প্রেমের_রঙ #পর্ব_২০ [পূর্ণতা]

0
471

#প্রেমের_রঙ
#পর্ব_২০ [পূর্ণতা]
#মোহনা_হক

‘পদ্ম ইজহানের এই রুপ দেখে অবাক না হয়ে পারলো না। এই রুপের সাথে এই প্রথম পরিচিত সে। আগে কখনো পরিচয় হয়নি। আর ইজহান ও দেখায়নি তার এরুপ রুপ। সে কি পদ্মকে অবিশ্বাস করছে? যা সত্যি তাই বলবে। মিছেমিছি কেনো সে বকা শুনবে?”

“একটা বাচ্চা ছেলে কামড় দিয়েছে। ইচ্ছে করে দেয়নি। আমি তাকে ধরেছিলাম তাই দিয়েছে।”

‘ইজহান হতভম্ব হয়ে গেলো পদ্মের কথা শুনে।’
“বাচ্চা ছেলে কামড় দিয়েছে? কি বলছো এসব?”

“জ্বী হ্যাঁ আমি ঘুমাচ্ছিলাম ইজনিয়া আপুর রুমে। একটা বাচ্চা ছেলে দৌড়ে যাচ্ছিলো আমি প্রথমে অবাক হয়েছিলাম দেখে কারণ এ বাসায় তো কোনো বাচ্চা নেই আর আসবেও বা কোথায় থেকে? আপনি তো আর আমাকে বলেননি যে আজ আপনার জন্মদিন বাসায় মেহমান আসবে। হয়তো বাচ্চাটিও সেরকমই কেউ হবে। আমি ওর হাত ধরেছিলাম জিগ্যেস করার জন্য তুমি কেনো এসেছো তাই কামড় দিয়েছে।”

‘ইজহান ভ্রু কুচকে তাকালো পদ্মের দিকে। মেয়েটার দৃষ্টি ফ্লোরের দিকে। বড্ড উদাসীন দেখাচ্ছে।’

“পরিচয় জানতে পেরেছো?”

‘পদ্ম একটা বড় নিঃশ্বাস ছাড়লো।’
“না।”

“তাহলে কি শুধু শুধুই কামড় খেলে? তুমি একটা কামড় দিতে পারলে না?”

‘পদ্ম চোখ বড় বড় করে ইজহানের দিকে তাকালো। ইজহান সজ্ঞানে কথাটা বলছে তো? কিসব বলছে। বাচ্চার সাথে সে ও কি বাচ্চা হয়ে যাবো নাকি?”

“বাচ্চাটা আমাকে কামড় দিয়েছে বলে কি আমিও তাকে কামড় দিবো? এতোটাও নির্বোধ না আমি।”

‘ইজহান শব্দ করে হাসলো। পদ্মের চিবুক ধরে দু’বার দু’দিকে ঘুরালো।’

“সত্যিই তুমি নির্বোধ না?”

‘পদ্ম উত্তর দিচ্ছে না। শুধু ইজহান কে দেখছে। যখন বাসা থেকে বের হয়েছিলো তখন মেরুন কালারের একটা শার্ট পড়াছিলো। এখন দেখছি উপর দিয়ে কোর্ট ও আছে। কখন পড়েছে এটা? সে তো দেখেনি। পদ্ম ইজহানের কোর্টে হাত দিলো। পরক্ষণেই ইজহানের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো।’

“এটা কখন পড়েছেন? আমি তো দেখেনি!”

‘ইজহান পদ্মের হাতের উপর হাত রাখলো।’
“তুমি তো রেগে রুমে আসোনি। আমি বাহির থেকে এসে এটা পড়েছি।”

‘পদ্ম ছোট্ট করে উত্তর দিলো।’
“ওহ।”

‘ইজহান তার ঠোঁটটা ভিজালো।’

“পদ্ম তুমি আমাকে গিফট দিবে না।”

‘পদ্মের মনটা ছোট হয়ে এলো। ইজহান তো তাকে জানায়নি আজ তার জন্মদিন আবার কিসের গিফটের কথা বলছে।’

“উহু আপনি তো আমাকে জানাননি যে আজ আপনার জন্মদিন কিসের গিফটের কথা বলছেন?”

