#ইয়াসমিন_রিমা
#অসম_প্রেম
#পর্ব_১৬
সকাল হয়ে গেল।
হাতে চা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। আলিশার রুমের দরজায়। সামনে শ্রাবন আয়নায় নিজের চুল ঠিক করছে। আলিশা ঘরে নেই। দরজায় হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছি আর দেখছি শ্রাবনের কর্মকাণ্ড। আসলে ও ভাবতেই পারেনি আমি এখানে।যেই একটু মোর ঘুরে দাঁড়ালো। তখনি আমায় দেখে চমকে উঠলো।
, কেমন আছেন আপনি। আবাক হয়ে গেল শ্রাবন।
,একি প্রেমা তুমি এখানে? আমি তোমায় অনেক ফোন মেসেজ পাঠিছি। কিন্তু কোনো উত্তর আসেনি?
,ও তাই বুঝি। আপনার চা।
, তুমি এখানে কেন?
, বলছি। আমি কে। আগে নিচে চলুন ব্রেকফাস্ট করবেন।
, তোমাকে কেউ দেখেনি তো।
, চলুন।
সবাই নিচে ডাইনিং টেবিলে নাস্তা করছে। আমাকে আর শ্রাবন কে সিরি দিয়ে নামতে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেল। আলিশার আর আদিত্যর রাগ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
, শ্রাবন,আরে তোমরা সবাই এভাবে তাকিয়ে কি দেখছ। একটু হেসে।
, আদিত্য,কি দুলাভাই তোমার আসতে লেট হল যে।
,ওই একটু রেডি হতে লেট হয়ে গেল। আদালতে কাজ আছে।
,ও
আদিত্য পাশের চেয়ারে বসল। আমি সবাইকে খাবার দিচ্ছি। হঠাৎ করে শ্রাবন বলে উঠলো।
,কি ব্যাপার আমার শালা বিয়ে করল। আমি জানতে পারলাম না। বাড়িতে একটা পার্টি হওয়া দরকার ছিল।কি বল আলিশা।তা কউ নতুন বউকে একটু দেখি ।কি শালাবাবু আমাকে দেখাবে না নাকি নিজের বউকে লুকিয়ে রাখছো। একটু ঠেলা দিয়ে।হেসে।
আদিত্য চরম রেগে আছে দাঁত কামড়ে সহ্য করছে।কথা আর খাওয়া ফাঁকে ফাঁকে শ্রাবন আমাকে দেখছে।তোর নাটকের দিন শেষ শ্রাবন।
, আলিশা,হ্যা ওর বউ তো এখানেই আছে।দেখ তুমি এইযে।আমাকে দেখিয়ে।
শ্রাবনের মুখের খাবার পড়ে গেল। একদম দারিয়ে গেল। অষ্টম আস্চর্য হল।ও এতক্ষণ ভাবছিল আমি এখানে কেন।তাও বউয়ের মত সেজে। পড়নে শাড়ি হালকা গয়না খোঁপা করা চুল।ওর মনে ভয় হচ্ছিল কিছুটা।
,শ্রাবন,কি,,,,ই ।কি বললে তুমি আলিশা।আদি ওকে বিয়ে করেছে।
,আদিত্য,হ্যা ও আমার বউ।মিসেস আদিত্য শেহ্জাহান খান।কি হল দুলাভাই তুমি তো আমার বউ দেখতে চেয়েছিলে।এই যে। বাঁকা হেসে।
আমি শুধু দেখছি শ্রাবনের অবস্থা।গলা শুকিয়ে গেছে শ্রাবনের।মাএ দুদিনের পরিচয়ে আমাকে ভালোবাসা। বিয়ের জন্য ব্লাক মেল করা।আর কত কি। ভাবেইনি আমি এখানে।তাও ওর সম্পর্কে সব জেনে গেছি।ও কত মিথ্যে কথা বলেছে। আমার ইনটেশন পাওয়ার জন্য। এখন সব ফাঁস হয়ে গেল।হা হা।
, কেমন আছেন দুলাভাই।ডেবিল মার্কা হাসি দিয়ে। আপনাকে দেখাই যায় না।থাকেন কোথায়।
বেচারা গলা থেকে কথাই বের হচ্ছে না।
,শ্রাবন, ভালো।এই তো কাজ থাকে তাই বাড়ি থাকা হয় না।
,ওহ্।
