#মিতা
১ম পর্ব।
” এই মুহূর্তে যদি আমার মিতাকে জড়িয়ে ধরতে পারতাম, সেই স্কুল জীবনের মতো! খুব শান্তি পেতাম। আজ ওর কথা কেন যেন একটু বেশিই মনে পড়ছে।”
দু’মিনিটের মতো কমেন্টটার দিকে তাকিয়ে থাকে জান্নাত।এর বিপরীতে অনেক রসালো এবং চটকদার কিছু মন্তব্যও এসেছে। কিন্তু জান্নাতের বুকটা ভারী হয়ে ওঠে। আহা! মন কেমন করা একটা কমেন্ট। কোনো হতভাগার বুঝি তার বিশেষ কারো কথা মনে পড়েছে। ফেসবুকের নিউজফিড স্ক্রোল করতে করতে “প্রিয়তমেষু” নামের একটা পেইজের পোস্টে জান্নাতের চোখ আটকে যায়। সেখানে জানতে চেয়েছে “কাওকে দশ মিনিট জড়িয়ে ধরার সুযোগ পেলে কাকে ধরতেন “।
তার প্রেক্ষিতে লেখা উক্ত কমেন্ট আটশত ছাপ্পান্নটি লাইক পেয়েছে। কে লিখেছেন না দেখেই কি মনে করে হঠাৎই কমেন্টটার রিপ্লাই দিয়ে বসলো জান্নাত….
“ইশশ!আমারও ভীষণ ইচ্ছে করে একবার মিতাকে পেলে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে সরি বলতাম। ওকে যে আমার আজও সরি বলা হয়নি”।
লিখতে লিখতে জান্নাতের বুক থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। এরইমধ্যে ওর কমেন্ট বেশ কয়েকটা স্যাড রিএ্যাক্ট পেয়েছে। আর একটা লাভ রিএ্যাক্ট এসেছে “মায়ের লুতুপুতু ছেলে ” নামক আইডি থেকে। জান্নাত এতোক্ষণে খেয়াল করলো ঐ কমেন্ট দাতার প্রোফাইলই এটা।
অদ্ভুত!
আজকালকার ছেলেমেয়েরা কি যে সব উল্টাপাল্টা হাস্যকর সব আইডি ব্যবহার করে! অভিমানী রাজপুত্র, আব্বু আম্মুর ভালো ছেলে, জীবন্ত লাশ,কেউ আমারে মাইরালা,পরীর দেশের রাজপুত্তুর,মৃত মনের আত্মা……..মুখে আনা যায় না এমন সব প্রোফাইলের নাম নিয়ে জান্নাত একাই মনেমনে খানিকটা হেসে নেয়। ও কিছুতেই বুঝতে পারে না এসব ফেইক আইডি ইউজ না করে মা-বাবার আকীকা করা নাম দিতে এদের সমস্যা কোথায়?
টুং করে একটা ম্যাসেজের শব্দ পেয়ে জান্নাত দেখলো মাইশা নামের আইডি “মায়ের লুতুপুতু ছেলেকে” মেনশন করে লিখেছে, তুমি ওনাকে লাভ রিএ্যাক্ট দিলে কেন(রাগের ইমোজি)? সুন্দরী মেয়ে দেখলেই তোমাদের ছেলেদের মাথা আউলাইয়া যায়, তাই না? তাছাড়া মিতাটাই বা কে? তোমার এক্স! আর ক’জন আছে আমি ছাড়া। একজনে হয় না তোদের! বদ,যা ব্রেকআপ। আমার সাথে কোনো রকমের যোগাযোগ করবি না আজ থেকে।
সুন্দরী মেয়ে!
