মেডিকেল_ক্যাম্প Part:30

0
278

30-FF: #মেডিকেল_ক্যাম্প

Part:30

….সেদিন বিকেলে ঘুরতে যাওয়ায় পর রাতে ডিনার করে সবাই ক্লান্ত শরীর নিয়ে যারযার রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ে…উজান হিয়াও আজ খুব ক্লান্ত….

হিয়া ফ্রেশ হয়ে এসে…

হিয়া:কেমন দেখতে দেখতে আজ দিনটা পার হলো বলুন….

উজান:হুম…এখন আপনি শুয়ে পড়ুন কথা না বলে…😒

হিয়া:আমি শুবো একা আপনি আসবেন না?

উজান:নাহ আমার কিছু ইম্পর্ট্যান্ট মেইল চেক করার আছে একটু সময় লাগবে।আপনাকে যেটা বললাম আপনি ওটা করুন…😒

হিয়া:(হাই তুলতে তুলতে)লাগুক সময় আমি আছি জেগে আপনি আসুন তারপর দুজন একসাথে ঘুমোবো।😊😌

উজান:পারবেন জেগে থাকতে এখনি যে হাই তুলছেন…

হিয়া:পারবো আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন…😘

…..উজান ফ্রেশ হতে গেলে হিয়া ওর অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ে।আজ অনেক ছোটাছুটি লাফালাফি করেছে বিচে তাই হিয়া আজ অনেক ক্লান্ত…….

উজান এসে….

উজান:কি বললো আমার জন্য নাকি জেগে থাকবে আর আমি ফ্রেশ হয়ে আসতে না আসতেই ঘুম….😉

……উজান গিয়ে হিয়া কে ঠিক করে শুইয়ে দিয়ে ওর গায়ে চাদরটা বিছিয়ে দেয়..তারপর লেপটপ খুলে ওর মেইল গুলো দেখতে থাকে…..

……পরের দিন সকাল সকাল সবাই ঘুরতে বের হয়…বিকেলের দিক হোটেলে ফিরে হিয়াদের রুমে সবাই জড়ো হয়…..

ঠাম্মি:ঝরনা টা কি সুন্দর ছিলো তাই নারে হিয়া..

হিয়া:সুন্দর তো ছিলো কিন্তু কাছে তো যেতেই দিলো না উজান স্যার…কাছে না গেলে বোঝা যায় বলো তুমি….😒😒

বাসবি:বুলি আর জিনি আবার কোথায় গেলো দেখ দেখি….

জিনি:ট্যান টা ট্যান দাদাভাই দেখ আমি আর বুলি তোর আর হিয়া বৌদির এর জন্য কি এনেছি…😜😜

ঠাম্মি:কি রে জিনি ওটা.

বুলি:এটা হচ্ছে ইনভিটেশন কার্ড ঠাম্মি। আজ রাতে বিচে কাপল দের নিয়ে একটা বড়ো অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে ওটার টিকিট।দুদিন কি তিন দিন চলবে শুনলাম

বাসবি:ওমা দেখি দেখি……যাক দুজনে একটা কাজের কাজ করেছে..

হিয়া:রাত কটায় রে বুলি

বুলি:এই সাত টের পর পরই..

উজান:আপনি যাবেন

হিয়া:আপনি নিয়ে গেলে যাবো……😊

রাতঃ৮টা

………….হিয়া উজান দুজনে রেডি হয় পার্টিতে যাওয়ায় জন্য কিন্ত এরমধ্য টিউলিপ থেকে ফোন আসে একটা ইমার্জেন্সি কেস আজকেই ওটি করতে হবে আর উজান ছাড়া হবে না কারন পেশেন্ট উজানের আন্ডারে ছিলো……

হিয়া:কোনো সমস্যা

উজান:আমাকে এক্ষুনি একবার টিউলিপে যেতে হবে ইটিস ইমার্জেনসি..

হিয়া:ঠিক আছে কিন্তু আপনি গিয়েই ওটি করবেন? আমি যাই আপনার সাথে..

