আবার_প্রেম_হোক #নুসরাত_জাহান_মিম ০৬.

0
1277

#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম

০৬.
দরজার কড়াঘাতে নড়েচড়ে উঠে চাঁদ।একইসাথে ফোনও বেজে উঠে তার।বেশ বিরক্তবোধ করে সে।কোনটা রেখে কোনটা করবে ভাবতে ভাবতেই কল কেটে যাওয়ায় বিছানা ছেড়ে উঠে আসে দরজা খুলতে।পরনের শাড়ি ঠিক করে দরজা খুলতেই দেখতে পায় বাড়ির সকল বড়রা রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন।চাঁদকে দেখে যেনো তারা কিংকর্তব্যবিমুঢ়!চাঁদ মাথায় ঘোমটা দিতে দিতে বললো,

“কোনো দরকার ছিলো মা?সবাই একসাথে যে?আমি কি বেশি দেরি করে ফেললাম?আসলে মাথাটা….”

পেছন থেকে তৌহিদুল চৌধুরী সামনে এসে বললেন,

“তুমি কোথায় ছিলে?ওরা নাকি তোমায় পুরো বাড়ি খুঁজেও পাচ্ছেনা?”

“আমিতো এখানেই ছিলাম বাবা”

পুষ্পিতা জামান পেছন থেকে শিফাকে কান টে*নে সামনে এনে বললেন,

“এরা চেচিয়ে চেচিয়ে বলছিলো তোমায় নাকি কোথাও খুঁজে পাচ্ছেনা।”

এরপর রুবাকে সামনে এনে বলেন,

“পুরো বাড়ি তন্ন তন্ন করেছিস তাইনা?পুরো বাড়ির মধ্যে কি প্রণয়ের রুম পড়েনা?নাকি ওটা ভিন গ্রহে অবস্থিত?”

রুবা আমতা আমতা করতেই শিফা বলে,

“খালামনি আসলে মানে ঐ যে হয়েছে কি…”

শিফাও কিছু বলতে পারছেনা দেখে চাঁদ বলে,

“আসলে মা দরজা আটকানো ছিলোতো তাই হয়তো ওরা ভেবেছে প্রণয় একাই ঘুমাচ্ছে”

প্রণয়ের খালা ভ্রু কুচকে বলেন,

“এমনটা কেনো ভাববে?আর দরজা খুলে বাসর রাতে কেউ ঘুমায়?ক’দিন বাদে নাকি ডাক্তার হবে এতোটুকু কান্ডজ্ঞান তোমার মধ্যে নেই?”

প্রণয়ের ফুপি তৌহিদুল চৌধুরীকে বললেন,

“ভাই তুমি গিয়ে ফ্রেশ হও।আমরা এখানে আছি”

“ঠিক আছে কিন্তু চাঁদ মায়ের সাথে কোনো বা*জে ব্যবহার করবিনা তোরা কেউ সাবধান!”

“হ্যা হ্যা চিন্তা করোনা”

আস্বস্ত হয়ে তৌহিদুল চৌধুরী প্রস্থান করলেন।তিনি যেতেই রুবার মা বললেন,

“শিফার মা ঠিকই বলেছে তোমার দেখছি কোনো কান্ডজ্ঞান ই নেই।এই বেশে শ্বশুর-শাশুড়িদের সামনে আসতে লজ্জা করলোনা?গোসল যখন করোই নি অন্তত মুখ হাত ধুয়েতো ঘুমাতে পারতে নাকি?কাল তো অনেক বড় বড় কথা বলেছিলে এমন সুন্দর জামাই পেয়ে সব কথা ভুলে গেলে?”

চাঁদ কিছু বুঝতে না পেরে বলে,

“আমি কিছু বুঝতে পারছিনা আন্টি?”

প্রণয়ের চাচি বললেন,

“তুমিতো দেখছি বড়ই ঘাড়!ত্যা*ড়া মেয়ে!বড়দের সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে আছো?লজ্জা শরমের কি মাথা খে*য়ে*ছো?তুমিতো অতোটা ছোট না যে বুঝতে পারছোনা।প্রণয়েরও কি কোনো জ্ঞান নেই নাকি?তোমার মতো লাগাম*হী*ন মেয়েকে কিছু শেখাতে পারলোনা?”

চাঁদ বেশ অসহায় ভঙ্গিতে তাকিয়ে বললো,

“আমি সত্যিই কিছু বুঝতে পারছিনা আন্টি হয়েছেটা কী?আমি কি কিছু করেছি?আপনারা এভাবে বলছেন কেনো?”

