আমৃত্যু_ভালোবাসি_তোকে #লেখনীতে_সালমা_চৌধুরী #পর্বঃ১০

0
745

#আমৃত্যু_ভালোবাসি_তোকে
#লেখনীতে_সালমা_চৌধুরী
#পর্বঃ১০
#পেইজ: Salma Chowdhury – সালমা চৌধুরী (scsalma90)
মেঘ এক ছুটে বাড়ির ভেতরে ঢুকলো। সোফায় বসে গল্প করছিলো মালিহা খান, হালিমা খান আর আকলিমা খান।

মেঘকে ছুটতে দেখে দৃষ্টি পরলো সেদিকে।

আকলিমা খান ডেকে বললেন,

“মেঘ কি হয়ছে তোর, এভাবে ছুটছিস কেনো?”

মেঘ সিঁড়ির নিচে এসে থামলো, হাঁপাচ্ছে মেয়েটা, জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে আর বার বার দরজার দিকে তাকাচ্ছে। আবির ভাই বলেছে কোথায় যাবে তারপরও যদি কোনো কারণে বাসায় চলে আসে, এই আশংকায় বার বার তাকাচ্ছে মেঘ।

হালিমা খান সূক্ষ্ম নজরে মেঘের পায়ের দিয়ে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
“তুই নুপুর পেলি কোথায়?”

মেঘ এবার দরজার দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে মা কাকিয়ার দিকে তাকালো, অকস্মাৎ বলে উঠলো,

“আবির ভাই দিয়েছে! ”

হালিমা খান, মালিহা খান আর আকলিমা খান তিনজন অবাক হয়ে চোখাচোখি করলো কিছুক্ষণ,

মালিহা খান পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন,
“আবির তোকে নুপুর দিয়েছে মা?”

মেঘ এবার স্পষ্ট দৃষ্টিতে তাকালো, একটু রাগী রাগী ভাব নিয়ে বললো,

“আবির ভাই ই দিয়েছে বড় আম্মু! তোমার ছেলে না দিলে কি তোমার ছেলের কথা বলতাম আমি?”

হালিমা খান কয়েক মুহুর্ত নিরব থেকে আবার বললেন,

তোর মনে আছে মেঘ, “আবির বিদেশ যাওয়ার ৬ মাস আগে, তোর নুপুর গুলো তোর থেকে আমি নিয়ে নিছিলাম! ”

মেঘ কিছুক্ষণ ভাবলো তারপর বললো,
“হ্যাঁ আম্মু মনে পরছে, ঐ নুপুর গুলো কোথায়?”

হালিমা খান সহসা উত্তর দিলেন,

“ঐগুলো তো আমার কাছেই আছে। কিন্তু সেদিন নুপুর গুলো আমি নিজের ইচ্ছে তে নেই নি। আবির ই বলেছিলো নিতে৷”

মেঘ চমকে উঠলো মায়ের কথায়, ছুটে এসে বসলো সোফায়,

“কি হয়ছিলো বলো আম্মু, কেনো নিয়েছিলে?”

হালিমা খান একটু ভেবে চিন্তে বললেন,

“তেমন কিছু না, আবির আমার কাছে এসে বলেছিলো, তোর পায়ের নুপুরের শব্দ নাকি ওর মাথায় ধরে, ঘুমাইলে তুই দৌড়াদৌড়ি করিস,ঝনঝন করলে ওর মাথা ব্যথা করে,পড়তে পারে না। তাই বলছিলো নুপুর খুলে রেখে দিতে৷
তাই আমিও আবিরের কথামতো তোর থেকে নুপুর নিয়ে নিছিলাম৷ এরপর তুই ও আর কখনো চাস নি, আমিও আর তোকে দেয় নি । ২-১ বছর পর মনে হয়ছিলো আমার কিন্তু বের করে দেখি এগুলো তোর লাগবে না। এজন্য তোর আব্বুকে বলে রাখছিলাম, তুই চাইলে তোকে যেনো নুপুর বানিয়ে দেয়, তখন তো আবির ছিল না।।
এজন্যই আজকে তোর পায়ে নুপুর দেখে আমরা অবাক হচ্ছিলাম। ”

মেঘ ভাবনায় পরে গেলো,

“ছোটবেলায় আবির ভাই নুপুর খুলতে বললে এখন ওনি নিজের হাতে কেনো পরিয়ে দিলেন, এখন কি ওনার মাথা ব্যথা ভালো হয়ে গেছে? তৎক্ষনাৎ মনে হলো আবির ভাইয়ের কথা, তাহলে কি সত্যি আমার চালচলন পর্যবেক্ষণ করতেই নুপুর গুলো দিয়েছেন নাকি ছোটবেলার কথা ভেবে মনটা নরম হয়েছে ওনার।”

আকলিমা খান হাসিমুখে বলে উঠলেন,
“ঐসব বাদ দে৷ শপিং ব্যাগে কি রে মেঘ?”

