ভালোবাসার_ফোড়ন_২ #মিমি_মুসকান #পর্ব_৩২

0
397

#ভালোবাসার_ফোড়ন_২
#মিমি_মুসকান
#পর্ব_৩২

পিছনে ঘুরে দেখি একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। যদিও গলার আওয়াজ শুনে আমি আন্দাজ করেছিলাম এটা একটা ছেলে তবুও এখন নিশ্চিত হলাম। তবে তাকে আমি চিনি না। ছেলেটা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। তার চাহনিতে আমার বেশ অদ্ভুত লাগল। ছেলেটা আমার বেশ কাছে। আমি তার থেকে কিছুটা দূরে সরে গেলাম।

ছেলেটা একগাল হেসে বলে,
“মনে হচ্ছে তোমাকে ভয় পাইয়ে দিলাম!

আমার মুখ থেকে কোন কথাই বের হলো না। ইতি বলে উঠে,
“তুমি এখানে কি করছো?

“আরে ইতি যে, তা একি তোমার বান্ধবী নাকি।

“সেটা জেনে তুমি কি করবে, ওর থেকে দূরে থাকবে বুঝলে।

“দূরেই তো আছি। কিন্তু এই সুন্দরী কি এতোদিন কোথায় লুকিয়ে রেখেছিলে বলো।

“লুকিয়ে কেন রাখবো।

“তাহলে আমার চোখে কেন এতো দিন পড়ে পরল। তবে শুনেছি সুন্দর জিনিস নাকি চোখে পড়তে সময় লাগে সেটাই সত্যি হলো।

আমি ভ্রু কুঁচকে তাকালাম ছেলেটার দিকে। ছেলেটা আমাকে একটা চোখ টিপ দিল। আমার বিরক্ত লাগলো। ইতি কে বললাম,

“ইতি চল এখান থেকে!

“হুম চল! এখানে থেকে ফালতু কথা বলার কোন মানেই নেই।

বলেই দুজনে চলে যেতে নিলাম, হঠাৎ ছেলেটা আমার হাত ধরে বলল,

“আরে পালিয়ে যাচ্ছো কেন, অনেক দিন পর সিফাতের কোন মেয়েকে চোখে পড়েছে। এতো সহজে যে কি পালিয়ে যেতে দিবো না।

আমি চোখ মুখ শক্ত করে বলি,
“তাহলে চোখ বন্ধ করে রাখুন আর আমার হাত ছাড়ুন।

ছেলেটা হেসে হাতটা ছেড়ে দিয়ে বলল,
“নাও ছেড়ে দিলাম।

ইতি রেগে বলল,
“একটু বেশি করছো কিন্তু সিফাত। আমি তো তোমার নামে স্যারের কাছে ‌বিচার দেবো।

“দিও, সমস্যা নেই।

আমি বলে উঠি,
“পরবর্তীতে আমার হাত ধরার সাহস করবেন না।

অতঃপর বলেই চলে এলাম। ছেলেটা পেছন থেকে বলে উঠে,
“আরে এই সুন্দরী’র নামটা কি সেটাই তো জানা হলো না। নামটা তো বলে যাও!

ছেলেটার কথাগুলো কাঁটা’র মতো আমার শরীরে বাধছিল। খুব রাগ হচ্ছিল। ইতি বলল ছেলেটা নাকি খুব খারাপ। সারাদিন মেয়েদের পিছনে ঘোরাঘুরি করাই এর কাজ।‌ কিন্তু এই ছেলে এখন আমার পিছনে লেগে আছে কেন?

প্রশ্নটার উত্তর পেতে বেশিক্ষণ লাগলো না। ক্লাস শেষ করে বের হবার পর’ই দেখলাম টিনা, নিতি ওরা ছেলেটার সাথে হেসে কথা বলছে। কেন জানি মনে হচ্ছে তারাই ছেলেটাকে বলেছে আমার পিছনে ঘুরতে। জ্বালাতন করতে! এটা শুধু আমার ভাবনা না ইতিও’র সেও এই একই কথা ভাবছে।

আমরা দু’জনেই দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। হঠাৎ করেই আহিয়ান, আকাশ ভাইয়া সবাই এলো। সিফাত কে দেখে আহিয়ান নিজ থেকেই তাকে জড়িয়ে ধরল।‌ অতঃপর সেও তার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে। মনে হচ্ছে সিফাতের সাথে আহিয়ানের সম্পর্ক ভালো। আকাশ ভাইয়া কেও অনেক কমফোর্টেবল দেখাচ্ছিল তার সাথে। ইতি অবাক হয়ে বলে,

“এগুলো কি হচ্ছে?

