মিশেছো_আলো_ছায়াতে #Writer_Sintiha_Eva #part : 42

0
195

#মিশেছো_আলো_ছায়াতে
#Writer_Sintiha_Eva
#part : 42

🍁🍁🍁

_ আমি জানতাম পেনড্রাইভ টা পেয়ে তুমি অবাক হবে। সঙ্গে এটাও জানতাম পেন ড্রাইভারে কি আছে এটা দেখার জন্য তোমার লেট হবে। বলতে হবে তুমি তোমার বাবার সবগুলো গুণ নিখুঁত ভাবে জব্দ করেছো। একজন আর্মি অফিসারের মেয়ে হিসেবে তুমি সত্যিই পারফেক্ট। কিন্তু তোমার আর তোমার বাবার এই পারফেক্ট গুনগুলোই আমার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কি ভেবেছো গোপনে তদন্ত করবে আর আমি জানবো না। তোমার মা-বাবার পরিণতি নিশ্চয়ই ভুলে যাওনি। তোমার সেই পরিণতি করতে আমার এক সেকেন্ড ও লাগবে না এটা তুমি জানো। তোমার পরিণতি তোমার বাবার মতোই হবে। যায় হোক কাজের কথায় আসি। শুনলাম তোমার কাছে আমার গোপনীয় পেন ড্রাইভ আছে। কোন পেন ড্রাইভের কথা বলছি নিশ্চয়ই এটা তোমাকে বলে বুঝাতে হবে না। তবুও মনে করিয়ে দিচ্ছি সতেরো বছর আগে তোমার বাবার পেছনে আমার লোকেরা যেই পেন ড্রাইভ পাওয়ার জন্য লেগেছিলো আমি সেই পেন ড্রাইভের কথা বলছি। আশা করি ভুলে যাওনি। সেই পেন ড্রাইভ টা আমার চাই। নয়তো এতোদিনে তুমি হয়তো জেনে গেছো তোমার মা-বাবা বেঁচে আছে। ওরা আমার কাছেই আছে। জানি বিশ্বাস করবে না তার জন্য প্রুভ ও পাঠিয়েছি। এখন চলো ডিল হয়ে যাক আগামীকাল সন্ধ্যা ছয়টা নিচের এড্রেসে চলে আসবে। তোমার মা-বাবাকে জীবিত ফেরত পাবে বিনিময়ে আমার পেন ড্রাইভ টা চাই। আমি জানি মা-বাবার বিষয়ে তুমি অন্যরকম। ওদের বাঁচাতে তুমি পেন ড্রাইভ টা নিয়ে আসবেই। কাল দেখা হচ্ছে। আর হুম ছবিগুলো অবশ্যই দেখবে। আল্লাহ হাফেজ।

টিভির ভেতরে ভিডিওটা বন্ধ হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে কালো মানব ছায়া টা ও সরে যায়। সিমথি একদৃষ্টিতে টিভির স্কিনের দিকে তাকিয়ে আছে। আদি ভয়ার্ত দৃষ্টিতে সিমথির দিকে তাকায়। ড্রয়িংরুমে সবার মাঝে পিনপন নীরবতা দৃষ্টি সিমথির দিকে। সিমথি মুখ ফুলিয়ে একটা শ্বাস নেয়।

সিমথি : আদি পার্সেল টা দাও তো।

আদি : হ হুমম।

আদি পার্সেল টা হাতে নিয়ে সিমথির দিকে দেয়। সিমথি পার্সেলের ভেতর থেকে কয়েকটা ছবি বের করে। ছবিতে একজন অর্ধবয়স্ক সুন্দরী মহিলা এবং পুরুষ। গায়ে নোংরা জামাকাপড়। পুরুষের মুখে লম্বা লম্বা দাঁড়ি হালকা সাদা। আর মহিলার পরণে একটা নোংরা শাড়ি চুলগুলো এলোমেলো। দুজনের শরীরেই শুকিয়ে যাওয়া র/ক্তের চিহ্ন। হাত-পায়ের অনেক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন। সিমথি ছবিগুলোর দিকে চোখ বুঁজে সোফায় হেলান দিয়ে জোরে শ্বাস নেয়। তখনই সিমথির ফোন টা বেজে ওঠে। সিমথি চোখ খুলে ফোন হাতে নিয়ে নাম্বার দেখে হাসে।

