মিশেছো_আলো_ছায়াতে #Writer_Sintiha_Eva #part : 19

0
500

#মিশেছো_আলো_ছায়াতে
#Writer_Sintiha_Eva
#part : 19

🍁🍁🍁

আদি সিমথির হাত ধরে নিচ থেকে টেনে তুলে। একটা চেয়ার টান দিয়ে সিমথি কে বসায়। নিজে সিমথির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে। অতঃপর সিমথির গালে হাত রেখে নিজের দিকে মুখ ফেরায়।

আদি : সিয়াজান উড়ো কথায় কান দিতে নেই। এতে প্রতিপক্ষ তোমার দুর্বলতা বুঝতে পারবে। ছেলেটার কথা সত্যতা কতটুকু সেটা তুমি আমি কেউ জানি না। সো বি স্ট্রং।

আদির কথায় সিমথি ফোঁস একটা শ্বাস ছাড়ে। আচমকায় টেবিলে থাকা সিমথির ফোনটা বেজে উঠে। নিস্তব্ধ জায়গায় ফোনের বিকট আওয়াজে সবাই কিছুটা কেঁপে ওঠে। সিমথি উঠে দাঁড়ায়। ফোন হাতে নিয়ে ” ভাইয়া ” নাম টা দেখে চোখ বন্ধ করে শুকনো ঢোক গিলে। নিজেকে সামলে ফোন কানে নেয়।

সিমথি : হুমম ভাইয়া বল।

সায়ন : কোথায় তুই।

সিমথি : আ আমি আসলে আমি রেস্টুরেন্টে আ আসছি। ( তোতলিয়ে)

সায়ন : তোতলাচ্ছিস কেনো।

সিমথি : তোতলাচ্ছি কোথায়। আসলে প্রচন্ড টায়ার্ড লাগছে ভাইয়া। এখন রাখছি। বাই।

সায়ন কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ফোন কেটে দেয়। অতঃপর ফ্লোরে পড়ে থাকা নির্জীব শরীর টার দিকে তাকায়। ফোন করে কাউকে এড্রেস জানিয়ে দেয়। বেশ কিছুক্ষণ পর ওখানে দুজন গার্ড এসে উপস্থিত হয়। সিমথি ওদের মধ্যে একজনকে উদ্দেশ্য করে বলে,,,,

সিমথি : একে নিয়ে যাও আর ওর ডিটেইলস বের করে বাড়ির লোকদের ইনফর্ম করো।

সিমথির কথায় প্রথম গার্ড টা মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়। সিমথি অপর গার্ড কে উদ্দেশ্য করে বলে,,,,

সিমথি : আর তুমি রেস্টুরেন্টের বাইরে সিসি ক্যামেরা থাকলে এর ফুটেজ নাও কিংবা আশেপাশে কোনো শপে সিসি ক্যামেরা থাকলে তার ফুটেজ কালেক্ট করে আমাকে জানিও।

সিমথির কথায় গার্ড দুজন নিজেদের কাজে লেগে যায়। সিমথি আদিদের দিকে তাকায়। সবার দৃষ্টি দেখে সিমথি হাসে।

সিমথি : একটু আগে এখানে যা যা হয়েছে সব ভুলে যান । ভাইয়া যেন কিছু জানতে না পারে। এটা আমার রিকোয়েস্ট।

মেহের : সিমথি তুমি ঠিক আছো তো।

সিমথি : আমার আবার কি হবে। আপনারা নিজেদের ঠিক করুন। এসব দেখে আমি অভ্যস্ত। সামান্য এতোটুকুতেই তোমাদের চোখ-মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে আবার আমাকে নিজেদের বাড়ির বউ বানাতে চাইছো লাইক সিরিয়াসলি। এসব চিন্তা বাদ দাও৷ নিজেদের লাইফে ফোকাস দাও। গুড বাই।

সিমথি কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে যায়। আদিবারা একে অপরের দিকে তাকায়। আদি ফোঁস করে শ্বাস ছাড়ে।

আদি : এতোবছর আমার জন্য জ্বলেছে এখন আমাকে পুড়াবে। ভাই-বোন দুইটাই এক। ধ্যাত ভাল্লাগে নাহ।

আদির ফেস রিয়াকশন দেখে সবাই হেসে দেয়।

__________________

সিমথি সোজা বাড়িতে এসে ঘুম দেয়। বাইরে বৃষ্টির দাপটে অবস্থা কাহিল। সায়ন ভিজতে ভিজতে বাড়ি ফিরে।

