🍁🍁🍁
” ছোট’লোকের বা’চ্চা তোর সাহস হয় কি করে আমার ড্রেস টা নষ্ট করার তুই জানিস ড্রেস টার দাম কত অবশ্য জানবি কিভাবে জীবনে দেখেছিস কখনো এমন ড্রেস । ”
সামান্য একটা ভুলে বাড়ি ভরা লোকের সামনে এমন ব্যবহারে মিমের চোখে পানি চলে আসে আজ মিম আর সায়নের রিসেপশন পার্টি হচ্ছিল মিম রোজা দের সাথে আর ওর কাজিন দের সাথে কথা বলছিলো তখনই তরী কফি হাতে মিমের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো তখনই বেখেয়ালি হাত লেগে কফির কাপ থেকে কফি তরীর গায়ে পড়ে যায় সামান্য অসাবধানতায় তরী এমন কথায় লজ্জায় চোখে পানি চলে আসে অশ্রু সিক্ত চোখে সায়নের দিকে তাকায়।
সায়ন অবাক হয়ে বলে,,
সায়ন: মিম তোর ভাবী হয় তরী বিহেভ ইউর স্লেফ
সায়নের কথায় তরী রেগে বলে,,,
তরী: তুই দেখতে পাসনি কিভাবে ইচ্ছে করে আমার গায়ে কফি টা ফেলে দিলো
সায়নের দাদি: বাদ দে দিদি ভাই এসব থা’র্ডক্লাশ মেয়েগুলা কি বুঝবে না চাইতে পেয়ে গেছে তো তাই
নিজের দাদির মুখে এমন কথায় সায়ন রেগে যায় তবুও শান্ত গলায় বলে
সায়ন: দাদি তোমাকে আমি সম্মান করি আশা করছি সেই সম্মানের মর্যাদা দেবে তরীর ভুল টা দেখো ওকে দয়া করে উস্কে দিও না
সায়নের দাদি : কি বললি আমি উস্কে দিচ্ছি
রোজা: থামো সবাই সামান্য একটা টপিক কে এতো বড় করার কি আছে তরীপু তুমি চেঞ্জ করে নাও তাহলেই হয়ে যায়
তরী: ছোট ছোটর মতো থাক
ইফাজ : ভাবীপু কিন্তু ইচ্ছে করে ধাক্কা দেয়নি তুই নিজেই তো মাঝ খান দিয়ে যাচ্ছিলি কফি নিয়ে তখনই
তরী :ইফাজ ভাইয়া প্লিজ আমাকে দো’ষারোপ করো না ওর হিংসে হচ্ছিল আমার গায়ে এতো দামী ড্রেস দেখে তার জন্যই,,,
_ এনাফ ইজ এনাফ তরী
তরীর কথার মাঝেই পরিচিত স্বরে সবাই দরজার দিকে তাকায় লাগেজ হাতে সিমথি কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সবাই যতটা খুশি হবার কথা তার থেকে ও বেশী ভড়কে যায় সিমথির রক্তবর্ণ চোখজোড়া দেখে।
_ বোন তুই ( সায়ন)
সিমথি সায়নের কথার উত্তর না দিয়ে ভেতরে ঢুকে সিমথি তরীর সামনে গিয়ে দাঁড়ায় সিমথিকে দেখে তরী তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে তবুও নিজেকে সামলে রাখে কারণ সিমথি রেগে আছে মানে সবচেয়ে ভয়ানক একটা মেয়ে ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
সিমথি : অ’ মানুষ হবার শেষ পর্যায় চলে গেছিস তুই তোর দাদি তোকে এই শিক্ষা দিলো বড়দের সামান্যতম রেসপেক্ট টা ও করতে শেখায়নি নাকি ( দাঁতে দাঁত চেপে)
সিমথির কথায় সিমথির দাদি ( রহিমা বেগম) তেতে উঠে এই মহিলা সিমথি কে একদমই সহ্য করে পারে না তার একটাই কারণ উনার ভাষ্যমতে সিমথি উনাকে কখনোই সম্মান করে না
রহিমা বেগম : এতো বছর পর বাড়িতে এসেই শুরু হয়ে গেলো আমার দোষ ধরা
সিমথি : কি বলুন তো আপনার সাথে আমার মতামত কখনোই ম্যাচ হয় না নিজের যেমন বানিয়েছেন ও একটা তেমন একদম মেইড ফর ইচ আদার ( উপহাসের হেসে)
তরী : সিমথি ( হালকা চেঁচিয়ে)
