#ইয়াসমিন_রিমা
#অসম_প্রেম
#পর্ব_৬২
প্রেমার মাথায় হাত বুলিয়ে।
,আদি, তুমি ছাড়া আমি অপূর্ন । তুমি আমার রাজ্যে মহারানী। তোমাকে আমার জন্য বাঁচতে হবে। আমাদের সন্তানের জন্য বাঁচতে হবে। আমার সন্তান কে আমায় দিতে হবে। তোমার মুক্তি নেই আমার থেকে।
প্রেমা মনে মনে ভাবছে, আমি ওর সন্তানকে দিয়ে চলে যাব। আমি ক্ষমার অযোগ্য। আমাকে শুদ্ধ হতে হবে। পবিত্র হতে হবে। আমি সবার থেকে অনেক দূরে চলে যাব।
প্রিয়,এত কি ভাবছো তুমি।
,প্রেমা, কিছু না তো।
, আদি তোমাকে সত্যি ভালোবসে। ওকে ভালো রাখার চেষ্টা কর।যে কষ্ট পেয়েছ। সেই কষ্ট ওকে দিও না।
,প্রেমা,শেষ মুহূর্তে আমার মন বলছিল তোমার আঙুল ছুঁলে বলি তুমি থেকে যাও । অথচ আমার খুব ভয় হলো যদি ভালোবাসাটাই তোমার বিরক্তির কারণ হয়ে উঠে। আমি তোমাকে ভালো না বেসে ই আসতে দিয়েছিলাম এখন ভালো বেসেই যেতে দিচ্ছি।
জীবনে প্রথম ভুল ছিল তোমার সাথে পরিচয় দ্বিতীয় ভুল
ছিল ভালো লাগা। তৃতীয় ভুল আমি নিজেই করেছি তোমাকে নিজের থেকে বেশি ভালো বেসে। শাস্তি এখন পেতেই হবে।বলো।
আমি যে বড় পাপী আমি কারো ভালোবাসার যোগ্য নই। আমার জন্য তোমাকে সন্তান হারা হতে হয়েছে। আমাকে পারলে ক্ষমা করে দিও।
, প্রিয়,যাকে একবার ভালোবাসা যায় সে যদি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পাপীও হয় তবুও তাকে ঘৃণা করা সম্ভব নয়।যদি ঘৃণা করা সম্ভব হয় তবে সেটা কখনোই ভালোবাসা ছিল না।
বুঝলে তুমি।গালে হাত বুলিয়ে।
তোমাকে কিছু দিনের মধ্যেই সারেনডার করতে হবে। সবাই জেনে গেছে তুমি কে। You are the most powerful Mafia. I’m sorry.পুলিশ তোমাকে গাড দিচ্ছে। কোথাও তুমি পালাতে পারবে না।
,প্রেমা, I’m really sorry প্রিয়। তুমি প্রেমাকে মারতে পেরেছ। কিন্তু Hunter কে কখনোই নয়।বাকা হাসি দিল।
You are the wrong Mr Peo Ahmed so sad.তোমার ওই চার শিকলের কারাগারে প্রেমা চৌধুরীকে আটকাতে পারবে না। Hunter বার বার ফিরে আসবে। এবার খেলা চোর পুলিশের হবে।হা হা হা হা।কেউ পারবে না।
অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,যে কি না একটু আগে আবেগে কথা বলছিল এখন ভেতরে থাকা Hunter কে জাগিয়ে তুলেছে।
প্রিয়, তুমি আর কোনো খারাপ কাজ করবে না। এবার ভালো হয়ে যাও।
, ওকে। মুচকি হেসে।
প্রিয় চলে গেল।
প্রেমা অবাক হয়ে তাকিয়ে আদি কে প্রশ্ন করলো।, প্রিয় কিভাবে জানলো Hunter কে ।
,আদি, আমি বলেছি।
, কেন। আমাকে শাস্তি দেওয়া খুব শখ তাই না।
,না তাই নয়। তুমি ভুল করেছো। তার জন্য শাশন করতেই হতো।
