#মিশেছো_আলো_ছায়াতে
#Writer_Sintiha_Eva
#part : 22
🍁🍁🍁
হঠাৎ ই সিমথির ফোন টা বেজে ওঠে। সিমথি স্টেয়ারিং ডান হাতে চেপে পাশের সিট থেকে ফোনটা তুলে নেয়। ফোনের স্কিনে আদির নাম্বার দেখে ফোনটা পুনরায় রেখে দেয়। মনযোগ দেয় সামনে রাস্তার দিকে। অন্যদিকে আদি সিমথি কে অনবরত ফোন দিয়ে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সিমথি ফোনটা তুলে কলটা রিসিভ করে।
সিমথি : আদি এখন ব্যস্ত আছি। ফারদার কল করবে না।
সিমথি হালকা ঝাঁঝালো কণ্ঠে আদি খানিকটা থমকায়। আচমকা সিমথির কথাগুলো মস্তিষ্কে নাড়া দিতে ঠোঁটের কোণে অপূর্ব এক হাসি ফুটে উঠে। কতগুলো বছর পর আদি সিমথির মুখে নিজের নাম শুনতে পেলো।সেই সাথে আগেকার মতো তুমি ডাকটা ও। আদি দ্রুত ঢোক গিলে।
আদি : শুনো শুনো
সিমথি : কিহ তাড়াতাড়ি বলো।
আদি : তুমি খেয়াল করলে আমাকে তুমি বলে সম্বোধন করেছো। সেই সাথে নাম ধরে ও ডাকলে। ব্যাপার কি হুমমম।
আদির কথায় সিমথি এক মুহুর্তের জন্য থমকায়। কখন আদিকে তুমি বলে সম্বোধন করলো। আর কখনই বা নাম ধরে বললো। মস্তিষ্কে হালকা চাপ দিতেই কিছুক্ষণ পূর্বে নিজের বলা কথাগুলো মনে হয়। নিজের উপর হালকা রাগ হয়। টেনশনে আদির সাথে আগের মতো বিহেভ শুরু করেছে। নট ডান। তবে আপাতত সামনের পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাগটা নিজের মাঝেই মাটি চাপা দেয়। আপাতত ফোন টা ছাড়া দরকার। গাড়ি কন্ট্রোল করা পসিবল হচ্ছে না। যখন তখন একটা বড়সড় এক্সিডেন্ট হতে পারে। আদি যদি কোনো ভাবে এসবের আঁচ পায়। তাহলে সায়নের জানতে এক সেকেন্ড ও বিলম্ব হবে। কথাগুলো মনে মনে আওড়িয়ে আদির উপর হালকা রাগ দেখায়।
সিমথি : এসব উদ্ভট কথা বলার জন্য ফোন করেছেন। কিসের ব্যাপার থাকবে। টেনশনে তুমি বলেছি। অর নাথিং। কি ভাবেন নিজেকে। নাউ ডোন্ট ডিস্টার্ব মি। আম বিজি।
আদিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সিমথি ফোনটা কেটে দেয়। আদি হাস্যজ্জ্বল মুখ টা মুহূর্তের মধ্যে অমাবস্যার আঁধারের মতো ঢেকে যায়। আদি এক মুহূর্তের জন্য ভেবেছিলো সিমথি হয়তো আদিকে মেনে নিয়েছে। কিন্তু আদি যে এই মুহুর্তে সিমথিকে ফোন দিয়ে এই কথাগুলো শুনবে সেটা ভাবেনি। আদি তো একটা ভালো নিউজ দেওয়ার জন্য ফোন করেছিলো। কিন্তু সিমথি যে ডিস্টার্ব হবে এটা আদি কল্পনায় ও ভাবে নি। আদির বুকে চাপা আর্তনাদ আর আদির না বলা ভালো সংবাদ টা সিমথির অজানায় রয়ে গেলো। অন্যদিকে সিমথির এমন ব্যবহারের কারণ আর সিমথি জীবনে আসন্ন বিপদের কথাগুলো ও আদির কাছে অজানা রয়ে গেলো।
