#হৃদয়_জুড়ে_তার_ছায়া
#পর্বঃ১২
#আদওয়া_ইবশার
অকস্মাৎ এমন একটা শক নাহিদকে যেন বোকা বানিয়ে দিয়েছে। বড় বড় চোখে কিছুক্ষণ মেঝেতে পরে থাকা ফোনের দিকে তাকিয়ে থেকে এক সময় ফোনটা তুলে নেয়। কানের পাশে ঠেকিয়ে কতক্ষণ চুপ থেকে নিজেকে ধাতস্থ করে জিভের ডগায় ঠোঁট দুটো ভিজিয়ে অত্যন্ত নম্র স্বরে সালাম জানায় রওশন আরাকে।সালামের জবাব পেয়ে সাথে সাথে আবারও বলে ওঠে,
“আসলে আন্টি আমার পাশে এক কাজিনের বাচ্চা ছিল। তার সাথেই দুষ্টুমি করছিলাম। সেই হাত ছোড়াছুড়ি করে ফোনটা ফেলে দেয়।”
খুব সুন্দর গুছিয়ে একটা মিথ্যা বলে কথাটা ঘুরিয়ে নেয় নাহিদ। মিথ্যেটাকেই বিশ্বাস করে স্বস্থির নিঃশ্বাস ছাড়েন রওশন আরা। বলেন,
“আচ্ছা তাই বলো! আমি আরও ভেবেছিলাম তুমি আবার পরে টরে গিয়ে ব্যথা পেয়ে বসেছো।”
অল্প বিস্তর হাসে নাহিদ। বুঝতে পারে তার মিথ্যে বলার টেকনিকটা অনেক বড় বাচা বাচিয়ে দিয়েছে তাকে।মাঝে মাঝে নিজেকে বাচাতে গিয়ে এমন দুই-একটা মিথ্যে বললে নিশ্চয়ই খুব একটা পাপ হবেনা। কথাটা ভেবে মাথা চুলকে জবাব দেয়,
“না আন্টি আমি ঠিক আছি। আপনি ভালো আছেন তো?”
“আমি ভালো আছি বাবা। তোমার শরীরের কি অবস্থা? হাতটা কেমন এখন? উন্নতি হচ্ছে কিছু?”
“জ্বি আন্টি আগের থেকে অনেকটা ভালো। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে উঠব।”
টুকটাক কথাবার্তা শেষে শাহিনূরকে ডেকে মায়ের হাতে ফোনটা ধরিয়ে দেয় নাহিদ। দুজন যেন এক মায়ের পেটের বোন এমন ভাবেই কথায় মজে যায় শাহিনূর রওশন আরা। মিনিট শেষ হয়ে ঘন্টা পেরিয়ে যায়। তবুও তাদের কথা শেষ হয় না। দুই-একদিন পর পর এভাবেই দুই পরিবারের ফোনালাপের মাধ্যমে সময়ের সাথে সাথে বন্ধন আরও গাঢ় হয়। দেখতে দেখতে কেটে যায় আরো বেশ কয়েকটা দিন। পুরোপুরি সুস্থ্য না হলেও বর্তমানে হাঁটা-চলা করতে পারে নাহিদ। দুর্ঘটনার জন্য যথেষ্ট ছুটি দেওয়া হয়েছে তাকে অফিস থেকে। ইন্টার্ন অবস্থায় এতো ছুটি কাটানো কারো পক্ষেই সম্ভব না। একটু সুস্থ্যবোধ করতেই তোড়জোড় শুরু করে দেয় নাহিদ কর্মস্থলে ফিরে যাবার জন্য। কিন্তু শাহিনূর ছেলেকে পুরোপুরি সুস্থ্য না হওয়া পযর্ন্ত কোথাও যেতে দিবেনা। এই নিয়ে মা-ছেলের মাঝে প্রতিদিনই