“কি আর হবে। বন্ধুত্ব দেখছিস না।

“এই বাজে ছেলেটার সাথে।

“আমি কি জানি।

বলেই নেমে এলাম। যদিও আমার খুব রাগ হচ্ছিল। কেন এই ছেলেটা উনার সাথে। উনি কি ছেলেটার স্বভাব সম্পর্কে অবগত নন। বাজে ছেলে না হলে প্রথম দেখাতেই কোন মেয়ের হাত ধরতে আসে না সে।

আমি আর ইতি বের হয়ে গেলাম ভার্সিটি থেকে। উনাকে ক্রস করেই এসেছিলাম। দু’জনেই একটা নির্দিষ্ট সময় অবদি হাঁটার পর দু’জনের রাস্তা আলাদা হয়ে গেল। গন্তব্য হলো ভিন্ন! ইতি চলে গেল এক রাস্তায় আর আমি অন্য টায়।

হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করেই পিছন থেকে বাইকের আওয়াজ শুনতে পেলাম। এটা উনি বলে মনে হচ্ছে। ধারনা সত্যি হলো যখন উনি এসে আমার সামনে ব্রেক করলেন। আমি উনার দিকে খানিকটা বিরক্ত নিয়ে তাকাই। কেন জানি সেই ছেলেটার সাথে তার মেলামেশা আমার মোটেই ভালো লাগছে না। এটা স্বাভাবিক। তোমার যা কে ভালো লাগে না, সে যার সাথে থাকে তাকেও তোমার ভালো লাগবে না।

উনি বলে উঠেন,

“দাঁড়াতে বলেছিলাম তোমায়?

“কোথায় দাঁড়াব আপনার মাথায়।

“এর চেয়ে ওর রাস্তার মোড়ে দাঁড়ালে বেশি ভালো হবে।

“ধ্যাত!

বলেই পাশ কাটিয়ে চলে এলাম। উনি আমার পাশে পাশে বাইক নিয়ে আসছে। হঠাৎ করেই আমার হাত ধরে বলে,
“এতো রেগে আছো কেন?

আমি উনার হাত ধরার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি হাতটা ছেড়ে দিয়ে বলে,

“বাইকে বসো। তোমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।

অতঃপর ভাবলাম উনার উপর রাগ করে কি লাভ। উনি কি কিছু করেছেন নাকি। আমি কেন তার উপর বিরক্ত হচ্ছি। মাথা ঠান্ডা করে উনার পিছনে বসলাম। কিন্তু এবার আর উনার ঘাড়ে হাত রাখলাম না।

উনি বাইক চালাচ্ছে। হঠাৎ বলে উঠেন,
“তুমি কার রাগ আমার উপর ঝাড়ছো বলো তো।

“কারো রাগ না

“তাহলে হঠাৎ এই ব্যবহার কেন করছো।

“কি ব্যবহার করলাম

“না কিছু না। এখন কি বাসায় যাবে।

“না।

“কেন?

“এমনেই মন চাইছে তাই।

“কিন্তু সময় তো আছে। বাসায় গিয়ে খেয়ে নাও তারপর টিউশনিতে যেয়ো।

“আপনি বাইক থামান তো।

“কেন।

“থামাতে বলেছি তাই।

উনি বাইক থামিয়ে বলে,
“কি হয়েছে?

“আপনি আপনার বাইক নিয়ে যান এখান থেকে। আমি হেঁটেই যেতে পারবো।

বলেই সামনে ফুটপাতে হাঁটতে লাগলাম। উনি পেছন থেকে দুবার “ভূতনি” বলে ডাকলেন। আমি সাড়া না দিয়ে চলে এলাম।
হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করেই আবারো কেউ আমার হাত ধরল। আমার হাত ধরে সে তার দিকে ঘুরাল। নিরব এই দুপুরে আশেপাশে তেমন কেউ নেই শুধু কিছূ গাড়ি ছাড়া। ফুটপাতের কিছু দোকান খুলা। আহিয়ান ঠিক আমার সামনে আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে। তার চোখ দুটি স্থির। মুখটায় খানিকটা বিরক্ত, নাকি অনেক বিরক্ত।
হালকা বাতাস বয়ে যাচ্ছে, এই বাতাস শরীরে কাটা দিয়ে তুলছে। শীত লাগছে, আমি খানিকটা শক্ত হয়ে বলি,

“আমার হাত ছাড়ুন।

উনি ভ্রু কুঁচকে বলেন,
“কি হয়েছে সেটা তো বলো!

