ভালোবাসার_ফোড়ন_২ #মিমি_মুসকান #পর্ব_৩৬

0
390

#ভালোবাসার_ফোড়ন_২
#মিমি_মুসকান
#পর্ব_৩৬

ফোনটা রিসিভ করে কানের কাছে নিয়ে চুপ হয়ে থাকি। ওপাশ থেকেও চুপ! নিঃশ্বাসের শব্দ পাচ্ছি আমি। বলে উঠি,

“হ্যালো!

ওপাশ থেকে বলে উঠে,
“ভূতনি!

আমি ঘরে এসে উঁকি দিয়ে দেখি উনি কানে ফোন নিয়ে খিলখিলিয়ে হাসছে। কোমরে হাত রেখে বলে,

“এটা কি হলো!

“কি আর হবে, দেখলাম তুমি আমার গলা চিনতে পারো কি না।

“আমার সেই কুখ্যাত ডাকনাম শুনে যে কেউ চিনতে।

“কুখ্যাত কেন বলছো বলো বিখ্যাত। নাম্বার টা সেভ করে রাখো পারলে মুখস্থ করো। যখন দরকার পরবে তখন’ই ফোন করবে। আমি কোন সুপার হিরো না যে তুমি বিপদে পড়লেই আমি বুঝে চলে আসবো। বুঝলে!

“কিন্তু আজ পর্যন্ত তো এমনটাই হয়েছে বলে আমার মনে হয়।

“তবে সময়সাপেক্ষ! যদি আমি বুঝতে পারতাম তাহলে আমি আরো আগেই আসতাম।

“নিতি কে কিছু বলেছেন।

“চা আনতে বলেছিলাম তোমাকে?

আমি মুখ ভেংচি দিয়ে উঠে গেলাম। কিছুক্ষণ পর চা নিয়ে এসে উনার সামনে বসলাম। দেখি উনি নিজের জ্যাকেট খুলছেন। আমি ভ্রু কুঁচকে বলি,

“জ্যাকেট খুলছেন কেন?

“গরম লাগছে তাই!

“গরমের মধ্যে চা খাবেন।

“চা খাবো মাথাব্যাথা কমাতে।
বলেই চায়ের কাপ নিয়ে চুমুক দিলেন। আমি চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলি,

“কিছু বলেছিলেন নিতি কে?

উনি শীতল গলায় বলেন,
“ওকে কিছু বলার চেয়ে কথা না বলে থাকা ভালো।

“মানে!

“মানে না এমন তুমি কারো উপর বেশি রেগে থাকলে তার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দাও। সে এমনেতেই নিজের ভুল বুঝতে পারবে।

“আপনাদেরকে বন্ধুত্ব তো অনেক দিনের

“তাই বলে সবকিছুর ক্ষমা হয় না

“আপনার মনে হয় সে আমাকে সরি বলবে।

“সরি তো বলবে, তার সাথে কাল থেকে তুমি আমার সাথেই ভার্সিটিতে যাবে।

“যেন আমার আরো ভাল ক্লাস নিতে পারে।

“সেই চান্স নেই, আমি থাকবো তোমার সাথে।

“তাহলেই হলো।

“হ্যাঁ হবে তো অনেককিছু! এতো কিছু করছে তোমার থেকে আমাকে আলাদা করার জন্য। কিন্তু এতো কিছুর পরও যদি দেখে তুমি আমার সাথেই আছো তখন নিজ থেকেই হার মেনে যাবে।

“আপনার মনে হয় নিতি সেই দলের লোক।

“না তবে মানুষ বদলাতে সময় লাগে না।

উনার কথায় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম! অতঃপর উনি আমার ফোন থেকেই চাচা কে কল করলেন। চাচা, মা বাবা সবার সাথে কথা বললাম। মা কে বলে দিলাম এটা আমার ফোনের নাম্বার। যখন মন চায় সে যেন তখন’ই কল করে।
.
দুজনেই একসাথে বের হলাম। আমাকে বাইকে করে রিনুর বাসার সামনে নামিয়ে দিলেন। আমি উনাকে বিদায় দিয়ে তিনতলায় উঠলাম। রিনুরা তিনতলায় থাকে। দরজা নক করতেই রিনুর মা দরজা খুলে আমার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালেন। তার তাকানোতে আমি একটু হাসার চেষ্টা করলাম। আমি রুমে গিয়ে বসলাম। তিনি আমার পাশে এসে বসলেন। আমি বলি,