এই চল্লিশেও তাকে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতে পারে ভেবেই জান্নাতের চোখমুখ লজ্জায় লাল হয়ে যায়,ভালোই লাগে। এই সময়টা জান্নাতের হাজব্যাণ্ড অফিসে থাকে। ছেলেমেয়ে দুজনই ইউনিভার্সিটি আর স্কুলে। ছেলেটা ক্লাস শেষে দুটো টিউশনি করে বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। আর মেয়েটাও স্কুল, কোচিং করে সোয়া দুটোর মধ্যে ঘরে আসে। তারপর আবার বাসার টিচার আসে এবং রাতে তার নিজের পড়া থাকে। অনেকটা সময়ই জান্নাতকে একা কাটাতে হয়।
সেই ভোর পাঁচটায় উঠে ফজরের নামাজ পড়েই জান্নাত ব্যস্ত হয়ে পড়ে সংসারের কাজে। নাস্তা তৈরি করা,মেয়ের টিফিন রেডি করে তাকে খাইয়ে স্কুলে পাঠানো তো রোজকার নিয়ম। বহুদিনের পুরনো বিশ্বস্ত ড্রাইভারই বেশিরভাগ সময় তাকে আনা-নেওয়া করে। ছোটবেলায় জান্নাত নিজেই নিয়ে যেতো। এখনও যায় তবে মাঝেমধ্যে। স্কুল থেকে গাড়ি এলে বাবা ছেলে একসাথেই বেরিয়ে পড়ে। ছেলেটা খুব লাজুক প্রকৃতির। এখন আর বাসা থেকে টিফিন নিতে চায় না। তার নাকি লজ্জা করে। ইউনিভার্সিটির ক্যান্টিনেই বন্ধুদের সাথে দুপুরে খেয়ে নেয়। প্রতিদিন একটার মধ্যে হাজব্যাণ্ডের অফিসে খাবার পৌঁছে দিতে হয়। তাই ঘড়ির দিকে না তাকিয়ে ঝটপট লেগে যায় রান্নাঘর সামলাতে। ৷ জবা নামে সাহায্যকারী একটা মেয়ে আছে। কিন্তু জান্নাতের হাজব্যাণ্ড অন্য কারোর হাতের রান্না খেতে পারে না। সাড়ে বারোটার মধ্যে রান্না শেষ করে ড্রাইভারকে দিয়ে লাঞ্চ পাঠিয়ে তবে একটু অবসর মেলে তার।
প্রচন্ড গরমে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আগুনের আঁচ থেকে বেরিয়ে বাকি টুকটাক কাজ জবাকে বুঝিয়ে দিয়ে এসি ছেড়ে মোবাইল নিয়ে বসে জান্নাত । সরকারি কোয়ার্টারে সুবিধা আছে। সিভিলদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম ইলেক্ট্রিসিটি যায়।
আয়েশ করে কফির মগে চুমুক দিতে দিতে ছেলেমেয়ে দুটোর মানঅভিমান দেখছিল। অনেকেই জান্নাতের এই গরমেও চার-পাঁচবার কফি পানে আশ্চর্য রকমের অবাক হয়ে যায়। কিন্তু ঐ যে বলে না, স্বভাব যায় না ম’লে…. সেরকম আর কি,জান্নাত খুব ভক্ত কফির । দারুণ সময় কাটছে আজ জান্নাতের। ওদের দুজনের কথোপকথনে নিজের ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে । কত্ত ভীতু ছিল ওরা। একটা প্রেমপত্র পড়তে গিয়ে কত যে লুকোচুরি করতে হতো! আর বর্তমান প্রজন্ম বড় বেশি সাহসী। একই সাথে দু-তিনটে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে , ভালোভাবে হ্যান্ডেলও করছে। দু ‘সপ্তাহের চ্যাটিং বিয়ে পর্যন্ত গড়িয়েছে। আবার পাবলিক প্লাটফর্মে এসে ব্রেকআপও করছে। মাশাআল্লাহ! এলেম আছে এদের।
