#ফিরে_আসা
৪৫
লেখা : অতন্দ্রিলা আইচ
এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ঘড়ির দিকে তাকালো আরশাদ। কয়েক মিনিট পরেই ঘড়ির কাটা গিয়ে পড়বে আটটার ঘরে। বেশ দেরি করে ফেলেছে সে। অরা নির্ঘাত তৈরি হয়ে অপেক্ষা করছে তার জন্যে। দোষটা আরশাদের নয়। ঢাকা শহরের বিখ্যাত ট্রাফিকের বদৌলতেই তো সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছানো মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাড়ির সামনে গাড়িটা পার্ক করলো আরশাদ।আর গ্যারেজে রেখে এলো না। একটু পরেই তো অরাকে নিয়ে আবার বের হবে সে। আজ সে অরাকে নিয়ে যাবে তিনশ ফিটে অবস্থিত বাগানঘেরা একটা রিসোর্টে। আরশাদ শুনেছে বাগানজুড়ে না-কি বেলি ফুল আর জুঁই ফুলের গাছ। এই দুই ফুলের গন্ধ ওখানকার বাতাসে ভেসে বেড়ায়। তাছাড়া ওই রিসোর্টর ঠিক সামনেই রয়েছে প্রকান্ড এক পুকুর। অরার সঙ্গে পুকুরের জলে পা ডুবিয়ে চাঁদের প্রতিফলন দেখা যাবে।
আবারও আগের মতো হয়ে যাচ্ছে আরশাদ। যে আরশাদ প্রকৃতির মাঝে নিজেকে বিলীন করে দিতে পারতো। প্রকৃতির ছোট ছোট বিষয়গুলো যাকে বিস্মিত করে তুলতো। সবটাই হয়েছে অরার কারণে। মেয়েটার কারণেই তো নতুন করে নিজেকে খুঁজে পেতে শিখেছে আরশাদ।
গাড়ি থেকে নেমে দরজার কাছে গিয়ে কয়েকবার কলিংবেল চাপলো আরশাদ। অথচ ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ নেই। অন্যসময় হলে তো সেই কখন ছুটে এসে দরজা খুলে দিতো অরা। আজ তার কী হলো? আরও কয়েকবার কলিংবেল চাপলো আরশাদ। ফলাফল শূন্য। তেমন একটা বিচলিত বলে মনে হলো না আরশাদকে। হয়তো অরা তৈরি হতে ব্যস্ত তাই দরজা খুলতে দেরি হচ্ছে। অপেক্ষা না করে আরশাদ নিজেই লকের পাসওয়ার্ড চেপে দরজা খুলে নিলো।
বসার ঘরের টিভি চলছে। সোফার ওপরের কুশনগুলো এলোমেলো হয়ে আছে। বোঝা যাচ্ছে এই এখানে বসে ছিল, কিছুক্ষণ আগে উঠে গেছে। আরশাদ সিড়ি বেয়ে উঠে গেল দোতলায়। অরার ঘরের দরজা বন্ধ। একজন ভদ্রলোক কখনো একটা মেয়ের ঘরে নক না করে ঢোকে না। যতই সেই মেয়েটা তার স্ত্রী হোক না কেন। আরশাদ কয়েকবার দরজায় নক করলো। এবারও কোনো আওয়াজ আসছে না ভেতর থেকে।
চিন্তার ভাঁজ পড়লো আর আরশাদের কপালে। অরা তো কখনো এমন করে না। আরশাদ বাড়ি ফিরে এলে সে এক মুহুর্ত নিজের ঘরে থাকে না। অরা ঘুমিয়ে পড়লো না তো? আচ্ছা মেয়েটার কি শরীর খারাপ করেছে? কাল সারারাত না ঘুমিয়ে জার্নি করেছে। শরীর খারাপ তো করতেও পারে।
আরশাদ উঁচু গলায় কয়েকবার ডাকলো, “অরা! অরা!”