সিমথি : আম সরি আদি। সরি ফর মিস বিহেভিয়ার।
আচমকা সামনে মালবাহী এক বিশাল ট্রাক আসতে দেখে সিমথি দিশেহারা হয়ে পড়ে। না গাড়ির স্পিড বাড়ানো যাচ্ছে আর না কমানো যাচ্ছে। তবে গাড়ির স্পিড বিপদজনক মাত্রায় ছাড়িয়েছে। এই মুহুর্তে এই গাড়ির সামনে যদি কোনো মানুষ আসবে তাহলে তার বাঁচার সম্ভাবনা শূন্য। তেমনি গাড়িটা যদি কিছুর সাথে ধাক্কা খায় তাহলে গাড়ি সম্পূর্ণ গুড়িয়ে যাবে। ভেতরে থাকা ব্যক্তি আর জীবিত বের হতে পারবে না। সিমথির গাড়ি আর মালবাহী ট্রাকের মধ্যকার দূরত্ব হবে চার হাত।
সিমথি : কি আজব মালবাহী ট্রাকের ড্রাইভার কেনো গাড়ি টা সাইড করছে না। এতোক্ষণে তো বুঝার দরকার উনার সামনে গাড়িটা ব্রেক ফেইল করেছে। প্রাণের মায়া নেই নাকি।
সিমথি ফোনটা হাতে নেয়।
সিমথি : ড্যাম ইট।
রাস্তা জুড়ে পিনপিনে নীরবতা। নীরব রাস্তায় মুহুর্তে মানুষের ভীড়ে গিজগিজ হয়ে গেছে। সবার দৃষ্টি সামনে প্রজ্জ্বলিত গাড়ি টার দিকে। গাড়িটায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। এর থেকে কিছু দূরত্বে ট্রাক টা অচল হয়ে পড়ে আছে। ট্রাকে ড্রাইভার লাফ দেওয়ায় উনি প্রাণে বেঁচে আছেন তবে জখম হয়েছে মারাত্মক। উপস্থিত জনগনের মধ্যে কেউ কেউ বলছে গাড়িটার ভেতরে যিনি বসে ছিলেন তিনি আর বেঁচে নেই। এতোবড় এক্সিডেন্ট হলে কেই বা বাঁচতে পারে। বেশকিছু ক্ষণের মধ্যে ওখানে এসে পুলিশরা হাজির হয়। এক্সিডেন্ট কেস হওয়ায় পুলিশ কে তো আসতেই হতো।
পুলিশ : ফায়ার সার্ভিস কল করো। আগুন নেভানো হলে গাড়িটা চেক করো ভেতরে কি কি আছে।
ঘড়ির কাটায় তখন বারোটা বেজে পনেরো মিনিট। খান বাড়িতে কারোর চোখে ঘুম নেই। সায়ন বারংবার সিমথির ফোনে কল করছে কিন্তু ফোনটা বন্ধ পাচ্ছে। ইতোমধ্যে সায়ন হসপিটালে ফোন দিয়ে জানতে পেরেছে সিমথি নাকি এগারো টার দিকেই বেরিয়ে যায়। তাহলে তো এতোক্ষণে বাড়ি পৌঁছে যাওয়ার কথা। সংশয় নিয়েই একে একে মেঘা, তুহিন, রোদেলা, তন্ময় দের ফোন করে। কিন্তু কারোর সাথেই নাকি দশটার পর থেকে সিমথির কোনো যোগাযোগ নেই। এসব শুনে সায়ন আরো ছটফট করছে। মেয়েটার বিপদের শেষ নপই। তারমধ্যে আবার এই মেয়ে মাফিয়া গ্যাঙের সদস্য। শত্রুর কম কি। সায়ন কে এতোটা অস্থির হতে দেখে বাকিরা ও চিন্তায় পড়ে যায়। কারণ সিমথি দায়িত্ব জ্ঞানহীন নয়। ওর যেদিন লেট হয় সেদিন ফোন করে জানিয়ে দেয়। ওর ফোনে চার্জ না থাকলেও কোনো না কোনো ভাবে জানায়। তবে আজ এতোটা লেট হবার কারণ কি।