মেঘ কাকিয়ার কথায় স্বাভাবিক হয়ে বললো,

“হিজাব”

কেউ আর কিছু বললো না, তারা তাদের আড্ডায় মনোযোগ দিলো

মেঘ ও শপিং ব্যাগ নিয়ে সিঁড়ি তে উঠায় ব্যস্ত হলো..

রাতে আর আবিরের সাথে মেঘের দেখা হয় নি।

★★★★

প্রতিদিনের মতো আজকেও সকাল ৮ টায় অফিসের জন্য রেডি হয়ে খেতে বসেছে আবির,মেঘ ইচ্ছে করেই আজ সেজেগুজে খেতে নামবে ভাবলো, চুল ছাড়ায় সেগুলো কোমড় ছাড়িয়ে পরেছে , মাথায় পিচ্চি বাচ্চার মতো একটা পুতুলের বেল ও দিয়েছে, কালো জামা পরেছে সাথে ম্যাচিং কালো ওড়না, ওষ্ঠদ্বয়ে হালকা গোলাপি রঞ্জকও লাগিয়েছে,

সিঁড়ি দিয়ে নামছে, আবির এক পলক তাকাতেই স্তব্ধ হয়ে রইলো, মেয়েটা এমনিতেই অনেক ফর্সা,তারমধ্যে কালো জামা পরাতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে, সাথে চুল গুলো ছাড়া থাকাতে মায়াবন বিহারির মতো লাগছে অষ্টাদশীকে।।

আবির চোখ সরাতে পারছে না,অবিচলিত আঁখিতে তাকিয়ে আছে অষ্টাদশীর পানে,

হঠাৎ তানভির ডেকে উঠলো,
“ভাইয়া তুমি কি আজ ফ্রী আছো?”

মনোযোগ নষ্ট হলো আবিরের, মেঘের দিক থেকে চোখ নামালো, তানভিরের দিকে না তাকিয়েই বললো,

“কেনো?”

“আজকে আমাদের হবু এমপির জন্মদিন, ওনি তোমার কথা বলছিলেন, তুমি দেশে আছো জেনে খুব করে বললেন তুমি যেতে।। ”

আবিরের স্বাভাবিক জবাব,
“কখন যেতে হবে?”

তানভির: ৬ টায়

আবির: আচ্ছা ঠিক আছে।

মেঘ এতক্ষণে টেবিলের কাছে চলে এসেছে, তিন কর্তায় যেনো ঘাড় ফিরিয়ে তাকালো৷
সকলেই এক নজর পায়ের দিকে তাকালো কিন্তু কেউ তেমন কথা বললো না।

অবশ্য কথা বলারও কিছু নেই। মেয়েদের সাজুগুজুতে বাবা, চাচারা নাক গলায় না সচরাচর, বরং তারা চায় বাড়ির মেয়েরা সবসময় হাসিখুশি থাকুক।

মেঘ চেয়ার টেনে বসলো আবির ভাইয়ের বিপরীতে, এক পলক তাকালো, আবির ভাইও আজ কালো শার্ট পরেছে৷ আবির ভাই সবসময় সাদা অথবা কালো শার্ট ই পড়েন। হঠাৎ কফি কালার বা আসমানি বা হালকা কোনো কালার পড়েন। শুধু পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখা যায়৷

ড্রেস মিলে যাওয়াতে মেঘের মাথা নিচু করে মুচকি হাসলো।।

ইকবাল খান তানভিরের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,

“তোদের হবু এমপি আবিরকে কিভাবে চিনে?”

তানভিরের সহজ সরল উত্তর,

আমি একটা প্ল্যান দিয়েছিলাম ওনাকে, প্ল্যান কার্যকর হওয়ায় খুশি হয়ে হবু এমপি বলছিলেন,

“তোমার মাথায় এত প্ল্যান আসে কিভাবে? ”

আমি তখন বলেছি,
” আমায় বেশিরভাগ প্ল্যান ভাইয়া দেন। আমি ভাইয়াকে প্রবলেম শেয়ার করি তারপর ভাইয়া আমায় প্ল্যান দেয়৷ ‘

তখনই এমপি বলছিলেন তাহলে তোমার ভাইয়াকে নিয়ে আইসো। তখন ভাইয়া বাহিরে ছিলেন।
আজ ওনার জন্মদিন তাই সকাল বেলা ওনি নিজে আমায় কল করে জিজ্ঞেস করলেন ভাইয়া আসছে কি না, আমি হ্যাঁ বলাতে ওনি নিজেই বার বার বললেন ভাইয়াকে নিয়ে যেতে৷ ”

ইকবালের খানের সাথে মোজাম্মেল খান এবং আলী আহমদ খান ও যেনো মনোযোগ দিয়ে তানভিরের কথা গুলো শুনছিলো। মোজাম্মেল খান সবসময় ই চুপচাপ থাকেন৷ যা সিদ্ধান্ত সকল কিছু বড় ভাইয়ের৷

তানভিরের এসব কথা শুনে আলী আহমদ খান রাগে ফুঁসছেন, রাগান্বিত স্বরে বললেন,

“আবির, আমি কিন্তু তোমায় আগেই সাবধান করেছি! রাজনীতিতে তুমি জরাবে না। ”

আবির নিরুদ্বেগ কন্ঠে উত্তর দিলো,
“আমি তো বলেছি রাজনীতি করবো না!”