প্রণয়ের মা বললেন,

“আহহা রিনা,ঊষা এভাবে মেয়েটাকে জেরা করছো কেনো তোমরা?মা তুমি কি কোথাও ব্যথা পেয়েছো?পড়ে গিয়েছিলে কি?নাকি প্রণয়ের সাথে ঝ!গ!ড়া হয়েছে?”

চাঁদ কিছু বুঝতে না পেরে এদিক সেদিক তাকাতেই দেখতে পায় তার ননদেরা ইশারায় ঠোটের কোনা দেখাচ্ছে।হঠাৎ করেই তার মনে পড়ে সে ব্যথা পেয়েছিলো।তৎক্ষনাৎ লজ্জায় সে আড়ষ্ট হয়ে পড়লো।সবাই তাকে আর প্রণয়কে নিয়ে কি সব ভাবছে ভেবেই তার কান গরম হয়ে এলো।দৃষ্টি নত করে বললো,

“না মা।তেমন কিছুইনা।ঝ!গ!ড়া হওয়ার কিছুই নেই।আমাদের মাঝে তেমন কথাও হয়না।আর আমি বাথরুমে প*ড়ে গিয়েছিলাম।সেজন্য হালকা ব্যথা অবশ্য পেয়েছি।সেরে যাবে চিন্তা করবেন না”

এ কথা শুনে প্রণয়ের খালা,ফুপি আর চাচি বেশ লজ্জায় পড়লেন।বিব্রতবোধও করলেন।ছোটছোট মেয়েদের সামনে কিসব বলে ফেললেন!প্রণয়ের চাচি বললেন,

“ভাবি আমি একটু আসছি।উজানের বাবা বেরিয়ে পড়বেন গেলাম”

প্রণয়ের ফুপিও বাহানা দেখিয়ে বলেন,

“ভাবি তুমি কথা বলো আমার একটু কাজ আছে”

বলেই প্রস্থান করলেন।একইভাবে তালবাহানা করে পুষ্পিতা জামানের বোন শুষ্মিতা জামানও কেটে পড়লেন।সকলে যেতেই পুষ্পিতা জামান চাঁদের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

“ওদের কথায় কিছু মনে নিওনা।কেমন?”

“না না মা ঠিক আছে সমস্যা নেই।”

“প্রণয় কোথায়?”

“সম্ভবত হাসপাতালে গেছে”

“কখন?”

“ফজরের দিকে”

“সেকি!বিয়ের একদিনও হলোনা আর ও এতো সকালে হাসপাতালে চলে গেলো?”

“জরুরী কিছুই হয়তো।বেশ তাড়াহুড়োয় গেছে”

“আচ্ছা তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও মা।নাকি আরেকটু রেস্ট নিবে?”

“ক’টা বাজে মা?”

“দশটা বেজে কত যেনো।তোমার শরীর খারাপ লাগলে আরেকটু ঘুমাও সমস্যা নেই”

“কি বলেন এসব মা!এতো বেলা হয়ে গেছে আর আমি ঘুমিয়ে ছিলাম!”

“আমরাও ঘুমিয়েই ছিলাম।শিফাদের চেচানোতে উঠেছি।নাহয় দেরিতেই উঠতাম।কাল এগারোটার দিকে না বাসায় আসলাম?ঘুমোতে ঘুমোতে তিনটার উপরে বেজেছে বৈকি!”

“আর ঘুমোবোনা মা।আমি গোসল করে নিচে আসছি।”

“আচ্ছা এসো”

“কিন্তু মা…”

“হ্যা মা?”

“ব্লাউজটা না ঢিলা হচ্ছে।”

“কারোটাই লাগেনি?”

রিদি সামনে এসে বলে,

“ফুপি ভাবি আমাদের থেকে অনেকটাই চিকন।পেটের দিকটা একটু বেশি ই চিকন।ওখান দিয়েই মূলত ঢিলা বেশি।এজন্যই লাগেনি।সেফটিপিন দিয়ে রুবার টাই পরেছে।বিশ্বাস করতে পারো রুবার টাও লাগেনি?কেমন চিকনি বউ পেয়েছো হ্যা?”

আড়চোখে চাঁদ রিদির দিকে তাকালো।তা দেখেই রিদি বললো,

“এবার বুঝি ভাবি ননদকে আর রে!হাই দেবেনাগো ফুপি!”