আমি আদিত্যর কানের কাছে গিয়ে বললাম।,কি শুরু করবো।শ্রাবন তো এখানেই আছে।ওর সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই শুধু শুধু মিথ্যা ভাবছে সবাই। আমার দিকে রেগে তাকিয়ে। এখন সময় এসেছে নির্দোষ প্রমাণ করার।
, আশরাফুল শেহ্জাহান খান,মামা,জামাই তুমি এত ঘামছ কেন।
,না মামা কিছু না।
, এই মেয়ে তোমার আর কোন কাজ নেই।আদিত্যর পিছনে ঘুর ঘুর করা ছাড়া।যাও এখান থেকে যাও।
,এক মিনিট মামা। আপনি বোধহয় ভুলে গেছেন আদিত্য আমার স্বামী।তাই আমি যা খুশি তাই করতে পারি।
,মামা, একদম মুখে মুখে কথা বললবে না।
, মামী, আদিত্য এই মেয়ে কিন্তু বেশি বার বেরেছে। তুই ওকে এই বাড়ি থেকে বের করে দে।নই লে এই বাচাল মেয়ের জন্য আমরা কেউ থাকতে পারবোনা।এখনি দেখছিস না কেমন আমাদের উপর অত্যাচার করে।
, মামা,হ্যা তুমি ঠিক বলেছ।
, নানী শামছুর নাহার, আহ্ তোমরা কি শুরু করেছ।বাড়িটাতে এই মেয়ে যেদিন এসেছে সেই দিন থেকেই অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
, আলিশা, আচ্ছা আদি তুই ওকে বার করে দে। কেঁদে কেঁদে। সারাদিন খায় আর ঘুমায় আর আমাদের উপর তরফদারি করে বেড়ায়।জানিস ও আমাকে কত কিছু বলেছে। আমি নাকি আমার স্বামী কে নিয়ে তোর ঘারে বসে আছি। আমি ঠিক করেছি। আমি আর শ্রাবন এই বাড়ি থেকে চলে যাব।আর অনেক বাজে কথা বলেছে।
,মামা, হ্যা আদি এই মেয়ে এতটাই খারাপ যা তুই ভাবতে পারছিস না। এমন কি ও আমাকে ও,,, ছি।
, মামী,জানিস আদি ও আমাকেও অনেক বাজে কথা বলেছে।সারা বাড়ির কাজ আমাকে দিয়ে করিয়েছে। কেঁদে কেঁদে।
আদিত্য ভাবতেই পারেনি এসব বলবে। রেগে গেল।মে পরিবারের গুরুত্ব সবার আগে তাদের সাথেই এত খারাপ ব্যবহার করা। আদিত্য চিৎকার করে বলছে।
, আমি এসব কি শুনছি। তুমি ত বল এটা নাকি শ্বশুর বাড়ি তাদের সাথেই কেউ এত বাজে ব্যবহার করে।
বলেই অনেক গুলো চ,,র মারতে শুরু করল। আমি ভাবতেই পারিনি সবাই এতটা জঘন্য হবে। শ্রাবন সব নির্বাক হয়ে দেখছে। সবাই কেমন এমন কেন করছে। আলিশা সেই দিনের সব কিছু বলল।
আজ এই বাড়ির কেউ নেই আমার পাশে এসে দাঁড়াবে। কেমন লাগে তখন যখন সবাই একদিকে আর আমি একদিকে। সকাল লড়াই একা লড়তে হয়। খুব একা লাগে। আমি সবার সাথে এরকম কিছুই করিনি তাও সবাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলছে।এর ভিতর শ্রাবনো ওদের সাথে যোগ দিল। সবাই মিলে খারাপ কথা বলছে। আমি কখনো কারোর খারাপ চাই নি তাও আমাকে এত খারাপ বাজে ভাবে উপস্থাপন করছে। আমি নির্দোষ প্রমাণ করবই।
এর মধ্যে আদিত্য আমাকে জোর করে নিজের রুমে নিয়ে গেল।প্যান্ট এর বেল্ট খুলে আমাকে আঘাত করতে লাগলো।সব আঘাত নিরব ভাবে সহ্য করছি।আর বলছে।
, শোন ঐ বাড়ির কেউ কোথাও যাবে না। এই বাড়িতেই থাকবে বুঝেছ।
আবার মারতে শুরু করলো। খুব কষ্ট হচ্ছে।নিচে সবাই আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছে।নানী একটু দ্বিমত করলেও কেউ শুনতেছে না। ভাগ্য এমন ও হয়।
চলবে,
সবার কাছে কেমন লাগলো।