#দাম্পত্য_জীবন
#মেহু_আপু
#পর্ব_04
আকাশ রুমে ঢুকে মন খারাপ করে তখন নীলা জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে আপনার। লিটন সাহেব বলে মন খারাপ কেনো বাবা? তখন আকাশ মুচকি হাসি দিয়ে বলে কিছু হয়নাই বাবা। রিসেপশনের সব লোক এসে গেছে আপনি নিচে যান আমরা আসতেছি
লিটন সাহেব ঠিক আছে বলে নিচে চলে যায়
নীলা জিজ্ঞেস করে কিছুতো হয়েছে আপনার আড়াল করতেছেন। তখন আকাশ বলে কি নিয়ে পড়লা আমাকে নিয়ে তোমার ভাবার সময় আছে সবটা তো লোক দেখানো আচ্ছা পরিপাটি হও নিচে যেতে হবে।
নীলা তখন মনে মনে বলে আমি আপনাকে আগেই কিছু বলতে চাইনা আকাশ। আমায় আগে হামজার সাথে দেখা করতে হবে ও ক্যান আমার সাথে এরকম করলো আমাকে জানতে হবে তারপর আপনাকে সব বলবো?
আকাশ তখন তুড়ি বাজিয়ে বলে কি হয়েছে নীলা কি ভাবছো তুমি?
নীলা বলে কই কিছু নাতো আপনি চেঞ্জ করেন আগে আমি বাইরে যাচ্ছি।
আকাশ বলে আচ্ছা যাও। নীলা বাইরে গেলে আকাশ নীলার বাবার দেওয়া উপহার গুলো পড়ে রুম থেকে বের হয়।
নীলা আকাশকে আজকে ভালোভাবে লক্ষ্য করে মনে মনে বলে ছেলেটা আসলেই শারুখ খানের মতো 🙈 মুচকি হাসি দেয় নীলা।
আকাশ বলে আমাকে ভালো লাগছে না নীলা।
নীলা বলে পারফেক্টলি লাগছে আচ্ছা আপনি একটু দাড়ান আমি চেঞ্জ করি আসছি নিচে এক সঙ্গে যাবো দুজনে।
নীলা রুমে আসে তারপরে সুন্দর একটি গোল্ডেন কালারের শাড়ি আর সুন্দর একটা মেকাপ লুকস নিয়ে বাহির হয়।
আকাশ নীলাকে এইভাবে দেখে নতুন করে আবার ক্রাস খায়। আকাশ মনে মনে বলে ইচ্ছে করছে জোড় করে তোমার কাছ থেকে ভালোবাসা আদায় করি কিন্তু তুমিতো অন্যজনকে ভালোবাসো শেষ পরিণতি কষ্ট ছাড়া কিছু হবেনা। এরপরে আকাশ নীলাকে বলে দারুণ মানিয়েছে তোমাকে 🤭
নীলা বললো চলেন যাই। এই বলে নীলা আকাশের হাত ধরলো। আকাশ শুধু অবাক হয়ে বললো কি করছো তুমি? নীলা বললো বাইরের লোককে তো দেখাতে হবে আমরা দুজন স্বামী স্ত্রী ওদের সামনে দূরে দূরে থাকলে হয়। আকাশ বললো ও আচ্ছা এই বলে দুজনে হাত ধরাধরি করে নিচে আসলো।
সবাই হা হা করে দেখছে আকাশ আর নীলাকে। সবাই বলাবলি শুরু করছে আকাশ sir আর নীলা mem খুব মানিয়েছে। উপর আল্লাহ এদের জুটিকে নিজ হাতে বানিয়েছে। অনেক লোক বলছে এদের দেখে বুঝাই যাচ্ছে না এদের গতকাল বিয়ে হয়েছে। মনে হচ্ছে দুইজন দুজনকে আগে থেকে চিনে।
রিয়া এসে নীলাকে আকাশের হাত থেকে টান দিয়ে সরিয়ে বলে কিরে তোর কি হলো এক রাতে দেখি জামাইবাবু কে নিজের সাথে আটকে নিয়েছিস। শরম করে না তোর। নীলা বললো কিসের শরম। রিয়া বললো জানিস হামজার ব্যাপারটা যাকে তুই ভালোবাসতিস সে একটা চিটার। নীলা বললো এই ব্যাপারে কথা শুনতে চাইনা রিয়া।
আকাশের কাছে এসে তার কাজিন ইমরান বলে ভাইয়া তুইতো সেই পরী পেয়েছিস। ভাবীকে আমার হেব্বি লেগেছে। এক রাতেও গোল করে দিয়েছিস। তখন আকাশ বলে কিসব বলছিস। ইমরান বললো তোরা ফুটবল খেলে গোল দিতেছিস আর আমি বললে তোদের শরম করে!
