#জৈষ্ঠ্যের_প্রেম (পর্ব-১৭)

0
294

#জৈষ্ঠ্যের_প্রেম (পর্ব-১৭)
লেখনীতে– ইনশিয়াহ্ ইসলাম।

৩৫.
মৌসন্ধ্যা গ্রীষ্মের অফিস থেকে আসার পরদিনই চট্টগ্রাম চলে যায় মাহতিমের সাথে। যদিও সে চেয়েছিল ছোট খাটো আয়োজন করে বিয়ে করতে কিন্তু কেউ মানেনি। এতে সেও রে’গে যায়। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বিয়েটা ফেনীতে তার নানা বাড়িতেই হবে। আত্মীয় স্বজন আর এলাকার মানুষজনকে দাওয়াত করা হবে কেবল। গ্রীষ্মের মা আর জুন মৌসন্ধ্যার জন্য কেনাকাটা করে নিলেন ঢাকা থেকে। বিয়ের দিন সেগুলো দেখে মৌসন্ধ্যার চোখ মুখ কুঁচকে যায়। এই অযাচিত দামী কাপড় চোপড় দেখে তার গা গুলায়। কিন্তু আর বেশি কিছু করার নেই। বিয়েতে একবারই তো পরবে!

বিয়েটা খুব সাদামাটা ভাবেই সম্পন্ন হলো। যদিও গ্রীষ্মের মা মন থেকে মানেনি তারপরেও তাকে বেশ হাসি খুশি আর তৎপর দেখা গেল। যতোই হোক, নিজের একমাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা!

রাতে গ্রীষ্ম আর মৌসন্ধ্যা যদিও এক সাথে ছিল কিন্তু খুব দূরত্ব বজায় রেখে। মৌসন্ধ্যা স্পষ্ট বলে দিয়েছে তার সময় দরকার। গ্রীষ্মের তো মৌসন্ধ্যাকে পেয়েই সব চাওয়া পূরণ হয়ে গেছে। সে আর জোর করল না। বউ হয়ে যেহেতু আছে একদিন সবই হবে। নিজের সাথে তাকে বেঁধে রাখা গেছে এই ঢের!

পরদিন যথাসময়ে মৌসন্ধ্যা আর গ্রীষ্ম ঢাকা ফিরে গেল। মৌসন্ধ্যার পরীক্ষা তাই আর সে থাকল না। মূলত চাইছে না। পরীক্ষাটা আহামরি ছিল না, না দিলেও পারা যেতো কিন্তু সে আর গ্রীষ্মের সাথে থাকতে চাইছে না। গ্রীষ্মকে নিয়ে তার যত ল’জ্জা আর অস্ব’স্তি ছিল তা যেন বিয়ের পর আরো বেশি বেড়ে গেছে। গ্রীষ্মও ব্যাপারটা বুঝতে পারে। তাই কিছু বলে না।

তবে দিন যত যেতে থাকে দূরত্বটাও কেন যেন বেড়ে যায়। দুজনেই বুঝতে পারে। কিন্তু মুখ ফুঁটে বলার মতো, অভি’মান, অভি’যোগ করার মতো সম্পর্ক তো তাদের নয়। আসলে গড়েই ওঠেনি।

গ্রীষ্ম কল দিলে মৌসন্ধ্যা জবাব দেয় শুধু গ্রীষ্মের খবর জানতে চায় না। গ্রীষ্ম খরচ করার জন্য টাকা দিলে সে নেয় না। হল ছেড়েও দেয়নি। বরং তিনটা টিউশন যোগাড় করেছে। বাসায় গিয়ে পড়ায় যারফলে মাস শেষে ১৫০০০ হয়েই যায়। আর তাছাড়া তার বাবা আর ভাইও খরচ দেয়। গ্রীষ্ম একদিন এটা নিয়ে একটু রা’গা’রা’গি করতেই মৌসন্ধ্যা জবাব দিল,
-‘আপনি এখন আমার ব্যক্তি স্বাধীনতা কেঁ’ড়ে নিতে চাইছেন? বিয়ে করেছেন বলে কি মাথা কিনে নিয়েছেন!’

