#আকাশেও_অল্প_নীল #পর্বঃ০৭ #আর্শিয়া_ইসলাম_উর্মি

0
341

#আকাশেও_অল্প_নীল
#পর্বঃ০৭
#আর্শিয়া_ইসলাম_উর্মি

১৯,
“উনি এই বাসায় কি করছে আপা?”

সবে শপিং শেষ করে বাসায় ঢুকেছে দিগন্ত। ঢুকতেই নিজের মা মিসেস আমিরাকে দেখে স্নেহাকে প্রশ্ন করে দিগন্ত। স্নেহা মিসেস আমিরার পাশে সিঙ্গেল সোফায় বসে ফোন দেখছিলো। ড্রইং রুমের দরজা খোলা ছিলো বিধায় দিগন্ত এসে দরজা খোলার ঝামে”লায় পরতে হয়নি। সেজন্য স্নেহা খেয়াল করেনি দিগন্ত এসেছে। ফোনে ব্যস্ত ছিলো মাহাদের সাথে কথা বলায়। দিগন্তের প্রশ্নে স্নেহা ফোন টা রেখে দেয়। এরপর দিগন্তের প্রশ্নের উত্তরে বলে,

“আমার চিন্তা নিজের কাঁধে নিয়েছিস না? সামলে নে। আমি রুমে গেলাম।”

স্নেহা চলে যায়। সে চলে যেতেই মিসেস আমিরা উঠে এসে ছেলেকে জড়িয়ে ধরতে হাত বাড়ান। দিগন্ত কয়েক পা এগিয়ে পাশ কা’টিয়ে সেন্টার টেবিলের উপর হাতের ব্যাগ গুলো রেখে দেয়। এরপর সোফায় পায়ের উপর পা দিয়ে বসলো। আমিরা বেগম অবাক হয়ে ছেলের দিকে ফিরে তাকান। দিগন্ত আমিরার দিকে তাকিয়ে বলে,

“তো মিসেস আমিরা শেখ! আপনার কি চাই এখানে? আবার কোন উদ্দেশ্যে এসেছেন?”

“আচ্ছা তুমি আমার গর্ভের সন্তান হয়ে কি করে আমার সাথে এই আচরণটা করো বলোতো?”

আমিরা বেগম প্রশ্নাত্মক চাহনীতে তাকিয়ে দিগন্তকে প্রশ্ন করে। দিগন্ত একটু হাসলো। এরপর তাচ্ছিল্যের সহিত বলে,

“আমি আপনার গর্ভের সন্তান? এটা মনে আছে আপনার?”

“থাকবেনা কেনো? আছে বলেই দেখতে আসি আমি।”

“না আসতেন! আপনি ব্যতিত আমরা তো পরে নেই বা ম”রেও যাইনি। অবশ্য ম” রে গেলে সব চুকে যেতো তাইনা?”

“তুমি তোমার লিমিট ক্রস করে ফেলছো দিগন্ত।”

“লিমিটের কথা তুলবেন না একদম। আমি আমার লিমিট জানি। বরং আপনি আপনার লিমিট ক্রস করে বেশি অধিকারবোধ দেখিয়ে ফেলছেন আমাদের উপর।”

“দিগন্ত!”

দিগন্তের উপর কিছুটা চেঁচিয়ে উঠেন মিসেস আমিরা। দিগন্ত নিজের হাতের মুঠো শক্ত করে উঠে দাড়ায়। রাগের সহিত বলে,

“আমি আমার উপর চেঁচানো একদম পছন্দ করিনা মিসেস আমিরা শেখ। চুপচাপ চলে যান বাসা থেকে। ২য় বার আমার চোখের সামনে আপনাকে যেনো না দেখি ”

মিসেস আমিরা আশ্চর্যের সহিত তাকিয়ে আছে দিগন্তের দিকে। নিজের পেটের ছেলে তাকে সহ্য করতে পারেনা। বিষয়টা মেনে নিতে উনার কষ্টই হচ্ছে। এমন টা আজ নতুন নয়। দিগন্ত আগে থেকেই বোধবুদ্ধি হওয়ার পর থেকে তার মা-কে সহ্য করতে পারেনা। যতোবার দেখেছে ততোবার নিরব থেকেছে কথা বলেনি। কিন্তু আজ নিজের ভেতরের সব রাগ উগরে দিচ্ছে যেনো। মিসেস আমিরা দিগন্তের দিকে কয়েক পা এগিয়ে যান। দিগন্তের গালে স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিতে হাত বাড়াম ছেলের দিকে। দিগন্ত মাথা পিছিয়ে চোখের ইশারা না বুঝান। মিসেস আমিরার চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা জল গড়িয়ে পরে। দিগন্ত তা দেখে একটু শব্দ করেই হেসে ফেললো। মিসেস আমিরা অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন,

“তুমি হাসছো দিগন্ত?”

