_লাল_নীল_সংসার_ #_মারিয়া_রশিদ_ #_পর্ব_২৩_

0
311

#_লাল_নীল_সংসার_
#_মারিয়া_রশিদ_
#_পর্ব_২৩_

চারিদিকে অনেক অন্ধকার। কিন্তু,, কৃত্রিম আলোয় সেই অন্ধকার কেটে গেছে। রাস্তাগুলো মানুষের চলাচলে ব্যস্ত। গাড়ির হর্ন,, ধোয়া,, মানুষের আওয়াজ,, সব মিলিয়ে ভরে আছে চারিদিকে। আওয়াজে আওয়াজে চারপাশে ভরে গেছে।

ফুটপাতের রাস্তা দিয়ে এলোমেলো ভাবে হাটছে আদনান। এতো কোলাহল তার কানে যেন যাচ্ছেই নাহ। নিজের ভাবনা যেন তাকে ঘিরে ধরে আছে। একটু আগের কাহিনি মনে পড়তেই শিরদাঁড়া বেয়ে কম্পন বয়ে যাচ্ছে তার। নিজেকে কেমন ছন্নছাড়া লাগছে।

আশেপাশে একবার চোখ বোলায় আদনান। আশেপাশের মানুষগুলো কত ব্যস্ত। এতো ব্যস্ত মানুষের মাঝে আজ নিজেকে সব থেকে বড় কাজহীন অলস মানুষ মনে হচ্ছে। এখানে প্রতিটাহ মানুষের তাড়া,, শুধু তারই যেন কোনো তাড়া নেই। আদনান পাশের একটা লেকের ধারে চলে যায়। জায়গা টাকে প্রেমিক প্রেমিকার মিলন মেলা মনে হচ্ছে। আদনান লেকের এক কোনায় পাড়ে বসে। ভাবতে থাকে কিছু সময় আগের ঘটনা!!!

#_Flashback_………
স্নেহার কথা মতো আদনান পার্কটির সামনে দাড়িয়ে আছে। কিছু সময় পর একটা হোয়াইট কালারের গাড়ি পার্কটির সামনে এসে দাড়ায়। আদনান গাড়িটার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকায়। গাড়ি থেকে নেমে আসে স্নেহা। আদনান স্নেহাকে দেখে হালকা হাসলেও,, হাসি টাহ আবার মিলিয়ে যায়। কারন,, স্নেহাকে দেখতে খুব শুকনো শুকনো লাগছে।

স্নেহা এগিয়ে এসে আদনানের দিকে তাকিয়ে একটা মলিন হাসি দেয়। কেন জানি,, আদনানের কাছে আজ স্নেহার হাসিটাহও মন মতো হচ্ছে নাহ। স্নেহা আদনানের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” কেমন আছিস?”

আদনান হালকা গম্ভীরতা নিয়ে বলে ওঠে,
–” আলহামদুলিল্লাহ! তুই?”

–” হুম! ভালো। অনেক ভালো আছি। চল একটু ভেতরে যাই।”

–” হুম! চল!”

দুইজনে ভেতরে চলে যায়। স্নেহা এগিয়ে গিয়ে একটা বেঞ্চে বসে। আদনানও এগিয়ে গিয়ে স্নেহার পাশে বসে। স্নেহা আদনানের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” তোকে কিছু কথা বলার আছে আমার।”

আদনান স্নেহার দিকে তাকিয়ে আছে। আজ স্নেহার মুখে হাসি থাকলেও,, কেমন যেন এক গম্ভীরতা কাজ করছে তার মুখে। আদনান তাও নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বলে ওঠে,
–” হুম! বল!”

স্নেহা কিছু সময় চুপ করে থাকে। তার একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে ওঠে,
–” আদনান! জানিস,, একটা সুখবর আছে।”

–” কি সুখবর?”

স্নেহা আদনানের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বলে ওঠে,
–” আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।”

আদনান চমকে উঠে স্নেহার কথায়। মুহুর্তের মাঝেই যেন মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়। বিয়ে? তার বার্বিডলের বিয়ে ঠিক হয়েছে? এইটা সুখবর? হ্যা! সুখবরই তো,, স্নেহার কাছে তো অবশ্যই সুখবর। কিন্তু,, আদনান কি তাহলে তার বার্বিডলকে হারিয়ে ফেলার শেষ রাস্তায় চলে এসেছে? এইবার কি সারাজীবনের জন্য চলে যাচ্ছে তার বার্বিডল?

