#রোদহীন_বিকালে_তুমি✨
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_১৭_ও_শেষ
৫২.
আজকে সবাই রিসোর্টের যাবে।সবাই প্রায় চলে গিয়েছে।আলভি আর আনিশা যাবে একটু পর।আলভির অফিসের কাজ শেষ করে আসতে আসতে লেট হয়ে গিয়েছে।ওরা গাড়িতে উঠতে যাবে তখনই আলভিকে অ’জ্ঞা’ন করে ওখান থেকে আনিশাকে নিয়ে চলে যায় কেউ।আলভির জ্ঞা’ন ফিরতেই ও নিজেকে রোদদের বাড়ি সামনে অ’জ্ঞা’ন অবস্থা আবিষ্কার করে।
ও সবাইকে ফোন করে জানায়।রোদ আর ইয়ামিন সবাইকে পৌঁছে দিয়ে চলে আসে আলভির কাছে।ইয়ামিন রোদ আলভি পা*গ*লের মতো আনিশাকে খুঁজতে থাকে।
আনিশার জ্ঞা’ন ফিরতেই নিজেকে একটা অচেনা রুমে আবিষ্কার করে।মা*থা চে*পে ধরে উঠে বসে।ম’নে করে কি হয়েছিল ওরা গাড়িতে উঠতে নিবে তখনই আনিশাকে কেউ অ’জ্ঞা’ন করে ফেলে তারপর আর কিছু মনে নেই আনিশার।আনিশা আলভির জন্য অস্থির হয়ে পরে।
আনিশা উঠে দরজা ধাক্কা দিতে দিতে বলে,,,,”কেউ আছে এখানে দরজাটা খুলুন আমাকে এখানে কেনো এনেছেন। যেতে দিন আমাকে আমি বাসায় যাবো আমার আলভির কাছে যাবো”
অনেক সময় ধরে আনিশা দরজা ধা’ক্কা দিতে থাকে কিন্তু ওপাশ থেকে কেউ দরজা খুলে না।আনিশা বসে বসে কাঁদতে থাকে।আনিশা নিজের ব্যাগ চেক করে।ফোন পেয়ে খুশি হয় কিন্তু ফোন ব’ন্ধ ছিলো।আনিশা আবারও কাঁদতে থাকে।সে এখান থেকে বের হওয়ার আশা পেয়েছিলো কিন্তু তাও শেষ।
আনিশা ভাবছে তাকে এখানে কে আনলো!কেনোই বা আনলো।আনিশার ভাবনার মাঝে কেউ দরজা খুলে ভেতরে ঢো’কে।আনিশা দাঁড়িয়ে পরে।তার সামনে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।সে চেনার চেষ্টা করে কিন্তু চিনতে পারে না।মনে করার চেষ্টা করে কোথাও দেখেছে কিনা কিন্তু আনিশা চিনে না লোকটাকে।লোকটা আনিশার সামনে এসে দাঁড়াতে আনিশা দু পা পিছিয়ে যায়।
তা দেখে তুহিন হাসে।বাঁ’কা হেসে বলে,,,,”আহা আনিশা বে’বি পিছিয়ে যাচ্ছো কেনো এখন থেকে তুমি তো আমার তোমার তো আমার সাথেই থাকতে হবে।”
আনিশা প্রথমে অবাক হলেও পরে রে*গে চি’ল্লি’য়ে বলে,,,,”কে আপনি আর আমাকে কেনো এখানে নিয়ে এসেছেন আর আমি বিবাহিত আমার স্বামী আছে। আমি আপনার কিভাবে!আমি শুধু একজনের শুধু মাত্র একজনের আর সে হলো আলভি শাহরিয়ার”
তুহিন আনিশার কাছে এসে ওর হাত চে’পে ধরে রে*গে বলে,,,,”আলভি আলভি আর আলভি সব জায়গায় এই আলভি।কি পেয়েছো কি তোমরা এই ছেলের ভেতর। সবাই শুধু ওকে চায়।মোটেও আমি তোমাকে ওর হতে দেবো না তুমি আমার শুধুই আমার।”
আনিশা নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে,,,”আমি শুধু আলভির আর আপনি কে হ্যা”
তুহিন বাঁ’কা হেসে বলে,,,”আমি তুহিন তোমার হবু বর কিছু সময় পরই হবো কিন্তু এখন তোমার সাথে আমি বাসর করবো”