“আচ্ছা তাহলে আমি গিফট দেই। বসো তুমি ওখানে।”

‘পদ্ম বেডে বসলো। ইজহান আবার কিসের গিফট দিবে? ইজহান কাবার্ড থেকে কিছু প্যাকেট বের করলো। ইজহান পদ্মের সামনে প্যাকেট গুলো রাখলো। পদ্ম শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। আজ ইজহানের জন্মদিন অথচ পদ্ম গিফট পাচ্ছে বিষয়টা অস্বাভাবিক হয়ে গেলো না?’

“এগুলো কি?”

‘পদ্ম ইজহানের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করেছে। ইজহান বুকে হাত গুঁজে গম্ভীর স্বরে বললো-‘

“নিজেই খুলে দেখো।”

“খুলবো?”

“জ্বী ম্যাডাম খুলুন। আপনার জিনিস আপনি খুলবেন না? দেরি করবেন না তাড়াতাড়ি খুলুন।”

‘পদ্ম প্যাকেট গুলো একটা একটা করে খুলছে। আর রীতিমত অবাক হচ্ছে। একটা প্যাকেটে সুন্দর স্বর্ণের চেইন পাওয়া গেলো, যেখানে অনেক গুলো ইংরেজি শব্দ দিয়ে ‘পদ্ম’ তার নামটা লিখা।
আরেকটা প্যাকেটে স্বর্ণের আংকি পেলো লাভ শেইপ মাঝখানে আবার ‘p’ লেখা। এই দুটো’ জিনিস পদ্ম খুব বড়সড় করে অবাক হয়েছিলো। আরও একটা ব্যাগে গাঢ় নীল জামদানী শাড়ি, নীল চুড়ি, সাদা গাজরা, দুটো কাজল, আর একটা লিপস্টিক পেলো। এতো এতো উপহারের মাঝে এক অমায়িক সুন্দরী কন্যা বসে আছে, যাকে অপলক নয়নে তাকিয়ে দেখছে ইজহান। ইশ মেয়েটা একটু বেশিই সুন্দর। এতো সুন্দর না হলেও পারতো। আর এইদিকে পদ্ম অবাক চাহনিতে শুধু এগুলো দেখছে। কোনো কিছুই মাথায় ঢুকছে না।’

“এগুলো কি? জন্মদিন তো আপনার গিফট আমার জন্য এনেছেন কেনো?”

‘ইজহান তার কপালের সামনে এসে পড়া চুলগুলো হাত দ্বারা পিছনে নিলো।’

“মনে আছে বিয়ের পর এই পর্যন্ত আমি তোমাকে একটাও গিফট দেইনি। তোমার জন্মদিনে বলেছিলাম সব গিফট একসাথে দিবো।তাই আজ দিয়ে দিলাম।”

“তাই বলে এতোকিছু?”

“জ্বী কেনো ম্যাডাম আপনি খুশি হোননি? আপনার মুখে তো হাসি নেই আসলেই আপনি খুশি হোননি? এটা কি আমি ধরে নিবো?”

“না না আমি ভিষণ খুশি হয়েছি ধন্যবাদ।”

“একটা কথা বলবো পদ্ম?”

‘পদ্ম মাথা নাড়লো।’

“তুমি যে তখন শাড়ি পড়েছো আমি তোমাকে ঠিকমতো মনভরে দেখতে পারি নি। এখন আবার পড়বে?”

‘পদ্ম কি বলবে বুঝতে পারছে না। একবার শাড়ি পড়েছিলো খুলেও ফেলেছে এখন কি আবার পড়বে। যেহেতু ইজহান এতো গিফট দিয়েছে না করা কি ঠিক হবে?’