“তাহলে তানভির কে রাজনীতি নিয়ে প্ল্যান দাও কেন, রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামাও কেন, আর এমপির জন্মদিনে যেতে এক কথায় রাজি হলে কেনো?
এই বুদ্ধি, প্ল্যান ব্যবসায় লাগালে আমাদের ব্যবসাটা আরও এগুতো৷ ”

গম্ভীর কন্ঠে একটানা কথাগুলো বললেন, আলী আহমদ খান।

মেঘ, মীম আর আদি চুপচাপ খাচ্ছে। বাবা, চাচার কথায় কোনো মনোযোগ নেই তাদের। মেঘ খাচ্ছে আর মিটিমিটি হাসছে, আবার একটু পর পর আবির ভাইয়ের দিকে পিটপিট করে তাকাচ্ছে।

আলি আহমদ খানের কথায় আবির খাবার প্লেট থেকে চোখ তুলে তাকালো, রাশভারী কন্ঠে বলা শুরু করলো,

“”তোমাদের কয়েকবছর যাবৎ একটায় সমস্যা , তানভির কেনো রা*জনীতি করে, মেইন কথা তোমরা রা*জনীতি পছন্দ করো না৷ কিন্তু আমি মন থেকে চাই তানভির রা*জনীতি করুক এবং সেটা মাঝপথে ছাড়ার জন্য না৷ সভাপতি, এ*মপি,ম*ন্ত্রী পদে পদে নিজের সাফল্য বয়ে আনুক এবং আমার বিশ্বাস আমার ভাই সফল হবে, ইনশাআল্লাহ।

কয়েক সেকেন্ড থেমে আবার বলা শুরু করলো,

প্রতিটা বিষয় আমরা নিজেরা যখন ভাবি তখন একতরফা ভাবি, মনে হয় আমি যা ভাবছি সেটায় ঠিক, এটা করলেই পারফেক্ট হবে। কিন্তু সব দিক থেকে সেটা পারফেক্ট নাও হতে পারে৷ তাই তানভির পরিস্থিতি বুঝে নিজে যা ভাবে সেটা আমায় জানায় যদি ভাবনা ঠিক থাকে তাহলে আমি বলি ঠিক আছে, না হয় আমি সাজেশন দেয় এটা এভাবে না করে ওভাবে কর। এতটুকুই। এই কথাগুলো তানভির চাইলে আমায় না বলে তাদের কমিটির লোকজন কে বলতে পারতো কিন্তু তানভিরের যেহেতু ইচ্ছে সভাপতি হওয়ার, তার প্ল্যান সভাপতি জানলে সে কাজ করবে তখন তানভিরের নাম থাকবে না। এজন্য তানভির আমায় শেয়ার করে৷

আরেকটা বিষয় হলো ব্যবসা । আমি ব্যবসায় ঢুকেছি মাত্র ১ সপ্তাহ হলো, আমি সবকিছু বুঝে নেয় ঠিকমতো তারপর দেখো ব্যবসায় মনোযোগ দিতে পারি কি না।

এমপির জন্মদিনে যেতে রাজি হওয়ারও কারণ আছে।

এবার বাবা চাচাদের দিকে এক পলক তাকিয়ে, চোখ নামিয়ে বলা শুরু করলো,

তোমরা এখন নামি-দামি ব্যবসায়ী। একসময় তোমাদের ব্যবসাও অনেক ছোট ছিল। অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়ছে তোমাদের। তখন আমি ছোট ছিলাম তবুও যতটা সম্ভব বুঝেছি৷ বর্তমানে আমি নতুন ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছি। আমারও কাগজপত্র নিয়ে অনেক জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করতে হবে। অনেক বিত্তবানদের সঙ্গে ব্যবসার দিক থেকে টক্কর লাগবে। শুধু টাকা থাকলেই সবকিছু করা সম্ভব হয় না সাথে পা*ওয়ার প্রয়োজন হয়। অনেক সময় পুলিশের থেকেও রা*জনৈতিক পাও*য়ার বেশি কাজে লাগে৷ আইনি ভাবে যে বিষয় সমাধান করতে মাসের পর মাস লেগে যায় সেটা বড় বড় নে*তাদের একটা কলে*ই সলভ হয়ে যায়। তানভিরের যেহেতু রাজনীতি তে আগ্রহ আছে তাহলে সে মনোযোগ দিয়ে রাজনীতি করুক। আমি ব্যবসা সামলায়। তানভির ভালো অবস্থানে থাকলে,আর আমি মোটামুটি পরিচিত থাকলে আমাদের যেকোনো প্রয়োজনে আশেপাশে মানুষের সাহায্য পাবো।”

