ইয়াসমিন_রিমা #অসম_প্রেম #পর্ব_৪৫

0
384

#ইয়াসমিন_রিমা
#অসম_প্রেম
#পর্ব_৪৫

#ফ্লাসব্যাক
প্রিয় প্রেমাকে রাতে ভুতের ভয় দেখিয়ে প্রতিশোধ নিয়ে ছিল।প্রেমার ভয়ে জ্বর এসেছিল।পরে প্রিয় নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছিল।

প্রেমা আর আয়শা রোজ গ্রামের রাস্তায় দিয়ে যাবার সময়
রোজ চায়ের দোকানে প্রিয় তাকিয়ে থাকে এক স্নিগ্ধ চাহনিতে।প্রেমা তাকে ক্ষমা করেনি। অনেক অভিমান করে ছিল। সময়ের সাথে সাথে প্রিয় প্রেমাকে ভালোবেসেছিল।

সেদিন আয়শা যায়নি স্কুলে প্রেমা একাই বাড়ি আসছিল। হঠাৎ প্রিয় কিছু গোলাপ এনে হাঁটু গেড়ে বসে প্রপোজ করলো আর বললো।

,প্রিয়, আমি তোমাকে ভালোবাসি। খুব অসম্ভব রকম ভালোবাসি।আমি ছাড়া তোমার অন্য কোথাও আনন্দ হলে ।আমার দুঃখ লাগে। আমি বেশি স্বার্থপর মানুষ।
আমি তুমি শুধু আমার কাছে ই সুখে থাকো অন্য কারো কাছে না। আমি চাই তুমি আমাকে নিয়ে সুখে থাকো। তোমার সব আনন্দ আমাকে ঘিরে হোক । তুমি আমার হয়ে থেকো। শুধু ই আমার।
শোনো প্রিয়তমা আমি এই পৃথিবীর সব থেকে সুদর্শন পুরুষ।

,প্রেমা, আপনি চলে যান।

, আমার তোমাকে ছাড়া কিছুই ভালো লাগে না। আমি শুধু তোমাকেই ভালবাসি। আমি শুধু তোমার শেষ ভালোবাসা হতে চাই। প্রথম নয়।

, আপনি কেন এমন করছেন। আমি আপনাকে বাসি না।
নিচের দিকে তাকিয়ে।

, সত্যি বলো তুমি আমাকে ভালোবাসো না খোদার কসম।

,প্রেমা,ভয় পেয়ে ছিল। চোখ কয়েক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো। হুম বাসি।

, সত্যি।

তার পর দুজনে ঘুরতে গেল নদীর পাড়ে।প্রিয়,সরি তোমার সাথে এমন করা উচিৎ হয়নি।
, মুচকি হেসে ওকে।

সময়ের সাথে সাথে দুজনের ভালো বাসা বাড়তেই থাকে। তবে কেউ জানতো না।প্রায় অনেক ই প্রতাপ চৌধুরী কে বলতো কোনো মাস্টারের ছেলের সাথে তার নাতনিকে দেখেছে।প্রেমার ssc পরিক্ষা সবে শেষ হলো। পরিক্ষা শেষে দুজনে ঘুরতে গেল।বেলা গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল। তবুও বাড়ি ফেরার নাম নেই। প্রিয় আর প্রেমা একে অপরকে প্রচন্ড রকমের ভালোবাসে।

প্রতাপ চৌধুরী বাড়ি এসে দেখে নাতনি আসেনি বিকেল হয়ে গেছে। তার সন্দেহ হলো কোথায়। খুব রাগি মানুষ তিনি জাত পাত নিয়ে খুব ভাবেন। তার পরিবারের সাথে কখনো ই ওই মাস্টার এর মধ্যে খাপ খায় না। তিনি কিছু লোক পাঠালেন তার নাতনিকে নিয়ে আসতে।