বাকযুদ্ধ চলছে। অবশেষে ছেলের জেদ আর যুক্তির কাছে হার মেনে শাহিনূর সম্মতি দেয় ছেলেকে যাবার জন্য। মা’কে মানাতে পেরে হাপ ছেড়ে বাঁচে নাহিদ। পরদিনই সবার থেকে বিদায় নিয়ে আবারও রওনা হয় ঢাকার উদ্দেশ্যে। ছেলেকে বারবার করে শাহিনূর – সাইদুর রহমান বুঝিয়ে দেন ঢাকায় গিয়েই যেন একবার রওশন আরার সাথে নিজে গিয়ে দেখা করে আসে। মানুষটা তাদের যে উপকার করেছে তার প্রতিদান কখনো দেওয়া সম্ভব না। কিন্তু একটা সু-সম্পর্ক তো টিকিয়ে রাখতে পারবে। একে অপরের সাথে সু-সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য ভাত-কাপড় আর দামি দামি গিফটের প্রয়োজন হয় না। মুখের একটা ভালো কথা, মাঝে মাঝে খোঁজখবর নেওয়ার মাঝেই অনেক সম্পর্ক টিকে থাকে আজীবন। একজন মানুষকে দুটো কথা বলে যতটা সন্তুষ্ট করা যায় ততটা সন্তুষ্ট কখনো এক বেলা পেট পুরে খাইয়েও করা যায় না। বাস্তবীক অর্থেই মানুষ জাত ভালোবাসার কাঙ্গাল। হাজার সৈন্য নিয়ে যুদ্ধ- বিদ্রোহ করেও যে জিনিস জয় করা যায়না সেই জিনিসটাও যত্ন নিয়ে ভালোবেসে জয় করে ফেলা যায় অনায়াসে।
মা-বাবার কথা অনুযায়ী ঢাকায় এসে নাহিদ পরদিনই পাপড়িদের বাড়িতে যায় দেখা করার জন্য। হাতে এক গাদা ফাস্টফুড, ফলমূল সমেত নাহিদকে নিজের বাড়িতে উপস্থিত হতে দেখে খুশির অন্ত থাকেনা রওশন আরার। ভেবে পায়না ছেলেটাকে কি রেখে কি দিয়ে সমাদর করবে। রওশন আরার ব্যকুলতা দেখে মুচকি হাসে নাহিদ। ঠোঁটের কোণে চমৎকার হাসিটা ধরে রেখেই বলে,
“এতো ব্যস্ত হবেন না আন্টি। আমি শুধু আপনাকে দেখার জন্য এসেছি। এখন কিছুই খাবনা। শুধু শুধু কষ্ট করবেন না আমার জন্য।”
“এসব বললে হবে না কি? তুমি এই প্রথম আমার বাসায় এসেছো। শূণ্য মুখে কিভাবে যেতে দেই? কোনো কথা শুনবনা তোমার। দুপুরে খেয়ে তারপর যেতে হবে কিন্তু। এক বেলা না হয় আন্টির হাতের রান্না খেয়ে দেখলে কেমন রাধতে পারি।”
প্রতিত্তরে আবারও এক টুকরো হাসি উপহার দেয় নাহিদ। মায়ের বয়সী মানুষটার আবদারে কেন জানি আর মুখের উপর না বলে দিতে পারলনা। ড্রয়িং রুমে বসেই বাড়িতে রওশন আরা ছাড়া আর কাওকে দেখতে না পেয়ে ইতিউতি করে জিজ্ঞেস করেই ফেলে,
“আপনি বাড়িতে একা আন্টি? আর কাওকে দেখছি না যে!”