“হাসি পেলো। কি করবো বলুন তো! কিছু মানুষ থাকে তো সিরিয়াস মোমেন্টে হাসি পায়। আপনাকে দেখে আমারও এই সিরিয়াস মোমেন্টে হাসি পেলো।”

“তুমি আমায় এতোটা ঘৃণা করে?”

“কি জানি! মা-কে ঘৃণা করা যায়! কিন্তু আপনার প্রতি আমার মন উঠে গেছে মিসেস আমিরা শেখ। আপনি আমার আর আমার আপার জীবনে আপনার ছায়া অব্দি না মা”ড়ালে ভালো হতো। আমার আপাকে আমি দিবোনা আপনার ওখানে। আমি সব ব্যবস্থা করে ফেলেছি। আর সেই খবর কানে যেতেই আপনি দৌড়ে এসেছেন আমি জানি। খুব শীঘ্রই সব সমস্যা আমি মিটিয়ে ফেলবো, আই প্রমিজ।”

মিসেস আমিরা চোখ মুছেন। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ফেলে বলেন,

“আমায় নিচে নামতে বাধ্য করবে?”

“আপনি আমার চোখে যথেষ্ট নিচে নেমে গেছেন। আপনি যা খুশি করতে পারেন। সব সমস্যা মিটানোর মতো সামর্থ্য আমার হয়ে গিয়েছে। সেজন্য আর ভয় নেই। এখন আপনি যেতে পারেন।”

মিসেস আমিরা আ”হত চাহনীতে দিগন্তের দিকে তাকান। ভাঙা গলায় বলেন,

“আমার মা ডাক শুনতে ভীষণ ইচ্ছে করে দিগন্ত। প্লিজ আমার থেকে স্নেহাকে আলাদা করার চেষ্টা করো না।”

“মা ডাক শোনার অধিকার খুইয়ে ফেলেছেন। চলে যাবেন আপনি? নাকি আমি বের করে দিতে বাধ্য হবো?”

মিসেস আমিরা কান্না করতে করতে চলে যান বাসা থেকে৷ দিগন্ত ধপ করে সোফায় বসে পরে। চোখ বন্ধ করতেই দুফোঁটা জল গড়িয়ে পরে দিগন্তের গাল বেয়ে। বিরবির করে বলে,

“আপনার থেকেও আমি বেশি কেঁদেছি মিসেস শেখ। আমি কখনও ক্ষমা করবোনা আপনাকে। কখনও না।”

২০,
শার্লিনদের বাসায় শার্লিনের রুমে বিছানায় গুটিশুটি হয়ে বসে আছে রাইমা। কান্নার দমকে মাঝে মাঝে কেঁপে উঠছে সে। শার্লিন রাইমার এই অবস্থায় রাইমাকে একা ছাড়তে চায়নি। রাইমার মায়ের কাছে ফোন দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে সে, রাইমা তার সাথে তার বাসায় থাকবে। শার্লিন দুহাতে দু মগ কফি নিয়ে রুমে ঢুকে৷ বাসায় এসেই আগে ফ্রেশ হয়ে রাইমাকেও ফ্রেশ হতে বলে চলে গিয়েছিলো কফি বানাতে৷ ইফরাদ বাসার সামনে নামিয়ে দিয়েই চলে গিয়েছে। রাইমা ফ্রেশ না হয়ে এখনও যেভাবে বসিয়ে গিয়েছিলো, সেভাবেই বসে আছে দেখে শার্লিন রাইমার পাশে বসে। কফির মগ দুটো বেড সাইড টেবিলে রাখে। রাইমাকে জড়িয়ে ধরে পিঠে হাত দিয়ে আস্তে আস্তে চাপড় দেয়। ধীর স্বরে বলে,

“শান্ত হ বলছি। আমি জানি তুই শক্ত মনের মেয়ে। চাইলেই পরিস্থিতি টা শান্ত করতে পারবি। তাই অনুরোধ করি, শান্ত হ। তোর কান্না আমার ভেতরে ভেঙেচুরে দিচ্ছে রাই।”

শার্লিনের এই কথায় রাইমা কিছু টা শান্ত হয়। শার্লিন কফির মগ এগিয়ে দিয়ে বলে,

“কান্না করে তো মাথা ব্যথা করছে নিশ্চিত। কফিটুকু পান কর৷ আশা করি ভালো লাগবে। এরপর না হয় ফ্রেশ হোস।”

রাইমা শান্ত বাচ্চার মতো শার্লিনের কথা শোনে। কফির মগ নিয়ে চুমুক দেয়। শার্লিনও নিজের জন্য আনা কফির মগ হাতে নিয়ে চুমুক দেয়। তখনই রাইমা কফি মগে চুমুক দেওয়ার পাশাপাশি বলে প্রশ্ন করে উঠে,

“ইফরাদ ভাইয়ের সাথে তোর পরিচয় কি করে?”