গ্রীষ্ম সেদিন কিছু বলার মতো পায় না আর। নিজেকেই দো’ষারপ করে। হয়তো তারই ভুল! মৌসন্ধ্যার জীবনে একপ্রকার জোর করে ঢুকে পড়েছে। সম্পর্কটা একেবারে অস্বাভাবিক। গ্রীষ্মের একবার মনে হলো মৌসন্ধ্যা ঝোকের বশে আর সবার জোরাজুরিতে তখন বিয়েতে মত দিয়ে দিয়েছে। পরে হয়তো সে তার ভুলটা বুঝতে পেরেছে। তাই হয়তো সে চাইছেনা গ্রীষ্মের থেকে কোনো কিছু। মোট কথা গ্রীষ্মকেই সে চাইছেনা।

একসময় গ্রীষ্মও কল দেওয়া বন্ধ করে দেয়। দেখা করারও আর্জি রাখেনা। মৌসন্ধ্যা একটু শূন্যতা অনুভব করে। কিন্তু তেমন একটা গুরুত্ব দিল না তাতে। পড়ালেখার চাপে এখন আর অন্য কিছুতে মন দেওয়ার সময় তার নেই।

পরিবারের সবাইও যেন ভুলে গেছে এই দুটি মানুষের বিয়ের কথা। তাই হয়তো দূরত্বটা কারো চোখে লাগেনি। নাইলা হাসানও খুশি। ছেলে তার আশেপাশে আছে। সে ভেবেছিল মৌসন্ধ্যা সত্যিই গ্রীষ্মকে অন্যত্র নিয়ে যাবে। যখন তা হলো না তার খুশিরও অন্ত রইল না।

বর্ষার বিয়ে সামনের সপ্তাহে। সেই সুবাদে আজ মৌসন্ধ্যা ফেনীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। সাথে কেউ নেই। সে একাই। বর্ষা গতকালকেই সবার সাথে চলে গেছে। গ্রীষ্মের পরিবারও আজ সকালে পৌঁছে গেছে। দেরি কেবল মৌসন্ধ্যার। সে বাসে করে গিয়ে পৌঁছায় রাতের আটটায়। স্টেশনে মাহতিমকে আসতে বলে দিয়েছিল আগেই। কিন্তু মাহতিম আসেনি। এসেছে গ্রীষ্ম। তাকে দেখে মৌসন্ধ্যা অবাক না হয়ে পারেনি। গত ২৫/২৬ দিন তাদের কোনো যোগাযোগ নেই। হঠাৎ গ্রীষ্মকে দেখে চমকানোর কথা-ই।

মৌসন্ধ্যার ব্যাগ নিজের হাতে টেনে নিয়ে বলল,
-‘আসতে অসুবিধা হয়নি তো?’

হয়নি বললেও মি’থ্যা বলা হবে। কিন্তু কথা বাড়াতে ভালো লাগছিল না। তাই সে বলল,
-‘না। অসুবিধা হয় নি কোনো।’

গ্রীষ্ম বুঝতে পারে মৌসন্ধ্যা কথা বলতে আগ্রহী নয়। তাই সেও আর কথা বাড়ায় না। তবে গাড়িতে ওঠার আগে একটা ঠান্ডা কোক কিনে দিল।

গ্রীষ্ম নিজের গাড়ি নিয়েই এসেছে। মৌসন্ধ্যা কোকটা হাতে নিয়ে কয়েক ঢোক পান করে। তারপর কি মনে করে গ্রীষ্মের দিকে বাড়িয়ে দেয়। তাতে গ্রীষ্ম অবাকই হলো। কিন্তু হাতে নেয়, দুই ঢোক গিলে মৌসন্ধ্যাকে ফেরত দিয়ে দিল।

এসিতে ভালো লাগছিল না। তাই মৌসন্ধ্যা বলল,
-‘এসিটা অফ করে দিন।’

-‘ঠান্ডা লাগছে নাকি!’

-‘না। জানলার কাঁচ নামাবো। প্রাকৃতিক হাওয়া সবচেয়ে ভালো। আরামদায়ক!’