আকাশ বললো ইমরান থাম ভাই! অফিসের লোকেরা আসছে। আকাশ নীলাকে ইশারা করে কাছে নিয়ে আসলো এরপরে অফিসের সব লোকেরা একে একে আসতেছে আর নীলা আকাশকে অভিনন্দন বলছে।
আকাশের অফিসের মেয়েরা আসে নাই কেউ এইটা দেখে আকাশ বলে ম্যানেজার গাজী শুনোতো।
গাজী মিয়া বললো বলুন স্যার। আকাশ বললো আচ্ছা মেয়েরা কেউ আসে নাই ক্যান আমি না বলছি সবাইকে আসতে। গাজী মিয়া বললো ওরা কিভাবে আসবে স্যার। এতদিন ছিলেন আপনি ওদের ক্রাস আর এখন কিভাবে ক্রাসের বিয়ে এটেন্ড করবে। এই বলে জিহ্বায় কামড় দেয়। আকাশ বললো ইস্টুপিট কোথাকার যাও এখান থেকে। নীলা এসব কথা শুনে মন খারাপ করে। আকাশ বলে মজা করছিলো নীলা ম্যানেজার। নীলা তখন বললো ম্যানেজারের সাথে আপনার হাসির সম্পর্ক নাকি যে মজা করবে। আকাশ বলে কি যে বলো না তুমি। তখন নীলা বলে পাস্ট ইস পাস্ট আগে কি হয়েছে এসব মনে রাখার দরকার মনে করিনা। তখন আকাশ মনে মনে বলে তাহলে তোমার পাস্ট টা ভূলে আমাকে আকড়ে ধরো নীলা খুব ভালোবাসা দিবো তোমাকে। নীলা বললো আমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবেন না। আকাশ বললো হুম চলো করিয়ে দিচ্ছি।
আকাশ তার চাচার কাছে নিয়ে গেলো বললো ইনি আমার একমাত্র চাচা শুকর চৌধুরী আর ইনি তার স্ত্রী সায়লা চৌধুরী। নীলা আসসালামু আলাইকুম। শুকর আর সায়লা চৌধুরী নীলাকে দোয়া করে দিলো। সৌভাগ্যবতী হও মা। এরপরে আকাশ তার অফিসের লোকদের চিনিয়ে দিলেন। এরপরে আকাশের চাচতো ভাই ইমরান এসে বললো ভাবি আমি আপনার ছোট দেউর একমাত্র শুধু মাত্র ভাইয়ার দিকে নজর রাখলে হবেনা আমার দিকেও নজর রাখতে হবে। নীলা তখন বলে সবে মাত্রতো এলাম এখনো ভালো করে কিছু চিনে উঠতে পারলাম না নাহলে তোমার দিকেও নজর রাখতাম এই বলে চোখ টিপি দেয়। এসব দেখে ইমরান বলে ভাইয়া ভাবীটা একের। আকাশ বলে তুই যা তো এখান থেকে।
এরপরে আকাশ আর নীলা উপরে চলে আসে।
ইশান লোকদের ভালোভাবে খাওয়া দাওয়া দেয়। পরিবেশন ঠিক মতো হচ্ছে কিনা তা দেখাশুনার দায়িত্ব নেয় ইশান আর ইমরান। সবাই ঠিকমতো খেয়ে দেয় দম্পতির জন্য দোয়া করে চলে যায়।
রিয়া আর কেয়া যেয়ে ইমরানের সাথে কথা বলে হায় আমি রিয়া আর আমি কেয়া। ইমরান তখন ভাব দেখিয়ে বলে তো আমার কাছে কি চান শালীকারা।
রিয়া আর কেয়া চিৎকার বলে কি আমরা আপনার শালী, এতো বড় সাহস। ইমরান বলে আকাশ ভাইয়ের শালীতো আমারো ও শালী তো এইখানে ভূল কি বললাম।
ইশান এসে বলে কেয়া, রিয়া সরি আমার ছোট ভাইটা এইরকম মিশুক প্রকৃতির। তোমরা কিছু মনে কইরো না এই বলে ইমরানের কান ধরে টেনে নিয়ে যায়। ইমরান বলে ভাইয়া কি করছো ওদের সামনে আমার মান সম্মানের ফেলুদা করে দিলা।
