তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম #তাহিরাহ্_ইরাজ #পর্ব_৪৩

0
434

#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৪৩

” উঁহু। খেতে ইচ্ছে করছে না। এগুলো নিয়ে যাও। ”

বালিশে হেলান দিয়ে বসে অসুস্থ মানব। বারবার নাকোচ করছে খাদ্য। বিপরীতে বসে থাকা রমণী তাতে মোটেও বিরক্ত হলো না। বরং আদুরে কণ্ঠে বললো,

” না খেলে কি করে চলবে? হুঁ? ওষুধ খেতে হবে তো। ”

শিশুসুলভ আচরণ করে মানুষটি বললো,

” তেঁতো লাগে সব। খাবো না। এগুলো সরাও। দেখতেই বমি ভাব হচ্ছে। ”

দুয়া ভেজিটেবল স্যুপে চামচ নাড়াতে নাড়াতে বললো,

” আমি খাইয়ে দিলেও খাবে না? ”

বলে তাকালো মানুষটির পানে। মুচকি হাসলো। বেচারা এখন কনফিউজড। বুঝতে পারছে না কি করবে। এমন সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করবে নাকি লুফে নেবে? হুঁ? দুয়া মিটিমিটি হেসে বলল,

” কি? খাবে না? ”

” পকপক না করে দে। ওই নিমপাতার ওষুধ খেতে হবে তো। ”

দুয়া’র পেট ফাঁটা হাসি পাচ্ছে। মানুষটাকে এত কিউট লাগছে যে আদর করে গাল টিপে দিতে ইচ্ছে করছে। বেচারা ভাঙবে তবু মচকাবে না। ঢঙ! দুয়া হাসি চেপে চামচে স্যুপ নিলো। বাড়িয়ে দিলো মুখের কাছে। তূর্ণ ওর দিকে অসন্তুষ্ট চোখে তাকিয়ে স্যুপ মুখে নিলো। ইশ্! তেঁতো স্বাদে মুখের অবস্থা করুণ। ওষুধ খেয়ে সবই এখন বিস্বাদ লাগছে। দুয়া দ্বিতীয় চামচ এগিয়ে দিলে তূর্ণ মুখে নিলো‌। ওর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো,

” তুই খেয়েছিস? ”

” হুঁ? না। তোমাকে খাইয়ে তারপর খাবো। ”

” কেন? কোন সংবিধানে লেখা আছে অসুস্থ বরের আগে খাওয়া যাবে না? ”

দুয়া মৃদু হেসে বলল,

” জাহিরাহ্ দুয়া’র সংবিধানে লেখা আছে। ”

” যতসব ফালতু দরবার। দু’দিন ধরে হসপিটালে পড়ে আছিস। নিজের খেয়াল না রাখলে তোকেও যে এখানে ভর্তি করা লাগবে। সে খেয়াল আছে? ”

” সমস্যা কোথায়? মিয়া-বিবি একসাথে থাকবো। একে অপরের খেয়াল রাখবো। ”

স্যুপ মুখে নিয়ে তূর্ণ বললো,

” ইশ্! শখ কত। এটা তো হসপিটাল নয় যেন পার্সোনাল ফ্লাট। প্রেম প্রেম ভাব পাচ্ছে বুঝি? ”

আর’ক্ত আভা ছড়িয়ে পড়লো মেয়েটির মায়াবী মুখশ্রীতে। মিহি স্বরে বললো,

” আমি তোমার মতো বেশরম নই যে সবসময় উল্টোপাল্টা চিন্তা করবো। ”

তূর্ণ মুহূর্তের মধ্যেই ওর বাঁ হাতটি ধরে টান দিলো। অতর্কিত টানে কিছুটা এগিয়ে গেল দুয়া। তাকিয়ে রইল অবাক চোখে। স্যুপ পড়তে গিয়েও পড়েনি। ইশ্! তূর্ণ ওর মুখপানে মুখ এগিয়ে নয়নে নয়ন মিলিয়ে দৃঢ় স্বরে বললো,