মিম : কি অবস্থা ভিজলে কিভাবে। গাড়ি ছিলো তো।

সায়ন : আরে বলো না আদিদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম। বিকাল থেকেই তো বৃষ্টির বেগ বাড়লো। তো সবাই ভাবলাম ভিজে বাড়ি ফিরি। তাই ফিরলাম৷

সিমথি : ভাবীপু তোমার বরকে জ্বরের মেডিসিন দাও নয়তো আজ রাতে জ্বালিয়ে মারবে।

সিমথির ভয়েজ শুনে সায়ন সোফার দিকে তাকায়। সিমথি সোফায় বসে কোলে ল্যাপটব নিয়ে কিছু করছে। হাতে কাঁচা আম। পাশের সোফায় রোজ আর ইফাজ ও বসা। সায়ন ভেজা শরীর নিয়েই সিমথির পাশে বসে পড়ে। সিমথি ভ্রু কুঁচকে তাকায়।

সায়ন : কিরে আজ এতো তাড়াতাড়ি বাড়ি কি করিস৷

সিমথি : তোর কি। আমি কি তোর রুমে গিয়ে বসে আছি নাকি৷

সায়ন : চুপ ফাজিল। কাঁচা আম কে মেখেছে।

রোজ : তোমার বউ ৷

সায়ন বাটি থেকে আম নিতে গেলে সিমথি বাটি সরিয়ে নেয়। সায়ন ভ্রু কুঁচকে তাকায়।

সিমথি : সর সামনে থেকে এটা আমাদের। তুই না তোর বন্ধু দের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলি। না খেয়েই এসে পরেছিস নাকি।

সায়ন : কাঁচা আম খাচ্ছিলাম না তো। দে।

রোজ : নাহহহ।

ইফাজ : এই দুই ছা/গ/ ল দেবে না রে ভাই। আমারে ও দেয় নাই।

সায়ন : দিন দিন নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছিস তোরা। বড় ভাইয়ের সাথে এমন করে। ছিহ গুনাহ হবে তো।

সিমথি : আমের সাথে নো কম্প্রোমাইজ। পাকা আম হলে তোর দিকে অনেক আগেই ফিক্কা মারতাম।

সায়ন : ওকে দিস না। ভেবেছিলাম তোদের আজ নিজের হাতে বিরিয়ানি করে খাওয়াবো। ওকে নো চাপ ব্রো। বেঁচে গেলাম।

সায়নের কথায় সিমথি আর রোজ মুখের আম দ্রুত গিলে ফেলে। একে অপরের দিকে তাকিয়ে আচমকায় চেচিয়ে উঠে। ইফাজ, সায়ন, মিম কানে হাত দেয়।

সায়ন : বইনেরা আমার দুর্বল হার্টের মানুষ আমি। হুটহাট এমন চিৎকার মারিস না ভয় লাগে।

মিম : তোমরা কথা বলো। রাতে কি রান্না হবে বলে আসি।

মিমের কথায় সিমথি দ্রুত উঠে গিয়ে মিম কে আটকায়৷

সিমথি : আরেহহহ ভাবীপু দাঁড়াও দাঁড়াও। আজ কেউ রাঁধবে না৷ ভাইয়া রাঁধবে।

মিম : কিন্তু

সায়ন : কে রাঁধবে আমি হুহহ। তোদের খাইয়ে লাভ নেই। একটু আমের ভর্তা দিতে পারিস না আবার আমি হাত পুড়িয়ে রাঁধবো। নাইচ জোকস অব দ্য ইয়ার।

সিমথি : মেলোড্রামা অফ কর৷ ওই যে বাটি আছে রাখা। যত খুশি খা। তারপর চেঞ্জ করে রান্নাঘরে যাবি৷ যা যা।

রোজ : আহ তাড়াতাড়ি কর। আমার তো এখনই খিদে পাচ্ছে। ভাইয়ার হাতের বিরিয়ানি ওরেহহহ আমি তরী আপু কে ডেকে নিয়ে আসি।

রোজ আর সিমথির কান্ড দেখে সায়ন আর ইফাজ হেসে উঠে। সিমথি ভেংচি কেটে রুমে চলে যায়।

সিমথি রুমে এসে ল্যাপটব বিছানায় রেখে চার্জ থেকে ফোন হাতে নেয়। গার্ডের মেসেজ পেতেই সিমথির ঠোঁটের কোণায় বাঁকা হাসি ফুটে উঠে। পুনরায় ল্যাপটবে বসে পড়ে।

