#ইয়াসমিন_রিমা
#অসম_প্রেম
#পর্ব_৫৬
অনেক গাটাগাটি করে একটা ভিডিও পেল। শ্রাবন সেই ব্যাক্তির মুখোশ খুলবে বলে ভিডিও করে ছিল। ভিডিও তে মুখ দেখা যাচ্ছে না। অনেক্ষণ দেখার পর আদি অবাক হয়ে বলে উঠলো , hunter ।হাত থেকে ফোন পড়ে গেল।
এদিকে প্রেমা হেসে ই যাচ্ছে মেয়েটি বার বার পিছন ফিরে তাকিয়ে সামনে চলে যাচ্ছে। একসময় গাড়ি থামিয়ে। গাড়িতে উঠার জন্য পা বাড়িয়ে দিবে তখন একটা লরি এসে সব কিছু ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে ফেলে দিয়ে চলে যায় লরিটি। লরিটির কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। সবাই জরো হয়ে দেখছে। রাস্তায় এখানে ওখানে রক্ত জমে আছে। রক্ত মাখা অবস্থায় পড়ে আছে আফসানা।
প্রেমা এসে দেখে আফসানা পড়ে আছে । দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল।আজ ওর আর প্রিয়র মাঝখানে কেউ নেই।যে প্রিয়কে ওর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে আজ তাকেই সরিয়ে দিয়েছে।হা হা হা হা।
হাসতে হাসতে গাড়িতে উঠে বাড়ির দিকে রওনা হলো।
প্রেমার রুমে আদি বসে আছে।প্রেমার জন্য অপেক্ষা করছে। অনেক রেগে আছে আদি।প্রেমা এতটা খারাপ কি করে হতে পারে।এতটা নিশংশ কিভাবে হতে পারে।আজ ওর সাথে একটা হেস্তনেস্ত করেই ছাড়বে।দিন দিন ও অনেক বার বেড়েছে।
,,
এদিকে আফসানা এই অবস্থার কথা শুনে প্রিয় তার সকল কাজ ছেড়ে। চলে আসলো। আফসানা কে হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রিয় রেগে আছে। আফসানা কে একা চলতে বারন করেছিল কিন্তু তার বান্ধবীরা অনেক দিন পর আসছে তাই প্রিয়র কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই দেখা করতে গিয়েছিল।
ওটি থেকে ডাক্তার আসলো।, আপনার ওয়াইফ এখন সুস্থ আছে। ঠিক ভাবে খেয়াল রাখবেন আর এমন যেন না হয়। তবে ওনার কান্ডিশন তেমন ভালো নেই। কিন্তু আপনাকে দুঃখের সঙ্গে জানাতে হচ্ছে। আপনার সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে। এই বিপদ থেকে আল্লাহর রক্ষা করেছে।তা না হলে উনাকে ও বাঁচানো যেত না।
প্রিয় সব শুনে থম মেরে রইলো।, আমার সন্তান নেই। চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো। সৃষ্টিকর্তার কাছে হাজার শুকরিয়া যে আফসানাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। প্রিয় খুব হয়ে ছিল এই প্রথম বার বাবা হতে চলেছিল শুনে। কিন্তু তার অনাগত সন্তান তাকে রেখেই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছে।
প্রিয়র কাছে খটকা লাগলো এটা কি শুধুই একটা এক্সিডেন্ট নাকি মাডার।
,,
প্রেম বাড়ি এসে পৌঁছালো। সবাই বললো, তুই এতক্ষণ কোথায় ছিলি সবাই তোকে খুঁজছিল। তুই কখন কোথায় যাস এঅটুতো বলে যাবি। সবাই কত টেনশনে ছিল।
,সরি আমি এক্ষুনি ফ্রেস হয়ে আসছি। সবাই রেডি হয়ে নাও একটু পর আয়োজন শুরু।
প্রেমা চলে গেল ওর রুমে। রুমের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখতে পেল।আদি ওর বিছানায় বসে মাথায় হাত দিয়ে মাথা নিচু করে আছে। দেখে মনে হচ্ছে কোন কিছু চিন্তা করছে।
দরজা খোলার শব্দে ঘুরে তাকালো। দেখে প্রেমা ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আদির চোখ রাগে লাল হয়ে আছে। চারিদিকে শুধু নিরবতা। এমন সময় আদি শান্ত মস্তিষ্কে উঠে দাঁড়ালো। গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে।প্রেমার সামনে দাঁড়ালো।
প্রেমা আদির নিরবতা দেখে অবাক হয়ে গেল।কি হয়েছে ওর। এমন সময় কিছু না বলে সেই শ্রাবনের ফোন টা প্রেমার হাতে ধরিয়ে দিল।আর আদি কোন কথা বলছে না।প্রেমা শুধু আদির ব্যবহার নিরব দর্শকের মতো দেখে যাচ্ছে।যখন ফোন টা ওর হাতে দিল। চক্ষু চড়কগাছ।এক বার ফোনের দিকে আর একবার আদির দিকে তাকিয়ে আছে।
