তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম #তাহিরাহ্_ইরাজ #পর্ব_২৮

0
659

#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_২৮

সেদিন ছিল জাবিরের জন্মদিন। আদরের পুত্রের জন্মদিন উপলক্ষে অনাকাঙ্ক্ষিত সেই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন সাজেদা। ওনার উদ্দেশ্য ছিল যে করেই হোক জাবির এবং দুয়া’কে এক রুমে বন্দি করে সকলের সামনে উপস্থাপন করা। হোক না তাতে দু’জনের সাময়িক ক*লঙ্ক লেপন। তাতে কি হয়েছে! ওদের বিয়েটা তো কোনোমতে সম্পাদিত হবে। সে-ই অনেক। তবে ওনার কুটিল পরিকল্পনা ব্যর্থ হলো করুণ ভাবে। জাবিরের পরিবর্তে দুয়া’র কক্ষে পৌঁছালো তূর্ণ। বিয়েটা হলোও তার সঙ্গে। সাজেদা বুঝতে অপারগ এসবের ভিড়ে ওনার ছেলে গেল কোথায়? একদিকে যখন তূর্ণ দুয়া’র চরিত্রে কালিমা লেপন করা হচ্ছে। ঠিক তখনই অন্যদিকে ভার্সিটি জীবনের বন্ধুদের সঙ্গে জন্মদিন উদযাপনে ব্যস্ত জাবির। বন্ধুরা তার সাথে প্রাঙ্ক করেছে। বারোটা বেজে ওঠার কিয়ৎক্ষণ পূর্বে ফেক কল করে জানালো তার কোম্পানির গোডাউনে আগুন লেগেছে। অবস্থা করুণ। সে যেন তৎক্ষণাৎ রওনা হয়। ইতিউতি না ভেবে জাবির সে মুহূর্তে ছুটলো। দুয়া’কে রেখে গেল তূর্ণ’র ভরসায়। তবে নির্ধারিত জায়গায় গিয়ে হতাশ এবং অবাক হলো জাবির। অনার্স ও মাস্টার্স সে ঢাকায় সমাপ্ত করেছে। ভার্সিটি লেভেলের সে-ই পুরনো বন্ধুরা ওকে হঠাৎ ফেক কল করে ডেকে পাঠালো। সেই সঙ্গে দিলো চমকপ্রদ সারপ্রাইজ! বন্ধুদের অপ্রত্যাশিত চমকে পুলকিত হলো জাবির। রাত্রি কাটলো বন্ধুদের সনে। পরদিন সকাল সকাল সে
‘ ছায়াবিথী ‘ পৌঁছে গেল। ততক্ষণে অঘটন ঘটে গেছে। বাড়িতে হাজির কাজী সাহেব। খানিকের মধ্যেই বিবাহ কার্যক্রম আরম্ভ হবে। অসহায় জাবিরের সে মুহূর্তে কিচ্ছুটি করার ছিল না। চোখের সামনে দেখে গেল তার লুকায়িত অনুভূতির করুণ মৃ ত্যু!

ছেলের মনোভাব অনুধাবন করে সাজেদা ভেঙে পড়লেন। জন্মদিনে সবচেয়ে সেরা উপহার দিতে চেয়েছিলেন উনি। সেখানে কিনা ছেলের জন্মদিন ম্লান হয়ে গেল! হতাশায় ভঙ্গুর হয়ে পড়লেন সাজেদা। আর হেল্পিং হ্যান্ড মিনু খালা! সামান্য কিছু অর্থের লো|ভে সে তার সততা বিক্রি করেছে। করেছে বে*ইমানি। তাকে কোনোরূপ জবাবদিহিতা করার পূর্বেই সে পলায়ন করলো ‘ ছায়াবিথী ‘ হতে। বিনিময়ে সাজেদা হতে পেল আরো আট হাজার।

