Life_Game পর্ব – ৬ #writer_rukaiya_rakhi

0
305

#Life_Game
পর্ব – ৬
#writer_rukaiya_rakhi

নূরের কপাল বেয়ে র*ক্ত টুপ টুপ করে পড়ছে।তিনি কিছু করতেও পারছেন না আর বলতেও পারছেন না। ক্যামনেই বা বলবেন তার তো জি*হ্বাই নেই কে*টে ফেলা হয়েছে। তিনি নির্জীব ভাবে তাকিয়ে আছেন শুধু আর নিজের মৃ*ত্যু কামনা করছেন কেননা এত কষ্টের চেয়ে মৃ*ত্যু অনেক ভালো।
——–
কিছুক্ষণ আগে –
নুর জ্ঞান ফিরে নিজেকে একটা নির্জন ঘরের মধ্যে আবিষ্কার করেন।তার হাত পা বাঁ*ধা। কাওকে দেখতে না পেয়ে তিনি ডাকা ডাকি শুরু করেন।
– কেউ আছেন? আমাকে এভাবে বেধে রাখা হয়েছে কেনো? আমাকে ছেড়ে দিন!!
গলা ফা*টিয়ে চিৎ*কার করে যাচ্ছেন তিনি কিন্তু কেউ সারা দিচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর –
– কি ব্যাপার! মিস্টার এস আই নুর । এভাবে চিৎ*কার করছেন কেনো? আপনার মত মেডেল প্রাপ্ত অফিসারের এমন চিৎ*কার মানায় না!
কন্ঠটা শুনে চমকে যান নুর। কেননা এই কণ্ঠ তিনি আগেও শুনেছেন কমিউনিটি সেন্টারে। একটা মেয়েলি কণ্ঠ।
– কে তুমি! কি চাও আমার থেকে? আমাকে এভাবে বেধে রেখেছো কেনো? সামনে আসো।
– আরে মিস্টার নুর এত অ*স্থির হচ্ছেন কেনো! আপনার সাথে কথা বলতেই তো আপনাকে এখানে নিয়ে এসেছি। অবশ্যই আপনার সামনে আসবো। এই নিন এসে গেছি।
এই কথা বলে নূরের সামনে দাঁড়ায় শ্রাবণী।
– চিনতে পেরেছেন এস আই নুর?
– কে তুমি ? কি চাও?
– আরে ভুলেই তো গেছিলাম চিনবেন ক্যামনে!একটা ছোট্ট বাচ্চাকে নদীতে ফে*লে দিয়েছিলেন এখন তো বড় হয়ে গেছি।
নুর কিছুক্ষণ ভাবতেই বুঝতে পারেন।
– শ্রাবণী!!(অবাক হয়ে)
– এই তো বুঝতে পেরেছেন। হ্যা আমি শ্রাবণী ।সেই ছোট্ট অস*হায় মেয়ে । এটাই ভাবছেন তো কিভাবে ফিরে এসেছি।তোদের জীবন ন*রক বানাতে ফিরে এসেছি।একটাকেও ছা*ড়বো না।(র*ক্তাক্ত চোখে?
– তার মানে রউফ কে তুই ই মে*রেছিস?
– একদম ঠিক ধরেছেন । আমি মে*রেছি তাকে।( রেগে গিয়ে)
– এখন কি আমাকেও মা*রতে চাস!
– নাহ তোকে মা*রবো না আমি। ম*রে গেলে তো সব শেষই হয়ে গেলো। তোকে আমি দুনিয়া তেই জাহা*ন্নামের স্বাদ গ্রহণ করাবো। তৈরি থাক।
———–
কোনোকিছু তেই মন বসাতে পারছে না আদিত্য। বার বার শ্রাবণীর কথা ভাবছে সে। সেদিনের কথা মনে হতেই লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে সে । মেয়েটা তার দিকে কিভাবে তাকিয়ে ছিল!
– ইসস! কি কিউট।
বলেই আবার বালিশে মুখ লুকালো আদিত্য।
এই কয় মাস শ্রাবনীকে প্রচন্ড জ্বা*লিয়েছে সে। প্রতিদিন এটা ওটা নেয়ার বাহানায় শ্রাবণীর কাছে গেছে। শ্রাবণীর প্রথমে বির*ক্ত লাগলেও এখন কিছু মনে হয় না। তারও কেমন একটা অভ্যাস হয়ে গেছে। আদিত্য না আসলেই বরং তার কেমন একটা লাগে। এমন হওয়ার কারণ শ্রাবণী অনেক খুঁজেছে কিন্তু কোনোভাবেই কারণ খুঁজে পাচ্ছেনা। একদিন আদিত্য বাড়ির বাইরে যাচ্ছিল আর শ্রাবণী ও ভিতরে আসছিল । হটাৎ করেই ওদের ধাক্কা লাগে । আদিত্য নিচে পরে যায় আর শ্রাবণী ওর উপর। শ্রাবণী এক ভাবে তাকিয়ে ছিল আদিত্যর দিকে কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করছিল সে ।” তার কি ভালো লাগছে আদিত্যকে দেখতে। নাকি সে পছন্দ করে ফেললো তাকে। ”
– আপনি আবারও আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছেন। লজ্জা লাগে তো!( একটু লজ্জার ভান করে)
আদিত্যর কথা শুনে বাস্তবে ফেরে শ্রাবণী। তাড়াতাড়ি উঠে দাড়ায় আর ওখান থেকে চলে যেতে নেয়। কিন্তু ওখানেই ঘটে আরেক বিপত্তি। আদিত্যর ঘড়ির সাথে শ্রাবণীর ওড়না বেজে যায়। তাড়াতাড়ি করে নিজের ওড়না ছাড়ানোর চেষ্টা করে। শ্রাবণীর মুখ দেখে প্রচন্ড হাসি পায় আদিত্যর । ফিক করে হেসে দেয়।
