দাগ কাটতে পারেনি। ক্ষীণ আশায় রাকা এখনো অপেক্ষা করে আছে।
রাকার বাবা বিয়ের জন্যে উঠেপড়ে লেগেছে ।ছেলের ছবি দেখে বুঝতে পারল রায়হান ছাড়া আর কেউ না। তাই সে বিয়েতে রাজি হল না।
-কেন মা? ছেলেটা তো অনেক ভাল।
-না বাবা, তুমি অন্য যে কোন ছেলে দেখ, কিন্তু আমি এই ছেলেকে বিয়ে করব না।
-কিন্তু মা ছেলেটা তোকে অনেক পছন্দ করে।
-বাবা আমি পছন্দ করি না।
বাবাকে না বলে চলে আসে রাকা। রাগে রাকার মাথা ফেটে যাচ্ছে। রায়হানকে মজা বুঝাতে হবে। দু বছর আমাকে কষ্টে রেখে এখন মজা নেয়া হচ্ছে।
পরদিন রায়হান বাসায় এসে হাজির। অনেক সরি বলল রাকাকে। কিন্তু রাকা কোনভাবেই মানতে রাজি না।
-রাকা, আমার পরী। আমি সরি তো। প্লিজ বিয়ের জন্যে রাজি হয়ে যাও না মনি।
-আমি আপনাকে পছন্দ করি না। আপনি যেতে পারেন।
-এমন কর কেন? রাগ বুঝি?
-না, আপনি কে যে রাগ করব।
-আমাকে যা ইচ্ছা শাস্তি দাও। কিন্তু এমন কর না।
-ওকে। আগামী দুই বছর আমি বিয়ে করব না। এইটাই আপনার শাস্তি।
-কি???? এটা অন্যায়।
-এইটাই ন্যায় বিচার।
-এমন করে না মনি। আমি জানি, তুমি আমাকে অনেক ভালবাসো।
-হুম।আর কোন কথা নাই।
রাকাকে কোনভাবেই রাজি করানো গেল না। সে নিজের কথায় অটল। রায়হানের বাড়ির সবাই এসেছিল বুঝানোর জন্যে। কোনকিছুতেই রাকা রাজি না। তার এক কথা দু বছর ও যেমন কষ্ট করেছে রায়হানকে ও করতে হবে। আর না হলে ও বিয়েই করবে না।
সবাই রাকার শর্ত মেনে নিল। আরো দু বছর অপেক্ষা। এইবার অপেক্ষার পালা ক্রাশ সাহেবের। রাকার অনেক খারাপ লাগছিল এমন করতে। কিন্তু শাস্তি তো শাস্তি।
অবশেষে রাকার বিয়ে সম্পন্ন হল দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর। বাসর ঘরে বসে আছে রাকা। রায়হান তাড়াতাড়ি করে ঘরে ডুকে পড়ল।
-কি ক্রাশ সাহেব? আর সহ্য হয় না?
-কেমনে সহ্য হবে। চারটা বছর দুজনের জিদাজিদিতে চলে গেল। আমি আর কোন অপেক্ষা করতে চাইনা।
-আমার সাথে পাঙ্গা নিতে গেলে এমনই হবে বুঝছেন?
-দেখতেই পাচ্ছি। শুধু শুধু দুইটা বছর বরবাদ।
-হি হি হি। আমাকে কষ্ট দিয়ে মজা লাগছে না? এখন বুঝলেন কষ্ট কাকে বলে।
-থাক আর কষ্ট বুঝাতে হবে না। এখন একটু বুকে আসো।
-না। আজ রাত আপনি একা কাটান।
-কি??? কোন কথা শুনতে চাই না। এত সাধনার পরে পাইলাম।
পরিশেষে সকল অপেক্ষার অবসান ঘটলো। প্রহর শেষে সেই আমারি হলে।