Life_Game পর্ব – ১০ #writer_rukaiya_rakhi

0
260

#Life_Game
পর্ব – ১০
#writer_rukaiya_rakhi

একটা ঘন জঙ্গল এর মাঝে দাড়িয়ে আছে শ্রাবণী আর আদিত্য । তাদের সামনে হাত পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছেন নিখিল শেখ। এতক্ষণ টানতে টানতে নিয়ে এসেছে শ্রাবণী তাকে। তাই এখন বিধ্বস্ত অবস্থা হয়ে গেছে নিখিল শেখের। এতে শ্রাবণীর রাগ যেনো একটু ও কমেনি । সে চোখ লাল করে তাকিয়ে আছে।তারপর হুট হাট করেই নিখিল শেখের হাত পায়ের বাধন খুলে দেয় শ্রাবণী। তারপর বলে

– যা তোকে একটা পালানোর সুযোগ দিলাম। দেখি কত দুর যেতে পারস!

নিখিল শেখ আর কোনো কিছু না ভেবে ছুটতে শুরু করে। যদিও দৌড়ানোর শক্তি নেই তবুও প্রাণ পনে দৌড়িয়ে যাচ্ছে। কারণ জীবন বাঁচাতে হবে। শ্রাবণী ওর পিছন পিছন যাচ্ছে আর সাইকোর মত হাসছে। নিখিল শেখ আরো ভয় পেয়ে নিজের সব টুকু শক্তি দিয়ে দৌড়াতে লাগলেন। কিন্তু এক সময় এসে আর দৌড়াতে পারলেন না। কারণ সামনে আর রাস্তা নেই । এটা পাহাড়ের শেষ সীমানা। শ্রাবণী আরো জোড়ে জোড়ে হাসতে লাগলো
– কি হলো মিস্টার নিখিল শেখ! হা হা হা !কি আর দৌড়াচ্ছিস না কেনো ?বাঁচতে চাস না? বাঁচার ইচ্ছা নাই? ও হে দৌরবি ক্যামনে তোকে তো আমার হাতে ম*রতে হবে ! হা হা হা!
তবে ম*র এখন!
( তারপরের ঘটনা তো আপনারা জানেনই)
————-
বর্তমানে শ্রাবণী আর আদিত্য বাংলাদেশে ফিরছে। কারণ আমেরিকায় তাদের কাজ শেষ।
– বুঝছো আদিত্য ! আর একজন বাকি তাহলেই আমার মিশন কমপ্লিট ।একটা শান্তির জীবন কাটাতে পারব।( একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে শ্রাবণী)
– এর পর কাকে মা*রার প্ল্যান করছো?
– অনেক স্পেশাল কেউ। সময় হলে জানতে পারবে। জানো আমি তার থেকে কখনো এটা আসা করিনি। কত বিশ্বাস করতাম তাকে।( বলেই চোখের কোনায় পানি জমে যায় তার। তাড়াতাড়ি করে হাতের উলটো পিঠ নিয়ে সেটা মুছে ফেলে)
– প্রতিশোধ নেয়া হয়ে গেলে তোমার প্ল্যান কি?
– তেমন কিছুই না। কাজ হয়ে গেলে বাবার কাছে(সাঈদ চৌধুরী) ফিরে যাবো। অন্য মেয়েদের মত একটা স্বাভাবিক জীবন যাপন করবো ব্যাস!
– তাহলে আমার কি হবে( ফিস ফিস করে)
– কি বললে তুমি?
– কই কিছু না তো!
আদিত্য ধীরে বললেও শ্রাবণী ঠিক ই শুনতে পেয়েছে। আদিত্যর আড়ালে একটা মুচকি হাসি দেয় সে।
————
দেশে ফিরেই নিজের রুমে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দেয় শ্রাবণী। এই কয়দিন অনেক ধকল গেছে। কাওকে মা*রা তো আর সহজ কাজ না। পাশে থেকে নিজের বাবার ছবিটা নিয়ে বলে
– দেখেছ বাবা! তোমার মেয়ের প্রতি*শোধ নেয়া প্রায় শেষ এর দিকে। এখন শুধু ওই হা*রামী টাই বেছে আছে। যায় জন্য এত কিছু!ওকে মা*রলেই সব শেষ। ( কথা টা বলতেই শ্রাবণীর চোআল শক্ত হয়ে আসে। চোখ রক্তের মত লাল হয়ে আছে ।
———–
একটা বদ্ধ রুমে শ্রাবনীকে বেধে রাখা হয়েছে। এখনও জ্ঞান ফেরেনি তার। হটাৎ কেউ একজন শ্রাবণীর গায়ে পানি ছুড়ে মারে। ধীরে ধীরে চোখ খোলে শ্রাবণী। এখনও মাথায় তার চিন চিন ব্যাথা করছে। চোখ খুলতেই একটা অতি চেনা মুখ দেখতে পায় সে। তাকে দেখতেই শ্রাবণীর চোখ হিংস্র বাঘিনীর মত হয়ে যায়। যেনো সুযোগ পেলে এখনি থাবা দিবে। তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে ওঠে শ্রাবণী। সামনে থাকা লোকটি বলে ওঠে
