সিনিয়র গুন্ডি মেয়ের ভালবাসা** writer : Akash khan পার্ট : ১

0
598

এই গল্পটা একটু অন্য রকম, হবে কষ্ট ও আছে,,

**সিনিয়র গুন্ডি মেয়ের ভালবাসা**

writer : Akash khan

পার্ট : ১

**প্রতিদিনের মত সকালে ঘুম থেকে ওঠে দাঁত ব্রাশ করছি।এমন সময় আমার ছোট নবাব আমার কাছে এসে আমার হাতে একটা বাজারের ব্যাগ,,একটা বাজারের লিস্ট আর সাথে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলল,,,

ছোট নবাব : শুভ্র ভাইয়া,,আম্মু বলছে তুমাকে তারাতারি বাজারে যেতে,,। আর এখানে যা লিখা আছে সব কিছু বাজার করে নিয়ে আসতে বলছে,,,

আমি : ঠিক আছে ছোট নবাব,,। আমি ফ্রেস হয়ে এখনই যাচ্ছি,,। তুমি বড় আম্মুকে বলো যে ভাইয়া ফ্রেস হয়ে বাজারে যাবে,,,কেমন,,,,(হাসি মুখে বললাম)

ছোট নবাব : শুভ্র ভাইয়া,, আমার জন্য চকলেট আনবে না,, বাজার থেকে,,,(মুখটা মলিন করে বলল)

**আমি আমার ছোট নবাবের এমন মলিন চেহারাটা দেখে ওর গাল দুটো হালকা টেনে দিয়ে হাসি মুখে বললাম,,,

আমি : আমি বাজারে যাবো আর আমার ছোট নবাবের জন্য চকলেট আনবো না,, তা কী করে হয়,,।তুমি নিশ্চিন্তে বই নিয়ে পড়তে বসো,,। ভাইয়া আসার সময় তুমার জন্য চকলেট নিয়ে আসব কেমন,,

**আমার কথা শুনেই ছোট নবাবের মুখে হাসি ফুটে ওঠে,,।তখন ছোট নবাব আমার হাত ধরে টেনে বসিয়ে দেয়,,।আর আমার গাল দুটো হালকা টেনে দিয়ে বলে,,,

ছোট নবাব : শুভ্র ভাইয়া তুমি অনেক ভালো,,।আর তুমি তারাতারি বাজারে গিয়ে আমার জন্য চকলেট নিয়ে আসো,,(হেসে বলল)

**কথাটা বলেই ছোট নবাব চলে যায়,,।আর আমি ফ্রেস হয়ে টাকা আর বাজারের ব্যাগ নিয়ে রৌওনা দেই বাজারের দিকে,,।আপনারা হয়তো এতখন ভাবছেন কে এই ছোট নবাব,,।নিশ্চয় আমার ছোট ভাই হবে,,তাই তো,,।কিন্তু না,,ছোট ভাই ঠিকই কিন্তু আমার আপন ভাই না,,।আর আমার আপন বলতে পৃথিবীতে আমি নিজেকেই চিনি,,।কারণ আমি একজন অনাথ,,।চলোন বাজারে যেতে যেতে আপনাদের সাথে নিজের পরিচয়টা দিয়ে দেই,,।আমি শুভ্র,, আগে পরে কিছু নাই।বাবা – মা ছোট বেলাই আমাকে ছেড়ে আকাশের তারা হয়ে গেছে,,। এরপর থেকেই এই এলাকার সুনামধন্য চেয়ারম্যান আশরাফ আহমেদ আমাকে লালন পালনের দায়িত্ব নেয়,,। আমার মনে আছে,, ছোট সময় আমার মা তাদের এখানে কাজ করতো,,।আর আমি যখন ক্লাস ৫ এ পড়ি তখন আমার মা মারা যায়,,।এরপর থেকে এই আশরাফ আহমেদ আমাকে তার বাড়িতে রেখে দেয়,,।লোকে বলে,, আপনজন যখন ছেড়ে চলে যায়,,তখন আল্লাহ তায়ালা এমন কারো ব্যবস্থা করে দেয় যেন সেই মানুষটা কখনো আপন জনের অভাবটা বুঝতে না পারে। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে,,।