দুজনে হাত ধরে দুলতে দুলতে আসছিল। হঠাৎ সামনে কয়েকজন লোক এসে দুজন কে ধরে নিয়ে প্রতাপ চৌধুরীর সামনে নিয়ে আসলেন। দুজনে খুব ভয় পেয়েছে।
সেখানে রতন মাস্টার মানে প্রিয়র বাবা আসলেন। প্রিয় ভাবতেই পারেনি ওর বাবাকে ধরে নিয়ে আসবে।বড় লোক গুলো এত নির্দয় কিভাবে হতে পারে।

গ্রামের চৌধুরী বাড়ির উঠানে অনেক লোক জড়ো হয়ে আছে। সবার সামনে দু জন অপরাধী আছে মাঝখানে। প্রিয় আর প্রেমা। মাথা নিচু করে আছে।

প্রিয়র বাবা এসে প্রিয় কে অনেক গুলো চর থাপ্পড় মেরে দিল।আর বললো, এই দিন দেখার জন্য তোকে আমি জন্ম দিয়ে ছিলাম।
প্রতাপ চৌধুরী,আপনার ছেলে কে যেন কোনো দিন আর
আমার নাতনির আসে পাশে ও না দেখি।যদি দেখি তাহলে।

প্রেমা চিৎকার করে বলে উঠল দাদার পা জরিয়ে, কেঁদে,না দাদা ওর কিছু করো না আমি ওকে ভালোবাসি।প্লিজ ওর কোনো ক্ষতি করো না।

, প্রিয়, আমাদের অপরাধ কি আমরা শুধু একে অপরকে ভালোবাসি।
প্রতাপ চৌধুরী,ওর গলা বেশি বেরেছে না।ওরে কয়েক ঘা দিয়ে দে।

কিছু লোক লাঠি দিয়ে প্রিয়কে মারছে আর প্রিয়র বাবাকে ধরে রেখেছে।যাতে না আটকাতে না পারে। প্রেমাকে ও আটকে রেখেছে। কোনো রকম ছিটকে ওকে বাঁচাতে গেল। কিছু মার প্রেমার গায়ে পড়লো।, কেঁদে, তোমার কিছু হবে না। আমি হতে দিব না। প্রিয় ওকে বার বার সরিয়ে দিচ্ছে কারণ প্রেমা ব্যাথা পাবে বলে।প্রেমা প্রিয়কে আস্টে পিস্টে জরিয়ে ধরে রেখেছে।সহজে কেউ ছাড়াতে পারছিল না।

ওখান থেকে প্রেমাকে জোর করে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আর বলছে, আমার প্রিয় কে লাগবে। আমি ওকে খুব ভালোবাসি। ওকে ছেড়ে দাও। আমি তোমাদের সব কথা শুনব শুধু ওকে ছেড়ে দাও।সরিয়ে নিয়ে জোর করে ঘরে তালা মেরে বন্ধ করে রাখলো।

এদিকে প্রিয় আধমরা হয়ে আছে । প্রিয় কে জোর করে তার বাবা বাড়ি নিয়ে গেল। প্রিয়র বাড়িটা কাঠের দোচালা টিনের ঘর। মধ্য বিত্ত পরিবার।

প্রিয়র মা তাদের একমাত্র ছেলের এই অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে গেলেন।, ওকে কারা এভাবে মারছে।

প্রিয়র বাবা, তোমার ছেলে বড় লোকের মেয়ের সাথে প্রেম করে।তারা এমন অবস্থা করেছে। পঞ্চায়েত প্রধান এর বড় ছেলের মেয়ের সাথে।জানো তুমি ওরা কত বড় লোক।আর তোমার ছেলে ওই মেয়ের জন্য পাগল।জানো তুমি ওরা আমাদের কত অপমান করেছে। তবুও তোমার ছেলে ওই মেয়েকে ই ভালো বাসবে বলে।