“রিনু নেই।

“এই একটু বাইরে গেছে এসে পরবে, আচ্ছা নিহা তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করি।

“জ্বি করুন

তিনি অস্বাভাবিক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন। তার চাহনিতে আমার শরীর শিউরে উঠলো। কে জানে কি জিজ্ঞেস করবে। উনি বলে উঠেন,

“তুমি সাথে যে ছেলেটা রোজ আসে সে কে?

তার কথায় আমি বেশ ভালো ভাবেই চমকে যাই। তবুও নিজেকে স্বাভাবিক করে বলি,

“কোন ছেলে?

“মিথ্যে বলো না। আমি জানি তুমি একা থাকো। তোমার সেই দাদা দাদী তোমার একমাত্র আশ্রয় কিন্তু ইদানিং দেখছি তুমি প্রতিদিন একটা ছেলের বাইকে করে আসো। সে কে?
বলেই সন্দেহের দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি তৎক্ষণাৎ বলি,

“আন্টি সে আমার বন্ধু!

উনার চোখ থেকে সন্দেহ এবার চলে গেল। শীতল গলায় বলেন,

“ছেলে বন্ধুরা সবসময় ভালো হয় না। এই শহরে তুমি একা থাকো তোমারটা তোমার নিজেকেই দেখতে হবে। মেয়ে মানুষ হলো ফুলের মত। এর সৌন্দর্য সবাই নিতে চায়। কিন্তু সবাই সেটা রাখতে চায় না। একবার তার সৌরভ নিয়েই ছুঁড়ে ফেলে দেয়। তোমাকে তাই সাবধান করছি সতর্ক থেকো।

তার কথায় আমি ভালো মেয়ের মতো নাড়লাম। তিনি হয়তো আরো কিছু বলতে চেয়েছিলেন কিন্তু তা আর বলা হলো না।‌ দরজা আবারো কেউ নক করল। রিনু এসেছে। তাকে দোকানে পাঠানো হয়েছিল কিছু আনার জন্য হয়তো। পলিথিন ব্যাগ টা আম্মু কে দিয়ে আমার কাছে চলে আসে সে।

রিনু কে পড়িয়ে বের হলাম তোহার বাসায় যাওয়ার জন্য বের হই। রাস্তায় হাঁটছি আর রিনুর আম্মুর কথা গুলো ভাবছি। তার মানে আমাকে আর আহিয়ান কে দেখেছিলেন একসাথে। আর সেটা একবার না অনেকবার তাইতো এই কথা বলেছেন। এসব ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। কারন তিনি আর যাই বলুক না কেন এসব আমার ভালোর জন্য ভেবেই বলেছেন। তিনিও আমার ভালো চান তাহলে !
.
সন্ধ্যায় উনি আমাকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলেন। ইয়ান নাকি তাকে বলে দিয়েছে জলদি জলদি বাসায় ফিরতে। দু চার বার ফোন ও দিয়ে ফেলেছে বাইকে চালানোর সময়। তাই আর উনি আজ থাকলেন না। আমি ঘরে না গিয়ে গেলাম দাদা দাদী’র কাছে। কিছুক্ষণ তাদের সাথে গল্প করার জন্য’ই গেলাম তাদের কাছে। অতঃপর গল্প করে বের হতে অনেক দেরি হয়ে গেল। ঘরে এসে দেখি ঘরের দরজা খোলা। এর মানে মিতু আর মুন্নি আপু চলে এসেছে।

ঘরে এসে ব্যাগটা বিছানায় রেখে বসে পড়লাম। মিতু আপু রান্না ঘর থেকে বলল,

“নিহা চলে এসেছিস।

“হুম আপু।

“এতো দেরি হলো যে!

“আরো আগেই এসেছি, দাদির কাছে ছিলাম।

“ওহ আচ্ছা!

বাথরুম থেকে মুন্নি আপু বের হলো। তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে আমাকে বলল,
“বাসায় আজ কেউ এসেছিল!