তাড়াতাড়ি অন্যদিকে ফিরে যায় আদনান। কারন,, তার চোখ গুলো যে ছলছল করছে। ঝাপসা হয়ে আসছে সামনের সব কিছু। তার এই ছলছল চোখ যে,, স্নেহাকে সে দেখাতে চায় নাহ। চাই নাহ আদনান। স্নেহা সুখের সন্ধানে যাচ্ছে,, কি করে সেই রাস্তায় সে চোখের পানি ফেলবে? এতে যে স্নেহার কষ্ট লাগবে,, সৃষ্টি হবে অমঙ্গলের। যা আদনান কখনোই চায় না। নিজেকে একটু স্বাভাবিক করে স্নেহার দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে বলে ওঠে,
–” ওয়াও! কার সাথে? আপনার হবু বরের নাম বলেন প্লিজ!”

স্নেহা আদনানের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” ইয়াশ!”

আদনান মলিন হাসে। তাহলে,, তার করা ভয় সত্যিই হয়ে গেলো। ইয়াশ পেয়ে গেলো তার বার্বিডল কে। নাহ! সমস্যা নেই। কারন,, তার কাছে আসলে তার বার্বিডল কখনো আরামে থাকবে নাহ,, কারন তার যে সেই যোগ্যতাই নেই,, নেই সেই সামর্থ। কিন্তু,, ইয়াশের সব সামর্থ আছে। কিন্তু,, মন টাহ যে মানছে নাহ। মনে হচ্ছে এক আকাশ সমান কষ্ট দলা পাকিয়ে উঠছে। আদনান আবার বলে ওঠে,
–” ডেট ঠিক হয়েছে?”

–” হুম! আগামীকাল এইংগেজমেন্ট। ইয়াশ আবার দ্রুত কানাডায় চলে যাবে,, তাই বিয়ে তাড়াতাড়ি করবে। এইংগেজমেন্টের দুইদিন পর সংগীত মেহেন্দি,, পরের দিন গায়ে হলুদ,, তার পরের দিন বিয়ে,, পরের দিন রিসিপশন। তার দুইদিন পর হয়তো কানাডায় চলে যাবো।”

আদনান একটা নিশ্বাস নিয়ে বলে ওঠে,
–” কানাডায় চলে যাবি?”

স্নেহা সম্মতিসূচক মাথা নাড়িয়ে বলে ওঠে,
–” হ্যা! কাগজ পত্র সব নাকি রেডি হয়ে গেছে। ওখানে গিয়ে স্টাডি শেষ করবো। বিয়ের পর বউকে কি কেউ এখানে রেখে যায়? আমাকেই বা কেন রাখবে?”

আদনানের বুকের ভেতর অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে। প্রচন্ড আকারে কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে,, চোখ ফেটে জল আর বুক ফেটে কান্না বেরিয়ে আসবে। কিন্তু,, সেইটাও এই মুহুর্তে যে সম্ভব নাহ। হেরে গেছে আদনান,, বাস্তবতার কাছে নিজের ভালোবাসাকে,, নিজের বার্বিডলকে অবশেষে সে হারিয়েই ফেললো। স্নেহা আদনানের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” আদনান!”

–” হুম!”

–” আমি তো আমার বিয়ের পর চলে যাবো। অনেক দুরে চলে যাবো,, সেই সুদুর কানাডায়। আবার কবে আসবো,, জানি নাহ। আর আমার বিয়েও তো হয়ে গেলো বলেই। এই সপ্তাহের মাঝেই বিয়েটাহ হয়ে যাচ্ছে। আমি চাই,, এই কয়দিন তুই আমাকে অনেক সময় দে।”

আদনান চমকে স্নেহার দিকে তাকায়। তারপর বলে ওঠে,
–” মানে?”