সায়ন : এতো রাত হয়ে গেলো। মেয়েটা কোথায়।
রহিমা বেগম : এই মেয়ের কিছু হইবো না। ওই সবাই রে মা/ই/রা শান্তি পাইবো। দেখগা এত্তো রাতে কিতা করতাছে।
এরকম পরিস্থিতিতে রহিমা বেগমের কথায় সবাই বিরক্ত হয়। সায়ন রাগান্বিত সুরে বলে ওঠে,,,
সায়ন : খবরদার দাদি। একবার বলেছো বলেছো। ফারদার এসব মুখেও এনো না। মাথা গরম হয়ে আছে। পরীর মানে বাজে কথা বললে তোমার সাথে আমার সম্পর্ক কি সেটা ভুলে যাবো।
নীলয় খান : আচ্ছা মা সিমথিকে নিয়ে কিসের এতো তিক্ততা তোমার বলবে।
ইফাজ : উনার তিক্ততা কোথায় সেটা উনি নিজেও জানে না। আব্বু উনাকে চুপ করতে বলো।
রহিমা বেগম : দেখলি দেখলি তোর পোলা ডা ও আমারে শাসায়।
নীলয় খান : ইফাজ আমি কথা বলছি তো। তুৃমি চপ থাকো।
ইফাজ : মাফ করো আব্বু। উনার সাথে সিমথি কে নিয়ে দয়া করে কোনো কথা বলো না। কজ সিমথির সম্বন্ধে কোনো ভালো কথা উনার মাথায় ও আসে না।
রহিমা বেগম : একটা মাইয়া বাড়ির কতগুলা রে ঘুরাইতাছে। এই মাইয়া জন্মই নিছে ধ্বংস করার জন্য। ছোট বউ মা নিজে আছিল একখান অপয়া। জন্ম দিয়া গেছে আরেক অপয়া। এই মাইয়া,,,,
আচমকা বিকট শব্দে রহিমা বেগমের কথা মুখে আটকে যায়। উপস্থিত সবাই চমকে ফ্লোরে পড়ে থাকা ফ্লাওয়ার ভার্সের দিকে তাকায়। সায়ন রক্তবর্ণ দৃষ্টিতে রহিমা বেগমের দিকে তাকিয়ে আছে। রহিমা বেগম ভয়ে ঢোক গিলে। সায়ন পাশের সোফায় স্বজোরে এক লাথি মারে। অতঃপর চেঁচিয়ে উঠে।
সায়ন : আপনার মুখে লাগাম টানুন মিসেস খান। আমি লাগাম টানতে আসলে আপনার জন্য ভালো হবে না। সবসময় চুপচাপ থাকি মানে এই না আমি কিছু জানিনা বা বুঝি না। সিমথি আর আমার মাকে কেনো আপনার পছন্দ নয় সেটা আমি খুব ভালো করে জানি। কিন্তু আপনার পছন্দে আমার কিছু যায় আসে না। মনে ধরলে এ বাড়িতে থাকবেন নয়তো দরজা খোলা আছে। কাকে কাকে সাথে নিয়ে যাবেন যেতে পারেন।
রহিমা বেগম ফুঁসে ওঠে। কিছু বলতে নিলেও কারোর ঈশারায় থেমে যায়। চুপচাপ উঠে নিজের রুমে চলে যায়।
সীমা বেগম : সায়ন বাবা শান্ত হ। সিমথি কে আরেকটা ফোন করে দেখ কি বলে।
সীমা বেগমের কথায় সায়ন জোরে শ্বাস ফেলে। ধপ করে সোফায় বসে পড়ে। মা-বাবার শেষ স্মৃতি সিমথি। সিমথির কিছু হলে সায়ন শেষ। ছোট থেকে মেয়েটাকে যথাসম্ভব আগলে রেখেছে। তবুও মেয়েটা ওর অজান্তেই অনেকটা কষ্টের মধ্যে গিয়েছে। আচমকা সায়নের ফোন বেজে ওঠে। সায়নের মুখে হাসি ফুটে উঠে। সায়ন দ্রুত ফোন হাতে নেয়। কিন্তু সিমথির জায়গায় মেঘা নাম দেখে মুখটা আবারো আঁধারে ঢেকে যায়।
সায়ন : হুমম বল।