, কি বলছ তুমি। কেঁদে।

,আরো বলেছে আমরা আমাদের ছেলেকে টাকা লোভে ওদের মেয়ের দিকে লেলিয়ে দিয়েছি।
কেঁদে। আমি একজন মাস্টার। সবাই আমাকে সম্মান করে। এখন থেকে সবাই আমার উপর হাসবে।

প্রিয় বিছানায় শুয়ে আছে আর ওর মা ওকে মলম লাগিয়ে দিচ্ছে।আর বলছে, কেন এমন করিস বাবা। ওদের সাথে আমাদের মিলে না। তুই ওই মেয়ে রে ভুলে যা।

প্রিয়, আমি ওকে ভালোবাসি মা।কি হয়েছে তাতে না হয় ওরা আমাদের থেকে বড় লোক আমি প্রেমা কে সব সময় সুখে রাখার চেষ্টা করব।

, তুই আবার পাগলামো শুরু করেছিস। তুই ভুলে যা ও তোকে ভালোবাসে না। তোর সাথে মজা করছে।

, না মা আমি ওকে ভালোবাসি ও আমাকে ভালোবাসে।

এদিকে প্রেমাকে ঘরে আটকে রাখা হয়েছে।প্রেমা শুধু চিৎকার করে বলছে, আমার প্রিয়কে লাগবে। ওকে এনে দাও। কেঁদে ‌‌। সারা রুমে যা ছিল সব ছুরে ফেলেছে ‌ফ্লোরে শুয়ে কাঁদছে।, আমরা কি অপরাধ করেছি শুধু ভালো বাসি।

শহরে খবর গেল। আসরাফ চৌধুরী ও রিনা চৌধুরী আসলেন। মেয়ে এমন কান্ড ঘটিয়েছে ভাবতেই পারেনি।

আসরাফ চৌধুরী,বাবা কি হচ্ছে এইসব।

প্রতাপ চৌধুরী, তোমার মেয়ে ছোট লোকের ছেলের সাথে প্রেম করে বেড়াচ্ছিল ।আজ ধরা পড়েছে।আগে কেউ তেমন জানতো না।

, কোথায় ও।

রিনা চৌধুরী মেয়ের রুমে আসলেন।বাইরে থেকে বন্ধ করা খুলে ভেতরে ঢুকতেই দেখলেন। পুরো মেঝেতে সব ছরিয়ে ছিটিয়ে আছে। তার মধ্যে প্রেমা শুয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে যাচ্ছে।সেই এক ড্রেস পড়া।

, তুই কি শুরু করেছিস।এই প্রেম পরিতির জন্য কি তুই গ্রামে থাকার জন্য পাগল হয়ে গেছিলিস হু।

, আমি ওর কাছে যাবো। তোমরা ওর কোনো ক্ষতি করো না।

,আসরাফ চৌধুরী,ওর সাথে কি কথা বলছো। ওকে এক্ষুনি নিয়ে চলো শহরে ।

,প্রেমা, আমি যাব না। আমি প্রিয় কে ছাড়া যাব না।

রিনা চৌধুরী, তুই এমন কেন করছিস।ও তোর সাথে নাটক করছে। আমাদের সাথে চল।

সেই রাতেই।প্রেমা কে জোর করে শহরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বের হয়।

প্রিয় কোনো ভাবে জানতে পারে যে প্রেমাকে জোর করে নিয়ে যাচ্ছে।ও চলে আসে।দেখে গাড়ি নিয়ে রওনা হয়েছে।প্রেমা কোনো ভাবে প্রিয়কে দেখতে পায়।প্রেমা প্রিয় বলে চিৎকার করে উঠে। প্রিয় খুব দ্রুত দৌড়ে যাচ্ছে গাড়ির পিছু পিছু কিন্তু। শেষ পর্যন্ত আর পারলো না।প্রেমা শহরে চলে আসে।

প্রেমা শহরের এক কলেজে ভর্তি হয় ইন্টারের জন্য। কিন্তু প্রেমা সব সময় মন মরা হয়ে থাকে। একদিন কলেজ থেকে বাড়ি আসছিল। তখন প্রিয় কে দেখতে পায়। দৌড়ে ওর কাছে যায়।