এতগুলো কথা বলে এবার আবির থাকলো।

মেঘ হা করে তাকিয়ে আছে আবির ভাইয়ের দিকে আর ভাবছে,

” কি দূরদর্শী চিন্তাভাবনা আবির ভাইয়ের, মেঘ মনে মনে নিজেকে বাহবা দিচ্ছে, আবির ভাইয়ের জন্য হি*টলার নাম টা একদম ঠিক ঠাক। ”

আলী আহমদ খান, মোজাম্মেল খান এবং ইকবাল খান তিনজনই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে৷

ইকবাল খান সহসা বলে উঠলেন,
“দেখেছো ভাইয়া, আবিরের চিন্তা ভাবনা কত দূর৷ আগে থেকেই ভেবে চিন্তে মাঠে নেমেছে। তুমি খামোখা চিন্তা করো ওর জন্য। দেখবে আমাদের ব্যবসাতে খুব শীগ্রই পরিবর্তন আসবে ইনশাআল্লাহ। ”

আলী আহমদ খান আর কথা খোঁজে পেলেন না। খাওয়া শেষ করে উঠে গেলেন।

মোজাম্মেল খান তানভিরের দিকে তাকিয়ে বললেন,

“আমাদের মান না রাখ, আবিরের মান অন্ততঃ রাখিস ”

তানভির শীতল কন্ঠে জবাব দিলো,
“আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো ভাইয়াকে সব দিক থেকে সাহায্য করার। ”

সকলেই নিরব, এতক্ষণে মোটামুটি সবার খাওয়া শেষ। সবাই সবার মতো উঠে যাচ্ছে। আবিরের খাওয়া শেষ হতেই যেই না উঠতে যাবে,

নজর পরলো অষ্টাদশীর পানে, কাজল পরিহিতা টানাটানা চোখ,গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আবিরের দিকে,

আবির টেনে হিঁচড়ে দৃষ্টি সংযত করলো, হালকা করে কাশি দিলো,
মেঘ এখনও বিভোরে তাকিয়ে আছে।

আবির এবার দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললো,

“মুখ টা বন্ধ কর মেঘ, মাছি ঠুকবে মুখে”

মেঘ নড়েচড়ে বসলো, আবির ততক্ষণে বেসিনে চলে গেছে হাত ধুতে।

মেঘ নিজের মাথায় নিজে গাট্টা দিলো,
“ছিঃ আবির ভাই কি ভাবলো, যতই মন শক্ত করি, আহাম্মকের মতো আবির ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকবো না ভাবি, ততই যেনো আবির ভাইয়ের কাছে বেকুব সাজতেছি৷ ”

সেই যে মাথা নিচু করে খাচ্ছে আর মনে মনে নিজেকে ব*কতে ব্যস্ত, আবির ভাই কখন ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়েছেন সেদিকেও নজর নেই মেঘের৷

খাওয়া শেষ করে রুমে গিয়ে পড়তে বসেছে। আজ কোচিং, প্রাইভেট নেই তাই ৩ টা পর্যন্ত টানা পড়াশোনা করেছে। তারপর গোসল করে খেতে এসেছে৷

বিকেল হয়ে গেছে তাই কাকিয়া আর বড় আম্মু ঘুমাচ্ছেন, হালিমা খানও শুয়ে ছিলেন মেঘের সিঁড়িতে নামার সময় নুপুরের শব্দে বেড়িয়ে এসে খাবার দিলেন মেঘ কে,

মেঘ চুপচাপ খাবার খাচ্ছে।

হালিমা খান পাশে চেয়ারে বসে শান্ত কন্ঠে মেয়েকে জিজ্ঞেস করলেন,

“পড়াশোনা ঠিকমতো করছিস তো মা?”

মেঘ উপর নিচ মাথা নাড়লো শুধু।

হালিমা খান: আর তো কয়েকটা দিন এরপর ই তো রেজাল্ট দিয়ে দিবে। তারপর ই তো ভর্তি পরীক্ষার যু*দ্ধ শুরু হয়ে যাবে।

মেঘ চুপচাপ খাওয়া শেষ করে সোফায় বসে টিভি দেখছিলো।। হালিমা খান সব গুছিয়ে মেয়ের পাশে বসলেন।

মেঘ কিছুক্ষণ পর মায়ের উরুর উপর মাথা রেখে শুয়ে পরলো, হালিমা খানও সযত্নে মেয়ের মাথায় হাতবুলিয়ে দিচ্ছেন, বিকেলে গোসল করাতে চুলগুলো এখনও ভেজা।।

হালিমা খান একটু রাগে রাগে বললেন,
“সারাদিন বাসায় থেকেও বিকেলে গোসল করিস কেনো, ঠিকমতো না খেলে, ঠিক মতো গোসল না করলে অসুস্থ হয়ে পরবি, তখন তো পড়তেই পারবি না।”

মেঘ চুপচাপ মায়ের হাঁটু আঁকড়ে শুয়ে আছে।

ততক্ষণে ৫ টা বেজে গেছে। আবির আজ একটু তাড়াতাড়ি চলে এসেছে অফিস থেকে। ৬ টায় এমপির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যেতে হবে।

বাড়িতে ঢুকে চুপচাপ সিঁড়ির দিকে যাচ্ছে। পায়ের শব্দে হালিমা খান তাকিয়ে দেখলেন আবির,

হালিমা খান কোমল কন্ঠে বললেন,
“এত তাড়াতাড়ি চলে এলি যে, কফি দিব তোকে?”