” উল্টোপাল্টা চিন্তা কাকে বলছিস? এমনিতেই আমি বহুত লেট করে ফেলেছি। আমার বাবুসোনারা দুনিয়াতে আসার জন্য ছটফট ছটফট করছে। বি.দ্রোহ ঘোষণা করছে। সেখানে তুই কিনা ওদেরকে আরো লেট করাতে চাস? ভেরি ব্যাড মিসেস। ওরা এসে তোকে কিন্তু দোষারোপ করবে। বিলম্বে আনার জন্য মামলাও করতে পারে। ”

” হা? ”

স্তব্ধ তূর্ণ’র বাবুসোনাদের মা জননী! ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে এমন গাঁ*জাখুরি চিন্তাভাবনা শুনে। তূর্ণ মুচকি হেসে টুপ করে সুডৌল নাকে ওষ্ঠ ছুঁয়ে দিলো। বললো,

” কি হলো আমার না হওয়া বাবুদের মা জননী? খাইয়ে দিন। পতী সেবা করুন। বাবুরা তখন আপনাকে ক্ষমা করলে করতেও পারে। পাপার মুখ চেয়ে। এখন তাড়াতাড়ি খাইয়ে দিন। দিন। ”

দুয়া’র মাথায় হাত। পা.গলাটে লোকটা মাথায় আঘাত পেয়ে আরো পা গ ল হয়ে গেল বুঝি।

শূন্য লবি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল তৃষা। হঠাৎ বেজে উঠলো মোবাইল। স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলো বিশাল কলিং। তৃষা দুষ্টু হেসে স্টিলের আসনে বসে পড়লো। কল রিসিভ করে লম্বা চওড়া সালাম দিয়ে বললো,

” হ্যালো আসসালামু আলাইকুম। কারে চাই? ”

ওপাশ থেকেও সালামের লম্বা জবাব এলো,

” ওয়া আলাইকুমুস সালাম। তৃষের জমজ বোনরে চাই। দেওয়া যাবে একটু? ”

” জমজ বোন! বাহ্! তা নাম কি তার? তৃষা তো অজ্ঞাত তার এই লুকানো জমজ বোন সম্পর্কে। ”

বিশাল দুষ্টুমি অব্যাহত রেখে বললো,

” জানবে কি করে? বোন যে শৈশবে মেলায় হারিয়ে গেছে। বহু বছর পর আরেক মেলায় আমার সাথে দেখা। তারপর প্রেম। এরপর বিয়া। ”

” শ*তান ছ্যা ম ড়া। ফালতু ক্যা চা ল বন্ধ কর। ফোন করছিস কেন বল। ”

” আরে তোর বেবি রূপী ভাবির জন্য ফোন করছি। ”

” মানে? দুয়ারে ক্যান চাই? হেতি এহন জামাই লইয়া বিজি। ”

সশব্দে হেসে উঠলো বিশাল।

” বান্ধবী আমগো ভালোই গিন্নী হয়া গেছে। পড়ালেখা ছাইড়া পতীসেবায় ব্যস্ত। ”

” তাতে তোর কি বে? মেয়েদের সবচেয়ে বড় সম্পদ জামাই। তারে বাদ দিয়া পড়ালেখা করবে বুঝি? পড়ালেখা দিয়া হবে টা কি? হুঁ? ”

” ক্যান? জানোস না? পড়ালেখা করে যে গাড়িঘোড়া চড়ে সে।”

” আমার বাপ ভাইয়ের গাড়ি আছে। ও ফ্রি ফ্রি ই চড়তে পারবো। অ্যার জন্য পড়ালেখার দরকার নাই। বুঝছোছ? ”

” বুঝছি। ”

” কি বুঝছোছ? ক্রমানুসারে বল। ”

” এইডাই বুঝলাম যে তোর মতো ফে ল্টু ভালো জামাই পা.গলি হইবো। ”

তৃষা তৎক্ষণাৎ আপত্তি জানালো,

” ইহ্! বললেই হলো? আমি পা`গলী না বরং আমার জামাই বউ পা`গলা হবে। দেখে নিস। ”

