Life_Game পর্ব – ৮ #writer_rukaiya_rakhi

0
229

#Life_Game
পর্ব – ৮
#writer_rukaiya_rakhi

আজ থেকে প্রায় ১১ বছর আগের কথা তখন আমার বয়স মাত্র ৭ বছর। আমি তখন ক্লাস ওয়ান এ পড়ি। অ্যানুয়াল এক্সামে ফার্স্ট হওয়ায় খুব খুশি ছিলাম আমি। মনে মনে ভাবছিলাম বাবাকে দেখালে তিনি অনেক খুশি হবে। বাড়িতে আমি আর আমার বাবাই থাকতাম। আমার মা আমার জন্মের পরই মারা যান। মা মারা যাওয়ার পর্ বাবা বিয়ে করেন নি আমার সুখের কথা চিন্তা করে।অনেক ভালো বাসতেন আমায়। একজন কাজের বুয়া এসে সব রান্না বাবা করে দিয়ে যেত। তো খুশি মনে আমি বাড়ি যাচ্ছিলাম। বাসায় পৌঁছনোর আগে দূর থেকে দেখলাম কিছু লোক আমার বাসা থেকে হাসতে হাসতে বের হয়ে যাচ্ছে। আমি কিছু সময় পর বাসায় পৌঁছলাম। কিন্তু ঢুকে যা দেখলাম তাতে আমি পাথরের মত হয়ে গেছিলাম। কারণ মেঝেতে কাজের বুয়ার নিথ*র দেহ পড়ে আছে। পাশেই আমার বাবা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর আমার জ্ঞান ফিরে আসলো। আমি বাবা বলে চিৎ*কার দিয়ে বাবার কাছে দৌড়ে গেলাম। বাবাকে কারা যেনো মে*রে রক্তা*ক্ত করে গেছে । বাবা আমাকে দেখেই সেখান থেকে চলে যেতে বললেন।আমি যাইতে চাইছিলাম না। বাবা অনেক রিকোয়েস্ট করে বলছিলেন। বলেছিলেন তোকে বাঁচতে হবে।কিছু সময় পর বাবা মা*রা যান। অনিচ্ছা সত্বেও কাদতে কাদতে বেরিয়ে এলাম। কিন্তু সেখানেই ঘটলো বিপত্তি । আমি বের হওয়ার সময় তারা আমাকে দেখে ফেললো । আমি প্রাণ বাঁচানোর জন্য দৌড়াতে শুরু করলাম।ওরাও আমার পিছু পিছু দৌড়াতে লাগল। আর বলতে লাগলো
– ধর ওকে! কোনো ভাবে যেনো পালাতে না পারে।
আমি প্রাণ পনে দৌড়াতে শুরু করলাম। কিন্তু কিছু দুর যাওয়ার পর আর পারলাম না কারণ রাস্তা শেষ। দৌড়াতে দৌড়াতে পাহাড়ের রাস্তায় চলে এসেছি।পরে গেলে বাঁ*চার উপায় নেই। কিছুই বুঝতে পারছিলাম না কি করবো। ততক্ষণে ওরাও চলে আসে।
– কি মামনি এখন কই যাবে?
– আমাকে ছেড়ে দিন আংকেল।( ভয়ার্ত কণ্ঠে বললাম)
– ছেড়ে দিবো? না বাবা তোকে বাঁ*চিয়ে রাখলে তো অনেক সমস্যা। তাছাড়া তুই আমাদের দেখে ফেলেছিস। তোকে মর*তেই হবে।
এ কথা বলে তিনি আমাকে পাহাড় থেকে ফেলে দেন। আমি চিৎ*কার দিয়ে নিচে পড়ে যাই। কিন্তু আমার ভাগ্য ভালো ছিল আমি একটা গাছের উপর পড়ি।
– কি রে ম*রসে নাকি?
– ভাই এত উপর থেকে পরে বাঁ*চার কোনো চান্স নাই।
– হুম চল এখন। লা*শ গুম করতে হবে।

