#আকাশেও_অল্প_নীল
#পর্বঃ২৯+৩০
#আর্শিয়া_ইসলাম_উর্মি
৯১,
সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে মাত্র রুমে ঢুকলো স্নেহা। একমাত্র ছোটো ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে আয়োজনের শেষ নেই। চাচা, ফুফা, মাহাদের সাথে তাল মিলিয়ে সেও ছুটছে বেশ। দিগন্ত যেমন তার বিয়েতে কোনো খামতি রাখতে চায়নি, সেও চায় না ভাইয়ের বিয়েতে খামতি থাকুক কোনো। মাহাদ ক্লান্ত হয়ে রুমে এসে আগেই শুয়ে পরেছিলো। বিছানায় পিঠ ঠেকাতেই সে ঘুমে কাদা। স্নেহা নিজের ঘাড়ে হাত দিয়ে চাপ দিতে দিতেই মাহাদের পাশে এসে বসলো। বালিশে এক হাতে মাথা ঠেকিয়ে ঘুমন্ত মাহাদের দিকে এক পলকে তাকিয়ে রইলো বেশ কিছুক্ষন৷ ঘুমন্ত মুখটায় সারাদিনের ক্লান্তির ছাপ। মানুষ বলে ঘুমালে নাকি বাচ্চাদের মতো মনে হয়! কই না তো! এমন কেনো মনে হবে? পরিবারের মানুষদের মুখে হাসি ফোটাতে সারাদিন যে মানুষ টা খেটে ম”রে সে ঘুমালে ক্লান্তি ব্যতিত বাচ্চাদের মুখের আদল আসবেনা৷ স্নেহার মন টা আজ ভীষণ ভালো৷ ভাইয়ের জন্য মাথা থেকে চিন্তা নামছে তার। স্নেহার মন একটু দুষ্টমি করার জন্য আকুপাকু করতে শুরু করলো। সে অন্য হাতের তর্জনী আঙুল দিয়ে মাহাদের কপাল থেকে স্লাইড করে থুতুনিতে আঙুল উঁচিয়ে ঠোটে একটু চাপ দিলো। তখনই মাহাদ চোখ খুলে খপ করে স্নেহার হাত টা ধরে ফেললো। স্নেহা ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায় আচমকা মাহাদ চোখ মেলে তাকানোয়। সে চোখ দুটো ছোটো ছোটো করে তাকিয়ে মাহাদকে জিগাসা করলো,
“তুমি ঘুমোওনি?”
মাহাদ স্নেহার হাত ধরে টান দিয়ে চট করেই নিজের বুকের উপর ফেললো স্নেহাকে। আচমকা এমন হওয়ায় স্নেহা একটু ঘাবড়ে গিয়ে মাহাদের বুকের উপর থেকে উঠতে নড়াচড়া শুরু করে। মাহাদ স্নেহার নড়াচড়া থামাতে মাথায় হাত দিয়ে বুকের সাথে চেপে ধরে। ফিসফিস করে বলে,
“ষোড়শী কন্যার মতো স্বামীর বুকে এসে এতো ছটফট করো কেনো হু? বিয়ের বয়স মাস পেরুবে পেরুবে করছে। তবু লজ্জা কমছে না?”
“আমি তো ষোড়শী কন্যা নই মাহাদ। আমি ত্রিশ বছরের একজন পরিপূর্ণ নারী। আমার কাছে ষোড়শী কন্যার কোনো ফিলিংস পাবেনা।”
স্নেহা কিছুটা মনঃক্ষুণ্ন হয়েই স্মিত হেসে কথাটা বললো। মাহাদ পূর্ণ দৃষ্টি ফেললো স্নেহার দুই গভীর চোখে। ঘোরলাগা কণ্ঠে বললো,
“তুমি বৃদ্ধ বয়সেও আমার কাছে ষোলো বছরের একজন ষোড়শী বধু হয়েই থাকবে স্নেহা। যার প্রতি আমার ভালোবাসা রোজ জন্মাবে। সংসার জীবনে ঠুকঠাক ঝ”গড়া হবেনা এই গ্যারান্টি দেওয়া যায় না। আমাদের ঝগড়া হবে, কিন্তু ভালোবাস কমবেনা।”
“ষোলো বছরের ষোড়শীর প্রতি ভালোবাসা রোজ জন্মায় অথচ ত্রিশ বছরের যুবতীর উপর ভালোবাসা জন্মায় না মাহাদ?”