মেঘা : ভাইয়া ভাইয়া সিমথির কোনো খোঁজ পেলে।
সায়ন : নাহ। তুই খোঁজ নিয়েছিস
মেঘা : এভাবে কেউ কিভাবে উধাও হয়ে যেতে পারে। ও তো কটেজের দিকে ও যায়নি। আমি খোঁজ নিয়েছি।
মেঘার কথায় সায়নের চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। বহুকষ্টে নিজেকে সামলায়।
সায়ন : ওহ।
মেঘাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ফোন টা কেটে দেয়। সায়নের মুখ দেখে সবাই আবারো হতাশ হয়। মিম সায়নের কাঁধে হাত রাখে। সায়ন ছলছল চোখে মিমের দিকে তাকায়। মিমের চোখে ও অশ্রু টলমল করছে।
সায়ন : কোথায় গেলো ও।
সায়নের ভাঙা গলায় মিমের বুকের ভেতর মোচড় মেরে উঠে। সায়নের নিজের শরীরের অবস্থা ও ভালো নয়। ডক্টর বলেছিলো রেস্ট নিতে। কিন্তু রেস্ট তো দূরে থাক এখনো রাতের খাবার টায় খায় নি।
মিম : ফিরে আয় বোন। নয়তো তোর ভাইয়া শে/ষ হয়ে যাবে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই তন্ময়রা হাজির হয়। সায়ন রা বসে না থেকে বেরিয়ে পড়ে সিমথির খোঁজে। সব জায়গা খুঁজতে খুঁজতে প্রায় দুইটার কাছা কাছি।
তন্ময় : সিমথি এতোটা কেয়ারলেস না। কি হলো।
তুহিন : বুঝতে পারছি না। আগে যদি জানতাম এমন হবে। তবে আমি নিজেই ওকে পৌঁছে দিতাম।
তন্ময় : সায়ন ভাইয়ার দিকে তাকানো যাচ্ছে না রে।
তন্ময়ের কথায় তুহিন সায়নের দিকে তাকায়। গাড়ির সিটে বাইরের দিকে মুখ করে বসে আছে দরজা খোলে। দৃষ্টি আকাশের দিকে। সায়নে পাশে বাইরে ইফাজ দাঁড়িয়ে আছে। ওদের থেকে কিছু টা দূরে তন্ময় আর তুহিন দাঁড়ানো। রাত গভীর হওয়ায় রাস্তা নির্জন হয়ে আছে। ওর
তন্ময় : আদি ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করবো জানে কিনা।
তুহিন : এতো রাতে কল দেবো। মনে হয় ঘুমাচ্ছে।
তন্ময় : পরে যদি জানতে পারে তাহলে কি হবে জানিস তো।
তুহিন : তাহলে ফোন দে। ডিরেক্টলি জিজ্ঞেস করিস না বুঝলি।
তুহিনের কথায় তন্ময় সায় দেয়। অতঃপর কল লাগায় আদির ফোনে। কিন্তু আদির ফোন ও বন্ধ বলছে। তন্ময় বার কয়েক ফোন দেয় কিন্তু আদির ফোন বন্ধ বলছে। আদিকে ফোন দিলে হয়তো সিমথির ব্যাপারে কিছু জানতে পারতো।
তন্ময় : ফোন অফ।
তন্ময়ের কথায় তুহিন ফোঁস করে শ্বাস ছাড়ে। অতঃপর সায়নদের দিকে এগিয়ে যায়।
তন্ময় : ভাইয়া চলো অন্যদিকে দেখি।
তন্ময়ের কথায় সায়নের কোনো হেলদোল নেই। ইফাজ সায়নের দিকে তাকায়।
ইফাজ : সায়ন চল। আর কতক্ষণ বসে থাকবি।
সায়ন : কিন্তু পরী।