গ্রীষ্ম মৃদু হেসে এসি অফ করে দিল। মৌসন্ধ্যা প্রাকৃতিক হাওয়ার ছন্দে ঘুমিয়ে পড়েছিল কখন টেরও পেল না। বাড়িতে পৌঁছে গ্রীষ্ম মৌসন্ধ্যাকে কয়েকবার ডাকে। তবে মৌসন্ধ্যার ঘুমটা বেশ গাঢ় ছিল। শরৎ তখন কোথা থেকে আসছিল। গ্রীষ্মকে গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলল,
-‘কি হয়েছে? কোনো সমস্যা?’

-‘জৈষ্ঠ্য ঘুমিয়ে পড়েছে। ডাকছি উঠছে না।’

-‘এত ডাকাডাকির কি আছে? বউ তো! কোলে নিয়ে নাও। নাকি শক্তি নেই ওঠানোর!’

-‘কোলে তুলব? বাড়ির সবাই কি ভাববে?’

-‘যার যা ইচ্ছার ভাবুক। নিজের বউকে কোলে করে নিয়ে যাবে। তাতে অন্যদের মাথা ঘামানোর তো দরকার নেই!’

গ্রীষ্ম আরেকবার ডাকে মৌসন্ধ্যাকে। সে বিরক্ত হয়ে গেল। কিন্তু নড়লো না। গ্রীষ্ম এবার তাকে কোলে নিতেই শরৎ বলল,
-‘ওর লাগেজ কোথায়? আমি নিচ্ছি। তুমি ওকে নিয়ে যাও।’

বাড়ির হল রুমে কেউই ছিল না। সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই আষাঢ়ের সাথে দেখা। আষাঢ় মৌসন্ধ্যার দিকে একপলক তাকিয়ে নিচে নেমে গেল। তার ক’ষ্ট হচ্ছে। ভীষণ ক’ষ্ট হচ্ছে। মুখ ফুটে যখন ভালোবাসার কথা বলতে পারেনি তখন আর এসব দেখে জেলাস ফিল করাও ঠিক নয়। মৌসন্ধ্যা এখন তার ভাইয়ের বউ। এখন তো আর ওই নজরে তাকে দেখা যায় না। কানাডায় বসে যখন তাদের বিয়ের খবর পায়, তখন সে কিছুই করতে পারেনি। করবে কী! করার কি আদৌ কিছু ছিল? মৌসন্ধ্যা গ্রীষ্মের ভাগ্যেই ছিল। অথচ সে শুধু শুধুই পাঁচ বছর ধরে মেয়েটাকে ভালোবেসেছে। সেই ভালোবাসাটা কি বৃথা? উহু! ভালোবাসায় লাভ, ক্ষ’তি বলেই তো কিছু নেই। তাই বৃথা হওয়ার কথা নয়। তার ভালোবাসতে ইচ্ছে হয়েছিল সে বেসেছে। এখন সেই ভালোবাসা ভুলে যেতে চাইছে। ভুলে যাবেও। হয়তো একটু সময়ের প্রয়োজন!

৩৬.
রুমে এনে মৌসন্ধ্যাকে বিছানায় শুইয়ে দেয় গ্রীষ্ম। শরৎও পেছন পেছন এসে ট্রলিটা দিয়ে যায়। জুন আর বর্ষা সহ আরো কয়েকজন গ্রীষ্ম আর মৌসন্ধ্যাকে দেখেছিল। তাই রুমে এসে একবার ঢু মে’রে যায়। মৌসন্ধ্যা ঘুমিয়ে ছিল বলে বেশি কিছু বলেনা। তবে ইশারায় কিছু ইঙ্গিত দিয়ে গ্রীষ্মকে ল’জ্জায় ফেলে দেয়।

একটার দিকে মৌসন্ধ্যার ঘুম ভাঙে। জার্নি করার পর ফ্রেশও হয়নি। এভাবেই ঘুমিয়ে পড়েছে! ভাবতেই তার নিজের কাছেই কেমন লাগছে। তারওপর সে কীভাবে রুমে এসেছে এই নিয়েই চিন্তায় পড়ে গেছে। রুমে গ্রীষ্মকে না দেখে সে একটু অবাক হলো। এত রাতে গ্রীষ্ম কোথায়?

