FF:#মেডিকেল_ক্যাম্প
Part:18
পরের দিন উজানের কেবিনে।উজান চেয়ারের পাশে দাড়িয়ে একটা ফাইল দেখছিলো….
হিয়া:স্যার আসবো
উজান:হুম আসুন
হিয়া:খেয়েছেন আপনি দুপুরে
উজান:নাহ মা ফোন করেছিলো বললো বুলি সহ নাকি টিউলিপ এ আসছে, বললো লাঞ্চ নিয়ে আসবে।আপনি খেয়েছেন?
হিয়া:নাহ এখনো খাওয়া হয়নি।
উজান:তা আজকে এতো খুশিখুশি লাগছে মনে হচ্ছে
হিয়া উজানের পাশে থাকা চেয়ায়টার উপর উঠে পিছন দিক দিয়ে উজানের কাধেঁ দুহাত দিয়ে উজানের মাথার সাথে ওর মাথা ঠুকে দেয়___
হিয়া:খুশিখুশি তো লাগছে😍
উজান:কারন টা জানতে পারি(ফাইল দেখতে দেখতে)
হিয়া:কারন আজ সমরেশ স্যার এর ক্লাস ছিলো আর উনি যা যা বলেছেন আমি সব কটার উওর দিতে পেরেছি।আর উনি আমাকে মনভরে অনেক গুলো আশীর্বাদ দিয়েছেন।
উজান:বাহ ভালো তার জন্য এতো খুশি।
হিয়া:রাখুন না ফাইল টা।
উজান ফাইল টা ওফ করে পিছন ঘুরে।হিয়া তখনো উজানের কাধে দুহাত দিয়ে চেয়ার এর উপর দাড়িয়ে আছে।উজান এক হাত দিয়ে হিয়ায় কোমড় ধরে আর এক হাত দিয়ে হিয়ার চুল গুলো নাড়তে থাকে___
হিয়া:ওটি কখন।
উজান:চারটে তে কেনো
হিয়া:এখন তো সবে দুটো আমি এতোক্ষন কি করবো।বাড়ি গেলেই ভালো করতাম।পরে আসতাম।
উজান:কেনো আমার সাথে থাকতে ভালো লাগছে না।
হিয়া:তা কি বললাম আপনি কি আর চারটে পর্যন্ত আমার সাথে থাকবেন নাকি
উজান হিয়ার কোমড় ধরে ওর মুখের কাছে হিয়াকে এগিয়ে এনে
উজান:আপনি চাইলে থাকতেই পারি
হিয়া:কি করছেন কি কেউ আসবে।সারুন আমি নামবো
উজান:কেউ আসবে না___আচ্ছা একটা কথা বলুন তো সেদিন আপনি আমাকে ওভাবে ইয়ে করে দৌড়ে কেনো পালালেন
হিয়া:তো কি করতাম
উজান:এতো লজ্জা আপনার।আফটার ওল আমি আপনার হাসবেন্ড হই আপনি আমাকে আদর করবেন ভালোবাসবেন এটাই তো স্বাভাবিক। এতে এতো পালানোর কি আছে।
হিয়া:কি করছেন আপনি লাগছে আমার।কেউ আসবে।
বাসবি:রাজা আছিস।বুলি একবার দিদি কে তোমার…
বাসবি এটা বলে কেবিনে ঢুকে হিয়ান কে এভাবে দেখে।বাসবি কে দেখে ওরা দুজন এ একে অপরকে ছেড়ে দিয়ে হিয়া চেয়ার থেকে নামে।
বাসবি:বুলি আমরা মনে হয় আমরা ভুল সময় এসে পরলাম
বুলি:হুম নক করে আসা দরকার ছিলো বুঝলে কাকিমা
উজান:মা দাড়িয়ে আছো কেনো ভিতরে আসো।
বাসবি:আমি আর ভিতরে এসে কি করবো।যার থাকার সেই তো আছে___আচ্ছা এতো লজ্জা পেতে হবে না আর__আয় দেখি খাবি বস তোরা
বাসবি হিয়া আর উজান দুজন কে খেতে দেয়
হিয়া:কাকিমা বিরিয়ানি টা খুব খুব ভালো হয়েছে___
বাসবি:দিবো আর একটু।রাজা তোকে দিবো
উজান:নাহ এটাই এনাফ
হিয়া:তুমি আমাকে দেও উনি ওসব খায় না।
বুলি:আজ কখন ফিরবি তুই দিদি
হিয়া:সন্ধ্যাে হবে কেনো?