– কি রে তুই কি ভেবেছিলি? একে একে এভাবে খুন করবি আর আমি কিছুই টের পাবো না? এতটা ও বোকা ভাবিস না আমায়! পর্ পর্ যখন আমার ২ জন বন্ধুর এই অবস্থা হলো তখনই বুঝতে পেরেছিলাম কেউ প্ল্যান করে করছে!তুই কত বড় বোকা জানিস? ভুল করে নূরের বাসায় নিজের ফিংগার প্রিন্ট রেখে গিয়েছিলি। কিছুদিনের মাথায় তোর পরিচয় বের করে ফেলেছিলাম আমি। কিন্তু সময় এর অপেক্ষায় ছিলাম। সেদিন আসলে কনফার্ম করা উচিত ছিল যে তুই আসলেই ম*রেছিস কি না! তাহলে এত কিছু হতো না। সমস্যা নাই আজকে তোকে চির বিদায় দিয়ে দিবো।
লোকটির কথা শুনে শ্রাবণী এবার অট্ট হাসিতে ফেটে পড়ে। ওর হাসি দেখে লোকটির মুখে বিরক্ত ভাব জেগে ওঠে
– বাহ মৃ*ত্যুর দরগোড়ায় এসেও হাসছিস! এত সাহস কই থেকে পাস?নাকি ম*রার ভয়ে পাগল হয়ে গেছিস!
– তোদের মত জা*নো*য়ার দের দেখে আমি ভয় পাই না।
কথাটা শুনে যেনো লোকটার রাগ চরম পর্যায়ে চলে গেলো।শ্রাবণীর চোয়াল ধরে বলে
– তোর সাহস তো কম না আমাকে এগুলো কথা বলিস! মেয়ে হয়ে এত তেজ তোর!
শ্রাবণী কোনো উত্তর দেয় না।এবার চোয়াল ছেড়ে দিয়ে বলে
– যাক বাদ দে একটু পর ম*রতেই যাচ্ছিস! আমি আবার এত পাষাণ না। বল ম*রার আগে তোর শেষ ইচ্ছা কি?
এবার শ্রাবণী মুখ খোলে। অনেক শান্ত গলায় বলে
– আমি একটু একা থাকতে চাই!
– ওহ এই কথা! ঠিক আছে থাক। এই চল সবাই! তোকে ৫ মিনিট একা ছেড়ে দিলাম।
তারপর সবাইকে নিয়ে চলে যায়। ওরা যাওয়ার সাথে সাথে শ্রাবণীর মুখে একটা ডেভিল হাসি ফুটে উঠে।
————
৫ মিনিট পর ফিরে আসে ওরা।
– তোর সময় শেষ। শেষ বারের মত আল্লাহর নাম নিয়ে নে মুখে! এই পি*স্তল টা দে!( একজন কে ইশারা করে)
লোকটা পি*স্তল হাতে নিয়ে শ্রাবণীর মাথা বরাবর তাক করে। কিন্তু শ্রাবণী এতে একটু ও ভয় পাচ্ছে না।
– গুড বাই!
যখনি লোকটা পি*স্তল চলতে যাবে ঠিক সেই মুহূর্তে শ্রাবণী আচমকা দাড়িয়ে গিয়ে পা দিয়ে পি*স্তল ওই লোকের কাছে থেকে সরিয়ে ফেলে এবং নিজের হাতে নিয়ে নেয়। তারপর ওখানে থাকা সবাইকে একে একে গু*লি করতে শুরু করে। এক সময় সবাই লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। শুধু ওই লোকটি বাদে। শ্রাবণী ২ হাত ভালোভাবে ঝেড়ে নেয়। তারপর লোকটির দিকে তাকিয়ে শান্ত ভাবে বলে
-কি বেপার, চাচ্চু! অবাক হয়ে গেলে? হওয়ারই কথা (হুম লোকটা আর কেউ নয় শ্রাবণীর আপন চাচা)এমন আশা করনি তাই না!কি ভেবেছিলে? আমি এতটা ও কাচা না বুঝছো? এত বছর ধরে এমনি এমনি প্রস্তুত হয়নি!
এইদিকে শ্রাবণীর চাচ্চু আজাদ খান তো পুরো একদম অবাক হয়ে গেছেন। যাকে বলে অবাকের চরম পর্যায়। কিছু সময় এর জন্য থমকে যান তিনি।ততক্ষণে আদিত্য ও ভিতরে চলে আসে ও।কে দেখে তো আরো অবাক হয়ে যান!
– এ,, একি! তুই বাধন খুলে ফেললি ক্যামনে? আর এই ছেলে কই থেকে এলো?
– আরে চাচ্চু একটু বাইরে তাকিয়ে দেখো তো!
আজাদ খান বাইরে তাকিয়ে চমকে যান। কারণ তার সব লোকেরা মাটিতে পড়ে আছে। একজন ও বেচেঁ নেই। ভয়ার্ত চোখে তাকান শ্রাবণীর দিকে!
– এত চিন্তা করো না চাচ্চু প্রেসার হাই হয়ে যাবো তো!
আমি ই বলছি কি হয়েছিল!
ফ্ল্যাশব্যাক ————

চলবে?

( গল্পটা আর বেশি বড় করবো না ১/২ পর্বে শেষ করে দিবো☺️)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here