#প্রনয়ের_দহন
#Nusrat_Jahan_Bristy
#পর্ব_৫৭(পূর্ণতা)
অনুষ্ঠান শেষ হলো রাত সাড়ে দশটার দিকে। বাসায় এসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে এগারোটা বেজে গেছে। বাড়ির সব মহিলারা চলে এসেছে শুধু রয়ে গেছে পুরুষ সদস্যরা তারা পরে আসবে সব কিছু সামলে। ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাড়িতে এসেই যে যার ঘরে চলে গেছে। তবে তীর ঘরে যাওয়ার আগে রেহেলা খালাকে বলে গেছে তাকে কিছু খেতে দেওয়ার জন্য। ভীষণ খুদা পেয়েছে তার অনুষ্টানে ঠিক মতো খেতে পারে নাই তাই এখন না খেলে নিশ্চিত মাটিতে লুটিয়ে পড়বে। তবে তীর এটা ভেবে পাচ্ছে না তার অল্পতেই এই অবস্থা ইশান এতো স্ট্রং কিভাবে আছে তাকে কিছু খেতেও দেখি নি। তীরের খুব অস্বস্তি লাগছে হাসফাস করছে গরমে তাই ইশানের কথা মাথা থেকে নামিয়ে নিজেকে এখন রিলেক্স করতে হবে তার জন্য এক মাত্র উপায় শাওয়ার নেওয়া। তীর কোন দিক বেদিক না ভেবেই ঢুকে পড়লো ওয়াশরুমে শাওয়ার নেওয়ার জন্য। শরীরের ঠান্ডা পানি ছুঁতেই চোখ বন্ধ করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে মনে হচ্ছে যেন স্বর্গে আছে।
আধ ঘন্টা পর তীর শাওয়ার নিয়ে বের হয়। ভেজা চুল টাওয়ালে পেছাতে পেছাতে সামনের দিকে তাকাতেই থমকে যায় ইশানকে দেখে। ইশান কখন আসলো বলেছে তো আসতে অনেক লেইট হবে তাহলে।
ইশান সবেই ঘরে এসেছে এসেই হাতে রাখা ব্লেজারটা সোফায় রেখে শার্টের দুটো বোতাম খুলে তৃতীয় বোতাম খুলতে উদ্যত হতে নিলে দরজার খুলার শব্দ শুনে সামনের দিকে তাকাতেই নজর আটকে যায়। থেমে যায় শার্টের বোতাম খুলতে থাকা হাতটা। ঘরের মাঝে বিরাজ করছে পিনপিন নিরবতা তবে শুনা যাচ্ছে শুধু দুটো মানব মানবীর ভারী শ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ। ইশানের না চাওয়া সত্বেও একটা ঘোরের মাঝে চলে যায় সদ্য স্নান করা তীরকে দেখে। ঘরের বাতি নিভানো শুধু বাহারি রঙের মরিচ বাতি গুলা জ্বলছে। তীর সাদার মাঝে একটা সিল্কের শাড়ী পড়েছে। শাড়ির পুরো আচঁল কাঁধে রাখাতে তীরের ফর্সা পেট দৃশ্যমান রুপে বেরিয়ে আছে। ইশান শুকনো ঢোক গিলে তীরের এমন আবেদনময়ী রুপে দেখে।
ইশান ধীর পায়ে এগিয়ে যায় তীরের দিকে। ইশানকে এগিয়ে আসতে দেখে ভড়কে যায় তীর। নিজের জায়গা পরির্তন করার আগেই ইশান দ্রুত পায়ে তীরের সামনে এসে হাজির হয়। তীর না চাইতেও পিছিয়ে যায় ইশানের এগোনো দেখে এক পর্যায়ে পিছাতে পিছাতে পিট ঠেকে যায় দেয়ালে। তীর ভয় ভয় চোখে ইশানের দিকে তাকায় ইশান এবার কি করবে তার সাথে ভাবতেই তল পেট মোচরে উঠে। তীরের সামনে দাঁড়ানো মানুষটাকে বড্ড অন্য রকম লাগছে। মনে হচ্ছে স্বজ্ঞানে নেই। উস্কুখুস্কু চুল গুলা সারা কপাল জুঁড়ে পড়ে আছে।
মাঝে মাঝে কয়েকটা চুল বাতাসে উড়ছে। ইশানের শীতল চাওনি দেখে তীরের বুকটা ধ্বক করে উঠে। তীরের ভাবনার মাঝেই অনুভব করে ইশানের গরম হাতের ছোঁয়া নিজের কোমড়ে। অনেকটা সময় শাওয়ার নেওয়াতে তীরের সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে আছে। ইশানের ছোঁয়া পাওয়ার সাথে সাথে তীর ইশানের দিকে তাকাতেই তীরকে হেচকা টেনে কাছে টেনে নেয়। এভাবে টান দেওয়াতে চুলে বেঁধে রাখা টাওয়ালটা নিচে পড়ে যায়।
