তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম #তাহিরাহ্_ইরাজ #পর্ব_৩২

0
617

#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৩২

উন্মুক্ত বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দুয়া। গাত্রে ছুঁয়ে যাচ্ছে শীতল পবন। ঠাণ্ডায় হিম হয়ে আসছে সারা কায়া। তবুও মেয়েটি নড়লো না। তার দৃষ্টি নিবদ্ধ সম্মুখে। পাহাড়ের কোলে। দূর হতে দেখা যাচ্ছে পাহাড়ের অবয়ব। নীলাভ সে অবয়বের নিম্ন দিকে সবুজের সমারোহ। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে জনপদ। অসংখ্য ঘরবাড়ি। এত কাছ থেকে পাহাড় দেখতে পেয়ে বিমোহিত দুয়া! চক্ষু ফেরাতে ব্যর্থ। হঠাৎ তার মুগ্ধতায় ব্যাঘাত ঘটলো। কাঁধে পেল শীতলতম পুরুষালি স্পর্শ। এতক্ষণে বুঝি শীতের প্রকোপ অনুভূত হলো। শিরশির করে উঠলো দেহ। তড়িৎ পিছু ঘুরে তাকালো সে। তূর্ণ দাঁড়িয়ে। গোসল সেরে এখানে হাজির। সদ্য স্নাত একান্ত মানুষটির নৈকট্যে নাসিকা গ্ৰন্থিতে প্রবেশ করছে মা`তাল করা সুবাস! পড়নে তার হালকা সবুজাভ ফুল স্লিভ গ্ৰাফিক প্রিন্ট সোয়েট শার্ট। ভেজা চুলে চিকচিক করছে বিন্দু বিন্দু জলকণা। গৌর মুখশ্রী দেখাচ্ছে আরো শুভ্র-সতেজ! স্নিগ্ধতা বিরাজমান রন্ধ্রে রন্ধ্রে। নিজের ওপর কাবু হারিয়ে ফেলছে মেয়েটি। নিভু নিভু করছে মায়াময় আঁখি জোড়া। ক্রমবর্ধমান ধুকপুকানি শ্রবণ হচ্ছে শ্রবণ ইন্দ্রিয়ে। হঠাৎ ছ’লকে উঠলো হৃৎপিণ্ড। ওর বাঁ কপোলে শীতল হাতটি রেখেছে তূর্ণ। নয়নে নয়ন মিলিয়ে শুধালো,

” ভালো লাগছে? ”

মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় হাঁ সূচক মাথা নাড়ল মেয়েটি। তূর্ণ মুচকি হেসে এগিয়ে এলো সন্নিকটে। অধরের ছোঁয়া অঙ্কন করলো দু ভ্রুয়ের সন্ধিস্থলে। আবেশ মুদিত হলো মেয়েটির নেত্রজোড়া। তূর্ণ মৃদু স্বরে বললো,

” ফ্রেশ হয়ে নাও। এতটা পথ জার্নি করে এসেছো। গা চিটচিট করবে‌। যাও। ”

চোখ মেলে তাকালো দুয়া। লজ্জা মিশ্রিত হেসে তূর্ণ’র সান্নিধ্য হতে বেরিয়ে এলো। পা বাড়ালো কক্ষের দিকে।

নিজস্ব কক্ষে মুখোমুখি বসে নিজাম সাহেব এবং তাসলিমা। তাসলিমা সরু চোখে তাকিয়ে স্বামীর পানে।

” তূর্ণ ফোন করেছিল। আমার সাথে কথা বলালে না কেন? ”

নিজাম সাহেব বোকা হেসে বললেন,

” ও-ই…! তূর্ণ বলেছে। ও বলেছে আম্মু যখন কাজ করছে। ডিস্টার্ব করো না। ও পরে ফোন করবে। ”

