Life_Game পার্ট- ৩ #Writer_Rukaiya_Rakhi

0
223

#Life_Game
পার্ট- ৩
#Writer_Rukaiya_Rakhi

– বাবা বাবা , তোমার এই অবস্থা কে করলো তোমার শরীরে এত আ*ঘাত কেনো ,বাবা?(কান্না করে)
– ওরা তোকে পেলে তোকেও ছাড়বে না, চলে যা এখান থেকে মা! তাড়াতাড়ি পালা!
– কি বলছো বাবা , আমি তোমাকে ছাড়া কোথাও যাবো না।
– না মা, আমি আর বেশিক্ষণ বাঁচবো না। তুই নিজের জীবন বাঁচা। এখান থেকে যা।
– কী বলো এসব!
– যদি আমাকে ভালোবেসে থাকিস তাইলে পালা এখান থেকে। আর কথা দে নিজের খেয়াল রাখবি।
– ঠিক আছে,বা…..
বাবা বাবা কী হলো বাবা ! হটাৎ তোমার শরীর ঠাণ্ডা হয়ে গেলো কেনো? কথা বলছো না কেনো বাবা!
বাবা আআআআ….

ধরফরিয়ে ঘুম থেকে ওঠে শ্রাবণী। চোখ থেকে ২ ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে তার। কারণ গত ১০ বছর হলো সে চোখ বুজলেই এই স্বপ্ন টা দেখে। এটা তো শুধু স্বপ্ন না তার জীবনের নির্মম অতীত।
বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায় শ্রাবণী। চোখ মুখে পানি ছিটিয়ে দেয় ।তারপর আয়নার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
উহু, ও আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকলেও আয়নায় নিজের চেহারা দেখছে না কিন্তু। ও ভাবছে কিভাবে ওর বাবার হত্যাকারীদের মা*রা যায়।
– আমি ছা*ড়বোনা তোদের , কখনো ছাড়বো না। নির্মম মৃ*ত্যু দিবো তোদের আমি। আমার বাবাকে কেরে নিয়েছিস। তোদের আর বেশিদিন নেই।দিন গুনতে থাক।
ঠিক সেই মুহূর্তে শ্রাবণীর ফোন বেজে ওঠে।
– হ্যালো ম্যাম।
– সব কিছু ঠিক হয়েছে?
– জি ম্যাম সব ব্যবস্থা করা হয়ে গেছে।
– ok
ফোন কেটে দিয়ে একটা সস্থীর নিঃশ্বাস ফেলে শ্রাবণী।
– যাক শেষ মেশ আমার উদ্দেশ্য সফল হতে যাচ্ছে।
——-
– বাবা , আমি আগামী বুধবার ঢাকায় চলে যাচ্ছি।
– এভাবে আমাকে একা রেখে চলে যাচ্ছিস।ক্যামনে থাকবো তোকে ছাড়া।
– আরে ধুর কি যে বলো না। আমি কি একবারে যাচ্ছি নাকি! পড়াশোনার জন্য যাচ্ছি।যদি বেচেঁ থাকি তাহলে আবার আসবো।
– যদি বেচেঁ থাকি মানে?কি বলিস এগুলো আজেবাজে।
– আরে এমনি বললাম। এত seriously নাও কেন?
– তোর কথা অনেক মনে পড়বে রে ।
– আমারো তো অনেক মনে পড়বে।(জড়িয়ে ধরে)