রিয়া আর কেয়া হাসতে থাকে আর বলতে থাকে বেডা ঠিক হয়েছে আমাদের সাথে পাকনামি 😁
রিয়া কেয়াকে বলে উঠে এদের বাড়ির ছেলে গুলো অনেক ভালো রে। দেখছিস না আমাদের জামাইবাবু একদিনে ক্যামনে আমাদের নীলাপুকে পটিয়ে ফেলছে। বাড়িটাও অনেক সুন্দর রে ছাদ টা অনেক সুন্দর। তখন কেয়া বলে মা*ঘী চুপ কর ওই দেখ ইশান ভাইয়ের বউ আসছে।
উষশী এসে বলে তো কেয়া, রিয়া এইখানে কেনো তোমরা চলো বসি গিয়ে। কেয়া বললো ভাবী আপনি বসেন আমরা দুজন একটু আপুর রুমে যাবো। উষশী বললো আচ্ছা তাহলে যাও।
নীলার রুমের দরজা নক করে কেয়া আর রিয়া। আকাশ যেয়ে দরজা খুলে দেয়। আরেহ্ শালিকা যে আসো আসো ভিতরে আসো। রিয়া বলে কি হলো আকাশ ভাই একদিনে যে আমাদের বোনকে পর বানিয়ে দিলেন। কি এমন জাদু করলেন বলেন তো। নীলা তখন বলে উঠে আরেহ কি বলছিস তোরা চুপ থাক তোরা ঘুরতেছিলি তাই তোদের ডাকিনি। রিয়া বললো বুঝি বুঝি সবই সবই বুঝি আর বলতে হবেনা বিয়ের পর সব বোন গুলা এরকম হয় ঢংগীর স্বরে 😉
আকাশ বললো তোমাদের বোনকে ছোঁয়ার ও সাধ্য নেই আমার। আর তোমরা বলছো পর করে দিলাম। রিয়া বললো ক্যান আপু আপনাকে কিছু করেছে ভাইয়া অভিযোগ থাকলে বলেন। নীলা তখন বললো তোরা থামতো ও বলে কি আর বুঝিস অন্যটা। আকাশ বললো তো তোমরা খেয়েছো। রিয়া,কেয়া বললো হুম খাইছি। নীলা বললো আম্মুকে ঔষধ ঠিক মতো দিসরে? রিয়া,কেয়া বললো তোমাদের এইসব বিষয়ে টেনশন করতে হবেনা আমরা আছি।
রিয়া কেয়া বললো এখন বের হোন জামাই বাবু আমাদের ও বাড়ি যেতে হবে। আকাশ বললো আমাকেও যেতে হবে তোমাদের বোনকে নিয়ে গেলে হয়না। রিয়া বললো মানুষ নতুন বউয়ের পিছনে পিছনে ঘুড়ে আর আপনি এইরকম বলছেন তাহলে কিন্তু বউয়ের ভালোবাসা পাবেন না। নীলা বললো তোরা সবসময় বেশি কথা বলিস তোরা এখান থেকে বেড় হ, আমরা বেড়োচ্ছি।
রিয়া আর কেয়া নিচে আসে। লিটন সাহেব আজগর চৌধুরীর সবাইকে দাওয়াত দেন, যেতে বলে। আজগর বলে আত্নীয় যেহেতু হয়েছি দাওয়াত লাগবে না যখন ইচ্ছে তখনিই যাবো
আকাশ আর নীলা নিচে আসে। আজগর চৌধুরী বলে আকাশ তাড়াতাড়ি ফিরে আসিয়ো দুদিন থেকে অফিসে যাও না। ইশান তখন বলে বাবা আমি চালিয়ে নিবো ও কয়দিন ছুটিতেই থাকুক। আকাশ তখন বলে না ভাইয়া ক্লাইন্ট মেটিং আছে আমাকে অফিসে যেতে হবে। ইশান বললো আগে ওই বাড়ি যাও তারপর অন্যসব চিন্তা ভাবনা পরে করা যাবে। নীলা সবাইকে সালাম দেয়। সবাই বলে মা তাড়াতাড়ি এসো। আজগর চৌধুরী বলে আকাশ ও বাড়িতে যেয়েই ফোন দিয়ো।
নীলার বাবার গাড়িতে কেয়া, রিয়া, আকাশের কাজিন ইমরান ও লিটন সাহেব যায়
আকাশ তার গাড়ি করে নীলাকে নিয়ে তাদের বাড়ি যায়,,
#চলবে
[ভূল ত্রটি মার্জনীয় গল্পটা প্লট আকারে সাজাচ্ছি তাই কিছু মনে করিয়েন না HAPPY READING ]