সিমথি : আসসালামু আলাইকুম। কৌশল সব ভালো তো।

এন.কে : তোমার মনে কি সত্যিই ভয়-ডর নেই।

সিমথি : ভয় আর আমি ধ্যাত মিয়া। আপনি না বললেন আমি আহনাফ খানের মেয়ে হিসেবে পারফেক্ট। তাহলে ভয় কেনো পাবো। আপনি তো চব্বিশ বছর আমার সংস্পর্শে থেকেও আমাকে চিনলেন না। ভেরি ব্যাড।

এন.কে : চব্বিশ বছর মানে।

সিমথি : ওসব বাদ দেন। আপনার থার্ডক্লাশ হুমকি ধামকি দেওয়ার জায়গা কি খুব কম পড়ে গেলো। যার জন্য স্বয়ং আমাকে পাঠাচ্ছেন।

এন.কে : তোমার কি মনে হচ্ছে আমি হুমকি দিচ্ছি।

সিমথি : আরে আরে আরে চাচাজি আপনি রেগে যাচ্ছেন। বাহ আপনার রাগান্বিত গলা তো বেশ লাগে শুনতে।

সিমথির স্বাভাবিক ব্যবহারে ড্রয়িংরুমের সবাই দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। এই মেয়ে কিভাবে এতো স্বাভাবিক থাকে এটাই কেউ বুঝতে পারে না।

সিমথির মুখে চাচাজি ডাকটা শুনে এন.কে কিছু সময়ের জন্য থেমে যায়। অতঃপর গম্ভীর কণ্ঠে শুধায়,,,

এন.কে : কে তোমার চাচাজি।

এন.কে এর এমন প্রশ্নে সিমথি শব্দ করে হাসে। যেনো ফোনের ওপাশ থেকে এমন উত্তরই আশা করেছিলো।

সিমথি : আরেহ চাচাজি নলায় ক্ষেপে গেলপন নাকি। আচ্ছা ডাকছি না। তা বলুন আপনার ব্যবসা ঠিকমতো এগুচ্ছে তো।

এন.কে : কাটা গায়ে লবণ ঢালতে খুব ভালো জানো।

সিমথি : ওই যে মেজর আহনাফ খানের মেয়ে না আমি। এতোটুকু গুণ না থাকলে চলে বলুন।

এন.কে : তার মানে তুমি পেনড্রাইভ দেবে না কাল।

সিমথি : কাল তো আমি আপনার এড্রেসে যাচ্ছিই না পেন ড্রাইভ দেওয়া তো পরের কথা।

এন.কে : তোমার মা-বাবার প্রতি না তোমার অঘাত ভালোবাসা। সামান্য একটা পেন ড্রাইভ দিতে পারছো না

সিমথি : প্রসঙ্গ যখন আমার বাবাইয়ের প্রোফেশনাল লাইফ তখন এই সামান্য পেন ড্রাইভ টা কোহিনূরের চেয়ে দামী।

এন.কে : আর তোমার মা-বাবা

সিমথি : সতেরো বছর তো পাড় করলাম মা-বাবা ছাড়া বাকি সতেরোশ বছর পারবো ইনশাআল্লাহ।

এন.কে : তোমার এই এই খাপছাড়া ভাব টা আমার সহ্য হচ্ছে না সিমথি ( রাগে দাত কড়মড়িয়ে)

সিমথি : সহ্যশক্তি বাড়ান। এখনো অনেক কিছু সহ্য করা আপনার বাকি আছে। এতো তাড়াতাড়ি সহ্যশক্তি হারাবেন না। এতোদিন যেটা নীরবে চালিয়েছি এখন সেটা সম্মুখে চলবে। আপনি আগে যেমন কিছু বলতে বা করতে পারেননি এখনো ও কিছুই পারবেন না। আপনার দিন শেষ এবার তো আমার পালা। এতোদিন আপনি চাল চেলেছেন আমি সামলেছি। এবার আমি চালবো কিন্তু আফসোস আপনি সামলাতে পারবেন না।

