প্রিয়োসিনী #নীরা_আক্তার #পর্ব_২০

0
451

#প্রিয়োসিনী
#নীরা_আক্তার
#পর্ব_২০
ড্রইং রুমের সোফায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছে তিয়াশ।নওরিনদের বাড়িতে ঘরের সংকট।সবার জন্য নির্দিষ্ট একটা করে ঘর বরাদ্দ রাখা আছে।আর একটা অতিরিক্ত ঘর যেই ঘরটায় নোহাকে রাখা হয়েছে।কাল নওরিনের জন্মদিন। নওরিনকে জন্মদিনের সার্প্রাইজ দেওয়ার জন্যই নোহার এবাড়িতে আসা।রাত দশটা বেজে পয়তাল্লিশ মিনিট।নোহা গুটি গুটি পায়ে ড্রইং রুমে আসে।উঁচু হয়ে একবার তিয়াশকে দেখে নেয়।সে বিভোরে ঘুমিয়ে আছে।

[তিয়াশকে সে অনেক আগে থেকেই চিনত।ভাইয়ের ফ্রেন্ড হওয়ার সুবাধে মাঝে মাঝেই বাড়িতে আসতো।তিয়াশ নোহাকে পছন্দ করে।কয়েকবার প্রপোজও করেছে… প্রতিবারই নোহা উওরের জায়গায় একটা করে থাপ্পড় মেরেছে।থাপ্পড় খেয়ে তিয়াশ পেছনে হাটা দেয়।কিছুদিন পর আবার ফিরে আসে একই আবদার নিয়ে।নোহাও একই কাজ করে।তিয়াশ প্রত্যেক উইকেন্ডে নোহার কলেজে যায়।নোহার কাছে একটা করে থাপ্পড় খাওয়ার জন্য।ব্যাপ্যারটা ইসরাকের অজানা]

নোহা কিছুক্ষণ সেখানেই দাড়ায়।

কারো কোনো সাড়া শব্দ নেই।কথা ছিলো সবাই মিলে একসাথে নওরিনকে সার্প্রাইজ দেবে।ছাদটা সুন্দর করে সাজাবে।অনেক কাজ বাকি।কিন্তু যে যার মতো ঘুমোচ্ছে।
নোহা একটু বিরক্ত হয়। তারপর
নিঃশব্দে বাড়ির মেইন ডোর খুলে ছাদের দিকে পা বাড়ায়। কেউ যখন নেই সে একাই নওরিনের জন্মদিনের জন্য ডেকোরেশন করবে।

নোহা গুটি গুটি পায়ে ছাদে চলে যায়।সাজানোর জিনিসগুলো সেখানেই রাখা আছে।ছাদের দরজা খুলতেই দেখে সেখানে প্রচুন্ড অন্ধকার।
নোহা কপাল চাপড়াই। সে ছাদের আলো জ্বালাতে ভুলে গেছে।সুইচটা নিচে সিড়ির সামনে লাগানো।
নোহা আবার নিচে নামার জন্য পা বাড়াতেই আলো জ্বলে উঠে,
নোহা একটু নিশ্চিন্ত হয়,
তারমানে কেউ উঠে পড়েছে। এখন আর তাকে একা কাজ করতে হবে না।এমনিতেও নোহার অন্ধকারে বড্ড ভয়।

নোহা দেরিনা করেই ছাদের মাঝখানে রাখা টেবিলটার দিকে এগিয়ে যায়।সেখানে ডেকোরেশনের সব জিনিস রাখা আছে।নোহা টেবিল থেকে সব জিনিসগুলো নিচে নামিয়ে রাখে।তারপর টেবিলে সুন্দর একটা ম্যাট বিছিয়ে দেয়।

