#তোমার_আমার_চিরকাল🌸
|| শেষাংশ ||
#লেখনীতে_বিবি_জোহরা_ঊর্মি
নিকোটিনের ধোঁয়ায় পুরো রুমটা ধোঁয়াসে হয়ে গেছে। এক ফোঁটা আলোর দেখা নেই। অন্ধকার হয়ে আছে রুমটা। মীরা সিগারেটের ধোঁয়া নাকে নিতে পারেনা। দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম তার। কাশতে কাশতে অবস্থা নাজেহাল৷ মীরা এসেছিল আয়ানকে দেখতে। খুব একটা দেখা যায়না তাকে। আয়ানের রুমের দরজাটা ভেজানো ছিল। মীরা খুলে দিল। এখন তার রুমে এসে দেখে এই অবস্থা। মীরাকে কাশতে দেখে আয়ান দৌড়ে এলো। রুমের লাইট অন করল। হাতে থাকা জলন্ত সিগারেটটা ফেলে দিল। জানালার পর্দা সরিয়ে জানালা খুলে দিল। এক গ্লাস পানি নিয়ে এসে মীরাকে দিল। মীরাকে ধরে ওয়াশরুমের বেসিনে নিয়ে গেল। মীরার চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে তাকে পানি পান করালো। তাকে নিয়ে এসে বিছানায় বসায়। জিগ্যেস করে, “ঠিকাছ তুমি?”
মীরা আয়ানের দিকে চোখ তুলে তাকায়। কেমন যেন হয়ে গেছে আয়ান। সেদিনের পর থেকে নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে রেখেছে। শুকিয়ে গেছে মুখ। গাল ভর্তি দাড়ি, আর মাথা ভর্তি লম্বা চুল হয়েছে প্রচুর। সিগারেট খেয়ে ঠোঁটগুলো কালো করে ফেলেছে। কি আয়ান ছিল আর কি আয়ান হয়েছে। “এই অবস্থা কেন তোমার?”
“কি অবস্থা?”
“যা দেখছি তা তো মোটেও সুবিধার লাগছে না। বলো কি হয়েছে।”
“কি হবে? আমার জীবন থেকে সব হারিয়ে গেছে মীরা। আমি সবাইকে কষ্ট দেই। ইচ্ছে করে না কারো সাথে মিশতে। একাকীত্বই আমার ভালো লাগে।”
“দিবার কথা মনে পড়ে না?”
আয়ান চুপ হয়ে গেল। হেটে চলে গেল বারান্দায়। মীরা তাকে পিছন থেকে ডাকতে থাকে। কিন্তু আয়ান কিছু বলে না। শুধু একটাই কথা বলল, “মীরা তুমি চলে যাও। আমি একা থাকতে চাই।”
মীরা কিন্তু গেল না। সেও আয়ানের কাছে এলো। পাশে দাঁড়িয়ে বলল, “আমিতো এতো সহজে তোমায় ছাড়ছিনা দেবরজি। বলো কি কারণে তুমি রুম বন্দি হয়ে আছো।”
“বললাম তো মীরা। ভালো লাগে না কিছু।”
“সেদিনের জন্য মন খারাপ?”
“আমি এটা ঠিক করালাম না জানো, শুধু শুধুই রাগ দেখিয়ে…”
“বাদ দাও। এখন বলোতো, দিবাকে চাও কি চাও না?”
আয়ান মীরার দিকে ফিরে তাকাল। ভ্রু কুচকে জিগ্যেস করলো, “কি?”
“আমি প্রশ্ন করেছি, উল্টো প্রশ্ন শুনতে চাইনি।”
“যে আমার হতে চায়না, তাকে কি আমি জোর করে আমার করে নিতে পারব?”
“ভালোবাসার উপর বিশ্বাস থাকলে সব সম্ভব দেবরজি।”
“তুমি কি বলতে চাইছ আমি ঠিক বুঝলাম না।”
“তোমাকে আর দিবাকে এক করতে চাই। বিয়ে দিতে চাই।”
“ফাজলামো করছ?”