রোজ : উহুমমমম গন্ধ টা নাসারন্ধ্র ছিদ্র করে ফেলছে। সায়ন ভাইয়া ইউ আর জিও

রোজের কথায় সায়ন হেসে দেয়।

ইফাজ : এই যাহ তো এখন। কাজের সময় ডিস্টার্ব করিস কেনো৷

রোজ : হুহহ।

তরী : আজ কিন্তু তোমরাই সার্ভ করবে ওক্কে।

ইফাজ : পারবো না। নিজেরা নিয়ে খাবি। বাপ রে বাপ কি অর্ডার কি অর্ডার।

রোজ : আব্বু বাড়িতে আসলে বলে দেবো তুই ভাবীর সাথে ঝগড়া করেছিস।

সিমথি : আবার ঝগড়া করেছো।

ইফাজ : হ্যাঁ আমিই শুধু ঝগড়া করি আর তোদের ভাবী তো আমাকে আদর করে তাই না।

সায়ন : বস গিয়ে তোরা। ভালো মা তরী কে নিয়ে আয়। দাদিমা তো খাবে না। মিম এগুলো টেবিলে নিয়ে যাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। তারপর সার্ভ করে দেবো।

বেশ কিছুক্ষণ পর সায়ন এসে দেখে সবাই বসে আছে। সায়ন মুচকি হেসে এগিয়ে যায়।

রোজ : উফফস কিহা সিন হে। সায়ন ভাইয়া ভাবীপুকে সার্ভ করে দিচ্ছে। এই ভাইয়া তুই একটা পিক তুল প্লিজ।

রোজের কথায় ইফাজ বিরবির করতে করতে উঠে দাঁড়ায়। সায়ন মিম কে দেওয়ার সময় টা ক্যামেরা বন্দি করে আবারো বসে পড়ে।

সিমথি : ইফাজ ভাইয়া এক কাজ করো

ইফাজ : কি?

সিমথি : রোদ কে ফোন দিয়ে আসতে বলো দ্যান ওকে তুমি সার্ভ করে দিও। আফটার অল একটা মাত্র বউ তোমার।

তরী : এনগেজড হয়ে গেছে তবুও বউ ছাড়া থাকতে হচ্ছে ভাই। তোমার এ কষ্ট আমাদের সহ্য হয় না।

রোজ : বউ না বউ না হাফ বউ ৷

ইফাজ : চুপচাপ খা। সবগুলো পেকে যাচ্ছে অল্প বয়সে।

ইফাজের কথায় সবাই হেসে দেয়।

___________________

শাওন : এতো কিছু মিস করে গেলাম আমি আজ।

আদিবা : তাহলে আর বলছি কি। আজ যে কত সিন হলো।

শাওন : সেসব বাদ। সিমথি রাজি হয়েছে তো।

তুহা : হাহ। সিমথি যেমন তেমন মেয়ে নাকি। এতো সহজে জীবনেও মানবে না দেখিস।

ইশান : আমাূের তো ডিরেক্ট বলে দিয়েছে যেনো ওকে এ বাড়ির বউ করার স্বপ্ন না দেখি৷

শাওন : বেশ হয়েছে। এটাই দরকার আদির জন্য। বন্ধুত্বের জন্য ভালোবাসা ছেড়েছে এখন বুঝুক। মহারাজ কোথায় বসে আছে এখন।

আদিবা : রুমে কি করছে কে জানে।

শাওন : ডিনারের সময় খাবার টেবিলে আজ তুফান তুলবো। গেট রেডি গাইস।

কথাটা বলে শাওন হেঁসে আদির রুমের দিকে অগ্রসর হয়। পেছনে কয়েক জোড়া চোখ শাওনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।

শাওন : আরেহ ভাই আমার খেতে আয়। মেঝো মা কখন থেকে ডাকছে।

আদি : তুই কখন আসলি।

শাওন : অনেকক্ষণ। চল চল তাড়াতাড়ি।

শাওন আদিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আদিকে টেনে নিয়ে যায়। মেহের দের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় চোখের চমশা হালকা নামিয়ে চোখ টিপ দেয়।

আদির বাবা : এতো গুজুর গুজুর কিসের তোদের ছয় মাথার গড নোজ।

শাওনের বাবা : ছয় মাথা না সাত মাথা বল। আমার ছোট্ট নাতনী টা কে ও সাথে নিয়েছে।

ইশান : তোমার নাতনী কে নিতে হয় না এমনি এড হতে পারে।

তিন্নি : ছোট কাকাই ( গাল ফুলিয়ে)