বুলি:নাহ মামু বললো কাল নাকি গ্রামে যাবে কিছুদিন এর জন্য।জানিস কিছু?
হিয়া:নাতো
বাসবি:আচ্ছা ওসব পরে হবে।আগে খেয়ে নে।আমি তোর বাবার সাথে কিছু কথা বলতে এসেছিলাম।বুলি বের হ মা।
উজান:চলে যাচ্ছো এক্ষনি।
বুলি:থাকবো বলছো।ডিস্টার্ব হবা নাতো!
হিয়া:বুলি
বাসবি:ওকে কেনো বকছো।ভুল কি বললো।আর সব তো হলো।ভাত কাপড় এর অনুষ্ঠান ও আমি করে দিলাম এখন তোরা নিজেদের মতো সময় বুঝে ফুলসজ্জা টাও করে নিস…
____এটা বলে বাসবি আর বুলি হাসতে থাকে।উজান আর হিয়া খুব লজ্জা পেয়ে যায়___
বুলি:কাকিমা চলো দেরি হয়ে যাচ্ছে
বাসবি:হুম এসো।থাক রাজা।হিয়া আসছি…
…………
ওটি রুম:
উজান:মেট্রন ওনার পালস টা চেক করুন তো একবার
মেট্রন:জ্বী স্যার।
মৃনালিনী:পালস তো কমে যাচ্ছে উজান।এবার কি করবে
উজান:মেট্রন যেই ইনজেকশন টা রেডি রাখতে বলেছিলাম ওটা এনেছেন।
মেট্রন:হিয়া তোমাকে যে ইনজেকশন টা বললাম এনেছো___
হিয়া:হ্যা সব এনেছি তুমি যা যা বলেছো।
মৃনালিনী:উজান ওনার তো পেসার ফলস করছে
উজান:হিয়া ইমিডিয়েট ওনাকে ইনজেকশন টা পুশ করার ব্যবস্থা করুন কুইক।
হিয়া:হুম স্যার।
মৃনালিনী:হিয়া এদিকে দেও
হিয়া:ম্যাম নিন।
মৃনালিনী:উজান ওয়েট।থামো আগে পুশ করো না
উজান:কেনো কি হলো আবার আমাদের কাছে সময় খুব কম
মৃনালিনী:এটার ডেট এক্সপেয়ায় হয়ে গেছে দেখো____তোমার কি কোনো কান্ড ঙ্গান বলে কিছু নেই হিয়া।ইনজেকশন টা নেওয়ায় আগে একবার অন্তত চেক করে নেওয়ায় প্রয়োজন টুকু তুমি মনে করো নাই।এতো কেয়ায় লেস তুমি কি করে হতে পারলে?
হিয়া:কিন্তু আমি তো ডেট দেখেই নিলাম।
মৃনালিনী:তাহলে এটা কি।এটা এক বছর আগেই এক্সপেয়ায় হয়ে গেছে।এটা তোমার কাছে আমি আশা করি নাই।
হিয়া:ম্যাম আমি সত্যি বলছি।
উজান:জাস্ট স্টপ ওল।মেট্রন আপনি ইমিডিয়ট গিয়ে অন্য একটা ইনজেকশন নিয়ে আসুন ফাস্ট।
মেট্রন:জ্বী স্যার আমি যাচ্ছি।
কোনোরকম ওটি শেষ হয়।
মেট্রন:হিয়া কি হয়েছে কাঁদছো কেনো
হিয়া:বিশ্বাস করো মিরাদী আমি ডেট দেখেই এনেছিলাম
মেট্রন:আমি জানি হিয়া।কিন্তু আমার মাথায় একটা জিনিস কিছু তে আসছে না যদি তুমি সত্যি ডেট দেখে নেও তাহলে ডেট এ্সপেয়ায় ইনজেকশন টা আসলো কোথা থেকে।আর তুমি তো ওটা টিউলিপ থেকেই নিয়েছো তাহলে। এমনি এর আগে জাল ঔষধ এর ব্যাপার টার পর সব আরো কঠিন ভাবে দেখা হচ্ছে তাহলে তো এতো বড়ো ভুল হওয়ায় কথা না___
হিয়া:আমি কিচ্ছু জানি না মিরাদী।উজান স্যার ও হয়তো আমাকে ভুল বুঝলো।কিন্তু বিশ্বাস করো আমি জেনে শুনে এমনটা করি নাই___(কাঁদতে কাঁদতে)
…..দুদিন পর লিলি ম্যাম এর কেবিন….