হালকা নাস্তার আয়োজন করতে রান্না ঘরে যেতে যেতেই রওশন আরা জবাব দেয়,
“পাপড়ি ভার্সিটিতে। পালক নিজের ঘরেই ফোনে গেইম খেলে। ছোট মেয়েটাকে নিয়ে আর পারি না বাবা। সবসময় শুধু অকাজ করে বেড়াবে। আর তোমার আঙ্কেল দেশের বাইরে জানোই তো।”
নাহিদের জবাব দিয়ে রান্না ঘরে থেকেই ছোট মেয়ের উদ্দেশ্যে হাক ছাড়ে,
“এই পালক! ফোন রেখে তাড়াতাড়ি দেখে যা কে এসেছে।”
মায়ের এক ডাকে সাড়া দেবার পাত্রী পালক না। দুই-তিনবার ডাকার পরও যখন মেয়ের সাড়া পেলনা তখন রওশন আরা নাহিদের সামনে ইতস্ততঃ বোধ করলেন। এতোবার ডাকার পরও সাড়া দিলনা ছেলেটা নিশ্চয়ই ভাবছে পালক অবাধ্য মেয়ে। সাথে এটাও হয়তো ভেবে নিয়েছে রওশন আরা মেয়েদের আদবকায়দা শিখাতে ব্যর্থ। ঝটপট হাতে কয়েক পদের নাস্তা বানিয়ে সাথে নাহিদের আনা ফাস্টফুড আইটেম গুলো ট্রে’তে সাজিয়ে তার সামনে দিয়ে অপ্রস্তুত হেসে বলে,
“তুমি খাও বাবা। মেয়েটা হয়তো আমার ডাক শুনতে পায়নি। রুম থেকে ডেকে নিয়ে আসছি ওকে।”
অল্প হেসে মাথা নাড়িয়ে সায় জানায় নাহিদ। তৎক্ষণাৎ রওশন আরা ছুটে যায় মেয়ের রুমে। উপুড় হয়ে বিছানায় শুয়ে ফোনে গেইম খেলাই মগ্ন পালক। রুমে ডুকেই মেয়ের পিঠে ঠাস করে এক থাপ্পড় লাগিয়ে দেন রওশন আরা। আকস্মিক পিঠে থাপ্পড় পরায় লাফিয়ে উঠে পালক। অসহায় মুখ করে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে,
“এভাবে অযথা মারলে কেন আমাকে? এখন কি কিছু করেছি? আমি কি ব্যথা পাই না! সবসময় শুধু শুধু মারো আমাকে। এতো অবিচার কিভাবে করো তুমি আমার উপর!”
আগুন দৃষ্টিতে মেয়ের দিকে তাকায় রওশন আরা। কটমট করে বলে ওঠে,
“কখন থেকে ডাকছি তোকে? কানে কথা যায়না ? একজন মেহমান এসেছে তার সামনেও তোর জন্য আমার গলার স্বর উচু করতে হয়। নিজের মানুষের সামনে করিস করিসই। বাইরের মানুষের সামনেও কেন তোর ত্যাড়ামি করতে হয়? সহবত কি একটুও শিখাইনি তোকে?”
“কে এসেছে? আর কখন ডেকেছো আমি শুনিনি তো।”
“শুনবেন কিভাবে? ফোন হতে থাকলে তো দিন দুনিয়ার সব কিছু ভুলে এটাতেই ডুবে থাকেন। বাড়িতে কেউ মরে গেলেও মনে হয় জানতে পারবিনা। আর একটা অতিরিক্ত কথাও বলাবিনা আমাকে দিয়ে। চুপচাপ ড্রয়িংরুমে যা। নইলে আবারও পিঠে লাগাব দুই-তিন ঘা।”
দাঁতে দাঁত চেপে জবাব দিয়ে বেরিয়ে যায় রওশন আরা। আহাম্মকের মতো কিছুক্ষণ বসে থেকে পালক নিজেও ছুটে মায়ের পিছন পিছন। ড্রয়িং রুমে যেতেই নাহিদকে সোফায় বসে থাকতে দেখে উৎফুল্ল চিত্তে এগিয়ে যায় সেদিকে। এক গাল হেসে বলে,
“আরে নতুন কুটুম যে! তা কেমন আছেন আপনি?”
পালকের দিকে তাকিয়ে নাহিদ নিজেও হেসে জবাব দেয়,
“ভালো আছি দেখেই তো নতুন কুটুম হয়ে চলে এলাম তোমাদের এখানে। তা তুমি কেমন আছো তিড়িং বিড়িং ফড়িং?”