বিশাল কিছু বলার পূর্বেই শুনতে পেল মা ডাকছে।

” ওই। মা ডাকছে। এখন রাখি। আল্লাহ্ হাফিজ। ”

টুট টুট শব্দে কেটে গেল কল। তৃষা একাকী হাসছিল। ও নাকি জামাই পা.গলী হবে! হঠাৎ থমকে গেল। কর্ণ কুহরে পৌঁছালো পুরুষালি ভারিক্কি কণ্ঠস্বর,

” তোর বর বউ পা.গলা হবে? তুই এতটা শিওর কি করে হচ্ছিস? প্রেম ট্রেম করিস নাকি? ”

চমকিত রমণী ডান পাশে তাকালো। নিশাদ বসে। ইশ্! জিভে কা.মড় বসালো মেয়েটা। এ লোকটা এখানে! সবটা শুনে নিয়েছে নাকি! ওহ্ শিট! কি না কি ভাবছে।

” কি রে? বোবা হয়ে গেলি? বল। বফ আছে বুঝি? ”

তৃষা ঘোর আপত্তি জানালো।

” জ্বি না। ”

” জ্বি। আবার না। সত্যি কোনটা? আছে কি নেই? ”

তৃষা বিরক্ত হয়ে বলল,

” আরে বাবাহ্। নেই। ”

নিশাদ হতবিহ্বল হওয়ার ভঙ্গিতে বলে উঠলো,

” বাবা! ইন্না লিল্লাহ। আগে ভাই ডাকতি। মানলাম। শেষমেষ বাবা! কেন রে তোর বাপ বুঝি বাবা ডাকতে দেয় না? ”

হতভম্ব তৃষা! মৃদু স্বরে বললো,

” আপনিও শেষমেষ ভাইয়ার টিমে যোগদান করলেন? ”

” মানে? ”

” মানে টানে ছাড়েন। ভাইয়ার মতো ত্যা ড়া কথা বলতে আসবেন না। আমি কিন্তু দুয়া নই যে ছেড়ে কথা বলবো। ”

নিশাদ ভ্রু কুঁচকে ওর দিকে কিঞ্চিৎ ঝুঁকে গেল। ফিসফিসিয়ে শুধালো,

” আচ্ছা? তাহলে কি করবি? হুঁ? ”

তৃষা মাথাটা পিছিয়ে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে বললো,

” ডিরেক্ট অ্যা.কশন নেবো। ”

নিশাদ সোজা হয়ে বসে দুঃখ দুঃখ বদনে বলে উঠলো,

” ইশ্! তুই তো বড় মা`রমুখী! তোর জামাইয়ের কপালে দুঃখ আছে রে। ”

তৃষা ঢিমি স্বরে বললো,

” তাতে আপনার কি? হুঁ? নিজের চরকায় পেট্রোল দিন না। ”

নিশাদ একাকী বিড়বিড় করে উঠলো,

” আমারই তো সব। চিন্তা করবো না? ”

তৃষাও একাকী ভাবতে লাগলো,

” অ্যাক্সিডেন্ট করে মাথার তার কয়টা ছিঁড়ে গেছে মনে হয়। এর থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই মঙ্গল। ”

উঠে দাঁড়ালো তৃষা। তাতে ধ্যান ভঙ্গ হলো নিশাদের।

” কি রে কোথায় যাচ্ছিস? ”

” ভাইয়ার কাছে। ”

নিশাদ উঠে দাঁড়ালো। বললো,

” আমিও যাবো। চল। ”

” আমি একাই যেতে পারবো। সঙ্গী দরকার নেই। ”

প্রস্থান করলো তৃষা। নিশাদ একাকী বলে উঠলো,

” বহুত বে দ্দ প আছে। হবু জানের সাথে কেউ এভাবে কথা বলে? বিয়ের পর এটাকে ট্রেনিং দিয়ে রোমান্টিক বউ বানাতে হবে। আমার হয়েছে যত জ্বা লা। ”