লিলিম্যাম:গুড মর্নিং এভরিওয়ান।আই হোপ সবাই ভালো আছো।তো আজ আমি তাদের নাম বলবো যারা এই কেস গুলোতে আমাদের আটেন্ড করতে পারবে।মৃনালিনী তুমি বলো..
মৃনালিনী:মৃনালিনী নাম বলতে থাকে, শেষে কার্ডিওলজি বিভাগ থেকে যারা যাবে তাদের নাম বলে___এই বিভাগ থেকে শুধু হিয়া আর জিনি বাদ পড়েছে কারন তাদের রিসেন্ট রিভিউ খুব খারাপ..
হিয়া শক হয়ে যায়।এটা ও একদম আশা করেনি
হিয়া:ম্যাম প্লিজ এমনটা করবেন না।প্লিজ ম্যাম এটাতে জয়েন করা আমার জন্য খুব জরুরি।প্লিজ ম্যাম
মৃনালিনী:দেখো হিয়া যা রেজাল্ট আমি তোমাকে তাই বললাম আর তাছাড়া আমি নিজেই দেখেছি এই কদিন তুমি একদম উদাসীন ছিলে ওটিতে।তোমাকে নেওয়ায় রিস্ক আমরা নেবো কি করে
হিয়া:ম্যাম একবার প্লিজ আমার আর ভুল হবে না।আপনি চাইলে আমার আগের রেকর্ড গুলো দেখতে পারেন আমার রিভিউ সবসময় বাকি দের থেকে অনেক ভালো ছিলো____উজান স্যার আপনি কিছু বলুন না।স্যার প্লিজ কিছু তো বলুন
মৃনালিনী:উজান কি বলবে।ও আর কতো তোমাকে সব ব্যাপারে ডিফেন্ড করবে হিয়া।তুমি তো দেখছি সব ব্যাপারেই উজান কে টানো।
উজান:মৃনালিনী আমি বলছি মিস মিএ কে আর একবার একটা সুযোগ
মৃনালিনী:ওহ কামন উজান।তুমিও শুরু করলে।এখন তো মনে হচ্ছে হিয়ার এই কলেজ ভর্তি,এতো ভালো রেজাল্ট সব টা তোমার জন্যেই___
___হিয়ার কথা টা এবার খুব গায়ে লাগে।লাগারই কথা এতো মানুষের সামনে মৃনালিনী ওর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে___
হিয়া:ম্যাম এক মিনিট।হা আমার কলেজে ভর্তি হতে উজান স্যার আমাকে অনেক হেল্প করেছে তাই বলে আপনি এটা বলতে পারেন না যে আমি অযোগ্য
উজান:মিস মিএ স্টপ।উনি আপনার সিনিয়য়। আপনি কিভাবে কথা বলছেন ওনার সাথে। আর আমার মনে হয় মৃনালিনী ঠিকি বলছে আপনার এখন এটায় পার্টিসিপেট না করাটাই বেস্ট। সেদিন আপনি যে ভুলটা করলেন
হিয়া:আপনি এটা বলছেন উজান স্যার!!আপনার মনে হয় এতো বড়ো ভুল আমি করতে পারি।ঠিক আছে আপনারা যা ভালো বোঝেন তাই করুন।কিন্তু আমি জানি আমি কোনো ভুল করিনি
হিয়া কাদঁতে কাঁদতে বের হয়ে আসে
মৃনালিনী:তোমার নিজেকে একটু সংযত করা উচিৎ উজান।বারবার এভাবে হিয়ায় সাপোর্ট নিলে লোকে কি ভাব্বে।তুমি ওকে ডিফেন্স করো সবসময় এটা কি ঠিক