ইশানের মা : ইশান মা’র বো টেনে একটা। কেনো বাচ্চা টার পেছনে লাগছিস।

ইশানের মায়ের কথায় ইশান ঠোঁট উল্টে তিন্নির দিকে তাকায়।

আদির মা : হয়েছে এবার খাওয়া শুরু কর। কম রাত হয়নি।

আদির মায়ের কথায় সবাই খেতে শুরু করে।

শাওন : আচ্ছা মেঝো আব্বু তোমার মনে হয় না এবার বাড়িতে আরেকটা বউ আসা দরকার।

খাওয়ার মাঝে হঠাৎ শাওনের কথায় মেহেররা বিষম খায়। আদির বাবা খাওয়া থামিয়ে শাওনের দিকে তাকায়।

আদির বাবা : বুঝলাম না।

শাওন : আসলে মেহের অনেকদিন ধরেই বলছে ওর একটা জা এর দরকার।

শাওনের বাবা : হেয়ালি না করে স্পষ্ট করে বল।

শাওন : ওকেহ। আমি বলতে চাইছি আদির তো বিয়ের বয়স হয়েছে এবার অন্তত বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করো। কিছুদিন পর তো বুড়ো হয়ে যাবে। তখন কে বিয়ে করবে তোমাদের ছেলে কে।

শাওনের কথায় আদি বিষম খায়। আদিবারা ঠোঁট চেপে হাসে। আদিবা আদির পিঠ চাপড়ে দিতে দিতে হেয়ালির স্বরে বলে,,,,

আদিবা : আহারে ভাই আমার কে তোকে স্মরণ করছে। ভাবী নাকি।

শেষ কথা মিনমিনিয়ে বলায় আদি ব্যতিত কেউই শুনতে পাইনি। আদি ভ্রু কুঁচকে আদিবার দিকে তাকায়।

আদির বাবা : তোর ভাইকে কি আজ থেকে বিয়ের কথা বলছি। তোর ভাইয়ের সেই বিষয়ে কোনো খেয়াল আছে। সারাদিন চিরকুমার থাকার ব্রত গ্রহণ করে বসে আছে।

আদির মা : আদি বিয়ে করতে রাজি থাকলে আমরা কালই মেয়ে দেখা শুরু করবো।

আদির মায়ের কথায় আদি পুনরায় কেশে উঠে।

শাওন : আহা মেয়ে তো আছেই।

আদির মা : কে?

শাওন কিছু বলার আগেই মেহের ফট করে বলে উঠে,,,

মেহের : সিমথি কে তোমাদের কেমন লাগে।

মেহেরের কথায় আদির বাবা, চাচ্চুরা ভ্রু কুঁচকে তাকায়। মস্তিষ্কে চাপ দিয়ে ও সিমথি নাম টা স্মরণ করতে পারলো না।

শাওনের বাবা : সিমথি কে?

শাওনের বাবার কথায় আদি সহ মেহের রা আকাশ থেকে পড়ে। আদি চেয়ারে হেলান দিয়ে দেবদাসের মতো সবার দিকে তাকায়। যাকে বাড়ির বউ করার স্বপ্ন দেখছে তাকেই তার মা-বাবা সহ পরিবারের লোকজন রা কেউই চিনে না। কি আশ্চর্য।

ইশান : আরে ওইদিন যে তিন্নি কে নিয়ে একটা মেয়ে এসেছিলো।

আদির মা : সায়নের বোনের কথা বলছিস। ওই যে যেই মেয়েটা তিন্নিকে র/ক্ত দিয়েছিলো।

আদির মায়ের কথায় আদিবারা একসাথে হুমমম বলে উঠে।

শাওন : বলো কেমন লাগে।

শাওনের মা : প্রথম দিন দেখলাম ভালোই মনে হয়েছে। পোশাক-আশাকে শালীনতা, ব্যবহার ও মার্জিত। বিদেশে ছিলো শুনেছি ব্যবহারে মনে হয়নি।

ইশানের মা : সী অনেক কিউট। ভেরী ভেরী সুইট। বাট কেনো ইউরা তার টকিং টুকিং।

ইশান : তোমাদের জিজ্ঞেস করলাম কেমন লাগে।

আদির বাবা : হুমম ভালো। আমার তো ভালোই লেগেছে। কিন্তু কি ব্যাপার বল তো। হঠাৎ ওর কথা কেনো তুলছিস। আদির বিয়ের সাথে ওর কি সম্পর্ক।

শাওন : না এমনি জিজ্ঞেস করলাম। খাও খাও। অনেক রাত হয়েছে।

শাওনের বাবা, চাচ্চুরা কিছুক্ষণ শাওনের দিকে তাকিয়ে থেকে খাওয়ায় মন দেয়। কারণ এরা জানে এই বাড়িতে ছয়জন পা’গ’ল বসবাস করেন। কখন কি করে কি বলে তার ঠিক নেই।