কারো একটা কাশির শব্দে নোহা পেছন ফিরে তাকায়।তিয়াশ দাড়িয়ে আছে,
-কেমন আছো নোহা?অনেক দিন তোমায় দেখিনা।সেই কবে ছুটিতে বাড়ি এসেছো।কলেজে কি আর যাবা না?
-না
-আমি লাস্ট উইকেন্ডেও গিয়েছিলাম। তোমার হলের সামনে ওয়েট করে করে চলে এসেছি।পরে টায়রা বললে তুমি বাড়িতে আমাকে কি একবারও জানানো যেতে না?
তিয়াশ কথা বলতে বলতে নোহার দিকে দুকদম এগিয়ে আসে,
নোহা তিয়াশকে দেখে হকচকিয়ে যায়।
-কি চাই এখানে?
-তোমায় শুধু হেল্প করতে আসলাম।
কথাটা বলেই তিয়াশ নোহার দিকে আরো একটু এগিয়ে আসে,
নোহা ভয় পেয়ে একটু পিছিয়ে যায়,
–আমি কিন্তু চিৎকার করবো?
তিয়াশ ভ্রু কুচকে তাকায়,
-চিৎকার করবে?কিন্তু কেন?আমি আবার কি করলাম?
নোহা উওেজিত কন্ঠে বলে উঠে,
-ছোট বেলা থেকেই বড্ড জ্বালাচ্ছেন।আপনি না বড্ড বেহায়া।আর কতোবার বললে আমার পিছু ছাড়বেন বলুন তো!
তিয়াশ মাথা চুলকায়,
-জীবনেও ছাড়বো না।দরকার৷ পড়লে তোমার জন্য চিরোকুমার থাকবো।
-তাহলে আপনাকে তাই থাকতে হবে ডাক্তার সাহেব।
-আমায় রিজেক্ট করেছো তুমি তোমায় এখন একা পেয়েছি।একদম খেয়ে ফেলবো।
নোহা ভয় পেয়ে শুকনো ঢোক গিলে,
-দেখুন!
তিয়াশ হো হো করে হেসে দেয়,
-দেখো নোহা সেই ছোটবেলার কিউট নোহাকে দেখেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম।জানতাম না তুমি মরিচের চেয়েও ঝাল।জানলে ভুলেও কখনো তোমার দিকে তাকাতাম না।
-কি বললেন?
– না মানে তুমি তো পাত্তা দিলা না। ভাবলাম বড় হলে হয়তো ভালোবাসবে তাও বাসলানা।ভালোবাসা তো দূরের কথা। কথাও তো বলতে চাও না। আমায় এতো কিসের ভয় তোমার?

নোহা একটা শুকনা ঢোক গিলে।জিহ্বা দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে নেয়,
–আমি শুধু আপনাকে না সব পুরুষকেই ভয় পাই।আই হেইট মেন।তারা শুধু কষ্ট দিতে জানে।
তিয়াশ ভ্রু কুচকে তাকায়,
-পুরুষকে ভয় পেলে পুরুষের ভালোবাসা পাবে কি করে?জানো না পুরুষের ভালোবাসা ছাড়া কোনো নারীই পূর্ণতা পায় না ।
-দেখুন আমাকে ভালোবাসার জন্য অনেক পুরুষ আছে।আপনি দূরে গিয়া মরুণ
-কি বলো?কে আছে?সত্যিই মরে যাবো কিন্তু!
নোহা হাতের আঙ্গুল গুনতে গুনতে বলে,
–আমার দুইটা দাভাই আছে,বাবা আছে বোব্বা আছো,দাদু আছে নানু আছে বড় মামাও আছে সবাই ভালোবাসে আমাকে।তাদের কলিজার টুকরা আমি।আর কাউকে চায় না।
তিয়াশ বিষম খায়,
-এদের কথা বলেছি আমি?
-তাহলে?
–আমার মতো কারো কথা…..না.মানে আমি তোমায় কলিজার টুকরা না গোটা কলিজায় বানিয়ে রাখবো।
-ধুর
-দেখো নোহা ওদের ভালোবাসায় তুমি প্রশান্তি পাবে আর আমার ভালোবাসায় তুমি তৃপ্তি পাবে মুগ্ধতা পাবে।দুদিন পর কয়েকটা ছোট ছোট বাচ্চা কাচ্চা ও পাবে
নোহা মুখ বাকিয়ে উওর দেয়,
-অসভ্য পুরুষমানুষ।চাই না কিছু। চলে যান বলছি।
নোহা একটু চেঁচিয়ে উঠে,
তিয়াশ একটু দূর থেকে নোহাকে দুইটা ফু দেয়,
-আচ্ছা আচ্ছা থামো প্লিজ….তবে কি জানো যদি কখনো অনুভব করো তোমার জীবনে কোনো পুরুষ কে প্রয়োজন প্লিজ একবার এই প্রেমিক পুরুষের কথা ভেবে দেখিও।আমি আমার হৃদয়ের দরজা খুলে তোমার জন্য অপেক্ষা করবো!আমি অপেক্ষা করবো বলে দিলাম কিন্তু !