“না তো।

“তোর সাথে দেখা করতে কেউ আসে নি।

“না তো।

“কোন মেয়ে!

আমি ভ্রু কুঁচকে বলি,
“না।

আপু চোখ মুখ শক্ত করে বলে,
“কোন ছেলে!

আমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলাম। মিতু আপূ হাতে খুন্তি নিয়ে রান্না ঘর থেকে বের হয়ে বলল,
“কি সব বলছিস তুই মুন্নি!

মুন্নি আপু কোন ভাবান্তর হলো না। সে তোয়ালে রেগে বিছনায় গা এলিয়ে দিয়ে শীতল গলায় বলল,

“কি জিজ্ঞেস করলাম নিহা, কোন ছেলে এসেছিল।

“ননা তো!

“তুই সিউর।

আমি হা হয়ে তাকিয়ে রইলাম। আসার মধ্যে শুধু আহিয়ান এসেছিল। ওর কথা বললে সবাই এখন খারাপ ভাববে। মুন্নি আপু আবারো বলে উঠে,

“কিছু বলছিস না কেন?

মিতু আপু বলে,
“ও যখন একবার না বলেছে তারপরও এতোবার জিজ্ঞেস করছিস।

“করছি তার কারন আছে।

“কি কারন!

মুন্নি আপুর কথায় আমার বুক কেঁপে উঠলো। পুরো শরীর কাঁপতে লাগল। মুন্নি আপু বিছানার ওপাশ থেকে একটা জ্যাকেট বের করে বলল,

“এটা কার নিহা!

আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি। এই জ্যাকট তো আহিয়ানের। তার মানে উনি জ্যাকেট নিতে ভুলে গেছেন আর এটা মুন্নি আপুর হাতে পড়েছে। ইয়া আল্লাহ এটাই বাকি ছিল। শেষমেষ মুন্নি আপু।

“কিরে কিছু বল!

“আপু!

মিতু আপু বলে,
“হয়তো এটা নিহা’র।

“কিন্তু এটা ছেলেদের।

“এখন কি ছেলে আর মেয়ে আছে নাকি। যার যেটা পছন্দ সে সেটাই পরে।

“কিন্তু নিহা তোকে তো কখনো এটা পড়তে দেখে নি।

আমি একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলি,
“আপু এটা আমার না।

মিতু আপু কপাল কুঁচকে আমার দিকে তাকায়। মুন্নি আপু হেসে বলে,
“জানতাম। এখন বল এটা কোন ছেলের!

“কোন ছেলের না আপু। এটা ইতি’র। গতকাল আমরা দু’জন বের হয়েছিলাম না। ইতি এই জ্যাকেট পড়ে এসেছিল। পরে গরম লাগছিল বলে খুলে আমার হাতে দেয় আর আমি নিয়ে আসি।

“কই আমি তো কাল তোর হাতে এটা দেখলাম না।

“হাতেই তো ছিল। হয়তো তুমি খেয়াল করো নি।

“কিন্তু..

বলার আগেই মিতু আপু বলে,
“তুই কখনো ভালো ভাবে কিছু্ই দেখিস না। এটা ওর’ই ছিল হয়তো তুই খেয়াল করিস নি। এখন বাদ দে তো এসব।

বলেই মিতু আপু রান্না ঘরে চলে গেল। মুন্নি আপু খানিকক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে জ্যাকেট টা আমার কাছে দিল। বাহ কি সুন্দর মিথ্যে বললাম আমি। যদিও মনে হচ্ছে না মুন্নি আপু সেটা বিশ্বাস করেছে। তার মনে নিশ্চিত এই ব্যাপারে কিছু চলছে।
.
পরপর তিনদিন ভার্সিটিতে গেছি, আহিয়ান তিনদিন’ই চিপকে আমার সাথে লেগেছিল। আমাকে ভার্সিটিতে নিয়ে আসা থেকে শুরু করে ক্লাস শেষ হওয়া অবদি ক্লাসের বাইরে থাকতো। নিতি’র সাথে এই তিনদিন কোন কথা বলে নি সে। শুধু তিনি না আকাশ ভাইয়া ও চুপ। এর মাঝে ঘটেছে আরেকটা কান্ড! ইতি আমার আর আহিয়ানের বিয়ের ব্যাপারটা জেনে গেছে। এই নিয়ে বেশ হইচই করেছে সে। তবে আমি তাকে জানিয়ে দিয়েছি একথা যেন সবাই না জানে। কারন আহিয়ানের মা বাবা এখনো বিয়ের কথা জানে না। তারা জানার আগে অন্যকেউ এই ব্যাপারে জানলে সেটা আহিয়ানের বাবার কানে যেতে সময় লাগবে না। নিজের ছেলের বিয়ের কথা অন্য জনের মুখ থেকে শুনলে অবশ্যই তার সেটা ভালো লাগবে না!