আবিরের দৃষ্টি পরে সোফায়, হালিমা খানের উরুতে শুয়া মেঘকে দেখে বুকের ভেতর ছ্যাত করে উঠে আবিরের।

মায়ের কথা শুনে মেঘ ও ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়, চোখ পরে সিঁড়ির কাছে আবির ভাইয়ের দিকে। সঙ্গে সঙ্গে সোজা হয়ে উঠে বসলো।

আবির তৎক্ষনাৎ তড়িৎগতিতে মেঘের কাছে আসে, ভয়ার্ত কন্ঠে বললো,

“কি হয়েছে তোর?”

বলতে বলতে কপালে, গালে,গলায় হাত রাখলো একবার।

আবির ভাইয়ের উষ্ণ হাতের ছোঁয়ায় কেঁপে উঠলো অষ্টাদশী।

আবির হাত সরিয়ে উত্তেজিত কন্ঠে পুনরায় প্রশ্ন করলো,

“শরীর খারাপ লাগছে? মাথা ব্যথা করছে?”

মেঘ যেনো বিস্ময়কর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আবির ভাইয়ের অভিমুখে। আবির ভাইয়ের কপাল ঘামে চিকচিক করছে।

হালিমা খান অভিযোগের স্বরে বললেন,
“আরে দেখ না সারাদিন বাসায় থেকেও অসময়ে গোসল করে, এত লম্বা চুল শুকাতে তো সময় লাগে নাকি। নিজের কোনো যত্ন নেয় না কিছু না।”

আবির সহসা বলে উঠলো,

“মামনি একটু কফি করে দিবা প্লিজ?”

হালিমা খানের সরল উত্তর,
তুই বস একটু, এখনি নিয়ে আসছি।

হালিমা খান উঠে রান্না ঘরে গেলেন, আবির ঘুরে গিয়ে হালিমা খানের জায়গায় বসলেন,

মেঘ নিচের দিকে চেয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে বসে আছে, শীর্ণ বক্ষ ধড়ফড় করছে অষ্টাদশীর।

আবির ক্ষুদ্র চোখে তাকিয়ে আছে অষ্টাদশীর পানে, নিরুদ্যম কণ্ঠে শুধালো,

“কি হয়েছে তোর? মন খারাপ? ”

মেঘের দুনিয়া ঘুরছে, মনের ভিতর টালমাটাল অবস্থা। হৃদপিণ্ড ছুটছে দ্বিকবিদিক।।

কিছু সেকেন্ড পর, কোনোরকমে এপাশ-ওপাশ মাথা নাড়লো।

আবির একটু চুপ থেকে গম্ভীর কন্ঠে বললো,
“কেউ বকেছে তোকে?”

সহসা মেঘের জবাব,
“কেউ বকে নি!”

আবির এবার দীর্ঘশ্বাস ফেললো, বেশ ঠান্ডা কন্ঠে বললো,
“তাকা আমার দিকে!”

মেঘ এবার দ্বিতীয় দফায় ধাক্কা খেলো, মেঘ নড়ে উঠলো, কাঁপা কাঁপা চোখে তাকালো আবির ভাইয়ের চোখের দিকে৷ আবির ভাইয়ের শীতল চাউনিতে অষ্টাদশীর মনে ঝড় শুরু হয়েছে। সাগরের গভীরতার ন্যায় চোখের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা সম্ভব হলো না মেঘের । চটজলদি মাথা নিচু করে ফেললো।

আবির তখনও তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অষ্টাদশীর দিকে।

আবির কিছুটা ভেবে শক্ত কন্ঠে বললো,

“মেঘ, আমি এই বাড়ির সিঙ্গেল একটা মানুষের মুখেও তোর নামে অভিযোগ শুনতে চাই না”

মেঘের অভিব্যক্তি বুঝা গেলো না, চিবুক গলায় নেমেছে৷ নিজের মনের উথাল-পাথাল পরিস্থিতি সামলাতে ব্যস্ত অষ্টাদশী।

আবির কপাল গোটায়, হঠাৎ ই পল্লব ফেলে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শ*ক্ত চাউনিতে মেঘের দিকে তাকায়,

“কাল থেকে বিকালে কোচিং এ যাবি। ওনাদের ৩ টায় ব্যাচ আছে। প্রতিদিন ১১ টায় গোসল করবি, ১ টার পর নামাজ পরে খেয়ে প্রাইভেটে যাবি তারপর কোচিং শেষ করে বাসায় আসবি। আমি কোচিং এ কথা বলে নিবো। ”