, তুমি এখানে। বলেই জরিয়ে ধরলো।
,হ্যা তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না।তাই চলে আসলাম।আমি মাস্টার্স করার জন্য শহরে এসেছিলাম।

,তাই। খুব খুশি হয়ে।

, হুম।

,চলোনা আমি দূরে কোথাও পালিয়ে যাই কেউ কোথাও খুঁজে পাবে না। আমাদের।

, আগে আমি একটা চাকরি যোগার করে নি তার পর দুজনে দূরে কোথাও চলে যাব।

, ঠিক আছে। তোমার শরীর ঠিক আছে।

, এখন তোমাকে পেয়ে অনেক টাই সুস্থ আছি।

তুমি ও না। আমি যাই এখন থেকে আমাদের কথা কাউকে জানতে দিলে হবে না।ওরা যদি আবার আমাদের আলাদা করে দেয়।

বেশকিছু দিন এভাবেই কেটে যায় কিন্তু ওদের ভালোবাসার কেউ জানে না।

দেখতে দেখতে আজ ওদের ভালোবাসার চারটি বছর পূর্ন হলো।প্রেমার আজ HSC রেজাল্ট দিবে।

আজ দুজকে একসাথে দেখে ফেলে আসরাফ চৌধুরী। গাড়ি থেকে নেমে। প্রিয়র গালে কত গুলো থাপ্পড় মেরে বলে, তুই আবার আমার মেয়ে সাথে মিশেছিস ছোট লোক।

প্রেমা,বাবা আমার কথা টা শোনো।

, তোকে হাজার বার বলেছি ওই ছেলের সাথে মিশবি না।
কয়েক টা চর মেরে জোর করে নিয়ে যায়। প্রিয় কে বলে, ওর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। তুই আর ওর পিছু নিবি না। সেদিন ত বেঁচে গেছিলিস। কিন্তু এর পর তোর বাবা কে জন্য কব র খুরতে হবে।

প্রেমাকে বাড়ি নিয়ে এসেছে। সবার সামনে অপরাধীর ন্যায় দাঁড়ানো।

আসরাফ চৌধুরী,তোর বিয়ে আমি ঠিক করেছি আমার বন্ধুর ছেলের সাথে। আর তার সাথে ই হবে তোর বিয়ে। সবাই কান খুলে শুনে রাখ আমার কথাই হচ্ছে শেষ কথা।
তুই যদি ওই ছেলেকে না ভুলিশ তোকে আমি তেয্য করব।

প্রেমা, আমি ওকে ভালোবাসি। তোমরা চাইলে ও ওকে আমার মন থেকে বার করতে পারবে না। আমার জীবনে কেউ আসবে না।যে আসবে তাকে আমি মেরে ফেলবো। আমার জীবনে শুধু প্রিয় থাকবে।

আসরাফ চৌধুরী মারতেই যাবে তখন শাহজাহান চৌধুরী এসে ধরে ফেললেন।,দাদা কি করছেন ও না একটু ভুল করেই ফেলেছে। আমরা আছি ত ওকে বুঝিয়ে বলব।ও ঠিক আমাদের কথা শুনবে।

সবাই আতংকিত হয়ে আছে। বাচ্চারা ভয় পেয়ে আছে। চিল্লাচিল্লিতে।

প্রেমা, ওকে আমার জীবন থেকে কেউ সরাতে পারবে না। চিৎকার করে।

রিনা চৌধুরী, কেন আমাদের কথা তুই শুনছিস না।বল তো।ওই ছেলের জন্য আর কত পাগলামী করবি।

সবাই বলতে লাগলো,ওই ছেলে তোর বিনিময়ে তোর বাবার কাছ অনেক টাকা নিয়েছে।ও বলেছে আরো ওর টাকা লাগবে।