বলা বাহুল্য আহিয়ান টিনা থেকে শুরু করে নাহান এদের কারো সাথেই কোন কথা বলছে না। এখানে নাহান আর আনাফ ভাইয়া কিছু করে নি সেটা ঠিক তবে এতো কিছু দেখেও তারা কিছু বলেনি তাই তাদের উপর আহিয়ানের ক্ষোভ জমে আছে।
.
আজ ক্যাটিনে বসে আমরা চারজন গল্প করছি। কিছুক্ষণ পর পরই খিলখিলিয়ে হাসছি সবাই শুধু আহিয়ান বাদে। উনার হাসি অমাবস্যার চাঁদের মতো। সবসময় দেখা যায় না।

এর মাঝেই তারা সবাই এসে উপস্থিত হলো ক্যান্টিনে। নিতি আমার দিকে একবার তাকাল। আমি ঠিক আহিয়ানের পাশে বসে আছি। এটা দেখে যে তার বেশ জ্বলছে সেট আমি বুঝতে পারছি। এদের সবার সাথে আজ সিফাতকেও দেখা যাচ্ছে। যদিও গত ৩ দিন ওর মুখ দর্শন হয় নি।

তারা সবাই আহিয়ানের কাছে সরি বলল। আহিয়ান বলল,

“আমার সাথে কিছু করেছিস যে সরি বলেছিস।

নিতি উঠে আমাকে সরি বলল। আহিয়ান উঠে দাঁড়াল। আমার হাত ধরে বাইরে বের হলো। পেছন পেছন বাকি সবাই বের হলো। ভার্সিটির ক্যাম্পাসে সামনে আসতেই নিতি এসে সামনে দাঁড়িয়ে বলল,

“সরি তো বলছি তারপরও এতো ইগনোর কেন করছিস!

আহিয়ান আমার হাত ছেড়ে দিয়ে বলল,
“সবার সামনে যেভাবে অপমান করেছিস তেমনি সবার সামনে ওর কাছে ক্ষমা চাইবি। পুরো ভার্সিটি দেখবে তোকে ক্ষমা চাইতে।

“আহি পাগল হয়েছিস।

“তোর কাছে যা মনে হয়। ৩০ সেকেন্ড দিলাম এর মধ্যে ভেবে নে কি করবি। ক্ষমা চাইবি নাকি ওকে নিয়ে চলে যাবো আমি।

নিতি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো। ঠিক ৩০ সেকেন্ড পর’ই আহিয়ান আমার হাত ধরে চলে যেতে নিলে নিতি বলল সে সরি বলবে।

অতঃপর পুরো ভার্সিটির সামনে তারা সবাই আমার কাছে ক্ষমা চাইলো। অন্যান্য স্টুডেন দাঁড়িয়ে সবকিছু দেখতে লাগল। আমি কিছু বলতে যাবো এর আগেই আহিয়ান আমার হাতটা খপ করে ধরল। এর মানে হলো চুপ থাকো। আমি চুপ হয়ে গেলাম।

ক্ষমা চাওয়ার কিছুক্ষণ পর নিতি বলে উঠে,

“কি হলো নিহা ক্ষমা করবে না নাকি।

ইতি এর মাঝে বলে উঠে,
“হেনস্তা করার সময় মনে থাকে না এখন এসেছে সরি বলতে।

তার কথায় আকাশ ভাইয়া তার দিকে তাকাল। ইতি একটা মুখ ভেংচি দিল। আকাশ ভাইয়া মুচকি হাসি দিল। নিতি বলে উঠে,

“আমার পক্ষে যেভাবে সরি বলা দরকার সেভাবেই বলেছি। এখন যদি বলো পা ধরে ক্ষমা চাইতে তাহলে আমি তাই করছি!