“কথাগুলোর উল্টো মানে বের করবেন না বউ। আমাদের ভালোবাসার বয়সটা ঐ অল্প বয়সেই আটকে থাকুক। দিন যেতে থাকবে, আমরা বৃদ্ধ বয়সের দিকে উপনীত হবো। কিন্তু আমাদের ভালোবাসা বৃদ্ধ না হোক। আমাদের ভালোবাসা রোজ ফুল গাছে ফুলের কলি ফোঁটার মতোই স্নিগ্ধ,, কোমল, সুন্দর থাকুক। আমি আপনার প্রেমে রোজ রোজ পরি বউ। সে আপনি ১৬বছরের ষোড়শী হলেও কিংবা ৩০বছরের যুবতী হোন অথবা ৬০বছরের বৃদ্ধা হলেও৷ আপনাকে রুহ দেহে আছে যতোদিন, ভালোবাসবো আমি ততোদিনই।”
স্নেহা মৃদু হাসলো মাহাদের কথায়। বুকের মাঝে মুখ ডুবিয়ে শুয়ে পরলো। মাহাদ আলতো বাঁধনে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরলো স্নেহাকে। ভালোবাসায় কোনো আচর যেনো না পরে, এই চেষ্টাটাই রোজ করে যায় মাহাদ৷ দীর্ঘসময়ের সাধনার প্রাপ্তী স্নেহা। সেই প্রাপ্তী অক্ষুঃণ্ন হয়ে রয়ে যাক তার জীবনে।
৯২,
রাইমাদের বাহির উঠোন জুড়ে চাঁদের হাট বসেছে যেনো। রাইমা, শার্লিন, শিখা, রেখা, সাইরা, সাইফা, তিশা সবাই মিলে একপ্রকার জমিয়ে আড্ডা দিতে বসে গেছে। সথে নিয়েছে চানাচুর দিয়ে মুড়ি মাখা, পেয়ারা মাখা। পেয়ারা মাখায় যে ঝাল দিয়েছে শার্লিন! এখন বসেছে পানির জগ নিয়ে।এরমাঝে চলছে সবার হাতে মেহেদী দেওয়ার পর্ব। হলুদের দিনে সবাই তো সাজগোজ, আনন্দ মজা এসব নিয়েই ব্যস্ত থাকবে। হাত টা আর রাঙাবে কখন! এজন্য আগে ভাগেই সব মেয়েরা মেহেদী দিয়ে নিচ্ছে। বিয়ের জন্য কাছের সব আত্মীয় স্বজন এসে গেছে প্রায়। বড়ো সবাই তাদের থাকা-শোয়ার ব্যবস্থা করে দিতে ব্যস্ত। আটটা ঘরে কি এতো মানুষের জায়গা হয়! এরমাঝে তো রাইমা আর শার্লিন এক রুমে আছে। ঐ রুমে কাউকে এলাউ করবেনা ওরা। তবুও মানিয়ে গুছিয়ে সব মেয়েরা ঐ রুমে শুতে পারবে বলে রাজী করানো গেছে। শাহনাজ বেগম মেয়েকে মানিয়ে নিয়েছেন। ইফরাদ, মেসবাহ রাতের খাবার শেষে রাহান এবং রাইমার ফুফাতো দুই ভাই মিহাল এবং নিহালের সাথে গ্রামেরই একটা দোকানে গেছে এমনিই ঠান্ডা জাতীয় কিছু পাওয়া যায় কিনা খুজতে। পেলে খেয়ে মেয়েদের জন্য আনবে বলে জানিয়ে গেছে। শার্লিনের মন সবার মাঝে থেকেও একপ্রকার উদাস। ইফরাদকে দেখার পর থেকেই দেখছে ইফরাদ তার সাথে কথা বলার জন্য ছটফট করছে! অথচ এতো মানুষের মাঝে সম্ভব হচ্ছে না। কারোর উপর রাগ করে থাকার অভ্যাস টা শার্লিনের নেই। ইফরাদের উপর একটু অভিমান জমলেও ইফরাদের সাথে দুদিন হলো কথা হয়নি, তাতেই তার মনের মাঝে হাহাকার চলছে যেনো। রাইমা একে একে সবার হাতে মেহেদী দিয়ে দেওয়া শেষে শার্লিনকেই দিয়ে দিচ্ছিলো। চঞ্চল মেয়েটাকে চুপ থাকতে দেখে সে একটু বিস্মিত হয়। সবাই যেখানে বকবক করতে ব্যস্ত, অথচ যে সবার থেকে বেশি বকবক করে, সেই চুপচাপ! বিষয়টা হজম হলো না রাইমার। সে মেহেদী দিয়ে দেওয়া বন্ধ করে শার্লিনকে হালকা ধা”ক্কা দেয়। মাদুর পেতে মাটিতেই বসা হয়েছিলো। শার্লিন রাইমার হাতের ধা”ক্কা অনুভব করে নিজের আনমনা ভাব ছেড়ে রাইমাকে জিগাসা করে,
“কি হয়েছে? ধাক্কা”স কেন?”
“তুই চুপচাপ? বিষয়টা কি বলতো?”