শেষের কথা তাচ্ছিল্যের সুরে বলায় এন.কে রেহে হুংকার ছুঁড়ে।

এন.কে : ভালোভাবে বুঝাতে চেয়েছিলাম বুঝিস নি। এবার দেখবি আমার আসল রূপ।

সিমথি : আপনার এতো রূপ দেখে এখন আমার মন বিশ্বাস করে নিয়েছে আপনি গিরগিটি। গিরগিটি চিনেন তো ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলায় লাইক এজ ইউ।

এন.কে : সিমথি ( চেঁচিয়ে)

সিমথি : আরে রাগেন কেনো আপনি এতো চিল্লাপাল্লা করলে তো আমার মেজাজ চটে যাবে। আমি শান্ত গলায় কথা বলছি আপনার ও সেটাই উচিত। আপনার তো জানা দরকার অযাচিত কোনো ব্যক্তির আমার উপর তদারকি আমি সহ্য করিনা। সো টেক ইট ইজি। নয়তো চিনেনই আমাকে আপনার জীবন নরক বানাতে আমার জাস্ট এক মিনিট লাগবে। আমার একটা ক্লিক আপনার জীবন হেল।

এন.কে : তুমি আমাকে ধমকাচ্ছো নাকি মজা করছো।

সিমথি : থুরীই না আপনি আমার বেয়াই লাগেন। আমি কেনো মজা করবো। আমি আপনাকে হাসতে হাসতে শান্ত গলায় হুমকি দিচ্ছি।

সিমথির কথায় ওপাশের লোকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। যেনো এমন কিছু আশা করেনি। সিমথির সামনের দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলো ও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। আদি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায়। সিমথি তো এতো ঠান্ডা গলায় কথা বলার ব্যক্তি না আবার যেখানে প্রসঙ্গ ওর মা-বাবার জীবন।

এন.কে : কি চাও তুমি। যা চাইবে তার বিনিময়ে আমার পেন ড্রাইভ চাই।

সিমথি : আর ইউ শিউর। যা চাইবো তাই পাবো। তাহলে আপনি পেন ড্রাইভ পেয়ে যাবেন।

সিমথির এহেন কথায় সবাই চমকে সিমথির দিকে তাকায়। সিমথি চোখ এখনো বুঁজা। এন.কে বিকৃত হেসে শুধায়,,,,

এন.কে : কত লাগবে বলো। এল লাখ, দশ লাখ।

সিমথি : আপনার জীবনের দাম বুঝি মাত্র দশ লাখ। এতো সস্তা আপনি।

এন.কে : মানে ( হতবিহ্বল হয়ে)

সিমথি : আমার আপনার মৃত্যু চাই। আপনার ওই নোংরা শরীরটাকে নিজের হাতে ঝাজড়া করতে চাই। আই ওয়ান্ট টু কি/ল ইউ। ড্যাম ইট ( চোয়াল শক্ত করে)

আচমকা সিমথির ভরাট গলায় এন. কে ঘাবড়ে যায়। কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে নিলে সিমথির গম্ভীর কণ্ঠে থেমে যায়।

সিমথি : তোকে আমি লাস্ট ওয়ার্নিং দিচ্ছি। আমার ইমোশনে আঘাত আনবি না। আমার মা-বাবা আমার সবচেয়ে বড় ইমোশনাল সাইড। তুই সেইদিকটা হাত বাড়ালে এই সিমথির সবচেয়ে ভয়ানক রূপ টা তোর জন্য বরাদ্দ থাকবে। যদি সুস্থ সমেত মৃত্যু বরণ করতে চাস তাহলে চুপচাপ থাক। তুই আর তোর পেন ড্রাইভ দুইটাই আমার কব্জায়। আমি চাইলে এখনই তোর এতোবছরে কালো ব্যবসা মিডিয়াসহ পুরো দেশের সামনে আনতে পারি। কিন্তু আমি আপাতত নীরব আছি। সেটাকে আমার ভালো মানুষি ভাবিস না। আমি এখনো সেই আগের সিমথিই আছি। খোলস পাল্টেছি কিন্তু স্বভাব বদলায়নি। এখনো গান পয়েন্ট মেইন জায়গায় সেট করলে তোর ওই বুক ঝাজড়া করা আমার জন্য অস্বাভাবিক না। সো যতদিন তোর আয়ু আছে ততদিন দুনিয়াটা উপভোগ কর। সময় আসলে আপনাআপনি তুই আমার হাতেই ম/র/বি। চারজন মানুষের নৃশংস মৃত্যুর দৃশ্যপট তোর উপর দিয়ে যাবে। ম/রা/র জন্য আমার পেছনে লাগিস না। আমি সঠিক সময় তোকে টেনে হিছড়ে বের করবো গর্ত থেকে। এখনো সময় আসেনি।