উজান:নাহ নাহ আপনাকে যেতে হবে না।ওখানে সুনয়না আছে সমস্যা হবে না।আর আমি কালকে সকালের মধ্যে আবার চলে আসবো ২ঘন্টার ই তো রাস্তা..

হিয়া:কিন্তু আপনি একা যাবেন..আমিও যাই না…

উজান:না বললাম তো…আর সরি

হিয়া:সরি কেনো?

উজান:আপনাকে পার্টি টাতে নিয়ে যেতে পারলাম না…..

হিয়া:(উজান কে জরিয়ে ধরে)একজন ডক্টর হিসাবে নিজের ডিউটি টা সবার আগে এতোদিন তো এটাই আপনি আমাকে শিখিয়ে এসেছিলেন আর আজ আপনি নিজে আমাকে বলছেন সরি…😍😍

উজান:থ্যাংকস হিয়া..

হিয়া:থ্যাংকস নিবো না শুধু আমার এখানে একটা ইয়ে দিন…😋😋

(হিয়া ওর কপাল টা আগায় দেয়…উজান হিয়ার কপালে একটা স্নেহের চুম্বন একে দিয়ে টিউলিপের জন্য বেরিয়ে পড়ে….)

………..হিয়া রুমে একা না থেকে জিনি আর বুলির সাথে গিয়ে ঘুমোয় রাতটা…উজানের আসতে আসতে সেদিন দুপুর হয়…বিকালে উজান হোটেল এই থেকে যায় কারন ওহ আজকে ক্লান্ত আর ওর অন্য একটা কারন ও আছে…হিয়ারা সবাই বিচে আবার ঘুরতে আর কেনাকাটা করে এসে ঠাম্মির রুমে রাতের ডিনার টা কম্পিলিট করে….

উজান:জিনিয়া একটু শোনো

জিনিয়া:হুম দাদাভাই বলো😍

উজান:হিয়া কে এই শাড়ি টা দিয়ে বলবে দাদাভাই রুমে আসার সময় এই শাড়ি টা পড়ে আসতে বলেছে….😐

জিনিয়া:ঠিক আছে সেটা না হয় বললাম কিন্তু তার আগে ১০০০০টাকা বকশিশ দেও…😎😎

উজান:হোয়াট! সামান্য এ কাজের জন্য ১০০০০টাকা।জিনি তুমি তোমার বড়ো দাদাভাই এর সাথে মজা করছো…😑

জিনিয়া:আরে মজা কেনো করবো আচ্ছা দা ভাই তুমি এতো বড়ো একজন ডক্টর এরকম ১০০০০টাকা কি কোনো টাকা তোমার কাছে বলো…আচ্ছা বেশ ১০০০০লাগবে না ২০০০দেও আমি আর বুলি কালকে একটা কাজে বের হবো..

উজান:নেও কিন্তু এখানে কি কাজ তোমাদের..

জিনিয়া:আছে একটা কাজ..

উজান:যাহ করবে সাবধানে করবে বেশি দূরে কোথাও যাবে না…..

………….জিনি হিয়া কে শাড়ি টা গিয়ে পড়তে বলে আর বলে রুমে যাওয়ায় আগে একটা উজান কে ফোন করে নিতে….ওদিকে উজান আজ ওর আর হিয়ায় রুম টা হোটেল ম্যানেজমেন্ট কে বলে খুব সুন্দর করে ডেকোরেট করে রাখে…..

হিয়া:স্যার কোথায় আপনি…আমি তো শাড়ি পড়ে বসে আছি..যাই রুমে ভালো লাগছে না…ঘুম ঘুম পাচ্ছে তো

উজান:ওয়েট আপনি রুমের দিকে আগাতে থাকুন আমি আসছি আপনাকে নিতে..

হিয়া:ঠিক আছে আসুন….

………হিয়া একটা পুরো কালো জরজেট এর শাড়ি পড়েছে আর শাড়ির চারপাশে লাল পাড় দেওয়া…চুল গুলো খোলা কপালে হিয়ার ঔ কালো টিপ….উজান রুমের বাহিরেই দাড়িয়ে ছিলো…হিয়া ওর আচল ঠিক করতেকরতে রুমের দিকে আসছে….হিয়ার উপর চোখ পড়তে উজান আবার মুগ্ধ হয়ে হিয়া কে দেখতে থাকে…..