“কিছুনা, এমনি ঘুম পাচ্ছিলো এজন্য।”
“চাঁদরাত আসছে সামনে, দ্বিধা আর ঘুম ছাড়াই পুরো রাত জেগে থাকবি জানি। আর আজ তুই আমায় ঘুমের বাহানা দেখাস?”
“এটা তোর বিয়ে, চাঁদ রাত নয়। রাত জাগলে সুন্দর লাগবে না। আর আমায় সুন্দর না থাকলে পাত্রপক্ষ থেকে আসা সুইট, কিউট তোর দেবর গুলোর সাথে আমি ফ্লার্ট করতে পারবোনা৷”
“তুমি কি সিঙ্গেল যে অন্যদের সাথে ফ্লার্ট করবে?”
রাইমা আর শার্লিনের কথার মাঝেই পুরুষালী গম্ভীর কণ্ঠ শুনেই শার্লিন চুপ হয়ে যায়। এবার হয়ে গেলো তার! এক হাতে মেহেদী দেওয়া হয়নি, সেই হাত দিয়ে কপালে কয়েকটা বারি দেয় শার্লিন। এটা পুরোটাই ইফরাদের কণ্ঠ। অন্য কারোর নয়। রাইমা ঠোঁট টিপে মুখে হাত দিয়ে মুচকি হাসে। শার্লিনের অবস্থা দেখে সবাই রাইমার মতোই হাসছে। শার্লিন ঘাড় ঘুরিয়ে পিছন দিকে তাকায়৷ ইফরাদ একহাতে আরফানের হাত ধরে অন্য হাতে তার প্রিয় কোঁকা কোলার বোতল হাতে দাড়িয়ে আছে। রাতের প্রায় ১০টা বাজে এখন। এটাই গ্রামে যেনো মধ্যরাত মনে হচ্ছে। চারপাশে এতো অন্ধকার, ইফরাদকে দেখে একদিকে ছুট লাগিয়ে যে সে পালিয়ে থাকবে! এই উপায়ও নেই৷ ইফরাদ আসার পর মোটামুটি সবাই জেনে গেছে ইফরাদ আর শার্লিনের বিয়ে ঠিক। এজন্য সবাই দুজনের অবস্থা দেখে বিনোদন পাচ্ছে। শার্লিন নিজের ভয় টাকে চাপা রেখে থমথমে গলায় বললো,
“আমি সিঙ্গেল না মিঙ্গেল তাতে কিছু যায় আসেনা। আমার বান্ধবীর বিয়ে। এজন্য আমি কয়েকদিনের জন্য সিঙ্গেল। আপনাকে চিনিনা আমি।”
৯৩,
শার্লিনের উত্তর শুনে মেসবাহ সহ সবাই হেসে ফেলে। তার বোন দুষ্টু এটা সে জানে। এতোটা দুষ্টু এটা বুঝতে পারেনি। ছোটো বোন এবং তার ভালোবাসার মানুষের মজার খুনশুঁটির মাঝে সে থাকলোনা। আরফানের হাত আকড়ে নিয়ে স্থান ত্যাগ করলো। এমনিতেও আরফান ঘুমে ঢুলছিলো। বাচ্চা তো এতো রাত জাগার স্বভাব আরফানের নেই। মেসবাহ চল যেতেই ইফরাদ নিজের শার্টের হাতা গোটাতে গোটাতে হেঁটে এসে শার্লিনের ফাঁকা হাত ধরে সবার মাঝ থেকে উঠিয়ে নিয়ে চলে গেলো। শার্লিন চেঁচাতে চেঁচাতে বললো,
“আরে কি করছেন? কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমায়?”
“বাচ্চাদের মতো লাফালাফি করলে কোলে তুলে আ”ছার মারবো। বড়োরা দেখতে পাবে। একটু শান্ত হয়ে আমার সাথে আসো। নয়তো কি করবো আমিও জানিনা।”
শার্লিন ইফরাদের ধমক শুনে বাচ্চাদের মতো গাল ফুলিয়ে ইফরাদের সাথে পা মিলিয়ে হাঁটতে শুরু করে।
রাইমা গালে হাত দিয়ে বসে বসে হাসছিলো ওদের কান্ড দেখে। সাইরা রাইমার হাতে এখনও মেহেদী দেওয়া হয়নি দেখে বললো,
“আপু তুমি সবার হাতে দিয়ে দিলে! তোমার হাতে দিয়ে দিবে কে?”