ইফাজ : ওকে খুঁজে পাবো। আর সিমথি কি দুর্বল। খান বংশের রক্ত বইছে ওর শরীরে। খান রা কি এতো দুর্বল। এতো সহজ সিমথির ক্ষতি করা।
ইফাজের কথায় সায়ন কিছু বলে না। ড্রাইভিং সিটে বসে। স্টেয়ারিং এ হাত দিতেই পকেটের ফোনটা বেজে ওঠে। আননোন নাম্বার দেখে রিসিভ করে।
________________
অফিসার ইকবাল : সবই তো বুঝলাম কিন্তু গাড়িটা ব্রেক ফেইল করেছে নাকি করানো হয়েছে তার খোঁজ নাও। আর গাড়িতে যতদূর সম্ভব বোম ফিট করা ছিলো। নয়তো এতোবড় ব্লাস্ট হওয়া সম্ভব ছিলো না।
জাফর : তবে স্যার গাড়ির ভেতর কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি।
ইকবাল : তা ঠিক। আবার হতেও পারে ব্লাস্টে সাথে আগুনে পুড়ে গেছে।
জাফর : একটা জলজ্যান্ত দেহ এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে পুড়তে পারে।
ইকবাল : গাড়িটা তো ফরেনসিকে পাঠানো হলো। দেখি এবার রিপোর্ট কি বলে। আমি গাড়ির নাম্বার চেক করিয়েছি। আর গাড়ি টা হচ্ছে সিমথি জাহান সিয়ার।
জাফর : ওয়াটট। উনাকে এভাবে মা/রা/র প্ল্যান কে করতে পারে।
ইকবাল : সিমথি জাহান সিয়া আর উনার ভাই সায়ন খান৷ ওদের শত্রুর অভাব নেই। উনার মা-বাবা কে ও নাকি নির্মম ভাবে মে/রে ফেলা হয়েছিলো। সিমথি জাহান সিয়ার বাবা পেশায় একজন আর্মি অফিসার ছিলে। অত্যন্ত নিষ্ঠাবান, সত্যবাদী। প্রশাসনের গর্ব ছিলেন। আর উনার ওয়াইফ ছিলো একজন লয়ার।
জাফর : উনাদের কে মে/রে/ছে জানেন।
ইকবাল : নাহ খোজ চলছিলো। কিন্তু কেসের নাকি কুল কিনারা পাওয়া যায়নি। তাই কেস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো। আমার বাবা উনার আন্ডারে ছিলেন। তখন কয়েকবার বাবার সাথে উনাকে দেখেছিলাম। উনার ব্যবহারে সবাই প্রচন্ড অবাক হতো। এতোটা মার্জিত ব্যবহার কিভাবে কেউ করতে পারে। উনার কেস সল্ভ করার স্কিল ছিলো অসাধারণ।
জাফর : কেনো মারা হয়েছিলো ওদের।
ইকবাল : বাবার কাছে শুনেছিলাম আহনাফ স্যার একটা গুরুত্বপূর্ণ কেসের তদারকি করছিলেন। মিশন টা অনেক বিপদজনক ছিলো। বেশ কয়েকবছর পর যখন কেসের সবকিছু আহনাফ স্যারের হাতে চলে আসে শুধু সাবমিট করা বাকি ছিলো তখনই প্রতিপক্ষ আহনাফ স্যার আর উনার ওয়াইফ কে মে/রে ফেলেন।
জাফর : সেই কেসের কি হলো।