নোহা কিছু বলতে যাবে তার আগেই ইশরাক চলে আসে,
ইসরাককে দেখে তিয়াশ থেমে যায়।ভয়ে মুখটা কাচুমাচু করে ফেলে।কিছু শুনে ফেললো না তো,না হলে মেরে ভর্তা বানিয়ে ফেলবে তারপর আচারের সাথে খাবে।

ইসরাক চোখ ডলতে ডলতে এগিয়ে আসে।
“চল সব রেডি করি হা করে কি দেখিস দুইজন”
ইসরাক ধমকে তাদের হুস ফিরে,
তিনজন মিলে সব কিছু সাজিয়ে রেডি করে ফেলেছে।তাদের সাথে নওরিনের মেজো ভাই ভাবিও ছিলো…।

ডেকোরেশন প্রায় শেষ….এখন নওরিনকে আনা দরকার ইসরাক যায় নওরিনকে আনতে।
নওরিন কাত হয়ে ঘুমিয়ে আছে।ইসরাক নওরিনের গালে চুমু খায়।কোনো সাড়া নেই,
বেশ কয়েকবার ডাকা ডাকি করে, নওরিন হু হ্যা করে আবার ঘুমিয়ে পড়ে।
ইসরাক মুচকি হেসে নওরিনকে টেনে তোলে।নওরিন চোখ পিট পিট করে তাকায়,
-এমন করেন কেন?
-ছাদে যাবো চলো
-এতো রাতে
-হু
-আমি যাবো না।আপনি যান
-চলো বলছি।
-না ঘুমাবো।
ইসরাক নওরিনকে কোলে তুলে নেয়
-তোমাকে যেতে হবে না আমি নিজে থেকেই নিয়ে যাচ্ছি।
নওরিন চেচামেচি শুরু করে
ইসরাক নামিয়ে দেয়,
-এমন করো কেন সবাই জেগে যাবে তো।
-যাক যখন তখন ধরবেন না বলে দিলাম!
–আচ্ছা ঠিক আছে।হ্যাপি বার্থডে কুইন!
নওরিন ভ্রু কুচকে তাকায়,
-১২ টা বাজতে দেরি আছে কিন্তু আমি চেয়েছিলাম তোমায় সবার আগে উইশ করতে।তাই আগেই করে ফেললাম।এখন চলো সবাই ওয়েট করছে।
-সবাই মানে?
-চলো গেলেই বুঝবা।
ইসরাক নওরিনকে টেনে নিয়ে যায়।
ছাদে গিয়ে নওরিন অবাক।সবাই একসাথে তাকে বার্থডে উইশ করে।নওরিনের চোখে পানি চলে আসে।শেষ কবে নওরিন এভাবে জন্মদিন পালন করেছে তা তার মনে নেই।তবে সে আর মেজো ভাই রাত ১২ টায় ছোট্ট কেক কাটে তবে এতো লোকজন নিয়ে এটা প্রথমবার।

নোহা ছুটে এসে নওরিনকে জড়িয়ে ধরে উইশ করে,নওরিনও মুচকি হেসে নোহাকে জড়িয়ে ধরে।
এবার কেক কাটার পালা।কেক কাটা আগ মুহূর্তে নোহা চেচিয়ে উঠে,
-দাভাই ক্যামেরা কোই ছবি উঠাবা না?এতো সুন্দর মুহূর্ত অথচ ছবি ।পা মচকে গেছে তিয়াশ নোহার পায়ে হাত বুলিয়ে একটা চুমু খায়।
নোহা তিয়াশের গালে একটা চড় বসিয়ে দেয়।
নওরিন ঘটনার আকস্মিকতা দেখে চমকে যায়,
-কি করো এটা
-আগে আমাকে উঠাও নওরিন।

