#যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ৩৬
নিজের ঘরে এসে হাফ ছেড়ে বসল সৌমিত্র। চারিদিকে বিভিন্ন জিনিসের চিন্তায় মাথা ফে;টে যাওয়ার উপক্রম তার। তার উপর বড়ো ভাইটা এভাবে রেগেমেগে বেরিয়ে গেল। জানে না কতক্ষণে রাগ পড়বে আর বাড়ি ফিরবে। আদেও ফিরবে কিনা তাও জানা নেই। হালকা দাড়িযুক্ত বাম গালে হাত বুলাতে বুলাতে স্বচ্ছের নম্বর ডায়াল করল সে। স্বচ্ছকে আটকানোর কারণে বেশ জোরেশোরেই থা;প্পড় মে’রেছে সে। গালটা জ্বলছে বেশ। তিনবার কল করার পরেও কল রিসিভ করল না স্বচ্ছ। ক্লান্তির শ্বাস ফেলে চিত হয়ে শুয়ে পড়তে পড়তে হঠাৎ ভাবল তানিয়াকে কল করা দরকার। মেয়েটা নিশ্চয় চিন্তিত রয়েছে বান্ধবীর জন্য। যেই ভাবা সেই কাজ! কললিস্ট স্ক্রল করে নম্বর ডায়াল করে কানে ধরে চোখ বুঁজে রইল সৌমিত্র। রিং হচ্ছে তানিয়ার ফোনে। একসময় কল রিসিভড হয়। সৌমিত্র সরাসরি বলে,
“মিস গোলাপি! আপনি এটা জেনে খুশি হবেন যে আপনার বান্ধবীকে পাওয়া গিয়েছে।”
ওপরপাশ থেকে কেমন যেন একটা গুমোট সুর ভেসে এলো। তানিয়া বলল,
“জানানোর জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি আসলেই চিন্তাই ছিলাম।”
“এই চিন্তার কারণই কি আপনার গম্ভীর কণ্ঠ!”
তানিয়ার মুখ আরো ভার হলো। গমগমে সুরে বলল,
“সেটা জেনে আর আপনি কী করবেন?”
সৌমিত্রের এবার তানিয়ার ব্যবহার অদ্ভুত ঠেকল। আগে কখনোই সে এমনভাবে কথা বলত না। সৌমিত্র বোধ করল তানিয়া কোনো কারণে মনে চাপা রাগ নিয়ে আছে। যার দরুণ এভাবে সে কথা বলছে।
“আপনি কোনো কারণে আপসেট? কিছু হয়েছে?”
“না। কিছু হয়নি। আমি রাখছি। আর আপনার কাছে একটা অনুরোধ রইল আমার। আর কখনো আমার নম্বরে কল করবেন না।”
সৌমিত্র চমকে গেল। বিস্মিত হয়ে জানতে চাইল,
“আমি কি কিছু ভুল করে নিজের অজান্তে আপনার সাথে? আমার কোনো ব্যবহার আপনার খারাপ লেগেছে? যদি তাই হয়ে থাকে প্লিজ বলুন। নিজের অজান্তে কিছু করে থাকলে আমি সত্যি দুঃখিত।”
তানিয়া খানিকটা তাচ্ছিল্য করেই বলল,
“দুঃখিত বলে কি এখন আমার বিয়ে ঠেকাতে পারবেন? আমার কষ্ট দূর হয়ে যাবে? আমার সমস্যা শেষ হয়ে যাবে?”