“আমার হাতে মেহেদী দিয়ে দেওয়ার লোকও আছে সাইরা। চিন্তা করো না।”
রাইমা মিহাল আর নিহালের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে কথাটা বললো। মিহাল আর নিহাল রাইমার দৃষ্টি অনুসরণ করে মাথা চুলকে একসাথেই প্রায় বলে উঠে,
“না রাই। এখন আমায় হাতে মেহেদী দিয়ে দিতে বসিয়ে দিয়ো না। আমরা পারিনা।”
“মিথ্যা বলছো কেনো ভাইয়ারা? আমরা জানি তোমরা পারো। চুপচাপ দিয়ে দাও আপুর হাতে।”
শিখা কিছুটা ক্ষিপ্ত স্বরে চেঁচিয়েই বললো। সাইফা অবাক হয়ে মিহাল এবং নিহালের দিকে তাকিয়ে বললো,
“এরা ছেলে মানুষ হয়েও মেহেদী দিয়ে দিতে পারে?”
রেখা বললো সাইফার কথার জবাবে বললো,
“পারে, রাই আপু আগে যখন গ্রামে ঈদের সময়টায় যদি আসতো! তবে এই মেহেদী কে দিয়ে দিবে দিবে বলে একপ্রকার যু”দ্ধ চলতো। বড়ো আব্বু তো সব ঈদেই আসতো না। যে ঈদে আসতো ফুফুকে আনা হতো বাড়িতে। এমনি সব ঈদে ফুফুর শ্বশুর মশাই ফুফুকে আসতে দেয়না। তখন রাই আপু আমাদের হাতে দিয়ে দিতো, তার হাতে কে দিয়ে দিবে? এই সমস্যার সমাধান করতেন উনারা৷ মিহাল ভাই আর নিহাল ভাই বসে পরতো রাই আপুর দুহাত সাজাতে। দুজনরেই বোনের শখ ছিলো, ফুফুর তো মেয়ে হয়নি। আমরা তিনজন তার সেই জায়গা দখল করে বসে আছি। রাই আপু না আসলে আমরা দুজনকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করে ছাড়তাম যতোক্ষণ না আসতো ভাইয়া। ঐ আর কি আমাদের হাতে দিয়ে।দিতে দিতে এখন দুজনেই ভালোই পারে মেহেদী দিয়ে দিতে। আমাদের হাতে দিয়ে দিলে আমরা আপুকে ছবি পাঠাতাম। এজন্য আপু হয়তো দুজনকে ধরেছে৷”
৯৩,
রেখার কথা শুনে সাইরা, সাইফা, তিশা হতবাক। ছেলে মানুষের মেহেদী দিয়ে দেওয়া মানেই তো বকের ঠ্যাং এর মতো হয়ে যায়। রাহান তো তাদের হাত টাই নষ্ট করে দেয়। এজন্য একটু কষ্টই হচ্ছে বিশ্বাস করতে যে ওরা মেহেদী দিয়ে দিতে পারে। রাহান বুকে হাত বেঁধে মুখটা গম্ভীর করে বললো,
“সাইরা আপু, এখন অন্তত বলবেনা, আমি কেমন ভাই যে মেহেদী দিয়ে দিতে পারিনা। হাসের ঠ্যাং, বকের ঠ্যাং কেনো হয়! এটা সব ছেলেরা পারেনা।”
রাহানের কথায় সাইরা হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারেনা। এই ছেলেকে সে কখন দোষারোপ করতে চাইলো যে! কেনো পারেনা। সবার মুখ থেকে হাসি সরছেনা যেনো। একটার পর একটা হাসির কাণ্ড হয়ে চলেছে। সবাই প্রায় পিঠাপিঠি বয়সের হওয়ায় সবার সাথে সবাই মিশতে পেরেছেও সহজে। রাইমা সবাইকে থামানোর উদ্দেশ্যে বলে,
“হয়েছে, অনেক হেসেছো। এবার আমার হাতে মেহেদী দিয়ে দাও তো ভাইয়া-রা। দুজন দুহাত নিয়ে বসে পরো। আমার ঘুমাতে হবে। বিয়ের সময় চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল পরলে বিয়ষটা মোটেও সুখকর হবেনা।”
রাইমার ফুফু তার বাবা ছোটো। বোনকে বিয়ে দিয়ে তারপর উনিবিয়ে করায় রাইমা দুজনেরই ছোটো। বড়ো ভাইয়ের যে একটা অভাব। মিহাল আর নিহালের জন্য রাইমা এটা কমই বুঝতে পারে। মিহাল আর নিহাল আর কথা বাড়ায়নি। রাইমার কথা অনুযায়ী দুজনে বসে পরেছে মেহেদী লাগিয়ে দিতে। এরমাঝে গরমের দিন আসতে না আসতেই কারেন্ট তো যা তা অবস্থা শুরু করে দিয়েছে ইতিমধ্যে। একবার যাচ্ছে তো অন্যবার আসছে। আবার কিছু সময় তো গেলে আসার নামই নিচ্ছে না। তাতে উপস্থিত সকলের মাথা ব্যথা নেই। উঠোন শেষে বাড়ির সামনের সরু রাস্তার একপাশে সারিবন্ধ ইউক্যালিপটাস গাছগুলোর বাতাসে শান্তিতেই সবাই বসে আছে। শুধু সমস্যা হচ্ছে আলো নিয়ে। যদি সৌড় বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এটার আলো তো কারেন্টের আলোর মতো হয়না। রাহান দুহাতে দুই ফোন নিয়ে টর্চ জ্বা”লিয়ে চেয়ার পেতে বসে পরেছে। মিহাল এবং নিহালের মেহেদী দেওয়ার হাত দেখে তিশা তো অবাক হয়ে বলেই বসে,