হিয়া:স্যার কেনো শাড়ি পরিয়েছেন আমাকে।আমি শাড়ি সামলাতে পাড়ি বলুন দেখি…স্যার…উজান স্যার…

……হিয়ার ডাকে উজানের নেশা কাটে….

উজান:হুম চোখ টা বন্ধ করুন

হিয়া:হ্যাএএ

উজান:হ্যা কি বন্ধ করতে বলছি বন্ধ করুন

হিয়া:করছি….

……উজান হিয়াকে ওদের রুমে নিয়ে যায়…রুম টা আলো দিয়ে সাজানো।মোমবাতি জ্বলছে অনেক..সাথে হালকা মিউজিক..টেবিলের উপর ছোট্ট একটা কেক রাখা…..

হিয়া:এবার খুলি কেমন জানি লাগছে..

উজান:খুলুন…

হিয়া:এসব এসব কি এটা আমাদের রুম….আপনি সাজিয়েছেন!!!!

উজান:পছন্দ হয়েছে আপনার?

হিয়া:খুব খুব খুব পছন্দ হয়েছে…আপনি আমার জন্য এসব করেছেন..আমি তো ভাবতেই পারছি না…আমার ভীষন ভালো লাগছে

উজান:হয়েছে আস্তে…এতে এতো লাফানোর কিছু নেই….আসুন এখানে বসুন…

হিয়া:কেক কেক কীসের জন্য?আজ তো আমার বা আপনার কারো জন্মদিন না তাহলে….

উজান:হ্যা জন্মদিন না তবে পরীক্ষার কারনে তো আপনার জন্মদিনে আমি তেমন কিছু করতে পারি নাই তাই ভাবলাম আজ যখন সুযোগ পেয়েছি দুজনে আজ একা তাই….

হিয়া:আপনি কেনো এতো ভাবেন আমাকে নিয়ে….

উজান:আপনাকে নিয়ে ভাববো না তো কার জন্য ভাববো….

…..হিয়া হেসে দেয়…..

উজান:নিন এবার কেক টা কাটুন..

হিয়া:হুমম কাটছি……..হা করুন আগে আপনি…

………কেক খেয়ে উজান কিছুটা কেক হিয়ার গালে ছুইয়ে দেয়।হিয়া কপট রেগে যায়…..

হিয়া:কি করলেন আপনি এটা।এটা কিন্তু ঠিক না..

উজান:কি ঠিক না দেখুন কি কিউট লাগছে আপনাকে

হিয়া:তাই না…আমি এবার লাগিয়ে দেই আপনাকে তাহলে আপনাকেও কিউট লাগবে….

উজান:দিন

হিয়া:সত্যি দিবো কিন্তু

উজান:হুম দিন আজ আপনাকে বারন করবো না..

…….হিয়া গিয়ে ওর যে গালে উজান কেক লাগিয়ে দিয়েছিলো ঔ গাল টা উজানের গালে সাথে ঘসে দেয়….

হিয়া:নিন লাগিয়ে দিলাম….

…….দুজনে হেসে দেয়……

হিয়া:তা শুধু কেক কাটিয়ে পার করবেন গিফট টিফট কিছু নেই বুঝি আমার…

উজান:গিফট………আছে……

হিয়া:সত্যি……কি গিফট….

……..উজান হিয়াকে একটা ফোটো এ্যালবাম গিফট করে যেখানে হিয়ার এই তিন বছরে সবার সাথে কাটানো মুহুর্ত গুলো সাজানো থাকে আর সেদিন বিচে উজান হিয়ার যে ছবি গুলো তুলে দিয়েছিলো আর সাথে তোলা ওদের দুজনের সেলফি গুলো ওগুলোও ছিলো…..

হিয়া:এটা এটা তো দেখে ফটো এ্যালবাম মনে হচ্ছে

উজান:ফটো এ্যালবাম ই এটা।খুলে দেখুন….