নওরিন নোহাকে টেনে তোলে।তিয়াশ গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে,নওরিন অবাক চোখে তিয়াশকে দেখছে।
-বকবে নাকি?
তিয়াশ মুচকি হেসে উওর দেয়,
-ভয় পেয়োনা ভাবি।আমার এমন চড় খাওয়ার চার বছরের অভিজ্ঞতা আছে।মাঝে মাঝেই খায়।না খেলে মন ভরে না।
নোহা ফিক করে হেসে দেয়।
নওরিন কিছু না বুঝেই নোহার সাথে হাসে।

নওরিন সবাইকে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটে।যদিও নওরিন সবসময় প্রথম কেক তার মেজো ভাইকে খাওয়ায় তবে আজকে নওরিন প্রথম কেকটা নোহাকে খাওয়ায়।
-যদি ইশার জায়গায় তুমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হতে হয়তো আমার গোটা জীবনটাই পাল্টে যেতো।
নোহা মুচকি হাসে,
-তোমার জন্মদিনের উপরহার আমি কাল তোমায় দিবো নওরিন।

নোহার পর নওরিন তার মেজো ভাইকে কেক খাওয়ায়।এক মাত্র মেজো ভাই তার জন্মদিন কখনো ভুলে না।দুনিয়া উলট পালট হয়ে গেলেও সে নওরিনের জন্মদিনটা সেলিব্রেট করতো।দরকার পরলে দুই ভাইবোন একাই পালন করতো।
একে একে নওরিন সবাইকে কেক খাইয়ে দেয় ইসরাক বাদে।ইসরাক মাথা নিচু করে নেয়।তার ভিষন খারাপ লাগছে।

নওরিন সে দিকে পাত্তা দেয় না।সবাই হালকা পাতলা খাওয়া দাওয়া করে।কিছুক্ষন আন্তাকস্বারী খেলে।এইসব করতে করতে প্রায় ২টা বেজে যায়।
সবাই নিচে চলে যায়।
নওরিন ও সবার পিছু পিছু নিচে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়,
ইসরাক নওরিনকে টেনে ধরে।
-এদিক আসো।
-উফ্ ঘরে যাবো ছাড়ুন
-তুমি তো আমাকে কেক খাওয়ালে না তার মানে আমার তোমাকে কোনো উপহার দেওয়া লাগবে না।
নওরিন মুখ বাঁকিয়ে উওর দেয়
-লাগবে না।চাই না আপনার উপহার।বিয়ের পর থেকে যা যা দিয়েছেন সেটাই এখনো নিয়ে হজম করে উঠতে পারি নি নতুন করে আর কিছু চাই না।
ইসরাক নওরিনের হাতদুটো ধরে তার সামনে হাটু গেড়ে বসে।
“আমি অনেক কিছু করেছি নওরিন। কিছু করেছি জেনে,কিছু করেছি না জেনে,রাগের মাথায় কিছু ভুল করেছি,আবার কিছু অন্যায়ও করেছি।আমি জানি আমি যদি এখন তোমার কাছে ক্ষমা চাই তুমি আমায় ক্ষমা করে দেবে।আমার করা সব কাজ গুলো যাচাই করে আমাকে কাঁঠগড়ায় দাড়করিয়ে বিচার করার মতো বোধ বুদ্ধি বা আত্মসন্মান কোনোটাই তোমার এখনও তৈরী হয়ে উঠে নি।”

ইসরাক পকেট থেকে একটা রিং বের করে।
-এটা তোমার জন্মদিনের গিফট। ভিষন এক্সপেন্সিভ। আমি চেয়েছি তোমায় সেরা কিছু একটা দিতে কিন্তু এটা আজ আমি তোমায় পড়াবো না।তোমায় এটা পড়ানোর মতো যোগ্যতা বা অধিকার কোনোটাই আমার নেই।যেদিন তুমি নিজের মেরুদণ্ড সোজা করে দাড়িয়ে নিজের আত্নসন্মান অর্জন কারে আমার বিচার করার পর যদি ক্ষমা করতে পারো সেদিন দেবো।তার আগে নয়।

নওরিন হ্যা করে ইসরাকের দিকে তাকিয়ে আছে।ইসরাক বসা থেকে উঠে দাড়ায় নওরিনের কপালে একটা চুমু খায়।
–আমি কি বলেছি কিছু বুঝেছো?
নওরিন মাথা নাড়ে
ইসরাক জোরে নিঃশ্বাস ফেলে,
-তুমি মনে হয় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী।তাই কিছু বুঝো না নয়তো বুঝেও বুঝতে চাও না।সব সমস্যাকে এড়িয়ে যাও।