এতক্ষণে হালিমা খান কফি নিয়ে হাজির হলেন,

আবির স্বাভাবিক কন্ঠে বললো,

“মামনি, মেঘ কাল থেকে ১১ টায় গোসল করবে, আর বিকালে কোচিং যাবে।৷ ওর গোসলের টাইম যদি ১ মিনিট এদিক সেদিক হয় তুমি সঙ্গে সঙ্গে আমায় কল করবা। ”

এতটুকু বলেই কফির কাপ নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে ধপধপ করে উপরে চলে গেলো।

মেঘের হৃদপিণ্ড দুভাগ হয়ে গেলো আবির ভাইয়ের কথায়। এতদিন মনের ভেতর শুধু তু*ফান চালিয়েছে এই লোকটা। এখন মেঘের জীবনেও তুফা*ন চালাচ্ছেন। বন্যা তো ১০ টার ব্যাচে যাবে, মেঘ একা একা বিকালে পড়তে যাবে৷ ওখানে তো কাউরে চিনে না ভাবতেই আ*হত হলো মনটা।

ঠায় সোফায় হেলান দিয়ে বসে আছে মেঘ। হালিমা খান মেঘকে এক কাপ কফি এনে দিলেন। মেঘ কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে কফি খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।

কিছুক্ষণ পর মেঘ সিঁড়ি দিয়ে উঠছে রুমে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। তখন ই সিঁড়ি দিয়ে ব্যস্ত পায়ে নামছে আবির ভাই, এমপির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য রেডি হয়েছেন,

খয়েরি রঙের শার্ট কনুই পর্যন্ত হাতা ভাজ করা, কালো প্যান্ট দিয়ে ইন করা, নতুন শো জুতা, চোখে নতুন একটা সানগ্লাস, চুল গুলো খুব সুন্দর করে স্টাইল করা৷

এক পলক তাকাতেই মেঘ থমকে দাঁড়ালো সিঁড়িতে, আবির ভাইয়ের এক হাত পকেটে অন্য হাতের আঙুলে বাইকের চাবি ঘুরাতে ঘুরাতে মেঘের পাশ কেটে নেমে গেলেন, মেঘ ওখানেই দাঁড়িয়ে পরেছে, বডি স্প্রের তীব্র গন্ধে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো আবির ভাইয়ের দিকে, যতক্ষণ দেখা গেলো ততক্ষণ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো,

বিড়বিড় করে বললো,

“ওনার য*ন্ত্রণায় আমাকে পা*বনা যেতে হবে মনে হচ্ছে! ”

কিছুক্ষণ পর মেঘ রুমে চলে গেলো!

পেইজঃ Salma Chowdhury (scsalma90)
★★★★

তানভির সারাদিনেও বাসায় ফিরতে পারে নি সেই যে সকালে বের হয়েছিলো, সারাদিন নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত। বিকেলে বাহিরেই খেয়েছে। তারপর থেকে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কাজে ব্যস্ত। কোথায় কি রাখবে, কি ভাবে করবে, সভাপতি, সাধারণ সদস্য সকলেই ব্যস্ত।

অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পর্যায়ে আবির উপস্থিত হলো। আবিরকে দেখে তানভির ছুটে এসেছে৷ পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন হবু এমপির সাথে৷ হ্যান্ডসেক করে মতবিনিময় শুরু করলেন দুজনে।

অনুষ্ঠান ভালোই ভালোই শেষ হলো৷ বেশ কিছু ছবিও তুলা হয়েছে। এমপির ফ্যামিলির সাথে, আবির তানভির এমপির দুপাশে দাঁড়িয়ে, কেক খাওয়ানো সহ আরও অনেক ছবি তুলা হয়েছে।

সেখান থেকেই ৪ টা ছবি আবির ফেসবুকে আপলোড করেছে সাথে জন্মদিনের ক্যাপশন দিয়ে।

অনুষ্ঠান শেষে তানভির বললো,
“ভাইয়া তুমি কি আমায় বাইকে লিফট দিবা নাকি রিক্সা করে বাড়ি যাব?”

আবির এক মুহুর্ত ভেবে উত্তর দিলো,
“আজ থেকে যেতে পারবি, সমস্যা নেই!”

তানভির খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেছে। ১০ দিনের মাথায় ভাইয়ের বাইকে উঠার অনুমতি পেলো।

বাইক চালাতে চালাতে আবির গম্ভীর কন্ঠে তানভির কে বললো,

“তোর কাছে মেঘের বান্ধবীর নাম্বার আছে?”

তানভির স্বাভাবিক ভাবেই বললো,

“হ্যাঁ আছে। কেনো ভাইয়া?”