– হাসছেন কেন?
– যে ভাবে মুখ পানসে করে রেখেছেন যে কারো হাসি পাবে!( সাত কেলিয়ে)
শ্রাবণী আর কিছু বলে না ওড়না ছড়িয়ে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।
– নাহ মেয়েটাকে আমার বানাতেই হবে। কিন্তু এর মন তো একদম ইটের মত শক্ত। কিছুতেই গলে না। ডিরেক্টর ঠিক ই বুঝতে পেরেছিলেন। এই জন্যই তো এই গান টা রিলিজ করেছেন_
” মেয়েদের মন বোঝা নয় রে নয় সোজা”
———–
বেল্ট দিয়ে নিজের সর্ব শক্তি দিয়ে নুর কে আ*ঘাত করছে শ্রাবণী। এতদিনের রাগ তার সহজে তো মিটবে না। নুর ব্যা*থায় কুকরিয়ে উঠছে।প্রা*ণ ভিক্ষা চাইছে নিজের।
– আমাকে ক্ষমা করে দাও ! আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি । আমাকে ছেড়ে দাও।
– ক্ষমা? তোকে ক্ষমা করবো? পারবি আমার বাবাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিতে? পারবি আমার ছোটবেলা আগের মত করে দিতে? চিন্তা করিস না তোকে বাঁচিয়ে রাখবো । তিলে তিলে মর*বি তুই। আমার বাবা ও তো অনেক প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছিল ছেড়ে দিয়ে ছিলি তাকে! কষ্ট সহ্য করতে না পেরে মর*ণ চেয়েছিল। কিন্তু তোরা আমার বাবা কে অনেক ক*ষ্ট দিয়েছিস অনেক ! আর আমার বাবা যে কিনা তোকে বিশ্বাস করেছিল।( বলতে বলতে চোখ থেকে ২ ফোঁটা জল গড়িয়ে পরে তার। আবার পরক্ষনেই চোখের পানি মুছে ফেলে। এইদিকে নুর প্রাণ ভিক্ষা চেয়েই যাচ্ছে।)
– বুঝতে পেরেছি তুই তোর বন্ধুর মত বড্ড কথা বলিস।তোর ও কথা আগে বন্ধ করতে হবে।
এই কথা বলে শ্রাবণী একটা ছু*রি নিয়ে এসে নূরের জি*হ্বা আলাদা করে ফেলে। ফিনকি দিয়ে র*ক্ত পড়ছে নূরের মুখ থেকে। শ্রাবণীর সেদিকে কোনো মাথা ব্যাথা নেই।
– জানিস সেদিনের পর থেকে একটা রাত ও আমি কান্না না করে পার করতে পারিনি শুধু তোদের জন্য।
এইটা বলে শ্রাবণী নূরের হাত নিয়ে হা*তুড়ির এক বাড়িতে ভে*ঙে ফেলে। ব্যা*থায় গুংরিয়ে ওঠে নুর। পর পর দুই হাতই হা*তুড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলে। এর পর দুই পা যাতে নুর কোনোভাবেই ন*ড়তে না পারে।স*হ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারায় নুর।
– কি রে ম*রে গেলি নাকি? নাহ তোকে ত ম*রতে দেয়া যাবে না।
নূরের কাছে গিয়ে ভালো করে চেক করে। হে এখনও বেঁচে আছে নুর। নূরের জ্ঞান ফেরা পর্যন্ত ওখানে বসে থাকে শ্রাবণী।
———–
২ ঘণ্টা পর নূরের জ্ঞান ফিরে আসে। আসে পাশে শ্রাবনীকে দেখতে পায় না। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখতে থাকে।
– কিরে এদিক ওদিক তাকাচ্ছিস কেনো ? আমায় মিস করছিস নাকি?
ভ*য়ে কুকড়ে ওঠে নুর। কেননা শ্রাবণীর হাতে একটা ধা*রালো ছুরি। এখনি বোধ হয় তার জীবন শেষ হয়ে যাবে।
শ্রাবণী ছু*রি নিয়ে নূরের কাছে যায় । নুর পা ছোটাছুটি করছে ভ*য়ে। শ্রাবণী সোজা নূরের মাথার কাছে যায়। হাতে থাকা ছু*রি দিয়ে নূরের চুল কাটতে শুরু করে। ছুরির ধারে নূরের মাথার চামড়া কেটে র*ক্ত বের হতে থাকে। নুর আর সহ্য করতে পারছে না। করুন চোখে তাকিয়ে আছে শ্রাবণীর দিকে। এর চেয়ে মৃ*ত্যু ভালো।
– কি? মৃ*ত্যু কামনা করছিস? কিন্তু তোকে ত বাঁচতেই হবে। তুই বেচেঁ ও মৃত। নিজের চোখের সামনে নিজের সঙ্গীদের মরণ দেখতে হবে তো।তাই না!!
হা হা হা!!!( একটা পৈ*শাচিক হাসি হাসে শ্রাবণী।যেটা শুনলে যে কারো আত্তা কে*পে উঠবে!)

চলবে?
( আপনাদের সাপোর্ট না পেলে নেক্সট পর্ব দিবো না🙂। কোনো ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here