#Life _Game
পর্ব – ১২/ অন্তিম পর্ব
#writer_rukaiya_rakhi
শ্রাবণী কিছুক্ষণ হিং*স্র ভাবে তাকিয়ে থাকে আজাদ খানের দিকে। তারপর বলে
– জানো তোমার এই চেহারা দেখলেই আমার ঘৃনা হচ্ছে। এই বেঈ*মানের চেহারা নিয়ে ক্যামনে তাকিয়ে আছ তুমি। কিন্তু আমি তো এই চেহারা আস্ত থাকতে দিবো না!
শ্রাবণী চাকুটা আজাদ খানের ঠোঁ*টের কাছে নিয়ে যায়। তারপর চা*কু দিয়ে ঠোঁট কা*টতে শুরু করে। এইদিকে আজাদ খানের তো জা*ন বের হয়ে যেতে চাচ্ছে। কিন্তু না তিনি বেঁচেই আছেন। শ্রাবণী ধীরে ধীরে তার উপরের ও নিচের ঠোঁট কে*টে ফেলে। ভিতরের দাতগুলো দেখা যাচ্ছে। কি বিভ*ৎস সেই দৃশ্য । যে কেউ দেখলে অ*জ্ঞান হয়ে যাবে। কিন্তু শ্রাবণীর কিছুই মনে হয় না। কারণ সে প্রতি*শোধ এর নেশায় পাগল হয়ে গেছে। শ্রাবণী কিছু সময় আজাদ খানের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে । এ যেনো বেঈ*মানের চোখ। আর সহ্য করতে না পেরে চা*কু দিয়ে চো*খ দুটো উপরে ফেলে সে। তারপর সারা শরী*রে মরিচের গুঁড়া লাগিয়ে দেয়। গ*লা কাটা মুরগির মতো ছট*ফট করে যাচ্ছেন আজাদ খান। আর এইদিকে শ্রাবণী পাগলের মত হেসে যাচ্ছে। সে যেনো ভারী মজা পাচ্ছে। এক সময় হাসি থামিয়ে বলে
– বড্ড ছট*ফট করছো কিন্তু চাচ্চূ! এটা কিন্তু ঠিক না। এত আদর যত্ন করলাম আর তুমি? ঠিক আছে যাও আর ভালোবাসবো না তোমায়। আরি তোমার সাথে! হুহ!
শ্রাবণীর কথা টা বলতে দেরি কিন্তু শু*ট করতে দেরি হয় নি। একদম আজাদ খানের মাথা বরাবর শু*ট করে দেয় শ্রাবণী।। আজাদ খান এতক্ষণে চুপ হয়ে যান।
শ্রাবণী কাদতে কাদতে ফ্লোরে বসে পড়ে। তারপর গগন ফাটানো চিৎ*কার দিয়ে ওঠে। যেনো তার চিৎ*কারে পুরো পৃথিবী শে*ষ হয়ে যাবে। কতটা কষ্ট জুড়ে আছে এর মধ্যে!
– আহহহহ!! আমি তো এমন টা চাইনি ! এমন টা চাইনি আমি। তোমাকেও মারতে চাইনি । কিন্তু তোমার জন্যই এমন টা হলো।
উপরের দিকে তাকিয়ে
– বাবা তুমি শুনছো? দেখো আমি প্রতি*শোধ নিয়েছি। আজ থেকে তোমার আর কোনো কষ্ট হবে না। তুমি মুক্ত বাবা।
————–
একটা পাহারের উপত্যকায় দাড়িয়ে আছে শ্রাবণী আর আদিত্য।শ্রাবণী পাহাড়ের একদম চূড়ার কাছে দাড়িয়ে চারপাশ টা ভালো করে দেখছে। আর বলছে
– আদিত্য জানো আজ আমি অনেক খুশি। বহু বছর পর নিজেকে হাল্কা মনে হচ্ছে । শেষমেশ আমার প্রতি*শোধ নিতে পেরেছি। এখন আমি আর ৫ টা মেয়ের মত বাঁচতে পারব!
– কিন্তু আমার প্রতিশোধ নেয়া তো এখনও বাকি আছে শ্রাবণী!
– ও হে ! তুমি তো আমায় বলেছিলে কার থেকে যেনো প্রতি*শোধ নিবে। কে সে?
– সে আর কেউ না শ্রাবণী! সে আমার সামনেই দাড়িয়ে আছে।
– কি বলছো আদ,…..
পুরোটা কথা শেষ করার আগেই শ্রাবণী পিছনে ফিরে দেখে আদিত্য ওর দিকে ব*ন্দুক তাক করে আছে।
– আদিত্য! কি করছ তুমি এটা? আমার দিকে ব*ন্দুক তাক করে আছো কেনো?
– কারণ আমার সেই টার্গেট টা তুমি নিজেই!