ইদানিং বেশ মজারমজার নামের পেইজ থেকে বিভিন্ন ধাঁধা দেওয়া হয়,অঙ্ক দেয়া হয় কিংবা “চান্স পেলে কোন দেশে পার্মানেন্ট হতে চাও”এই জাতীয় প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়। জান্নাতও উৎসাহ নিয়ে তা সলভ করার চেষ্টা করে এবং উত্তর লিখে দেয়। হিজিবিজি ছবির মধ্যে লুকানো সংখ্যা বের করে,গা ঘেঁষে থাকা হাজারটা বাড়ির মধ্যে থেকে লুকিয়ে থাকা বিড়াল বের করে সে কি তার উচ্ছ্বাস। যেন কলোম্বাসের মতো আর একটা আমেরিকা আবিষ্কার করে ফেলেছে। নিয়েই কাজগুলো করে ও। ভালোই সময় কাটে জান্নাতের।
কিছুদিন আগে এমনই একটা পেইজে প্রশ্ন ছিলো “ক্লাস ফাইভে তোমার রোল কত ছিল”? জান্নাত কমেন্টে লিখলো দুই। প্রায় কয়েক সেকেণ্ডের মাথায় একটা ছেলে এসে রিপ্লাই দিলো ” আমারও রোল দুই ছিলো ম্যাম (হাসির ইমোজি)। মজার ব্যাপার ওরা দুজন এখন বেশ ভালো বন্ধু।
আর এখন তো ওর একটা ভিন্ন ধরনের নেশায় পেয়েছে। বসেবসে অন্যদের কমেন্ট পড়া। দারুণ সব মজার কমেন্ট। মনে হয় ভীষণ সুখী এদেশের মানুষ। জগৎ সংসার নিয়ে কারো কোনো চিন্তাভাবনা নেই। এদের একমাত্র কাজ হলো যে কোনো ইস্যুতেই হামলে পড়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করতে। নানা জাতীয় মানুষ দেখা যায় এই ফেসবুকে। তাছাড়া কিছু বিকৃত মানসিকতার মানুষ আছে যারা অপ্রাসঙ্গিক ভাবেই অশ্লীল বাক্যবাণে জর্জরিত করে পোস্ট দাতা বা ঐ পেইজকে। মামুনুর রশীদের রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে কি এরাও পড়ে? জানতে হবে।
মন দিয়ে কমেন্টগুলো পড়ে একটু রিসার্স করলেই কার এক্স কে, বর্তমান কে, কার ক’টা বিএফ জিএফ সবই আবিস্কারও করা যায়।
“মায়ের লুতুপুতু ছেলে ” মরিয়া হয়ে উঠেছে মাইশার ভুল ভাঙাতে……. বেবি তুমি যা ভাবছো তেমনটা নয়। কিন্তু মাইশা কিছুতেই বুঝতে চাচ্ছে না । অবশেষে ছেলেটি লিখলো…….. নাউ ইউ আর ওভার রিএ্যাক্টিং সুইটহার্ট। ইনবক্সে আসো,আমি বুঝিয়ে বলছি।
ইনবক্সে ওরা কি বলছে, জান্নাতের খুব জানতে ইচ্ছে করছে। সেই ফাঁকে মেয়েটির প্রোফাইলে উঁকি দিয়ে দেখলো তার ছেলেরই সমবয়সী হবে মাইশা। আর ছেলেটি প্রোফাইল লক করে রাখায় কিছুই বুঝতে পারলো না। তবে মাইশার বিএফ হিসেবে বুঝলো সে’ও তার ছেলেরই বয়সী হবে হয়তোবা কিছুটা বড়।
কিছুক্ষণ পর এসে ছেলেটি মাইশাকে রিপ্লাই দিল, আসলে এটা আমার কমেন্ট নয়। আমার মায়ের । উনি তার বন্ধু মিতার কথা বলেছেন। ওনার ফেসবুক আইডি না থাকায় প্রায়ই আমার আইডি ইউজ করেন। নাউ ক্লিয়ার?