“তার আগে এটা বল তোদের মাঝে হয়েছিলো কি? গেলি ভালো মানুষ, ওকে দেখতেই কেঁদেকেটে অস্থির! থামছিলিই না।”

“আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দে।”

“ইফরাদের সাথে আমার ফেসবুকে পরিচয়। এরপর কথা বলা, ভালো লাগা একটু একটু। এজন্য আজ মীট করতে চেয়েছিলাম। মীট তো হলো কিন্তু ঠিকমতো কথাই তো বলতে পারলাম না।”

“শুধু মাত্র ভার্চুয়ালে বিশ্বাস করেই একটা মানুষের সাথে দেখা করতে চলে গিয়েছিলি? তোর ভয় লাগেনি? মনে হয়নি ক্ষতি হতে পারে।”

“সেজন্য তোকে নিয়ে গিয়েছিলাম। আমি জানি তুই আমায় সেইফলি যাই হোক বাসায় আনতে পারবি।”

“কনফিডেন্স ভালো ওভার কনফিডেন্স নয়। আমিও একজন মেয়ে। তোর ক্ষতি হলে আমি ঠেকাতাম কি করে?”

“লেট ইট বি রাই। আমি ভরসা করেছিলাম, ভিডিও কলেও দেখেছি আগে। সেজন্য দেখা করা৷ আর ঢাকা শহরেই থাকে। সমস্যা ছিলো না।”

“আচ্ছা বাদ দিলাম। কিন্তু এটা তুই ঠিক করিসনি আমার থেকে লুকিয়ে। ভার্চুয়ালে মানুষকে দেখায় যেমন, বাস্তবে বেশিরভাগ তেমনই হয়না। ভার্চুয়াল ছিলো বিনোদনের জায়গায়, এখন তা হয়েছে নাট্যমঞ্চের মতো। ফোনের আড়ালে একেকটা মানুষ একেক রকম নাটক করে চলেছে৷ কে জানে, যদি মানুষ ইফরাদ না হয়ে অন্য কেউ হতো! কোনো ঠকবাজের পাল্লায় যদি পরতি?”

রাইমা কফিতে শেষ চুমুক দিয়ে কথাটা বলে। কফি শেষ করে উঠে দাড়ায়। চুলগুলো হাতখোপা করে পা বাড়ায় ওয়াশরুমে। শার্লিন মাথা নিচু করে রাইমার কথার উত্তরে বলে,

“তোর কাছে লুকোতে চাইনি। ভেবেছিলাম নিজেই আগে নিশ্চিত হই, ভালোবাসি কিনা! তবে তোকে জানাবো। এজন্য আগেই কিছু বলিনি।”

“বেশ ভালো৷”

রাইমা ওয়াশরুমে ঢুকে পরে। ফ্রেশ হয়ে তোয়ালে দিয়ে হাতমুখ মুছে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়৷ শার্লিন এরমাঝে কফির মগ দুটো রেখে এসেছে৷ সেও রাইমার পাশে হাত পা ছড়িয়ে টান টান হয়ে শুয়ে পরে। চোখ বুঝে প্রশ্ন করে,

“তুই বললি না তো ইফরাদকে চিনিস কি করে?”

২১,
রাইমা চোখ বুঝা অবস্থাতেই দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে৷ ভাগ্যের উপর তার হাসি পেলো। ঠোঁটের কোণায় হাসি ঝুলিয়ে বলে,

“ইফরাদ ভাই মাফিনের ভাই। যে বাসায় আজ তোরা আছিস, চার বছর দুমাস আগে এই বাসায় ইফরাদ ভাই ও তার পরিবার থাকতো।”

“হোয়াট?”

শার্লিন রাইমার উত্তরে চমকে উঠে বসে। চোখে মুখে বিস্ময় প্রকাশ পায়৷ সে রাইমার দিকে দৃষ্টি ফেলে। রাইমা চোখ বন্ধ করে এখনও শুয়ে আছে। শার্লিন নিজের আগ্রহ দমন করতে না পেরে ফের প্রশ্ন করে,

“মাফিন! মাফিন টা কে?”