ফ্রেশ হয়ে আসার পর ক্ষুধা অনুভব হলো প্রচন্ড ভাবে। সেই কোন দুপুরে একটু খেয়েছিল! এখন অবশ্য এত রাতে আর খাবার খাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সে পুনরায় ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতেই গ্রীষ্ম রুমে এলো। হাতে প্লেট! মৌসন্ধ্যাকে শুতে দেখতেই বলল,
-‘আবার শুয়ে পড়ছ কেন? খেয়ে নাও। খাবার এনেছি।’

মৌসন্ধ্যা উঠল। ভাত, মাছ ভাজা আর ঘন করে ডাল নিয়ে এসেছে গ্রীষ্ম। মৌসন্ধ্যা প্লেট হাতে নিতেই বলল,
-‘ফুফু বলল রাতে হেভি খাবার খেতে পারো না। তাই বিরিয়ানি আনলাম না। তুমি খেতে চাও? তাহলে নিয়ে আসি!’

-‘না না। বিরিয়ানি আমার পছন্দও না ওত একটা। এই মাছ ভাজা আর ঘন ডাল আমার অনেক প্রিয়। আপনাকে ধন্যবাদ।’

মৌসন্ধ্যা খাচ্ছে আর গ্রীষ্ম পানি লাগলে পানি এগিয়ে দিচ্ছে। নয়তো একটু রুম জুড়ে পায়চারি করছে। খাওয়া শেষ হতেই গ্রীষ্ম বলল,
-‘আমাকে প্লেট দাও। আমি রেখে আসি।’

-‘না না। আমিই যাচ্ছি। আপনি শুয়ে পড়ুন। অনেকক্ষণ জেগে আছেন।’

-‘আমাকে দাও। আমিই যাচ্ছি।’

মৌসন্ধ্যা দিল না। নিজেই গিয়ে রেখে আসে। এবং অযথা কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে এদিক ওদিক। বিয়ের রাতের পর আজ আবার একসাথে থাকবে তারা! একটু ল’জ্জা, সংকোচ আর ভ’য় নিয়ে একটা অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে তার। সে মা’ন’সিক ভাবে মোটেও প্রস্তুত নয়। কি করবে! গ্রীষ্ম যদি কাছে আসতে চায় সে ফিরিয়ে দিবে কীভাবে! এর আগে একবার বলেছিল সময় লাগবে। গ্রীষ্ম যথেষ্ট সময় দিয়েছে। এর বেশি কি দিবে? সে দোটানায় পড়ে গেল। কিছুক্ষণ হল রুমের সোফায় চুপচাপ বসে থেকে রুমে গেল। সে ঠিক করে ফেলেছে গ্রীষ্ম যা চাইবে সে দিবে। স্বামী হয় তার! যথেষ্ট অধিকার রয়েছে।

রুমে এসে দেখে গ্রীষ্ম পোশাক বদলে ঘুমিয়ে পড়েছে। এতে সে স্ব’স্তির শ্বাস ছাড়ে। যাক! বাঁ’চা গেল!

পরদিন সকাল থেকেই বর্ষার বিয়ের ডেকোরেশনের কাজ শুরু হয়ে গেল। মৌসন্ধ্যা সকালে গিয়ে সবার সাথে দেখা করল। নাইলা হাসানকে সালাম দিতেই তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন,
-‘আগে নাহয় নানার বাড়ি ছিল। যে সে ভাবেই চলতে। এখন কিন্তু শ্বশুর বাড়িও। এসব ফতুয়া টতুয়া বাদ দিয়ে শাড়ি পরো।’

মৌসন্ধ্যা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। শাড়ি পরতে তার ভালো লাগে না। কিন্তু কিছু করার নেই। নাইলা হাসান যেন তাকে অ’প’দ’স্ত করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। সে রুমে গিয়ে কাবার্ড থেকে শাড়ি বের করে নিল। বিয়ের সময় তাকে যা যা জামা কাপড় দেওয়া হয়েছিল সবটাই সে এখানে রেখে দিয়েছে।

শাড়ি পরে গিন্নি সেজে সে রুম থেকে বের হতেই সাবাবের সাথে দেখা। সাবাব তাকে দেখেই বলল,
-‘আসসালামু আলাইকুম বড় ভাবী। ভালো আছেন!’