বলতেই চাঁদ রিদির কান ম*লে দিয়ে বলে,

“তবে রে পাজি!”

পুষ্পিতা জামান চাঁদকে বললেন,

“তুমি তোমার মাপগুলো রুবার কাছে দিয়ে দিও আমি ওকে দিয়ে টেইলারে পাঠিয়ে দিবো”

“ঠিক আছে মা”

পুষ্পিতা জামান চলে যেতেই চাঁদের তিন ননদ চাঁদকে ধরে রুমের ভেতর এনে বিছানায় বসিয়ে নিজেরাও বসে পড়ে।শিফা তাড়াহুড়ো করে বলে,

“ভাবি তুমি এ রুমে কী করো?”

রুবা বলে,

“তুমি না আমাদের রুমে ঘুমিয়েছিলে?”

রিদি কিছু বলছেনা দেখে চাঁদ তাকে বলে,

“তুমি চুপ করে আছো কেনো তুমিও কিছু বলো?”

শিফা চাঁদের বাহু ঝাকিয়ে বলে,

“বলোনা ভাবি!ভাইয়ার আর তোমার কি প্যাচাপ হয়ে গেছে?”

ভ্রু কুচকে চাঁদ বলে,

“কিসের প্যাচাপ?আর তার আগে তোমরা বলো সারারাত কোথায় ছিলে?রুমেতো আসোনি”

রিদি বলে,

“আমরা কাজিনরা আড্ডা দিচ্ছিলাম ভাবি”

“কাজিনরা?”

শিফা বলে,

“হ্যা।আমি,রুবা,রিদি,তন্ময় ভাইয়া,উজান ভাইয়া আমরা আমরাই আরকি”

রুবা প্রসঙ্গ পাল্টাতে বলে,

“ভাবি তোমার মাপগুলো লিখে রেখো।আমি পরে নিয়ে যাবো।এখন অনেক ঘুম পাচ্ছে।গেলাম”

রিদি বলে,

“আমিও যাই আমারও অনেক ঘুম পাচ্ছে।চল তোরাও”

বলেই তিনজনে সেখান থেকে চলে আসে।ওরা চলে যেতেই চাঁদ দরজা আটকে দিয়ে ফোন হাতে নিয়ে কাপা কাপা হাতে ডায়াল করে ‘আর ভাইয়া’ নামক নাম্বারটিতে।প্রথমবার রিসিভ হয়না বিধায় চাঁদ দ্বিতীয়বার ডায়াল করতেই ওপাশ থেকে রিসিভ করলে গম্ভীর কন্ঠস্বর শোনা যায়,

“হ্যালো?”

চাঁদ থমকে যায় আওয়াজটি শুনে।কখনো ভাবেনি ভাগ্য তাকে আবার সেই মানুষগুলোর কাছেই এনে হাজির করবে যাদের থেকে সে একসময় পালিয়েছিলো বহু মাইল দূরে!চাঁদ কাপা কাপা কন্ঠে বলে,

“হ্যা…হ্যালো..ভা…”

চাঁদকে বলার সুযোগ না দিয়ে সে বলে,

“অমি তোমার বোন বোধহয় করেছে নিয়ে যাও”

“হ্যালো আপু?”

খানিকটা কেশে চাঁদ বলে,

“বল”

“তুমি আমার সাথে রেগে নেইতো?”

“আমরা তাদের সাথে রাগী যারা আমাদের আপন।আপনি আমার কে হন যে আপনার সাথে রেগে থাকবো?”

অমৃতা ফুপিয়ে বলে,

“আমার সাথে এভাবে কথা বলোনা আপু প্লিজ।আমার কষ্ট হচ্ছে”

“আর তুই যা করেছিস তারপর আমাদের কারো কষ্ট হয়নি?”

“তুমিতো কিছু জানোনা।আমি যা করেছি তোমার আর জিজুর জন্যই করেছি”

“জিজু?”

“হ্যা প্রণয় জিজু”

অবাক হয়ে চাঁদ বলে,

“আমার বিয়ের ব্যাপারে তোকে কে বলেছে?”

“বলার কি আছে আপু।সবটাতো আমাদের প্ল্যানই ছিলো”

তাচ্ছিল্যের সুরে চাঁদ বলে,

“তার মানে সত্যিই তুই প্রণয়ের সাথে মিলে এতোকিছু করলি?একটাবার ভাবলি না খালামনি,খালুর কি হবে?আর নিমৃতারই বা কী হবে?তোর এই কাহিনীর পর ওর ভবিষ্যৎ টা কতটা ঝু*কি*পূ*র্ণ হয়ে যাবে ভেবেছিস একবারও?”