বিয়ের পর ক্রমশ সবটা স্বাভাবিক হয়ে উঠলো। তবে পুরনো স্মৃতি ভুললো না তূর্ণ। কফিশপে দেখা করলো জাবিরের সঙ্গে। কেননা তার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিচ্ছিল জাবিরের সেদিনের প্রস্থান স্বাভাবিক ছিল না। কিছু তো অস্বাভাবিক ছিল। তাই তো কফিশপে সাক্ষাত দু’জনার। তবে আশানুরূপ ফল এলো না। সত্যিটা জানালো জাবির। হতাশ না হয়ে তূর্ণ পুনরায় কাজে লেগে পড়লো। কোনোরূপ প্রমাণ ব্যাতিত সাজেদা কিংবা জাবিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা অনুচিত হবে। আফটার অল দে আর ফ্যামিলি। তার মাইরা’র ঘনিষ্ঠ স্বজন। তাই তূর্ণ লোক লাগিয়ে দিলো। উদ্দেশ্য মিনু খালাকে খুঁজে বের করা। মিনু খালা স্বেচ্ছায় পলায়ন করে নিজের বিপদ নিজে ডেকে এনেছে। সন্দেহের তীর পুরোপুরি তার দিকে। কয়েক মাস ধরে খোঁজাখুঁজি চললো। অবশেষে তিনদিন পূর্বে খোঁজ মিললো মিনু খালার। সে পলায়ন করে তার চাচাতো বোনের শ্বশুরবাড়ি ঘাপটি মে রে ছিল। সেখানে গিয়ে হানা দিলো তূর্ণ। সঙ্গিনী দুয়া। দু’জনে মিলে জবাবদিহি করলো। মুখ খুলতে বাধ্য হলো মিনু খালা। কাঁদতে কাঁদতে সমস্ত সত্যিটা প্রকাশ করলো। হতবিহ্বল দুয়া তখন অসহায়ের ন্যায় আঁকড়ে ধরলো অর্ধাঙ্গের হাতটি। নোনাজলে ভরপুর আঁখি যুগল। এমন করেও আপনজনের দ্বারা বিশ্বাসঘা*তকতা হয়?
_____

অপ্রাপ্তি! অপ্রাপ্তি! অপ্রাপ্তি। সাজেদার জীবনটা এমন ছিল না। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সে। বাবার আদরের দুলালী। ভাইয়ের প্রাণ। শৈশবে মাতৃহারা সাজেদা কখনো অপ্রাপ্তি কি তা জানতো না। বাবা, বড় ভাই সর্বদা তাকে আগলে আগলে রেখেছে। চাওয়ার পূর্বেই পেয়ে যেতো সবটা। সর্বপ্রথম অপ্রাপ্তি নামক শব্দের সঙ্গে সে পরিচিত হলো ইন্টারমিডিয়েট পড়াকালীন। কিশোরী বয়স তখন। আবেগে ভরপুর তনুমন। প্রণয়ে জড়িয়ে পড়লো ভার্সিটির এক সিনিয়র ভাইয়ের সঙ্গে। তার কলেজ এবং মাসুদ আহমেদ এর ভার্সিটির দূরত্ব ছিল একদম ক্ষীণ। সিনেমার মতো নাটকীয় ভঙ্গিতে হয়েছিল তাদের প্রথম সাক্ষাৎ। অতঃপর ধীরে ধীরে আলাপণ এবং সর্বশেষ প্রণয়। বড়লোক বাবার কনিষ্ঠ পুত্র ছিল মাসুদ। বাবা মায়ের বাধ্য সন্তান। প্রেমের নামে টাইম পাস করার জন্য বেছে নিলো সহজ-সরল কিশোরী সাজেদাকে। আবেগে মোড়ানো কিশোরী সাজেদা বাস্তবতা যাচাই বিনা মনপ্রাণ দিয়ে বসলো মাসুদের তরে। বাবা ভাইয়ের আড়ালে চালিয়ে গেল প্রেম। তাদের এই প্রেমের স্থায়িত্ব ছিল একবছর। এক বছরে সাজেদা মাসুদ বলতে
পা গ ল প্রায়। হঠাৎ এলো ঝড়ো দিন। এলোমেলো হয়ে গেল সব। বাবা সবটা জেনে গেল। আদরের কন্যার অধঃপতন মানতে পারলেন না উনি। প্রথমবারের মতো মেয়ের গালে আঘাতের চিহ্ন লেপে দিলেন। সেদিন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল সাজেদা। সাজ্জাদ সাহেব নিজেও অবাক! বাবা এ কি করলো?