আবির রাশভারি কন্ঠে বললো,
“তুই তাকে কল দিয়ে বলিস কাল থেকে যেনো ৩ টায় কোচিং এ যায়, মেঘের ব্যাচ টাইম চেইঞ্জ করে দিয়েছি সাথে তারটাও। কোচিং এর লোকের সাথে কথা বলেছি। মেঘের একা একা বিকেলে ভালো লাগবে না। ”

তানভিরের চিন্তিত স্বরে বললো,
“আবার কোনো সমস্যা হয়েছে ভাইয়া?”

আবির এবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে, কন্ঠ দ্বিগুণ ভারি করে বললো,

“তোর বোন ঠিক মতো খায় না, গোসল করে না, পড়ে না কত অভিযোগ শুনতে হয়। এজন্য টাইম পাল্টে দিয়েছি, সাথে ওকেও ওয়ার্নিং দিয়েছি।”

তানভির আর কিছু বললো না। চুপচাপ দুই ভাই বাসায় ঢুকে যে যার মতো রুমে চলে গেলো।

পেইজ: গল্প কথা(golpokotha
★★★★

রাত তখন ১০.৩০+
তানভির ফোন থেকে বন্যা নামে সেইভ করা একটা নাম্বারে কল দিলো। দুবার দেয়ার পর রিসিভ হলো।

বন্যাঃ আসসালামু আলাইকুম।
তানভিরঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম
বন্যাঃ কে বলছেন?
তানভিরঃ আমি মেঘের ভাই।
বন্যা একটু ভ*য়ে ভ*য়ে বললো,
“আবির ভাইয়া?”

তানভিরের কিছুটা রাগ হলো, অকস্মাৎ বলে উঠলো,

“ভাইয়া তোমায় কল দিবে কেন, ভাইয়ার কি খেয়ে কাজ নাই যে তোমায় কল দিবে? ভাইয়া জীবনেও তোমায় কল দিবে না, শুধু তোমায় কেনো কোনো মেয়েকেই কল দিবে না! ”

বন্যা আস্তে আস্তে শুধালো,
“তানভির ভাইয়া?”

তানভিরঃ হ্যাঁ।

বন্যাঃ কোনো দরকার ভাইয়া?

তানভিরঃ শুনো তুমি কাল থেকে ২ টার ব্যাচে প্রাইভেট পড়বে আর ৩ টার ব্যাচে কোচিং করবে। মেঘও বিকালে কোচিং করবে। এটায় জানানোর জন্য কল দিয়েছি। ভুল করে আবার সকালে চলে যেয়ো না। আল্লাহ হাফেজ।

এতটুকু বলেই কল কেটে দিলো তানভির।
বন্যা খাটের উপর টাশকি খেয়ে বসে পরলো। কিছু ভাবতে পারছে না। কিছুক্ষণ স্থির থেকে তাড়াতাড়ি কল করলো মেঘকে।

১ বার বাজতেই কল রিসিভ করলো মেঘ।

বন্যাঃ এই পাগল, তোর কি হয়ছে রে? কাল থেকে এতবার কল দিচ্ছি কোনো খবর নাই তোর! সেই যে আবির ভাইয়ের সাথে বাইকে গেলি। কি হলো তাও বললি না, কি অ*ঘটন ঘটাইছিস তুই?

মেঘঃ আমি অ*ঘটন ঘটাই নি। আবির ভাই অঘটন ঘটাইছে৷ ওনি আমার মনের ভিতর ঢুকে আমার জীবনের ১৪ টা বাজায় দিছে। আমার খাওয়া,গোসল, ঘুম সবকিছুর নাজেহাল অবস্থা করে ফেলছে। ওনাকে যতবার দেখছি ততবারই ভেঙেচুরে যাচ্ছি আমি আমি। বারবার নতুন করে ক্রাশ খাই। কি করবো বল..!!

বন্যা এবার রাগে বললো,
রাত বিরাতে নে*শা করা ছেড়ে ঘুমা বাই।

কি জন্য কল দিয়েছিলো তা বলতেই পারলো না, মেঘের এসব হাবিজাবি কথা শুনতে তার এখন একটুও ভালো লাগছে না। কোথায় সিরিয়াস মুডে কল দিলো মেঘকে৷ মেঘ যেনো ঘো*রেই পরে আছে।

মেঘ ও আর কল ব্যাক করলো না।

★★★★
পেইজঃগল্প কথা (golpokotha70)

মেঘ ফেসবুকে ঢুকলো, ঢুকতেই সামনে আসলো আবির ভাইয়ের ৩ ঘন্টা আগে করা পোস্ট। ছবিগুলো খুব ভালো করে দেখছে মেঘ৷ টেনে টেনে বড় করে আবির ভাইকে মনোযোগ দিয়ে দেখছে। হঠাৎ ই একটা ছবি দেখে মেঘের দৃষ্টি স্থির হলো৷

আবির ভাইয়ের পাশে কড়া নীল রঙের একটা গাউন পরা মেয়ে। দেখেই মনে হচ্ছে শরীরে বড়লোক বড়লোক ভাব আছে একটা।