ইকবাল : সব প্রমাণ ছিলো আহনাফ স্যারের কাছে। আহনাফ স্যারের কাছে একটা চিপ ছিলো। সেই চিপ সব প্রমাণ ছিলো। অপরাধীরা আহনাফ স্যারকে প্রথমে কিডন্যাপ করেছিলো। উনাকে প্রচুর মে/রেছিলো। কিন্তু চিপের কোনো হদিস জানতে পারেনি। তারপরই কয়েকদিন পর উনার আর উনার ওয়াইফ এর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। যার ফলে কেস টা তখন ক্লোজ হয়। আহনাফ স্যারের মৃ/ত্যু/র পর ওই গ্যাঙের সদস্যদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। হঠাৎ ই সবাই নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু গত দশ বছর ধরে আবার সেই গ্যাং তাদের কালো ব্যবসা শুরু করেছে। কিন্তু আহনাফ স্যারের পরিণাম দেখে কেউ এগুতে সাহস পাচ্ছে না। এখনো পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে সবাই আরেকজন আহনাফ স্যারের অপেক্ষায় আছে। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো আহনাফ স্যারের ছেলে বা মেয়ে কেউ আহনাফ স্যারের পেশায় আসবে কিন্তু উনারা এসবে আর জড়ায়নি। শোনা গেছে উনার বড় চাচা উনাদের এসবে জড়াতে দেয়নি। তবে সিমথি জাহান সিয়া এই পেশায় নিজেকে না জড়ালে ও সাধারণ মানুষ কে এখন কম হেনস্তা হতে হয়। গত চার বছর ধরে সিমথি জাহান সিয়া মাৈিয়া জগতে পা রাখতেই বাইরের দৃশ্যপট সম্পূর্ণ বদলে গেছে। যে শহরে আগে প্রতিদিন কোনো না কোনো অঘটন হতো তা এখন কমেছে। কিন্তু এই ভালো হয়তো সিমথির কপালে ছিলো না। তাই হয়তো উনাকেও আহনাফ স্যারের মতোই সরাতে চাইছে।
জাফর : তারমানে এখানে সিমথি জাহান সিয়া কে মা/রা/র জন্য এতোসব প্ল্যান করা হয়েছে।
ইকবাল : আমার তো তাই মনে হচ্ছে। তবে সিমথি জাহান সিয়া কে পাওয়া গেলেই সবটা জানা যাবে।
ওদের কথার মাঝেই ওখানে এসে সায়নরা হাজির হয়। সায়নদের দেখে অফিসার ইকবাল এগিয়ে যায়।
ইকবাল : মিস্টার সায়ন আমিই আপনাকে ফোন করেছিলাম।
সায়ন : হুম জানি। কিন্তু এখানে কেনো।
ইকবাল : এখানে কিছু ক্ষণ আগে একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে। একটা গাড়ি ব্লাস্ট হয়েছে। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি গাড়িটা সিমথি জাহান সিয়ার মানে আপনার বোনের।
ইকবালের কথায় সায়ন দু পা পিছিয়ে যায়। চোখে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। যা ভাবছিলো তাই হলো।
তন্ময় : সি সিমথি কোথায়।
ইকবাল : উনাকে গাড়িতে পাওয়া যায়নি। হয়তো আগুনে পু,,,
বাকি টুকু বলার আগেই সায়ন কলার চেপে ধরে।
সায়ন : একদম না। আমার পরীর কিছু হয়নি। কিছু না।
সবাই মিলে সায়নকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে কিন্তু সায়ন হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে ইকবালের কলার আরো জোরে চেপে ধরে।
_ ভ ভা ভাইয়া
চলবে,,,,,
( ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ। হ্যাপি রিডিং)