সিনিয়র গুন্ডি মেয়ের ভালবাসা ** writer : Akash khan পার্ট : ৩

0
282

**সিনিয়র গুন্ডি মেয়ের ভালবাসা **

writer : Akash khan

পার্ট : ৩

**আমি আর কিছু না বলে মাথাটা নিচের দিকে দিয়ে ক্লাসে যেতে থাকি,,,।আর আমি এটাও জানি যতক্ষণ পর্যন্ত আমি ক্লাসে না ডুকি অধরা ততখন আমার দিকে ঈগল পাখির মত নরজ রাখবে,,।তাই আমিও আর ডানে বামে না তাকিয়ে ক্লাসে চলে আসি,,।ক্লাসে এসে বন্ধুদের সাথে চুপটি করে বসে একটু বই নিয়ে গাটাগাটি করতে থাকি,, । আর একটু পরে ক্লাসে স্যার আসলে মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করতে থাকি,,,।আর এভাবেই দেখতে দেখতে টিফিনের আগ পর্যন্ত সবগুলা ক্লাস শেষ করি,,,,।আর ক্লাস শেষ করে মোবাইলটা হাতে নিতেই দেখি অধরা আপু তিনবার কল দিছে,,।আর তাই আমিও আর কোন দেরি না করে ক্যান্টিনে চলে আসি,,,।আমি ক্যান্টিনে এসে দেখি,,অধরা,শিমলা, অন্তরা সহ আরো দুইজন আপু একসাথে বসে আছে,,,।আর আমি তাদের সামনে যাওয়ার সাথে সাথে অধরা বলল,,,,

অধরা : শুভ্র তোকে তিন বার কল দিলাম,, কল রিসিভ করিস নাই কেন,,,?(দমক দিয়ে বলল)

আমি : আপু ক্লাসের মধ্যে ফোন সাইলেন্ট করে রাখি তো,, তাই বুঝতে পারি নাই আপনি কল দিছেন,,(ভয়ে ভয়ে বললাম)

অধরা : আচ্ছা,, ঠিক আছে,,।পরবর্তীতে যেন আর এমন না হয়,,।এখন বস আর কী খাবি অর্ডার কর,,,(সাভাবিক ভাবেই বলল)

আমি : আপনি যা খুশি অর্ডার দেন,,আমার একটা হলেই হলো,,,,,

**আমার কথা শুনে অধরা নিজের পছন্দ মত কিছু খাবার অর্ডার করলো,,।তারপর খাবার আসলে আমি অধরার পাশে বসে চুপটি করে খাবার খেতে থাকি,,।আমরা সবাই মিলে যখন খাবার খাচ্ছি,,তখন খাবারের মাঝ খানে শিমলা আপু আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,

শিমলা : শুভ্র শুনলাম তুমি নাকি কার সাথে প্রেম করো,,(মুসকি হেসে বলল)

**শিমলা আপুর কথা শুনার সাথে সাথে আমার গলার মাঝ খাবার আটকে,যায় আর আমি কাশতে থাকি,,।এমন অবস্থা দেখে অন্তরা আপু এক গ্লাস পানি আমার দিকে এগিয়ে দেয়,,,।আমি পানিটা এক নিশ্বাসে শেষ করে,,অধরা আপুর দিকে তাকাই,,।তখন আমি দেখি অধরা আপু খাওয়া বাদ দিয়ে আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,।হয়তো আমি কী বলি এটা শুনার জন্য,,। তখন আমি বললাম,,,,

আমি : না,,আপু আপনি যেটা শুনছেন সেটা একদম ভুল,,।আমি কারো সাথে প্রেম করি না,,আপনাকে কেউ হয়তো আমার নামে মিথ্যা বলছে,,,,,(নরম সুরে বললাম)

**আমি কথাটা বলেই অধরা আপুর দিকে তাকাই,। কারণ শিমলা আপুর কথা শুনে অধরা আপু আমার দিকে যেভাবে তাকাইছে মনে হচ্ছে আমাকে এখনি কাচা চিবিয়ে খাবে,,।আর আমার কথা শুনেই অধরা আপুর মুখ থেকে রাগের ছাপটা চলে গিয়ে হালকা হাসি ফুটে ওঠে,,।তখন পাশে থেকে অন্তরা আপু বলল,,,