কী ব্যাপার?অবাক হচ্ছেন? শ্রাবণীর বাবা তো মারা গেছে তাহলে আবার কই থেকে আসলো?আপনাদের কনফিউশন দুর করি।উনি হলেন সাঈদ চৌধুরী শ্রাবণীর পালিত বাবা। শ্রাবণীর বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে উনি ই শ্রাবনীকে বড়ো করেছেন।শ্রাবণী ওনাকে বলেছে যে পড়াশোনার জন্য যাচ্ছে। কিন্তু ওর উদ্দেশ্য যে অন্য।
—-
শ্রাবণী আজ তার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। তার এত বছরের অপেক্ষা শেষ হতে চলেছে।
– সাবধানে থেকো বাবা। আমি চলে যাচ্ছি।
– তুইও সাবধানে থাকিস মা। নিজের খেয়াল রাখিস।
– আরে বাবা তুমি কান্না করছো কেনো?এরকম করলে আমি ক্যামনে যাবো বলো ত।
– আচ্ছা করবো না কান্না।
– এইতো আমার সুইট বাবা।আমাকে এখন যেতে হবে বাবা। ভালো থেকো।
– ভালো থাকিস মা।
শ্রাবণী ঢাকার উদ্দেশ্যে বাস এ উঠে । সাইদ চৌধুরী অশ্রুসিক্ত চোখে মেয়ের যাওয়ার দিকে চেয়ে আছেন ।কেনো যেনো তার মন মানছে না।কোনো এক অজানা আসঙ্খায় মন টা তার বেকুল হয়ে আছে।
——
বাঁচাও বাঁচাও!কে আছো এখানে আমাকে কেউ বাঁচাও!এই সাইকো টা আমাকে মেরে ফেলবে বাঁচাও!
– তোর চিৎকার এখানে কেউ শুনবে না। এটা আমার এলাকা! হা হা হা তোর রক্তে আজকে আমি গোছল করবো।
– ছেড়ে দে আমাকে।
– তোকে ছাড়বো?এটা সম্ভব না। কারণ তোরা আমার বাবাকে মেরেছিলি। আমার বাবা ও বাঁচার জন্য অনেক চিৎকার করেছে। তুই ছেড়ে দিয়েছিলি?
– ছেড়ে দে । ছেড়ে দে। আ আ আ …..

কি হলো?সব মাথার উপর দিয়ে গেলো? যাওয়ারই কথা ! বাদ দেন আপনি বুঝবেন ও না। আমি ই বলি।
সেদিন ঢাকা পৌঁছেই শ্রাবণী প্ল্যান করতে থাকে কিভাবে ওর বাবার প্রথম খুনিকে মারা যায়। আর শ্রাবণীর বাবার প্রথম খুনি হলো ওর বাবার বিজনেস পার্টনার রউফ খান। সারাদিন মেয়ে বাজি আর বার নিয়ে পড়ে থাকে। অন্য দিনের মতো আজও রউফ খান বারে গেছেন মস্তি করতে।
শ্রাবণী ও প্ল্যান মত সেই বারে যায় ।উদ্দেশ্য ওকে জব্দ করা। শ্রাবণী নিজ থেকে এগিয়ে যায় রউফের কাছে। আর মেয়ে মানুষ দেখলে তো রউফের মাথা ঠিক থাকে না।সুন্দরী হলে তো কথাই নেই।
– হেই beautiful ।
– আমাকে বলছেন?
– হুম এখানে তো একটাই সুন্দরী দেখতে পারছি আমি।
– আরে কি যে বলেন না!
– তো একা এসেছ নাকি সাথে কেউ আছে?
– না একদম একা।(একটু মন খারাপের ভাব নিয়ে) But আপনি চাইলে কিন্তু কেউ হতে পারেন।
– ওহ রিয়েলি।
– হুম অবশ্যই। আপনি যদি চান তাহলে আমার ফোন নম্বর নিতে পারেন।
– তাই নাকি! obviously ,its my pleasure.
– আমি এখন যাই ফোন করবেন কিন্তু।
– এখনি চলে যাবে!
– don’t worry.. you have my phone number. Call me.
তারপর শ্রাবণী ওখান থেকে চলে আসে।শ্রাবণী জানে রউফ ঠিকই ওকে ফোন করবে।