‘পদ্মের পাশ থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে ইজহান ইচ্ছে করেই একটু মন খারাপের অভিনয় করে বললো-‘

“যদি তোমার কোনো সমস্যা থাকে তাহলে থাকুক পড়তে হবে না।”

‘পদ্ম দেখছে ইজহানের মনটা খারাপ হয়ে গেলো। তাই আর কোনো কিছু না ভেবেই বললো-‘

“না আমি শাড়ি পড়বো।”

‘ইজহানের চোখটা খুশিতে চিকচিক করছে।’
“আচ্ছা তাহলে তুমি পড়ো আমি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছি।”

‘বলেই ইজহান ব্যালকনিতে চলে গেলো। ইজহান চলে যাওয়ার পর পরই পদ্ম শাড়ি পড়তে শুরু করলো। শাড়ির সবকিছু ঠিক থাকে কিন্তু সেই কুচিটা নিয়েই ঝামেলা। কুচি সুন্দর হয়নি। কুচিটা দেখে পদ্ম মুখ কুচকে ফেললো। এটা কবে সুন্দর করে করতে পারবে সে।’

‘পদ্ম গলার স্বর উঁচু করে ইজহানকে ডাক দিলো।’

“ভিতরে আসুন। শাড়ি পড়া শেষ আমার।”

‘ইজহান রুমে আসলো। পদ্মকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিলো। পদ্ম তার চোখে বরাবরই সুন্দর যেকোনো অবস্থাতেই। ইজহান পদ্মের সামনে ঝুঁকে বসে কুচিটা ঠিক করে দিলো। পদ্ম হাসছে যতোবারই পদ্ম শাড়ি পড়ে ততবারই ইজহান কুচি ঠিক করে দেয়। এইজন্য মাঝে মাঝে আর কুচি সুন্দর করে শিখতে মন চায়না তার।’

‘ইজহান উঠে দাঁড়ালো। তার হাত পদ্মের গাল স্পর্শ করে বললো-‘

“সুন্দর লাগছে খুব পদ্মফুল।”

‘পদ্ম ম্লান হাসলো।’
“ধন্যবাদ।”

“শুধুই ধন্যবাদ এক্সট্রা কিছু দিবে না?”

‘পদ্ম ভড়কে গেলো। কি দিবে আর। তার কাছেই বা কি আছে?’

“কি দিবো আপনাকে? আমাকে কাছে তো কিছু নেই।”

‘ইজহান ভ্রু কুচকে তাকালো।’
“সত্যিই কিছু নেই।”

“না নেই।”

‘ইজহান পদ্মের চুলের খোঁপাটা তার একহাত দিয়ে খুলে দিলো।’

“এবার বেশি সুন্দর লাগছে।”

‘পদ্ম আড়চোখে তাকালো ইজহানের দিকে। ওনি কি করতে চাচ্ছেন সেটাই বোঝা দায়।’

“এভাবে তাকিয়ে থেকো না পদ্মফুল প্রেমে পড়ে যাবে।”

‘পদ্ম এবার সরাসরি তাকালো ইজহানের দিকে। ইজহান তার সবগুলো দাঁত দেখিয়ে হাসছে।’

“হুহ আমার বয়েই গিয়েছে প্রেমে পড়তে।”

‘ইজহান পদ্মের হাত ধরে একদম তার সামনে এনে দাঁড় করালো। পদ্ম হাত ছাড়ার জন্য বহুত চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। ইজহান এমন ভাবে হাতটা ধরছে।’

“আমি যদি না ছাড়ি তাহলে তোমার এই লিলিপুট মার্কা শক্তি দিয়ে শত বছর চেষ্টা করলেও ছাড়াতে পারবে না ম্যাডাম।”

“ছাড়ুন আমাকে।”

