#ইয়াসমিন_রিমা
#অসম_প্রেম
#পর্ব_৪৩
পুলিশ, আমরা তদন্ত করে দেখছি কিন্তু কোনো ক্লু তেমন পাওয়া যায়নি কিন্তু আমার মনে হয় ওনার ফোনে কোনো ক্লু থাকতে পারে। ফোন টা পাওয়া যাচ্ছে না।
, আদি,কে এই ভাবে মারলো।
, পুলিশ, দেখুন আমরা চেষ্টা করছি।
, ওকে অফিসার।
আলিশা ভাবতেই পারেনি এমন হবে।ও যখন ছবিটা দেখলো তখন অজ্ঞান হয়ে গেল। কি হলো ওর সাথে।কে এমন করলো। আদির গায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছে।আদি ধরে ফেলল। সোফায় বসে পানি ছিটা দিলো। কোন রকম চোখ খুলে। কেঁদে জরিয়ে ধরে বলতে লাগলো,আদি কে আমার সাথে এমন করলো। আমি ত কারোর কোনো ক্ষতি করিনি তবে কে আমার সাথে করলো। কেঁদে।
আদি,আপু তুই চিন্তা করিস না। আমি ঠিক খুঁজে বার করবো কে এই খু নি ।
, আমি বিধবা হয়ে গেছি । আমার অনাগত সন্তান পৃথিবীতে আসার আগে ই বাবা হারা হলো। কেঁদে।
রিনা চৌধুরী, মাথায় হাত বুলিয়ে, আমরা আছি তো । তুই শুধু নিজের খেয়াল রাখিস।
ভাইকে জরিয়ে কেঁদে ই যাচ্ছে।আদি জরিয়ে ধরে আছে।আদি,আপু তুই কাঁদিস না প্লিজ। তুই অসুস্থ হয়ে পড়বে।
এখন যে আসছে তার কথা তো কে ভাবতে হবে। চোখ মুছিয়ে দিয়ে।
আলিশা আদিকে ছাড়িয়ে নিয়ে,যে পৃথিবীতে ও নেই আমি থাকবো না। বলেই সোজা নিজের রুমে দৌড় দিল। দরজা বন্ধ করে দিয়েছে।
আদি ও বাড়ির বাকি সবাই ওর পিছন পিছন ছুটলো। সবাই আলিশা কে দরজা খুলতে বলছে। কিন্তু খুলছে না।
অজয় চৌধুরী নিজের মেয়ের অবস্থা দেখে ভেঙ্গে পড়লেন।
অজয় চৌধুরী,মা রে একটি বার দরজাটা খুল ।আমরা তোর জন্য সব করতে পারি। তুই আমাদের এভাবে কষ্ট দিস না।
আদি ,আপু প্লিজ দরজা টা খুল।আমরা সবাই তোকে খুব ভালো বাসি।
সবাই দরজা ধাক্কা ছে কিন্তু খুলছে না আর কোনো কথা ও বলছে না। সবার মনে ভয় ঢুকে গেছে।
ইতিমধ্যে খবর তন্ময় আকাশের কাছে চলে গেল।ওরাও বাড়ি ফিলরো। সবার অবস্থা খুব নাজেহাল।কে ভাবতেই পারেনি শ্রাবন মা রা যাবে। কেউ ওকে খু ন করবে।মে মানুষ টা কালকে কত হেসে কথা বলছিল। সবার সাথে মিশে ছিল সে কি নিশংশ ভাবে খু ন হবে। কেউ ভাবেনি।
ওরা দরজা ধাক্কা ছে । তন্ময় এই অবস্থা দেখে প্রেমাকে ফোন করতে যাবে তখন।আদি থামিয়ে দিয়ে বলে, আমি ওকে ফোন করছি । তুই এদিকে সামলা আর আপুকে তারাতাড়ি এই রুম থেকে বের করে আন। দরজা ভেঙ্গে ফেল। আমি কথা বলে আসছি।
তন্ময়, ওকে ভাইয়া তুমি আপুকে তারাতাড়ি আসতে বলো।
, হুম।
প্রেমাকে ফোন করলো।
এদিকে, প্রান্তিকের বাড়িতে সবাই প্রেমাকে যেতে দিচ্ছে না। সবাই একসাথে দুপুরের খাবার খেতে বসেছে।প্রেমার পছন্দের খাবার রান্না করে প্রান্তিকের দুই ভাবী বেড়ে খাওয়াচ্ছে।প্রেমা বরাবরই এগুলো অপছন্দ করে।সে গুলো ই বেশি ওর সাথে হয়।