হঠাৎ আদি প্রেমার গালে কত গুলো চর থাপ্পড় মেরে দিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেরে দিল। লাস্ট বার মারার সময় প্রেমা ধরে ফেলল।প্রেমার ঠোঁট কেটে রক্ত ঝরছে।
প্রেমা, রেগে হাত ধরা অবস্থায় বলল,জেনে গেছিস না আমি কে।সব টা জানার সত্ত্বেও কোন আস্পর্ধায় আমার গায়ে হাত তুললি। তোর লাইফ আমি নরক বানাইনি এই ঢের ভাগ্য ভালো। এখন যেটা তুই করলি just unexpected । বলেই হাত ছুরে ফেলেদিল।
আদি,এই তোমার আসল রূপ। Hunter কে।
, আমার অনুমতি ছাড়া। আমার রুমে ঢুকে লকার খুলেছিস।আর বুদ্ধি করে পাসওয়ার্ড ও খুলেছিস।বাহ বাহ বলে হাতে তালি দিল।
, তুমি আর কত মানুষ কে এরকম নিশংশ ভাবে হ* ত্যা করেছ। কোন হিসেব আছে তোমার। কত প্রাণ তুমি নিয়েছ।
প্রেমা মুখের রক্ত হাতের উলটো পাশ দিয়ে মুছে। রকিং চেয়ারে বসে হাসছে।হা হা হা হা। আমার মন যা বলবে আমি তাই করি। বোঝা গেছে। চাইলে তোকে ও আমি একটা সিগারেট ধরিয়ে টানছে।
এই বার আদি চরম রেগে গেল। একটা মানুষের সাইকো গিরি আর কত ক্ষন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ সহ্য করে পারে।
,আদি, অনেক হয়েছে এই বার বন্ধ কর তোমার মৃ ত্যু র খেলা।রাগ চরম পর্যায়ে চলে গেছে।
আদি তখন ভিডিওতে দেখলো, একটা গুদাম ঘরে কিছু লোক শ্রাবনের চোখে কালো কাপড় বেঁধে। চেয়ারের সাথে আটকে রেখেছে।একটা সময় কেউ বললো। ওকে চেয়ার থেকে খুলে দুহাত নিচে দিয়ে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখতে।
সেই লোক টা শ্রাবনের চোখ থেকে কাপড় খুলে ফেলল।এক হাতে দু গাল চেপে ধরলো।সেই লোক টা বললো, তোকে ই তো আমি এতদিন খুঁজছিলাম। তুই সেই না যে Mafia bin Hunter এর সকল গোপন ইনফরমেশন জেনে গেছিস হা।
অন্ধকারে শ্রাবন ও মুখটা দেখতে পেল না। কারন সে সব থেকে দামী কালো রংয়ের হুডি এবং মাস্ক পড়া।যে রং টা অন্ধকারে কোন প্রতিফলন করে না বরং অন্ধকার কে গ্রাস করে ফেলে।Musou Black.তাই অন্ধকারে কারো সম্ভব নয় মুখ দেখা।
শ্রাবণ, আমি আপনার সব মুখোশ খুলে ফেলব।
,তাই না কি। দেখতে চাস আমি কে।
সাথে মাস্ক খুলে ফেলল।আবছা আলোতে মুখ স্পষ্ট। শ্রাবণ উল্টো হয়ে দেখলো এটা আর কেউ নয় সয়ং প্রেমা চৌধুরী। একটা ডেবিল মার্কা হাসি দিয়ে হা হা হা হা হা করে হাসতে লাগলো।
Hunter is Prema ,কি আমায় চিনতে পেরেছিস।দু হাত মেলে Mafia bin Hunter এই রাজত্বের রাজা।আজ তুই শুনে রাখ তোর মৃ ত্যু আজ এখানে আমার হাতে হবে। তোর সাথে তো আগেই হিসেব ছিল তাই না। আমার মুখোশ কেউ খুলতে পারবে না। তার ঠিক এমন হাল হবে।
যেমন আজ তুই আমার হাতে শেষ হবি।
বলেই এলোপাথাড়ি মারতে লাগলো।এক সময় আধ মরা বানিয়ে ফেললো।যেন আজ কোনো শিকারী তার শিকার ছিরে খাচ্ছে। চোখে প্রেমার আগুন জ্বলছে। শ্রাবণ যখন হেলেদুলে উঠে দাঁড়ালো তখন প্রেমা তার পাশে হাত রেখে ছুরি চাইলো পাশে ওর লোক ছুরি দিল। শ্রাবনের অনবরত সব জায়গায় থেকে রক্ত ঝরছে। পুরো মেঝে মনে হয় রক্ত এ ভেসে যাবে।তখন প্রেমা ওর পেটে অনেক গুলো ছুরি দিয়ে অনবরত আঘাত করতে লাগলো। একসময় শ্রাবন মৃ ত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। মৃ ত্যুর পর শ্রাবনের মুখ এসিড দিয়ে জ্বলঝে দিল।
আবার অন্ধকারে hunter মিলিয়ে গেল। সেখানে কোন মারের চিহ্ন টুকু ও নেই।পরে সেই জায়গায় আগুন জ্বলছে উঠলো ভিডিওতে দেখা গেল। তার পর সব বন্ধ।
,,
এদিকে প্রিয় যখন আফসোসর কেবিনে বসে ছিল। তখন
ওকে ফোন করে জানানো হয় ওর ধরা কিছু লোককে কোটে পাঠানো র আগে মেরে ফেললো।
প্রিয় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে গেল এবার ও এর মাথা কে ধরেই ফেললবে।আর উপযুক্ত শাস্তি দিবে।মে অবস্থা সবার করে সেই অবস্থাই ও করবে।
,,
প্রেমার কান্ড আদি দেখে আরো আগুন হয়ে আছে।এর শাস্তি ওকে দিবে ই।ও সব সীমা পার করে ফেলেছে।
আদি,
চলবে,