……ফোটো এ্যালবাম টা হাতে নিয়ে সব ছবি গুলো দেখতে দেখতে হিয়ার চোখে জল চলে আসে….

উজান:কি হলো আপনি কাঁদছেন…হিয়া….

হিয়া:উম হুম আমি কাদছি না…ভাবছি কি ভাবে কি হলো আমার কলকাতা তে পড়তে আসা..টিউলিপে ভর্তি,আপনার সাথে মেডিকেল ক্যাম্প এ গিয়ে বিয়ে…আর দেখতে দেখতে বিয়ের একটা বছর ও পার হলো…সব টা কেমন জানি স্বপ্ন মনে হয় এখনো আমার কাছে….

…….হিয়ার চোখের কোনে জমে থাকা পানি টা মুছে দিয়ে….

উজান:হুমম স্বপ্ন না হিয়া সত্যি আজ সব…আমি আর আপনি আজ এক হয়ে আছি….

……উজানের কথায় আবার হিয়া প্রান ফিরে প্রায়।কিছুক্ষণ আগের হাসিভরা মুখ টা আবার ফিরে আসে….

হিয়া:হুম….আপনার জন্য ও আমি একটা জিনিস এনেছি…

উজান:আমার জন্য…আমার জন্য আবার কি এনেছেন….?

হিয়া:এই নিন…..

উজান:এটা কি……?

……..হিয়া উজান কে একটা লাভ লকেট উপহার দেয় যেখানে ওদের দুজনের ছবি থাকে…..

হিয়া:এটা না লাভ লকেট…খুলে দেখুন….নিন….দাড়ান আমি খুলছি..

উজান:আমাদের ছবি…এটা আপনি কোথায় পেলেন….

হিয়া:আজকে বিকেলে গেলাম না বিচে কেনাকাটা করতে তখন বুলি কে দেখলাম এটা পাবলোর জন্য কিনলো আর কিনে ছবি বের করে ওটায় ভরায় নিলো…আমার না জিনিস টা খুব পছন্দ হয়েছে তাই আমিও আপনার জন্য কিনে নিলাম…..সুন্দর না দেখুন….

উজান:হুম সুন্দর…কিন্তু এটা তো আমি আমার গলায় পড়তে পারবো না তবে….

হিয়া:তবে….

উজান:(ওর ওয়ালেট বের করে)এই যে আমার ওয়ালেট এখানে যেমন আমি আপনার কয়েকটা চিরকুট সব সময় রেখে দেই এটাও আজ থেকে রেখে দিলাম।যখনি আপনার কথা মনে পড়বে তখন এটা বের করে আপনাকে দেখে নিবো…

…..হিয়া এবার লজ্জা পায় খানিকটা….উজান হিয়ার হাত ধরে তুলে একটা গান বাজিয়ে দিয়ে দুজনে হাত ধরে নাচতে থাকে…..

হিয়া:স্যার আমি আপনার দুটো পায়ে ভর দিয়ে দাড়া হই এরপর আপনি আমাকে নিয়ে যতো ইচ্ছে নাচুন

উজান:নাহ হিয়া ওভাবে হয় নাকি আপনি পড়ে যাবেন

হিয়া:আরে পড়বো না দাড়ান…আপনি শুধু আপনার দুহাত দিয়ে আমার কোমড় টা শক্ত করে ধরুন….কি হলো ধরুন….

উজান:আপনি না আপনার আবদারের শেষ নেই..

…..হিয়া উজানের দু পায়ে ওর দু পা ভর দিয়ে দাড়ায়।উজান হিয়ার কোমড় শক্ত করে ধরে..হিয়া পড়ে যেতে দরে কিন্তু উজান সামলে নেয়….

“”””এটা গল্প কার দেখো পড়ছে কে”””
“”””ভুলে অন্ধকার আলো সিকছে কে”””
“””কিছু আবদারের জানি নেই মানে””””
“””তোর সঙ্গে আজ আমাকে নে””””
“”””এগিয়ে দে এগিয়ে দে দু একা পা এগিয়ে দে”””
“””হাটতে চাই ক এক পা তোর সাথে””””

হিয়া:আআআআ

উজান:কি হলো

হিয়া:মনে হলো চোখে কি যেনো পড়ছে…আআ খুব জ্বলছে..

