#Life_Game
পর্ব – ৭
#writer_rukaiya_rakhi
তারেক মিয়া নিজের কাজ শেষ করে বিলের ধার দিয়ে যাচ্ছেন। কিছু দূর যাওয়ার পর খেয়াল করলেন সামনে কিছু একটা পরে আছে। মানুষের মত লাগছে। তিনি তাড়াতাড়ি সামনে যান। গিয়ে দেখেন একজন মানুষ উল্টো হয়ে পড়ে আছে। তিনি মানুষটাকে সামনের দিকে ঘুরান। লোকটার চেহারা দেখে অনেক ভ*য় পেয়ে যান তিনি। কারণ লোকটার অনেক বিভ*ৎস অবস্থা। ভ*য়ে তিনি চিৎ*কার দিয়ে ওঠেন । তার চিৎ*কারে আসে পাশের সব মানুষ জড়ো হয়ে যায়।
———–
সকাল সকাল টেবিলে থাকা পত্রিকাটা দেখতেই শ্রাবণীর মুখে একটা ডে*ভিল হাসি ফুটে ওঠে। কারণ পত্রিকায় লেখা আছে
” গতকাল বিকালে বিলের ধরে এস এই নূরকে ক্ষ*ত বি*ক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে তিনি বেছে আছেন। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো তার শাস এখনও চলছে।”
পত্রিকাটা পাশে রেখে শ্রাবণী ভাবছে ২ জন কে তো স*রিয়ে ফেলেছে। এখন তৃতীয় জনের পালা। এদের শেষ করা সহজ ছিল কিন্তু ওকে কিভাবে মা*রবে সেটা নিয়ে অনেক ভাবতে হচ্ছে ।কারণ সে দেশে থাকেনা । দেশের বাইরে থাকে। দরকার ছাড়া আসে না । কি করবে সেটাই ভাবছে শ্রাবণী।
———–
বিকেল বেলা বাসার পাশে নির্জন বাগান টাতে হাটতে ভীষণ ভালো লাগে আদিত্যর। প্রতিদিনই সে এইখানে আসে। আজকেও তার ব্যাতিক্রম না । আপন মনে পরিবেশটাকে উপভোগ করছিল সে। কিন্তু সেই মুহূর্তেই কারো চিৎকার শুনতে পায় আদিত্য। চিৎ*কার টা বাগানের সামনে পুকুর থেকে আসছিল। আদিত্য সেখানে দৌড়ে গিয়ে দেখতে পায় শ্রাবণী পুকুরে ডুবে যাচ্ছে। আদিত্য তাড়াতাড়ি করে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে শ্রাবনীকে তুলে নিয়ে আসে। ততক্ষণে শ্রাবণী জ্ঞান হা*রিয়ে ফেলেছে।
———-
জ্ঞান ফিরে শ্রাবণী নিজেকে একটা বাসায় আবিষ্কার করে। নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সে একটা শার্ট পরে আছে । সে তো অন্য জামা পরে ছিল কে চেঞ্জ করল।ঠিক সেই সময় আদিত্য আসে খাবার নিয়ে। এসেই জিজ্ঞাসা করে
– কি অবস্থা আপনার এখন কেমন লাগছে?
– (শ্রাবণী উল্টো প্রশ্ন করে )আমি এখানে আসলাম কি করে?
– তো কি চেয়েছিলেন পুকুরে ম*রে ভেসে থাকতে?
(আদিত্যর কথা শোনে তখন কার কথা মনে পড়ে যায় শ্রাবণীর । হে তাই তো সে তো পুকুরে ডুবে যাচ্ছিল। আসলে শ্রাবণী কিছু একটা চিন্তা করতে করতে সেই পুকুরের ধার দিয়ে যাচ্ছিল । হটাৎ ই তার পা পিছলে যায় আর সে পুকুরে পরে যায়। বড় কথা হলো শ্রাবণী সাঁতার জানেনা। নিজের উপর খুব রাগ হচ্ছে তার। এত কিছু শিখল আর সাঁতার টাই শিখল না। না তার সাঁতার টা শিখে নেয়া উচিত।)
– আমার ড্রেস কে চেঞ্জ করলো?
(শ্রাবণীর কথা শুনে একটা ডেভিল হাসি হেসে)
– আমি ছাড়া কাওকে দেখতে পাচ্ছেন?
আদিত্যর কথা শুনে মুখ কালো হয়ে যায় শ্রাবণীর । শেষ মেশ এরকম একটা সিতুয়েশন এ পড়তে হলো তার।
শ্রাবণীর মুখ দেখে প্রচুর হাসি পায় আদিত্যর।কোনরকম হাসি চেপে রেখে বলে
– আরে মুখ কাল করছেন কেনো? পাশের ফ্ল্যাটের অ্যান্টি এসেছিল । তিনিই চেঞ্জ করেছেন।
এতক্ষণে একটা সস্তির নিঃশ্বাস ফেলে শ্রাবণী।
– নিন এই সুপ টা খান। ভালো লাগবে। আমি একটু আসছি।
– শুনুন।
শ্রাবণীর কথা শুনে ফিরে তাকে আদিত্য।
– আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমাকে বাঁচানোর জন্য।
– ও মা! আপনি ধন্যবাদ ও বলতে জানেন। আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না। ( অবাক হওয়ার ভান করে)
– কেনো আমি কি এতটাই পা*ষাণ নাকি?