“মাফিন! আমার পাগলির মতো একটা বোন৷ রক্তের নয় আত্মার সম্পর্ক ছিলো তার সাথে। ঠিক তোর মতো। তার নাম মাফিন নয়, মাহিশা নাম তার। মাফিন কেক খুব পছন্দ করতো। আমি মজা করে ডাকতাম মাফিন। এখন এটা জিগাসা করিস না মাহিশা কে? ইফরাদ ভাইয়ের বোন।”

রাইমা শান্তস্বরে কথাগুলো বলে। শার্লিন ভাবুক দৃষ্টি মেলে রাইমাকে বলে,

“মাহিশা নামটা শুনেছি তার মুখে। মাফিন নামটাও শুনেছিলাম বোধ হয় ২-১বার। কিন্তু খেয়াল করতে পারছিলাম না। কিন্তু ইফরাদ তো বলে তার বোন নেই, হারিয়ে গিয়েছিলো খুজে পায়নি। সবাই ধরে নিয়ে মারা গে”ছে। বর্তমানে সে একাই বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান।”

রাইমা মৃদু হাসে। শোয়া থেকে উঠে বসে শার্লিনের মুখোমুখি। এরপর বলে,

“মাফিন মা’রা যায়নি। ও নিজেও এই শহরেই আছে। আমি দেখেছি ওকে। আমি যদি ভুল না হই, মাফিনকেই দেখেছিলাম আমি। কিন্তু ওকে ধরতে পারিনি আমি। তার আগেই গাড়িতে শো করে চলে গেলো! দৌড়ে ছুটে গিয়েও ওকে পেলাম না। উল্টো পরিচয় হলো দিগন্ত আহসানের সাথে। বিরক্তিকর লোক একটা৷”

“মানে? সব একটু ক্লিয়ার করে বলবি তুই?”

“তুই যেদিন বাসায় ডাকলি মেসেজ করে তার আগের দিন সকালে, ব্রাশ করতে করতে ব্যালকনিতে দাড়িয়ে নিচে রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কেনো জানি আবছা আবছা মাফিনের মতো একটা মেয়েকে দেখেছি মনে হলো। ছুটে নিচে নামলাম। গাড়ি ছেড়ে দিলো। পিছনে পিছনে দৌড়ে গিয়ে দিগন্ত আহসানের বাড়ির সামনে যেতেই গাড়ি হাওয়া। আর নজরে পরলো না। তখনই আবার খালামনির কল আসে, আম্মুর সাথে কথা বলবে। আম্মুর ফোনে নাকি কল ঢুকছেনা৷ খালামনিকে জানালাম আমি বাইরে, আর এতো সকালে বাইরে কেনো কতো প্রশ্ন। খালামনিকে ম্যানেজ করতে গিয়ে কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে পরলাম। তো দিগন্ত লোকটা কোথাও একটা যাচ্ছিলো, গেটের সামনে দাড়িয়ে ছিলাম। সেজন্য কতো কথা শোনালো আমায়। এরপর হলো ঝ”গরা। রাগ উঠে গিয়েছিলো। এরমাঝেই আবার আম্মুর কল আসে। ফোনের জন্য ঝগড়া হলো। আবারও কল আসা দেখে অযথা ভা’ঙলাম ফোন। এরপর আর উনাকে দেখলেন আমার রা”গ উঠে অকারণে। উনি আমায় অপমান করেছিলেন। এর শোধ তো আমি তুলবোই দেখিস।”

শার্লিন গালে হাত দিয়ে মনোযোগ দিয়ে রাইমার কথা শুনছিলো। রাইমা থামতেই সে বলে,

“সে শোধ না হয় তুলিস পরে দেখা যাবে। আগে এই মাফিন, ইফরাদ এদের ঘটনা ক্লিয়ার কর৷ আমার মাথায় সব প্যাচ লেগে যাচ্ছে।”

মাফিনের প্রসঙ্গ আসতেই রাইমা চুপসে গেলো। ঘনঘন কয়েকটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বলে,

“মাফিন কে ওর পরিবার হারানোর পিছনে আমার দায় আছে।”

“মানে?”

শার্লিন অবাক হয়ে প্রশ্ন করে। রাইমা ফের টেনেটেনে কয়েকটা নিঃশ্বাস ফেলে। মাফিনের কথা মনে আসতেই তার হাসফাস লাগে। যন্ত্রণা হয়, কষ্টটা দু”মড়ে মুচ”ড়ে দেয় ভেতর থেকে৷ সবসময় ভালোবাসা জনিত কষ্টই মানুষের হয়না। তার থেকেও বড়ো কষ্ট হয় নিজের বোনের মতে বা ভাইয়ের মতো সেরা একজন বন্ধুকে হারানোয়৷

চলবে?

ভুলত্রুটি মার্জনীয়, রি চেইক করিনি। আসসালামু আলাইকুম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here