“কি সুন্দর হচ্ছে। আর আমার ভাইটা বলদ পুরোই। ঈদ বা অন্য কোনো অনুষ্ঠান হোক। হাতে কে মেহেদী লাগিয়ে দিবে, লাগিয়ে দিবে করে কেঁদে ম”রতে হয়।”
“তাহলে বোঝ, তুই কতোটা অকর্মা। মেয়ে হয়েই মেহেদীর ডিজাইন করতে পারিস না। আবার আমায় দোষ দিস।”
রাহান মুখ বাকিয়ে তিশার কথার উত্তর দিলো। তিশা কাঁদো কাঁদো হয়ে রাইমার কাছে বিচার দেওয়ার সুরে বললো,
“দেখলে আপু! কেমন আমায় অকর্মা বলছে! আমার হাত কাঁপলে আমি কি করবো? সাইফা আর সাইরা আপুরও তো হাত কাঁপে। হাত কাঁপলে আমাদের কি দোষ!’
” তোর থাম দয়া করে। হাসাস না। হাসতে গিয়ে হাত কাঁপলে আমার মেহেদী ডিজাইন খারাপ হবে।”
৯৪,
রাইমা হাসতে হাসতেই উত্তর দেয়। মিহাল অর্ধেক ডিজাইন প্রায় শেষ করে ফেলেছে। রাইমা ফোনে ডিজাইন দেখিয়ে দিয়েছে, সেভাবেই দেওয়ার চেষ্টা করছে সে। ঘাড়ের রগে টান পরে গেছে এক নাগারে মাথা নিচু করে তাকিয়ে থেকে। মিহাল মেহেদী দেওয়া বন্ধ করে ঘাড়টা দুদিকে ঘুরিয়ে নিজের ঘাড়ে নিজেই চাপ দিতে দিতে রাহানের দিকে বললো,
“আমরা যখন এই তিন পে”ত্নীর হাতে মেহেদী লাগিয়ে দিতাম। আমরাও বাংলাদেশের মানচিত্র একে দিতাম। কি করবো বলো! গ্রামের দিকে তো পার্লার নেই যে গেলো আর মেহেদী লাগিয়ে নিয়ে চলে আসলো! আর একজন যদি দেখা যায় মেহেদী লাগিয়ে দিতে পারে! ব্যস তার হাতের মাগফিরাত কামনা করা ছাড়া উপায় থাকতো না। রাই আসলে ও সবার হাতে মেহেদী লাগিয়ে দিতো, ওর হাতে লাগিয়ে দেয়। মজা করেই বলেছিলাম, দাও আমরা দুভাই মেহেদী লাগিয়ে দিই। রাই সিরিয়াসলি নিয়ে হাত বারিয়ে দিয়েছিলো। সেবার ওর হাত দুটোই নষ্ট করে দিয়েছিলাম এমনি একটা ডিজাইন করে৷ পরে রাইয়ের সে কি মন খারাপ। এরপর মনে হলো না একটু শেখা দরকার। অন্তত বোনদের হাতেও লাগিয়ে দিতে পারবো, সাথে বউ হলে সে তো কাজেই ব্যস্ত থাকবে চাঁদ রাতে ধরে বসিয়ে মেহেদী লাগিয়ে দেওয়া যাবে। ইভেন রাই তো কমই আসতো! এই দুই অকর্মা শিখা আর রেখা! এদের জ্বা”লাতনে মেহেদী লাগিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি চুল বেঁধে দেওয়া, হালকা পাতলা সাজিয়ে দেওয়াও শিখতে হয়েছে। ঈদের সময় আম্মু দাওয়াত দিয়ে বাসায় গেলে হাত ধরে বাদুড়ের মতো ঝুলে পরতো ভাইয়া সাজিয়ে দাও। পেত্নীই সাজিয়ে দিতে দিতে এখন মেয়েদের এই সাজগোজ নিয়েও আইডিয়া পেয়ে গেছি। বউয়ের ক্ষেত্রে কাজে লাগবে ভেবে চুপচাপ এদের জ্বা”লাতন সহ্য করতাম। তখন তো আরও ছোটো ছিলো পে”ত্নী দুইটা। ওদের উছিলায় আমাদের দুভাইয়ের বউও ক্রিয়েটিভ বর পাবে।”
মিহালের মজার ছলে কথাগুলো শুনে সাইফাও হাসির ছলে বলে,
“এমন একটা বর পেলে জীবনে আর কিছু দরকার নেই।”
সাইফার কথা শুনে মিহালের হেঁচকি উঠে যায় রিতীমতো। সাইফা জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢেলে মিহালের দিকে এগিয়ে দিতে দিতে বলে,
“আরে মজা করেছি। আপনি হেচকি তুলে ফেললেন?”