উজান:দেখি আপনি হাত সরান আমাকে দেখতে দিন..

হিয়া:ভীষন যন্ত্রনা করছে..

উজান:দেখি বাথরুমে আসুন আমার সাথে চোখে জল দিতে হবে..

……উজান হিয়া কে ধরে বাথরুমে নিয়ে যায়….বেসিন থেকে পানি নিয়ে হিয়ার চোখে দিতে থাকে..

উজান:বের হলো কিছু

হিয়া:হুম হচ্ছে জ্বালা টা কমছে একটু একটু..

উজান:কি যে করেন না আপনি।ভিজিয়ে দিলেন তো আমায়..

হিয়া:আমি কোথায় ভেজালাম আমি তো আমার চোখে পানি দিচ্ছিলাম…

উজান:সেই..

……..হিয়া পানি নিয়ে উজানের গায়ে ছুরে দেয়….

উজান:কি করলেন কি এটা আপনি😡

হিয়া:কেনো শুধু এমনি এমনি না ভিজে দিয়ে চারটে কথা শুনবো তার চেয়ে ভিজিয়ে দিয়ে কথা শুনি😊

উজান:তাই না এবার আমিও আপনাকে ভিজিয়ে দিচ্ছি ওয়েট

হিয়া:না স্যার একদম না স্যার স্যার….

……উজান হিয়া কে ঝরনার সামনে দাড় করে দিয়ে ঝরনা ছেড়ে দেয়…হিয়া পুরোপুরিভাবে না ভিজলেও অনেকটা ভিজে যায়…উজান ঝরনা ওফ করে হিয়ার কোমড়ে হাত গুজে দিয়ে হিয়াকে ওর কাছে সপাটে টেনে নেয়….

হিয়া:স্যার…
উজান:চুপ….

…….উজান হিয়ার কপালে,গালে,চোখে,ঠোটে পর পর ওর ঠোট স্পর্শ করতে থাকে।তার পর আস্তে করে হাত পিছনে দিয়ে হিয়ার শাড়ির ফিতে টা খুলে দেয়…হিয়া এবার খুব লজ্জা পেয়ে যায়…উজান ওকে কোলে করে নিয়ে এসে বিছানায় শুইয়ে দেয়….

হিয়া:স্যার আমি আমি মানে আমার শাড়িটা তো পুরো ভিজে গেছে এভাবে তো বিছানা টাও ভিজে যাবে বলছি কি আমি চেন্জ করে আসি….

উজান:ভিজে গেলে যাক পরে শুকিয়েও যাবে…..এতো কিসের লজ্জা আপনার এখনো….

…….দুজনে আবার মিশে যায় একে অপরের মাঝে…..

“”””””বে ইনতে হা বে ইনতে হা”””””
“”””কহি কাছার না রাহে তেরি খাবার না রাহে”””
“”””মাখমালি রাত কি হো না সুভা””””
“”””বে ইনতে হা বে ইনতে হা””””””

পরের দিন সকালে….হিয়ার ঘুম ভেঙ্গে গেলে ওহ উঠতে ধরে।উজান টের পেয়ে হিয়ার আচল ধরে টান দিয়ে হিয়াকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে আবার….

হিয়া:কি করছেন কি ছাড়ুন অনেক তো বেলা হলো…এর পর সবাই ডাকাডাকি শুরু করবে….

উজান:ডাকুক…আমি ঘুমোবো

হিয়া:আরো ঘুমোবেন!কাল রাতে ঘুম হয়নি আপনার

উজান:আপনি ঘুমোতে দিলেন কোথায় যে ঘুমোবো😍

হিয়া:মানে যাতা😊……ফোন বাজছে না আমার ফোন টা কোথায় ফোন..

উজান:এখন আবার কে

হিয়া:বাবা ফোন করেছে…সারুন না..

উজান:আপনি কথা বলুন আমি তো শুধু আপনাকে ধরেই আছি…

হিয়া:হ্যালো বাবা..