**আমি আশরাফ আহমেদের বাসায় কাজ করলেও তারা কখনো আমার সাথে এমন ব্যবহার করে নি, যেটা আমাকে মনে করিয়ে দেয় যে আমি একজন অথান আর আমি এই বাড়িতে কাজ করি,,।সব সময় তারা আমাকে নিজের ছেলের মতই দেখে আসছেন,,। আর তাইতো আমি যেন জীবনে বড় হতে পারি সেজন্য আমার লেখাপড়ার ব্যবস্থাও করে দিছেন,,।আর হ্যা আমি এবার ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট,,।আর আমি আশরাফ আহমেদ কে বড় আব্বু আর তার ওয়াইফ কে বড় আম্মু বলে ডাকি,,।আর এতে তারাও অনেক খুশি হয়,,

**আশরাফ আহমেদের এক ছেলে নাম আয়ান আহমেদ,,যাকে আমি ছোট নবাব বলে ডাকি। সে এবার ক্লাস ৪ এ পড়ে,,। আর তার এক বড় মেয়ে আছে নাম জান্নাতুল ফেরদৌস অধরা,,।সবাই তাকে অধরা বলেই ডাকে। আর তিনি এবার অনার্স ১ বর্ষে পড়েন,,।(গল্পের নায়কি)

**আপনাদের সাথে বেশ লম্বা একটা পরিচয় দিলাম আর এই ফাকে কিন্তু আমি বাজারটাও করে ফেলছি,, কিন্তু আপনারা টেরও পেলেন না,,।এবার চলেন সবাই মিলে বাসার দিকে যাই,, গিয়ে দেখি গল্পের বাকি অংশে আপনাদের জন্য কী অপেক্ষা করতেছে,,,

**আমি বাজার নিয়ে বাড়ির ভিতর ডুকতেই দেখি ছোট নবাব দাঁড়িয়ে আছে,,।আর আমি তাকে দুটো চকলেট হাতে দরিয়ে দিতেই নাচতে নাচতে বাসার ভিতর চলে যায়,,।আর আমি বাজার গুলো নিয়ে বড় আম্মুর কাছে যাই,,।আমাকে দেখেই বড় আম্মু বলল,,,

বড় আম্মু : তুই এতখনে আসলি বাজার থেকে,,। দে তারাতারি রান্নাটা শেষ করি,, তোদের আবার কলেজের টাইম হয়ে যাচ্ছে,,,

আমি : কোথায় দেরি করলাম, এই গেলাম আর এই বাজার নিয়ে চলে আসলাম,,।আর এই নাও তুমার বাকি টাকা,,(হেসে বললাম)

বড় আম্মু : টাকাটা লাগবে না,,ওটা তোর কাছেই রেখে দে,,কলেজে যাবি হাত খরচ লাগবে না,,

আমি : আমার কাছে আছে,, এখন আর লাগবে না,,।আর কাজের ছেলেকে এত লায় দিও না তাহলে তুমার মাথায় চড়ে বসবে (হাসতে হাসতে বললাম)

**আমার কথাটা শুনেই বড় আম্মু একটু রেগে যায়,,।তখন তিনি রাগি কন্ঠে বলল,,,

বড় আম্মু : শুভ্র আরেক বার যদি এই কথা তোর মুখে শুনি তাহলে এক থাপ্পরে সব গুলা দাঁত ফেলে দিবো,।আর এখন তুই অধার কাছে যা সকালে ঘুম থেকে ওঠে তোকে ডাকছে,, তখন আমি বলছি তুই বাজারে গেছিস। এখন গিয়ে শুনে আয় কেন ডাকছিল,,(রাগ দেখিয়ে বলল)

আমি : বড় আম্মু তুমি রাগ করো কেন,,? আমি তো তুমার সাথে মজা করছি,,।আর যাই বলো তুমি রাগলে ঠিক কিরন মালার কটকটির মত লাগে,, (হেসে বললাম)