আমি উনার থেকে হাত ছাড়িয়ে বলি,
“ছুঁবেন না আমায়।

বলেই চলে এলাম। হাঁটতে হাঁটতে অনেকখানি চলে এসেছি। উনি এখনো আমার পিছু পিছু হাঁটছে আর বলছে,

“ভূতনি, এই ভূতনি শোন না।

আমি পিছনে না ফিরে হেটে যাচ্ছি। হঠাৎ করেই মনে হলো কেউ গুঁতো দিলো আমায়। আমি পিছনে ফিরে দেখি উনি একটা গাছের ডাল হাতে নিয়ে আমাকে খোঁচা দিচ্ছে। আসার সময় আশপাশ অনেক বড় বড় গাছ দেখেছি। সেখান থেকেই তুলেছে নিশ্চিত। আমি বলে উঠি,

“খোঁচা দিচ্ছেন কেন?

“ছুঁতে মানা করেছো তাই খোঁচা দিচ্ছি। তোমার জন্য মাঝ পথে বাইক ছেড়ে চলে এসেছি। বাইকের চাবি ও বাইকে।যদি আমার বাইক তোমার কারনে চুরি হয় না তো দেখো তোমার কি করি।

“আপনাকে বাইক এভাবে ফেলে কে আসতে বললো।

“তুমি!

“কিহ? আমি কখন বললাম।

“মানে তুমি বাধ্য করেছো তাই।

“এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে ওখানে গেলেই তো পারেন।

“তুমিও চলো আমার সাথে।

“আপনার সমস্যা কি বলুন তো।

“কিছু না।

“ধুর।

উনি কোমরে হাত দিয়ে বলে,
“ভূতনি! যদি বাইকের কিছু হয় না দেখো!

“আমাকে থ্রেড না দিয়ে গিয়ে দেখুন না।

আমার কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে সরে দাঁড়ালেন। আমি রেগে আবারো উল্টো পথে হাঁটা ধরলাম। একটু শান্তি দিবে না এই লোকটা আমায়। কতোখানি পথ হাটাচ্ছে আমাকে দিয়ে। আমার পিছনে পিছনে ডাল টা হাতে নিয়ে ঘুরাতে ঘুরাতে আসছে। আজব লোক একটা!

বাইকের কাছে এসে আমি বাইক উঁকি দিয়ে দেখছি। উনি ডাল টা নিয়ে আমার মাথায় বাড়ি দিয়ে বলে,

“কি খুঁজছো!

“চাবি! বাইকের চাবি কোথাও?

“মনে হয় চোর শুধু চাবি নিয়ে চলে গেছে, বাইক নিতে ভুলে গেছে।

“পাগল হয়েছেন!

“না তুমি হয়েছ! ধরতেই পারলে না আমি মিথ্যে বলেছি!

অতঃপর বাইকে বসে বলল,
“নাও বসে পরো‌। তোমার চেয়ে আমার কাছে আমার বাইক ইম্পর্ট্যান্টে, এটাকে হারাতে পারবো না আমি।

আমি চোখ ছোট ছোট করে উনার দিকে তাকিয়ে আছি। ইচ্ছে তো করছিল ওই ডাল টা দিয়ে উনার মাথা ফাটিয়ে দিই। যদিও ডাল টা ভেঙে যাবে উনার মাথাও আস্ত থাকবে, মাঝখান থেকে আমার হাতটা যাবে!

উনি আমার সামনে চুটকি বাজিয়ে বললেন,

“বসবে কি না বলো। তোমার দেরি হয়ে যাচ্ছে এখন। তোমার জন্য অনেক হেঁটেছি।

আমি হেলমেট মাথায় দিয়ে পেছনে বসে বলি,
“আপনার কারনে আমি আজ অনেক হেঁটেছি। এক রাস্তা দুবার হাটালেন আপনি।

“তাহলে তোমার কি মনে হয় এই রাস্তা আমি একা একা আসতাম। যদিও বাইক নেবার জন্য এখানে আবার আমাকে আসতে হতো। আর আসতেই যদি হয় একা কেন আসবো। তোমাকেও সাথে করে নিয়ে যাবো।

“সোজা বললেই তো হয় মরলে একা কেন মরবো..

“ভূতনি কে সাথে নিয়ে মরবো! হি হি হি!

“রাখুন আপনার হি হি হি! চলুন

“যাচ্ছি। লেট হলে তোমার জন্য হবে আমার কোন দোষ নেই।

“আপনি তো সাধু না।

“না সাধুরা তো বিয়ে করে না কিন্তু আমি তো করেছি!