সিমথি : ওয়াট এতো রাতে বখাটে দের মতো ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করছেন কেনো।

আদি : সারাক্ষণ শুধু খ্যাট খ্যাট। মুখে মধু দেয়নি শ্বাশুমা।

সিমথি : একদম চুপ। এসব বলার জন্য ফোন দিয়েছেন।

আদি : না তো। আমি তো প্রেম করতে ফোন দিয়েছি।

সিমথি : Wrong নাম্বার ভাই। এখানে আপনার কোনো প্রেমিকা নেই।

আদি : প্রেমিকা থাকবে কেনো। হবু বউ।

সিমথি : ফোন কাটবেন আপনি।

আদি : আমার ফোন আমার ইচ্ছে তোমার কি।

সিমথি : আমার কি হবে।

আদি : সিয়াজান আজকের ওয়েদার টা দেখেছিস।

সিমথি : আপাতত বেলকনিতে তাই ওয়েদার না দেখার কি আছে।

আদি : একদম বউ নিয়ে রোমান্স করবার ওয়েদার তাই না।

সিমথি : কিহহহ ( হালকা চেঁচিয়ে)

আদি : কিছু ফিল আসছে।

সিমথি : কিসের ফিল।

আদি : তুমি শুধু নিমপাতা না সাথে একটা আনরোমান্টিকের গোডাউন।

আদির কথায় সিমথি ঠোঁট কামড়ে নিঃশব্দে হাসে। হাতে থাকা কফির মগ টা রেলিঙের উপর রেখে আকাশের দিকে তাকায়। এখনো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে। তবে আগের তুলনায় অনেক টায় কম। তবে শীতল বাতাস টা দারুন লাগছে। বৃষ্টির ওয়েদার সিমথির সবচেয়ে প্রিয়। কোনো কারণ ছাড়াই এই ওয়েদারে মন ভালো থাকে।

আদি : আকাশের দিকে তাকিয়ে কাকে ভাবো।

সিমথি : আপনি কিভাবে বুঝলেন।

আদি : হার্ট কানেকশন বউজান।

সিমথি : হাহ। রাখেন তো। ঘুমান রাত হয়েছে অনেক।

আদি : সিয়াজান।

আচমকা আদির আদর মেশানো ডাকে সিমথি কেঁপে ওঠে। ফোন শক্ত করে চেপে ধরে। জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করে। এতো সহজে ধরা দিলে চলবে না। সবকিছু কি এতোই সহজ।

সিমথি : আদি ভাইয়া রাখছি।

আদিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সিমথি ফোন কেটে দেয়। অতঃপর রুমে এসে বেলকনির দরজা আটকে বিছানায় শুয়ে পড়ে। চোখ বন্ধ করতেই নোটিফিকেশনের শব্দের চোখ খুলে ফোন হাতে নিতেই আদির বার্তা ভেসে উঠে।

” বার বার ভাইয়া বলার অপরাধে তোমাকে পস্তাতে হবে সিয়াজান। একবার সামনে পাই বুঝাবো ভাইয়া কাকে বলে। বিয়ের পর বাচ্চাদের সামনে কি আমাকে মামা উপাধি দেওয়াবি গা/ধী। এটা আমি মানবো না। আমি এর চরম প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভালোবাসার আইন অনুযায়ী ৬০২ ধারা মোতাবেক আমি তোমাকে কঠিন শাস্তি দেবো। তোমার শাস্তি হচ্ছে থাক সেটা সামনা সামনি বলবো। এখন বললে লজ্জায় পড়ে যাবে। আর তোমার লজ্জা মিশ্রিত মুখশ্রী আমি ব্যতিত রুমের আসবাবপত্র দেখবে এটা আমি কিছুতেই মানবো না।
আমি তারার তারার রটিয়ে দেবো তুমি শুধু আমার। তাই যেকোনো অবস্থায় তোমাকে দেখার অধিকার ও শুধু আমার। ”

ভালোবাসি সিয়াজান। শাস্তির জন্য রেডি থাকিস। গুড নাইট। উম্মাহহহ।

সিমথি মেসেজ টা পড়ে কোনো রিপ্লাই না করেই ফোন পাশে রেখে দেয়। ঠোঁটের কোণায় ফুটে ওঠে তৃপ্তির হাসি।

চলবে,,,,,

( ভুলক্রটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ। )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here