#দাম্পত্য_জীবন
#মেহু_আপু
#পর্ব_১৩
ডিপার্টমেন্ট হেড আদনান স্যার নীলাকে বলে এই কাজটা তোমার কাছ থেকে আশা করি নাই। যার এসএসসি /এইচএসসি/ গ্রাজুয়েশনে এতো ভালো রেজাল্ট সে কিনা করলো টুকলি।
নীলা বললো আমি ম্যামকে যা বলছি আপনাকেও তা বলছি আমি এসব কাজ করি নাই স্যার!
আদনান বললো তাহলে এই নোটস গুলা কার। এগুলাতো তোমার, পাওয়া গেছে তোমার কাছেই। তোমার যদি টুকলি করার ইচ্ছে না থাকতো এগুলা সাথে নিয়ে পরীক্ষায় অবশ্যই বসতা না!
নীলা বললো হ্যা স্যার নোটস গুলা আমার কিন্তু আমি এগুলা আনি নাই! কিভাবে আমার কাছে আসলো তাও জানিনা, শুধু এইটুকু জানি আমার টুকলি করার কোনো দরকার ছিলো না!
এইবার আদনান স্যার রেগে যায়? দেখো নীলা অনেক ড্রামা করছো! এমনিতেই টুকলি করছো তার উপর মুখে এতো বড়বড় কথা আসে কি করে? তুমি কি জানো আমি তোমাকে সান্সপেন্স করতে পারি অথবা এই ইয়ার ফর্ম ফিলাপ আটকাইতে পারি!
নীলা বললো স্যার আমি যেইটা করি নাই ওইটা স্বীকার করবো ক্যান? এখন যদি কেউ বলে আপনি অন্ধ তার কথা আপনি বিশ্বাস করবেন নাকি নিজে চোখে পৃথিবী দেখা শুরু করবেন।
আদনান বললো কি বলতে চাও তুমি আমরা তোমাকে শুধু শুধুই ব্লেম করছি। ম্যাম বললো চোরের মায়ের বড় গোলা। স্যার ওকে সান্সপেন্স করে দিন।
নীলা বললো ম্যাম/ স্যার একজন দাগী আসামি নিজেকে প্রমান করার সুযোগ পায় আর আমি কি একটা সুযোগ পেতে পারিনা।
আদনান বললো তুমি কি বলতে চাইছো কেউ তোমাকে ফাঁসাইতে চাচ্ছে?
আকাশ অনুমতি ছাড়াই হেডের রুমে ঢুকে যায়। আকাশ বলে হুম আমার স্ত্রীকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। আমি এক্ষুনি প্রমাণ করে দিবো নীলা নিদোর্ষ স্যার।
আদনান কিভাবে করবেন মিস্টার চৌধুরী।
আকাশ বললো স্যার যেভাবেই করি আমাকে কথা দিন আমার স্ত্রীর দোষীকে একই শাস্তি দিবেন যেটা নীলাকে দিতে চাইছেন!
আদনান বললো হুম দিবো আপনি প্রমাণ করেন আগে নীলা নিদোর্ষ।
আকাশ ডিপার্টমেন্টের পিওন কে ডাক দেয়! পিওন ল্যাপটপ এনে আকাশকে দেয়। আকাশ ল্যাপটপ অন করে নীলার সাথে কি ঘটেছিলো তার সিজিটিভি অন করে! সিসিটিভিতে দেখা যায় নীলা যখন বের হয় তখন সাথী বের।
সাথী নীলার ব্যাগ থেকে নীলার নোটস আনে। আর সেই নোটস নীলা যখন বাহির থেকে এসে লেখতে বসে মিমি তা ফেলে দেয়। এভাবেই নীলাকে ফাঁসায় মিমি আর সাথী।
আকাশ বললো দেখলেন স্যার আমার স্ত্রী নিদোর্ষ। আমার স্ত্রীকে ফাঁসিয়েছে এই দুই মেয়ে। এখন বলুন এদের কি শাস্তি হবে।
আদনান স্যার / দায়িত্ব পালনকারী ম্যাম সহ আকাশ আর নীলার কাছে ক্ষমা চায়। এরপরে বলে ওদেরকে আমি ১ বছরের জন্য এস্পেল করতেছি।
নীলা বলে থাক স্যার এতো বড় শাস্তি ওদের দিয়েন না শুধুমাত্র হুমকি দিয়ে কয়েকদিনের জন্য কলেজ থেকে সাসপেন্সড শাস্তি দেন ( হাত জোর করে বলে)
আদনান বললো তোমার যারা ক্ষতি করতে চাইলো তুমি তাদের মাফ করছো এতো উদার কিভাবে হলা। আজ যদি তোমার স্বামী এখানে না থাকতো তাহলে তো তোমাকে আমরা শাস্তি দিয়েই ফেলতাম।
নীলা বলে ভাগ্য করে এমন স্বামী পেয়েছি স্যার আমাদের জন্য দোয়া করবেন?