তূর্ণ হসপিটালে থাকলো এক সপ্তাহ। পরিবারের সদস্যরা খুব করে ওর খেয়াল রাখলো। পালাক্রমে সেবাযত্ন করলো। ওপর ওয়ালার অশেষ রহমতে তূর্ণ এখন আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো। অবশেষে আজ ডিসচার্জ করা হলো মশাইকে। মাথায় এবং পায়ের গোড়ালিতে ব্যান্ডেজ মোড়ানো। একান্ত সঙ্গিনীর কাঁধ জড়িয়ে হাত। আস্তে ধীরে সাবধানতা অবলম্বন করে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এলো তূর্ণ, দুয়া। নিশাদ গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে। ওদের দেখে এগিয়ে এলো। বন্ধুর আরেক হাত ধরে আস্তে ধীরে হেঁটে গাড়ির কাছে পৌঁছালো। উন্মুক্ত করে দিলো গাড়ির দ্বার। দুয়া’র সহায়তায় পেছনের সিটে আসন গ্রহণ করলো তূর্ণ। দুয়া ওপাশের দ্বার উন্মুক্ত করে তার ডান পাশে বসলো। তূর্ণ’র সাইডের দ্বার বন্ধ করে দিলো নিশাদ। বসলো ড্রাইভারের পাশের সিটে। চলতে আরম্ভ করলো গাড়ি। দুয়া স্বামীর পানে তাকালো। মিহি স্বরে শুধালো,

” খারাপ লাগছে? ”

তূর্ণ কিচ্ছুটি বললো না। নিভৃতে আলতো করে মাথা এলিয়ে দিলো সঙ্গিনীর কাঁধে। দুয়া সযত্নে তাকে আগলে নিলো। কাঁধে মাথাটা ভালোমতো রেখে মানুষটির ডান হাতের আঙ্গুলের ভাঁজে গুঁজে দিলো তার চিকন কোমল বাঁ হাতের আঙ্গুল। কখনো কখনো ডান হাত বুলিয়ে চলেছে মাথায়। নিশাদ তা রিয়ার ভিউ মিররে লক্ষ্য করে তৃপ্তিময় হাসলো। ভালোবাসা আসলেই সুন্দর! হৃদয়ছোঁয়া!
.

তূর্ণ বাড়ি ফিরলো সপ্তাহ শেষে। মূল দ্বারে দাঁড়িয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়লেন তাসলিমা। ছেলেকে যতন করে আগলে নিলেন। এঁকে দিলেন স্নেহের বেশকিছু চুম্বন। তূর্ণ তৃপ্তিময় হাসলো। মা ও সহধর্মিণীর সহায়তায় ধীরপায়ে হেঁটে সোফায় বসলো সে। তানজিনা ট্রে’তে শরবতের গ্লাস নিয়ে হাজির হলো। তাসলিমা ছেলের পানে গ্লাস এগিয়ে দিলেন।

” এই নাও আব্বা। শরবতটা খাও। ভালো লাগবে। ”

তাসলিমা গ্লাস ধরে রাখলেন। তৃপ্তির সহিত শরবত পান করলো তূর্ণ। নিজাম সাহেব উদগ্রীব হয়ে প্রশ্ন করলেন,

” তুমি ঠিক আছো তো বাবা? ক্লান্ত লাগছে? রুমে যাবে? ”

তূর্ণ মৃদু স্বরে বললো,

” ঠিক আছি আব্বু। এখানে একটু বসি। ”

কতদিন বাদে গাড়িতে ভ্রমণ। শরীরটা বড্ড ক্লান্ত। তবুও পরিবারের সান্নিধ্য লাভের আশায় এখানেই রয়ে গেল সে। খালামণি, মামা সবাই সপরিবারে হাজির হয়েছে। কেমন আনন্দের বিষয়! তবে সকলেই আজ চিন্তিত। কেউ খুশি উদযাপন করতে আসেনি। তাদের চোখেমুখে চিন্তার স্পষ্ট ছাপ। লিভিং রুমে কিছুটা সময় কাটিয়ে মা ও সঙ্গিনীর সহায়তায় নিচতলায় তাদের জন্য বরাদ্দকৃত কক্ষে প্রবেশ করলো তূর্ণ। পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া অবধি দোতলায় যাওয়া নিষেধ। সিঁড়ি ভাঙা অনুচিত। তাই সাময়িক সময়ের জন্য নিচতলায় স্থানান্তরিত হলো।