এন.কে : সেই সময় কখনো আসবে না।

সিসিমথি : মনে পড়ে সতেরো বছর আগে গাড়ি উল্টে সেই স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হওয়ার দিনটি। আশা করি মনে আছে। ওদের মৃত্যুর আঠারো বছর পূর্ণ হতে আর মাত্র দুইমাস সাতদিন ষোলো ঘন্টা তেরো মিনিট বাইশ সেকেন্ড বাকি। তুই ও নিজের জীবনের কাউন্টিং স্টার্ট কর। আজ থেকে সতেরো বছর আগে পুরো শহর যেমন মেজর আহনাফ খান এবং এডভোকেট তানহা খানের মৃত্যুতে কেঁপে ছিলো। ঠিক দুইমাস সাতদিন ষোলো ঘন্টা তেরো মিনিট বাইশ সেকেন্ড পর আবার পুরো শহর কাঁপবে। পার্থক্য থাকবে টিভি চ্যানেলে মুখ বদলাবে। সেদিন ছিলো মেজর আহনাফ খান এবং তার মিসেসের ছবি আর ওইদিন থাকবে তোর ছবি।

এতোটুকু বলে সিমথি থামে। গলা কাঁপছে। চোখে সামনে রক্তাক্ত তিনটা মুখ ভেসে উঠছে। চোখ মেলে তাকায়৷ ফর্সা মুখটা রক্তিম বর্ণ ধারণ করে। ঢোক গিলে কান্না আটকায়। আদি মাথা নুইয়ে নেয়। আদি জানে সিমথির ইমোশনাল সাইড ওর মা-বাবা।

এন.কে : তুই এমন কিছু করবি না আমি জানি। তোর বুদ্ধি এখনো সেখানে পৌঁছায়নি যেখানে আমি দাঁড়িয়ে আছি।

সিমথি : আপনি আমাকে জানেন না। ছোট থেকে দেখলেও আপনি আমায় চিনেন না। মেজর আহনাফ খানে মেয়ে আমি আমার মধ্যে সততার পাশাপাশি শত্রুপক্ষের জন্য কঠোরতা থাকবে এটা স্বাভাবিক। এডভোকেট তানহা খানের মেয়ে আমি আমার মাথায় জটখোলার বুদ্ধি থাকবে না এটা ভাবা আপনার বোকামি। সর্বোপরি একজন রাজনীতিবিদের নাতনী আমি। কুটনৈতিক বুদ্ধি আমার শিরায় শিরায়। আপনি যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেখান থেকে ফেরার একটা পথ আপনার জন্য আমি নিজে বরাদ্দ রেখেছি। সেই পথটা সম্মুখীন হলে জানবেন।

এন.কে : সিমথি,,

সিমথি : নো মোর ওয়ার্ড। আপনি এমনিতেই আমার অনেক টা সময় নষ্ট করেছেন। নেক্সট টাইম এসব ফা/ল/তু হুমকি আমায় দেবেন না। ভয় জিনিস টা আমার মধ্যে নেই। এসব মাইন্ড গেইম অন্যজায়গায় ট্রাই করুন গুড বাই। আল্লাহ হাফেজ।

সিমথি ফোন টা ছুঁড়ে নিজের সাইডে রাখে অতঃপর উঠে গিয়ে সিডি থেকে পেন ড্রাইভ টা খুলে সযত্নে গুছিয়ে রাখে। মুখ ভঙ্গি স্বাভাবিক করে তিন্নির দিকে এগিয়ে যায়। বেচারি ভয় পেয়েছে কাকিয়ার এমন কথাবার্তায়। সিমথি হেসে তিন্নিকে কোলে নিয়ে গালে চুমু খায়।