বাবা বারবার সতর্ক বার্তা দিতে লাগলো। মাসুদ বড়লোক বাবার বিগড়ে যাওয়া সন্তান। প্রেমের নামে টাইম পাস করে। মেয়েদের খেলনা মনে করে। কিন্তু প্রেমে পা গ ল সাজেদা তা মানতে নারাজ। বাবার বিরুদ্ধে গিয়ে সে মাসুদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে লাগলো। নিরুপায় হয়ে বাবা সাজেদার বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলো। সাজ্জাদ সাহেবের মতামত অবজ্ঞা করে বাবা পাত্র নির্বাচন করলো। পাত্রের নাম রাকিবুল। সে-ও মধ্যবিত্ত। তবে সাজেদাদের চেয়ে কিছুটা উন্নত। পেশায় চাকুরিজীবী। সাজেদা সবটা জানতে পেরে তীব্র প্রতিবাদ জানালো। সে কিছুতেই বিয়ে করবে না। করলে একমাত্র মাসুদকেই করবে। কিন্তু বাবা তা হতে দিলো না। জোরপূর্বক বিবাহের আয়োজন করলো। সমস্ত যোগাযোগ তখন বন্ধ। নিরুপায় হয়ে বিয়ের পূর্ব রাতে সাজেদা আত্মহ*ননের পথ অবধি বেছে নিয়েছিল। তবে ব্যর্থ হলো বড় ভাইয়ের জন্য। সাজ্জাদ সাহেব বোনকে অনেক করে বোঝালেন। সাজেদা নিস্তব্ধ হয়ে সবটা শ্রবণ করলো। কিছু বুঝতে পারলো কি? বোধহয় না।

ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে রাকিবুলের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলো সাজেদা। বিয়ের প্রথম রাতেই স্বামীর ভালোবাসা নামক দেহে সিলমোহর মা রা সয়ে গেল। সেদিন প্রথমবারের মতো অপ্রাপ্তি কেমন তার স্বাদ অনুধাবন করতে পারলো সাজেদা। রাগে ক্ষো’ভে পিতার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করলো। শুধুমাত্র মাঝেমধ্যে ভাইয়ের সঙ্গে কথা হতো। সাজ্জাদ সাহেব তখন অবিবাহিত। নতুন নতুন চাকরিতে যোগদান করেছে। এর পরের সময়টা বুঝি খুবই ধীরে ধীরে কাটলো। সাজেদা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছিল মাসুদের সঙ্গে যোগাযোগ করার। কিন্তু লাভ হচ্ছিল না। মাসুদ তখন মাস্টার্স কমপ্লিট করে অন্যত্র। অবশেষে কাঙ্ক্ষিত দিন এলো। হঠাৎ একদিন শপিংমলে দেখা হলো দু’জনের। আবেগে আপ্লুত হয়ে কেঁদে উঠলো সাজেদা। দু’জনে বসলো এক রেস্টুরেন্টে। কথা হলো অনেকটা সময় ধরে। এতদিনের লালিত স্বপ্ন চোখের সামনে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। মাসুদ তাকে প্রত্যাখান করলো। চার মাসের গর্ভবতী নারীকে কেইবা আপন করবে? মাসুদের মতো চরিত্রহীন তো নয়ই। মাসুদ তখন বিবাহিত। বাবার বিজনেস পার্টনারের মেয়েকে বিয়ে করে দেশ-বিদেশে সফর করে বেড়াচ্ছে। সে সাজেদার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো ‘ ইউ আর ইমপারফেক্ট ফর মি ‘.