তাসলিমা অসন্তুষ্ট কণ্ঠে বললেন,

” ছেলেটা আমার চৌদ্দ ঘন্টার বেশি জার্নি করে ভিনদেশে গেল। এরপর কল করলো আরো কতক্ষন পরে। মা’কে খুঁজলো। অথচ তুমি দিলে না? তুমি জানতে না আমি ওর সাথে কথা বলার জন্য কতটা উদগ্রীব হয়ে আছি? ”

নিজাম সাহেব স্ত্রীর কাঁধে হাত রেখে শান্ত করার চেষ্টা করতে করতে বললেন,

” রাগ করো না লিমা। ওরা বোধহয় এখন রেস্ট করছে। তাই কল রিসিভ করছে না। তূর্ণ বলেছে তো। ও ঠিক তোমায় কল করবে। দেখে নিও। ”

তাসলিমা সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। উদাস বদনে বিছানা ত্যাগ করে উঠে দাঁড়ালেন। নিজাম সাহেব একাকী বিড়বিড় করতে লাগলেন,

” মমতাময়ী মা তো। সবটাই বেশি বেশি। রাগ, অভিমান, ভালোবাসা। তূর্ণ বাপ আমার। আব্বুকে বাঁচা। ”

মধ্যাহ্ন প্রহর। তাসলিমা এবং তাহমিদা’র সঙ্গে ফোনালাপ সেরে তূর্ণ এসে বসলো বিছানায়। দুয়া তখনো সোফায় বসে কথা বলে চলেছে। ফোনের অপর প্রান্তে দুই মা।

” হাঁ আম্মু। তুমি চিন্তা করো না। ”

তাহমিদা বললেন, ” চিন্তা কি আর সাধে করি? তোমাকে নিয়েই তো যত রাজ্যের চিন্তা। ”

দুয়া গাল ফুলালো।

” উফ্ আম্মু। আমি কি ছোট বাচ্চা? আমি এখন ভার্সিটি পড়ুয়া। দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছি। কিন্তু তুমি এখনো আমাকে সে-ই প্রাইমারী পড়ুয়া দুয়া’র মতো ট্রিট করো। আমি শিশু নই। ”

তূর্ণ বিছানায় বসে হাসলো। তাসলিমা ফোনের অপর প্রান্ত হতে বললেন,

” ছেলেমেয়ে যত বড়ই হোক না কেন দুয়া। মায়ের কাছে ছেলেমেয়েরা সবসময় ছোটই থাকে। ”

” হুঁ। যেমন তোমার বিগ সাইজ সোনাবাবু। ওপস্। বাবু সোনা।”

বলেই ফিক করে হেসে উঠলো দুয়া। তূর্ণ তীক্ষ্ণ চাহনি নিক্ষেপ করলো। তাকে নিয়ে মজা করা হচ্ছে? তাহমিদা হেসে বললেন,

” এই মেয়ে। আমার জামাই বাবাজিকে নিয়ে দুষ্টুমি করবে না।”

” ঠিক আছে। তুমিও আর আমার মামণির মেয়েকে বাচ্চা বলে বিদ্রুপ করবে না। ওকে? ”

দুই বোন একসাথে হেসে উঠলো। তাহমিদা বললেন,

” ঠিক আছে মা। এখন তাহলে রাখছি। আল্লাহ্’র রহমতে ভালো থেকো। সাবধানে থেকো। ”

তাসলিমা পাশ থেকে বললেন,

” যা যা বললাম মনে থাকে যেন। ঠিক আছে? ”

দুয়া মুচকি হেসে বললো, ” ঠিক আছে। রাখছি। আসসালামু আলাইকুম। ”

” ওয়া আলাইকুমুস সালাম। ”

সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলো। দুয়া গোলাকার ছোট্ট টি টেবিলের ওপর মোবাইল রেখে উঠে দাঁড়ালো। পড়নে তার ধূসর বর্ণের লেডিস ফুল স্লিভ সোয়েটার এবং শুভ্র রঙা লেগিংস। অগ্রসর হলো বেডের পানে। তূর্ণ ততক্ষণে শুয়ে পড়েছে। দুয়া রুম হিটার সঠিকভাবে সেট করে বিছানায় শয্যা গ্রহণ করলো। তূর্ণ’র কাছ হতে ব্ল্যাংকেট নিয়ে দেহে জড়ালো। তৎক্ষণাৎ আ`ক্রমণ করে বসলো তূর্ণ। ব্ল্যাংকেটের অভ্যন্তরে তূর্ণ’র আষ্টেপৃষ্ঠে বন্দিনী হলো দুয়া। ছটফট করে উঠলো মেয়েটা।