অন্তরা : কেন প্রেম করো না,,? আজকাল তো সবাই প্রেম করে,,।আর তোমার ওপর তো কলেজের অনেক সিনিয়র ও জুনিয়র মেয়েরাই ক্রাশ খেয়ে আছে,,।তাদের মাঝ খান থেকে একজন কে বেছে নিয়ে একটা প্রেম করেই ফেলো,,,(আমার দিকে তাকিয়ে মুসকি হেসে বলল)

**অন্তরা আপুর কথা শুনে আমি আবার অধরা আপুর দিকে তাকাই,,।তখন দেখি অধরা আপুর ফর্সা মুখটা রাগে লাল হয়ে আছে আর আমার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে আছে,,,।তখন আমি বললাম,,,,,

আমি : না,না আপু আমি কখনো প্রেম ভালবাসায় জড়াবো না,,,।আপনারা তো জানেন আমার এই পৃথিবীতে আপন বলতে কেউ নাই,,।আজ যদি অধরা আপুরা আমাকে আশ্রয় না দিতো তাহলে আমার কী অবস্থা হতো,, আমি নিজেও জানি না,,।তাই জীবনে এমন কোন কাজ করবো না যাতে করে অধরা আপুর পরিবারের কোন প্রকার অসম্মান হয়,,,,,

**কথাটা বলেই আমি অধরা আপুর দিকে তাকিয়ে দেখি,, আপু আমার দিকে অভাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,।তখন অধরা আপু বলল,,,

অধরা : শুভ্র তোর খাওয়া শেষ হইছে,,,,

আমি : হুম শেষ,,,,,

অধরা : তাহলে ক্লাসে যা,,,।আর ছুটি হলে গেইটের সামনে আমার জন্য অপেক্ষা করবি,,,

আমি : আচ্ছা, ঠিক আছে,,,

**কথাটা বলে যেই আমি সেখান থেকে চলে যেতে থাকি ঠিক তখন পিছন থেকে অন্তরা আপু বলল,,,

অন্তরা : শুভ্র তুমার ফোন নাম্বার টা দাও তো,,,(হেসে বলল)

আমি : কেন,,, আপু? আমার ফোন নাম্বার দিয়ে কী করবেন,,,,

অন্তরা : কেন,, ফোন নাম্বার দিতে কী কোন প্রবলেম আছে নাকি আর যদি কেউ তুমাকে না করে থাকে তাহলে দেওয়া লাগবে না,,,(গম্ভীর সুরে বলল)

আমি : না, না সমস্যা নাই,,।০১৯*********এটা আমার ফোন নাম্বার,,

**নাম্বার দিয়ে আমি সেখান থেকে তারাতারি চলে আসি,,।কারণ আমি যখন অন্তরা আপুকে আমার মোবাইল নাম্বার দেই, তখন অধরা আপু বার বার আমাকে চোখের ইসারায় মানা করছিলো,,।আর এটাও জানি এর জন্য আমার কপালে কষ্ট আছে,,।কিন্তু আমার তো কিছু করার ছিলো না,,,

**তারপর সেখান থেকে আমি সোজা ক্লাসে চলে আসি,,।ক্লাসে এসে বন্ধুদের সাথে গল্প করে আর এক এক করে বাকি ক্লাস গুলো শেষ করি,।তারপর কলেজ ছুটি হলে আমি কলেজ গেইটের সামনে এসে অধরা আপুর জন্য অপেক্ষা করতে থাকি,,।একটু পরে দেখি অধরা আপু খুব দ্রুত পায়ে হেটে আসতেছে,,।আর আমার কাছে এসে বলল,,,,

অধরা : তারাতারি একটা রিকশা ডাক,,,,(রাগি কন্ঠে বলল)

আমি : আজকে কী রিকশা করে বাসায় যাবেন,,,,(নরম সুরে বললাম)

অধরা : কুত্তা বেশি কথা না বলে,,তোকে যা করতে বলছি সেটা কর,,(রাগি ভাবে বলল)