সবাই খাবার খাচ্ছে
প্রেমা তখন বলে উঠলো, আচ্ছা সেই আসা থেকে প্রান্তিককে দেখছিনা।কাল একটু কথা হয়েছিল কিন্তু এখন অবধি ফোন বন্ধ।ও কোথাও।
প্রান্তিকের বড় ভাবি, জানি না তো ও কাল তোমার সাথে দেখা করতে গেছে। তার পর বললো কি কাজ আছে। কিন্তু এখন অবধি অনেক ফোন করেছি কিন্তু বন্ধ।
,হ্যা আমি ও অনেক করেছি কিন্তু বন্ধ। বুঝতে পারছি না। কেন এমন হলো।ও ত যতই কাজ করুক দূরে থাকুক ফোন কখনো বন্ধ থাকে না।
প্রেমার মনে ভয় কাজ হচ্ছে। খাওয়া ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো প্রান্তিকের কোনো বিপদ হয়নি ত ভেবে।
ঠিক তখনই প্রেমার ফোন বেজে উঠল। দেখে আদি করেছে। সবাই খাওয়া ছেড়ে প্রেমার দিকে তাকিয়ে আছে।
, আমি একটু কথা বলে আসছি।
,প্রেমা ধরলো ,হ্যালো কি ব্যাপার আমাকে না জ্বালালে মোন ভরে হুম।
, আদি, তুমি জানো কি হয়েছে এখানে।
, কি হয়েছে।
, কেউ দুলাভাই কে মেরে ফেলেছে। পুলিশ এসছিল।
, কি বললে অবাক হয়ে। কিভাবে হলো।
, তুমি তারাতাড়ি আসো আপু দরজা খুলছে না। খুব আপসেট আছে। আমি বুঝতে পারছি না কি করবো।
,হ্যা আমি আসছি।
,এক মিনিট তুমি কোথায়।
, আমি অফিসে আছি।
, সত্যি বলছো তো।
, মিথ্যা কেন বললো। খেয়ে দেয়ে আমার কোনো কাজ নেই না।
, তুমি তারাতাড়ি আসো। কেউ সামলাতে পারছে না। আপু প্রেগন্যান্ট ।
,ওয়াট কি বলছ আলিশা প্রেগন্যান্ট মানি। অবাক হয়ে।
,হ্যা
, আমি এখুনি আসছি।
প্রেমা প্রান্তিকের বাড়ির সামনে আসলো।, আমাকে এখুনি যেতে হবে ভাবী আসলে আমার যে ভগ্নিপতি আছে ও মারা গেছে। এখুনি যেতে হবে।আর প্রান্তিকের খোজ পেলে জানাবেন।আসছি
, তুমি কিছু খেলে না।এখনি চলে যাবে।
, না ভাবী অন্য কোন দিন আসবো।
বলেই চলে গেল। গাড়ি যাচ্ছে আর ভাবছে,শ্রাবনকে মারলো কে।আর প্রান্তিক কোথায়।
সাথে সাথে রাজুকে ফোন,রাজু প্রান্তিককে পাওয়া যাচ্ছে না খোজ লাগা কোথায়। আমার ওকে চাই এট এনি কস্ট।ইমিডিয়েটলি।ডু ইট ফাস্ট।
,ওকে ম্যাডাম।
, আমার তিন ঘণ্টার মধ্যে চাই ওকে।
, ওকে ম্যাডাম।
অস্থির হয়ে যাচ্ছে।পথিক মধ্যে বাড়ি আসলো।
সবাই কে দেখে দুপুরে নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে চিন্তার ভিবর আছে।আর অনেক ই কান্না কাটি করছে আদিত্যর মামা মামী নানী তারাও চলে এসেছে চৌধুরী বাড়ি। পুরো বাড়ির নাজেহাল অবস্থা। একদিকে আলিশা দরজা বন্ধ করে রেখেছে। সেটা ওরা সবাই মিলে ভেঙ্গে ফেলেছে। আলিশাও সুই সাইট করতে চেয়ে ছিল। কিন্তু পারেনি। আদি রেগে আছে যার জন্য ওর প্রানের বোনের এই অবস্থা করেছে তাকে খুঁজে বের করবে।তাকে সেই একই অবস্থা করবে।