” উঁহু হুঁ। কি করছো? দম বন্ধ করে মে রে ফেলবে নাকি? ছাড়ো বলছি। ”

” নাহ্! তোকে তো আমি আষ্টেপৃষ্ঠে পি`ষেই ক্ষ্যা ন্ত হবো। আমাকে নিয়ে মজা করা? আমি বাবুসোনা? ”

সশব্দে হেসে উঠলো দুয়া। অর্ধাঙ্গের ডান বাহুতে মাথা রেখে আরাম করে শুলো। হাসিমুখে বললো,

” ইয়েস। মামণির বিগ সাইজ বাবুসোনা। ”

” আচ্ছা? তাহলে তো প্রমাণ করতেই হচ্ছে আমি বাবুসোনা কি না? ”

ভাবসাব সুবিধার ঠেকছে না। দুয়া তৎক্ষণাৎ আপত্তি জানালো।

” এই না না। একদম না। আমি প্রমাণ চেয়েছি নাকি? ”

তূর্ণ দাঁত কেলিয়ে হাসলো। বললো,

” কিন্তু আমি যে প্রমাণে বিশ্বাসী। তাহলে প্রমাণ দেয়া যাক? ”

নিভু নিভু মেয়েটির নেত্রপল্লব। মাথা নাড়িয়ে আপত্তি পোষণ করে চলেছে। কিন্তু তা শুনলো কি মানুষটি? মোটেও নয়। মেয়েটিকে চরমভাবে ভীতসন্ত্রস্ত করে আকস্মিক পাল্টি খেলো। সুড়সুড়িতে জর্জরিত করে তুললো কোমল কায়া। খিলখিল করে হেসে উঠলো দুয়া। উদরে পুরুষালি হাতের দুষ্টু ছোঁয়ায় অবর্ণনীয় সুড়সুড়ি অনুভূত হচ্ছে। দু হাতে বারবার বাঁধা প্রদান করার চেষ্টা করে চলেছে। কিন্তু ব্যর্থ সে। তূর্ণ থেমে নেই। মেয়েটিকে সুড়সুড়িতে অতিষ্ঠ করে তুললো। দুয়া যতবার তার বাহুবন্ধন হতে মুক্ত হতে চাইলো। ততবার ই আরো আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিলো। শেষমেষ থামলো মানুষটি। হাসতে হাসতে দুয়া’র চোখে নোনাজল। কেঁপে কেঁপে উঠছে কায়া। তূর্ণ নিজেও হাঁপাতে হাঁপাতে হেসে চলেছে। হাসতে হাসতে তাকালো তার বাহুতে শায়িত একান্ত সঙ্গিনীর পানে। নয়নে মিলিত হলো মায়াবী নয়ন। হলো কত অব্যক্ত আলাপণ! অতিবাহিত হলো কত প্রহর। কপোলের কোমল আবরণে ওষ্ঠ ছুঁয়ে দিলো তূর্ণ। মিহি স্বরে বললো,

” ঘুমিয়ে পড়ো। ”