মিহাল পানির গ্লাসটা নিয়ে এক চুমুকে পানি শেষ করে। রাইমা হাসতে হাসতে বলে,
“সিঙ্গেল ভাই আমার জীবনে প্রথম যখন শুনে তার মতো বর কেউ চায়! সেই ধা”ক্কা টা সামলাতে পারেনি।”
রাইমার কথায় সবাই হেসে উঠে। শিখা হাসতে হাসতে বলে,
“আমাদের পে”ত্নী বলা! উচিত হয়েছে।”
“থাক ভাইয়াকে আর লজ্জা দিয়ো না তোমরা। ভাইয়া তুমি ডিজাইনটা শেষ করোতো।”
নিহাল বিষয়টা এড়িয়ে যেতে কথাটা বললো। সবাই নিজেদের আড্ডার টপিক পাল্টে আড্ডা দিতে দিতে রাইমার হাতে মেহেদী লাগানোয় ব্যস্ত হয়ে পরলো।
৯৫,
দুটো ইউক্যালিপটাস গাছের সাথে ইফরাদ আর শার্লিন দুজন হেলান দিয়ে অন্ধকার আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে বুকে হাত বেঁধে। দুজনই নিরব। শুধু সামনে সুবিস্তীর্ণ ধান ক্ষেতের উপর জোনাকি পোকার আলো এবং গ্রামের ঝিঁঝি পোকার ডাক! সব মিলিয়ে শুনশান নিরবতাও বলা যায় না৷ ইফরাদ এসে শার্লিনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু শার্লিন নিরব থেকেছে। এজন্য ইফরাদ হাল ছেড়ে চুপ করে শার্লিনকে দেখছে। অন্ধকারে মুখ তো দেখতে পারছেনা। অবয়বয়ের উপস্থিতি টাই লক্ষ্য করছে। ইফরাদের সহ্য হচ্ছে না যে শার্লিন এতো চুপচাপ৷ সে হেঁচকা টানে শার্লিনের হাত ধরে নিজের বুকে এনে ফেললো। শার্লিন আচমকাই এমন হওয়ায় নির্বাক হয়। ইফরাদের বুকে দুহাত গুজে মুখ তুলে তাকায় ইফরাদের দিকে। অন্ধকারে দুজন তো দুজনকে দেখতে পাচ্ছে না। তবে দুজনের নিঃশ্বাস টা বুঝতে পারছে। ইফরাদ কাতর গলায় বললো,
“আমার তোতাপাখি এতো চুপচাপ থাকবে! এটা মানা যাচ্ছে না শার্লিন।”
“সে তো যা বলে সব ন্যাকামি তাইনা?”
“ঘাট হয়েছে, ক্ষমা চেয়েছি। ক্ষমা করবেনা কি? এতোটা নিষ্ঠুর মানবী অন্তত তুমি নও।”
“ঠিকই বলেছেন। আমি নিষ্ঠুর নই। সেজন্য আমায় সবাই আ”ঘাত করতে পারে।”
“উহু তোতাপাখি, সবাই আর আমি এক না। আমি আ”ঘাত দিবো, আবার আমিই ভালোবাসবো। বাকিরা কি করবে জানিনা। বাকিদের সাথে আমায় গুলিয়ে ফেলো না।”
“ইশশ, আসছে আমার ভালোবাসার মানুষ।”
“আসছিই তো। দেখি মাঝ থেকে হাত সরাও। জড়িয়ে ধরতে দাও ঠিকমতো।”
“জড়িয়ে ধরা না, ধরে চ্যাপ্টা করে ফেলা! যা খুশি বিয়ের পর। এখন ছাড়েন, রাই রা আড্ডা দিচ্ছে। ওখানে চলেন।”
“আচ্ছা ছেড়ে দিলাম। কিন্তু বিয়ের বন্ধনে বাঁধার পর কাঁদলেও আমি ছাড়বোনা।”
“ধুর নির্লজ্জ লোক একটা।”
শার্লিন ইফরাদের বন্ধন থেকে সরে এসে লজ্জা পেয়ে মুচকি হেসে কথাটা বললো। ইফরাদ শার্লিনের লজ্জামাখা মুখ না দেখলেও গলার স্বরে আন্দাজ করতে পারলো। সে শার্লিনের হাত আকড়ে ধরে পাশে দাড়িয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,
“আমার নির্লজ্জ না হওয়া বউ টাও দেখছি লজ্জা পায়! লজ্জা পেলে তাকে কেমন লাগে দেখিনি। দিনের আলোয় দেখবো। আগামীকাল একটু সুন্দর করে সেজেগুজে আমার সামনে এসে লজ্জা পেয়ো তো।”