–” মানে,, এই কয়েকদিন তুই আমাকে অনেক সময় দে। আমার বিয়ের দিন পর্যন্ত,, প্লিজ! আমি তোর কাছে এই কয়টাহ দিন চেয়ে নিচ্ছি। তারপর তো আমি চলে যাবো,, আর তো এমন করে সময় চাইতে পারবো নাহ।”

–” কিন্তু,, আমি যে তোদের বাসায় যেতে চাই নাহ।”

স্নেহা দাড়িয়ে বলে ওঠে,
–” আমি জানি আদনান! এই কয়েকটা দিনই তো। আমি তোর কাছে অনুরোধ করছি। প্লিজ! আমি চাই,, তুই এই কয়টাহ দিন আমার ছায়া হয়ে থাক। তারপর তো আর কখনো বলবো নাহ,, প্লিজ! আদনান!”

স্নেহার বিয়ে চোখের সামনে দেখতে হবে তাকে? সহ্য করবে কিভাবে আদনান? আদনানের মাথায় কোনো কাজই করছে নাহ। কিন্তু,, সে যদি এখন নাহ করে তার বার্বিডল যে বড্ড কষ্ট পাবে। আর সত্যিই তো,, এরপর তো আর তার বার্বিডল কে সে পাবে নাহ। এই কয়েকদিন তার কাছে থাকলে ক্ষতি কি? এই কয়েকটাহ দিনই তো আর সময় আছে তার কাছে। এই সময় টুকু সে নষ্ট কেন করবে? আদনান একটা নিশ্বাস নিয়ে স্নেহার সামনে দাড়িয়ে বলে ওঠে,
–” হুম! তুই যা বলবি তাই হবে। আজ পর্যন্ত তোর কোনো কথা আমি নাহ শুনে থেকেছি? তাহলে আজ কেন থাকবো? আজও তোর সব কথা শুনবো। তুই যা বলবি তাই হবে। আমি তোর বিয়ে হওয়ার পর্যন্ত প্রতিটা সময় তোর সাথেই থাকবো। প্রমিজ!”

স্নেহা হঠাৎ করেই আদনানকে জড়িয়ে ধরে। আদনান হতভম্ব হয়ে আছে। আদনানেরও মন চাচ্ছে স্নেহাকে একটি বার জড়িয়ে ধরতে। জড়িয়ে ধরে বলতে চাচ্ছে তার মন যে,, সে স্নেহাকে ভালোবাসে। অনেক অনেক ভালোবাসে তার বার্বিরডল কে। হারাতে চায় নাহ সে। কিন্তু,, সে যে ব্যর্থ হয়ে গেছে। সে যে পারে নি স্নেহার যোগ্য হতে। সে একটা বেকার ছেলে।

কোনোদিক দিয়েই নিজেকে স্নেহার যোগ্য বলে মনে করতে পারে নাহ আদনান। নাহ পরিবারের দিক দিয়ে আর নাহ নিজের দিক দিয়ে। স্নেহা কি কখনো পারবে এসি ছেড়ে ফ্যানের বাতাস সহ্য করতে। যাদের কখনো লাইট অফ হয় নাহ,, কারেন্ট চলে গেলে আইপিএস ব্যবহার করে,, সে কি পারবে,, কারেন্ট চলে গেলে মোমের আলোয় থাকতে? জানে নাহ আদনান। শুধু এইটুকুই জানে,, সে হারিয়ে ফেলেছে তার বার্বিডলকে।

সরে আসে স্নেহা আদনানের কাছে। উল্টো দিকে ঘুরে নিজের চোখ মুছে নেয় স্নেহা। আদনান বুঝতে পারে,, কিন্তু কেন জানি জিজ্ঞেস করলো নাহ,, এই অশ্রুর কারন কি। হয়তো সেইটা আদনানের মাথায়ই আসছে নাহ। আদনানের মাথায় তোহ এখন একটা কথায় ঘুরপাক খাচ্ছে,, হারিয়ে ফেলেছে তার বার্বিডলকে। এমন সময় স্নেহার ফোনে একটা কল আসতেই স্নেহা রিসিভ করে বলে ওঠে,
–” হ্যালো!”
–”……………..”
–” কোথায়?”
–”…………………”
–” আচ্ছা! আসছি আমি।”

কল কেটে আদনানের দিকে তাকায় স্নেহা। আদনানকে কেমন যেন পাথরের মতো লাগছে তার কাছে। তবুও স্নেহা সেইদিকে নাহ যেয়ে বলে ওঠে,
–” বাসা থেকে ফোন আসছে,, আমাকে যেতে হবে। আমি গেলাম। আগামীকাল চলে আসবি কিন্তু।”