অপরাহ্ণ প্রহর। অসংখ্য পুষ্প সমারোহের সান্নিধ্যে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে তূর্ণ, দুয়া। হলদে রঙা ফুলগুলো যেন অতি মোহনীয় ভঙ্গিতে কাছে ডাকছে। একটুখানি ছুঁয়ে দেয়ার জন্য, স্বল্প পুলকিত হওয়ার জন্য উদগ্রীব মন। আর তর সইলো না মেয়েটির। ধীরগতিতে ঝুঁকে বসলো। হাতের কোমল আবরণে ছুঁয়ে গেল হলদে রঙা ফুলটি। ফুলেল সান্নিধ্যে আবেশিত হলে তনুমন। মুদিত হলো নেত্রপল্লব। আরেকটুখানি ঝুঁকে গেল দুয়া। নাসিকা গ্ৰন্থিতে শুষে নিলো ফুলেল সুবাস। অফুরন্ত ভালবাসা আষ্টেপৃষ্ঠে জাপটে ধরলো। সে মোহনীয় মুহূর্ত ক্যামেরা বন্দি করতে ভুললো না তূর্ণ। ফটাফট মোবাইলে বন্দি করে নিলো মুহুর্তটুকু। মেয়েটির অধর কোণে মাধুর্যময় হাসির রেখা। তূর্ণ সেথায় বিমোহিত হলো!

নীলচে জলের এক প্রান্তে পথ। সেথায় পথের ধারে অগণিত ফুলের সমারোহ। আরেক প্রান্তে দেখা মিলছে ক্যাসেল এর। তূর্ণ, দুয়া এই মূহুর্তে উপভোগ করে চলেছে লেক জেনেভা এর সৌন্দর্য।

লেক জেনেভা; আল্পসের উত্তর দিকে একটি গভীর হ্রদ। যা সুইজারল্যান্ড এবং ফ্রান্সের মধ্যে ভাগ করা হয়েছে। এটি পশ্চিম ইউরোপের বৃহত্তম হ্রদগুলির মধ্যে একটি এবং রোনের পথে বৃহত্তম। হ্রদের ষাট শতাংশ ( ৩৪৫.৩১ কিমি বা ১৩৩.৩২ বর্গ মাইল) সুইজারল্যান্ড এর ( ভাউড, জেনেভা এবং ভ্যালাইসের ক্যান্টন ) এবং চল্লিশ শতাংশ ( ২৩৪.৭১ কিমি বা ৯০.৬২ বর্গ মাইল ) ফ্রান্সের ( হাউট-সাভোই বিভাগ )।

গোধূলি লগ্নের মিঠি আবহাওয়ায় পুলকিত হৃদয়। পুরুষালি হাতের মুঠোয় বন্দী কোমল হাতটি। পাশাপাশি হেঁটে চলেছে দু’জনে। উপভোগ করছে লেক জেনেভা অপার সৌন্দর্য! কখনো কখনো তূর্ণ হাতের ইশারায় কিছু দেখিয়ে দিচ্ছে। মুগ্ধ নয়নে তা অবলোকন করছে দুয়া। এমন নয়ানাভিরাম সৌন্দর্যের মাঝে এক জোড়া কপোত-কপোতী। একান্ত মানুষটির সান্নিধ্য, সঙ্গে ভিনদেশী সৌন্দর্য। এ যেন এক অবর্ণনীয় সুখময় মুহূর্ত!

রবির কিরণে আলোকিত বসুন্ধরা। রাস্তা ধরে এগিয়ে চলেছে গাড়িটি। চালকের পাশের সিট শূন্য। পেছনে বসে তিন বান্ধবী। তৃষা, পুষ্পি এবং বিন্দু। সিনেপ্লেক্স হতে ফিরছে তারা।

” দোস্ত মুভিটা কিন্তু জোশ ছিল। ” প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিন্দু।

পুষ্পি বিমোহিত কণ্ঠ বলে উঠলো,

” হিরোটা যা ছিল না! উফ্। খাতারনাক্! হৃদয় কেড়ে নিলো আমার। ”

তৃষা ও বিন্দু মিটমিট করে হাসছে। তৃষা প্রশ্ন করে বসলো,

” তা বান্দুপি! সে তোমার হৃদয় কয় নম্বরে গিয়ে কেড়ে নিলো? ”

পুষ্পি ঘোরের মধ্যে বললো, ” একশো সত্তর। ”

তৃষা ও বিন্দুর চোখ কপালে। একশো সত্তর! লাইক সিরিয়াসলি! বিন্দু ওর বাহুতে চাপর মে রে বললো,