মাইশা সরি বলে লিখলো, সে তো আমি জানিই। কিন্তু তুমি আমাকে আগেই জানাতে পারতে।
কতটা ডিসেন্ট এবং বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক থাকলে থাকলে ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছেলের সাথে মা একই আইডি ব্যবহার করতে পারে। অন্তত এই সময়ে। জান্নাতের নিজের ছেলে অভ্র তো তার মোবাইল ধরতেই দেয় না। সারাদিন মোবাইলে গুটুর গুটুর করে। ও কাছে গেলেই একদম সব নিস্তব্ধ।মোবাইলের ওদের মা ছেলের এই সম্পর্কটা জান্নাতকে মুগ্ধ করে।
(তবে জান্নাতের ধারনা মাইশাই “লুতুপুতু” ছেলেকে বলেছে পোস্টে এসে এই কমেন্টটা করতে। হয়তো ওদের মিউচুয়াল কোনো বন্ধু ওদের এই কথোপকথন দেখেছে। ওদের সম্পর্কে সে যেন কোনো নেগেটিভ ধারনা করতে না পারে, যাকে বলে মেয়েলি বুদ্ধি) ।
মোবাইলে লম্বা সময় দেবার পর জান্নাত উঠে পড়ে। কড়া রোদে ছাদের কাপড়গুলো বুঝি পুড়েই গেল। জবাকে কাপড়গুলো আনতে বলে দ্বিতীয় দফায় গোসলের আয়োজন করে। আবার মেয়ে গোধূলিরও আসার সময় হয়ে গেছে। ও খাবারগুলো টেবিলে এনে ঢেকে রাখে। ফ্রিজে পানি আছে কিনা চেক করে নেয়। যা ভেবেছিলো ঠিক তাই। জবাকে কিছু বললে একটা কাজও যদি ঠিকমতো করতো! বোতলের নিচে পড়ে থাকা পানি ফেলে দিয়ে ফিল্টার থেকে পানি নিয়ে বোতল ভর্তি করে ফ্রিজে রাখে। করোনার পর থেকে ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি খাওয়ার অভ্যাস যদিওবা ছাড়তে পেরেছিল কিন্তু এই তীব্র তাপদাহে সেই ঠাণ্ডা পানিতে ওরা আবার অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া আর উপায়ই বা কি! বিশেষ করে মেয়েটা স্কুল থেকে এসেই বরফ ঠান্ডা পানির জন্য অস্থির হয়ে যায়।
ফ্রিজের আইস বক্স থেকে শশার আইস কিউব নিয়ে মুখে একটু ঘষাঘষির পর বাথরুমে ঢোকে। জান্নাত সবসময় শশা ব্লেন্ড করে ফ্রিজে রাখে। এই কিউবগুলো ওকে আরও সতেজ করে তোলে। মেয়েকেও বহুবার বলেছে গোসলের আগে এটা ঘষবে মুখে। পার্মানেন্ট ট্যান পড়ে গেছে শরীরে। কিন্তু তার নাকি সময়ই হয় না। দীঘল কালো ঘন চুলে শ্যাম্পু করার সময় ওর হঠাৎই “মায়ের লুতুপুতু ছেলেটার” মায়ের কথা মনে পড়ে যায়। মহিলা তার মিতাকে জড়িয়ে ধরতে চায়,ছেলেটি না.. ……
কোন মিতা!
আচ্ছা, এমন কি হতে পারে না যে… …….