,প্রেমা, আমি তোমাদের কারোর কথা বিশ্বাস করি না। মিথ্যা বলছো।ও লোভী না।ও এমন নয়।আর যদি তাও হয় আমি আমি ওকেই ভালোবাস।যদি আমাকে তেয্য ও করে দাও তাতে আমার কিছু জায় আসে না। চিৎকার করে।

আসরাফ চৌধুরী খুব রেগে আছেন।, তুই তাই চাস তো ওকে। শাহাজাহান চৌধুরী কে বললেন।,যা উকিল কে খবর দে আজি ওকে আমি তেয্য করব।

সবাই খুব মানা করলো কিন্তু উনি মানলেন না।আর বললেন, আমার কোনো সন্তান নেই। রিনা ওই মেয়ে যেন এই বাড়ির বাইরে না যায়।যদি যায় তো ওর পা ভেঙ্গে ঘরে বসিয়ে রাখবো।

কথার মাঝে উকিল আসলো। তাকে আসরাফ চৌধুরী বলেন আমি আমার মেয়ে কে তেয্য করব। তার লিগাল কাজগ সই করে কোটে পাঠাতে হবে।

সবাই অবাক হয়ে গেল।কি করছে আসরাফ চৌধুরী।
রিনা চৌধুরী কেঁদে বলে উঠলেন , আমার মেয়ে একটা ভুল করেছে।ওর বয়স কম তার জন্য তুমি ওকে তেয্য করবে ।ও যাবে কোথায়।

আসরাফ চৌধুরী, আমার বন্ধু কে বলেছি। খুব শিঘ্রই ওর ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে যাবে।

প্রেমা, আমি বিয়ে করবো না। সবাই প্রেমা ধরে রেখেছে।

আসরাফ চৌধুরী সেই লিগাল পেপারে সাইন করে প্রেমার হাতে দিলেন।,নে সাইন কর।
,বাবা তুমি আমার সাথে এমন করতে পারো না। আমি শুধু ওকে ভালোবাসি।আর কোনো পাপ করিনি। কেঁদে। আমি তোমাদের কেউ না। কেঁদে।

প্রেমা ভয়ে ভয়ে সাইন করে দিলো সবাই আটকালেও থামলো না।

প্রেমা, আমি তোমাদের কেউ না। আমার কোনো তোমাদের বাড়িতে অস্থিত্ব নেই। তাই চলে গেলাম।যেই বাড়ির বাইরে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। আসরাফ চৌধুরী বলেন, দাঁড়াও আমার বাড়ি থেকে এক পাও বাইরে রাখবে না। সবাই কে বলেন ওকে ঘরে তালা মেরে আটকে রাখতে।

সেই মত সবাই মিলে ওকে জোর করে আটকে রাখে।
প্রেমা হাঁটু গেড়ে বসে আছে দরজায় হেলান দিয়ে।কাঁদছে আর বলছে, আমি কি পাপ করেছি।যার জন্য তোমরা আমাদের সাথে এমন করছো।ও শুধু একটু মধ্য বিত্ত পরিবারের ছেলে। আমি ওকে ভিশন ভালো বাসি। ধনী গরীবের ভালোবাসা কেন এই সমাজে গ্রহনযোগ্য নয়।
প্রেমা চিৎকার করে বলছে আর নিচে থাকা সবাই তা শুনতে পাচ্ছে।, আমি তোমাদের সব কথা মেনে নেব শুধু এক শর্তে আমার জীবনে কেউ আসবে না।

এভাবে অনেক দিন প্রেমাকে আটকে রাখা হলো।যত সময় যাচ্ছে ততই ওর পাগলামী বেড়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে প্রিয় নিখোঁজ। মনে হয় ওকে গুম করা হয়েছে।প্রেমা হাজার চেষ্টা করেও ওর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