আদনান সম্মতিসূচক মাথা নাড়িয়ে বলে ওঠে,
–” আসবো। সাবধানে যাস।”

স্নেহা আর একপলক আদনানের দিকে তাকিয়ে চলে যায়। আদনান স্নেহার যাওয়ার পানে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আদনান। ধীর পায়ে হাটতে হাটতে বেরিয়ে আসে পার্ক থেকে।

#_Present_………..
পাশের একটা হকারের প্যাপু আওয়াজে ধ্যান ভাঙে আদনানের। আদনান আশে পাশে তাকিয়ে দেখে রাস্তায় আগের থেকে লোকজন কমে এসেছে। ফোন বের করে দেখে ১২ টাহ বাজতে যাচ্ছে। এতো সময় এখানে বসে ছিলো সে? মিসড কলে গিয়ে দেখে শিশিরের ২০ টাহ মিসড কল,, সাঝের ১৪ টাহ মিসড কল,, ছোয়ার ১২ টাহ মিসড কল উঠে আছে।

ইশশশ! বাসার সবাই মনে হয় অনেক চিন্তা করছে তার জন্য। আদনানের খারাপ লাগতে শুরু করে। আদনান কখনোই এতো রাতে বাইরে থাকে নি। তাছাড়া রাত ৯ টাহ অতিক্রম করলেই তার ভাই সব সময় চিন্তা করে,, কলও দেয়। আর আজ এতোবার কল দিলো কিন্তু আদনান ধরে নি। নিশ্চয় বাসার সবাই অনেক চিন্তা করছে। এমন সময় আবার কল বেজে উঠতেই আদনান ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে শিশির আবার ফোন দিছে। আদনান ফোন রিসিভ করে কানে নিয়ে বলে ওঠে,
–” হ্যালো!”

ওপাশ থেকে শিশির চিন্তিত + চেচিয়ে বলে ওঠে,
–” আদনান! কোথায় তুই? কতবার কল দিচ্ছি,, কল কেন ধরছিস নাহ? ঠিক আছিস তুই?”

–” হুম! ভাইয়া আমি একদম ঠিক আছি।”

–” তুই কোথায়? এতো রাত পর্যন্ত বাইরে কি করছিস?”

–” ভাইয়া! আমি আসলে,, আসলে….”

–” কি আসলে আসলে করছিস? আচ্ছা! আগে বাসায় আই,, তারপর কথা হবে।”

–” আচ্ছা! আসছি।”

–” সাবধানে আসিস। আল্লাহ হাফিজ!”

–” আল্লাহ হাফিজ!”

ফোন কেটে দেয় আদনান। একটা জোরে নিশ্বাস নেয় আদনান। চোখ বন্ধ করতেই স্নেহার মায়া ভরা মুখ টাহ ভেসে উঠে। তাড়াতাড়ি চোখ খুলে ফেলে আদনান। কষ্ট হচ্ছে আদনানের। চোখের কোনে জমে থাকা পানি টাহ আঙুল দিয়ে মুছে ফেলে আদনান। হাঁটা শুরু করে বাড়ি ফেরার জন্য গাড়ির উদ্দেশ্যে।

#_রাত_১২_টা_৪৫_মিনিট_………
আদনান কলিং বেল বাজাতেই সাথে সাথে সাঝ দরজা খুলে দেয়। আদনান ঘরে ঢুকতেই দেখে সোফার উপর আজিজ রহমান,, আহিয়া রহমান,, শিশির,, ছোয়া,, সবাই চিন্তিত মুখে বসে আছে। আদনানে খারাপ লেগে উঠে। বাবা- মায়ের প্রেশারের সমস্যা আছে,, ওনারা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যান। কিন্তু,, আজ তার জন্য জেগে রয়েছে।

আদনানের দিকে একপলক তাকিয়ে আজিজ রহমান নিজের রুমে চলে যান। সবাই ওনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। আহিয়া রহমান আদনানের সামনে এসে বলে ওঠে,
–” রাত করেছিস সমস্যা নেই। বড় হয়েছিস,, বন্ধু বান্ধব আছে। রাত হইতেই পারে। কিন্তু,, বাসায় এতো গুলা মানুষ তোর চিন্তা করবো,, এইডা কি তোর মাথা আসে নাই? নাকি ভুলে গেছিলি বাড়ির মানুষজনের কথা? তোর ভাই তোর চিন্তায় অসুস্থ পড়েছিলো,, প্রেশার বেড়ে গিয়েছিলো। নিজে তো ফোন করিসই নি,, বাসার সবাই করলো,, কিন্তু তুই রিসিভও করলি নাহ। এখনও নাহ খেয়ে আছে তোর ভাই। আমার মাথা ব্যাথা করতেছে। বউমা!”