**অধরা আপুর এমন রাগ দেখে আমি আর ভয়ে ওনাকে কিছু জিঙ্গাসা করি নাই,,।তখন তারাতারি করে একটা রিকশা ডেকে এনে,, আমি বললাম…..

আমি : এই যে আপু রিকশা এসে গেছে,,।আপনি এখন যান,,,,

** অধরা আপু রিকশায় ওঠে বসলে,, আমি সেখান থেকে হেটে চলে যেতে থাকি,,। তখন অধরা বলল,,,

অধরা : ঐ তুই কোথায় যাস,,,, (দমক দিয়ে বলল)

আমি : আপু আপনি রিকসা নিয়ে চলে যান,,আমি হেটে চলে আসবো,,,

অধরা : তোর হেটে যাওয়া লাগবে না,,।রিকশায় ওঠ একসাথে যাবো,,,

আমি : না, আপু আপনি রিকশায় একাই যান,,।আমি হেটে চলে যেতে পারবো,,

**কথাটা বলেই আমি যেই সামনের দিকে হাটা ধরলাম ঠিক তখন কে যেন পিছন থেকে আমার শার্টের কলার ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তখন আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি অধরা আপু আমার কলার ধরে টেনে নিয়ে রিকশায় বসিয়ে দেয়,,।আর সেও আমার পাশে বসে পরে,,।রিকশার মাঝে অধরা আপু আমার সাথে কোন কথা বলে নি,,তবে এটা বেশ বুঝতে পারছি আমার সেই পরিমাণ রেগে আছে,,।কারণ রিকশায় বসে কিছুখন পর পর জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলছিল,, আর বিরবির করে কী যেন বলছিলো,,।রিকশা আমাদের বাসার সামনে আসতেই অধরা আপু আমার হাতে একটা একশ টাকার নোট দিয়ে বলল,,,

অধরা : রিকশা ভাড়াটা দিয়ে সোজা আমার রুমে আয়,,একটু দরকার আছে,,,

**কথাটা বলেই আপু চলে গেল,,। আর আমিও রিকশা ভাড়াটা মিটিয়ে অধরা আপুর রুমে যাই,,।আর অধরা আপুর রুমে গিয়ে দেখি ওনি খাটের বসে, হাতে একটা স্কেল নিয়ে বসে আছে,,।তখন আমি বললাম,,,

আমি : আপু এই নিন ৭০ টাকা,,। রিকশা ভাড়া ৩০ টাকা লাগছে,,।

**আমার কথা শুনে অধরা আপু বসা থেকে ওঠে দাড়িয়ে রুমে দরজাটা বন্দ করে আসে,,।আর রাগি একটা লুক নিয়ে আমার সামনে দাড়িয়ে বলল,,,

অধরা : তুই অন্তরাকে তোর মোবাইল নাম্বার দিলি কোন সাহসে,,,(জাজালো কন্ঠে বলল)

আমি : আসলে আপু ওনি এমন ভাবে চেপে ধরলেন যে না দিলে খারাপ দেখায়,,। তাই বাধ্য হয়ে নাম্বার টা দিছি,,(মলিন কন্ঠে বলল)

অধরা : আমি তোকে বার বার চোখের ইসারায় না করতে ছিলাম,, সেটা কী তুই দেখিস নি,,,

আমি : সরি আপু ভুল হয়ে গেছে,, আর এমন করবো না,,(মলিন কন্ঠে বললাম)

অধরা : তোকে যদি কখনো,, অন্তরা বা অন্য কোন মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলতে দেখি তাহলে তোর যে কী অবস্থা আমি করবো সেটা তুই কল্পনাও করতে পারবি না,,, (রাগে চোখ লাল করে বলল)

আমি : না আপু আমি কোন মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলি না,,।আর অন্তরা আপুর সাথেও বলবো না,,,(ভয়ে ভয়ে বললাম)

অধরা : আচ্ছা ঠিক আছে,,।এখন ভুল যেহেতু করছিস শাস্তি তো পেতেই হবে, এখন ৩০ বার কান ধরে ওঠ বস কর,,,

আমি : আপু শরীরটা অনেক ক্লান্ত লাগছে,,।আজকের মত মাফ করে দেন,,,,আর এমন করবো না,,(মুখটা মলিন করে বললাম)

অধরা : তোর মুখে আপু ডাকটা শুনতে বিষের মত লাগে আমার,,,আর যদি কথায় কথায় আপু ডাকিস তাহলে তোর খবর আছে,,।এখন কথা না বাড়িয়ে ওঠ বস শুরু কর,,,নাহলে তোর খবর আছে এখন,,,,(রাগি কন্ঠে বলল)