“ব্যাথা তো পাচ্ছো না তাহলে কেনো ছাড়ুন ছাড়ুন বলছো। আজ রাতে তুমি আমার থেকে ছাড়া পাচ্ছো না।”

‘পদ্ম বুঝলো না ইজহানের কথা।’
“মানে বুঝিনি আমি।”

“এতো বুঝতে হবে না।”

“আচ্ছা তাহলে ছেড়ে দিন।’

‘ইজহান যেনো পদ্মের কথাটা শুনলো না। পদ্মকে টেনে তার সাথে মিশিয়ে নিলো। ইজহান ঝুঁকে পদ্মের গালের সাথে তার গাল স্পর্শ করালো।’

” উহুম ছাড়বো না।”

‘পদ্মের শরীর ঠান্ডায় হিম ধরে গেলো যেনো।’

“একি পদ্ম তোমার শরীর এমন ঠান্ডা হয়ে গেলো কেনো? ভয় পাচ্ছো আমাকে, নাকি আমার স্পর্শকে?”

‘পদ্ম ভাবছে কি বলবে এখন। কিছুই বলার নেই। তার কাছে আপাতত কোনো কথাই নেই। নিরবদর্শক আপাতত।’

“পদ্ম একটা জিনিস চাই তোমার কাছে।”

‘পদ্ম মাথা তুলে তাকালো ইজহানের দিকে।’
“কি?”

“আগে বলো তুমি আমাকে সেটা দিবে যা আমি চাচ্ছি। আমি প্রথম দিন তোমাকে জড়িয়ে ধরার জন্য পারমিশন নিয়েছিলাম। আজও পারমিশন নিচ্ছি। কারণ আমি তোমার কথাকে গুরুত্ব দেই বেশি। তুমি যদি পারমিশন দাও তাহলে..

‘এটুকু বলেই ইজহান থেকে গেলো। ইজহানের বলা কথাগুলো ঘোলাটে লাগছে অনেকটা যা পদ্ম বুঝতে পারছে না।’

“কিসের অনুমতি চাচ্ছেন আপনি?”

“আগে বলো আমি পারমিশন দিচ্ছি তাহলে বলবো। যদি শোনার পর অন্য কিছু বলো তখন? তাই শোনার আগে মতামত চাচ্ছি আরকি।”

“আচ্ছা অনুমতি দিলাম। এবার তো বলুন।”

‘ইজহান ক্ষানিকটা চুপ রইলো।’

“আমাদের বৈবাহিক সম্পর্কের পূর্ণতা চাই পদ্ম। তুমি পারমিশন দিয়েছো। তাই অফারটা লুফে নিচ্ছি। এবার তুমি বলো তুমি কি প্রস্তুত?”

‘পদ্ম আঁতকে উঠলো ইজহানের কথায়। এমনটা হবে ভাবেনি। গ্রামে থাকাকালীন পাশের ঘরের ভাবিরা সব বলেছে পদ্মকে। তাই পূর্ণতা কথাটা বুঝতে এতো বেশি সময় লাগলো না।’

“আপনি তো আগে এটা বলেননি?”

‘ইজহান তার হাত থেকে ঘড়িটা খুলে রাখলো।’

“বললে কি আপনি রাজি হয়ে যেতেন কখনো?”

‘পদ্ম চুপ হয়ে রইলো। কি বলবে ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না। এমন ভাবে ধোকা খাবে কখনো ভাবেনি। আর পূর্ণতা শব্দ মনে পড়তেই কেমন অদ্ভুত অনূভুতির জানান দেয়।’

“হুহ কথা বলবো না আপনার সাথে।”

‘ইজহান পদ্মের হাত ধরে টেনে একেবারে তার সাথে মিশিয়ে নিলো। ‘

“আজ আর এগুলো শুনবো না পদ্মফুল। আমি জানি তোমার সম্মতি রয়েছে কিন্তু তুমি মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছো না। আচ্ছা বলতে হবে না আমি বুঝে নিয়েছি। বউয়ের এতো কষ্ট সহ্য করতে পারবো না চলো।”