ছোয়া বলে ওঠে,
–” জি! মা!”

–” এই ছেলে খেলে খেতে দাও। নাহলে তোমরা খেয়ে নাও। শিশির তাড়াতাড়ি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়। সারাদিন পরিশ্রম করে রাতে এতো ঝামেলা নাহ নেওয়ায় ভালো।”

আহিয়া রহমান নিজের রুমে চলে যায়। আদনান মাথা নিচু করে রয়েছে। আসলেই,, আজ সে অনেক বড় অন্যায় করে ফেলছে। শিশির আদনানের কাছে এসে বলে ওঠে,
–” মায়ের কথায় কিছু মনে করিস নাহ সোনা। মা,, তো তাই এরকম ভাবে বলেছে। আসলে,, তুই যদি ফোন করতি তাহলে,, তো আর কেউ এতো টেনশন করতো নাহ,, আর কোনো সমস্যাও হতো নাহ। মায়ের চিন্তা তো বেশিই হয় বল? তাই মা বেশি কথা বলেছে। কিছু মনে করিস নাহ।”

আদনান মলিন কন্ঠে বলে ওঠে,
–” আমি কি মনে করবো ভাইয়া? আমার তো ভুল হয়েই গেছে। আসলে,, আমার বোঝা উচিত ছিলো,, কিন্তু আমার খেয়াল হয় নি। মাফ করে দাও প্লিজ! আমার জন্য তোমার প্রেশাড় বেড়ে গেছে,, কষ্ট হয়েছে তোমার। সরি ভাইয়া! আর কখনো এরকম করবো নাহ।”

শিশির মুচকি হেসে বলে ওঠে,
–” আমি জানি তো,, আমার দুই ভাইবোন দুনিয়ার সব থেকে বেস্ট! তোকে এতো মাফ চাইতে হবে নাহ। যাহ গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আই,, সবাই একসাথে খেয়ে নিবো। আমিও চোখে মুখে একটু পানি দিয়ে আসি।”

–” হুম!”

শিশির রুমে চলে যায়। আদনান ছোয়ার দিকে তাকিয়ে দেখে ছোয়া মুচকি হেসে তার দিকে তাকিয়ে আছে। আদনান ছোয়ার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে ওঠে,
–” সরি,, ভাবি!”

ছোয়া হালকা হেসে বলে ওঠে,
–” আমাকে সরি বলতে হবে নাহ তোমার। আমি কি রাগ করছি? হুম? ভাগ্যিস,, কাহিনি টাহ ঘটিয়েছো তাই তোমাদের ভাই বোনের ভালোবাসা আরও বেশি করে চোখে পড়লো।”

আদনান শান্তির একটা হাসি দেয়। ছোয়া আবার বলে ওঠে,
–” যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো। মা- বাবা তো সন্ধ্যায় খেয়ে নেয় এখন। বাকি একজনেরও খাওয়া হয় নি। যাও আমি খাবার বাড়ছি।”

–” হুম! তুমি খাবার রেডি করো,, আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।”

কথাটাহ বলে আদনান রুমে চলে যায়। ছোয়া সাঝের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” সাঝ! বোন তুমি প্লেট গুলো টেবিলে আনো, আমি খাবার গুলো একটু গরম করে নিয়ে আসি।”

–” ঠিক আছে! ভাবি!”

ছোয়া আর সাঝ রান্নাঘরে চলে যায় খাবার গোছানোর তাগিদে। সবাই খেয়ে ঘুমোতে চলে যায়। সবাই হয়তো ঘুম! জেগে রয়েছে শুধু আদনান। আজ কি আর তার ঘুম আসবে? ভালোবাসার মানুষকে হারানোর যন্ত্রণা যে এখন তাকে তিলে তিলে শেষ করে দেবে।!!!

#_চলবে………….🌹

{{ হ্যাপি রিডিং🥹
রাগ কইরেন নাহ……🙂
ধৈর্য নিয়ে পড়েন…………..☺️ }}

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here