তীরের আজ কি হলো কে জেনে নিজেও চেয়ে রইলো বেহায়ার মতো ইশানের নেশাতুর চোখে। ডুবে যেত চাইছে এই গভীর নেশাতুর চোখে। ইশান হাত বাড়িয়ে তীরের মুখে পড়ে থাকা ভেজা চুল গুলা আলতো হাতে সরিয়ে দেয়। ইশানের ছোঁয়া পেয়ে তীর আবেশে চোখ বন্ধ করে নেয়। পরপর অনুভব করে এক উষ্ণ নরম ছোঁয়া কপালের মধ্য স্থানে। থরথর করে কাঁপতে থাকা হাত দুটো দ্বারা চেপে ধরে শাড়ি। তীরের বন্ধ করে থাকা চোখ জোড়ায় ইশান নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। ধীরে ধীরে তীরের সারা মুখে ইশান চুমুতে ভরিয়ে দেয়। তীরের শ্বাস প্রশ্বাসের গতি বেড়ে গেছে। ইশানের প্রত্যেকটা ছোঁয়া যেন সারা গায়ে কাঁটা দিয়ে যাচ্ছে। গলা দিয়ে স্বরেই বের হচ্ছে না। ইশানের চোখ যায় তীরের কাঁপতে থাকা ঠোঁটের দিকে। নিজের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে আলতো হাতে স্পর্শ করে করে তীরের ঘাড়ের পেছনে হাত রেখে তীরের কাঁপতে থাকা ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যেতেই দরজায় টোকা পড়ে। রেহেলা খালা এসেছেন। দরজার বাইরে থেকে বলছেন।
–ছোট ভাই জান তীর আপার খাওন আনছি।
ইশান নিজেকে সামলে নিয়ে বলে।
–তুমি দাঁড়া আসছি আমি।
ইশান তীরের দিকে তাকায় তীর এখনও চোখ জোড়া বন্ধ করে রেখেছে। আর জোরে জোরে নিঃশ্বাস ছাড়ছে। ইশান মুচকি হেসে দরজা খুলে খাবারের ট্রে নিয়ে ঘরে ঢুকে টেবিলের উপরে রেখে তীরকে বলে।
–খেয়ে নে আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।
ইশান টি শার্ট আর ট্রাউজার নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে। ইশান চলে যেতেই তীর জোরে নিঃশ্বাস ছাড়ে। মনে হচ্ছিলো এতোক্ষন ধম আটকে ম’রেই যাবে বাপরে ইশানের কাছে আর যাওয়া যাবে না। তীরের পেটের খুদা মিলিয়ে গেছে আর খেতে ইচ্ছে করছে না। ফ্লোরে পড়ে থাকা টাওয়ালটা তুলে চুল গুলো ভালো করে মুজে বারান্দায় চলে যায়।
ইশান ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে তীর ঘরের ভেতরে নেই। ঘরের লাইট ওন করে খাবার গুলার দিকে নজর দিলো যেভাবে রেহালা খালা দিয়ে গেছে সেভাবেই রয়ে গেছে তীর কিচ্ছু খায় নি। মেয়েটা গেলো কোথায় এতো রাতে? ইশান দরজার দিকে তাকালো দরজা ভেতর থেকেই লক করাই তাহলে ঘরেই আছে তীর। ইশান বেলকনিতে গিয়ে দেখে তীর দোলনাতে বসে ঝিমুচ্ছে। মেজাজটা গরম হয়ে যায় ইশানের ওখানে কিচ্ছু খায় নি আর এখন না খেয়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার ধান্দা তা কিছুতেই ইশান হতে দিবে। ইশান তীরের কাছে এসে তীরকে কোলে তুলে নেয়। হঠাৎ করে এমন হওয়াতে তীর ভয় পেয়ে চিৎকার করে ইশান তা দেখে দাঁতে দাঁত চেপে বলে।
–একদম চুপ এভাবে রাত বিরাতে চিৎকার করচ্ছিস কেন? মানুষ জন শুনলে কি ভাববে?