সৌমিত্র আরো ব্যাকুল হলো। তার জন্য কি তানিয়ার জীবনে কোনো সমস্যা এলো তবে? বিচলিত হয়ে শুধাল,
“আমার জন্য কী সমস্যা হয়েছে? বলুন আমায়। সমাধানের সুযোগ দিন।”
তানিয়া ঘনঘন শ্বাস নিয়ে বলল,
“আপনি সেদিন আপনার রুমাল নেওয়ার জন্য আমায় ডেকেছিলেন। সেদিক দিয়ে আমার মামু আমার বাড়ি যাচ্ছিল তখন। আমাদের দুজনকে একসাথে দেখে এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে মাকে বলে দিয়েছে আমার এতদিন ভালো ভালো বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার কারণ শুধু আপনি। মানে আপনাকে আমার প্রেমিক বুঝে নিয়েছে সবাই। মা এ নিয়ে অনেক কথা শুনিয়েছে। বলেছে এবার আর আমার কোনো বাহানা শুনবে না। ভালো সম্বন্ধ দেখে বিয়ে দিয়ে দেবে।”
“হ্যাঁ তো বিয়ে করে নিন। আমি তো আপনার উপকার করে দিলাম। এর বদলে তো আমাকে স্পেশাল থ্যাংকস জানানো উচিত। সংসার করার সুযোগ করে দিচ্ছি আপনাকে। এক্ষেত্রে আমি তো একটা ধন্যবাদ ডিজার্ভ করি।”
তানিয়ার রাগটা বেড়ে গেল সৌমিত্রের প্রতি। মানুষ এতটা ভাবলেশহীন হয়! কী করে সব জিনিস নিয়ে মজা করা যায় তা এই মানুষটা বোধহয় ভালো জানে। রাগে কান্না পেয়ে গেল তার। বলল,
“আপনি কি বুঝবেন আমার কষ্ট। আমি একজনকে ভালোবাসি। তার সঙ্গে আমার চার বছরের সম্পর্ক। তাকে ভুলে আমি কী করে বিয়ে করব? তার চাকরি নেই। আমার সাথেই পড়াশোনা করেছে। চাকরির অভাবে বাড়িতে তার কথা বলতে পারছি না। কোনোরকমে বাড়িতে বলে বিয়ের ব্যাপারটা ঠেকিয়ে রেখেছিলাম। এবার আর বোধহয় তা সম্ভব হলো না। বিয়েটা এবার দিয়েই ছাড়বে মা। কাল পরশুর মধ্যে হয়ত পাত্রপক্ষ বিয়ের কথা পাকা করতে আসবে। আগে দেখে যাওয়া পাত্রপক্ষকের সঙ্গেই আবার কোনোভাবে যোগাযোগ হয়েছে মায়ের। পাত্রের মা আগের থেকে আমায় ভীষণ পছন্দ করে রেখেছেন। মোহ কোনোমতে সেটা আটকেছিল কিন্তু এবার সব শেষ হয়ে যাবে।”
সৌমিত্রের মাঝে তবুও যেন বিষয়টির হেলদোল দেখা গেল না। বলল,
“আপনার প্রেমিক মহাশয় এমনিও একদিন পালিয়ে যাবে। কারণ প্রেমিকরা প্রেম করতেই ওস্তাদ। সংসার করতে নয়।”
তানিয়া চেঁচিয়ে বলে ওঠে,
“আপনাকে বিষয়টা শেয়ার করাটাই আমার ভুল হয়েছে। আর কখনো আমায় কল করবেন না।”
তানিয়া বিলম্ব না করে কল কেটে দিলো। সৌমিত্র ফোন ছুঁড়ে দিলো বিছানার অপরপ্রান্তে। বাড়তি চিন্তা এসে পড়ল মাথায়। মাথা চেপে ধরে শুয়ে রইল সে।
রাতে শোয়ার জন্য বিছানায় বসলেন সরোয়ার সাহেব। মিসেস জেবা আগে থেকেই সেখানে বসারত ছিলেন। একমনে কী যেন একটা ভেবে যাচ্ছেন বসে বসে। অতঃপর সরোয়ার সাহেব নিজের পাশের ল্যাম্প বন্ধ করে দিয়ে একপাশ হয়ে শুয়ে বললেন,
“আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়ো।”
মিসেস জেবার কোনো হেলদোল হলো না। একই ভঙ্গিতে বসে রইলেন। কিছু সময়ের ব্যবধানে সম্পূর্ণ মুখটা শুকিয়ে গেছে যেন। মিসেস জেবার সাড়া না পেয়ে ভ্রু কুঁচকান সরোয়ার সাহেব। চোখ থেকে চশমা খুলতে খুলতে বলেন,
“এভাবে কি সারারাত বসে থাকতে চাও?”
মিসেস জেবা এবার মুখ খুললেন। ভার গলায় বললেন,
“ছেলেকে এভাবে বের করে দিয়ে ঘুম হবে তোমার?”
সরোয়ার সাহেবের মুখভঙ্গি পাল্টে গেল। তিক্ততায় ছেয়ে গেল চেহারা। তিক্ত সুরে বললেন,
“আমি ওকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছি? তুমি ওখানে থেকে সব কথা শুনেছ। ও নিজে বেরিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে।”
“তুমি যদি ওর প্রতি সামান্য নমনীয় হতে। তখন নিজেও জেদ না ধরে ওর কথাগুলো স্বীকার করে নিতে, ওর কথা মানতে তাহলে ও চলে যেত না।”
“তাহলে তুমি কী বলতে চাইছ? আমি ওর কথা অনুযায়ী পুলিশের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করি আর জেলে দিন কাটাই?”