মেঘের পায়ের রক্ত চড়চড় করো মাথায় উঠছে।ঐ মেয়ে কে আর আবির ভাইয়ের পাশে ঐ মেয়ে কি করে। কমেন্ট চেক করতে গেলো মেঘ, অনেকগুলো কমেন্টের ভিড়ে ঐ নীল জামা পরিহিতার একটা আইডি চোখে পরলো। আবির ভাইদের ছবি তে কমেন্ট করেছে,

“আপনি অসম্ভব কিউট, ইচ্ছে করছিলো আপনাকে সবসময়ের জন্য রেখে দেয়। ইচ্ছে হলে বেড়াতে আসবেন আর সম্ভব হলে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করবেন।”

রাগে শরীর ঘামছে মেঘের, শুয়া থেকে উঠে বসলো, কমেন্ট টাতে Angry রিয়েক্ট দিয়ে মেয়ের আইডিতে ঢুকলো।

প্রোফাইল পিকটা ২ ঘন্টা আগেই আপলোড করা, কভার ফটোতে হবু এমপির সাথে ছবি, ক্যাপশন (বাবা-মেয়ে)

মেঘের বুঝতে বাকি নেই এটা এমপির মেয়ে। একটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। মেঘ রাগে ফুঁস ফুস করছে।

আবারও আবির ভাইয়ের আইডিতে ঢুকলো মেঘ। Just Now একটা পোস্ট করেছেন আবির ভাই,

“Teri Nazar Ne Ye Kya Kar Diya
Mujh Se Hi Mujhko Juda Kar Diya”

সাথে রাতের শহরে বাইকে বসা একটা ছবি শেয়ার করলেন।

মেঘ মনোযোগ দিয়ে ক্যাপশন বুঝার চেষ্টা করছে। তারমানে আবির ভাই ঐ মেয়ের প্রেমে পরে গেছে। ভাবতেই নেত্রযূগল থেকে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পরলো৷ আবারও সেই কমেন্ট টা খোঁজতে গেলো মেঘ। কি এমন সুন্দর মেয়েটা দেখতে হচ্ছে তো! কিন্তু পোস্টের সব কমেন্ট ঘেটেও মেয়ের কমেন্ট পেলো না। তারমানে আবির ভাই ডিলিট করে ফেলছে?
কিন্তু ঐ মেয়ে কে কি এক্সেপ্ট করে ফেললো?

তারপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকে নিজে সান্ত্বনা দিতে লাগলো,

“আবির ভাই তো শুধুই আমার ক্রাশ। ক্রাশ তো ক্ষণিকের। ওনিও তো কিছুদিন পর বিয়ে করবেন তখন তো আমাকে মেনে নিতেই হবে। আমার তো সাহসে কুলাবে না আবির ভাইকে কিছু বলার। মা*ইর খাওয়ার থেকে চুপ থাকি, সেই ভালো।”

★★★★

এদিকে আবির বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে আছে৷
একটা ছবি Zoom করে শুধু চোখ গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে,

আর বিড়বিড় করে গাইছে,

Maine Jab Dekha Tha Tujhko
Raat Bhi Wo Yaad Hai Mujhko
Taare Ginte Ginte So Gaya

Dil Mera Dhadka Tha Kaske
Kuch Kaha Tha Tune Hanske
Main Usi Pal Tera Ho Gaya

কিছুক্ষণ থেমে আবার বললো,

Teri Nazaron Ne Kuch Aisa Jaadu Kiya
Lut Gaye Hum Toh Pehli Mulaqaat Mein

চলবে…….

📌গল্প কপি করা নিষেধ। শেয়ার করলে গল্প কথা পেইজ থেকে শেয়ার করবেন।। (golpokotha70)

#বি.দ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। অনেকের মনে প্রশ্ন,আবির কেনো মেঘকে এত ধম*ক দেয়, নিশ্চয়ই তার কারণ আছে অপেক্ষা করুন প্রকাশ পাবে। দ্বিতীয় হলো গল্প পোস্ট করতে লেইট হয় কেন, আমার আগের গল্পের ৩-৪ টা পার্টের শব্দ দিয়ে এই গল্পের একটা পার্ট লিখি। প্রথমত গল্পটা চিন্তাভাবনা করে লিখতে হয়। কিভাবে লিখলে আপনাদের ভালো লাগবে, দ্বিতীয়ত বারবার পড়তে হয়, লিখতে গেলে টাইপিং মিস্টেক হয় প্রচুর, যেনো প্রতি লাইনে লাইনে ভুল শব্দ বা একই শব্দ বারবার না থাকে সেগুলো চেক করি তারপর আবার ভায়োলেন্স শব্দে * দিতে হয়। শেষবার আবার পড়ে সাথে পোস্ট করে দেয়। গল্প লিখার থেকেও বেশি এগুলোতে সময় লাগে। তারপর ও অনেক সময় ভুল শব্দ থেকেই যায়। তাই অনুগ্রহ করে একটু ধৈর্য রাখবেন প্লিজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here