“নাহ্। তুমি রাজি কিনা সেটা বলো আগে।”
“মীরা তুমি জেদ করছ।”
“আমি বরাবরই জেদি। মতামত চাইছি, জলদি বলো।”
“জানি না।”
“দেখো আয়ান, আমার হেয়ালি একদম পছন্দ না। বলো।”
“হ্যাঁ, চাইতো। সবসময়ই চাই। প্রতিটা সেকেন্ডে চাই।”
“আচ্ছা, ধরে নাও পেয়ে গেছ।”
“এতো সহজ?”
“ম্যাজিক করি?”
আয়ান হেসে উঠে। আয়ানের হাসি দেখে মীরার রাগ উঠে যায়। সে কোমরে হাত রেখে বলে, “হাসবে না বলে দিলাম।”
“ওকে ওকে।”
“কিন্তু তোমার এই লুকটা আগে চেঞ্জ করো। আগের আয়ান হয়ে যাও। বিয়ে করবে, অথচ চেহারা বানিয়ে রেখেছ হনুমানের মতো।”
“বিয়ে করতে চেহারা লাগে?”
“হ্যাঁ, নাহলে ছেলে মেয়ে বিয়ের ছবি দেখে বলবে বাবা তুমি হনুমান ছিলে?”
“তুমি কিন্তু খুব ভালো জোক বলতে পারো।”
“আমার কথাটা কি শুনবে?”
“আচ্ছা বোন, আপনি যা বলবেন।”
মীরা হেসে ওখান থেকে চলে যায়।
.
মামার বাড়িতে এসেছে মীরা ও আহান। ওরা আসায় মামার বাড়ির সবাই খুব খুশি হলো। দিবার বাবা তো জামাই পেয়ে সব ভুলে গেছেন। তাকে নিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন। গ্রামের সবার সাথে পরিচয় করাচ্ছেন। ইরার বিয়েতে ব্যস্ত থাকায় তো কিছুই করতে পারলেন না উনি। সবার সাথে হালকা পাতলা কথা বলে মীরা দিবাকে খুঁজে। দিবা তার রুমেই ছিল। বসে বসে কি যেন আঁকছে সে। মীরা চুপি চুপি দিবার কাছে গেল। মীরা দেখল দিবা দুজন নর-নারীর পেন্সিল আর্ট করেছে। এখন তাতে রঙ দিচ্ছে। অঙ্কনটা এতো সুন্দর হয়েছে যে মীরা চোখই সরাতে পারছিলা না। দিবা ইংরেজিতে ওখানে দুটো অক্ষর বসালো। এ প্লাস ডি। মীরা এই অক্ষরের নাম খুঁজে যাচ্ছে। দিবার আঁকা শেষ হলেই সে চেয়ার থেকে উঠে বিপরীত মুখে ঘুরে। হঠাৎ মীরাকে দেখে সে চমকে হাত থেকে তার ড্রয়িং খাতাটা ফেলে দেয়। ভয়ে আতঙ্কে কাঁপাকাঁপি অবস্থা তার। দিবা বলল, “তুই হঠাৎ! এখানে?”
“কি আঁকছিস?”
“কই! কিছু নাতো।”
সত্যি লুকানোর চেষ্টা করছে দিবা। কিন্তু মীরা সহজে ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নয়। সে নিচ থেকে ড্রয়িং খাতাটা তুলে দিবার সামনে ধরে। বলে, “যাকে ভালোবাসিস, তাকে এতো কষ্ট দিচ্ছিস কেন? তার থেকে দূরে থেকে তুইও কি শান্তি পাচ্ছিস?”
“কি বলছিস মীরা এসব।”
দিবা দূরে সরে গেল। মীরা দিবার হাতটা টেনে ধরে নিজের সামনে দাঁড় করালো। বলল, “সময় আছে দিবা, স্বীকার কর এক্ষুণি।”
দিবা নিচু হয়ে বলে, “মীরা তুই ভুলভাল কথা বলছিস। কি স্বীকার করব?”