মিসেস জেবা আরো জোর গলায় বললেন,
“কেন এমন কাজ করেছ তবে যে কারণে তোমার জেলে যাওয়ার প্রসঙ্গ আসছে? মোহ মেয়েটা তো আমাদের ফারাহর মতো। তার সঙ্গে কেন লড়াই করছ? তার প্রসঙ্গ ধরে বাড়িতে এতো অশান্তির সৃষ্টি করলে। আমার ছেলেটাও জেদ ধরে বাড়ি ছেড়ে চলে গেল। তাও নিজের সাথে কিছুই নিলো না। ও কোথায় থাকবে, কী খাবে সেসব কিছু জানা নেই। আর আমি এখন শান্তিতে ঘুমাব?”
“কী এমন হতো যদি তোমার ছেলে নিজের বাবার কাছে একটু মাথা নত করত? কী এমন হতো যদি আমার কথা মেনে নিতো? তাহলে তো এত কিছু ঘটত না।”
মিসেস জেবা আবারও বললেন,
“ও তোমার ছেলে। তোমার গুণ ওর মাঝে থাকবে সেটাই তো স্বাভাবিক। তুমি কারোর সামনে মাথা নত করতে জানো? স্বচ্ছ হওয়ার পর থেকে ও আমার থেকে বেশি তোমার সাথে থেকেছে। ওকে তুমি আমার চেয়ে বেশি সময় দিয়েছ যেচে। কারণ তোমার ইচ্ছে ছিল স্বচ্ছই হবে তোমার পরবর্তী রাজনীতি বিষয়গুলো সামলাবে। তাই তুমিও তাকে সেভাবেই নিজের মতো বড়ো করে তুলেছ। ও জেদি হলো, একরোখা হলো। কিন্তু তোমার বিরুদ্ধে গিয়ে। সৌমিত্রকে দেখেছ কখনো এতটা একরোখা হতে? সৌমিত্র শান্ত মেজাজের। কারণ ও হওয়ার পর তুমি তাকে সময় দিতে পারো নি। আমি একাহাতে মানুষ করেছি ছোটো ছেলেকে। তাই ও এত ঘোরপ্যাঁচ জানেও না। ঘুরেফিরে যদি খেয়াল করে দেখো, স্বচ্ছের এত জেদের কারণ শুধুই তুমি।”
সরোয়ার সাহেব তবুও দমতে চাইলেন না। তিনি গর্জে উঠে বললেন,
“তাহলে ও যেমন তৈরি হয়েছে তেমনি ওকে ভুগতে দাও। ওকে নিয়ে আমি আর একটা শব্দও শুনতে চাইনা এই মুহূর্তে। ঘুমিয়ে পড়ো কথা না বাড়িয়ে।”
সরোয়ার সাহেব অন্যপাশ ফিরে চোখ বুঁজলেও মিসেস জেবার চোখে ঘুম নেই। অশ্রু টলমল করছে ছেলের চিন্তায়। না জানি ছেলেটা কেমন আছে!
মায়ের ঘরে গিয়ে বিছানার কাছ থেকে নিজের ফোনটা পেয়ে গেল মোহ। ফোনটা অন করতে করতে নিজের ঘরে এলো। বসে পড়ল বিছানায় এক পাশে। অন্যপাশটা ফাঁকা আজ। অন্যদিন ইথান থাকে। এলোমেলো হয়ে ঘুমায়। আজ সে না থাকায় মোহের বিছানাটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। বুকটা যেন খাঁ খাঁ করছে তার। ছেলেটা তাকে ছাড়া কেমন আছে জানা নেই। কখনো ইথান তাকে ছাড়া থাকেনি এভাবে। নিশ্চয় খুব কান্নাকাটি করছে। এসব ভাবতে ভাবতে ফোনটা যখন খুলে গেল তখন দেরি না করে স্বচ্ছের নম্বর ডায়াল করে কল করে ফেলল সে। ফোন কানে ধরতে ধরতে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল রাত প্রায় বারোটা ছুঁইছুঁই। স্বচ্ছ কি ঘুমিয়ে পড়েছে তবে?
ক্লাবের এক সোফায় আধশোয়া হয়ে রয়েছে স্বচ্ছ। উপরে ঘুরতে থাকা ফ্যানের বাতাস যেন তার গায়েই লাগছে না। তার সাথে মশার কামড়ে যেন শরীর জ্বলে যাচ্ছে তার। তড়িঘড়ি করে বিরক্তি নিয়ে উঠে নিজের শার্টের বোতাম খুলতে আরম্ভ করল সে। তার ফোনটা বেজে উঠল তখনি। স্বচ্ছ মনে করল, হয়ত বাড়ি থেকেই কল এসেছে। এই ভেবে যখনি কলটা কাটতে যাবে তখনি মোহের নম্বর দেখে সে থমকায়। ঢক গিলে রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ভেসে আসা চিকন রিনরিনে কণ্ঠ এই অশান্তিতেও শান্তি বয়ে আনে। অস্থির হৃদকম্পন শান্ত হয়।
“হ্যালো!”