আমি একটা মুখ ভেংচি দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম। বেশ বিরক্ত লাগছে। সিফাতের ‌বাজে ব্যবহারের কারনে আমার মনটাই খারাপ হয়ে আছে। উফ কি ছেলে আমার পুরো মনের উপর প্রভাব ফেলে দিল। সারাটা দিন মনে হচ্ছে আজ খারাপ যাবে।

উনি আজও আমাকে রিনুর বাসার সামনে নামিয়ে দিলেন। আমি কোন কথা না বলে বাড়িতে চলে গেলাম। উনার সাথে কথা বলতেই কেন জানি ইচ্ছে করছে না। আমি সিফাতের সাথে তাকে একসাথে দেখতে পারছি না। ছেলেটার জন্য আমার ঘৃণা কোনমতেই কমছে না। ধাপ্পাবাজ ছেলে একটা!
.
অর্ণ’র‌ বাসা থেকে বেরিয়ে দেখি উনি বাইক নিয়ে বসে আছেন। হাতে তার বিখ্যাত ফোন টা নিয়ে। তবুও উনি এসেছেন আমি তো ভেবেছি আসবে না উনি। আমি গিয়ে উনার বাইকে বসলাম। তখনকার ব্যবহারের জন্য বেশ খারাপ লাগছে। কেন করলাম এমনটা।

বাইকে বসার পর উনার ঘাড়ে হাত রাখলাম, কেন রাখলাম জানি না কিন্তু রাখতে ইচ্ছে হলো। আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি খুব তাড়াতাড়ি সন্ধ্যে হয়ে যাচ্ছে। কারন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। নাহলে আগে আমি দুপুরে বাসায় এসে তারপর ওখান থেকে রিনু কে পড়াতে গিয়েছি কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সময় সব ফুরিয়ে যাচ্ছে। নাগাল পাচ্ছি না সময়ের। যদিও সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না।

আমাকে নামিয়ে দেবার পর আমি উনার হেলমেট টা রেখে বলি,

“চা খাবেন!

“না।

“বলছিলাম কি?

“লেট হচ্ছে আমার যেতে হবে।

বলেই ফুড়ৎ করে বাইক নিয়ে চলে গেলেন। মনে হচ্ছে রেগে আছেন। যদিও উনাকে আমার উপর বেশিক্ষণ রাগ করে থাকতে দেখে নি। সেদিন এতো কিছু বলার পর ও ট্রেনে উনি ভালোভাবেই কথা বলেছিলেন আমার সাথে। মনে হচ্ছে এই রাগও তেমন’ই ক্ষণস্থায়ী থাকবে। উনার রাগ বেশি কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী নয়। ঘরে এসে বিছানায় ধপাস করে বসে পড়লাম। কিছুই করতে মন চাইছে না।

ফ্রেস হয়ে এসে রান্না করলাম, ক্ষিধে পেয়েছে খুব। আচ্ছা উনি কি খেয়েছেন? আজ হয়তো আকাশ ভাইয়া’র বাসায় থাকবেন উনি। তাহলে তো খাবেন। রান্না আজ তেমন কিছু করলাম না। শুধু ভাত রান্না করেছি। গতকালকে বাসি তরকারি এখনো আছে। এগুলো দিয়েই কোনমতে খেয়ে উঠৈ যাবো। সত্যি বলতে আমার রাঁধতেই মন চাইছে না।

মিতু আর মুন্নি আপু চলে এলো। মুন্নি আপু এসেই বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। মিতু আপু ফ্রেস হয়ে রাঁধতে শুরু করলেন। আমি বিছানার উপর বসে পড়তে বসলাম।
হঠাৎ করেই বাইকের আওয়াজ পেলাম। নিজের অজান্তেই দাঁড়িয়ে গেলাম। মুন্নি আপু ঘুমাচ্ছে আর মিতু আপু রাধছে। আমি রান্না ঘরে গেলাম। দেখি আপু নিচে বসে সবজি কাটছে।

আমি হাঁটতে হাঁটতে জানালার কাছে এলাম। উঁকি দিলাম জানালা দিয়ে কিন্তু কেউ ছিল না সেখানে। তাহলে এটা কি আমার ভ্রম। আপু বলে উঠে,

“কিরে কিছু বলবি!

“না আপু। কি রাধছো দেখতে এলাম।

“তেমন কিছু না। বাঁধাকপি এনেছি ভাজি করবো বলে। আর ভাবছি ডিম ভুনা করবো।

“ওহ আচ্ছা।

“জানিস নিহা কি হয়েছে?

“কি?

“আচ্ছা রান্না শেষ করে নেই ছাদে গিয়ে বলবো।

আমি মাথা দুলিয়ে সেখান থেকে চলে এলাম।

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here