আমি গাছের উপর পড়ে অজ্ঞা*ন হয়ে যাই। কিছু সময় পড়ে একজন লোক আমাকে দেখতে পান এবং সেখান থেকে উদ্ধার করেন। ওনার কোনও সন্তান না থাকায় নিজের মেয়ের মতোই বড় করেন আমায়। সেদিন ই আমি সপথ করি এদের কাওকে ছাড়বো না আমি। সব গুলো কে নি*র্মম মৃ*ত্যু দিবো।”
কথা গুলো বলতে বলতে চোখের কোনায় পানি জমে যায় শ্রাবণীর। আদিত্য ও অনেক কষ্ট পায়। কেউ কতটা নির্ম*ম হলে একটা বাচ্চাকে এভাবে মে*রে ফেলতে চায়
– তুমি চিন্তা করো না শ্রাবণী। আমি তোমার পাশে আছি।
আদিত্যর কথা শুনে শ্রাবণী আদিত্য কে জড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কেঁ*দে ফেলে। অনেক দিন পর যেনো সে নিজের মন কে হালকা করতে পেরেছে। আদিত্য ও তাকে জড়িয়ে ধরে। থামায় না শ্রাবনীকে । কান্না করলে মন হালকা হয়ে যাবে। কিছুক্ষণ পর্ চোখ মুছে আদিত্যকে বলে
– নেক্সট টার্গেট এর জন্য আমাকে আমেরিকা যেতে হবে। সেখানেই তাকে শে*ষ করবো।
– আমিও যাবো তোমার সাথে।
– আমি আমার জন্য করো জীবন রিস্ক এ ফেলতে চাই না।
– কিছু হবে না আমার ।আমি যাবো।
– ঠিক আছে কাল রেডী থেকো।
———-
কম্পিউটারে বসে অফিসিয়াল কাজ করছেন নিখিল শেখ। সে মুহূর্তে তার কাছে একটা ফোন আসে ।
– হেলো, কে বলছেন?
– তোর জম । আসছি আমি।
– কি যা টা বলছেন কে আপনি?
– সময় মত টের পাবি।
এইটা বলেই ওপাশ থেকে ফোন কেটে দেয়।
– হেলো হেলো ।কি ব্যাপার হুট হাট ফোন করে কি সব যা তা বলছে!
নিখিল শেখ আবার ফোন করেন কিন্তু ফোন সুইচড অফ।কেউ মজা করছে ভেবে তিনি আর মাথা ঘামান না।

——–
শ্রাবণী আর আদিত্য এয়ারপর্ট থেকে নেমে একটা ফাইভ স্টার হোটেল এ ওঠে। তারপর একটু রেস্ট নিয়ে ২ জনে প্ল্যানিং শুরু করে
– নিখিল শেখ এর অ্যাকাউন্ট এ ৫০ কোটি টাকা আছে। যা আমার বাবার কষ্টের টাকা ছিল। সেটা আগে বের করতে হবে এই ওর জন্য অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা প্রয়োজন। ( হুম ঠিকই ভাবছেন শ্রাবণীর নেক্সট টার্গেট নিখিল শেখ)
– দেন ইউ আর সো লাকি ! কারণ আমি হ্যাকিং এ এক্সপার্ট।
– কি বলছো সত্যি!
– হুম ।
– ওকে তাইলে শুরু করা যাক।
————
পাহাড়ের চূড়ায় রক্তা*ক্ত অবস্থায় দাড়িয়ে আছেন নিখিল শেখ। তার সামনে ব*ন্দুক তাক করে দাড়িয়ে আছে আদিত্য আর শ্রাবণী।
– কি !কেমন লাগছে মরা*র আগের অনুভূতি? মিস্টার নিখিল শেখ!
– আমাকে এবারের মত ক্ষ*মা করে দাও।
– ক্ষমা আর তোকে? হা হা ছোট মেয়েটার উপর সেদিন কোনো দয়া হয়েছিল তোর? কত বার বলেছিলাম ছেড়ে দেন আংকেল। তুই ছেড়ে দিয়ে ছিলি? ছোট্ট মেয়েটাকে তুই পাহাড় থেকে ফেলে দিয়েছিলি। তোকে আমি একই ভাবে মার*বো।( ঠিক ধরেছেন শ্রাবনীকে পাহাড় থেকে নিখিল শেখ ই ফে*লে দেয়)
– প্লীজ আমাকে মে*রো না।
কিন্তু শ্রাবণী কোনো কথা শোনেন নিখিল শেখের মাথার মাঝ বরাবর গু*লি করে দেয়। সাথে সাথে পাহাড় থেকে পরে যান নিখিল শেখ।
– খ*তম ! উপরে ভালো থাকিস!
– তোমাকে দেখে কেউ বুঝতেই পারবে না তোমার মধ্যে এত রাগ লুকিয়ে আছে।
– এটা রাগ না এটা আমার বাবা হারানোর বেদনা। আমার শৈশবের হারানো প্রতিটা মুহূর্তের জন্য ওদের হিসাব দিতে হবে।

কি?কিছু বুঝতে পারছেন না তো? নিখিল শেখ কে ওরা কিভাবে পেলো? জানতে চোখ রাখুন পরের পর্বে

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here