সাতপাঁচ ভেবে জান্নাত গোলাপি বাথরোবটা গায়ে জড়িয়ে হন্তদন্ত হয়ে বাথরুম থেকে বের হয়ে মোবাইলটা হাতে নেয়।যদিও বেশ সময় নিয়ে শাওয়ার নেয়ার অভ্যাস জান্নাতের। আবার মোবাইল রেখেও দিয়ে। লোশন লাগাতে লাগাতে আনমনে ভাবে,একটা অপরিচিত ইয়াং ছেলেকে নক দেওয়া কি ঠিক হবে! আজকালকার ছেলে। কি না কি ভেবে বসে পড়ে। ওদের তো মেয়ে হলেই হলো, বয়স দেখে না। আচ্ছা যদি কোনো অপ্রীতিকর কিছু ঘটে সে না হয় সরি বলে সামলে নেবে। বিছানায় বসে বালিশ কোলের উপর নিয়ে ছেলেটার ম্যাসেন্জারে ঢুকে “হ্যালো” বলে।
এরমধ্যে গোধূলী এসে গোসল সেরে খাওয়াদাওয়া করে ওর টিচারের কাছে পড়তেও বসেছে। জান্নাত মোবাইল চেক করে দেখে ম্যাসেজ সিন করেছে কিন্তু কোনো রিপ্লাই নাই। মেয়ে আর তার টিচার দুজনকে ডাবের পুডিং,ভাজা নাগেট আর মাল্টার জুস দিয়ে এসে মোবাইলটা হাতে নিয়ে আবার চেক করতে গিয়ে দেখে ম্যাসেন্জারে রিপ্লাই এসেছে। জান্নাত জানায় যেন কিছু মনে না করে। জাস্ট কিছুটা কিউরিসিটি থেকেই সে তাকে নক করেছে। অনেক ভেবে ঠিক করলো সম্বোধনটা তুমিই হোক। জিজ্ঞেস করলো, তুমি আর তোমার মা একই আইডি ইউজ কর দেখে খুব অভিভূত হয়েছি । আচ্ছা তোমার মা’কে একটা আইডি খুলে দাও না কেন? আজকাল তো প্রায় সবারই ফেসবুক আইডি আছে।
: আমার মা মোবাইলের কিছুই বোঝে না এবং শিখতেও চায় না। অসুবিধা কি আমরা যদি একই আইডি ইউজ করি।
: না, সেটা বলছি না। এই যে আজ তোমাদের যে ঝামেলাটা হলো তা হয়তো হতো না।
:ওহ, মাইশার কথা বলছেন। ও তো মা’কে ভালোভাবেই জানে। আসলে বুঝতে পারেনি। মা’কে না চিনলে রিলেশনেই যেতাম না।
: মা’কে মনে হয় খুব ভসলোবাসো?
,: জি,মা’ই আমার সব।
জান্নাতের মনটা শীতল হয়ে গেল এই আটত্রিশ ডিগ্রির তাপে। ওর নিজের ছেলেমেয়েগুলো এমন মা ন্যাওটা নয়।আর কি কথা বলবে বুঝতে পারে না জান্নাত । কথা বাড়ানোর জন্যই জানতে চায়,
:তোমরা কি ঢাকায় থাকো?
: জি,না। নীলফামারিতে থাকি।
মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল।
: আমার মন বলছিলো তুমি বলবে রংপুর থাকো!
: আচ্ছা তোমার মা’কে দেখতে ইচ্ছে করছে। ছবি দেখাতে পারবে?
“মায়ের লুতুপুতু ছেলে ” ততক্ষণে জান্নাতের প্রোফাইল ঘুরে এসেছে।
:আমার নানা বাড়ি রংপুর “জান্নাতুল ফেরদৌস লাবণ্য।
আর আমার মায়ের নাম ” মাহবুবা রহমান লাবণ্য “।
মিনিটখানেকের মতো জান্নাত শ্বাস নিতে ভুলে যায়,
: আমার যদি ভুল না হয় তবে তুমি কি শুভ্র!
:জি আন্টি।
জান্নাত কি বলবে শব্দ খুঁজে পাচ্ছিল না। অস্ফুট স্বরে শুধু বললো, মিতা। আমার মিতা।
চোখে কেবলই ভাসছে সাদা ফিতেয় দুই বেনী করা স্কুল ড্রেস পড়া লম্বা এক কিশোরী। হাতপা নেড়ে যে অনর্গল কথা বলতে পারতো । জান্নাতের চোখদুটো জলে কানায় কানায় পূর্ণ । প্রায় চব্বিশ বছর পর তার মিতার সাথে দেখা হবে..
চলবে…….
২য় পর্বের লিন্ক,
https://www.facebook.com/groups/Anyaprokash/permalink/1691348894713464/?mibextid=Nif5oz