নাহ্! কোনো জবাব নেই। এভাবে আর কতক্ষণ অপেক্ষা করা যায়? এক পর্যায়ে দোনমনো নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলো আরশাদ। অরা নেই। বাথরুমে লক্ষ্য করলো – সেখানেও নেই। অদ্ভুত ব্যাপার! মেয়েটা গেল কোথায়? পুরো বাড়ি খুঁজে দেখলো আরশাদ। ছাদটাও বাদ রাখলো। অরা কোথাও নেই।
বাড়ির সিকিউরিটি গার্ডদের ডেকে পাঠালো আরশাদ।
চিন্তিত গলায় বলল, “তোমাদের ম্যাডাম কোথায়?”
গার্ডদের মধ্যে একজন পরিষ্কার গলায় বলল, “ম্যাডাম তো বাইরে গেছে স্যার।”
আরশাদের কণ্ঠস্বরে চিন্তারা গভীরতর হলো। সে বলল, “কখন?”
“এই তো, বিকেলের দিকে।”
আরশাদ ভ্রু কুঁচকে বলল, “গাড়ি নিয়ে যায়নি?”
“না স্যার। ম্যাডাম বললেন আধঘন্টার মধ্যে ফিরে আসবেন। তাই আর গাড়ি নেননি।”
“ঠিক আছে তোমরা যাও।”
আরশাদের উদ্বেগ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। বিকেলে আধঘন্টার জন্যে বাইরে বেরিয়ে কেউ যদি রাত আটটায়ও না ফেরে তখন সেটা চিন্তার বিষয়। অরা কোথায় গেছে কে জানে? অরার একটা বদভ্যাস হলো কোথাও যেতে হলে সে কখনোই আরশাদকে জানায় না। অবশ্য জানানোর কিছু নেই, সে স্বাধীন মানুষ। যেখানে খুশি যেতেই পারে। তবে ঘন্টার পর ঘন্টা নিরুদ্দেশ থাকলে সেটা নিশ্চয়ই আগেভাগে জানাতে হয়।
বিরক্ত ভঙ্গিতে অরার নম্বরে ডায়াল করলো আরশাদ। এতটুকু ভালোবাসাতেই আশকারা পেয়ে গেছে মেয়েটা। নাহ্! এভাবে হবে না। মেয়েটাকে আগের মতোই ধমকের ওপরে রাখতে হবে।
দুটো রিং বাজতেই অপরপ্রান্ত থেকে এক নারীকণ্ঠ বলে উঠলো, “আপনি যে নম্বরটিতে ডায়াল করেছেন, তাতে এই মুহূর্তে সংযোগ প্রদান করা সম্ভব নয়। কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন।”
ভালো যন্ত্রণায় পড়া গেল তো! একটা মেয়ে হঠাৎ এমন নিরুদ্দেশ হয়ে যাবে। আরশাদ বিচলিত হয়ে মস্তিষ্কের অক্সিজেন অপচয় করলো না। ঠান্ডা মাথায় বসে চিন্তা করতে লাগলো, কোথায় যেতে পারে অরা। কাজের খাতিরে কোথাও গেলে আরশাদের জানা থাকতো। পড়াশোনার খাতিরে কি কোথায় গেছে? হয়তো এমন হয়েছে, আজ ক্লাসে জরুরি একটা নোট দিয়েছে সেটা তাকে তুলতে হবে। তাই সীমার কাছে গেছে। হতেই পারে।
আরশাদ ব্যস্ত ভঙ্গিমায় ফিরে গেল অরার ঘরে। অরা যেমন গোছানো মেয়ে তার কাছে নিশ্চয়ই জরুরি নম্বরগুলো আলাদা করে লিখে রাখার কথা। অরার বিছানার পাশের সাইড টেবিলেই একটা ডায়েরি পেলো আরশাদ। তার ধারণাই সঠিক হলো। জরুরি নম্বর, গুরুত্বপূর্ণ তারিখ, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলোর পাসওয়ার্ড – সব গুছিয়ে লিখে রেখেছে অরা। এখানেই সীমার নম্বর খুঁজে পেলো আরশাদ। এক মুহূর্তও অপচয় না করে ডায়াল করলো সীমার নম্বরে।
কয়েকটা রিং বাজতেই অপরপ্রান্ত থেকে ফোনটা রিসিভ করে সীমা উৎফুল্ল ভঙ্গিতে বলল, “আরশাদ ভাইয়া! কেমন আছেন?”