মৌসন্ধ্যা চোখ পাকায়। দুই ঘন্টা আগেও এর সাথে দেখা হয়েছিল। তখনও আগের মতোই নরমাল ছিল। এখন তার ঢং করা হচ্ছে!

সিঁড়ি দিয়ে নামতেই গ্রীষ্মের সাথে দেখা হলো। ব্যস্ত ভঙ্গিতে উপরে উঠছিল। মৌসন্ধ্যাকে দেখে একটু থেমে গেল। সময় নিয়ে ভালো ভাবে তাকে দেখে নিয়ে মৃদু হেসে উপরে উঠে গেল। গ্রীষ্মের ওই হাসি দেখে মৌসন্ধ্যা এত ল’জ্জা পায়!

নাইলা হাসানের কি হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না। তিনি নিজের সাথে সাথে মৌসন্ধ্যাকে রাখছেন। হাতে ধরিয়ে কাজ দেখিয়ে দিচ্ছে। মৌসন্ধ্যার নানু, মা, খালামণিরা সেসব দেখে মিটিমিটি হাসে। মৌসন্ধ্যা ল’জ্জা পায় তাদের ব্যবহারে। নাইলা হাসান তাদেরকে তাই বলেন,
-‘আপনারা হাসছেন কেন? সে বাড়ির বড় বউ। দায় দায়িত্ব বলতে কিছু আছে তো নাকি! এই মৌসন্ধ্যা, দেখি আমাদের সবার জন্য চা টা তুমিই করো।’

মৌসন্ধ্যা চা করল। সবাই বেশ প্রশংসা করল। কিন্তু সে জানে চিনি কম হয়েছে। ইচ্ছে করেই কম করে দিয়েছে। কিন্তু কেউ কিছুই বলেনি। সাবাব তো দুইবার খাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। মৌসন্ধ্যা দিল না।

সে ভেবেছিল তাকে দিয়ে আর কাজ করাবেন না নাইলা হাসান। কিন্তু সে ভুল। চায়ে চিনি কম হয়েছে বলে আবারও চা করতে পাঠালো তাকে। তিনিও জানেন মৌসন্ধ্যা ইচ্ছাকৃত এমন করেছে। অগত্যা এবার ভালো করেই চা করল।

সবাই এবার মিছিমিছি প্রশংসা করল না। সত্যিকার অর্থেই করল। মা আর বউয়ের এই স্নায়ু যু’দ্ধ দেখে গ্রীষ্ম আনমনে হাসে। কেন যেন ব্যাপারটা একটু উপভোগ্য। কিছুক্ষণ পরই দেখা গেল বউ শ্বাশুড়ির গলায় গলায় ভাব হয়েছে। মৌসন্ধ্যাকে রান্না করতে দিয়ে নাইলা হাসান পাশে দাঁড়িয়ে সব দেখিয়ে দিচ্ছেন। আর একটু পর পরই পাখা দিয়ে বাতাস করছেন আর বলছেন,
-‘একটা এসি লাগাতে হবে। এরা উল্টা পাল্টা পথে টাকা খরচ করবে। কিন্তু দরকারি খরচ করবেনা।’

মৌসন্ধ্যাও তাল মেলায়স
-‘জ্বি মা। এসির সত্যিই খুব প্রয়োজন।’

ওহ! নাইলা হাসান স্পষ্ট বলে দিয়েছেন তাকে মা বলেই ডাকতে হবে। মামানি বলে ডাকলে কাজ করাতে কেমন অস্ব’স্তি হয় নাকি তার। তাই!

#চলবে।

(কেমন হয়েছে জানাবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here