সঙ্গে সঙ্গে সিমথি তরীর দিকে ভয়ানক দৃষ্টিপাত করে তরী চুপসে যায় যতই রাগ দেখাক সিমথির রাগের ধারে কাছেও তরী কখনো যেতে পারবে না এটা তরী ভালো করেই জানে।
সিমথি : রুবি আপু ( শান্ত গলায়)
রুবি: হ কও ছুডু আফা
সিমথি: এক কাপ ঠান্ডা কফি নিয়ে আসো প্লিজ
রুবি: ঠান্ডা কফি দিয়া কিতা করবা তুমি
সিমথি কিছু না বলে রুবির দিকে তাকায় রুবি জিভে কামড় কেটে চলে যায় কফি আনতে কারণ বাড়ির সবাই জানে সিমথিকে কথার পাল্টা প্রশ্ন করা হোক এটা সিমথি মোটেও পছন্দ করে না
তুহিন: তোর ল্যান্ড করতে এতো লেট হলো কেনো তোর তো বিয়ের দিন আসার কথা ছিলো
তুহিনের কথায় সিমথি পেছনে তুহিনের দিকে তাকায় সঙ্গে সঙ্গে তুহিনের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটা ছেলের উপর নজর আটকে যায় কত বছর পর চিরচেনা সেই মুখ টা দেখতে পেলো। আচমকায় সিমথি ভেতর জুড়ে শীতল হাওয়া বয়ে যায়
তুহিন: কিরে কিছু বল
তুহিনের কথায় সিমথির ঘোর ভাঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে চোখ ফিরিয়ে নেয় এই মানুষটা আর যায় হোক সিমথির না আর যে জিনিস সিমথির না সেই জিনিসে কেনো নজর দেবে সিমথি কিন্তু মন কি কথা শুনে।
সিমথি: কাজে আটকে গিয়েছিলাম
রুবি: এই নেও ধরো
রুবির হাত থেকে কফির কাপ টা নিয়ে একটা আঙ্গুল ডুবিয়ে কফির তাপ দেখে। আচমকা কফি টা তরীর ড্রেসে ছুড়ে মারে হুট করে এমন অপ্রত্যাশিত কাজে উপস্থিত সবাই ভড়কে যায় তরী কিছু বলার আগেই সিমথি বলে,,,
সিমথি: নে একটু আগে ভাবীপু কে ঠিক যা যা বলছিলি আমাকে এবার বল
সিমথির ঠান্ডা গলায় কথা শুনে সায়ন রা ভড়কে যায় তরী ও চুপ মেরে যায় তরীকে চুপ থাকতে দেখে সিমথি মুচকি হাসে
সিমথি : নেক্সট এন্ড লাস্ট ওয়ার্নিং দিচ্ছি তোকে এতোদিন এ বাড়িতে কি করেছিস কিভাবে চলেছিস আই ডোন্ট কেয়ার বাট নাউ ইন দিজ মোমেন্ট এখন থেকে ভালোভাবে চলবি ভাবীপু এ বাড়ির বউ নয় মেয়ে আর মা-বাবাই বেঁচে থাকা কালীন এ বাড়ির বউ মেয়ে এরা কখনো আলাদা ছিলো না আজ ও নয়। ভাবীপুর সাথে একটা মিস বিহেভ ও যে করবে আই সয়ার সেদিনই এ বাড়িতে তার লাস্ট দিন
সিমথি কথা গুলো বলে থামে রাগে সিমথির মাথা ফেটে যাচ্ছে তরীর প্রত্যেক টা কথা সিমথি শুনেছে আর পুরোটা ঘটনা নিজের চোখে দেখেছে সিমথি পারছে তরীকে ঠাটিয়ে দুইটা দিতে। সিমথি মিমের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় এই মেয়েটাকে সিমথির ছোট থেকেই ভীষণ ভালো লাগতো মিম হলো সায়নে ফ্রেন্ড ফ্রেন্ডশিপ থেকেই ওরা রিলেশনে যায়।
সিমথি: ভাবীপু
সিমথির ডাকে মিম চোখের পানি আটকে সিমথির দিকে তাকায় সিমথি মুচকি হেসে বলে
সিমথি: এটা তোমার নিজের বাড়ি ভাবীপু কেউ তোমাকে কিছু বললে কখনো মুখ বুঁজে থাকবে না তুমি এমন সরলতা দেখালে এরা তোমাকে পেয়ে বসবে। তোমাকে আমি বলছি নেক্সট টাইম তরী বা রোজা যে কেউই তোমার সাথে খারাপ বিহেভ করুক না কেনো প্রতিবাদ করবে ইচ্ছে হলে গায়েও হাত তুলবে বাট আই নো রোজ কখনো তোমার সাথে মিস বিহেভ করবে না কারণ ও ফা’ল’তু কোনো শিক্ষায় বড় হয়নি