“ধুর বদমায়েশ লোক। শুধু আজেবাজে কথা। চলেন তো।”
শার্লিন ইফরাদের কথা শেষে তার বুকে কয়েকটা কি”ল দিয়ে কথাটা বলেই ইফরাদের হাত ধরে হনহনিয়ে হাটা ধরে। ইফরাদ হাঁটতে হাঁটতে হাফ ছেড়ে বাঁচে। যাক শার্লিনকে মানানো গেলো। মেসবাহ ঠিকই বলে। মেয়েটা ভালোবাসার কাঙাল। একটু ভালোবাসা পেলেই গলে যায়। এমন মানুষগুলো দুনিয়ায় আঘাত টাও বেশি পায়। একবার নিজের করে পেয়ে যাক! ইফরাদ নিজের সবটা দিয়ে তার পাগলিকে আগলে রাখবে। না পাওয়া অব্দি হাত টাও ছাড়বেনা। ইফরাদ আনমনে এসব ভেবেই মুচকি হাসলো।
৯৬,
পরদিন সকালবেলায়, ডেকোরেটরের লোকজন বড়ো উঠোনে স্টেজ সাজাতে আর সামিয়ানা টাঙানোয় ব্যস্ত। কাজিন’স রা সব হলুদের ফলমূল, আর যা সব বানাতে হয় সেসব গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত। রাইমা বারান্দায় দাড়িয়ে দাড়িয়ে সবার দিকে নজর ঘুরাচ্ছে। আর মাঝখানে একদিন। এরপর এই এতো এতো মানুষ! তাদের সাথে আবার কবে দেখা হবে! তার ঠিক নেই। ভাবতেই রাইমার বুকের মাঝে মোচর দিয়ে উঠছে। তারমাঝে এক চিন্তা মাহিশা আর আংকেল আন্টি আসার কথা তারা আসেইনি এখোনো। ইফরাদকে জিগাসা করার পর সে বলেছিলো, তারাও আসবে। অথচ এখনও আসলো না। মাহিশার থেকে যে এখনও কতো কিছু জানার আছে। দেখা করতে চেয়েছিলো, কিন্তু সময়ই তো কম ছিলো হাতে। হয়ে উঠেনি দেখা করা। রাইমা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। তখুনি হাতের ফোন টা বেজে উঠে। ফোন হাতে নিয়ে দেখে দিগন্তের কল। রিসিভ করতেই সে কিছু বলার আগেই দিগন্ত ওপাশ থেকে বলে উঠে,
“ডাটা ওন করেন। ভিডিও কল দিবো।”
“কিন্তু আমার এখানে নেট তো এতো স্মুথ নয়। ”
“এতো অজপারা গা এখনও আছে রাই? নাকি লজ্জা পাচ্ছেন?”
“আরে না দিগন্ত সাহেব। সত্যি নেট খারাপ। ঘরে ঢুকলে তো ইমার্জেন্সি ধরে যায়।”
আসলে সত্যি বলতে রাইমার লজ্জাই লাগছিলো। কিন্তু তা প্রকাশ করতে চাইলো না। এজন্য বিষয়টা এড়িয়ে গেলো। নয়তো একটু রাস্তার দিকে এগিয়ে গেলে বেশ ভালোই নেট পায়। দিগন্ত রাইমা লজ্জা পাওয়ার বিষয়টা এড়িয়ে গেলেও বুঝতে পারলো। এই প্রথম তো ভিডিও কল দিতে চাইলো, এজন্য লজ্জা পাওয়া স্বাভাবিক। দিগন্ত বিষয়টা বাদ দিলো। রাইমাকে জোড় করলো না। সে ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটিয়ে বললো,
“আচ্ছা আপনার দুহাত ভর্তি মেহেদীর ছবি তুলে চটপট পাঠিয়ে দিন। রাতে মেহেদী লাগিয়েছেন, শার্লিন বলেছে। মূলত এটাই দেখতে ইচ্ছুক আপাতত। দেখি আমার নাম টা লিখলেন কিনা!”
“আপনি মানুষ টাই আমার হতে যাচ্ছেন। আলাদা করে আর কি লিখে নিবো হু?”
“হুম সেই তো! তবে বউয়ের হাতে আমার নাম দেখার সৌভাগ্য কি হবেনা?”