বড় আম্মু : ওরে শয়তান পোলা আমি কটকটি,,। তুই দাড়া এখানে আমি তোর ব্যবস্থা করছি,,,

**বড় আম্মুর কথা শুনেই আমি ওখান থেকে হাওয়া হয়ে যাই।কারণ ওখানে দাঁড়ালেই বিপদ,,।এখন যাই অধরা ম্যামের রুমে। গিয়ে দেখি মেডাম আমার জন্য কী হুকুম জারি করে রাখছে,,।(অধরা এই গল্পের নায়কি) আমি অধরা আপুর রুমে সামনে এসে দেখি অধরা আপু মনোযোগ দিয়ে পড়ছে। তাই আমি দরজার সামনে দাড়িয়ে বললাম,,,,

আমি : আপু আসতে পারি,,,

**আমার কথা শুনেই অধরা পড়া বন্দ করে দরজার দিকে তাকায়,,।তখন আমাকে দেখে বলল,,,

অধরা : হুম আয় ভিতরে আয়,,,,

**অধারর কথা শুনে আমি তার রুমে প্রবেশ করি। তখন অধরা আবার বলল,,,,

অধরা : সকাল বেলা আমার সাথে দেখা না করে কোথায় গেছিলি,,,,(রাগি কন্ঠে বলল)

আমি : আপু আমি তো বাজার করতে গেছিলাম,,। কেন আপনার কী কিছু আনতে হবে নাকি,। তাহলে বলুন আমি গিয়ে নিয়ে আসি,,,,

অধরা : না কিছু লাগবে না,,। আর তোকে না বলছি প্রতিদিন সকালে ওঠে সবার আগে আমার সাথে দেখা করবি, পরে অন্য কাজে যাবি। আর শুন কয়েক মাস পরে তোর সেমিস্টার পরীক্ষা,, তাই ভালো করে পড়বি,(দমক দিয়ে বলল)

আমি : আরে আপু আমি যখন ঘুম থেকে ওঠি তখন আপনি ঘুমিয়ে থাকেন, তাহলে কী করে আপনার সাথে আগে দেখা করবো,,।আর আমিতো আপনাদের বাড়ির কাজের লোক, তাই এত লেখাপড়া করে কী হবে,,।যা হবার তাই হবে, (হেসে বললাম কথাটা)

**আমার কথাটা শুনার সাথে সাথে অধরা রেগে আগুন হয়ে যায়,,,।আর চিয়ার থেকে ওঠে এসে আমাকে ঠা,,স,ঠাস করে দুটি চড় মারে,,,।অধরার চড় খেয়ে আমি মাথাটা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকি। তখন অধরা আমাকে রাগি কন্ঠে বলল,,,

অধরা : আমার কথার সাথে উল্টা পাল্টা একটা বললে চড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিবো,,।আর শুন আমি ঘুমিয়ে থাকি আর জেগে থাকি তুই ঘুম থেকে ওঠে সবার আগে আমার সাথে দেখা করবি। আর তুই এই বাড়ির কাজের ছেলে নাকি অন্যকিছু সেটা সময় হলে বুঝা যাবে,,।মনে থাকবে আমার কথা নাকি কানের নিচে আবার একটা দিতে হবে,,(রাগে কটর মটর করে বলল)

আমি : জ্বি আপু মনে থাকবে…(আস্তে করে বললাম)

অধরা : এখন চুপ করে রুমে গিয়ে পড়তে বস,,।একটু পরে একসাথে কলেজে যাবো,,(দমক দিয়ে বলল)