গর্ভবতী সাজেদা কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরলো। স্বামী রাকিবুল তা লক্ষ্য করে দিশেহারা হয়ে পড়লো। বারবার জিজ্ঞেস করতে লাগলো কি হয়েছে। সাজেদা কিছু বলতে পারলো না। সেদিন প্রথমবারের মতো স্বেচ্ছায় স্বামীকে আলিঙ্গন করলো। তার বুকে মাথা রেখে দুঃখ নিঃসরণ করতে লাগলো। রাকিবুল সযত্নে স্ত্রীকে আগলে নিলো। এরপর শুরু হলো এক নতুন সূচনা। সাজেদা অনুধাবন করতে লাগলো স্বামী সুখ, সংসারের মহত্ত্ব। মাসুদ নামক প্র*তারককে ভুলে যাওয়ার প্রয়াস চালিয়ে গেল প্রতিটি ক্ষণ। মহান স্রষ্টার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করতে লাগলো। স্বামী সন্তান নিয়ে সুখী হওয়ার দোয়া করলো। অতঃপর এলো মাহেন্দ্রক্ষণ। পৃথিবীর আলো দেখলো জাবির। মাতৃত্বের স্বাদ পেল সাজেদা। সন্তানকে বুকে জড়িয়ে সেদিন খুব কেঁদেছিলো। বাবা তখন কেবিনের বাইরে দাঁড়িয়ে সন্তানের সুখ উপলব্ধি করলো। খুশিমনে চলে গেল সেথা হতে। মেয়ে যে তার সঙ্গে আজো কথা বলে না।

জাবিরের বয়স তখন মাত্র তিন মাস। ইদানিং মনটা কেমন কেমন করে সাজেদার। বাবার কথা বড্ড মনে পড়ে। তার বুকে মাথা রেখে কত কথা বলতে ইচ্ছে হয়। তবে তা আর করা হয় না। নিজেকে পা পী মনে হয়। অনুশোচনায় লজ্জায় বাবার মুখোমুখি হওয়ার সাহস হয় না। তাই তো এতটা দূরত্ব। তবে সে-ই দূরত্ব আর ঘুচলো না। বরং আজীবনের জন্য স্থায়ী হলো। এক সন্ধ্যায় ফোন করলো বড় ভাই। ফোনের ওপাশ হতে দিলো জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদ। আরেক অপ্রাপ্তির স্বাদ। বাবা আর নেই। পিতৃশোকে দিশেহারা সাজেদা হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। লুটিয়ে পড়লো মেঝেতে। ‘বাবা ও বাবা’ চিৎকারে মুখরিত চারিপাশ। মায়ের কান্নায় শিশু জাবিরও জোরে জোরে কাঁদতে লাগলো। ছুটে এলো শাশুড়ি মা। পুত্রবধূর অবস্থা দেখে তৎক্ষণাৎ রাকিবুলকে ফোন করলেন। তড়িঘড়ি করে ছুটে এলো রাকিবুল। এরপর শুরু হলো যন্ত্রণাদায়ক প্রহর। দিন নেই রাত নেই বাবার কবরের কাছে পড়ে থাকতো সাজেদা। অনুশোচনা চিৎকার করে কাঁদতে। কবর খামচে বেড়াতো। মাটিতে মেখে যেতো শরীর, পোশাক। শিশু জাবির বঞ্চিত হতে লাগলো মাতৃস্নেহ হতে। পা’গ’লপ্রায় দশা সাজেদার। সাজ্জাদ সাহেব ঘাবড়ে গেলেন। উনি এবং নববধূ তাহমিদা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত সাজেদাকে আগলে আগলে রাখলেন। বছর লেগে গেল। সাজেদা আস্তে আস্তে একটু স্বাভাবিক হলো। বাবা বিহীন চলতে লাগলো দিন। ধীরে ধীরে পুনরায় সুখে আচ্ছাদিত হলো জীবন। জন্মগ্রহণ করলো কনিষ্ঠ সন্তান তানমি। ভালোবেসে সবাই ডাকতো তানু।