শেষের কথাটা বলে সিমথি পুনরায় রহিমা বেগমের দিকে তাকায় রহিমা বেগম এখনো রাগী চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। সিমথি সায়নের দিকে রাগী চোখে তাকায় সিমথি তাকানো দেখেই সায়নের যায় যায় অবস্থা এই মেয়ে ডেঞ্জারাস হয়ে গেছে কয়েক বছরের ব্যবধানে কোনো বিশ্বাস নেই দেখা গেলো শ্বশুর বাড়ির মানুষের সামনেই মান ইজ্জত শেষ করে দেবে।
সায়ন: দেখ বোন
সিমথি : একদম চুপ এক্সকিউজ দিবি না
সিমথির কথায় সায়ন চুপ হয়ে যায় সিমথি তাচ্ছিল্যের সুরে বলে,,,,
সিমথি : ভালোবাসতে না পারিস ভালোবাসার অমর্যাদা করিস না একটা মেয়ে তোর উপর ভরসা করে নিজের বাড়ি ছেড়ে ফ্যামিলি ছেড়ে এসেছে তার সম্মান রক্ষা করার দায়িত্ব একমাত্র দায়িত্ব তোর নিজের দায়িত্ব যখন পালন করতে পারবি না বিয়ে কেনো করলি এন্সার দে ( রাগান্বিত সুরে)
সায়ন : দেখ বোন,,
সিমথি : চুপপ
সায়ন : তুই নিজেই তো বললি এন্সার দিতে
সায়নের কথায় সিমথি রাগী চোখে তাকায় সঙ্গে সঙ্গে সায়ন চুপ হয়ে যায়
সিমথি জুড়ে একটা শ্বাস নিয়ে মিমের মা-বাবার সামনে গিয়ে বলে,,,,,
সিমথি : আমার বাড়ির মানুষের বিহেভিয়ারের জন্য আমি আপনাদের কাছে মাফ চাইছি আঙ্কেল আন্টি আপনারা কিছু মনে করবেন না ভাবীপুর এই বাড়িতে কোনো অসম্মান হবে না আমি কথা দিচ্ছি
সিমথির কথায় মিমের মা-বাবা দুজনই ভরসা পায় কারণ আর যায় হোক সিমথি নিজের কথার খেলাপ করবে না এটা সবাই জানে।
মিমের বাবা : তুমি কেনো সরি বলছো তোমার তো কোনো দোষ নেই
সিমথি : এখানে দোষের কথা আসছে না আন্টি Unfortunately বাড়ির লোক গুলো আমার বাড়িরই তাই ওদের করা অন্যায় কিছু টা হলেও আমার উপর বর্তায়
সিমথির এতো ভালো বিহেভিয়ারে অনেকেই অবাক হয় কারণ সবার জানামতে সিমথি মানেই একটা আতংক রাগী তবে বোঝদার।
সিমথি : আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক এম আই রাইট আর তুই এভাবে সং সেজে দাঁড়িয়ে না থেকে রুমে যা চেঞ্জ করে আয় ( তরীর দিকে তাকিয়ে ধমকের সুরে)
তরী রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে যায় পরিস্থিতি ও স্বাভাবিক হয়ে যায়। হঠাৎই আয়াশ বলে উঠে,,,
আয়াশ: কাম অন গাইস এনজয় দ্য পার্টি সবাই এমন মনমরা হয়ে থাকলে হবে
আয়াশের কথায় সবাই তাল মিলিয়ে পার্টিতে মন দেয়।
অন্যদিকে আদি একদৃষ্টিতে সিমথির দিকে তাকিয়ে আছে ওর বিশ্বাস হচ্ছে না এতো বছর পর সিমথি কে দেখলো কতটা পাল্টে গেছে সারাক্ষণ দুই দিকে ঝুটি করে রাখা মেয়ে টা আর আজকের মেয়েটার মধ্যে কত তফাৎ। আদি বুকের বা পাশে হাত রাখে বিড়বিড়িয়ে বলে,,,,
আদি: বুঝলি মেয়ে তুমি হলে প্রজাপতির মতো দেখা যায় অনুভব করা চায় কিন্তু ধরা ছোঁয়ার বাইরে তবু ও আমার তোমাকেই লাগবে
অন্যদিকে সিমথির কল আসায় কল রিসিভ করে কিন্তু প্রচন্ড আওয়াজে কিছুই শুনতে না পেয়ে বাইরে যায়। সিমথিকে ফলো করে আদিও বাইরে যায় গিয়ে