**আমি আর কথা না বাড়িয়ে চুপ চাপ অধরার রুম থেকে বেড়িয়ে আসি,,।কারণ এখন কথা বললেই কথার সাথে মাইড় ফ্রিতে পাবো,,,।এই বাড়িতে আমি কাউকে এত ভয় পাই না যতটা অধরাকে পাই,,,।তাই সবসময় চেষ্টা করি তার কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াতে। আগে আমার সাথে এমন করতো না কিন্তু আজ প্রায় ৬ মাস হল মানুষটার আমার সাথে ব্যবহার পাল্টে গেছে,,।এখন আমার লেখাপড়া,,চলাফেরা সব কিছুর কৈফিয়ত তার কাছে দিতে হয়,,। আর আমার লেখাপড়া নিয়ে অধরা যতটা চিন্তা করে যদি নিজের লেখাপড়া নিয়ে এতটা চিন্তা করতো তাহলে পরীক্ষায় একসাথে দুইটা golden (A+) পাইতো,,,।কিন্তু কে শুনে কার কথা,, আমি নাকি রিজাল্ট খারাপ করলে তার অনেক বড় লস হয়ে যাবে,,। তাই আমার ওপর তার এই অত্যাচার।

**তারপর আমি রুমে এসে কিছুখন মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করি,,,। কিছুখন পরে আমার ছোট নবাব এসে বলে যায় খাবার খাওয়ার জন্য।আর তাই আমি কলেজের জন্য একেবারে রেডি হয়ে চলে যাই খাবার খেতে।তারপর আমি সবার সাথে বসে খাবার খেয়ে নেই,,।পরে আমি আর অধরা আপু কলেজের উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়ি,,,।আমাদের বাসা থেকে কলেজ বেশি দুরে না,,হেটে গেলে ২০-২৫ মিনিট সময় লাগে,,।তাই অধরা আপুর সাথে প্রতিদিন আমাকে হেটেই কলেজে যেতে হয়,,।আর আমাকে একপ্রকার তার গার্ড বলা যায়,,।

**আমি আর অধরা আপু হেটে হেটে কলেজে যাচ্ছি। আর অধরা আপু হাজারটা কথা বলছে,, আর আমি শুধু শুনছি আর মাঝে মধ্যে হ্যা আর না এই দুই শব্দে তার কিছু কথার জবাব দিচ্ছি। কারণ বেশি কথা বললেই আবার গাল লাল করে দিবে,,।আমি আর অধরার আপু কিছুদুর যেতেই সামনে থেকে অধরা আপুর দুই বান্ধুবী আমাদের সাথে যোগ দেয়,,।তাদের আমি আগে থেকেই চিনি,,একজন হল শিমলা আপু আর আরেকজন হল অন্তরা আপু,,।

**তারা দুজন আমাদের সাথে যোগ দেওয়ার কিছুখন পরে হঠাৎ শিমলা আপু আমাকে বলল,,,

শিমলা : শুভ্র তোমাকে একটা কথা বলি,,?(হেসে বলল)

আমি : জ্বি আপু বলেন,,,,,(মুসকি হেসে বললাম)

শিমলা : শুভ্র তুমি কিন্তু দিন কে দিন সুন্দর হয়ে যাচ্ছো,,।তুমাকে দেখতে একদম প্রিন্স এর মত লাগে,,।কলেজের অনেকেই তো তুমার ওপর ক্রাস খায়,,,(হেসে হেসে বলল)

**শিমলা আপুর কথা শুনে আমি কী উত্তর দিবো ভেবে পাচ্ছি না,,।তাই মাথাটা নিচের দিকে দিয়ে তাদের সাথে হেটে যাচ্ছি। তখন পাশ থেকে অন্তরা আপু বলল,,,,

অন্তরা : হুম একদম ঠিক বলছিস শিমলা,,।শুভ্র কে দেখে মনেই হয় না ও অধরাদের বাড়ির কাজের ছেলে,,।দেখতে যেমন সুন্দর আর স্মার্ট আর সাথে নামটাও দারুণ,, শুভ্র (মিষ্টি হেসে বলল)

**ওদের কথা শুনে আমার মুখ দিয়ে কোন কথাই ভের হচ্ছে না,,।তখন আমি অধরার দিকে তাকাতেই দেখি অধরার ফর্সা মুখটা রাগে লাল হয়ে গেছে,,।আর তখন অধরা আমাকে বলল,,,,,,,,

অধরা : ********চলবে******

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here