দৌড়ে প্রেমা আলিশার ঘরে ঢুকে দেখে সবাই ওকে সামলাচ্ছে।ও বার বার অজ্ঞান হয়ে পড়ছে। খুব ই খারাপ লাগলো।প্রেমা গিয়ে আলিশা কে জরিয়ে ধরলো।
বললো, তুই কাঁদিস না। বাচ্চাটার কথা ভাব।ওর কি হবে। তুই শক্ত না হলে ওকে কিভাবে পৃথিবীতে আনবি।
আলিশাও খুব কেঁদে দিল। প্রেমাকে জরিয়ে।প্রেমা,যাও গিয়ে ওর জন্য খাবার নিয়ে আসো দেখে ত মনে হচ্ছে কিছুই খায়নি।
খাবার আনা হলে প্রেমা নিজেই অনেক বুঝিয়ে খায়িয়ে দিল নিজের হাতে। আলিশা একটু ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লো প্রেমার কোলে।প্রেমা পরম যত্নে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
সবাই চলে গেছে আদিত্য রয়েগেছে
আদিত্য পাশে বসে দেখছে।আর বললো,খালি আপুকে ই খায়িয়ে দিবা আমাকে না । আবদারের সুরে বলল।
প্রেমা,যা গিয়ে নিজে খেয়ে নে। ছোট বাচ্চা নাকি।
আদি , মুখ কানের কাছে নিয়ে, বউয়ের আদরের জন্য ত একটু বাচ্চা হতে পারি।
, দেখতে পাস নি এখন সবার কি অবস্থা। তার মধ্যে আমার সাথে অসভ্যতামি।
, কেন কি হয়েছে।আপু এখন একটু সুস্থ আছে।প্রেমা আমি ওই লোকটা কে ছারবো না দেখ যে আমার বোন কে বিধবা করেছে।
, এখন ত সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আমি চেন্জ করে আসছি। সারা দিনে যা ধকল গেছে।
,কাল আমরা পুলিশ স্টেশনে যাব।
, যেতে ত হবেই। হুম।
সবাই প্রায় কিছুক্ষণ পর পর এসে আলিশা কে দেখে যায়। সবাই খুব সাপোর্ট দেয়।যার জন্য একটু ট্রোমা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে।
ফোনে বলেছিল।
Hunter, তুই কি কাজ করেছিস জানিস।যাকে ধরে আনার কথা ছিল তাকে না এনে অন্য কাউকে কেন এনেছি স। তোকে আমি।
Some one, আমি বুঝতে পারিনি। আমার ভুল হয়ে গেছে। ক্ষমা করে দিন।
Hunter, আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে কোন লাভ নেই। হা হা হা হা হা
Some one লোকটা কেউ মে রে ফেললো পাশের জন।আর ফোন টা মেঝেতে পরে গেছে। সেখান থেকে শুধু হাসির আওয়াজ আসছে।
এই হাসির আওয়াজে প্রান্তিক চোখ খুলে তাকালো। সামনের একটা লোক আর একটা লোক কে মেরে ফেলেছে।বেশ অবাক হয়ে গেল। কিছু বলতে পারছে না কারণ মুখ বেধে রাখা হাত পা একটা চেয়ারের সাথে বাঁধা খুব শক্ত ভাবে।
হাসি টা প্রান্তিকের কেমন জানি লাগছে।
এদিকে রকিং চেয়ারে দুলছে hunter হাতে একটা ফোন ঘোরাচ্ছে আর বলছে, আমার মুখোশ তুই খুলবি হা হা হা হা। আমাকে ভিডিও করে রাখা হা হা হা হা।কারোর সাধ্য নেই আমাকে খুঁজে বার করবে ডেবিল মার্কা হাসি দিয়ে।যেমন তুই মরলি তেমন তোদের সবাই কে মারবো হা হা হা। খুব সখ ছিল না তোর,,,,,,,
চলবে,