সিমথি : কোথায় তুই কি বলেছিলি আমার আগে উপস্থিত থাকবি কিন্তু কোথায়
_________
সিমথি : মা’রবো একটা আধ ঘন্টার উপর আমি দাঁড়িয়ে আছি তাড়াতাড়ি আসবি
_______
সিমথি : বাই
সিমথি কল কেটে পেছনে ফিরতেই চমকে যায় আদিকে এতো টা কাছে দেখে সিমথি কিছুটা দূরে সরে যায় বুকের ভেতর আচমকায় হৃদপিণ্ড লাফাতে শুরু করে এটা কি আজ নতুন অনুভূতি না তো কত বছর আগের অনুভূতি সিমথি নিজেকে সামনে গম্ভীর কণ্ঠে বলে,,,,
সিমথি : কিছু বলবেন ভাইয়া
সিমথির কথায় আদি বিষম খায় ” ভাইয়া ” মানে টা কি আদি ভ্রু কুঁচকে বলে,,,,
আদি : আমাকে ভাইয়া কবে থেকে ডাকিস তুই
সিমথি : আজ থেকে
আদি : আগে কি ডাকতি
সিমথি : জানি না কিছু বলবেন
আদি : জানবি না কেনো আগে তো নাম ধরে ডাকতি তাহলে আজ হঠাৎ ভাইয়া কেনো
সিমথি : উফসস আগে ছোট ছিলাম আর এখন বড় হয়েছি আর আপনি আমার ভাইয়ের ফ্রেন্ড তো ভাইয়া ডাকবো এটাই স্বাভাবিক
আদি : বড় কোথায় হলি এখনো আমার বুকের কাছেই পড়িস
আদির কথায় সিমথি থমকায় আদির দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যিই সিমথি এখনো আদির বুকের কাছেই হাইট সিমথি নিজেকে সামলে বলে
সিমথি : ছয় বছরে আপনি ও হাইটে বড় হয়েছেন আমিও হয়েছি তাই বাই দ্যা ওয়ে সাইট আমি একটু রেস্ট নেবো
সিমথি আদিকে পাশ কাটিয়ে চলে আসে কিছুটা আসতেই আদির কথায় পুনরায় থমকে যায়,,,,,
আদি : আগে তো আমার সাথে সারাদিন কথা বলতে চাইতি এতেটা পরিবর্তন কিভাবে আনলি নিজের মধ্যে
সিমথি শুকনো ঢোক গিলে শান্ত গলায় বলে
সিমথি : মাঝে অনেকগুলো বছর চলে গেছে এই ছয় বছরে সম্পর্কের সমীকরণ অনেক টাই পাল্টে গেছে আর আমি পাল্টাবো না
সিমথির কথায় আদি সিমথির দিকে তাকিয়ে বলে
আদি : আর তোর ফিলিংস টা ওইটা ও বদলে গেছে
সিমথি থমকায় পুনরায় কিসব বলছে আদি এতো বছর পর এসব কথা কেনো তুলছে আচমকা কিছু একটা মনে পড়তেই সিমথি মুখমণ্ডল শক্ত হয়ে আসে দাঁতে দাঁত চেপে কাট কাট গলায় বলে,,,
সিমথি : ধরে নিন অপরিণত বয়সের ছোট্ট একটা ভুল ছিলো ওইটা আর সেই ভুল আমি শুধরে নিয়েছি বাই
সিমথি আর এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে চলে যায় আদি ওখানেই শূন্য দৃষ্টিতে সিমথির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে কিসব বলে গেলো সিমথি ” ভুল ” ছিলো সিমথির ফিলিংস। আদি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে
আদি : তোর ফিলিংসটা ভুল হলেও আমার টা ভুল নয় আর আদিত্য চৌধুরী আদি নিজের জিনিস কাউকে দেয় না আর তুই আমার সবচেয়ে শখের তোকে আমি কখনো ছাড়বো না ভুল মানুষ একবারই করে বার বার না আমি ও এক ভুল দ্বিতীয় বার রিপিট করবো না নো নেভার তোকে আমারই হয়ে থাকতে হবে।
চলবে,,,,,,,
#মিশেছো_আলো_ছায়াতে
#Writer_Sintiha_Eva
#part : 01
( কি আবোলতাবোল লিখছি জানি না অনেক দিন পর শুরু করায় এলোমেলো হয়ে গেছে হয়তো টাইপিং ডোন্ট মাইন্ড প্লিজ ছোট্ট করেই জানিয়েন কেমন হইছে 🥹🥹)