আরশাদ জিজ্ঞাসু ভঙ্গিতে বলল, “তুমি বুঝলে কীভাবে এটা আমার নম্বর?”
সীমা লজ্জিত ভঙ্গিতে বলল, “আমি আসলে অনেক আগেই অরার মোবাইল থেকে আপনার নম্বর চুরি করেছিলাম। কখনো ফোন করতাম না আপনাকে। আমার প্রিয় সুপারস্টারের ফোন নম্বর আমার মোবাইলে আছে এতটুকুই শান্তি।”
আরশাদ ছোট্ট দীর্ঘশ্বাস ফেলে থমথমে গলায় বলল, “অরা তোমার ওখানে?”
“কই? না তো। কেন ভাইয়া? অরা বাড়িতে নেই?”
“না। কোথায় গেছে বলেও যায়নি। ফোনটাও বন্ধ পাচ্ছি। কোথায় গেছে তুমি কি বলতে পারো?”
সীমা চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল, “অরা তো কাজ ছাড়া সন্ধ্যার পর বাড়িতে থেকে বের হবার মেয়ে নয়।”
“কোনো কাজে যায়নি। গেলে আমি জানতাম।”
“আচ্ছা ভাইয়া আমি খোঁজ নিয়ে জানাচ্ছি। হয়তো আমাদের কোনো ক্লাসমেটের বাড়িতে গিয়েছে।”
সীমার খোঁজ নেওয়ার কতদূর কাজ হবে বোঝা যাচ্ছে না। তীব্র টেনশনে আরশাদের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে শুরু করেছে। মেয়েটা আজ ফিরুক বাড়ি, খবর আছে তার! প্রায় রাত নয়টা বাজতে চলল অথচ অরার কোনো খবর নেই।
একটার পর একটা সিগারেট ধরিয়ে যাচ্ছে আরশাদ। টেনশনের সময়ে না-কি সিগারেট নার্ভ শান্ত রাখে। তার ক্ষেত্রে কোনো কাজ করছে বলে তো মনে হয় না। আরশাদের টেনশন ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে।
হঠাৎ মোবাইলের নোটিফিকেশনে সংবিৎ ফিরলো তার। নতুন ম্যাসেজের নোটিফিকেশন। একটা প্রাইভেট নম্বর থেকে ম্যাসেজ এসেছে। একটা ছবি, তার নিচে কী যেন লেখা। ছবিটা দেখেই আরশাদের শিরদাঁড়া প্রকম্পিত করে প্রবল ঝড় বয়ে গেল।
জরাজীর্ণ একটা ঘরের মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে অরা। তার কপালে আঘাতের দাগ। চোখের কাজল লেপ্টে চোখের চারিদিকে ছড়িয়ে আছে। জামার একাংশ ছিঁড়ে গেছে। তড়িৎ গতিতে উঠে দাঁড়ালো আরশাদ। তার হৃদস্পন্দন এক লাগে বেড়ে গেছে। বুকের ভেতরটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। কে করেছে অরার এমন অবস্থা? কার এত বড় সাহস আরশাদ হকের জিনিসে হাত দেবার? সে কি জানে না, একবার তাক নাগালে পেলে আরশাদ তাকে শেষ করে ফেলবে?
নিচের লেখাটার দিকে লক্ষ্য করলো আরশাদ। ইংরেজি অক্ষরে লেখা, “Your girl is now mine!”