আর স্যার ওদের কাছে একটু শোনার চেষ্টা করবেন ক্যানো ওরা আমার সাথে এরকম করলো? পিওন ভাইকে দিয়ে পরে সবটা ডিটেলসে শুনবো! আসি স্যার।
আদনান বললো হ্যা যাও।
আকাশ আর নীলা হেডের রুম থেকে বের হয় দীপালি যেয়ে নীলাকে জড়িয়ে ধরে। আকাশ দীপালিকে ধন্যবাদ জানায়। নীলা বলে দীপালিকে ধন্যবাদ জানাইলা কেনো? আকাশ তখন ফ্লাসব্যাকের কাহিনী বলে।
তোমাকে যখন ম্যাম হেডের কাছে নিয়ে যায় দীপালি তখন বের হয়ে সবটা আমাকে জানায় তারপরে ও বলে সিসিটিভিতে সবটা পাওয়া যাবে। ও আমাকে বিশ্বাস করায় তুমি এরকম করার মেয়ে না। তখন আমি পিওনকে কিছু টাকা দিয়ে আসল অপরাধীকে সামনে আনি। তাই ধন্যবাদ টা ওরই প্রাপ্য। নীলা দীপালিকে জড়িয়ে ধরে বলে ধন্যবাদ বন্ধু। দীপালি বলে শুধু শুধু ধন্যবাদ দিলে হবে না ট্রিট চাই।
এমন সময় পিওন মিমি আর সাথীকে হেডের রুমে নিয়ে যায়। হেড মিমি আর সাথীর সাথে কথা বলে সবটা জানার চেষ্টা করে। এরপরে মিমি আর সাথী কোনো উপায় না পেয়ে সবটাই বলে দেয়। হেড মিমি আর সাথীকে ২০ দিনের জন্য সান্সপেন্সড করে!
মিমি আর সাথী মুখ কালা করে ভার্সিটি থেকে বের হয়ে যায়। সবাই তাদের কুটনি বলে উপহাস করতে থাকে। মিমি আর সাথী দ্রুত বাড়িতে চলে যায়।
এরপরে নীলা আর আকাশ হেডের চেম্বারে যায় সবটা শুনতে কেনো তারা এরকম করছে। হেড বলে হামজা নামের কোনো ছেলের প্ররোচনায় এরকম করছে ওরা।
নীলা চেম্বার থেকে বেড়িয়ে এসে আকাশকে বলে এইখানেও হামজা। নীলা বললো আর কত করবে ও আকাশ আমি আর পারছিনা। আকাশ বললো ওকে থামাতে হবে নীলা। চিন্তা করিয়ো না এই আকাশ থাকতে নীলার কিছু করতে পারবে না হামজা। এরপরে নীলা আর আকাশ বাড়িতে ফিরে
[ সিন কাট হয়ে যায় রিয়ার ভার্সিটিতে ]
ইমরান রিয়ার সাথে দেখা করতে যায়। রিয়া ভার্সিটিতে জরুরি কাজ মিটিয়ে ইমরানকে নিয়ে মুভি দেখতে যায় হলে।
মুভি দেখা শেষ করে পার্কে যায়। পার্কে রোমান্স করে রেস্টুরেন্টে খেতে যায়।রেস্টুরেন্টে খাওয়ার রিয়ার ঝাল লাগে। তখন ইমরান পানি ঢেলে দেয়। আর তাদের সারাদিনের মূহুর্তের সাক্ষী হয়ে থাকে হামজা তাদের প্রাইবেট মুহূর্তের পিক তুলে ক্যামেরা বন্দি করে। হামজা বলে টুইস্ট কাল সকালের পাতায় লেখা হয়ে বেড়াবে।
এরপরে হামজা চলে যায়। রিয়াকে বাড়িতে ড্রপ করে ইমরান চৌধুরী মঞ্জিলে ফিরে।
হামজাকে একা পেয়ে নীলা বলে কি চাও হামজা? হামজা বলে কি চাই মানে। নীলা বলে ভালো করেই জানো কি চাও তুমি। আজকে তুমি আমার পরীক্ষায় এইরকম মোমেন্ট তৈরি করছো ক্যান? হামজা মনে মনে বললো তাহলে নীলা নিদোর্ষ প্রমানিত হয়েছে আর ওরা আসলেই এরকম কান্ড ঘটাইছিলো। তাহলে ওরা দুজন ফোন বন্ধ করে কেনো রাখছে। আমিতো ভাবলাম ওরা বোধহয় এরকম কিছু করতে পারে নাই তাঁর জন্য ফোন অফ করে রাখছে। কিন্তু যদিও করলোই তাহলে ফাঁসলো কেনো ড্যামেট কোথাকার।
নীলা বললো কি চাও হামজা চুপ কেনো?