–আমার কি দোষ হঠাৎ করে এমন হওয়াতে ভ’য় পেয়ে গিয়েছিলাম।
–ওরে আমার ভয়ের রাণী রে! না খেয়ে কিসের ঘুম?
–খেতে ইচ্ছে করছে না।
–ইচ্ছে না করলেও খেতে হবে।
ইশান তীরকে নিয়ে ঘরে এসে সোফায় বসিয়ে দিয়ে খাবার পরিবেশন করে বলে।
–নে খা।
তীর অসহায় মুখ নিয়ে বলে।
–বিশ্বাস করুন আমার একদম খেতে ইচ্ছে করছে না।
–ঠিক আছে তোর নিজের হাতে খেতে হবে না আমিই খাইয়ে দিছে।
ইশান নিজের হাতে তীরকে খাইয়ে দেয়। তীরের খাওয়া শেষ হলে ইশান বলে।
–এতোগুলা ভাত এখন কে খেয়েছে আমি নাকি তুই।
তীর কোনো কথা বলছে না এখন কথা বললেই উল্টে আরো বকা খাবে ইশানের কাছ থেকে। ইশান পুনরায় বলে।
–আমি এগুলো নিচে রেখে আসছিস।
ইশান যেতেই তীর শব্দ করে ঢেকুর তুলে এতক্ষণ ইশানের সামনে এই ঢেকুরটা আটকে রেখেছে লজ্জায়। এবার একটু শান্তি লাগছে শরীরেরও বল পাচ্ছে খেয়ে ভালোই করেছে। ইশানের আসতে একটু লেইট হচ্ছে দেখে তীর ঘরের বাতি নিভিয়ে মরচি বাতির লাইট গুলা জ্বালিয়ে দিয়ে বেলকনিতে চলে যায়।
আজকে আকাশে মস্ত বড় চাঁদ উঠেছে। মনে হচ্ছে হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে দেখে যাবে কিন্তু তা তো আর নয় চাঁদ যে বহু দুরে। দুরের জিনিস দুর থেকেই সুন্দর লাগে দেখতে লাগে কাছে আসলেই হয়তো তা বিলিন হয়ে যাবে।
–একা একা কি করচ্ছিস এখানে?
কারোর কন্ঠস্বর শুনে তীর পেছনে তাকিয়ে দেখে ইশান দরজার সাথে হেলান দিয়ে হাসি হাসি মুখ করে তাকিয়ে আছে। তীর এক পলক ইশানের দিকে তাকিয়ে থেকে আবারো চাঁদের দিকে নজর দিয়ে বলে।
–আজকের চাঁদটা অনেক সুন্দর তাই না।
ইশান মুচকি হেসে তীরের পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলে।
–হুম আকাশের চাঁদটা অনেক সুন্দর কিন্তু আমার পাশে দাঁড়ানো চাঁদটা থেকে ওই দুর আকাশের চাঁদটা এতোটাও সুন্দর না।
তীর নিঃশব্দে হেসে নিচের দিকে তাকিয়ে বলে।
–আমি এতোটাও সুন্দর না আপনি একটু বেশি বেশি বলছেন।
ইশান কিছুক্ষণ তীরের দিকে তাকিয়ে তীরের বাহু ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলে।
–জানি না কোন মেয়েটা কেমন সুন্দরী কিন্তু তুই আমার চোখে পৃথিবীর সব থেকে সুন্দরী নারী বুঝলি।
তীর এবার লজ্জা পেলো প্রিয় মানুষের কাছ থেকে প্রশংসা শুনতে ভালোই লাগে। ইশান শুকনো ঢোক গিলল নিজেকে আজকে বড্ড দিশেহারা লাগছে গতকালকে নিজেকে সংযত করতে পারলেও আজকে পারবে না মনে হচ্ছে। ইশান ধীরে ধীরে তীরের কপালে নিজের কপাল ঠেকায়। ইশানের তপ্ত নিঃশ্বাস আছড়ে পড়ছে তীরের সারা মুখে। তীর চোখ বন্ধ করে রেখেছে নিজের।
–তীর!