অমৃতা নির্দ্বিধায় বললো,

“অতোকিছু আমি ভাবতে চাইনি ভাবিওনি।আমি শুধু জানি তুমি আমার বোন কম বেস্ট ফ্রেন্ড বেশি।আর আমার বোন তার ভালোবাসার থেকে দূরে চলে আসবে সামান্য ভুল বুঝাবুঝির জন্য সেটা আমি হতে দিতে পারিনা।আর প্রণয় জিজু তোমার জন্য কতটা ডেসপারেট তা আমি অনেক ভালোভাবেই জানি।রবিন তোমাদের পুরো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রেমের আলাপন আমার সাথে করেছে।”

“সেসব রাখ।তুই এখন কোথায় আছিস?”

“বলছি বলছি।সবই বলছি।তার আগে এমনটা কেনো করেছি তা শোনো।আমি তোমায় শুরু থেকেই বলি।প্রায় বছরখানেক আগের কথা।তুমি তখন ফাইনাল ইয়ার দিবে।সেই সুবাদে আমি,তুমি আর আমাদের বাকি কাজিনরা ঘুরতে গিয়েছিলাম না?তখনকারই একটা পিক আমি রবিনকে সেন্ড করেছিলাম।এরকিছুক্ষণ পরই রবিনের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে কল আসে।কলটা করেছিলো প্রণয় ভাইয়া।রবিন আর ভাইয়া তখন একসাথেই বসে ছিলো কিনা!এতোগুলো মানুষের মাঝেও ভাইয়া তোমায় ঠিক চিনে নিয়েছে।তুমি মাস্ক পরা ছিলে তবুও!ভালোবাসাতো এমনই হয় তাইনা?এরপরই আমার থেকে সে জানতে পারে তুমি টেকনাফ আছো।বিশ্বাস করো আপু সেদিন ভাইয়ার এক্সাইটমেন্ট এতোটা ছিলো যে আমি বলে বুঝাতে পারবোনা।আমি তার সম্পর্কে যতটুকু শুনেছিলাম সে নাকি মেয়ে এ!লা!র্জে!টিক!আমার সাথে রবিনের বাকি সব বন্ধু-বান্ধবীরা কথা বললেও এই প্রণয় ভাইয়া কখনোই বলেনি।শুধুমাত্র তোমার খোজ-খবর নিতে রোজ কল দিতো।এমনকি ভিডিও কলে তোমায় আড়ালে দেখতোও।এমন আরও অনেক কিছু।সে যে তোমাতে কতটা আসক্ত আমি তা আস্তে আস্তে বুঝতে পেরেছিলাম।এরপর রবিনের কাছ থেকে সব জানার পর আমি ভেবে নিয়েছিলাম তোমাদের যে করেই হোক এক করবো।আমি আর প্রণয় ভাইয়া মিলেই সবটা পরিকল্পনা করি।আমার আর ভাইয়ার বিয়েটা পুরোটাই নাটক ছিলো।তা শুধু আমি,রবিন আর ভাইয়াই জানতাম।”

“বিয়েটা যদি তোর সাথে হয়ে যেতো?”

“হলে হতো তাতে তোমার কী?আমি হয়ে যেতাম মিসেস রুহায়ের প্রণয়!”

“হ্যা তো হলিনা কেনো?ভালো সুযোগই তো ছিলো।এমন হ্যান্ডু ছেলেইতো সারাজীবন খুজেছিস”

অমৃতা হুহা করে হেসে দিয়ে বলে,

“ইশশিরে!আমার আপুটা দেখি জ্ব!লে পু*ড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে!তোমার ঐ লাল লাল রা*গী চেহারা দেখতে বড্ড ইচ্ছে করছেগো আপু”

“ফাজলামো করিস না অমি।আমায় তুই বলেছিলি তোর বয়ফ্রেন্ডের নাম রবিন।কিন্তু সে যে ঢামেকে পরতো তা কখনোই বলিস নি কেনো?”