বিকাশবাবু:কি রে মা কেমন আছিস কাল ফোন দিতে চেয়েও দিলি না..সব ঠিক তো ওখানে..

হিয়া:এখানে সব ঠিক আছে বাবা আমরা ভালো আছি কালকে ঘুমিয়ে পড়ে ছিলাম তাই আর ফোন দেই নি..তুমি কেমন আছো বলো

বিকাশবাবু:আমি ভালোই আছি…তা কালকে আসছিস তো নাকি..

হিয়া:হ্যা বাবা কালকেই আসছি…উজান স্যার এর তো আর ছুটি নেই….

বিকাশবাবু:বেশ বেশ

হিয়া:আহা উজান স্যার কি করছেন ছাড়ুন না…

___উজান হিয়া কে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে হিয়ার চুল গুলো নিয়ে খেলতে থাকে___

বিকাশবাবু:কিছু বললি মা

হিয়া:না না বাবা কিছু বলি নি..

বিকাশবাবু:তা তোর ঔ বোন টি কোথায় গিয়ে তো একবারো আমাকে ফোন দেওয়ায় প্রয়োজন টুকু ও মনে করলো না….

হিয়া:(উম হুম স্যার…উজানের হাতে একটা বারি দিয়ে)…….বুলি ওর কথা আর বলো না ওহ তো জিনি আছে না দুজনে সারাদিন বিচে থাকে ওদের কে পাওয়াই মুশকিল…

বিকাশবাবু:ঠিক আছে মা এখন রাখি তাহলে আর শোন উজানের সাথে কোনো রকম ঝগড়া করবি না কিন্তু বলে দিলাম ওহ কিন্ত শুধু আমার জামাই না আমার ছেলে ওহ বুঝলি..

হিয়া:হুম আমার চেয়ে তো তোমার ওনার জন্য বেশি চিন্তা তাই না….তুমি চিন্তা করো না উনি ভালো আছে….আমি রাখি এখন..

বিকাশবাবু:ঠিক আছে রাখ…

হিয়া:কি হ্যা বাবার সাথে কথা বলছি না আমি এরকম করলে হয়…

উজান:কি করলাম আমি শুধু তো আপনাকে একটু ভালোইবাসছি….

হিয়াঃএটা ভালোবাসা তাই নাআআআআ

……….উজান আবার হিয়ার ঠোঁটে ঠোটঁ ডুবিয়ে দেয়………..

“”””স্বপ্ন ডানা মেলে””””
“”””আজ ওরে মনের পাখি””””
“”””চোখে আশা রঙে ভালোবাসার ছবি আকি””””
“””কালকে ছিলো জীবন বৃষ্টি ভেজা একদিন””””
“”””আজকে মনে শুধু স্বপ্নেরই রিমঝিম”””
“””মেঘ ভাঙ্গা রোদ এসে যেনো বলে ভালোবেসে”””
“”””হবে মনে মনে মিল হবে মনে মনে মিল””””
“”””এখানে আকাশ নীল এখানে আকাশ নীল””””

……উজানের ছুটি শেষ হয়।পরের দিন সবাই ফিরে আসে….দেখতে দেখতে এক মাস পার হয় আর হিয়ার রেজাল্ট বের…হিয়া এবার সেকেন্ড হয়েছে…

উজানের কেবিন…..

উজান:পারলেন না তো ফার্স্ট হতে….

হিয়া:কি করবো বলুন এই অভিনব টাকে না আমি কিছুতে কাটিয়ে উঠতে পারি না…এতো পারে যে কি বলবো আপনাকে…শুধু আমার পিছন লাগে…তবে না ছেলেটার মেধা আছে জানেন যা পড়া হয় সব কি সুন্দর টুক করে নোট করে নেয় সাথেসাথে….

উজান:হুম বুঝলাম…তবে আপনি সেকেন্ড হয়েছেন তাতেই আমি অনেক হ্যাপি…তবে আপনার জন্যা একটা ব্যাড নিউস আছে বলতে পারেন..

হিয়া:আবার কি খারাপ খবর…

উজান:আমি ফাইনাল ইয়ার এর ক্লাস নেই না আপনাকে কথা টা বলা হয়নি আগে তাই আজ বলে দিলাম..