**অধরার এমন কড়া কথা শুনে আমিও কান ধরে ওঠ বস শুরু করি,,।কারণ যেহেতু একবার বলছে করতে হবে,,, তাহলে করতেই হবে,,,।আমি কান ধরে ওঠা বসা করছি আর অধরা গুনতেছে।এভাবে ২০ করতেই আমার সারাশরীর ঘেমে গেছে,,।তখন অধরা আমাকে থাকিয়ে দিয়ে নিজের ওড়না দিয়ে আমার মুখ ও কপালে ঘাম মুছে দেয়,,।তখন অধরা বলল,,,,

অধরা : শুভ্র,, তুই জানিস আমি একটু বেশি রাগি।তাই আমার কথার বাহিরে একদম যাবি না,,,,।আমি যা বলবো তুই তাই করবি। আর অন্তরা কল দিলে একদম ধরবি না,,,।এখন যা,, গিয়ে ফ্রেস হয়ে খেতে আয় একসাথে খাবো,,।

**আমি আর কিছু না বলে সেখান থেকে সোজা আমার রুমে চলে আসি,,।রুমে এসে একটু রেস্ট নিয়ে ফ্রেস হতে চলে যাই,,,।তারপর ফ্রেস হয়ে এসে চলে যাই খাবার খেতে,,।সেখানে অধরা আপু আর আমি একসাথে খাবার খেয়ে আমি আমার রুমে চলে আসি,,।পরে বিকালের দিকে বাড়ির কিছু টুকটাক কাজ করে আর ছোট নবাবের সাথে খেলাধুলা করেই দিনটা পার করে দেই,,।সন্ধ্যা সময় বই নিয়ে পড়তে বসি,,আরক ৯টা সময় খাবার খাওয়ার জন্য ডাকে,,।সবার সাথে বসে খাবার খাওয়ার পরে,,আমি একটু ছাদে যাই,,,।আসলে গরমের সময় রাতে ছাদের ওপর বসে হাওয়া খাওয়ার মজাই আলাদা,,।তাই ছাদের এক কোনায় দাড়িয়ে আকাশের তারা দেখছি,,আর হাওয়া খাচ্ছি,,।এমন সময় হঠাৎ একটা নাম্বার থেকে মিস আসে,,।তাকিয়ে দেখি নাম্বারটা আমার অপরিচিত। ভাবলাম হয়তো ভুল করে কল চলে আসছে,,।কিন্তু একটু পড়ে সেই নাম্বার থেকে আবার কল আসছে,,।তখন আমি কলটা রিসিভ করতেই একটা মেয়ে বলল

মেয়েটা : তুমি কী শুভ্র,,,,(মিষ্টি কন্ঠে বলল)

আমি : হ্যা,কিন্তু আপনি কে,,,?আপনাকে তো চিনলাম না,,

তখন মেয়েটা বলল

মেয়েটা : শুভ্র,, আমি অন্তরা,,,,, আজকে না তুমার নাম্বার নিলাম,,,(হেসে বলল)

আমি : ওহ্,,আপু আপনি তা এত রাতে কী মনে করে কল দিলেন,,?

অন্তরা : কিছু মনে করে না,,এমনি তুমার খোজ খবর নেওয়ার জন্য কল দিলাম,,,।কেন তুমি কী বিরক্ত হচ্ছো নাকি,তাহলে বলো রেখে দেই,,,

আমি : না আপু বলেন সমস্যা নাই,,,,(হেসে বললাম)

**আসলে একজন মানুষকে কী করে মুখের ওপর না করে দেই যে আপনি কল দিবেন না,,,।এটা কেমন খারাপ দেখায়,। তাই ইচ্ছা না থাকা সত্তেও অন্তরা আপুর সাথে টুকটাক কথা বলছিলাম,,। আমি যখন অন্তরা আপুর সাথে কথা বলছি ঠিক তখনি কে যেন পিছন থেকে এসে আমার হাত থেকে মোবাইল টা নিয়ে নেয়,,।আর আমি পিছনে তাকিয়ে যাকে দেখি,, তাকে দেখে ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়,,।কারণ সেই মানুষটি হল,,,*******–***

****চলবে*****

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here