প্রেমা নতুন ভার্সিটিতে ভর্তি করা হলো কিন্তু প্রিয় নেই। প্রথম দিন ভার্সিটিতে বাজে অবস্থার মধ্যে পড়তে হলো। মেজাজটা এতটাই খারাপ ছিল যে। যে ছেলেটা রেগিং করেছে তাকেই ভরা মাঠে কিস করে ফেলেছে।
মাথা র মধ্যে শুধু প্রিয়। কখন কি করে তার কোনো হুস থাকে না।একদম অনুভূতি হীন হয়ে গেছে।সব সময় গাম্ভীর্য থাকে।সব কিছুর মাঝেও না পাওয়াটা পোড়াচ্ছে। চারিদিকে ফিরে শুধু প্রিয়র অস্থিত্ব খুঁজে বেরায়।

সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কিছু স্যাররাও ছিল।তারা সেই কথা আসরাফ চৌধুরী কে বললেন।যে ছেলেটার সাথে এমন করেছে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানতে পারেন এই হলো সেই ছেলেটি যে তার বন্ধু ফাহাদ আহমেদ এর ছেলে ফারহান।যার সাথে বিয়ে ঠিক করেছে। তিনি ভাবলেন এই ইস্যুতে ই বিয়ে টা তাড়াতাড়ি দিবেন।আর ফাহাদের কোনো আপত্তি নেই।

খুব মুশল ধারে বৃষ্টি নামলো প্রেমা অন্য মনস্ক হয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। সবাই দৌড়ে যে যার অশ্রয় স্থল খুঁজে নিল বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য। কিন্তু প্রেমা প্রিয়তেই বিভোর হয়ে আছে।ভাবছে,

আমি বিয়ে করবো না।একাকী জীবন বেছে নিয়েছি।ও আমার ভালোবাসা। আজ ও আছে ।কাল ও থাকবে । গল্পে না থাকুক কবিতায় থাকবে। বাস্তবে না থাকুক কল্পনায় থাকবে।ও আমার ভালোবাসা।।
অপেক্ষা হলো ভালোবাসার শুদ্ধতম উদাহরণ।বাকি সারাটা জীবন প্রিয়র শেষ সৃতি টুকু নিয়েই কাটিয়ে দিব।
যদি কোনো পুরুষ জানতো তাকে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করাটা কতটা যন্ত্রনার তাহলে কেউ কখনো ছলনাময়ী বলতো না। আমার জীবনে শুধু প্রিয় থাকবে। আমার একাকীত্ব শুধু ই তুমি। হয়তো আর কোন দিন তোমাকে আমার পাওয়া হবে না।

আকাশের দিকে তাকিয়ে।আর মেঘ চিরে বৃষ্টি তে পুরো শরীর ভিজিয়ে দিল। দুহাত মেলে বৃষ্টি কে আলিংগন করে নিল। চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো।সেটা বৃষ্টির পানির সাথে মিশে গেল।

এভাবেই শেষ হলো এক না পাওয়া‌‌ ভালোবাসার গল্পের ।

প্রেমা আর কোনো দিন বিয়ে করেনি। একাকী জীবন বরন করে নিয়েছে।সব মেয়েরা ভালবাসার মানুষের জন্য অপেক্ষা করে না।প্রেমা প্রিয়র জন্য অপেক্ষা করে আছে। পৃথিবীটা গোল কোনো না কোনো একটি সময়ের বাকে দেখা হবে কিন্তু কথা হবে না। সেই শান্তি টুকুই চায়।
শেষ অপেক্ষা।

যে বলেছিল,আমি ছাড়া তোমার অন্য কোথাও আনন্দ হলে ।আমার দুঃখ লাগে। আমি বেশি স্বার্থপর মানুষ। তুমি শুধু আমার কাছে ই সুখে থাকো অন্য কারো কাছে না। আমি চাই তুমি আমাকে নিয়ে সুখে থাকো। তোমার সব আনন্দ আমাকে ঘিরে হোক । তুমি আমার হয়ে থেকো। শুধু ই আমার।।।

#বর্তমান ,

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here