হিয়া:আপনি এই ইয়ায় ক্লাস নিবেন না..

উজান:সেটাই তো দাড়ায়..

হিয়া:তাহলে আমি কলেজ এসে কি করবো।আমি আসবো না….

উজান:এটা কোনো কথা হলো নাকি আমি ক্লাস নিবো না দেখে আপনি আসবেন না…আপনি ক্লাস করবেন ক্লাস শেষে প্রতিদিন যেমন আমার কেবিনে এসে দেখা করেন ওভাবে দেখা করবেন….

হিয়া:তারপরো আপনাকে ছাড়া ক্লাস রুম টা ফাকাফাকা লাগবে….ভালো লাগে না….

উজান:দেখি এদিকে তাকান..খুব মন খারাপ হলো বুঝি…..তাকান…হিয়া আজ এতো একটা খুশির দিন আপনি সেকেন্ড হয়েছেন কোথায় ভাবলাম আমাকে একটু মিষ্টি টিস্টি খাওয়াবেন তা না….

হিয়া:তা আগে বলেননি কেনো বাসায় বাবা অনেক গুলো মিষ্টি এনেছে আমি নিয়ে আসতাম…

উজান:আমি তো অন্য মিস্টি খাবো আমার হিয়ার মিষ্টি…

হিয়া:একবার বলেন চকলেট একবার মিষ্টি খালি আপনার বাহানা চাই ব্যাছ

উজান:ঔ একি হলো না চকলেট ও তো মিস্টি হয়….

হিয়া:হুম আর কি মেলাবেন…..

……উজান হিয়ার ঠোঁটেঠোঁট ডুবিয়ে দেয়……

…….ফাইনাল ইয়ায় এর ক্লাস শুরু হয়।নতুন টিচার অদিত দাস….হিয়াকে অনেক সাপোর্ট করে ইনফেক্ট হিয়া কে না সবাই কে অনেক হেল্প করে…হিয়াকে একটু অন্য চোখে দেখে কারন ওনার ছোট বোনের নামো হিয়া…দেখতেও অনেকটা হিয়ার মতো…ড.অদিত আর হিয়ার মাঝে একটা আলাদা বন্ডিং তৈরি হয়। আর এটার সুযোগ কাজে লাগায় মৃনালিনী।হিয়া আর অদিত কে নিয়ে উজানের মনে সন্দেহ তোলে…..

………….হিয়ার এক সপ্তাহ থেকে শরীর টা ভিষন খারাপ লাগে…মাঝেমাঝে বমিও হয়….আজকেও হিয়ার গা গুলে উঠে…..

বাসবি:হিয়া….কি হয়েছে আজকেও বমি পাচ্ছে

হিয়া:নাহ শরীর টা কেমন জানি গুলোচ্ছে

বাসবি:এদিকে এসো তো বসো…কদিন থেকে দেখছি তোমার শরীর টা এমন করছে….

হিয়া:আর না ওটা তো আমার প্রায়ই হয় মাঝেমাঝে পেসার টা ওঠানামা করে….

বাসবি:আমার তো তা মনে হচ্ছে না….একটা কথা বলি হিয়া মা তুমি রাজাকে বলে একবার পরীক্ষা করে নিতে….

হিয়া:মনেমনে(উজান স্যার ওনাকে বলে কি হবে ইদানীং কেমন জানি একটা ব্যবহার করে আমার সাথে আজকাল তো ওনার সাথে কথা মেপে মেপে বলতে হয়।একটা ভয় আর বিরক্ত ভাব কাজ করে মনের মধ্যে…..)

বাসবি:হিয়া কিছু ভাবছো….

হিয়া:না না কিছু ভাবছি না…আর তুমি যা ভাবছো ওসব কিছু না…

বাসবি:আমি তোমাকে বললাম এমনি…এখন তোমাদের হাসবেন্ড ওয়াইফ এর ব্যাপার তোমরা ভালো বুঝবে…..আমি যাই গিয়ে তোমার জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসি…শরীর টা তো ভালো করতে হবে নাকি….

হিয়া:ঠিক আছে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here