” লু চি মাইয়া! এত ক্রাশ খাস। খাইতে খাইতে তোর হৃদয় তো ভরাট। শেষমেষ জামাইরে কই জায়গা দিবি? হৃদয়ের বাইরে? ”

ফিক করে হেসে উঠলো তৃষা। তাতে ঘোর কেটে গেল পুষ্পির।

” কি বললি তুই? ” পুষ্পি সরু চোখে তাকিয়ে।

তৃষা হাসতে হাসতে বললো,

” তোর জামাইয়ের দুর্দশার কথা কইছে। অভাগা দুলাভাই আমগো। তোর হৃদয়ে জায়গা না পাইয়া শেষমেষ না কিডনিতে চলে যায়। ”

সশব্দে হেসে উঠলো বিন্দু। পুষ্পি রাগে গজগজ করে দু’জনকে মা|রতে লাগলো। হঠাৎ ব্রেক কষলো চালক। হকচকিয়ে গেল তিনজন।

” আংকেল! কি হয়েছে? ” প্রশ্নবিদ্ধ চাহনিতে তাকিয়ে তৃষা।

” মা। সামনে বোধহয় এক্সিডেন্ট হয়েছে। ”

” এক্সিডেন্ট! ”

বিচলিত হলো তিনজন। তৃষা শুকনো ঢোক গিলে সাহস সঞ্চয় করলো। গাড়ির দ্বার খুলে বেরিয়ে এলো। দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো অযাচিত স্থানে। আত্মা কেঁপে উঠলো। গাছের সঙ্গে বি*ধ্বস্ত একটি গাড়ি। সম্মুখের কাঁচ ভে ঙ্গে গেছে‌। ভেতরে থাকা মানুষটি দৃষ্টিসীমার বাহিরে। মেয়েটির কোমল হৃদয় ভীত হলো। সামনে যে এগোবে। সাহায্যের হাত বাড়াবে। সেটুকু বোধ অবধি হারিয়েছে। হঠাৎ কাঁধে হাতের স্পর্শ পেলো। ভাবনাচ্যূত হলো।

” কি হলো? দাঁড়িয়ে আছিস কেন? চল গিয়ে দেখি। হয়তো আমাদের সাহায্যের দরকার। ”

বিন্দুর কথায় সম্মতি পোষণ করলো পুষ্পি। দুই বান্ধবী তাড়া দেয়ায় তৃষা ছোট ছোট কদম ফেলে অগ্রসর হতে লাগলো। যত এগোচ্ছে বুকের মধ্যিখানে ঢিপঢিপ করছে। কেমন একটা অনুভূত হচ্ছে। কোনোমতে নিজেকে সামলিয়ে তৃষা দু|র্ঘটনার শিকার গাড়ির কাছে গেল। পৌঁছালো চালকের স্থানে থাকা মানুষটির জানালার ধারে। গাড়ির কাঁচ অর্ধনমিত। তাতে সুবিধাই হলো। একটু ঝুঁকে ভেতরে তাকালো তৃষা। স্টিয়ারিংয়ে ঠেকে আহত মানুষটির মাথা। মুখখানা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু কেমন চেনা চেনা লাগছে। তৃষা অতকিছু না ভেবে স্রষ্টার নাম স্মরণ করলো। অর্ধনমিত জানালা দিয়ে গলিয়ে দিলো হাতটি। গাড়ির লক খুলতেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। ততক্ষণে পাশে এসে দাঁড়ালো দুই সখী। তৃষা তাদের ড্রাইভারকে ডাকলো। পুরুষ মানুষ তো। হাত লাগাতে কেমন অস্বস্তি বোধ হচ্ছিল। তাই ড্রাইভার এলো। আহত মানুষটির মুখ স্টিয়ারিং হতে সরিয়ে সিটে এলিয়ে দিলো। তখন দৃশ্যমান হলো মুখখানা। হতভম্ব হলো তৃষা। কণ্ঠনালী হতে অস্ফুট স্বরে বেরিয়ে এলো,

” নিশাদ ভাইয়া! ”

চলবে.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here