আনিশা তুহিনের কথায় ভ*য় পেয়ে যায়।তুহিন আনিশার দিকে এগোতে থাকে আনিশা পেছাতে থাকে।পেছাতে পেছাতে দেওয়ালের সাথে লেগে যায়।তুহিন আনিশাকে স্পর্শ করতে যাবে ঠিক তখনই দরজা ভে’ঙে আলভি আর রোদ রুমে ঢো’কে।আলভি দৌড়ে আনিশার কাছে গিয়ে আনিশাকে জড়িয়ে ধরে আনিশার সারা মুখে চুমু দিয়ে ভরিয়ে দেয়।
আনিশার মাথাটা নিজের বুকে চেপে ধরে।বড্ড ভ*য় পেয়ে গিয়েছিল আলভি।আনিশা আলভির বুকে মা*থা রেখে কাঁদতে লাগে।
রোদ তুহিনকে দেখে অবাক হয়ে বলে,,,,”তুই!তুই এখানে কি করছিস।আর কেনোই বা আনিশাকে তু’লে নিয়ে আসছিস”
তুহিন রে*গে সুহানকে ডাকে।কিন্তু সুহান আসে না।তুহিন তেড়ে রোদকে মা’র’তে যায় কিন্তু রোদ উল্টো ওকে মা’র’তে থাকে।আলভিও এসে মা’র’তে থাকে তুহিনকে।আনিশা কিছু সময় পর গিয়ে ওদের থামায়।কারণ আর মার’লে ম*রে যাবে।
ওকে একটা চেয়ারে বাঁধে ইয়ামিন।তারপর রোদ বলে,,,”তুই আনিশাকে কেনো তু’লে এনেছিস”
তুহিন রে*গে চি’ল্লি’য়ে বলে,,,”আনিশাকে আমি ভালোবাসি তাই।ওই আলভির জন্য ওর জন্যই আমি ভার্সিটিতে থাকতে আমার রুপশীকে হা’রি’য়েছি।”
আলভি আর রোদ একে ওপরের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,”রুপশী যে কিনা ভার্সিটিতে থাকতে আ’ত্নহ’ত্যা করেছিলো”
তুহিন চি’ল্লি’য়ে বলে,,,,”হ্যা হ্যা ওই রুপশীকে আমি ভালোবাসতাম কিন্তু ও ভালোবাসতো আলভিকে।আলভিকে বললে ও রি’জে’ক্ট করে ওকে।ও অ’প’মা’ন স*য্য করতে না পেরে সু’ই’সা’ই’ড করে।আর আমি আমার রুপশীকে হ*ত্যা করার প্র’তি’শো’ধ নিতে চেয়েছি আমি ওই আলভির থেকে তাই ওর ভলোবাসাকে তু’লে এনেছিলাম।”
আলভি বলে,,,,”কি বললি তুই আমি রুপশীকে অ’পমা’ন করেছিলাম।আরে আমি তো রুপশীকে সেদিন সুন্দর ভাবেই না করেছিলাম কিন্তু কে জানতো তুই ভাবলি আমি ওকে অ’প’মা’ন করেছি কিন্তু তুই আজকে যা করেছিস তা মোটেও ঠিক করিসনি।আর কি বললি আনিশাকে ভালোবাসিস।আসলে তুই ওকে ভালোবাসিস না তুই তো এখনো রুপশীকেই ভালোবাসিস।প্র’তি’শো’ধের নে’শায় আর আনিশাকে ভালো লেগেছে বলে বলছিস ভালোবাসিস।যাই হোক না কেনো তুই আমার জিনিসের উপর হাত দিতে গিয়েছিলি এর ফল অবশ্যই ভ’য়া’ব’হ হবে।তোকে আমি পুলিশে দেবো কিন্তু তার আগে আমি শা’স্তি দেবো।”
ইয়ামিনকে আলভি বলে,,,”ওকে আমাদের বিয়ে পর্যন্ত আটকে রেখে ট’র্চা’র করে পুলিশের হাতে তু’লে দিয়ো”
ইয়ামিন হ্যা বলে।রোদ আনিশা আর আলভি বেরিয়ে পরে।বাড়ির কেউই জানে না।ইয়ামিন আর রোদ মি’থ্যা বলে এসেছে।তাই দ্রুত ওরা ফিরে যায়।রোদ ড্রাইভ করছে আর আনিশা আর আলভি পেছনে বসা।আনিশা আলভিকে বলে,,,,
“আপনি আমায় খুঁজে পেলেন কোথায়”
আলভি বলে,,,”তোমার ফোনের লোকেশন ট্র্যা’কিং করে”[লেখিকা ইশা আহমেদ]
আনিশা কথা বাড়ায় না।ভালো লাগছে না ওর।ও আলভি কাঁধে মা*থা রাখে।ওর উপর দিয়ে অনেক ঝড় গিয়েছে।আনিশা প্রচুর ভ*য় পেয়েছিলো।ওই লোকটা একটা সাইকো ছিলো কেমন আজব বিহেব করছিলো।
৫৩.