সাজেদার বিবাহিত জীবন তখন এগারো বছর চলছে। আকস্মিক এক দুর্ঘটনায় চূর্ণ বিচূর্ণ হলো সাজেদার সাজানো জীবন। ইন্তেকাল করলেন রাকিবুল। এরপর থেকে শুরু হলো অপ্রাপ্তিময় জীবন। এক জীবনে কাছের মানুষদের হারাতে হারাতে সাজেদা তখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। অসুস্থ। মস্তিষ্কের ওপর পড়েছে বিরূপ প্রভাব। সময়মতো সুচিকিৎসার অভাবে সাজেদা আজ মানসিক রোগী। বাবার আদরের দুলালী, ভাইয়ের প্রাণ সাজেদা আজ মানসিকভাবে অসুস্থ। গোটা দুনিয়ার সামনে হয়তো সে সুস্থ স্বাভাবিক। কিন্তু তার অন্তর, মস্তিষ্ক জানে কতটা অসুস্থ অস্বাভাবিক সে! আপন বড় ভাই, নিজের সন্তানরা অবধি অবগত নয় সাজেদার অবস্থা সম্পর্কে। সব হারাতে হারাতে সাজেদা আজ মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ হারা। নিজের অস্তিত্ব হারা। সর্বহারা সে অসহায় এক নারী!

আজ আর সে হারতে জানে না। যেকোনো মূল্যে নিজের ইচ্ছে পূরণ করতে উদগ্রীব। হোক না তা অসৎ উপায়ে। তবুও প্রাপ্তি চাই তার। আর নয় অপ্রাপ্তি। এখন থেকে শুধু প্রাপ্তি আর প্রাপ্তি।

রাজধানীর নামকরা এক হসপিটাল। খ্যাতিমান-অভিজ্ঞ ডক্টর নিশ্চিত করলেন সাজেদার মানসিক অবস্থা বিপর্যস্ত। স্বাভাবিক নয়। স্তব্ধ হলো পরিবারের সদস্যরা! সাজ্জাদ সাহেব আরেকটু হলেই ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন। তৎক্ষণাৎ ওনাকে আঁকড়ে ধরলেন তাহমিদা। সকলের চোখেমুখেই অবাকের রেশ! নোনাজলে ভরপুর আঁখি। তানু ভাইকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো। জাবির দিশেহারা বোধ করছে। গণ্ডস্থল শুকিয়ে কাঠ। এক সমুদ্র পানি পান করলে মিটবে কি তৃষ্ণা? তার যে চিৎকার করে খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু ছেলেদের তো কাঁদতে মানা। এটা যে তাদের বৈশিষ্ট্য বিরুদ্ধ। তবে কি করে সে মেটাবে অন্তরের জ্বালা? কি করে প্রকাশ করবে সমস্ত যন্ত্রণা? কি করে…?

অতিবাহিত হলো বেশ কিছুদিন। সাজেদা এখন ভাইয়ের বাসায় থাকে। তার সুচিকিৎসা চলছে। জাবির এবং তানুও মামার আদেশ রক্ষার্থে মামার বাসায় থাকে। তাদের সকলের এখন একটাই প্রার্থনা। সাজেদার আরোগ্য লাভ!

তমস্র রজনী। প্রেমিক পুরুষটির হৃদয়ে ঝড় উঠেছে মাইরা’র ক্রন্দনে। কি করে সে দূরীকরণ করবে এই ঝড়?

চলবে.

[ কেমন লাগলো পর্বটি? মন্তব্য আশা করছি। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here