নিজের সম্পর্কে এমন একটা বাক্য শুনে ভ্রু কুঁচকে নেয় পালক। কন্ঠে বিরক্তি প্রকাশ করে বলে,
“ইট’স নট ফেয়ার নতুন কুটুম। আপুকে বেয়াক্কল ডাকেন সেটা না হয় মেনে নেওয়া যায়। কারণ আপুটা একটু বোকাসোকা টাইপ। কিন্তু আমাকে তিড়িং বিড়িং ফড়িং ডাকলেন কেন? কি তিড়িং বিড়িং করেছি আমি? আপনি জানেন আমি কতটা ভদ্র?”
শ্লেষাত্মক কন্ঠে জবাব দেয় নাহিদ,
“আপনি যে কত ভদ্র একটা মেয়ে তার প্রমাণ তো চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি। যেভাবে আসলে আমার সামনে মনে তো হচ্ছিলো কোনো মানুষ না ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে আমার দিকে। তাছাড়া আন্টির মুখেও কিছুটা শুনেছি তোমার গুণের কথা। সব মিলিয়েই মনে হলো তিড়িং বিড়িং ফড়িং নামটা তোমার জন্য পারফেক্ট। ঠিক যেমন পারফেক্ট তোমার আপুর জন্য বেয়াক্কল নামটা।”
এতোক্ষনের ফুরফুরে উৎফুল্ল মেজাজটা মুহূর্তেই চটে যায় পালকের। কোমরে হাত রেখে চোখ-মুখ শক্ত করে বলে ওঠে,
“আপনি তো দেখছি খুবই অভদ্র কুটুম। আমার বাড়িতে বেড়াতে এসে আমার নামেই এতো গুলো বদনাম করছেন! তাও আবার আমার সামনেই ! সাহস আছে বলতে হয় আপনার।”
” দ্যা গ্রেট পালক রানীর নামে বদনাম করে যে লোক তার তো আসলেই সাহস আছে বলতে হয়। তা কে সেই সাহসী মানুষ শুনি? কাকে এসব বলছিস?”
অর্ধেক দিনের দৌড়ঝাঁপের পর ক্লান্তশ্রান্ত দেহটা নিয়ে বাড়িতে আসতেই ছোট বোনের মুখের কথা শুনে জবাব দেয় পাপড়ি। দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে নিচু হয়ে জুতা খোলায় ব্যস্ত বলে দেখতে পারেনি ড্রয়িং রুমেই সয়ং সেই সাহসী লোকটা বসে আছে। ঘাড় ঘুরিয়ে পাপড়িকে দেখে নাহিদ ঠোঁটের কোণে দুষ্টু হাসি ফুটিয়ে বলে,
“আরেহ, মিস বেয়াক্কল যে! কেমন আছেন? আন্টির কাছে শুনলাম আপনি না কি ভার্সিটিতে ছিলেন! বেয়াক্কলরাও বুঝি ভার্সিটিতে পড়তে পারে ! তা অ আ পারেন তো কিছু?”
মাথা তুলে নাহিদকে চোখের সামনে দেখে তব্দা খেয়ে যায় পাপড়ি। চোখ বড় বড় করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বিস্মিত কন্ঠে জানতে চায়,
“আপনি এখানে!”
“কেন? আসতে পারিনা বুঝি?”