রাইমা হাসলো দিগন্তের কথার সুর শুনে। বাচ্চা বাচ্চা কণ্ঠ করে ফেলেছে পুরোই। সে কল কে”ট দিলো নিশব্দে। রাস্তার দিকে অগ্রসর হয়ে ডাটা ওন করে সোজা ভিডিও কলই দিলো হোয়াটসঅ্যাপে। দিগন্ত লাইনেই ছিলো। কল পেয়ে শুয়েছিলো সে। লাফ দিয়ে উঠে বসলো। হাত দিয়ে চুলগুলো উপর দিকে ঠেলে দিয়ে কল রিসিভ করলো। কল রিসিভ করতেই দেখলো মেহেদী রাঙা এক হাত মুখের উপর দেওয়া রমণীর পরণে হালকা সবুজ রঙের শাড়ি। পুরো তো দেখা যাচ্ছে না। যতোটুকু দেখা যাচ্ছে! তাতেই দিগন্ত মুগ্ধ দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে রইলো। ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসির রেখা ফুটিয়ে বললো,
“মুখের উপর থেকে হাতটা সরান।”
“সরাবো না, লজ্জা করে আমার।”
“লজ্জা তো আমারও করে। তো কি আপনাকে দেখছিনা?”
“বাহ ছেলেদেরও লজ্জা নামক বস্তুটা আছে?”
“ছেলেরা নির্লজ্জ তার বিশেষ মানুষের জন্যই হয় রাই।”
রাইমা মুচকি হাসলো। ধীরে ধীরে হাতটা নামিয়ে নিলো। দিগন্ত অস্ফুটস্বরে বললো,
“মাশাল্লাহ।”
রাইমা লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলো। দিগন্ত ইয়ার্কির স্বরে বললো,
“পরিচয় হওয়ার শুরুতে ঝগড়া করে কূল পেতেন না, এখন লজ্জা পান। উন্নতি ভালোই হয়েছে। নট ব্যাড।”
“আপনি আসলেই বদ লোক। কল রাখেন।”
“রাখছি, আপনি হাত দুটো ছবি তুলে দিয়েন।”
“দিবো না। সরেন সামনে থেকে।”
“সামনে নেই আমি। থাকলে আর ফোনে কল দিতে বলতাম না। বসিয়ে রেখে দেখতাম আপনাকে।”
রাইমা সহাস্যে কল টা দিগন্তের মুখের উপর কেটে দিলো। ইয়ার্কি করা না! এবার বুঝুক মজা। মুখের উপর কল কে”টে দিলে কেমন লাগে বুঝুক একটু। রাইমা হাসতে হাসতে বাড়ির দিকে পা বাড়ালো। দিগন্ত মাথা চুলকে হেসে আবার বিছানায় দড়াম করে শুয়ে পরলো। তখুনি স্নেহা এসে ভাইয়ের হাত ধরে টেনে বসিয়ে দেয়৷ দিগন্ত বোনকে দেখে বলে,
“কি হয়েছে? হাত টানছিস কেন সকাল সকাল।’
” তোর গায়ে হলুদ। আর তুই পরে পরে ঘুমাবি এখন?”
“কি করবো তাহলে? হলুদ তো সেই সন্ধ্যায়৷ কি যে করিস তোরা! হুদাই হলুদ মাখিয়ে ভুত করে দিস। সোজা একদিনে বিয়ে করবো। তা না, এটা মাখো, ওটা করো। হ্যান ত্যান কতো নিয়ম।”
“এমনি আনন্দ করার জন্য আয়োজন করা হয়েছে। উঠ, যা রেডি হো। বাইরে সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে।”
দিগন্ত বোনের ধমক শুনে আলসেমি ঝেড়ে ফ্রেশ হওয়ার জন্য ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ায়। বাইরের হইচই এ ঘুম টা হুট করেই ভেঙে যায় তার। এরপর রাইমার সাথে কথা হয়নি মনে পরায় কল দিতে ফোন টা হাতে নিয়ে শার্লিনের মেসেজ দেখতে পায়। এজন্যই আগে রাইমাকে কল দেয়। রাইমার লজ্জামাখা মুখের কথা মনে পরতেই দিগন্ত মুচকি হাসে। অবশেষে দিগন্ত আহসান তবে রাইমা খন্দকারের প্রেমে পরেই যাচ্ছে দিনদিন! অদ্ভুত বিষয় না? দিগন্ত নিজমনে হেসেই ফ্রেশ হওয়ায় মনোযোগ দেয়।
চলবে?
ভুলত্রুটি মার্জনীয়। ৩১৩০+ওয়ার্ডের দুটো পর্ব। এতো রিচেইক করার ধৈর্য আমার নেই। ভুলগুলো মানিয়ে নিবেন। আর গল্পটা কি বোর হয়ে যাচ্ছে দিনদিন? কাইন্ডলি কষ্ট করে আজ একটু জানাবেন। আসসালামু আলাইকুম।