বিছানায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছে শ্রাবণী। হটাৎ একটা নম্বর থেকে ফোন আসে। শ্রাবণী বুজতে পারে এত রাতে কে হতে পারে।শ্রাবণী ফোন টা রিসিভ করে।রউফের সাথে কথা বলতে থাকে। নিজের মিষ্টি মিষ্টি কথায় ফাঁসাতে থাকে ওকে। এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর শ্রাবণী ওকে নিজের বাসায় আসতে বলে
– হ্যান্ডসাম, আপনি চাইলে কিন্তু আমার বাসায় আসতে পারেন। আমি একাই থাকি।
– সত্যি?
– হুম সত্যি। তাহলে কবে আসছেন?
– তুমি চাইলে আজ ই যাওয়া যায়।I am coming ..
– i have a surprise for you …come fast then.
– সারপ্রাইজ আমার জন্য? তাহলে তো যেতেই হয়।
( মনে মনে – তোর জন্য এমন সারপ্রাইজ রেখেছি। তুই কোনোদিন ভুলবি না)
—-
শ্রাবণী সেজেগুজে রউফের জন্য অপেক্ষা করছে। কিছুক্ষণ পর বেল বাজার শব্দ পায় শ্রাবণী।
( শেষ মেশ শিকার ফাঁদে পা দিয়েছে)।শ্রাবণী গিয়ে দরজা খুলে দেয়।
– হেই হ্যান্ডসাম, আপনি এসেছেন।
– হুম শুধু তোমার জন্য।
– কি যে বলেন না!
– আরে সত্যি!
– Okh sit, let me bring some drinks for you.
রউফ সোফার উপর বসে পড়ে। মনে মনে অনেক খুশি হচ্ছে সে। কিন্তু ওর কপালে যে কি হতে চলেছে সেটা তো ও জানেনা।কিছুক্ষণ পর শ্রাবণী ড্রিংকস নিয়ে আসে।
– এই নিন আপনার ড্রিংকস। ইনজয়!!
কিন্তু ড্রিংকস খাওয়া পর হটাৎ রউফের মাথা ঘুরতে শুরু করে।
– আরে আমার মাথা ঘুরছে কেনো। কি মিসিয়েছ তুমি ড্রিংকস এ!!
– হা হা! চিন্তা করিস না বিষ দেইনি। ঘুমের ওষুধ দিয়েছি । এত সহজে তোকে মারা যাবেনা।
—–
চোখ খুলতেই রউফ নিজেকে একটা নির্জন ঘরে চেয়ারের সাথে বাধা অবস্থায় আবিষ্কার করে । আর ওর পাশেই কুড়াল নিয়ে দাড়িয়ে আছে শ্রাবণী। কিন্তু এখন একদম অন্য রকম লাগছে তাকে। গায়ে ব্ল্যাক সুট, পায়ে ব্ল্যাক শু, আর চোখ দুটো রক্তের মত লাল হয়ে আছে।
– শ্রাবণী তুমি আমাকে এভাবে বেধে রেখেছো কেনো? কে তুমি!
– আমি কে? আমি এক অভাগী যার সুখ শান্তি তুই কেরে নিয়েছিস।
– মানে কি বলছো তুমি?
– মনে আছে রিহান চৌধুরীর কথা? যাকে তুই মেরে ফেলেছিস! আমি তার মেয়ে।
– এটা কিভাবে সম্ভব। তুই তো সেদিন নদীতে ডুবে মরে গেছিলি!
– আমি মরিনি। বেচেঁ আছি আমি। তোদের শেষ করতে। আর আগে ম*রবি তুই।
শ্রাবণী হাতে থাকা কু*ড়াল দিয়ে রউফের হাঁটুতে সজোরে কো*প মারে। ব্যাথায় রউফ চিৎকার দিয়ে ওঠে।রউফের চিৎকারে শ্রাবণী পাগলের মত হাসতে থাকে।
– কি খুব ব্যাথা করছে না? কেমন লাগে মৃত্যু যন্ত্রণা!
– আমাকে মাফ করে দাও শ্রাবণী।
– কখনো না।
শ্রাবণী ওর ওপর হাতুতেও কোপ মারে। তারপর সেখানে মরিচ দিয়ে দেয়। রউফ ব্যাথায় চিৎকার করে প্রাণ ভিক্ষা চাচ্ছে। বার বার বাঁচাও বাঁচাও করছে।
– ইসস !তোকে বললাম তো এখানে তোর চিৎকার কেউ শুনবে না।এটা সাউন্ড প্রুফ রুম।তুই খুব বেশি কথা বলিস আসলে।
একটা ধারালো ছু*রি দিয়ে রউফের জিহ্বা কে*টে দেয় শ্রাবণী। তারপর….

চলবে?
(তারপর কি হলো?😱 কী করলো শ্রাবণী রউফের সাথে?কমেন্টে জানিয়ে দিবেন😉)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here