আজকে রোদ ফারিহা আনিশা আলভির বিয়ে।বাড়ির কাউকেই জানায়নি ওরা সেদিনের কথা।আর জনাবেও না কারণ কিছু সত্য সবার না জানলেও চলে।আনিশা আর ফারিহা একই রকম সেজেছে।এখনই হয়তো তাদের দিয়ে যাবে। আনিশা আর ফারিহা দুজন হাসছে।কি ছিলো তাদের জীবন আর কি হয়ে গেলো।মাঝখানে একটা ঝ’ড় এসে সব এলোমেলো করে দিয়েছিলো।কিন্তু এখন সব ঠিক আছে।
আল্লাহ হয়তো এমনই চেয়েছিলেন। আল্লাহ যা করেন তা আমাদের ভালোর জন্যই করেন যা আনিশা আলভি ফারিহা তিনজনই খুব ভালো করে বুঝতে পারছে।সবাই এসে আনিশা ফারিহাকে নিয়ে যায়।ওদের বিয়েটা হয়ে যায় খুব ভালো করে।
ফারিহা তার প্রিয় ফুল হলুদ গোলাপের মাঝে বসে আছে বউ সেজে।রোদ দরজা বন্ধ করে রুমে ঢোকে।ফারিহা একটু নড়েচড়ে ওঠে।রোদ ফারিহার পাশে বসে বলে,,,,”ফারুপরী আমার দিকে তাকাও।”
ফারিহা রোদের দিকে তাকাতেই রোদ মুচকি হেসে একটা রিং পরিয়ে দিলো ফারিহাকে।রোদ ফারিহাকে বললল,,,,”আগের বার তো একটা বাহানা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলে আজকে কি করবে”
ফারিহা বলে,,,,”অ’স’ভ্য হয়ে যাচ্ছেন আপনি দিনদিন।”
রোদ ফারিহাক জড়িয়ে ধরে বলে,,,,”হ্যা তোমারই”
আনিশা বসে আছে বাসর ঘরে।সেই দিনের মতো। কিন্তু আজকে তার ভ*য়ের কিছু নেই।সে আজ ভীষণ খুশি।দরজা খোলার শব্দে চমকে উঠে। কিন্তু পর মূহুর্তে নিজেকে সামলে নেয়।আলভি এসে আনিশার পাশে বসে।আলভি আনিশাকে বলে,,,,
“আমি জানি আগের বার আমি তোমার সাথে অনেক খা’রা’প ব্যবহার করেছিলাম।তার জন্য আমি খুব সরি আজকে থেকে আমরা নতুন জীবন শুরু করলাম বউজান”
আনিশাও মা*থা নেড়ে সায় দেয়।আজকে থেকে শুরু হলো তাদের নতুন পথ চলা।আজকে তাদের ভালোবাসা পূর্নতা পাবে।যেখানে থাকবে না কোনো ভালোবাসার অভাব।ভালোবাসা জিনিসটা আসলেই খুব অদ্ভুত।
৫৪.
আজকে আলভি আনিশার বিয়ের একটা বছর পূর্ন হলো।আনিশার ইচ্ছা অনু্যায়ী আলভি আজকে সারাদিন ওকে ঘুরিয়ে নিয়ে বেরিয়েছে।আনিশার আরো একটা ইচ্ছা একটু আগেই আলভিকে বলেছে আর আলভি তাকে নিয়ে এখন সেখানে যাচ্ছে।আলভি প্রতিদিন নতুন করে আনিশার প্রেমে পরছে।আজকের আবহাওয়াটা মেঘলা মেঘলা কেমন একদম রোদহীন বিকাল।আলভি আর আনিশা হাঁটছে নির্জন রাস্তা দিয়ে।এটাই আনিশার ইচ্ছা। আলভির সাথে নির্জন রাস্তায় হাঁটা এই রোদহীন বিকালে।আলভি আনিশার দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলল,,,,,,,#রোদহীন_বিকালে_তুমি শুধুই আমার।”
আলভি আনিশার কানের কাছে ফিসফিস করে বলে,,,,”ভালোবাসি বউজান খুব বেশি”
আনিশাও মুচকি হেসে বলে,,,,”আমিও খুব ভালোবাসি আলভি সাহেব”
আলভি আনিশার হাসির দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,
এই মেঘে ঢাকা শহরে,
হাঁটছি তুমি আমি পাশাপাশি
আমি চেয়ে আছি তোমার পানে
তুমি উপভোগ করছো
এই রোদহীন বিকাল!আর আমি
এই রোদহীন বিকালে শুধু
তোমাকেই চাই!
#সমাপ্ত….!
[আসসালামু আলাইকুম।আজকে সবাই একটু দুই এক লাইন ক*ষ্ট করে লিখে যাবেন প্লিজ।”