“তুমি কখনো জিজ্ঞেস করোনি তাই”

“তুই প্রণয়কে বিয়ে করে রবিন ভাইয়াকে ঠকাতে চাচ্ছিলি কি করে অমি?তোর বিবেকে বাধলোনা?বিয়েটা হয়ে গেলে ভাইয়া নিশ্চয়ই খুব কষ্ট পেতো”

“রবিনের থেকে দেখি তোমার বেশি কষ্ট হচ্ছে এটা ভেবে।তবে এটা একদমই অসম্ভব।কারণ ভাইয়া আমায় ছোটবোনের মতোই দেখে আর বড় কথা হলো ভাইয়া কেবলই তোমায় ভালোবাসে।আর আমিতো রবিনকে ছাড়া অন্য কাউকে কল্পনায়ও আনিনা।কিন্তু ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো ভাইয়া তোমার সম্পর্কে যা যা বলেছে সবটাই হুবুহু মিলে গেছে।তুমি যে বিয়ের দিন তাকে দেখে এভাবে ভ!ড়*কে যাবে ভাইয়া সেটা আগেই বলেছিলো।আমিই বিশ্বাস করিনি।কারণ তুমিতো চুপচাপ স্বভাবের মেয়ে।কিন্তু সেদিন তুমি আমায় ভুল প্রমানিত করলে।যে তোমায় এতো নিখুঁতভাবে চেনে-বুঝে তার মনে তোমার জন্য ঠিক কতটা ভালোবাসা লুক্কায়িত আছে আমি জাস্ট ভাবতে পারিনা!আমি চাই তোমাদের ‘আবার প্রেম হোক!”

চাঁদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,

“সেটা আর কখনোই সম্ভব না”

“সম্ভব করানোর জন্যইতো তোমাদের বিয়েটা এভাবে দিলাম”

“বেশি কথা না বলে বল যে তুই কোথায় আছিস?তুই কি বিয়ে করে ফেলেছিস?দেখ অমি এভাবে একটা ছেলের সাথে থাকাটা….”

“আহহা হাইপার হচ্ছো কেনো?সবটা বলছিতো!”

বিয়ের দিন রাতে,

সকলের সামনে চাঁদের পিছু অমৃতা আসলেও সে চাঁদের কাছে যায়না।সে নিজের রুমের বারান্দা টপকে বাগানে চলে আসে।সেখানে আগে থেকেই তার বয়ফ্রেন্ড রবিন উপস্থিত ছিলো।তার সাথে আরও একটা মেয়ে আছে।মেয়েটাকে অমৃতা চেনে।অমৃতা তাকে দেখে বলে,

“পূর্ণতা আপি তুমি?তুমিও এসেছো?”

পূর্ণতা অমৃতার মাথায় হাত রেখে বলে,

“কিভাবে না আসতাম বলো?তোমার মতো মিষ্টি একটা মেয়েকে এভাবে কেউ কি করে মতের বি!রু*দ্ধে বিয়ে দিতে পারে?তাছাড়া তুমিতো আমার উডবি ভাবি!”

অমৃতা পূর্ণতাকে জড়িয়ে ধরে বলে,

“থ্যাংক ইউ সো মাচ আপু”

পূর্ণতাও অমৃতার পিঠে হাত রেখে বলে,

“থ্যাংক্স বলতে হলে রবিনকেই বলো।ও ই আমায় এনেছে।বলেছে এভাবে একা ছেলে মেয়ে গেলে লোকে নানান কথা বলবে।তাই আমিও এসেছি।তোমায় ঢাকা নিয়েই বিয়ের ব্যবস্থা করবো আমরা”

অমৃতা পূর্ণতাকে ছেড়ে দিয়ে বলে,

“আমি এখনই বিয়ে করবোনা আপু।বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়া বিয়েটা সম্ভব না।তাদের রাজি করিয়েই করবো।আশা করছি তারা একদিন ঠিক রাজি হবে।তুমি আমায় প্লিজ তোমার বাসায় কয়েকটা দিন থাকতে দিবে?”

পূর্ণতা হেসে বলে,

“কয়েকটা দিন কেনো পাগলি?তোমার যতদিন ইচ্ছা থেকো।আপাতত এসব গয়না টয়না খুলে রুমে রেখে এই বোরকাটা পরে আসো।আমাদের এখনই যেতে হবে।যেতে যেতে সকাল হয়ে যাবে।তাড়াতাড়ি করো”

To be continued….

[বিঃদ্রঃঅমৃতার ছোট বোনের নাম কিছু কারণবশত শর্মিতা থেকে নিমৃতা করা হলো।এখন থেকে নিমৃতাই উল্লেখ থাকবে।কেউ বিভ্রান্তিতে পড়বেন না আশা করছি।ধন্যবাদ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here