“ওইযে, যার নামের প্রথম অক্ষরের সাথে তোর নামের প্রথম অক্ষর লিখলি; আমি তার কথাই বলছি।”
“কেউ না। আমি কারো নাম লিখিনি।”
“তাই! কি সুন্দর মিথ্যে বলিস রে তুই।”
“মীরা, ভালো লাগছে না। যা এখান থেকে।”
“কোথায় যাব? আমি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছি। আজ পাঁকা কথা সেড়েই যাব।”
“কিইই?”
“হ্যাঁ। আমার দেবরকে তো বিয়ে দিচ্ছি, যানিস কি? মেয়েটা না অনেক সুন্দর। আমার সাথে না তার খুব যায়। তোদের বাড়ির পাশেই তো তাদের বাড়ি।”
“তো এখানে এসেছিস কেন? যা না, যেখানে সুন্দর মেয়ে আছে ওখানেই যা।”
অন্যদিকে মুখ ফিরে বলল দিবা। মিটিমিটি হাসছে মীরা। ফোন করার ভান করে ফোনটা কানে লাগায়। আয়ানের সাথে মিথ্যা ফোনালাপ করতে থাকে সে। বলে, “হ্যাঁ, শোনো আয়ান। আমি কিন্তু মেয়ে দেখেছি। একদম পারফেক্ট তোমার জন্য। যেমন রূপবতী, তেমনি গুণবতী। আমি কিন্তু রাজি। আমার একমাত্র দেবর বলে কথা৷ বিয়েতো আমি ওখানেই করাব তোমায়।”
মীরা আড়চোখে দিবার দিকে তাকিয়ে দেখে দিবা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। চোখ থেকে পানি পড়ছে। মীরা আরও একটু বাড়িয়ে বলে, “কি বললে? মেয়েকেও তোমার পছন্দ? তাহলে বাবা মাকে আসতে বলি! বিয়ে পড়িয়ে নিয়ে যাব।”
দিবা ছুটে চলে গেল বারান্দায়। বারান্দার গ্রিল ধরে চোখ দিয়ে টুপটাপ পানি ফেলছে সে। মীরা এসে দিবার চোখের পানি মুছে দেয়। মীরাকে জড়িয়ে ধরে দিবা হুঁহুঁ করে কেঁদে উঠে। মীরা দিবার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, “এই না বললি ভালোবাসিস না? তাহলে ওর বিয়ের কথা শুনে কাঁদছিস কেন?”
“পারছিনা মীরা। নিজের মধ্যে আর কষ্ট লুকিয়ে রাখতে পারছিনা আমি।”
“তাহলে স্বীকার কর না তুই ওকে ভালোবাসিস।”
“বাসি৷ তোর দেবরকে আমি ভালোবাসি মীরা।”
“এইতো গুড গার্ল। তা এতদিন পর স্বীকার করলি কেন? এর আগে কেন বলিসনি?”
“আমি মা বাবাকে কোনো ক্রমেই আঘাত দিতে চাইনা মীরা। যদি আমার কারণে তারা কষ্ট পায়, আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না।”
“ধুর বোকা মেয়ে। মা বাবা কখনোই সন্তানের খারাপ চাইবেন না। বুঝলি আমার ছোট জা?”
দিবা মুখ তুলে মীরার দিকে তাকিয়ে বলল, “ছোট জা?।তোর দেবরকে না অন্য কোথাও বিয়ে দিচ্ছিস?”
“ওই নাটকটা না করলে কি আর তোর পেট থেকে কথা বের করতে পারতাম?”