‘ইজহান পদ্মকে ছেড়ে তার শার্টের কয়েকটা বোতাম খুলে নিলো। অতঃপর তার সহধর্মিণী কে সুন্দর করে কোলে তুলে নিলো। পদ্ম হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে ইজহানের দিকে। আজ আর বাঁধা দিবে না। ইজহানের যা মন চায় করুক। পদ্ম শুধু অপলক ভাবে তাকিয়ে দেখছে। ইজহান পদ্মকে বেডে শুইয়ে দিলো। ইজহান গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে পদ্মের দিকে। এই মেয়েটি সে যাকে বিয়ে করেছিলো বেশ কয়েকমাস আগে। যাকে প্রথম নিজের বউ হিসেবে মানতে নারাজ ছিলো। এখন এই মেয়ের ভালোবাসার চাদরে নিজেকে মুড়ে নিবে। সে অনুভূতিটা ঠিক কি রকম হবে? ইজহানের এমন চেয়ে থাকা দেখে পদ্ম মাথা নিচু করে একটু নড়েচড়ে বসলো। মানুষটা কে কেমন জানি লাগছে। না ইজহান সে আগের মতোই পদ্মের দিকে তাকিয়ে আছে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাহার পদ্মফুল কে। একদম তার স্বপ্নের রাজকুমারীর মতো। সে কি আগে কখনো ভেবেছিলো যে এমন একজনের ভালোবাসায় সে ঘায়েল হবে। চোখ ধাধানো সুন্দরী পদ্মফুল। পদ্ম যেনো পদ্মফুলের মতোই সুন্দর, স্নিগ্ধ।

‘ইজহান পদ্মের ঘাড়ে মুখ ডোবালো। পদ্ম চোখ বন্ধ করে আছে। হাতটা এমনিতেই ইজহানের মাথায় চলে গেলো। ইজহানের চুলগুলো টেনে ধরেছে। পদ্ম খুব ভালো করেই ইজহানের দাড়ি গুলো অনুভব করতে পারছে। বেহায়া দাড়ি একদম। পদ্ম কিছুক্ষণ পর মৃদু কামড়ের আভাস পেলো। যেটা আস্তে আস্তে দৃঢ় হচ্ছে। পদ্মের চোখ থেকে দু’ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো। ইজহানের মনে তো এক অদ্ভুত শান্তি লাগছে। আর পদ্মের সব ঘোলাটে লাগছে। বার বার পদ্মের চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। ইজহান মাথা তুলে পদ্মকে দেখে নিলো। পদ্মের চোখটা মুছে দিলো। তারপর পদ্মের ওষ্ঠে ইজহান তার ওষ্ঠ মিলিয়ে দিলো। দু’জনের নিঃশ্বাস গাঢ় হয়ে এসেছে। অসম্ভব সুন্দর এক অনুভূতি। ইজহান এই দিনটির জন্যই এতো দিন অপেক্ষা করছিলো। আজ সেই সুন্দর এবং শ্রেষ্ঠ দিন।’

❝অতঃপর পূর্ণতা❞

‘সকাল ৯টা।’
‘ইজহান চোখ খুলে পদ্মকে দেখছে। ইজহানের বক্ষে পাখির ছানার মতো লে’প্টে আছে। গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে। তার মা যে প্রথমে বলেছিলো মেয়েটা মায়াবী ঠিকই বলেছিলো। পদ্মের চেহারায় অদ্ভুত এক মায়া আছে। কি সুন্দর করে ঘুমাচ্ছে। আর ইজহানের দেওয়া ভালোবাসা গুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। ইজহানের মনে প্রশান্তি নামক এক হাওয়া বয়ে গেলো। এখন একদম মিসেস ইজহান শেখ লাগছে।’