– না না সেটা বলিনি। আপনি তো অনেক ইনোসেন্ট একটা মেয়ে।
সেই দিনের পর থেকে শ্রাবণী আর আদিত্যর অনেক ভালো সম্পর্ক হয়ে যায়। বলতে গেলে ফ্রেন্ড এর চেয়েও বেশি।
———-
আদিত্য নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছে না। কি শুনছে সে এগুলো। এটা কি আদো ও সম্ভব?
কিছু সময় আগে
সেই ঘটনার পর ৩ মাস চলে গেছে। আজকে শ্রাবণীর জন্ম দিন। তাই আদিত্য ভেবেছে শ্রাবণীর বাড়িতে গিয়ে শ্রাবনীকে সারপ্রাইজ দিবে সে। যেই ভাবা সেই কাজ। ১২ টা বাজার একটু আগে চুপি চুপি শ্রাবণীর ফ্ল্যাটে ঢোকে আদিত্য। শ্রাবণীর ঘরের দিকে যেতেই কিছুটা অবাক হয়ে যায় ।কারণ শ্রাবণী কার সাথে যেনো গম্ভীর ভাবে কথা বলছে।আদিত্য আরো এগিয়ে যায় শোনার চেষ্টা করে । শ্রাবণী কাকে যেন বলছে
– এভাবে তো চলবে না । সে যদি আমেরিকায় বসে থাকে তাইলে তাকে খু*ন করে আমার প্রতিশোধ নিবো কেমন করে!
……….
– না এভাবে হবে না সে যদি না আসে তাইলে আমি ই যাবো ওর কাছে। তবুও আমার প্রতি*শোধ নিবই আমি।
…….
– আমার পাসপোর্ট রেডী করো কুইকলি!
( এ কথা বলে শ্রাবণী ফোন রেখে দেয়। আর এইদিকে আদিত্য তো পুরো অবাক । সে শ্রাবনীকে সারপ্রাইজ করতে গিয়ে নিজেই সারপ্রাইজড হয়ে গেছে। কাকে মা*রবে শ্রাবণী। কিসের প্রতি*শোধ নিবে সে? এসব ভাবতে ভাবতেই হটাৎ আদিত্যর কাছে থাকা একটা ফুলদানি নিচে পড়ে যায়। শ্রাবণী কোনো কিছু পড়ার আওয়াজ শুনতে পায়। কিন্তু সে তো একা )
– কে? কে ওখানে? ( দ্রুত গতিতে দরজার দিকে এগিয়ে যায় সে।
আদিত্য বুঝতে পারছে না সে কি করবে। মূর্তির মত দাড়িয়ে আছে। কিছু ভাবতে পারছে না যা হওয়ার হবে।শ্রাবণী দরজার কাছে আসতেই আদিত্যকে দেখতে পায়। ভয় পেয়ে যায় শ্রাবণী ।আদিত্য কিছু শোনেনি তো?)
– আদিত্য! তুমি এখানে কি করছো?
শ্রাবণীর কোথায় হুশ ফেরে তার।
– তোমাকে বির্থডে সারপ্রাইজ দিতে এসেছিলাম কিন্তু এখন নিজেই সারপ্রাইজ হয়ে গেছি।
আজকে যে শ্রাবণীর জন্মদিন সেটা শ্রাবণীর নিজেরই মনে নেই।
– তুমি সব কিছু শুনে ফেলেছো?(কিছুর ঘাবড়ে যায় শ্রাবণী)
– হুম আমি সব শুনেছি। কাকে মা*রতে চাইছো তুমি ? চিন্তা করো না আমি কাওকে কিছু বলবনা।
– আমার বাবার খু*নি কে(গম্ভীর সুরে)
– তুমি চাইলে আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি।
– আমি তোমাকে কেনো বিশ্বাস করবো?
– লুক ইনটু মাই আইস! তোমার কি মনে হয় আমি মিত্থা বলছি?
(শ্রাবণীর কোনো সাড়া না পেয়ে পাশে থেকে একটা ছু*রি নিয়ে)
– ঠিক আছে তোমার যদি বিশ্বাস না হয় তাইলে এইযে নাও ছু*রি আমাকে মে*রে ফেল।
কিছুক্ষণ আদিত্যর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলো শ্রাবণী। কেমন একটা মায়া পুরো চোখ জুড়ে)
– ঠিক আছে বিশ্বাস করলাম তোমায়। কিন্তু কখনো বিশ্বাস ঘাত*কতা করোনা । এটা আমি একদম সহ্য করতে পারি না।
– কিন্তু কেনো তুমি এমন করছো?
(শ্রাবণী ছল ছল চোখে বলে ওঠে)
– শুনতে চাও? ঠিক আছে শোন তবে!
আজ থেকে ১১ বছর আগের কথা……
চলবে…..
( কি হয়েছিল ১১ বছর আগে? জানতে চোখ রাখুন নেক্সট পড়বে)