আবছা অন্ধকারে ছেয়ে আছে ঘরটা। অরা চোখ মেলে তাকালো তবে আশেপাশে সব ঝাপসা দেখছে। তার মাথাটা প্রবল ঘূর্ণির ন্যায় ঘুরপাক খাচ্ছে। কেমন একটা তীক্ষ্ণ গন্ধ ছড়িয়ে আছে চারিদিকে। দীর্ঘক্ষণ একটা ঘরে আলো-বাতাস প্রবেশ না করলে যেমন গন্ধ হয়, ঠিক সেরকম। হাত-পা নাড়াবার চেষ্টা করতেই ব্যর্থ হলো অরা। খেয়াল করলো একটা চেয়ারের সঙ্গে শক্ত দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে তাকে। সে কোথায়? কে তাকে এখানে নিয়ে এসেছে?
প্রচন্ড এক চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করলো অরা। এবারও সফল হলো না। তার মুখে ওপর জোরালো স্কচটেপ আটকে দেওয়া। অরা প্রাণপণ চেষ্টা করলো এই বাঁধন থেকে মুক্তি পাবার। তবে সে খুব ভালো করেই জানে খুব সহজে সে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে না। ভয়ে তার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। ছুটে এখান থেকে পালিয়ে যেতে চাইছে অরা। কেন যে সে অপরিচিত একটা মানুষের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হলো?
অরার চোখ দুটো বেয়ে টপটপ করে জল পড়তে লাগলো। আরশাদ নিশ্চয়ই তার জন্যে দুশ্চিন্তা করছে। সে জানে অরা এই অবস্থায় অচেনা একটা জায়গায় বন্দী হয়ে আছে?
হঠাৎ কারো পায়ের শব্দ কানে ভেসে আসতেই হিমবাহের মতো জমে গেল অরা। এই নিশ্চয়ই সেই অপরিচিত লোকটা। যে তাকে ফোন করে এতদূর পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। অরার হাত-পা শক্ত হয়ে এলো। নিজেকে সজাগ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে সে।
লম্বা-চাওয়া একটা লোক এসে দাঁড়ালো তার সামনে। তার মুখে মুখোশ, হাস্যোজ্জ্বল জোকারের মুখোশ। লোকটা ছোট ছোট পা ফেলে এগিয়ে আসছে তার দিকে। ভয় একটু একটু করে ছড়িয়ে পড়ছে অরার সমস্ত শরীরে। কী করতে যাচ্ছে সে? ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিলো অরা। তবে তার অগ্নিদৃষ্টি ঠিকই আবদ্ধ লোকটার দিকে।
লোকটা এগিয়ে এসে অরার মুখের স্কচটেপ খুলে দিলো।
সঙ্গে সঙ্গে অরা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে বলল, “কে আপনি? আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন কেন? কে আপনি?”
কোনো জবাব নেই। সে মুখোশের ফাঁক দিয়ে দেখে যাচ্ছে অরাকে। অরা বুঝতে চেষ্টা করছে কে এই লোকটা? কী উদ্দেশ্য তার? সে কি অরার কোনো ক্ষতি করতে চাইছে? না-কি তাকে বন্দী করে আরশাদের কাছে মুক্তিপণ দাবি করতে চাইছে?
আচমকা শিষ বাজানো শুরু করলো লোকটা। ‘মনেরও রঙে রাঙাবো’ গানটা শিষ তুলে গাইছে সে।
অরা ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে উঠলো, “শীষ বাজানো বন্ধ করেন, কে আপনি? আমার কাছে কী চান?”
মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা লোকটা খানিক হেসে বলল, “আপনার কাছে তো কিছুই চাই না। আপনাকেই চাই।”
অরা কিছু একটা বলতে গিয়েই থেমে গেল। এই কণ্ঠস্বর তো তার চেনা। সে জানে মুখোশের পেছনে কে লুকিয়ে আছে। নিজের মনকে যেন বিশ্বাস করতে চাইছে না অরা। এ কী করে সম্ভব? আবারও শিষ বাজাতে বাজাতে মুখোশটা খুলে ফেলল সে।
প্রচ্ছন্ন হাসি হেসে বলল, “সারপ্রাইজ!”
অরা বিস্ময়ে খাবি খেয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। সাবের। সাবের তাকে ধরে নিয়ে এসেছে এখানে?
অরা চমকে উঠে বলল, “তুমি?”
সাবের বিজয়ীর হাসি হেসে বলল, “কেমন দিলাম?”
অরা কয়েক মুহূর্ত অবাক চোখে তাকিয়ে থেকে তাচ্ছিল্যের স্বরে বলল, “বাহ্! তোমার এত সাহস? আমি তো জানতাম তুমি ওয়ার্ড ক্লাস কাপুরুষ।”
সাবের একটা চেয়ার টেনে এনে অরার সামনে বসতে বসতে বলল, “দামী কিছু পেতে হলে একটু সাহস তো করতেই হয়। তোমাকে পাবার বাসনা করেছি।”
“সব চাইলেই পাওয়া যায় না?”
“যায়, হার্ডওয়ার্ক করলে অবশ্যই যায়। নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম তোমাকে পেয়েই ছাড়বো। যেদিন তুমি ভরা ক্যাম্পাসে আমাকে অপমান করলে, সেদিন তো ওই প্রতিজ্ঞা আরও দৃঢ় হয়ে দাঁড়ালো।”
সাবেরের ক্ষমতা কতদূর তা খুব ভালো করেই জানে অরা। ভয়টা তার কেটে গেছে। বরং নিজের ওপরে রাগ লাগছে। কী করে সাবেরের মতো নিম্ন বুদ্ধির একটা ছেলের ফাঁদে পা দিলো সে?
সাবের অরার দিকে ঝুঁকে এসে বলল, “তুমি তো শুরু থেকেই আমার ছিলে অরা। মাঝখান দিয়ে বিয়েটা করে ঝামেলা পাকিয়েছ। অবশ্য অসুবিধা নেই। আমি জানি সুপারস্টার সাহেব তোমাকে টাচ পর্যন্ত করেনি।”
অরা দাঁতে দাঁত চেপে বলল, “আমার বিয়ে কীভাবে হয়েছে সেটা তুমি জানলে কী করে?”
“সব কথা এখনই শুনবে? কথা শোনার জন্যে তো সারাজীবন পড়ে আছে সুইটহার্ট। আমার স্বপ্ন তোমাকে নিয়ে ওয়ার্ড ট্যুরে যাবো। দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াবো। খুব শীঘ্রই কিন্তু সেই স্বপ্ন সত্যি হতে যাচ্ছে।”
অরা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল, “তুমি দোয়া করো যেন ধরা না পড়ে যাও সাবের। একবার ধরা পড়ে গেলে তোমার শরীরের একটা হাড্ডিও আস্ত থাকবে না।”
সাবের কৃত্রিম বিস্ময় নিয়ে বলল, “বাব্বাহ! এত ভরসা সুপারস্টার সাহেবের ওপর? ভালো ভালো!”
সাবের উঠে দাঁড়িয়ে আবারও নতুন একটা স্কচটেপ অরার মুখের ওপরে লাগিয়ে বলল,
“তুমি থাকো, আমি এক্ষুনি চলে আসবো।”
সাবের নতুন কী খেলা শুরু করেছে অরা জানে না। তবে সে জানে আরশাদ ঠিকই তাকে খুঁজে বের করবে। উদ্ধার করবে এখন থেকে। আরশাদ তো নিজের মুখে বলেছে ভালোবাসি। তার ভালোবাসার ওপরে এতৎকি আস্থা অরার আছে।
(চলবে)