ইতি পাশ থেকে বলে উঠে,
“তাই করো।

ইতির কথায় সবাই চোখ ঘুরিয়ে তার দিকে তাকায়। ইতি কাউকে পাত্তা দেয় না। নিতি আমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমি বলে উঠি,

“আরে না না আপু! কি করছো? আমি ক্ষমা করে দিয়েছি তোমাদের সবাইকে!

“বাঁচালে আমায়!

আনিকা আমার সামনে এসে হাত বাড়িয়ে বলল,
“তাহলে আজ থেকে আমরা ফ্রেন্ড! যেহেতু তুমি আহি আর আকাশের ভালো বন্ধু তাহলে আমাদের ও বন্ধু!

আমি আহিয়ানের দিকে তাকালাম। উনি বললেন,

“তোমার ইচ্ছা!

আমি হেসে হাত বাড়িয়ে দিলাম। দুজনেই হাত মিলালাম। টিনা, নিতি তারাও হাত মিলাল! তবে নিতির হাসি আমাকে যেন অন্যকিছু বলছিল!
.
কয়েকদিন পর..
মনে হচ্ছে আজকের সারা দিনটাই আমার ভালো যাবে। দিনের শুরু ভালো হলে নাকি সবকিছুই ভালো হয়। আর আমার সকাল শুরু হলো ভোরের আকাশ দেখে। চমৎকার ছিল এইটা!

বাইকে করে চলে এলেন উনি। আমি সাথে সাথেই ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে গেলাম। উনার বাইকে চড়ে বসলাম। দুজনেই একসাথে এলাম ভার্সিটিতে!
আমাকে নামিয়ে দিয়ে উনি আবারো বাইক ব্যাক করলেন। আমি বলে উঠি,

“চলে যাচ্ছেন যে!

“আকাশের গাড়ি মাঝরাস্তায় খারাপ হয়ে গেছে। ওর কাছে যাচ্ছি।

“ওহ আচ্ছা!

অতঃপর উনি চলে গেলেন। আমি একা একা এসে ক্লাসরুমে বসলাম। অপেক্ষা করছি ইতি’র! প্রায় অনেকক্ষণ”ই বসে রইলাম এভাবে। ইতি এখনো আসে নি।
হঠাৎ করেই ক্লাসে সিফাত এলো। সে ইশারায় আমাকে ডাকছিল। যদিও কয়েকদিন আগেই তার সাথে সবকিছু ঠিক হলো আমার। খুব ভালো ব্যবহার করেছে এ ক’দিন সে। আহিয়ান আমাকে বলেছে সিফাত কে সে তার ছোট ভাইয়ের মতো দেখে!

আমি সিফাতের কাছে যেতেই সিফাত বলল,

“আহি ভাইয়া তোমায় ডাকছে।

“চলে এসেছেন উনি।

“হুম!

আমি ক্লাসরুম থেকে বের হলাম। আমার পেছন পেছন সিফাতও এলো‌। আমি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে যাবো সিফাত বলে উঠে,

“আরে আরে নিচে কোথাও যাচ্ছো!

“উনি!

“ভাইয়া তো উপরে গেছেন।

“উপরে!

“হুম।

সিফাতের কথা বিশ্বাস করে আমি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলাম। উপরের ক্লাসরুম গুলো বরাবর খালিই থাকে। সিফাত আমাকে কোনার রুমে চলে যেতে বলল। বলেই আবারো সিঁড়ি’র দিকে গেল। আমি ভেবেই নিলাম সিফাত সত্যি বলছে। তা না হলে আমাকে রেখে সে চলে যেত না। আমি হাঁটতে হাঁটতে কোনার রুমে চলে এলাম। রুমটা অন্ধকার নয়। বেশ আলো আছে এতে। আমি আহিয়ান কে ডাকতে ডাকতে রুমের ভেতরে চলে এলাম। ক্লাসরুমটা খুব বড়। পুরো ক্লাসরুম খুঁজেও তাকে না পেয়ে পিছনে ফিরতেই সিফাত কে দেখতে পেলাম।

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here