‘পদ্মের ঘুম ভাঙলো ১০টার আরও পরে। ইজহান ইচ্ছে করেই জাগায়নি পদ্মকে। পদ্ম এখন আয়নার সামনে বসে বসে ইজহানের দেওয়া ভালোবাসা দেখছে। কেমন বেহায়ার মতো তাকিয়ে আছে দাগগুলো। এগুলো মানুষ দেখলে কি বলবে। বুড়ো হয়েছে, যথেষ্ট জ্ঞান বুদ্ধি আছে তাও এ কাজ কিভাবে করতে পারলো? ইজহান রুমে এসে দেখলো পদ্ম আয়নায় সামনে বসে বসে এসব দেখছে। মুচকি মুচকি হাসছে সে। পদ্মকে দাঁড় করালো ইজহান। পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। পদ্ম নিজেকে ছাড়ানোর জন্য বৃথা চেষ্টা করতে লাগলো। জানে ইজহানের শক্তির কাছে সে কিছুই না। তাও মন বলছে ‘চেষ্টা করতে দোষ কোথায়?’। ‘

“আর কতো এমন ছাড়া পাওয়ার জন্য ছোটাছুটি করবে? জানো তো পারবে না তাও এমন করছো।”

“ছাড়ুন আমাকে।”

“কেনো? ছাড়বো কেনো আমি তোমাকে? ছাড়ার জন্য তো ধরে রাখিনি। এই ইজহানের থেকে কখনো তুমি নিজেকে ছাড়াতে পারবে না পদ্মফুল। ইজহানের ভালোবাসা এতো বেশিই প্রখর যে এসব বৃথা চেষ্টা করে কোনো লাভ হবেনা। আর আমি তোমাকে ছাড়ছি ও না এসব চিন্তা ঝেড়ে ফেলো মাথা থেকে।”

‘পদ্ম বে’ক্ক’ল হয়ে গেলো। সে কি বলেছে আর ইজহান কি বলেছে। বোকা বোকা চাহনিতে ইজহানকে আয়নায় দেখছে। পদ্ম কিছুটা অবাক হলো তাকে আর ইজহানকে এভাবে আয়নায় দেখে। এই প্রথম দৃশ্যটা দেখলো। পদ্ম ম্লান হাসলো। সেই হাসিটা ইজহান দেখলো না। সে তো পদ্মকে নিয়ে ব্যস্ত আছে।’

“ছাড়ুন আমি নিচে যাবো।”

‘ইজহান তার গাল এগিয়ে দিয়ে বললো-‘
“একটা চুমু খাও তারপর যেতে পারবে এর আগে তুমি যেতে পারবে না। মূলত আমিই তোমাকে যেতে দিবো না।”

‘পদ্ম মুখটা কুচকালো।’
“ইশ লজ্জা জিনিসটা বলতে কিছুই নেই। আমি আপনার মতো এসব পারি না। নির্লজ্জ লোক কোথাকার। সারাদিন এসব নিয়েই পড়ে থাকেন।”

‘ইজহান গলা ছেড়ে কাঁশলো। এতো বড় ডক্টর কে তার বউ চুমুর জন্য এতো সুন্দর অপবাদ দিচ্ছে কোনো মতেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। যাবে না। শুধু তো একটি চুমুর কথাই তো বলেছে আর অন্য কিছু তো বলেনি। পদ্ম এমন নিম্ন উপাধি দিবে জানলে আরও বেশি করে বলতো। এটা আসলে ইজহানের সাথে মানায় না।’

“শুনো পদ্মফুল এসব নিম্ন উপাধি তোমার ডাক্তার সাহেবের সাথে মানায় না। তিনি বড্ড বেশি বেসামাল পুরুষ। আশাকরি বুঝতে পেরেছো বিবিজান। যদি না বুঝো তাহলে কাল রাতের কথা সুন্দর করে বিশ্লেষণ করবো তারপর বুঝতে পারবে।”