প্রশ্নাত্মক দৃষ্টিতে তাকিয়ে জানতে চায় নাহিদ। এর মাঝেই রান্নাঘর থেকে ড্রয়িং রুমে ছুটে আসে রওশন আরা। নাহিদের কিছু লাগবে কি না দেখার জন্য। এসে বড় মেয়েকেও দেখতে পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়েন। ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলে ওঠে,
“এসে গেছিস! আমি আরও ভেবেছিলাম বোধহয় দেরি হবে আসতে। যাক ! ভালোই হয়েছে। ছেলেটা এই প্রথম এলো বাড়িতে। একটু কথা বলার মতোও কেউ নেই। ফ্রেশ হয়ে এসে দুবোন ওর সাথে বসে গল্প কর। আমি রান্নাটা শেষ করে নেই।”
জোরপূর্বক হেসে জবাব দেয় পাপড়ি,
“আমি আবার কি গল্প করব?তার থেকে বরং তুমি বসে গল্প করো। ঐ বাড়ির সবার খোঁজখবর নাও। রান্নাটা আমিই করি।”
” সবে বাইরে থেকে এসেছিস। চোখ-মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে ক্লান্ত তুই। রান্না আমিই করছি। তুই নাহিদের পাশে বসে রেস্ট নে আর গল্প কর।”
গল্প করবে পাপড়ি ! তাও আবার এমন একটা ছেলের সাথে। যেই ছেলের এক একটা কথায় মনে হয় তার শরীরে ফোস্কা পরে। এমন ছেলের সাথে আদও কোনো গল্প থাকতে পারে পাপড়ির! প্রথম দেখায় যে মানুষটা খোঁচানো ভঙ্গিতে হালচাল জিজ্ঞেস করতে পারে সেই মানুষের সাথে দু-দন্ড বসে কথা বলেই যে তার কেমন পাগল দশা হবে সেটা সে নিজেও জানেনা। তবুও মুখ বুঝে পালন করে নেই মায়ের আদেশ। রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে আধার মুখে বসে থাকে নাহিদের বিপরীতে। দুই বোনেই চুপচাপ। সবসময় মুখে কথার খই ফুটতে থাকা পালক’ও নাহিদের থেকে পাওয়া অদ্ভূত নাম শুনে অবুঝ মনে কিন্চিৎ অভিমান নিয়ে বোনের মতো চুপ করেই বসে আছে। দু-বোনকে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে নাহিদ ঠেস দিয়ে বলে ওঠে,
“বাড়িতে মেহমান আসলে যে কারো গালে পানি আসে আগে জানতাম না তো। এভাবেই কি গাজীপুরে মেহমানদের সমাদর করা হয়? আমাদের রাজশাহীতে তো এমন হয় না। কত সুন্দর করে কন্ঠে মধু মিশিয়ে কথা বলে আদর-যত্নে ভালো-মন্দ খাইয়ে মেহমানদের সমাদর করা হয়! আর এখানে মেহমান দেখলে মানুষের গালে পানি আসে। এ কেমন আজব এলাকায় আত্মীয় করলাম রে ভাই! নূন্যতম মনুষ্যত্ববোধ টুকুও নেই।”
ফট করে বসা থেকে ওঠে দাঁড়িয়ে পরে পাপড়ি। কটমট দৃষ্টিতে তাকিয়ে দাঁতে দাঁতে চেপে তিরিক্ষি মেজাজে বলে ওঠে,
” নূন্যতম মনুষ্যত্ববোধ না থাকলে ঐদিন নিশ্চয়ই হাসপাতালে ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা হতনা আপনার। উল্টো কথা না বলে এটা বলুন যে আপনার মাঝেই কৃতজ্ঞতা বোধ নেই। রাজশাহীর মানুষ যে এতো অকৃতজ্ঞ হয় সেটা আমারও জানা ছিল না।”
“কৃতজ্ঞতা বোধ না থাকলে নিশ্চই বাড়ি বয়ে এভাবে অপমানিত হতে আসতাম না!”
কপাল কুঁচকে জবাব দেয় নাহিদ। প্রতিত্তরে তাচ্ছিল্যের সাথে হাসে পাপড়ি। বলে,
“বাড়ি বয়ে এসে কে কাকে অপমান করছে সেটা তো আপনার কথাতেই স্পষ্ট। দুনিয়ার সবাই আপনার কাছে বেয়াদব অভদ্র বেয়াক্কল আরও কত কি। শুধু একমাত্র আপনিই ভালো তাই না? আচ্ছা !আপনাকে কি ভুল করেও কেউ কখনো বলেনি আপনি আসলে ঠিক কতটা চরম লেভেলের অভদ্র?”
কিছু একটা মনে করার ভঙ্গিতে কিছুক্ষণ চুপ থেকে ঠোঁট চেপে হেসে নাহিদ উত্তর দেয়,
“বলেছে তো। কয়েক মাস আগেই ভুল করে একজন ফোনে আমাকে বেয়াদব, অভদ্র এসবের সাথে বাটপার উপাধিও দিয়েছিল। যার খেসারত বর্তমানে হারে হারে টের পাচ্ছে সে। ভবিষ্যতে আরও পাবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা।”
চলবে….