– পাগল হয়ে গেছ তুমি?
ছল ছল চোখে
– হে আমি পাগল হয়ে গেছি! মনে আছে তোমার শিহাবের কথা?
শ্রাবণী অনেক টা অবাক হয়ে যায় । জিজ্ঞাসু চোখে তাকায় আদিত্যর দিকে।
– হুম আমি তোমার সেই এক্স এর কথা বলছি। যাকে তুমি নির্ম*ম ভাবে মে*রে ময়লা স্তুপে ফেলে এসেছিলে! সে আর কেউ না সে আমার আপন ছোট ভাই!! জানো? কত কষ্ট করে ওকে মানুষ করেছি আমি। একটু ও চোখের আড়াল হতে দেয়নি আমার ভাইকে। নিজের না খেয়ে ওকে খাইয়েছি। ওর চোখ থেকে এক ফোঁটা পানি পড়লে আমার বুক ঝাঁঝরা হয়ে যেত আর তুমি তাকে মে*রেই দিলে! আমি জানি ও ভুল করেছিল। অন্য শাস্তি দিতে পারতে রাই বলে মে*রে ফেলবে?
অবাক হচ্ছো না? আমি এগুলো কিভাবে জানলাম! তোমাকে আগেই বলেছি আমি একজন প্রফেশনাল হ্যাকার। ওর মৃ*ত্যুর পর্ ওর পার্সোনাল সব কিছু আমি চেক করেছি। আমি তোমার আর ওর চ্যাটিং দেখেছি। যেখানে ও তোমাকে যোগাযোগ রাখতে মানা করেছিল। আমার তখন থেকেই তোমার উপর সন্দেহ হতে শুরু করলো। তারপর তোমাকে নিজের মায়ায় জড়িয়ে তোমার কাছ কাছি আসলাম। তোমার এসব কাজ দেখে আরো অনেক টা সিয়োর হই। কিন্তু তবুও পুরোপুরি বুঝি নি। এক পর্যায়ে তুমি আমাকে এমন বিশ্বাস করলে নিজের ফোন ও আমার কাছে রেখে দিলে। সেই সুযোগে আমি তোমার ফোন পুরো ঘেঁটে দেখি। আর অবাক করার বিষয় আমি শিহাবের হাত পা বাঁ*ধা ছবি দেখতে পাই তোমার ফোন এ।একটা কথা কি জানো? খু*নি যতই চালাক হোক কিছু না কিছু ভুল করেই ফেলে । সেদিন আমি পুরোপুরি বুঝে গেছিলাম তুমি মে*রেছ আমার ভাইকে। আমি সেদিনই ঠিক করি এর প্রতি*শোধ আমি নিবো। কিন্তু আমিও চেয়েছিলাম তুমি তোমার প্রতি*শোধটা আগে শেষ করো তাই কিছু বলিনি। কিন্তু আজ সঠিক সময়!
– তুমিও আমার সাথে ভালোবাসার নাটক করলে? আমি তো সত্যি তোমাকে মন দিয়ে দিয়েছিলাম!বিশ্বাস করেছিলাম!!তুমিও বিশ্বাস*ঘাতকতা করলে!
– তোমার মত সাই*কো খুনি কাওকে ভালবাসতে পারে না। তুমি প্রতিশোধ এর নেশায় সব করতে পারো। এমনকি সুযোগ পেলে আমাকেও মেরে ফে*লবে ! তাই বাই!! সারাজীবনের জন্য!
————
শ্রাবণী তার বুকের পা পাশে চিন চিন ব্যাথা অনুভব করে। হ্যা, আদিত্য শ্রাবনীকে গু*লি করেছে। যাকে নিয়ে বাকি জীবন বাঁচতে চেয়েছিলো । যাকে বুকের পা পাশে রাখতে চেয়েছিল। সেই গু*লি করে তার বুকটা ক্ষ*ত বিক্ষ*ত করে দিযেছে।শ্রাবণীর চোখ থেকে ২ ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরে।
– দেখেছ বাবা! তোমাকে বলে ছিলাম না? দুনিয়াতে কেউ বিশ্বাসের যোগ্য না সবাই বেঈ*মান সবাই।আজ বুঝতে পড়লে তো?
শ্রাবণী চোখ বন্ধ করে অতীতের সব কথা মনে করতে থাকে। কিন্তু আর নিজেকে সামলাতে পারে না সে। এক পলক আদিত্যর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে নিচে পরে যায় । শেষ পরের মত একটা কথাই তার মুখ থেকে উচ্চারিত হয় –
” Life is nothing but a Game”
সমাপ্ত
( সব গল্পের এন্ডিং যে ভালো হতে হবে তা তো না। কিছু কিছু এন্ডিং কষ্টের হওয়াই ভালো!🖤)