‘পদ্ম লজ্জায় মাথাটা নিচু করে ফেললো। কাল রাতের কথা মনে পড়তেই এক অজানা লজ্জা তাকে এসে ভড় করলো। মানুষটা দিন দিন কেমন জানি হয়ে উঠছে। কথাবার্তা ঠিকমতো বলছে না। আবার নতুন শব্দ বের করে করেছে বিবিজান। মুহূর্তেই পদ্মের মুখে লাল আভা ছড়িয়ে যেতে লাগলো। ইচ্ছে করছে ইজহানের বুকে মুখ লুকিয়ে ফেলতে। কিন্তু না সেটা করা যাবে না। নাহলে ডাক্তার সাহেব আরও বেশি বেশি লজ্জা দিবেন।’

“আপনি একটা নির্লজ্জ লির্লজ্জ নির্লজ্জ।”

‘ইজহান গা ছাড়া ভাব নিয়ে বললো-‘
“এখন নির্লজ্জ বলতে পারো সমস্যা নেই। কারণটা থাক বলবো না। [ কারণ হচ্ছে আমার পাঠক/ পাঠিকারা লজ্জা পাবে]

“উহু এখন ছেড়ে দিন না।”

“পদ্ম তোমাকে এখন একদম পরিপূর্ণ লাগছে। এই যে তোমার শরীরের প্রত্যেকটা অংশে আমার স্পর্শ লেগে আছে তুমি কি অনুভব করতে পারো? ইজহান যে তোমার মন চুরি করেছে সেটা পারো অনুভব করতে.? কাল রাতে তোমার ঠিক কেমন লেগেছিলো বলতে পারবে? ইজহানের যে হৃদয়ে পদ্মফুল লিখা তুমি কি সেটা জানো?”

‘পদ্ম শুধু ইজহানের কথা শুনছে। তার কিছু বলার ভাষা নেই। ডাক্তার সাহেব যে কিভাবে কথাগুলো বলছে কে জানে। সে তো আমাকে বলে আমি তার স্পর্শ অনুভব করতে পারি কিনা? আচ্ছা সে যে পদ্মকে লজ্জা দেয় তার কথায় যে পদ্ম লজ্জা পায় তা কি সে অনুভব করতে পারে?’

‘পদ্ম এক ধ্যানে ফ্লোরে তাকিয়ে আছে। ইজহানের ঠোঁটের স্পর্শ পদ্মের গালে পেতেই পদ্ম হড়বড় করে সরে যেতে লাগলো। সাথে সাথেই পদ্মকে ইজহান গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরলো।’

“আগে পারমিশন নিয়েছি এখন আর সেটাও নিবো না। সো সহ্য করে থাকতে হবে তোমায় পদ্মফুল।”

#চলবে…

[আসসালামু আলাইকুম। এটা সারপ্রাইজ ছিলো আপনাদের জন্য। ভেবেছেন কি লেখিকা এমন করবে? আমি ভিষণ চটপটে ধৈর্যহীন মানুষ। তাই ইজহান কে এতোদিন কষ্ট দিতে পারলাম না। অনেকে চেয়েছিলেন আমি যেনো তাদের মিলিয়ে দেই এইযে আজ দিলাম। মন মতো হয়নি কারণ হাতেও ব্যাথা যদিও ২০০০+ শব্দ লিখেছি আপনাদের জন্য। আচ্ছা আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমার কাল গল্প দেওয়ার কথা ছিলো দিতে পারেনি কারণ কারেন্ট ছিলো না সারাদিন আমি কিন্তু লিখে রেখেছিলাম। একটু ভালো ভালো কমেন্ট করার চেষ্টা করবেন🥹। যাইহোক আমার ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। শব্দসংখ্যা ২২৪১]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here