সিমথি : কি হয়েছে সোনামা।

তিন্নি : তুমি ফোনে কাকে বকলে।

সিমথি : বকেছি একটা দুষ্টু লোককে।

তিন্নি : তোমার কিছু নিয়ে চলে গেছে তাই বকেছো।

তিন্নির কথায় সিমথির হাসি মুখটা অন্ধকারে ছেয়ে যায়। আনমনে বলে উঠে

সিমথি : আমার সবচেয়ে প্রিয় তিনজন মানুষ কেই তো ছিনিয়ে নিলো দুষ্টু লোকটা।

সিমথির কথায় সবার মুখটা ছোট হয়ে যায়। ছোট তিন্নি কথার মানে না বুঝলেও বাকিরা ঠিকই বুঝেছে। তিন্নি অবুঝ গলায় বলে,,,

তিন্নি : আমি ওদের এনে দেবো কাকিয়া।

সিমথি : তুমি পারবে না তো। ( জোরপূর্বক হেসে)

তিন্নি : কেনো পারবো না।

সিমথি : আকাশের তাঁরা কি কখনো ছোঁয়া যায়।

তিন্নি : নাহ ( মাথা নাড়িয়ে)

সিমথি : ওরাও তেমনই। ওই যে আকাশটা দেখছো ওরা ওখানে আছে।

তিন্নি : ওরা ও কি আকাশের তাঁরা

তিন্নির কথায় সিমথি থমকায়। মনে পড়ে নিজের ছোটবেলার কথা। সায়নকে যখন বলতো মা-বাবা যাবো তখন সায়ন আকাশের তারা দেখিয়ে বলতো ওদের ছোঁয়া যায়। তখন সিমথি ও তিন্নিও মতো জিজ্ঞেস করতো ওরা ও কি আকাশের তাঁরা। সায়ন তখন এভাবেই হুম বলে ওকে সান্ত্বনা দিতো। সিমথি তখন খুশিতে নেচে উঠতো আর বলতো আমার মা-বাবা তাঁরা হয়ে গেছে ওদের সাথে আকাশে থাকে কি মজা। কিন্তুযখন বড় হতে শুরু করলো তখন সিমথি বুঝতে পারলো ওর মা-বাবা না ফেরার দেশে ঘুরতে গেছে।

তিন্নি : ও কাকিয়া বলো।

তিন্নির ডাকে সিমথির ধ্যান ভাঙ্গে। চোখ জ্বালাপোড়া করছে। বুকের ভেতর তোলপাড় শুরু হয়েছে। এতোবছরের জমিয়ে রাখা কান্না উগলে আসতে চাইছে। সিমথি তিন্নিকে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে দীর্ঘশ্বাস নেয়।

তিন্নি : আমিও কবে তাঁরা হবো।

তিন্নির কথায় সবাই চমকায়।

মেহের : তিন্নি এসব কি কথা। ( ধমকে)

সিমথি : এসব কথা বলেনা। পঁচা মানুষরা ওখানে থাকে।

তিন্নি : তাহলে ওরাও কি পঁচা।

সিমথি : পঁচাই তো। নয়তো সাত বছর বয়সী মেয়ে কে কেউ ফেলে চলে যায়। ওরা ভীষণ পঁচা।

নিস্তব্ধতায় ঘেরা রুম টা যেনো আরো নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। সিমথির কথার ভাঁজে নিজের মা-বাবার প্রতি এক আকাশ অভিযোগ প্রকাশ পায়। এতো বছরের জমিয়ে রাখা কষ্ট সব যেনো ছোট কথাগুলোয় উগলে আসছে। আদি মা ছলছল চোখে সিমথির দিকে এগিয়ে যায়। মেয়েটার মায়ের অভাব বুঝি পূরণ করতে ব্যর্থ হলো। সিমথি মাথায় স্নেহের পরশ বুলায়। সিমথির আদির মায়ের দিকে তাকিয়ে হেঁসে দেয়।

চলবে,,,,,,

( ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here