“ঠিক করলি না মীরা এটা।”
“এবার চোখ মুছ। আমার জা হওয়ার প্রস্তুতি নে।”
মীরা তার মামা মামিকে দিবা আর আয়ানের বিষয়ে অনেক কথাবার্তা বলেছে। তারা জানায় আয়ানের মা বাবার সাথে তারা কথা বলবে। পরেরদিনই মীরার পরিবার, আহানের পরিবার ও দিবার পরিবার একত্রে বসে। আয়ান আর দিবার বিষয়ে কথা বলে তারা বিয়ের পাঁকা কথা সেড়ে নেয়। এক সাপ্তাহ সময়ের ভিতর বিয়ের আয়োজন করে।
বিয়েটা হয় সাদামাটাভাবে। কনে সেজে বসে আছে দিবা। একটু পরেই আগমন ঘটে আয়ানের। লাল খয়েরী মিক্সিং একটা সেরোয়ানী পড়েছে সে। দিবার পরনে লাল টুকটুকে বেনারসি শাড়ি। আয়ান এসে দিবার পাশে বসে। গম্ভীর হয়ে বসে থাকে কিছুক্ষণ এরপর দিবাকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকে।
“আমি আকাশের দিকে চেয়ে দুঃখ ছাড়ি হাওয়ায়, বাতাশে মিলে যায় দীর্ঘশ্বাস। ব্যথা লুকাই হৃদ-কোণে, প্রেয়সীর অপেক্ষায় ব্যাকুল হই ক্ষণে ক্ষণে।”
দিবা চুপ এখনো। আয়ান দিবার হাত ধরতেই দিবা ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসায় আয়ানের গালে। আয়ান তব্দা হয়ে গালে হাত দিয়ে দিবার দিকে তাকিয়ে থাকে৷ দিবা রাগে ফোসফাস করছে। আয়ান বলে, “তুমি আমায় থাপ্পড় দিলে কেন? আমার অন্যায় টা কি?”
“শুধু থাপ্পড় নয়, আপনাকে আজ আমি মেরেইই ফেলব।”
বলেই ঝাপিয়ে পড়ে আয়ানের উপর। একবার ওর গলা টিপে ধরে তো অন্যবার কিল ঘুষি দিতে থাকে। আয়ান দিবাকে ছাড়ার জন্য রিকুয়েষ্ট করে অনেক বার কিন্তু সে শোনেই না। আয়ান বাধ্য হয়ে বলে, “আমি বাসর করব না বোন। আমায় ছাড়।”
“অ্যাঁই! কি বললি তুই? আমি তোর বোন?”
“তুমি আমার বোন নও, মা, কাকি খালা ছাড় আমায়।”
“কিহ! নিজের বউকে মা কাকি বলা? দেখাচ্ছি মজা।”
দিবা আয়ানের উপর উঠে আয়ানকে আরও জোরে মারতে থাকে। সেরোয়ানী ছিঁড়ে একাকার অবস্থা। বাসরঘরে কেউ বউয়ের হাতে কেলানি খায় এটা আয়ানের জানা ছিল না। আয়ান হয়রান হয়ে বলে, “আমি বাসর করব না। ছেড়ে দাও আমায়।”
পরেরদিন আয়ান ও আহান দুজনের বিয়ের রিসিপশনই একসাথে হয়। বেশ বড়ো করেই হয়। সব আত্মিয় স্বজন এসে উপস্থিত হয় ওই অনুষ্টানে। গ্রাম থেকে আহানের চাচারাও আসেন। গান বাজনা হৈ হুল্লোড় এর মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যায়। দুই জোড়া কাপল কে সবাই দোয়া করে দেয়। তাদের জীবনের সুখ শান্তির জন্য প্রার্থনা করে।
–
খুনসুটি, প্রেম ভালোবাসা এসবের মধ্য দিয়েই চলে যায় দুই বছর।
আহানদের পরিবারটি হয়ে যায় বড়ো। দুজন নতুন অতিথি আসে দুই ছেলের ঘরে। একজন এক বছরের আর একজনের বয়স মাত্র দুই মাস। আহান ও মীরার ঘরে একটা সুন্দর ফুটফুটে মেয়ে হয়। আহান তাত নাম রেখেছে মেহের। নিজেদের রাজকন্যাকে নিয়ে বেশ ভালোই দিন কেটে যাচ্ছে তাদের। আর অন্যদিকে আয়ান ও দিবার ঘরে ছেলে হয়। তাদের ছেলের নামও কিন্তু আহানই রাখে। দিগন্ত তার নাম। তারাও তাদের ছেলেকে নিয়ে বেশ আছে।
দিগন্তকে দোলনায় দোল খাওয়াচ্ছে দিবা। এমন সময় আয়ান এসে দিগন্তকে কোলে নেয়। দিবার উঠে যায় রাগ। সে বলদ, “ঘুমন্ত শিশুকে এভাবে কোলে নেয় কেউ? দেখছ না ও ঘুমুচ্ছে ও।”
“ওমা! আমার ছেলেকে আমি কোলে নিব না?”