হামজা বললো আমি কি করেছি? নীলা এইবার শার্টের কলার ধরে সবটা বলে। হামজা বলে প্রতিশোধ চাই। তুমি আমার সাথে প্রতারণা করছো আর তুমি সুখে দিন কাটাবা আর আমি তা সহ্য করবো।
নীলা বলে অনেক হয়েছে হামজা এবার তুমি থামো মেঘকে আমাদের মাঝে এনে তুমি আর বড় ভূল করেছো। প্রতারণা আমি না তুমি করেছো। হামজা নীলার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলে টুইস্ট তো এখনো বাকি হে বলেই চলে যায়।
নীলা বলে আমি থাকতে তুমি কিছু করতে পারবা না।
হামজা বলে নিশ্চিতে ঘুমাও সকালের জন্য রেডি হও এই কথা বলে রুমে চলে যায়।
সবাই ঘুমিয়ে পড়ে মেঘ আর হামজা কাছাকাছি আসে রাতে। হামজা মেঘকে পারমানেন্ট ব্যবহার করার জন্য ভালোবাসার খেলা খেলে। মেঘ হামজার ডাকে সাড়া দিয়ে অন্তরঙ্গ মূহুর্তের শুরুহয়। রাতে হামজা আর মেঘ ভালোবাসায় ডুব দিয়ে ইন্টিমেন্ট হয়।
সকাল হয়। প্রতিদিনের মতো সবার জন্য নাস্তা আর রান্না শেষ করে ডাইনিং প্রস্তুত করে উষশী, শায়লা আর নীলা।
প্রতিদিন সকালে খবরের কাগজ পড়া শেষ করেই আজগর চৌধুরী ডাইনিং এ বসে। আজকের খবরের পাতা উল্টাতেই অবাক হয়ে যায়। মনে হচ্ছিলো বজ্রপাত ঘটছে চৌধুরী মঞ্জিলের মাথায় । আজগর চৌধুরী তার ছোট ভাইকে ডাক দিয়ে বললো শুকর আমি কি ঠিক দেখছি।
শুকর হাতে নিয়ে খবর দেখেই শিহরিত হয়ে ইমরানকে ডাক দেয়।
হামজা সিড়ি বেয়ে নামে আর মনে মনে বলে ড্রামা তো শুরু এখন বলেই মেকি হাসি দেয়।
শায়লা এসেই কাগজ হাতে নিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। আর্জিনা আর উষশী এসে শায়লাকে ধরে নেয়।
নীলা বলে কি এমন ঘটলো যার জন্য সবাই ভিমড়ি খাচ্ছে দেখতে হচ্ছে তো?
চলবে,,,
আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আমার আম্মু খুব অসুস্থ তাই লেখার সময় পাই নাই। আজকে একটু খানি সময় বের লেখার চেষ্টা করলাম কেউ রাগ করিয়েন না এই কয়দিন পর্ব না দেওয়ার জন্য। ক্ষমা করবেন। নতুন লেখার জন্য গল্পটা খাপছাড়া হচ্ছে ভালো করার চেষ্টায় আছি। সবাই একটু বুঝে নিবেন পিল্জ 😿