ইশানের এমন গভীর স্বর শুনে ধ্বক করে উঠে তীরের বুকটা। অদ্ভুত শোনাছে ইশানের কন্ঠ মনে হচ্ছে এক রাশ মাদকতা মিশিয়ে তাকে ডাকছে। তীর মিনমিন করে বলে।
–হুম।
–আমি….. আমি আসলে…
তীরও আনমনে বলে উঠে।
–আপনি?
–তুই যদি সম্মতি দিস তাহলে…. আমি… আমি..
তীরের বুঝতে বাকি রইলো না ইশান কি বুঝাতে চাইছে কিন্তু তীর মুখে কিভাবে বলবে ইশানকে তার যে লজ্জা লাগছে। ইশানের ব্যাকুল স্বরে আবারো শুনা গেলো।
–মুখে বুঝাতে হবে না শুধু ছোট্ট করে ইশারা করে বুঝিয়ে দেয়।
তীর বুক ভরে শ্বাস নিলো। নিজেকে শান্ত করে এবার অশান্ত ইশানকে শান্ত করার জন্য তীরের গালের উপরে ইশানের রাখা হাতে নিজের হাত রাখলো। তীরের সম্মতি বুঝতে পেরে ঝড়ের বেগে তীরকে কোলে তুলে নিয়ে অগ্রসর হয় ঘরের ভেতরে। তীরকে অতি সাবধানে বিছানায় শুয়ে দিয়ে নিজেও আধশোয়া হয়ে নিজের ঠোঁট দ্বারা আকঁড়ে ধরে তীরের ঠোঁট। পাগল হয়ে গেছে যেন ইশান। ধীরে ধীরে ইশানের ঠোঁট নেমে এলো তীরের গলায়। তীরের সর্বাঙ্গ জুড়ে লাজ। কি করবে না করবে কিছু বুঝতে পারছে না। তীরের হাত অজান্তেই ইশানের মাথার পেছনে চলে গেছে। আস্তে আস্তে দুজনের মাঝ থেকে সরে গেল সকল আবরণ। পারি দিলো এক নতুন ভালোবাসার জগতে। এত বছরের ভালোবাসাযাবে পূর্নতা পেলো।
_______
কেটে গেছে তিন তিনটে দিন। এর মাঝে লিনা জানতে পারলো ইশানের বিয়ের কথা। প্রথমে রাগ হলেও পরে যখন মস্তিষ্ক ঠান্ডা করে ব্যাপারটা ভাবলো তখন মনে হলো শুধু শুধু মোহ’র পেছনে দৌঁড়ে লাভ নেই ইশান তো তাকে ভালোই বাসে না আর বাসবেও না কোনো দিন। হয়তো উপরওয়ালা তার জন্য আরো ভালো কিছু ভেবে রেখেছেন। তাই লিনা এখন সবটা উপরওয়ালার হাতেই ছেড়ে দিছে।
রাত সাড়ে দশটা তীর পড়ার টেবিলে বসে চুপচাপ পড়ছে। ইশান অফিস থেকে এসেছে দেখেএও কোনো কথা বলছে। ইশানও তেমন পাত্তা না দিয়ে নিজের মতো ফ্রেশ হয়ে ডিনার করে ঘরে এসে দরজা লক করে তীরের সামনে দাঁড়িয়ে বলে।
–কি করা হচ্ছে?
তীর ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে।
–দেখতে পাচ্ছেন না কি করছি? কানা নাকি!