-কি বললেন?
কিছু না ঘরে চলো ঘুমাবে……অনেক রাত হয়েছে।
__________________
আজ সিকদার বাড়ির সবচেয়ে ছোট মেয়ের বিয়ে।ইশা আর আমানের বিয়ে।
খুব শর্টকাটে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে।পরিবারের কিছু লোকজন আর সাথে খুবই অল্প কিছু আত্নীয় সজন দের দাওয়াত করা হয়েছে।
নওরিনের পরিবারও সেখানে আছে।সঙ্গে নওরিনও।তারা কেউ আসতে চায় নি।নোহা আর ইসরাক অনেক বুঝিয়ে ধরে বেঁধে নিয়ে আসেছে তাদের।

আজকে এখানে তাদের প্রয়োজন।

ইশা আজকে মনের মতো করে সেজেছে।নোহা তাকে নিজের হাতে সাজিয়ে দিয়েছে।তবে নওরিন ইশার ধারের কাছেও যায় নি।ইশাও তাকে ডাকে নি।মূলত সে নওরিনের আগমনে বেশ বিরক্ত ।ইশাকে হল রুমে আনা হয়েছে।ইশা এদিক সেদিক খুঁজতে থাকে
আমানকে।
একটু পর আমান ও এসে উপস্থিত হয়।আমানের পরনে নরমাল ডে টু ডে লাইফের পোশাক আশাক।ইশা একটু বিরক্ত হয়।
সে আমানকে আগেই তার ল্যাহেঙ্গার সাথে মাচিং করা শেরওয়ানি পাঠিয়ে দিয়েছিলো তাহলে ঐটা কেন পড়লো না?
ইশা আমানের উপর রাগ হয়।মনে মনে ভেবে নেয় আজ রাতে আমানভাইকে ইচ্ছা মতো বকে দেবে সে।না আমানভাই নয় বিয়ের পর তো সে তার স্বামী হয়ে যাবে।আর ভাই ডাকা যাবে না।

ইশা নিজে নিজেই লজ্জায় হেসে দেয়,
নোহা পাশ থেকে বলে উঠে,
-হেসে নে হেসে নে একটু পর তো কান্না করে কুল পাবি না।
ইশার মেজাজটা গরম হয়ে যায়,
-শাঁকচুন্নি তোর কি আমার সুখ সহ্য হয় না
-না।ঠিক পথে সুখ অর্জন করতি মেনে নিতাম।এভাবে অন্যের ক্ষতি করে সুখ চাইবি তা হবে না।ধর্মে সইনে না রে বুনু
-কি করবি শুনি
-বোমা ফাটাবো।
– তুই কিচ্ছু করতে পারবি না।প্রমান তো শেষ।তোর কথা কেউ বিশ্বাস করবে না।
-শেষ না শুরু সেটা তো আগে দেখ।

তাদের কথার মাঝেই ইমতিয়াজ সিকদার চেচামেচি করতে থাকে,
-কাজি এখনো কেন আসে নি।
আমান উঠে দাড়ায়।ইমতিয়াজ সিকদারের সামনে এসে তার হাতটা শক্ত করে ধরে
-আমি বারণ করেছি বড় আব্বু।কাজীর কোনো প্রয়োজন নেই
ইমতিয়াজ সিকদার অবাক চোখে তাকায়।
-কেন?
আমান নোহার দিকে তাকায়।নোহা ছুট লাগায় ঘরের দিকে।ঘর থেকে সে আমানের ল্যাপটপটা নিয়ে আসে সাথে জিনাত সিকদারকেও টেনে নিচে নিয়ে আসে।

“ল্যাপটপে একটা ভিডিও চালায়, ইশার স্বীকারক্তি তার সাথে সাথে নওরিনকে দেওয়া থ্রেট,নোহার সাথে করা বাজে বিহেভ।এমনকি সেদিন নোহার ফোন ভাঙ্গার দৃশ্যও আমান রেকোর্ড করেছে। সব গুলো এক সাথে এড করা।”
ভিডিওটা সবার সামনেই চালানো হয়।

সবার চোখ যেন কপালে উঠে গেছে।আমান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে…..
ইশা ভয়ে কাপতে থাকে।

চলবে……

(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here