হিমাংশু’র দ্যুতি ছড়িয়ে ধরনীর বুকে। বিছানায় শুয়ে তূর্ণ। অলস সময় কাটছে। বিরক্তিতে ছেয়ে তনুমন। উশখুশ উশখুশ করছে। খানিক বাদে খট করে শব্দ হলো। উন্মুক্ত হলো ওয়াশরুমের দ্বার। বেরিয়ে এলো দুয়া। চমকিত মানব তাকিয়ে রইল সেথায়। দুয়া’র পড়নে সফেদ সালোয়ার কামিজ। চোখেমুখে, গলদেশে বিন্দু বিন্দু জলের অস্তিত্ব। চুলের অগ্রভাগ কিঞ্চিৎ সিক্ত। একদম সতেজ, আকর্ষণীয় লাগছে দেখতে! শুকিয়ে আসছে গণ্ডস্থল। বেসামাল হচ্ছে পৌরুষ চিত্ত। একটুখানি ছুঁয়ে দেয়ার আকাঙ্ক্ষা জেঁকে বসেছে প্রবল রূপে। তবে এ মুহূর্তে তা সমীচিন নয়। আস্তে ধীরে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো তূর্ণ। দুয়া দাঁড়ালো সমতল আরশির সম্মুখে। চুলে আলতো করে তোয়ালে চালনা করলো। চোখেমুখে, গলদেশে ছুঁয়ে গেল তোয়ালে। মুছে নিলো সবটুকু জল। অতঃপর রাত্রিকালীন ত্বকের পরিচর্যা সেরে পিছু ঘুরে তাকালো দুয়া। স্বামীর চোখে চোখ পড়তেই মুচকি হাসলো। তাতে আরো সম্মোহিত হলো মানুষটি। বহু কষ্টে নিজেকে সংযত করে রাখার প্রয়াস চালিয়ে গেল। কক্ষের আলো নিভিয়ে বিছানার পানে এগিয়ে গেল দুয়া। বসলো অর্ধাঙ্গের ডান পাশে। জাগ্রত মানুষটির পানে কিঞ্চিৎ ঝুঁকে ললাটে ওষ্ঠ চেপে ধরল। মধুর কণ্ঠে বললো,

” ঘুমিয়ে পড়ো। বিশ্রাম দরকার। ”

শয্যা গ্রহণ করলো দুয়া। ঘুমের পূর্বের দোয়া দরুদ পাঠ করতে লাগলো। স্বভাবতই অনুভব করতে লাগলো অস্বস্তি। কিছুর অনুপস্থিতি তাকে জ্বা.লিয়ে ছাড়ছে। কেমন যেন লাগছে। আকস্মিক সবটা দূরীকরণ হলো। এক পশলা শীতলতায় ছেয়ে গেল অন্তঃপুর। তাকে বলিষ্ঠ বাহুডোরে আবদ্ধ করে নিয়েছে একান্ত মানুষটি। তৃপ্তির আভা ছড়িয়ে পড়লো মেয়েটির মুখে। দু’জনার স্বস্তির জন্য ডান কাত হয়ে শুলো। নিভৃতে আরেকটু ঘনিষ্ট হলো তূর্ণ। উদরে বাঁ হাতটি চেপে ধরে মুখ ডুবালো কেশে। সেভাবেই অতিবাহিত হলো কিছু মুহূর্ত। একসময় দুয়া অনুভব করতে লাগলো ঘন শ্বাস। নিদ্রায় তলিয়ে মানুষটি। মুচকি হেসে উদরে রাখা হাতের ওপর হাত রেখে চোখ বুজে নিলো দুয়া। ধীরে ধীরে সেও ঘুমিয়ে পড়লো।

চলবে.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here