“কোলে নেওয়ারও একটা সময় আছে। ও যদি এখন জেগে যায়, ক্যাসেটটা তো সারাদিন বাজবে। থামাবে কে?”
“কেন আমি আছিনা।”
“হ্যাঁ আছোই তো। সারাদিন বাপ আর ছেলে মিলে আমার কান ঝালাপালা করে দাও। আমার হয়েছে যত জ্বালা।”
“ও বউ! রাগ করো কেন?”
“ওকে দোলনায় দাও।”
আয়ান দিগন্তকে দোলনায় রাখে। দিবাকে পিছনে থেকে জড়িয়ে ধরে বলে, “আমার বউটা কি রাগ করেছে?”
“কেন? রাগ ভাঙাবে তুমি? তুমি কোনদিন আমার রাগ ভেঙেছ বলতো? সবসময় আমার রাগ আমিই মিমাংসা করি। তোমার মতো তুমি থাকো।”
“স্যরি বউ। আমি কত কিছুই করি, তবুও তোমার রাগ ভাঙেনা। আচ্ছা বলতো, সেদিন বাসর রাতে আমায় এতো মেরেছ কেন?”
“যাতে আর কোনোদিন আমায় রেখে অন্য মেয়ের ধারে কাছেও না যাও।”
“তবে কি তুমি প্রতিশোধ নিলে?”
“হ্যাঁ।”
.
ডায়েরিতে কলম চালিয়ে লিখছে আহান। কত কিছুই সে লিখে ফেলেছে এক মুহুর্তে। মীরা মনোযোগ দিয়ে আহানের লেখাগুলো পড়ছে। মেহের ও পিয়াওমি দুজন ঘুমাচ্ছে একসাথে। মেহেরের একমাত্র খেলার সঙ্গি এখন পিয়াওমি। আহান ডায়েরিটা বন্ধ করে দিল। মীরা তখন জিগ্যেস করল, “কি লিখেন এতো আপনি?”
আহান স্মিথ হেসে জবাব দেয়, “তোমার আমার চিরকালের কথা। বয়স পুরিয়ে গেলেও লেখাগুলো মুছে যাবে না। যেন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানতে পারে, তাদের বাবা মায়ের একটা সুন্দর জীবন ছিল।”
“আমরা তো চিরকাল বেঁচে থাকব না আহান। তাহলে চিরকাল বলেন কেন?”
“আমরা না থাকি, আমাদের কাহিনী তো চিরকাল থেকে যাবে এই পৃথিবীর বুকে। তুমি দেখবে, আমাদের খুব করে মনে রাখবে এই প্রজন্ম।”
“বই লিখবেন?”
“লেখা উচিৎ। পুরো পৃথিবীকে জানানো উচিৎ। আহান ও মীরার চিরকালের কথা।”
অতঃপর একে অপরের হাতে হাত রেখে পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে তারা।
মানুষের বয়েসের সমাপ্তি ঘটলেও ভালোবাসার সমাপ্তি হয় না কখনো ভালোবাসা চিরকাল থেকেই যায়। একটা পুরনো বটগাছের মতো।
____সমাপ্তি____