, আমি তোমার থেকে আট বছরের বড়। এই সমাজ কি ভাববে। সবাই কি বলবে।
, কি হয়েছে। আমাদের সম্পর্ক না হয় সবার থেকে আলাদা হলো। আমাদের প্রেম অসম। অসম প্রেম গল্পের প্রেমিক প্রেমিকা আমরা।
আদি প্রেমার হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে জরিয়ে ধরে কথা বলছে।
, তোমার সাথে যখন পরিচয় হয়েছিল তখন সব কিছু অন্য রকম ছিল।তাই না।
, হুম।
,জানো তুমি থেকে আপনি বেশি সুন্দর লাগে।
,তুমি আমার জীবনের সেই মানুষ যাকে আমি কখনো যাকে আমি কোনো দিন হারাতে চাই না।
অন্তরে ভালোবাসা থাকলে শতবার বিচ্ছেদের পর ও এক হওয়া যায়।
, Hunter কে ধরিয়ে দেওয়া প্লান শাস্তি তোমাকে পেয়ে ই হবে আদিত্য শেহ্জাহান খান।
, কি এত কিছু হয়েছে তুমি একবিন্দু ও বদলাওনি।
,হা হা হা হা। আমার কিছু হয়নি। আমি সম্পূর্ণ ভাবে ঠিক আছি। আমার জানার দরকার ছিল কে আমাকে শেষ পর্যন্ত ভালোবাসতে পারে।
আদি গিয়ে ই এক চর মেরে দিল।, তোমার কোন গুলি লাগেনি সব মিথ্যা
,হে হে হে হে। আমাকে সেদিন অনেক অপমান করেছিলে। যাস্ট আমি সেটার পরিক্ষা নিয়েছি। খুব তো বড় বড় মুখ করে বলেছিলে আমাকে কোন দিন ক্ষমা করবে না। এখন কিই হলো। হ্যা।হে হে হে।
, আদি রাগে ফুঁসছে, আমার সাথে মজা করা তাই না। বলেই কান মলে দিয়ে বললো, পুরুষের ভালোবাসা ভয়ংকর।আজ থেকে তুমি আমার সেই ভয়ংকর ভালোবাসা দেখবে।
ফারহান আশ্চর্য হলো প্রেমার সব কান্ডে আজ বুঝতে পারলো প্রেমা সত্যি প্রিয় কে অনেক বেশি ভালো বাসে। একজন ভালো বন্ধু হয়ে এখন থেকে সব সময় পাশে থাকবে।প্রেমার সব ভুল ক্ষমা করে দিলো। কিন্তু ও যে Hunter সেটা কখনোই জানতো না।
বাড়ির সবাই খুব অবাক হলো যে প্রেমাই Hunter ।কত যে খু ন করেছে হিসেবে নেই।
প্রায় সব কিছু ই প্রেমার হাতের মুঠোয়। তাই সহজে ধরা সম্ভব নয়।এর সাথে অনেক লোক যুক্ত। উপর মহলের লোক থেকে শুরু করে মন্ত্রী মিনিষ্টার আছে।
প্রেমা বাড়ি ফিরে আসলো। সবাই খুব অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কেমন মেয়ে কি অবস্থা করে ফেলেছে নিজের। সবার খুব খারাপ লাগছে যে প্রেমার খারাপ অবস্থার জন্য সবাই দায়ী।সবাই প্রেমার কাছে ক্ষমা চাইলো কিন্তু একজন খারাপ মানুষ। তাকে শাস্তি পেতে ই হবে।
আদি বাবা হবে খুশি ঠ্যালায়। সবাই কে জানাতে ভুলেই গেছিল।প্রেমা মা হতে চলেছে।আদি এখন পর্যন্ত বিয়ের কথা টাও জানায়নি।
প্রেমা সবাই কে ঘুরে ঘুরে দেখছে সবার সাথে খুব অন্যায় করেছে।আজ বাড়িটা যেন অনেক দিন পর প্রান ফিরে পেল।