“এত রাতে মিস মোহ! ঘুম কি ট্রাকে তুলে দিয়েছেন?”
“জি, হ্যাঁ তেমনই কিছু। আপনি কি বেঘোরে ঘুমাচ্ছিলেন? মনে তো হয়না। যদি তাই হতো তবে এত দ্রুত কল রিসিভড হতো না।”
স্বচ্ছ জোর গলায় বলল,
“বললেই হলো নাকি! আমি ঘুমিয়ে স্বপ্নের দেশে চলে গিয়েছিলাম। দেখছিলাম ব্যথা করা মাথা সযত্নে মোহ টিপে দিচ্ছে।”
মোহ চকিতে বলল,
“কী?”
“কিছু না। কোনো দরকার ছিল? কোনো বিপদ হয়েছে নাকি? কোনো ঝামেলা তৈরি হয়েছে আবার?”
মোহ আমতা আমতা করে বলল,
“না তেমন কিছু না। আসলে আপনার একটা সাহায্যের দরকার ছিল।”
“দেরি না করে বলে ফেলো।”
“আপনি মি. শৌভিককে চেনেন?”
শৌভিকের নাম শুনে কপালে আপনাআপনি ভাঁজ পড়ল স্বচ্ছের। সোজা উত্তরে বলল,
“না চিনি না। কে সে?”
মোহ কড়া গলায় বলল,
“একদম মিথ্যা বলবেন না। আপনি উনাকে ভালো করে চিনেন। মানুষ দুটো মানুষকে ভালো করে চিনে থাকে। প্রথমটা হলো প্রিয়জন আরেকটা হলো শত্রু। আপনার শত্রু হলেও আপনি উনাকে ভালো করে চেনেন।”
‘আমার ওকে চিনতে বয়েই গেছে।”
“দেখুন আমার এখন এই মুহূর্তে মি. শৌভিকের সাথে দেখা করা ভীষণই দরকার। আর আমি উনাকে সেভাবে চিনি না। জানিও না উনার দেখা কোথায় গেলে পাওয়া যাবে। আপনি নিশ্চয় জানেন।”
দেখা করার কথা শুনেই আরো উদগ্রীব হয়ে উঠল স্বচ্ছ। খানিকটা উগ্র স্বরে জানতে চাইল,
“কেন তার সাথে দেখা করতে হবে কেন তোমায়? কী দরকার? কী এমন প্রয়োজন যেটা সে ছাড়া হবে না?”
মোহ উত্তরে বলে,
“সেটা আমি শুধুমাত্র উনাকেই জানাতে চাই। আপনি আমায় উনার বাড়ি অবধি নিয়ে যেতে পারবেন? অনেক আশা নিয়ে কল করেছি আপনাকে।”
স্বচ্ছ আবারও বারণ করে দিতে চাইলেও নিজেকে দমিয়ে ফেলল। অন্যহাত মুঠো করে দাঁতে দাঁত চেপে চুপ রইল কতক্ষণ। এরপর বলল,
“ঠিক আছে। কাল সকাল দশটার দিকে তৈরি থেকো। আমি তার বাড়ি অবধি নিয়ে যাব।”
মোহ খুশি হয়। হাসি ফুটিয়ে বলে,
“থ্যাংক ইউ।”
স্বচ্ছ বিড়বিড়িয়ে বলে,
“এমন কাজের জন্য থ্যাংক ইউ আমার শত্রুরও না জুটুক।”
মোহ তৎক্ষনাৎ হেসে দিয়ে বলে,
“আপনার সেই থ্যাংক ইউ জুটলেই চলবে। অন্য কাউকে সেই থ্যাংক ইউ এর ভাগটা আমি দিতে চাইছি না।”
“কেন? এই থ্যাংক ইউ এর মাঝে বিশেষ কিছু আছে নাকি?”
মোহ এবার বলেই ফেলল,
“নিশ্চয় আছে। কারণ এই থ্যাংক ইউ আপনাকে আপনার একবচন দিয়েছে।”
বলেই ফট করে কল কেটে দিলো মোহ। ফোন একহাতে নিয়ে অন্যহাত দিয়ে নিজের মুখ চেপে ধরে চোখ বুঁজে জোরে জোরে হেসে ফেলল সে। তার মুখে কেন কিছু আটকায় না?
চলবে…
[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।]