ইশান মুচকি হাসে তীরের কথা শুনে। মূলত তীরের রাগটা ইশানের উপরে আজকে সকাল থেকে। ইশান আজকে সকাল বেলা বলে দিয়েছে তীরকে এডমিশন নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে। আর ঢাকা ভার্সিটিতে চান্স যে করেই হোক পেতেই হবে। এমনিতে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে এই বিয়ের চক্করে তাই তাড়াতাড়ি করে সব পড়া শেষ করতে হবে। ইশান এমন ভাবে কথাটা বলেছে তীরকে মনে হচ্ছে যেন ঢাকা ভার্সিটিতে চান্স পাওয়া হাতের মোয়া চাইলাম আর চান্স পেয়ে গেলাম। তীর কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় টিশ্ববিদ্যালয় পড়তে চায় না। ও একটা সরকারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আর্নাস কমপ্লিট করতে চায়। কিন্তু ইশান আর হতে দিলো কই তাকে জোর করে পড়াতে বসিয়েছে।
কিন্তু এবার তো ইশানকে তার রাগ কুমারীর রাগ ভাঙাতে হবে। সারা দিনে দু তিন ফোন করেছিলো ইশান তীরকে কিন্তু বার বার একই কথা বলে ফোন কেটে দিছে যে “আমার এখন পড়া আছে আপনার সাথে অযথা কথা বলে সময় নষ্ট করার মতো কোনো মুড নেই আমার”। ইশান নিঃশব্দে হেসে তীরের সামনে থাকা বইটা বন্ধ করে দেয়। তীর তা দেখে রাগী গলায় বলে।
–এটা কি করলেন আপনি? দেখতে পাচ্ছেন আমি পড়তে বসেছি আর আপনি আমার বইটা বন্ধ করে দিলেন কেন?
–আর পড়তে হবে না জান সারা দিন বহুত পড়েছিস। এখন ঘুমাবি চল।
তীর বই মেলাতে মেলাতে বলে।
–আপনার কথায় নাকি, আমি সারা দিন সারা রাত পড়বো। আপনার ইচ্ছে হলে আপনি ঘুমান গিয়ে।
বলেই বইয়ের দিকে নজর দিয়ে নাক ফুলিয়ে বিড়বিড়িয়ে কিছু একটা বলে। ইশানও কম কিসে তীরের পাশে এসে চুপটি করে দাঁড়ায়। কয়েক মুহূর্ত পেরিয়ে যাবার পর তীর ইশানের দিকে তাকিয়ে বলে।
–কি হয়েছে এভাবে খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে আছেন কেন?
তীর কথাটা বলার সাথে সাথে ইশান কোমড় বাঁকিয়ে তীরকে পাজাকোলে তুলে নেয়। ব্যাপারটা এতো জলদি ঘটেছে তীর বুঝতে পারলো না তার সাথে কি হয়েছে কিন্তু যখন বুঝতে পারলো তখন ইশানের কোল থেকে নামার জন্য ছটফট করতে লাগলো। ইশান তীরের ছটফটানি দেখে বলে।
–ছটফটানি বন্ধ কর আর অনেক পড়াশোনা করেছিস জান। এবার চল একটু স্বামী সেবা কর।
–এই ছাড়ুন আমাকে না হলে কিন্তু আমি চিৎকার করবো।
–কর বাড়ির সবাই ভাববে ইশান হয়তো তার পিচ্চি, রাগী বউকে একটু বেশি আদর করছে আজকে।
তীর নাক ফুলিয়ে বলে।
–অসভ্য।
–এখনও সন্দেহ আছে নাকি।
তীর দাঁতে দাঁত চেপে বলে।
–ছাড়ুন আমাকে।
–নো ছাড়াছাড়ি এখন শুধু রোমান্স হবে।
তীরকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই কোলে রাখা অবস্থায় তীরের মুখ বন্ধ করে দিলো ইশান। কিছুক্ষণ যাওয়ার পর ইশান তীরকে বিছানায় শুয়ে দিতেই তীর বলে উঠে।
–আপনি জানেন আপনি যে একটা সুবিধাবাদী লোক।
ইশান বাকা হেসে ঘরের লাইট অফ করে তীরের কাছে এসে তীরের গলায় মুখ ডুবিয়ে বলে।
–সত্যিই কি আমি সুবিধাবাদী লোক জান! কিন্তু যদি সুবিধাবাদী লোক হয়েও থাকি সেটা শুধু তোর কাছে আর কারো কাছে না।
বলেই তীরের গলায় কামড় বসিয়ে দেয়। তীর ব্যথায় আর্তনাত করে উঠলে ইশান মুচকি হেসে কামড় দেওয়া জায়গাটাতে গভীর ভাবে চু’মু খায়। ইশান আবারো তীরকে সাথে নিয়ে ডুব দেয় ভালোবাসার এক আতল সাগরে। যেখানে শুধু রয়েছে পবিত্রতা আর গভীর ভালোবাসা।
#চলবে________