সবাই খুব খুশি। সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছে।
এদিকে ঘরের মেয়ে বউরা রান্না ঘরে রান্না করছে।
প্রেমা দোতলা থেকে নিচে নামার সময় মাথা ঘুরে পড়ে গেল।
সবাই খুব টেনশন করছে। কিছুক্ষণ আগে ডাক্তার এসেছে।এ খবর আদি জানে না সে বাসায় ছিল না অফিসে ছিল।
প্রেমা সোফায় শুয়ে আছে। চোখ মেলে দেখলো পাশে ডাক্তার সবাই কে বললো।
, আপনার এভাবে টেনশন করছে কেন। সবাই আনন্দ করুন। আপনাদের বাড়িতে নতুন অতিথি আসবে। আপনাদের বাড়ির মেয়ে মা হতে চলেছে। আপনারা দাদা দাদী হতে চলেছেন।
বলেই ডাক্তার চলে গেল।
বাড়ির সবাই রিতিমত ঝটকা খেল।প্রেমা মা হতে চলেছে। কিন্তু কে এই বাচ্চার বাবা।
আসরাফ চৌধুরী, তুই মা হতে চলেছিস। রেগে।কে বাচ্চার বাবা ।
রিনা চৌধুরী, তুই এত নিচে নেমে গেছিস।ছি।
কনিকা শেহ্জাহান আদির মা, ভাবী ওকে এভাবে না বলে। জিগ্যেস করুন। কোন হতরছারা আমাদের বাড়ির মেয়ের সর্বনাশ করেছে।কি হলো তুই এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন।কি হলো বল।
প্রেমা মুচকি মুচকি হাসছে। সবার অবস্থা দেখে। মনে মনে ভাবছে যে এই কাজ করেছে তার নাম শুনলেই সবার হয়ে যাবে হে হে হে।
অজয় চৌধুরী মাথার কাছে বসে আলতো করে বললো,দেখ মা তুই সব বল। আমাদের।কে এমন করলো।দেখিস এই খারাপ কাজের জন্য ওকে শাস্তি দিব। আমরা তোকে কত ভালোবাসি বল। আমরা তোকে হারাতে চাই না।কে বল।
,প্রেমা, হঠাৎ বলে উঠল। তোমাদের আমাকে হারাতে হবে ই।এটাই আমার ভাগ্য।
সবাই অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে।
, অনিন্দিতা চৌধুরী,কি হল তুই বলছিস না কেন। কোন বান্দর এই কাজ করেছে। খালি কথা ঘুরাস।
সবার পেছন থেকে আদি বলে উঠলো, সেই মহাসয় আর কেউ নয় সয়ং আমি।
সবাই ভরকে গেল।
আসরাফ চৌধুরী অজয় চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে রইল। চোখ বড় বড় করে। কারন তারা দাদা নানা দুটোই হতে চলেছে।
এদিকে রিনা চৌধুরী কনিকা শেহ্জাহান দিকে তাকিয়ে রইল অবাক হয়ে। কারন তারা দাদী নানী দুটোই ।
এতক্ষণ ধরে যাকে নিয়ে এত কিছু বললো। সে এই বাড়ির ছেলে।
সবাই একে অপরের দিকে তাকিয়ে শুধু কেউ কিছু বলছে না। কারন সবাই জোরায় জোরায় হতে চলেছে।কেউ দাদা নানা।কেউ দাদী নানী।কেউ চাচা মামা। আবার কেউ খালা ফুফু দুটোই।
আদি তার মায়ের কাছে গিয়ে বলল, আমি ই সেই হতরছারা। এবার অনিন্দিতা চৌধুরী সামনে বললো আমি সেই বান্দর।
হে হে হে হে।
সবাই অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে। কেমনে কি হল।
চলবে,